ভর দুপুরে || নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী || ষষ্ঠ শ্রেণি || হাতে কলমে প্রশ্নের উত্তর
![]() |
ভরদুপুরে
নীরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী
ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা
ভরদুপুরে কবিতার নামকরণ সার্থকতা আলোচনা করো।
নামকরণের মধ্য দিয়েই কবি বা লেখক পাঠকদের তাঁর রচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটা আগাম আভাস দিয়ে থাকেন। তাই যে-কোনো
সাহিত্যের ক্ষেত্রে নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ‘ভরদুপুরে’ কবিতায় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী গ্রামবাংলার এক নির্জন দুপুরের অলস, শান্ত, ছায়াময় রূপটি ফুটিয়ে তুলেছেন। গ্রীষ্মের প্রখর রোদের তাপ থেকে বাঁচতে ক্লান্ত পথিকদের একটা আশ্রয় চাই। গ্রামের অশ্বত্থ গাছটি ছাতার
মতো পথিকদের ছায়া দান করে। গাছের নীচের নরম গালিচার মতো ঘাসের ওপর পথিকরা আশ্রয় নেয়। দূরে মাঠের মাঝে গোরুবাছুর গুলোকে চরতে দিয়ে ক্লান্ত রাখাল একটা গাছের নীচে শুয়েবিশ্রাম নিচ্ছে। শুয়ে শুয়ে সে নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা দেখছে। নদীর ধারে বাঁধা খড়ভরতি একটা ব্যস্ততাহীন নৌকা গ্রাম্যদুপুরের আলস্যকে যেন আরও বাড়িয়ে তুলেছে। দুপুরের এলোমেলো হাওয়ায় উড়ছে মিহি সাদা ধুলো। লোকজন আলস্যভরে যে যার ঘরে ঘুমোচ্ছে। কবির অনুভব, শুধু মানুষই নয়, সমগ্র বিশ্বপ্রকৃতিই যেন এই নির্জন, অলস দুপুরে তার আঁচল বিছিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছে। কবির মতে খুব কম লোকই বিশ্বপ্রকৃতির এই ঘুমের খবর রাখে। আলোচ্য কবিতায় গ্রামবাংলার এক নির্জন, উদাস দুপুরের অপূর্ব বর্ণনা ফুটে উঠেছে। তাই কবিতাটির নামকরণ ‘ভরদুপুরে’ বিষয় অনুযায়ী সার্থক হয়েছে।
হাতে- কলমে প্রশ্নের উত্তর
১ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।
১.১ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর জন্মস্থান কোথায় ?
উত্তর: নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর জন্মস্থান বাংলাদেশের ফরিদপুরের চান্দ্রা গ্রাম ।
১.২ তাঁর লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর: কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থ হল 'নীল নির্জন ও ‘কলকাতার যীশু'।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও।
২.১ ‘অশথ গাছ’-কে পথিকজনের ছাতা বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: ছাতার মতো অশ্বত্থ গাছটিও পথিকদের রোদ-বৃষ্টির থেকে আড়াল করে বলে তাকে পথিকজনের ছাতা বলা হয়েছে।
২.২ রাখালরা গাছের তলায় শুয়ে কী দেখছে?
উত্তর: রাখালরা অশ্বত্থ গাছের তলায় শুয়ে মাথার ওপরে নীল আকাশে মেঘেদের আনাগোনা দেখছে।
২.৩ নদীর ধারের কোন্ দৃশ্য কবিতায় ফুটে উঠেছে?
উত্তর: নদীর ধারে শুকনো খড়ের আঁটি বোঝাই করা একটা বড়ো নৌকা বাঁধা থাকার দৃশ্য কবিতায় ফুটে উঠেছে।
৩.একই অর্থযুক্ত শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো: তৃণ, তটিনী, গোরক্ষক, পৃথিবী, জলধর।
উত্তর:
প্রদত্ত শব্দ > কবিতার শব্দ
তৃণ > ঘাস
পৃথিবী > বিশ্ব/ভুবন
তটিনী > নদী
জলধর > মেঘ
গোরক্ষক > রাখাল
৪.নীচের বিশেষ্য শব্দগুলিকে বিশেষণে ও বিশেষণ শব্দগুলিকে বিশেষ্যে পরিবর্তিত করো: ঘাস, রাখাল, আকাশ, মাঠ, আদর, গাছ, লোক ।
উত্তর:
বিশেষ্য > বিশেষণ
ঘাস > ঘেসো
আদর > আদুরে
রাখাল > রাখালিয়া
গাছ > গেছো
আকাশ > আকাশি
লোক > লৌকিক
মাঠ > মেঠো
৫.পাশে দেওয়া শব্দগুলির সঙ্গে উপসর্গ যোগ করে নতুন শব্দ তৈরি করো: নদী, আদর, বাতাস।
উত্তর:
উপসর্গ > শব্দ > নতুন শব্দ
উপ > নদী > উপনদী
অনা > আদর > অনাদর
সু > বাতাস > সুবাতাস
৬ . নীচের বাক্য বা বাক্যাংশগুলির থেকে উদ্দেশ্য ও বিধেয় চিহ্নিত করে উদ্দেশ্য অংশের সম্প্রসারণ করো।
৬.১ ওই যে অশথ গাছটি, ও তো পথিকজনের ছাতা ।
উত্তর: উদ্দেশ্য—ওই যে অশথ গাছটি, ও তো
বিধেয়—পথিকজনের ছাতা।
উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ—নদীর ধারের ওই যে বহুদিনের পুরোনো অশথ গাছটি, ও তো
৬.২কেউ কোথা নেই, বাতাস ওড়ায় মিহিন সাদা ধুলো।
উত্তর: প্রথম বাক্যাংশ—কেউ কোথা নেই
উদ্দেশ্য—কেউ
বিধেয়—কোথা নেই
• উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ—গ্রীষ্মের দুপুরে আমাকে রাস্তাটা চিনিয়ে দেওয়ার মতো কেউ
দ্বিতীয় বাক্যাংশ—বাতাস ওড়ায় মিহিন সাদা ধুলো।
উদ্দেশ্য—বাতাস
বিধেয়—ওড়ায় মিহিন সাদা ধুলো।
উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ—ঝোড়ো বাতাস
৬.৩ আঁচল পেতে বিশ্বভুবন ঘুমোচ্ছে এইখানে।
উত্তর: উদ্দেশ্য—বিশ্বভুবন
বিধেয়—আঁচল পেতে এইখানে ঘুমোচ্ছে।
উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ—ভরদুপুরে বিশ্বভুবন-
৭ ‘বিশ্বভুবন' শব্দে 'বিশ্ব' আর 'ভুবন' শব্দ দুটির একত্রউপস্থিতি রয়েছে যাদের অর্থ একই। এমন পাঁচটি নতুন শব্দ তুমি তৈরি করো।
উত্তর:
নতুন শব্দ > প্রথম শব্দ > দ্বিতীয় শব্দ
বলাকওয়া > বলা > কওয়া
দীনদরিদ্র > দীন > দরিদ্র
লোকজন > লোক > জন
হাঁটাচলা > হাঁটা > চলা
কাজকর্ম > কাজ > কর্ম
৮.ক্লিয়ার কাল নির্ণয় করো (কোনটিতে কাজ চলছে ।কোনটিতে বোঝাচ্ছে কাজ শেষ হয়ে গেছে)।
৮.১ চরছে দূরে গোরু বাছুর ।
উত্তর: : চরছে—কাজ চলছে (ঘটমান বর্তমান)
৮.২ দেখছে রাখাল মেঘগুলো যায় আকাশটাকে ছুঁয়ে।
উত্তর: যায়—কাজ চলছে (ঘটমান বর্তমান)
৮.৩ নদীর ধারে বাঁধা কাদের ওই বড়ো নৌকাটি।
উত্তর: বাঁধা—কাজ শেষ হয়ে গেছে (পুরাঘটিত বর্তমান)
৮.৪ বাতাস ওড়ায় মিহিন সাদা ধুলো।
উত্তর: ওড়ায়—কাজ চলছে (ঘটমান বর্তমান)
৮.৫ আঁচল পেতে বিশ্বভুবন ঘুমোচ্ছে এইখানে।
উত্তর:: ঘুমোচ্ছে—কাজ চলছে (ঘটমান বর্তমান)
৯. নীচের বাক্যগুলির গঠনগত শ্রেণিবিভাগ করো (সরল/ যৌগিক /জটিল)।
৯.১ তলায় ঘাসের গালচেখানি আদর করে পাতা।
উত্তর: সরল বাক্য।
১.২ ওই যে অশথ গাছটি, ও তো পথিকজনের ছাতা।
উত্তর: জটিল বাক্য ।
৯.৩ ভরদুপুরে যে যার ঘরে ঘুমোচ্ছে লোকগুলো ।
উত্তর: : সরল বাক্য।
৯.৪ যে জানে, সেই জানে।
উত্তর: জটিল বাক্য।
১০ “ওই যে অশথ গাছটি...” অংশে 'ওই' একটি দূরত্ববাচক নির্দেশক সর্বনাম। এমন আরও কয়েকটি সর্বনামের উদাহরণ দাও। যেমন—ও, উহা, উনি, ওঁরা ইত্যাদি।
উত্তর: উল্লিখিত সর্বনামগুলি ছাড়া আরও কয়েকটি সর্বনাম হল ওটা,
ওগুলো, ওখানে, ওঁকে, ওঁদের ইত্যাদি।
১১. 'পথিকজনের ছাতা' সম্বন্ধপদটি চিহ্নিত করো, কবিতায় থাকা সম্বন্ধপদ খুঁজে লেখো আর নতুন সম্বন্ধপদ যুক্ত শব্দ তৈরি করো। যেমন— গোঠের রাখাল, দুপুরের ঘুম ৷
উত্তর: ‘পথিকজনের ছাতা'—এখানে সম্বন্ধপদটি হল 'পথিকজনের'।
কবিতায় রয়েছে এমন দুটি সম্বন্ধপদ হল—[১] ঘাসের, [২] গাছের। এ ছাড়াও কয়েকটি নতুন সম্বন্ধপদ যুক্ত শব্দ হল—আকাশের, কাগজের ইত্যাদি।
১.২ 'ওই বড়ো নৌকাটি' বলতে বোঝায় একটি নৌকাকে। নৌকার সঙ্গে এখানে 'টি' নির্দেশক বসিয়ে একবচন বোঝানো হয়েছে। এরকম একটি মাত্র একবচনের রূপ বোঝাতে কোন্ কোন্ নির্দেশক ব্যবহৃত হতে পারে, তা উদাহরণ দিয়ে লেখো ।
উত্তর: একবচন বোঝাতে ‘টি' ছাড়া ‘টা’, ‘খানা’, ‘খানি’ ইত্যাদি নির্দেশক ব্যবহৃত হতে পারে। নীচে কয়েকটি উদাহরণের সাহায্যে তা
দেখানো হল—→ টা—ছেলেটা, মেয়েটা, বাড়িটা, জামাটা ইত্যাদি
→ খানা—একখানা, চৌকিখানা, গাড়িখানা ইত্যাদি
→ খানি—একখানি, আসনখানি, মুখখানি ইত্যাদি
১৩ কবিতা থেকে বহুবচনের প্রয়োগ রয়েছে এমন শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো । প্রসঙ্গত, শব্দকে আর কী কী ভাবে আমরা বহুবচনের রূপ দিতে পারি, তা উদাহরণের সাহায্যে বুঝিয়ে দাও ৷
উত্তর: বহুবচনের প্রয়োগ রয়েছে, কবিতা থেকে পাওয়া এমন শব্দগুলি হল –‘গোরুবাছুর’, ‘মেঘগুলো', ‘কাদের’, ‘লোকগুলো’। এ
ছাড়া ‘রা’, ‘সমূহ’, ‘শ্রেণি’, ‘রাশি’, ‘বর্গ’, ‘দল’, শত’, ‘রাজি’, ‘মালা’, ‘পুঞ্জ, ‘বৃন্দ’, ‘মণ্ডলী’, ‘বহু’, ‘গুলি’ ইত্যাদি নির্দেশক যোগ করে বহুবচনের রূপ দেওয়া সম্ভব। নীচে প্রতিটি নির্দেশক প্রয়োগের মাধ্যমে শব্দ গঠন করে বহুবচনের রূপটি দেখানো হল—
→ রা― ছেলেরা
→ শ্রেণি—বৃক্ষশ্রেণি
→ বর্গ—ব্যক্তিবর্গ
→ শত—শতবৰ্ষ
→ মালা— মেঘমালা
- বৃন্দ—অধিবাসীবৃন্দ
-বহু -বহুদিন
→ সমূহ— গ্রন্থসমূহ
→ রাশি—জলরাশি
→ দল—গুন্মদল
→ রাজি—পুষ্পরাজি
→ পুঞ্জ—নক্ষত্রপুঞ্জ
→ মণ্ডলী—অতিথিমণ্ডলী
→ গুলি—গানগুলি
একই শব্দকে পরপর দু-বার ব্যবহার করেও আমরা বহুবচনের রূপ পেতে পারি। যেমন—গাছটি ফুলে ফুলে ঢাকা ।
১৪. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো।
১৪.১ “আঁচল পেতে বিশ্বভুবন ঘুমোচ্ছে এইখানে”— কবির এমন ভাবনার কারণ কী ?
উত্তর: ‘ভরদুপুরে’ কবিতায় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এক অলস, শান্ত গ্রাম্য দুপুরের ছবি এঁকেছেন।
পথিকজনের আশ্রয়স্থল: ছাতার মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে একটা অশ্বত্থ গাছ। তার নীচে ঘাসের গালিচা পাতা। পথিকেরা সেখানে আশ্রয় নেয়। দূরে মাঠের মাঝে গোরুবাছুরগুলোকে চরতে দিয়ে এক রাখাল গাছের নীচে শুয়ে আকাশ দেখছে।
মায়াময় পরিবেশ: নদীর ধারে খড়ের আঁটি।বোঝাই নৌকা রয়েছে। নীল আকাশের বুকে একটি সাদা মেঘের আনাগোনা এবং বাতাসের ধুলো ওড়ানো—সব মিলেমিশে যেন এক উদাস মায়াময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই নির্জনতা সমগ্র।পরিবেশটিকে আরও নিশ্চুপ করে তুলেছে।
ঘুমে আচ্ছন্ন বিশ্বপ্রকৃতি: কবির তাই মনে হয়েছে বিশ্বপ্রকৃতিও যেন সব কিছু ভুলে তার সবুজ আঁচলখানি বিছিয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। মানুষ আর প্রকৃতি যেন একইসঙ্গে পাড়ি দিয়েছে ঘুমের দেশে। তাই কবি লিখেছেন—“আঁচল পেতে বিশ্বভুবন ঘুমোচ্ছে এইখানে।”
১৪.২ ‘ভরদুপুরে' কবিতায় গ্রামবাংলার এক অলস দুপুরের ছবিখুঁজে পাওয়া যায়। কবিতায় ফুটে ওঠা সেই ছবিটি কেমন লেখো।
উত্তর: শুরুর কথা: ‘ভরদুপুরে’ কবিতায় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী একটি আলস্যমাখা শান্ত গ্রাম্য দুপুরের বর্ণনা দিয়েছেন।
পথিকজনের ছাতা: গ্রীষ্মের দুপুরের ছবি আঁকতে গিয়ে প্রথমেই কবি একটি অশ্বত্থ গাছের কথা তুলে ধরেছেন। রোদজলে ছাতা যেমন
মানুষকে রক্ষা করে, তেমনিভাবেই গ্রামের এই গাছটিও দারুণ গ্রীষ্মে পথচলতি মানুষকে ছায়া দান করে।
সবুজ ঘাসের বিছানা: কবির মনে হয়েছে, প্রকৃতি যেন ওই গাছের তলার পথিকদের আরামের জন্য সবুজ ঘাসের বিছানা পেতে রেখেছে। সেখানে শুয়ে রাখালবালক দেখে কেমন করে সাদা মেঘের দল নীল আকাশটাকে ছুঁয়ে উড়ে যাচ্ছে। অলস শান্ত দুপুর : নদীর পাড়ে বাঁধা রয়েছে কাদের একটা খড়বোঝাই বড়ো নৌকা। নির্জন এই কর্মহীন দুপুরে বাতাসে উড়ছে মিহি সাদা ধুলো। এরকম অলস দুপুরবেলা গ্রামের লোকজন যে যার ঘরে গভীর ঘুমে মগ্ন। মায়ার বাঁধনে বিশ্বভুবন: কবির মতে, নিস্তব্ধ দুপুরের আলস্যভরা মায়ার বাঁধনে বিশ্বভুবন বা বিশ্বপ্রকৃতিও যেন ধরা দিয়েছে। তাঁর মনে হয়েছে, এই ভরদুপুরে মানুষের মতো প্রকৃতিও যেন তার সবুজ আঁচলখানি পেতে শান্তিতে ঘুমোচ্ছে।
শেষের কথা: এভাবেই কবি টুকরো টুকরো দৃশ্যের মধ্য দিয়ে।গ্রামবাংলার অলস দুপুরের ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন।
১৪.৩ কোনো-এক ছুটির দিনে দুপুরবেলায় তোমার বাড়ির চারপাশজুড়ে কেমন পরিবেশ সৃষ্টি হয় তা জানিয়ে বন্ধুকে একটি চিঠি লেখো।
উত্তর:
কাজিভাঙ্গা
নদিয়া
তাং: ০৪.০৭.২০২৫
প্রিয় কাজল,
কেমন আছিস? আমাদের স্কুলের গরমের ছুটি শুরু হয়ে গেছে। এত।লম্বা গরমের ছুটি আমার কাছে একঘেয়ে লাগছে। তোদের সঙ্গেও
দেখা হয় না। গল্প করারও কোনো সুযোগ নেই। কী আর করি ? বাড়ির।দক্ষিণে যেখানে আমার ঘর, সেখান থেকে একটা পুকুর দেখা যায়।
সেদিকে তাকিয়েই আমার দিন কাটে। দুপুরবেলায় পুকুরে এমনিতেই।লোকজন কম আসে। দু-একটা পানকৌড়ি আর মাছরাঙা মাঝে মাঝে মাছ ধরতে জলে ঝাঁপ দেয়। পুকুরপাড়ের রাস্তা দিয়ে সারাদিনে।বেশ কয়েকজন ফেরিওয়ালা—ছাতাসারাইওয়ালা, বাসনওয়ালা, আইসক্রিমওয়ালা, পুরোনো জিনিসপত্র কেনার লোক, কাপড়বিক্রেতা।যাওয়া-আসা করে। মাঝেমধ্যে ওদের হাঁকডাক দুপুরের নিঃস্তব্ধতাকে খানখান করে দেয়। কখনো কখনো ডাহুকের ডাকে মনটা কেমন উদাস।হয়ে যায়। তখন তোদের ছাড়া আমার খুব একা একা লাগে । কারণ তুই জানিস, আমার মা-বাবা দুজনেই অফিসে বেরোয়। সেই কারণে স্কুল ছুটি থাকলে আমার ভালো লাগে না । তাই এবার ছুটি শেষ হলেই বাঁচি।
হাতে কলমের বাইরে কিছু প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন: “মিহিন সাদা ধুলো,”—এখানে ‘মিহিন' শব্দের অর্থ হল-
ক) সূক্ষ্ম (খ) স্থূল (গ) বৃহৎ (ঘ) আবরণ
উত্তর- সূক্ষ্ম
প্রশ্ন: -বাতাস কী ওড়ায়?
ঘুড়ি / ধুলো / পাখি / খড়
উত্তর- ধুলো
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন
প্রশ্ন:' ভরদুপুরে' কবিতায় নদীর ধারে বাঁধা নৌকাটি কী কাজে লাগানো হয়?
উত্তর- 'ভরদুপুরে' কবিতায় নদীর ধারে বাঁধা নৌকাটি খড়ের আঁটি বওয়ানো হয় ।
প্রশ্ন: আঁচল পেতে কে ঘুমোচ্ছে?
উত্তর- আঁচল পেতে বিশ্বভুবন অর্থাৎ সমগ্র প্রকৃতিই ঘুমোচ্ছে।
প্রশ্ন: বিশ্বভুবন কী পেতেছে?
উত্তর- আঁচল পেতে
প্রশ্ন: খোলের মধ্যে কী বোঝাই করা ?
উত্তর- নৌকার খোলের মধ্যে খড়ের আঁটি বোঝাই করা।
প্রশ্ন: 'ভরদুপুরে' কবিতায় 'আঁচল' কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর- বিশ্বপ্রকৃতির আঁচল হল গাছপালা, লতাপাতা, ঘাসের আবরণ। এই আঁচল পেতে বিশ্বপ্রকৃতি দুপুরবেলা গভীর ঘুমে মগ্ন হয়।
প্রশ্ন: “যে জানে সে-ই জানে”—কবি এখানে কী জানার কথা বলেছেন ? কেন বলেছেন ?
উত্তর- ভরদুপুরে' কবিতা থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বিশ্বপ্রকৃতির আঁচল পেতে ঘুমিয়ে পড়ার কথা বলেছেন।
কবি বলেছেন যে, গ্রামের নির্জন অলস দুপুরে মানুষই শুধু ঘরের ভেতরে সুখে ঘুমোয় না, বিশ্বপ্রকৃতিও তার সবুজ আঁচলখানি বিছিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু যেসব মানুষের অনুভবশক্তি আছে, তাঁরা-ই কেবল বিশ্বপ্রকৃতির এই ঘুমিয়ে পড়াকে বুঝতে বা অনুভব করতে পারে।
প্রশ্ন: “শুধুই কী আর মানুষ ঘুমোয়,” – কবিতা অনুসারে মানুষ ছাড়া আর কে, কীভাবে ওই সময় ঘুমোতে পারে ?
উত্তর- আলোচ্য অংশে কবি বলতে চেয়েছেন যে, গ্রামবাংলায় ভরদুপুরবেলা মানুষই শুধু ঘুমোয় না; বিশ্বপ্রকৃতিও যেন তার সবুজ আঁচলখানি বিছিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ প্রকৃতির এই তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাবটিকে খেয়াল করতে পারে না। কিন্তু যার অনুভব শক্তি আছে, সে ই শুধু প্রকৃতির এই ঘুমিয়ে পড়ার বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারে।
প্রশ্ন: “নদীর ধারে বাঁধা কাদের”—নদীর ধারে কী বাঁধা রয়েছে? সেটির যে বর্ণনা কবি দিয়েছেন তা তোমার নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর-→ নদীর ধারে নৌকা বাঁধা রয়েছে। নদীর ধারে শুকনো খড়ের আঁটি বোঝাই করা অজানা মানুষদের একটি বড়ো নৌকা বাঁধা রয়েছে। এটি এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে বা শহরে মানুষ ও জিনিসপত্র বওয়ার কাজে লাগে।
প্রশ্ন: বাতাস কী ধরনের ধুলো ওড়ায় ? নির্জন দুপুরে ‘বিশ্বভুবন' কী করছে?
উত্তর→ বাতাস সূক্ষ্ম সাদা ধুলো ওড়ায় ৷
-গ্রীষ্মের ভরদুপুরে গ্রামের রাস্তাঘাটে কোনো লোকজন নেই। সবাই যে-যার ঘরে ঘুমোচ্ছে। তাই চারদিকের নিশ্চুপ ও নিস্তত্ব পরিবেশ দেখে কবির মনে হয়েছে, বিশ্বভুবন বা বিশ্বপ্রকৃতিও যেন এই নির্জন দুপুরে তার সবুজ আঁচলখানি বিছিয়ে ঘুমোচ্ছে।
প্রশ্ন: "খোলের মধ্যে বোঝাই করে ”— কীসের খোলের কথা প্রশ্নোদৃত অংশে বলা হয়েছে? খোলের মধ্যে কী বোঝাই করে ?
উত্তর-→ প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে ‘খোল' বলতে নদীর ধারে বাঁধা নাম-না-জানা কোনো লোকের একটি বড়ো নৌকার খোলকে বোঝানো হয়েছে।
→ ওই নৌকার খোলের মধ্যে রয়েছে শুকনো খড়ের আটি বোঝাই করে।
