শংকর সেনাপতি || শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় || ষষ্ঠ শ্রেণী || হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
![]() |
শংকর সেনাপতি
শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
ষষ্ঠ শ্রেণী
বিষয়সংক্ষেপ
স্কুলটির নাম আকন্দবাড়ি স্কুল। সেই স্কুলের পাঁচ-সাত মাইলের মধ্যেই অবস্থিত বঙ্গোপসাগর। এই স্কুলের মাস্টারমশাই বিভীষণ দাশ পঞ্চম
শ্রেণিতে প্রকৃতিবিজ্ঞানের ক্লাসে এমু পাখির কথা পড়াচ্ছিলেন। সেই সময় শংকর সেনাপতি নামে একটি ছেলে জানলা দিয়ে বাইরে নারকেল গাছের মাথার ওপর উড়তে থাকা শঙ্খচিলদের দেখছিল। এই দৃশ্যটি দেখে ছেলেটির মনে পড়ল সেও স্বপ্নের মধ্যে পাখিদের মতোই বাতাসে ভেসে পড়ে। এইসব কথা ভাবতে ভাবতে ছেলেটি আনমনা
হয়ে যায়। সেই সময় মাস্টারমশাই তার কাছে শ্রেণির পাঠ্যবিষয়টি কী তা জানতে চাইলে ছেলেটি চমকে ওঠে। এক সময় ‘এমু’ শব্দটি তার
কানে গিয়েছিল। তাই সে কোনোরকমে এমু পাখির নামটি উচ্চারণ করে। তখন মাস্টারমশাই জানতে চান সে এমু পাখি দেখেছে কি না । এই প্রশ্নের উত্তরে শংকর জানায়, ঘোলপুকুরে বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছে সে এমু পাখি দেখেছে। তার কথায় সারা ক্লাসে হাসির
রোল ওঠে। এই পরিস্থিতিতে শংকর বলে যে, বিষয়টা তার স্বপ্নে দেখা। এরপর মাস্টারমশাই শংকরের বাবা অভিমন্যু সেনাপতিকে দেখা করতে বলেন। এর উত্তরে শংকর জানায়, তার বাবা অসুস্থ তাই তিনি দেখা করতে পারবেন না। সহপাঠীদের মধ্য থেকে সমীরকান্ত দীক্ষিত বলে যে, শংকর সারাদিন গাছে গাছে ঘোরে আর গাব, জাম, নোনা ডাব ইত্যাদি খেয়ে বেড়ায়। ফলে ওর পেট গরম হয়। তাই ও নানা রকম স্বপ্ন দেখে। আসলে শংকর প্রকৃতিকে ভালোবাসে। প্রকৃতিকে দেখে সে আনন্দ পায়। তাই কল্পনায় আন্ডিজ পর্বতমালার এমু পাখি এসে যায় তাদের গ্রামে। সে স্বপ্নে দেখে নীলচে বাতাস,।খয়েরি রঙের ঘরবাড়ি। স্বপ্নে ওড়ার সময় ধাক্কা খেলেও তার কোনো ব্যথা লাগে না । শেষপর্যন্ত মাস্টারমশাই কল্পনাপ্রবণ এই ছাত্রটির মনের কথা বুঝতে পারেন । তাই তিনি প্রকৃতিপ্রেমিক এই ছাত্রটির কাছে তার দেখা পাখিদের কথা জানতে চান। মাস্টারমশাইয়ের প্রশ্নে শংকরে বুকটা গর্বে ভরে ওঠে। মাস্টারমশাইও তাঁর এই ভাবুক প্রকৃতির ছাত্রটিকে উপদেশ দেন, “এই খোলামেলা পৃথিবীই সবচেয়ে বড়ো বই। তাকে চোখ ভরে দেখাই সবচেয়ে বড়ো পড়াশুনো।”
নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো।
যে-কোনো সাহিত্যসৃষ্টির ক্ষেত্রেই নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সাধারণত গল্প বা উপন্যাসের নামকরণ করা হয় তার মূল চরিত্রের।নামে, কখনো-বা বিষয়বস্তু, ভাব ইত্যাদি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।
সেভাবেই আলোচ্য গল্পের প্রধান চরিত্র শংকরের নাম অনুসারে লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় গল্পটির নাম দিয়েছেন শংকর সেনাপতি'। এই গল্পে আকন্দবাড়ি বিদ্যালয়ের ছাত্র শংকরের মানসিকতার কল্পনাপ্রবণ দিকটি ফুটে উঠেছে। শংকর স্বপ্ন দেখে। তার স্বপ্নের ভেতর পাখিদের
মতো সে-ও উড়তে পারে। ক্লাসে এইসব স্বপ্নের কথা বলে সে শিক্ষক ও সহপাঠীদের হাসির পাত্র হয়ে ওঠে। শেষপর্যন্ত অবশ্য শিক্ষকমশাই
বোঝেন, এই কল্পনাপ্রবণ ছেলেটি আসলে সত্যিকারের প্রকৃতিপ্রেমিক। পাখিদের ঘিরেই গড়ে উঠেছে তার স্বপ্নের জগৎ। তাই তিনি ছেলেটিকে আরও খোলা মন নিয়ে প্রকৃতিপাঠে উৎসাহিত করেন। শংকরের পুরো নাম শংকর সেনাপতি। অভিমন্যু সেনাপতির ছেলে সে। প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা আর কল্পনাপ্রবণতার ক্ষেত্রে সে সকলের থেকে আলাদা। কোনো সন্দেহ নেই যে, সে সহপাঠীদের চেয়ে এক্ষেত্রে অনেকখানি এগিয়ে রয়েছে। একজন সেনাপতি সমগ্র সেনাবাহিনীর মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা নেন। এক্ষেত্রেও প্রকৃতিপ্রেম ও কল্পনাশক্তির দিক থেকে শংকরই সবার চেয়ে এগিয়ে। তাই শংকরের জন্য লেখক অন্য কোনো পদবি নয়, 'সেনাপতি' পদবিটিকেই বেছে নিয়েছেন এবং এই নামটিকেই তিনি গল্পের শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি সম্ভবত বলতে চেয়েছেন, কল্পনাশক্তির।বিচারে শংকরই ছাত্রদলের সেনাপতি বা নেতা হওয়ার উপযুক্ত। এজন্যই গল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে শংকর সেনাপতি'। সবদিক বিচার করে বলা যায়, শংকর সেনাপতি' নামকরণটি যথেষ্ট তাৎপর্যবহ ও সার্থক হয়ে উঠেছে।
হাতে কলমে প্রশ্নের উত্তর
১ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও ।
১.১ শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর: শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা দুটি বইয়ের নাম শাহাজাদা দারাশুকো’ এবং ‘ভাস্কো দা গামার ভাইপো'।
১.৯ তিনি কোন্ বইয়ের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন ?
উত্তর : শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় শাহাজাদা দারাশুকো' উপন্যাসের জন্য।সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও ।
২.১ আকন্দবাড়ি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা কোন্ কোন্ জায়গা থেকে পড়তে আসে?
উত্তর: আকন্দবাড়ি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আকন্দবাড়ি, ভেটুরিয়া, সাঁইবাড়ি, ঘোলপুকুর প্রভৃতি জায়গা থেকে পড়তে আসে ৷
২.২ স্কুলের জানলা থেকে কী কী দেখা যায়?
উত্তর: স্কুলের জানালা থেকে আকাশের মেঘ, উড়তে থাকা পাখি, ধানখেতে ঘন সবুজ লাইন দিয়ে রোয়া ধান গাছের ওপর রৌদ্রছায়ার
লুকোচুরি আর নারকেল গাছের মাথার ওপর ভেসে থাকা শঙ্খচিলদের দেখা যায় ৷
২.৩ শংকর কীসের স্বপ্ন দেখে?
উত্তর: শংকর শঙ্খচিল পাখিদের মতো আকাশে ভেসে বেড়ানোর।স্বপ্ন দেখে।
২.৪ শংকরের স্বপ্নে বাতাসের রং কী?
উত্তর: শংকরের স্বপ্নে বাতাসের রং নীলচে।
২.৫ এমু ছাড়া উড়তে পারে না শুধু দৌড়োতে পারে এমন একটি পাখির নাম লেখো।
উত্তর: এমু ছাড়া উট পাখিও উড়তে পারে না, শুধু দৌড়োতে পারে।
৩.গল্প থেকে একই অর্থযুক্ত শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো:
উত্তর: বিদ্যালয়, অনিল, জগৎ, একাগ্রচিত্ত, পাখা, রোপণ করা।
শব্দ > গল্পে ব্যবহৃত শব্দ-
বিদ্যালয় > স্কুল
একাগ্রচিত্ত > তন্ময়
অনিল > বাতাস
পাখা > ডানা
জগৎ > পৃথিবী
রোপণ করা > রোয়া
৪. বিপরীতার্থক শব্দ লিখে তা দিয়ে বাক্য রচনা করো: ভিজে, রাত, বাইরে, গাঢ়, বিশ্বাস ।
শব্দ > বিপরীত শব্দ
ভিজে > শুকনো
বাক্য-গ্রীষ্মকালে প্রখর তাপে মাটি শুকনো ও ফুটিফাটা হয়ে পড়ে।
রাত > দিন
বাক্য- আজ সারাদিন ধরে বৃষ্টি পড়ছে।
বাইরে > ভিতরে
বাক্য -বৃষ্টিতে ঘরের ভিতরে জলের
ঝাপটা আসছে।
গাঢ় > পাতলা
বাক্য -অপুর ঘুম এত পাতলা যে সামান্য
শব্দেই সে জেগে ওঠে।
বিশ্বাস > অবিশ্বাস
বাক্য -মানুষকে অবিশ্বাস করা উচিত নয়।
৫ . সন্ধি বিচ্ছেদ করো: বঙ্গোপসাগর, তন্ময়, সাবধান, ত্রিশেক, পঞ্চানন ।
উত্তর: বঙ্গোপসাগর = বঙ্গ + উপসাগর
তন্ময় = তৎ + ময়
সাবধান = স + অবধান
ত্রিশেক = ত্রিশ + এক
পঞ্চানন = পঞ্চ + আনন
৬. নীচের শব্দগুলির কোটি বিশেষ্য এবং কোটি বিশেষণ তা খুঁজে নিয়ে আলাদা দুটি স্তম্ভে সাজাও। এরপর বিশেষ্যগুলির বিশেষণের রূপ
বিশেষণগুলির বিশেষ্যের রূপ লেখো: প্রকৃতি, ব্যথা, মাটি, বিশ্বাস, জল, মাঠ, শব্দ ।
উত্তর: বিশেষ্য > বিশেষণ
প্রকৃতি > প্রাকৃতিক
জল. > জলীয়,
ব্যথা > ব্যথিত
মাটি > মেটে
মাঠ > মেঠো
শব্দ > শাব্দিক
বিশ্বাস > বিশ্বাসী, বিশ্বস্ত
৭ .সমোচ্চারিত বা প্রায় সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থ লিখে বাক্যে প্রয়োগ করো। ভাষা, ভাসা; পড়ে,পরে; শংকর, সংকর; মাথা, মাতা; বাঁশ, বাস ।
উত্তর-
ভাষা- ভাবপ্রকাশের মাধ্যম । > আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি।
ভাসা- ভেসে থাকা ।>পাখিটি ডানা মেলে আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে।
পড়ে- পাঠ করে > রবি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।
পরে- পরিধান করে। > তপন আজ নতুন জামা পরে স্কুলে এসেছে।
শংকর- শিব ।> কৈলাস পর্বতে ভগবান শংকরের অধিষ্ঠান বলে।
সংকর- সংকর মিশ্র ।> তামা ও দস্তা মিশিয়ে সংকর ধাতু পিতল তৈরি হয়।
মাথা- মস্তক > বাস দুর্ঘটনায় রমেশবাবু
মাথায় গুরুতর পেয়েছেন।
মাতা- জন্মদাত্রী>> দেশমাতার মুক্তির জন্য অনেক বিপ্লবী জীবন উৎসর্গ করেছেন।
বাঁশ-তৃণ-জাতীয় লম্বা উদ্ভিদ।> পূজার মণ্ডপ তৈরিতে বাঁশ দরকার হয়।
বাস -থাকা।> অপরিচ্ছন্ন স্থানে বাস করা বা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।
১১.নীচে কতকগুলি উপসর্গ দেওয়া হল। গল্প থেকে উপযুক্ত শব্দ খুঁজে নিয়ে এই উপসর্গগুলি যুক্ত করে কয়েকটি নতুন শব্দ তৈরি করো: বি, প্র, নি, সু, আ ।
উত্তর:
উপসর্গ > শব্দ > নতুন শব্দ
বি > দেশ > বিদেশ
সু > চেতনা > সুচেতনা
প্র > গাঢ় > প্রগাঢ়
আ > বাহন > আবাহন
নি > খাদ > নিখাদ
১০ নীচের বাক্যগুলি থেকে সংখ্যাবাচক শব্দ খুঁজে বের করো।
১০.১ পাঁচ-সাত মাইলের ভেতর বঙ্গোপসাগর ।
উত্তর: পাঁচ-সাত।
১০.২ জনা ত্রিশেক ছেলেমেয়ে বসে।
উত্তর: জনা ত্রিশেক।
১০.৩ সেদিকে তাকিয়ে একটি ছেলে আনমনা হয়ে পড়েছিল।
উত্তর: একটি।
১০.৪ এক-একদিন রাতে স্বপ্নের ভেতর সেও অমন ভেসে পড়ে।
উত্তর এক-একদিন ।
১১ নীচের বাক্যগুলি থেকে অনুসর্গ খুঁজে বার করো।।প্রতিটি বাক্যের ভিতর যেসব শব্দ আছে তাদের সঙ্গে কী কী বিভক্তি যুক্ত হয়েছে দেখাও।
১১.১ এখানে বাতাসের ভেতর সবসময় ভিজে জলের ঝাপটা থাকে ।
উত্তর: এখানে—‘এ’ বিভক্তি, বাতাসের—‘এর’ বিভক্তি, ভেতর—অনুসর্গ, সবসময়—‘শূন্য' বিভক্তি, ভিজে—শূন্য' বিভক্তি, জলের— ‘এর’ বিভক্তি, ঝাপটা–শূন্য' বিভক্তি, থাকে –‘এ’ বিভক্তি।
১১.২ মাটির মেঝে ।
উত্তর: মাটির—‘র’ বিভক্তি, মেঝে—'শূন্য' বিভক্তি।
১১.৩ সেই জানলা দিয়ে মেঘ দেখা যায় আকাশের।
উত্তর: সেই—শূন্য' বিভক্তি, জানলা—'শূন্য' বিভক্তি, দিয়ে— অনুসর্গ, মেঘ–শূন্য' বিভক্তি, দেখা— শূন্য' বিভক্তি, যায়—শূন্য’
বিভক্তি, আকাশের—‘এর’ বিভক্তি।
১১.৪ স্বপ্নের ভেতর সে খাট থেকে পড়েও যায়।
উত্তর: স্বপ্নের—‘এর’ বিভক্তি, ভেতর—অনুসর্গ, সে—'শূন্য' বিভক্তি, খাট—'শূন্য' বিভক্তি, থেকে—অনুসর্গ, পড়েও–‘এও’ বিভক্তি, যায়—‘শূন্য’ বিভক্তি।
১১.৫ সে তার স্বপ্নের কথা আর কাউকে কখনও বলবে না।
উত্তর: সে—শূন্য' বিভক্তি, তার–শূন্য' বিভক্তি, স্বপ্নের—'এর' বিভক্তি, কথা—শূন্য’ বিভক্তি, আর–শূন্য' বিভক্তি, কাউকে—‘কে’ বিভক্তি, কখনও—শূন্য' বিভক্তি, বলবে—‘এ’ বিভক্তি, না—'শূন্য' বিভক্তি।
১২ নীচের বাক্যগুলি থেকে উদ্দেশ্য ও বিধেয় অংশ খুঁজে নিয়ে লেখো।
১২.১ আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভে বিভীষণ দাশ এমু পাখি কথা বলেছিলেন।
উত্তর: উদ্দেশ্য—বিভীষণ দাশ
বিধেয়—আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভে এমু পাখির কথা বলেছিলেন
১২.২ স্কুলের সামনে ধানক্ষেতে রোয়া ধান সবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
উত্তর: উদ্দেশ্য—স্কুলের সামনে ধানক্ষেতে রোয়া ধান
বিধেয়—সবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে
১২.৩ গাঢ় ছাইরঙের বিরাট এক পাখি।
উত্তর: উদ্দেশ্য—গাঢ় ছাইরঙের বিরাট এক পাখি
বিধেয়—উহ্য
১২.৪ তন্ময় হয়ে শুনছিল শংকর।
উত্তর: উদ্দেশ্য—শংকর
বিধেয়—তন্ময় হয়ে শুনছিল
১২.৫ এই খোলামেলা পৃথিবীই সবচেয়ে বড়ো বই।
উত্তর: উদ্দেশ্য—এই খোলামেলা পৃথিবীই
বিধেয়- সবচেয়ে বড়ো বই
১৩ “কথা”, “চোখ” – এই শব্দগুলির প্রত্যেকটিকে দুটি আলাদা অর্থে ব্যবহার করে বাক্যে লেখো।
উত্তর:) কথা (প্রতিশ্রুতি) -রজত তার কথা রাখেনি।
→ কথা (বাক্য)—কী ঘটেছে অল্পকথায় বলুন।
→ চোখ (নয়ন)—পরীক্ষার আগে বইয়ের পাতা থেকে চোখ তোলার।অবসর থাকে না।
→ চোখ (সতর্ক দৃষ্টি)—ছোট্ট ছেলেটিকে চোখে চোখে রাখতে হবে।
১৪. পাঠ্যাংশ থেকে সাধিত শব্দ খুঁজে বের করো।
উত্তর: বঙ্গোপসাগর, প্রকৃতিবিজ্ঞান, সাঁইবাড়ি, ঘোলপুকুর, আকন্দবাড়ি, ত্রিশেক, শঙ্খচিল, বড়োদিঘি, মাস্টারমশাই, পড়াশুনো,
ধানক্ষেত, বাজপাখি, পঞ্চানন, বাসস্থান, পর্বতমালা, দৌড়বাজ, কোত্থেকে, ক্লাসসুদ্ধ, সেনাপতি, কুক্ষণ, ঘরদোর, সাবধানে,
জামাকাপড়, তন্ময়, মাছরাঙা, হাঁড়িচাচা।
১৫ নীচের শব্দগুলি দিয়ে বাক্য তৈরি করে একটি অনুচ্ছেদের রূপ দাও: গুঁড়ো, প্রকৃতি, জানলা, ডানা, ছায়া, শব্দ, স্বপ্ন, খোলামেলা।
উত্তর: বাইরে হাওয়ায় বৃষ্টির গুঁড়ো উড়ে বেড়াচ্ছে। জানলা দিয়ে একমনে তাকিয়ে দেখছে ঝিমলি। প্রকৃতি যেন রোজ নতুন নতুন সাজে এসে হাজির হয়। গাছে বসা সবুজ টিয়ার ডানায় মুক্তোর মতো বিন্দু বিন্দু জল। ঝিমলির মনে হয় বাদল মেঘের
ঘন ছায়া পড়ে দিনের বেলাতেই যেন অন্ধকার নেমেছে। সে তন্ময় হয়ে শোনে বৃষ্টির শব্দ। খোলামেলা প্রকৃতির ছোঁয়ায় ঝিমলি গড়ে তোলে কল্পনার এক অপূর্ব পৃথিবী। তার মনে হয়, সে যেন একটা সুন্দর স্বপ্ন দেখছে।
১৬ নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো।
১৬.১ “পাগলা বাতাসে তার ঢেউয়ের গুঁড়ো সবসময়ে উড়ে।আসছে।”— এখানে বাতাসকে ‘পাগলা' বলা হল কেন ?
উত্তর: আকন্দবাড়ি গ্রামের মাত্র পাঁচ-সাত মাইলের মধ্যেই বঙ্গোপসাগরের অবস্থান। সমুদ্রের খুব কাছে অবস্থিত হওয়ায় এখানকার বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ স্বভাবতই বেশি। বাতাসে যেন সবসময়ই সমুদ্রের হাওয়ার প্রবল দাপট অনুভব করা যায়৷ তাই মৃদুমন্দ নয়, বাতাসের গতি এখানে উত্তাল, এলোমেলো ও।খামখেয়ালি। সেই কারণেই আকন্দবাড়ি অঞ্চলের বাতাসকে পাগলা বলা হয়েছে।
১৬.২ “বিভীষণ দাশ এমু পাখির কথা বলছিলেন।”—গল্পের ‘বিভীষণ দাশ’-এর পরিচয় দাও। এমু পাখি ছাড়া গল্পে আরকোন্ পাখির প্রসঙ্গ এসেছে?
উত্তর: বিভীষণ দাশের পরিচয়: আলোচ্য গল্পে বিভীষণ দাশ আকন্দবাড়ি স্কুলের প্রকৃতিবিজ্ঞানের শিক্ষক। ছাত্ররা তাঁকে মাস্টারমশাইয়ের পরিবর্তে তাড়াতাড়িতে ‘মাসাই' বলে ডাকে।
কড়া মেজাজের মোড়কে সংবেদনশীল মন: সাধারণভাবে তাঁকে কড়া মেজাজের মানুষ বলে মনে হলেও গল্পের শেষের দিকে তাঁর মধ্যে লুকিয়ে থাকা একটি সংবেদনশীল ও সহানুভূতিপূর্ণ মনের
পরিচয় পাওয়া যায়।
উদারমনা: শংকরের দেওয়া এমু পাখির বর্ণনা শুনে বিভীষণ দাশ প্রথমে বিরক্ত হন। কিন্তু পরে উদার মনের পরিচয় দিয়ে প্রকৃত শিক্ষকের মতোই তিনি শংকরকে বুঝিয়ে দেন প্রকৃত শিক্ষা কাকে বলে। তিনি যথার্থভাবেই পৃথিবীকে ‘খোলামেলা বই আখ্যা দিয়ে বলেন যে, চারপাশের পৃথিবীকে দু-চোখ ভরে দেখাই হল সবচেয়ে বড়ো পড়াশোনা।
শেষের কথা: এভাবেই কোমলে- কঠোরে মেশানো বিভীষণ দাশ চরিত্রটি আদর্শ শিক্ষক চরিত্রের মর্যাদা পায়।
→ নানান পাখির প্রসঙ্গ: এমু পাখি ছাড়াও আলোচ্য গল্পে শঙ্খচিল, বাজ পাশাপাশি হাঁড়িচাচা, তিতির, কাক, পানকৌড়ি, ডৌখোল, মাছরাঙা প্রভৃতি পাখিরও প্রসঙ্গ এসেছে।
১৬.৩ “শংকর বুঝল, কোথাও একটা বড়ো ভুল হয়ে যাচ্ছে।” কে এই শংকর? তার স্বভাবের প্রকৃতি কেমন? তার যে কোথাও একটা বড়ো ভুল হয়ে যাচ্ছে—এটা সে কীভাবে বুঝতে পারল ?
উত্তর: শংকরের পরিচয়: শংকর সেনাপতি অভিমন্যু সেনাপতির ছেলে। সে আকন্দবাড়ি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক ভাবুক প্রকৃতির
ছাত্র।
স্বভাবের প্রকৃতি: শংকর স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। সে ভাবুক ও ভীষণ কল্পনাপ্রবণ। প্রকৃতি ও পাখিদের প্রতি তার বিশেষ ভালোবাসা
রয়েছে। তার একান্ত নিজস্ব ভাবনা দিয়ে মনের মধ্যে সে তৈরি করে নেয় অবাক করা অন্য আর-এক পৃথিবী। তার সন্ধান সে ছাড়া আর
কেউই পায় না ।
শংকরের উপলব্ধি: একদিন ক্লাস চলাকালীন প্রকৃতিবিজ্ঞানের শিক্ষক বিভীষণ দাশ এমু পাখি সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। কিন্তু শংকর তখন একমনে জানলা দিয়ে বাইরের
নারকেল গাছের মাথার ওপর দিয়ে ভেসে বেড়ানো শঙ্খচিলদের দিকে তাকিয়েছিল। তার অমনোযোগিতার বিষয়টি বিভীষণ মাস্টারমশাইয়ের নজরে এলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করেন, “আমি কী পড়াচ্ছি বলো তো?” তখন শংকর “এমু পাখি মাস্টারমশাই” বলে ঠিক উত্তরটিই দেয়। কিন্তু এরপর সে এমু পাখি সম্বন্ধে সম্পূর্ণ ভুল তথ্য জানায়। শংকর বলে যে, সে নাকি ঘোলপুকুরে বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছের ডালে এমু পাখিকে এসে বসতে
দেখেছে! শংকরের এই মনগড়া উত্তরে বিভীষণ মাস্টারমশাই বিদ্রুপের সুরে শংকরকে জিজ্ঞাসা করেন যে, সবেদা গাছের ডালে বসা সেই এমু পাখি দেখতে কেমন। তখনই শংকর বুঝতে পারে, তার কোথাও একটা বড়ো ভুল হয়ে যাচ্ছে।
১৬.৪ এমু পাখির যে বর্ণনা শংকর দিয়েছিল তার সঙ্গে পাখিটির মিল বা অমিল কী লেখো।
উত্তর: আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভের ছাত্র শংকর প্রকৃতিবিজ্ঞানের শিক্ষক বিভীষণবাবুকে তার স্বপ্নে দেখা এমু পাখির বর্ণনা দিয়েছিল। এই বর্ণনার সঙ্গে বিভীষণবাবুর বর্ণনা করা বাস্তবের এমু পাখির মিলের চেয়ে অমিলই বেশি ছিল।
মিল : শংকরের স্বপ্নে দেখা এমু পাখির সঙ্গে বাস্তবের এমু পাখির শুধু আকারের মিল ছিল।
অমিল : দৌড়বাজ এমুর বসবাস আন্ডিজ পর্বতমালায়। তিন বছরে একবার মাত্র দুটো করে বড়ো বড়ো ডিম পাড়ে সে। এই পাখির পক্ষে
অত দূর দেশ থেকে ঘোলপুকুরের বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছের ডালে এসে বসা কিছুতেই সম্ভব নয়। কিন্তু শংকরের স্বপ্নে এমু এসে
বসে ঘোলপুকুরের বড়োদিঘির পাড়ে, সবেদা গাছের ডালে। শংকরের মতে, তার গা ঘন ছাই রঙের। বুকখানি তার বাজ পাখির চেয়েও চওড়া। সে যখন উড়ে যায় তখন তার ডানার ঝাপটানিতে এত জোরে বাতাস কাটার শব্দ হয় যে, অন্য পাখিরা ভয়ে সরে যায়। অথচ বাস্তবে এমু পাখি উড়তেই পারে না। সে খুব জোরে দৌড়াতে পারে।
১৬.৫ “এটা কি পঞ্চানন অপেরা পেয়েছ?”—অপেরা' বলতে কী বোঝ ? এখানে অপেরার প্রসঙ্গ এল কেন ?
উত্তর: অপেরা: ‘অপেরা’ বলতে সাধারণত সংগীতপ্রধা।যাত্রাপালাকে বোঝায়। ‘অপেরা’র মূল বৈশিষ্ট্য বা সম্পদই হল এর অতিনাটকীয়তা। বাস্তবের তুলনায় আবেগময় কল্পনাই এখানে বেশি লক্ষ করা যায়।
> অপেরার প্রসঙ্গ: বিভীষণ মাস্টারমশাই শংকরের কাছে এমু।পাখির বর্ণনা জানতে চাইলে শংকর তার কল্পনার ডানায় ভর করে এমু পাখির একটি বর্ণনা দেয়। তার সঙ্গে প্রকৃতিবিজ্ঞানের বইয়ে লেখা বাস্তবের এমু পাখির বিন্দুমাত্র মিল নেই। শংকরের এইরকম।কল্পনাবিলাসে বিভীষণ মাস্টারমশাই বিরক্ত হন। তাঁর মনে হয় গ্রামের পঞ্চানন অপেরার অভিনেতার মতো শংকরও বানিয়ে বানিয়ে সংলাপ বলে যাচ্ছে যা অতিনাটকীয় এবং বাস্তবের সঙ্গে সম্পূর্ণ বেমানান। শংকরের এরূপ ভাবুক ও স্বপ্নবিলাসী স্বভাবটি বোঝাতে গিয়েই অপেরার প্রসঙ্গটি আলোচ্য পাঠ্যাংশে উঠে এসেছে।
১৬.৬ “বলো। বলতেই হবে”–কাকে এ কথা বলা হল ? উদ্দিষ্টকে কোন্ কথা বলতে হবে বলে দাবি জানানো হয়েছে?
উত্তর: উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভের ছাত্ শংকরকে এ কথা বলা হল ।
> উদ্দিষ্টকে বলা কথা: শংকর মাস্টারমশাইয়ের প্রশ্নের জবাবে বলেছিল যে, এমু হল খুব গাঢ় ছাই রঙের চওড়া বুকওয়ালা একটা পাখি। সে এই পাখিটিকে ঘোলপুকুরের বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছের ডালে বসতে দেখেছে। সেই কথা শুনে বিভীষণ মাস্টারমশাই অবাক হয়ে যান। কারণ তিনি জানতেন, এমু পাখির বাসস্থান আন্ডিজ পর্বতমালায়। এমু পাখি মোটেও উড়তে পারে না বরং সে দৌড়বাজ পাখি। সুতরাং, অত দূর থেকে উড়ে এসে ঘোলপুকুরের বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছের ডালে বসা এমু পাখির পক্ষে সম্ভব নয়। তাই শংকরের মুখে এমু পাখির এমন আশ্চর্য বর্ণনা শুনে তিনি রেগে যান।
রেগে গিয়ে তিনি শংকরকে বলেন যে, তাকে বলতেই হবে আন্ডিজ পর্বতমালার দৌড়বাজ এমুকে সে কীভাবে ঘোলপুকুরের সবেদা
গাছে উড়ে এসে বসতে দেখেছে।
১৬.৭ গল্প অনুসরণে আকন্দবাড়ি স্কুলের প্রকৃতিবিজ্ঞান ক্লাসে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: শুরুর কথা: আকন্দবাড়ি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির প্রকৃতি বিজ্ঞানের ক্লাসে শংকর খোলা জানালা দিয়ে অন্যমনস্কভাবে বাইরে তাকিয়েছিল।
কল্পনার জগতে পাড়ি দেওয়া : সে নারকেল গাছের মাথার ওপর দিয়ে ভেসে বেড়ানো শঙ্খচিলদের দেখছিল। দেখতে দেখতে একসময় নারকেল গাছের ওপর দিয়ে উড়ে-চলা শঙ্খচিলের মতো সে-ও মনে মনে বাতাস কেটে উঠে যায় বহু উঁচুতে। ক্লাসের পড়া ফেলে তার মন তখন ঘুরে বেড়ায় স্কুলবাড়ির সামনের সবুজ ধানখেতে।
বাস্তব জগতে ফিরে আসা: মাস্টারমশাইয়ের প্রশ্নে।কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে শংকর তার স্বপ্নে দেখা এমুর বর্ণনা।দেয়। এর সঙ্গে বাস্তবের এমুর একেবারেই মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। মাস্টারমশাই তাতে রেগে যান আর ক্লাসের বাকি ছাত্রদের কাছে শংকর হাসির পাত্রে পরিণত হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতি: সমীরকান্ত নামে শংকরের এক সহপাঠী বলে যে, শংকরের পেটগরমের সমস্যা আছে বলেই সে এমনসব অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে। সবমিলিয়ে প্রকৃতিবিজ্ঞানের ক্লাসে উদ্ভূত পরিস্থিতি শংকরকে চরম লজ্জায় ফেলে দেয়।
অবশেষে: শেষপর্যন্ত অবশ্য মাস্টারমশাই শংকরের প্রকৃতিপ্রেমকে স্বীকৃতি জানান। তিনি তাকে আরও ভালোভাবে প্রকৃতিকে চেনার
উপদেশ দেন। ফলে অবশেষে পরিস্থিতি শংকরের অনুকূলে আসে।
১৬.৮ “স্বপ্নে সে অনেক কিছু জানতে পেরেছে।”—কার স্বপ্ন দেখার কথা বলা হয়েছে? স্বপ্ন দেখে সে কী জেনেছে?
উত্তর: উদ্দিষ্ট ব্যক্তি : প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভের ছাত্র শংকর সেনাপতির স্বপ্ন দেখার কথা বলা হয়েছে।
→ স্বপ্ন দেখে জানা তথ্য: স্বপ্নে শংকর গাঢ় ছাই রঙের বাজ পাখির চেয়েও চওড়া বুকওয়ালা ইয়া বড়ো এমু পাখিকে ঘোলপুকুরে বড়োদিঘির পাড়ে সবেদা গাছের ডালে উড়ে এসে বসে থাকতে দেখেছে। এভাবে সে তার স্বপ্ন আর কল্পনার মাধ্যমে অনেক কিছু জেনেছে। সে জেনেছে, স্বপ্নে বাতাসের রং নীলচে আর বাড়ি-ঘরদোর খয়েরি রঙের। শংকর আরও জেনেছে, ঘোলপুকুরে বড়োদিঘিতে ডুব দিয়ে মাটি তোলার সময় জলের নীচে পোঁতা বাঁশে গা ঘষে গেলেও যেমন ব্যথা লাগে না, তেমনই স্বপ্নেও ধাক্কা লাগলে বা গুঁতো খেলে ব্যথা লাগে না ।
১৬.১ “পাখি দেখার জন্য যখন মাঠে বা বাগানে ঘুরবে”—তখন কীভাবে চলতে হবে ?
উত্তর: পাখি দেখার জন্য যখন মাঠে বা বাগানে ঘুরতে হয় তখন খুব সাবধানে পা টিপে টিপে চলতে হয় যাতে একটুও পায়ের শব্দ না হয়।
পায়ের শব্দে পাখি ভয় পেয়ে উড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া পাখি মূল পাঠ শংকর সেনাপতি দেখার সময় শুকনো পাতার রং কিংবা জলপাই রঙের জামাকাপড় পরা উচিত, কেন-না এই রং গাছের পাতার সঙ্গে মিশে থাকে। ফলে মানুষের উপস্থিতি পাখিরা সহজে টের পায় না। তবে সবচেয়ে ভালো।হয় বেগুনি রঙের জামা পরলে। কারণ, পাখিরা বেগুনি রং দেখতে পায় না।
১৬.১০“তাদের কথা বলতে পারো ?”—এই প্রশ্নের সূত্র ধরে বক্তা- শ্রোতার কথোপকথনের অংশটুকু নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: ‘শংকর সেনাপতি' গল্পের বিভীষণ মাস্টারমশাই ছাত্র।শংকরকে উদ্ধৃত প্রশ্নটি করেছেন। প্রশ্নটিতে তাদের বলতে মাছরাঙা, হাঁড়িচাচা, ডৌখোল, পানকৌড়ি, তিতির প্রভৃতি পাখিদের কথা বলা।হয়েছে। মাস্টারমশাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে শংকর জানায় যে, সে গাছে
গাছে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে এসব পাখি দেখেছে। এই প্রসঙ্গে।বিভীষণ মাস্টারমশাই শংকরকে স্নেহের সঙ্গে বলেন যে, এই খোলামেলা পৃথিবীটাই সবচেয়ে বড়ো বই। এই পৃথিবীকে দু-চোখ ভরে দেখাই সবচেয়ে বড়ো পড়াশোনা। তাই প্রত্যেকেরই উচিত চোখ।মেলে এই পৃথিবীর পাখি, গাছপালা, মেঘ, আলো সব কিছুই মনপ্রাণ ভরে দেখে নেওয়া।
হাতে কলমের বাইরে বাড়তি কিছু প্রশ্ন
১. 'শংকর সেনাপতি' গদ্যের লেখক হলেন-
উত্তর -শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
প্রশ্ন:- বিভীষণ দাশ কোন বিষয়ের ক্লাস নিচ্ছিলেন? (ক) গণিত (খ) ইংরেজি (গ) জীবনবিজ্ঞান (ঘ) প্রকৃতিবিজ্ঞান
উত্তর- প্রকৃতিবিজ্ঞান
প্রশ্ন:--.ক্লা শের ক্লাসে কতজন ছেলেমেয়ে ছিল? (ক) ২০ জন (খ) ৩৫ জন (গ) ১৫ জন (ঘ)
উত্তর-৩০ জন
প্রশ্ন:- “সেদিকে তাকিয়ে একটি ছেলে আনমনা হয়ে পড়েছিল”-ছেলেটি কে? (ক) বিভীষণ দাশ (খ) শংকর (গ)অভিমন্যু (ঘ) সমীরকান্ত
উত্তর-শংংকর
প্রশ্ন:- “ এখানে বাতাসের ভিতরে সবসময় ভিজে জলের ঝাপটা থাকে” —'এখানে' বলতে কোন্ স্থানকে বোঝানো হয়েছে?
(ক)আকন্দবাড়ি (খ) ভেটুরিয়া (গ) সাঁইবাড়ি (খ) দোলপুকুর
উত্তর- আকন্দবাড়ি
প্রশ্ন:-“ঘোলপুকুরে গাব গাছের উঁচু ডাল থেকে ঝাঁপ দিচ্ছে বড়োদিঘিতে” – কে ঝাঁপ দিচ্ছে? ক) শঙ্খচিল (খ) এমু পাখি (ণ) শংকর (ঘ) বিভীষণ দাশ
উত্তর- শংকর
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন:- আকন্দবাড়ি স্কুলের একজন শিক্ষকের নাম লেখো।
উত্তর- > আকন্দবাড়ি স্কুলের একজন শিক্ষকের নাম হল বিভীষণ দাশ।
প্রশ্ন:: শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় কত সালে কোন্ বইয়ের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন?
উত্তর- শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে ‘শাহাজাদা দারাশুকো' উপন্যাসের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন ।
প্রশ্ন:: শংকর কোন্ স্কুলে পড়ে?
উত্তর -শংকরা আকন্দবাড়ী স্কুলে পড়ে।
প্রশ্ন:“এখানে বাতাসের ভিতর সবসময় ভিজে জলের ঝাপটা থাকে”–ভিজে জলের ঝাপটা থাকার কারণ কী?
উত্তর- আকন্দবাড়ি অঞ্চলটি বঙ্গোপসাগরের খুব কাছে বলে সেখানকার বাতাসে ‘ভিজে জলের ঝাপটা' বা জলীয় বাষ্প থাকে।
প্রশ্ন:: শংকরদের স্কুলবাড়ির ছাদ কীসের তৈরি?
> শংকরদের স্কুলবাড়ির ছাদ টালির তৈরি।
প্রশ্ন:: শংকর স্বপ্নে কীসের মতো ভেসে পড়ে?
উত্তর -এক-একদিন রাত্রে শংকর স্বপ্নে শঙ্খচিলের মতো আকাশে ভেসে পড়ে।
প্রশ্ন:. স্বপ্নে শংকর কোথা থেকে কোথায় ঝাঁপ দেয় ?
উত্তর- স্বপ্নে শংকর ঘোলপুকুরের গাব গাছের উঁচু ডাল থেকে বড়োদিঘিতে ঝাঁপ দেয়।
প্রশ্ন: এমু পাখি ছাড়া উড়তে পারেনা আরও দুটি পাখি নাম বল।
উত্তর- এমু ছাড়াও উড়তে পারে না এমন দুটি পাখি হল পেঙ্গুইন ও কিউই।
না, এমন আরও দুটি পাখির নাম লেখো।
প্রশ্ন:- নারকেল গাছের মাথার ওপর দিয়ে ডানা মেলে কে ভেসে আসছে?
উত্তর-নারকেল গাছের মাথার ওপর দিয়ে ডানা মেলে একটা শঙ্খচিল ভেসে আসছে।
প্রশ্ন:- আকন্দবাড়ি স্কুলে ক্লাস ফাইভে কতজন ছেলেমেয়ে পড়ে ? তারা প্রধানত কোন্ কোন্ গ্রাম থেকে আসে?
উত্তর-→ আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভে জনা ত্রিশেক ছেলেমেয়ে পড়ে।
আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভের ছেলেমেয়েরা ভেটুরিয়া, সাঁইবাড়ি, ঘোলপুকুর ও আকন্দবাড়ি গ্রাম থেকে আসে।
প্রশ্ন:- “সেদিকে তাকিয়ে একটি ছেলে আনমনা হয়ে পড়েছিল।” –এখানে কার কথা বলা হয়েছে? ছেলেটি আনমনা হয়ে পড়েছিল কেন?
→ আলোচ্য উদ্ধৃতিটিতে আকন্দবাড়ি স্কুলের ক্লাস ফাইভের ছাত্র শংকর সেনাপতির কথা বলা হয়েছে।
→ শংকর ক্লাসঘরের জানলা দিয়ে দেখছিল নারকেল গাছের মাথার ওপর দিয়ে ডানা মেলে একটা শঙ্খচিল উড়ছে। শংকর সেই শঙ্খচিল পাখিটিকে দেখতে দেখতে ভাবে, এক-একদিন রাতে সে-ও এই পাখিটার মতোই স্বপ্নে ভেসে বেড়ায়। এইসব ভাবতে ভাবতেই শংকর
আনমনা হয়ে পড়েছিল।
প্রশ্ন:- শংকর কোন্ স্কুলে পড়ে? সেই স্কুলবাড়িটির বর্ণনা দাও।
উত্তর-→ শংকর আকন্দবাড়ি স্কুলে পড়ে।
→ বঙ্গোপসাগরের পাঁচ-সাত মাইলের মধ্যে অবস্থিত আকন্দবাড়ি স্কুল। সেই স্কুলের ছাদে মাটির টালি, দেয়াল ও মেঝে মাটির, বেঞ্চগুলিকাঠের, জানালায় কোনো শিক নেই। সেখানকার জানালা দিয়ে আকাশ দেখা যায়।
প্রশ্ন:- শংকর সেনাপতি' গল্পে 'পঞ্চানন' হল একটি-
ঘ) স্কুলের নাম ক) ছেলের নাম (খ) অপেরার নাম (গ) শিক্ষকের নাম
উত্তর- অপেরার নাম
প্রশ্ন:- “বাজপাখির চেয়েও বড়ো”— কীসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর- এমু পাখির
প্রশ্ন: “সে পাহাড় কোথায় আমি জানি না।”—কোন্ পাহাড়ের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর- আন্ডিজ
প্রশ্ন:- সেনাপতি শংকরের বাবার নাম কী?
উত্তর- অভিমন্যু সেনাপতি।
