ঘাসফড়িং || ষষ্ঠ শ্রেণী || হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
![]() |
ঘাসফড়িং
অরুণ মিত্র
ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা
প্রশ্ন: ঘাসফড়িং কবিতার সারসংক্ষেপ লেখো।
অরুণ মিত্রর লেখা ‘ঘাসফড়িং’ কবিতায় কবি জানিয়েছেন, একটা ঘাসফড়িঙের সঙ্গে তাঁর খুব বন্ধুত্ব হয়েছে। কবির কথায়, এই ভাব না
করে তাঁরা পারতেনই না। ঝিরেঝিরে বৃষ্টির পরে কবি ভিজে সবুজ ঘাসে পা দিতেই তাঁদের এই নতুন আত্মীয়তা শুরু হয়ে যায়। এরপর তার সবুজ মাথাটা তুলে অনেক খেলা দেখায় সেই ঘাসফড়িংটা। তার।কাছ থেকে চলে আসার সময় ভীষণ মন খারাপ হয়ে যায় কবির। তিনি ঘাসফড়িংটিকে বলে আসেন যে, তিনি তার কাছে আবার আসবেন। কবির ঘরের দরজা এখন সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে। আবার এসেছে
বৃষ্টি। এই ঝিরঝির বৃষ্টিতে কবিকে তাঁর কথা রাখার জন্য আবার।যেতেই হবে ভিজে ঘাসের ওপর।
প্রশ্ন: ঘাসফড়িং গল্পের নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো।
উত্তর-নামকরণ হল যে-কোনো সাহিত্যসৃষ্টির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কবিতার ক্ষেত্রেও তাই নামকরণ এক বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
কবিতার শিরোনামের মধ্য দিয়েই পাঠক কবিতার বিষয়বস্তু সম্পর্কে।একটা আভাস পেয়ে থাকেন। ফলে নামকরণের মধ্য দিয়েই কবির।সঙ্গে পাঠকের একটি সংযোগ তৈরি হয়।
‘ঘাসফড়িং’ কবিতায় দেখা যায়, ঝিরঝিরে বৃষ্টির পর কবি সবে ভিজে ঘাসের ওপর পা ফেলেছেন, ঠিক তখনই একটা ঘাসফড়িংয়ের সঙ্গে।বন্ধুত্ব হয়ে গেল তাঁর। পরম আত্মীয়ের মতো সে কবিকে আনন্দ।দিল—তাঁকে তার নাচ দেখাল ৷ একরাশ মন খারাপ নিয়ে ফিরে আসার।সময় কবিও তাকে বলে এলেন যে তিনি আবার আসবেন। এই বেদনা
আসলে সবুজ-সুন্দর প্রকৃতির থেকে বিচ্ছেদের বেদনা। প্রকৃতির এই তুচ্ছ জীবটির সঙ্গে আত্মীয়তা গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে প্রকৃতির প্রতি কবির মনের টান ফুটে উঠেছে।
আবার এক ঝিরঝিরে বৃষ্টির দিনে ওই ঘাসফড়িংকে মনে পড়েছে।কবির। কথা রাখতে তাঁকে ফিরে যেতেই হবে ওই ঘাসফড়িংয়ের কাছে—প্রকৃতির সংস্পর্শে। একটি ছোটো ঘাসফড়িংকে কেন্দ্র করেই।সমস্ত প্রকৃতির প্রতি কবিমনের আকুতি প্রকাশিত হয়েছে। তাই সমগ্র
কবিতাটি জুড়েই ফিরে ফিরে এসেছে ছোট্ট ঘাসফড়িংটির কথা।।সুতরাং বলা যায়, কবিতাটির নামকরণ যথাযথ ও সার্থক হয়েছে।
হাতেকলমে’ প্রশ্নের উত্তর
১ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও ।
১.১ কবি অরুণ মিত্র কোন্ বিদেশি ভাষায় বিশেষজ্ঞ ছিলেন?
উত্তর: কবি অরুণ মিত্র ফরাসি ভাষায় বিশেষজ্ঞ ছিলেন।
১.২ কবি অরুণ মিত্রের লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর: কবি অরুণ মিত্রের লেখা দুটি কবিতার বই হল ‘প্রান্তরেখা” এবং।‘শেষ সরাইখানা’।
২. বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় অংশ আলাদা করে দেখাও।
২.১ ভাব না করে পারতামই না আমরা।
উত্তর: উদ্দেশ্য—আমরা, বিধেয়—ভাব না করে পারতামই না।
২.২ সবুজ মাথা তুলে কত খেলা দেখাল ঘাসফড়িং।
উত্তর: উদ্দেশ্য—ঘাসফড়িং, বিধেয়—সবুজ মাথা তুলে কত খেলা দেখাল।
২.৩ আমার ঘরের দরজা এখন সবুজে সবুজ।
উত্তর: উদ্দেশ্য—আমার ঘরের দরজা, বিধেয় এখন সবুজে সবুজ।
২.৪ ভিজে ঘাসের ওপর আমাকে যেতেই হবে আবার ।
উত্তর: উদ্দেশ্য—আমাকে, বিধেয়—ভিজে ঘাসের ওপর যেতেই হবে আবার।
৩.নীচের শব্দগুলি বাক্যে ব্যবহার করে একটি অনুচ্ছেদ তৈরি করো : ভাব, ভিজে, নতুন, আত্মীয়তা, মনখারাপ, সবুজ, ঝিরঝির।
উত্তর: খোলা মাঠের সঙ্গে আমার ভারি ভাব। বিশেষ করে তার ওপরে গালচের মতো সবুজ ঘাস যখন ভিজে থাকে। ভিজে ঘাসের ওপর পা
দিলে মনে হয় যেন একটা নতুন পৃথিবীর ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। এমন অবস্থায় সমস্ত প্রকৃতির সঙ্গে এক গভীর আত্মীয়তা অনুভব করি।
সমস্ত মনখারাপ নিমেষে উধাও হয়ে যায়। বৃষ্টির ছোঁয়ায় সারা বিশ্ব একেবারে সবুজে পূর্ণ হয়ে ওঠে। সেই ঝিরঝির বৃষ্টিতে খোলা মাঠ
আমাকে সব কিছু ফেলে বাইরে বেরিয়ে ভেজার জন্য নিমন্ত্রণ জানায়।
৪.নীচের বিশেষ্য শব্দগুলিকে বিশেষণে এবং বিশেষণ শব্দগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করো: আত্মীয়তা, ঘাস, সবুজ, নতুন ।
উত্তর: আত্মীয়তা (বি)—আত্মীয় (বিণ)
ঘাস (বি)—ঘেসো (বিণ)
সবুজ (বিণ)—সবুজতা (বি)
নতুন (বিণ)—নতুনত্ব (বি)
৫ নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন করো।
৫.১ সবুজ মাথা তুলে কত খেলা দেখাল ঘাসফড়িং। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর: ঘাসফড়িং সবুজ মাথা তুলল এবং কত খেলা দেখাল।
৫.২ একটা ঘাসফড়িঙের সঙ্গে আমার গলায় গলায় ভাব হয়েছে।
(জটিল বাক্যে)
উত্তর: যার সঙ্গে আমার গলায় গলায় ভাব হয়েছে, সে একটা ঘাসফড়িং।
৫.৩ যেই ঝিরঝির বৃষ্টি থেমেছে অমনি আমি ভিজে ঘাসে পা দিয়েছি। (সরল বাক্যে)
উত্তর: ঝিরঝির বৃষ্টি থামামাত্রই আমি ভিজে ঘাসে পা দিয়েছি।
৫.৪ আমার ঘরের দরজা এখন সবুজে সবুজ। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর: আমার ঘরের দরজা আছে এবং তা এখন সবুজে সবুজ।
৬ নীচের বাক্যগুলি থেকে শব্দবিভক্তি এবং অনুসর্গ খুঁজে নিয়ে লেখো।
৬.১ তার কাছ থেকে চলে আসার সময় আমার কী মনখারাপ।
উত্তর: তার—র' বিভক্তি, কাছ—'শূন্য' বিভক্তি, থেকে—অনুসর্গ,
চলে‘এ’ বিভক্তি, আসার – 'র' বিভক্তি, সময়—'শূন্য' বিভক্তি, আমার—র' বিভক্তি, কী – শূন্য' বিভক্তি, মনখারাপ–শূন্য' বিভক্তি।
৬.২ আমি কথা দিয়ে এসেছি।
উত্তর: আমি—'শূন্য' বিভক্তি, কথা—'শূন্য' বিভক্তি, দিয়ে- অনুসর্গ।
৬.৩ ঝিরঝির বৃষ্টির পর আমি ভিজে ঘাসে পা দিয়েছি।
উত্তর: ঝিরঝির—'শূন্য' বিভক্তি, বৃষ্টির‘র' বিভক্তি, পর—–শূন্য' বিভক্তি, আমি–শূন্য' বিভক্তি, ভিজে—'শূন্য' বিভক্তি, ঘাসে—'এ' বিভক্তি, পা–‘শূন্য' বিভক্তি।
৬.৪ ভিজে ঘাসের ওপর আমাকে যেতেই হবে আবার।
উত্তর: ভিজে—শূন্য' বিভক্তি, ঘাসের –‘এর’ বিভক্তি, ওপর- ‘শূন্য’ বিভক্তি, আমাকে—‘কে’ বিভক্তি, যেতেই—‘তে’ বিভক্তি, আবার—'শূন্য' বিভক্তি।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো।
৭.১ কবির সঙ্গে ঘাসফড়িঙের নতুন আত্মীয়তা কীভাবে গড়ে উঠল?
উত্তর: কোনো এক ঝিরঝিরে বৃষ্টির দিনে বৃষ্টিশেষে কবি ভিজে ঘাসে পা রাখামাত্র তাঁর দেখা হয়ে যায় এক সবুজ ঘাসফড়িঙের সঙ্গে।
ঘাসফড়িংটিও বোধহয় কবির মতোই বৃষ্টিভেজা সবুজ ঘাসের নরম স্পর্শ নেওয়ার জন্য ঘাসে ঘাসে উড়ে বেড়াচ্ছিল। বৃষ্টিভেজা সবুজ ঘাসের মধ্যেই কবির সঙ্গে ঘাসফড়িংটির প্রথম দেখা হল। সেই প্রথম দেখাতেই তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে গেল। কবির মনে হল, এই নতুন বন্ধুত্ব বা আত্মীয়তার উপহারস্বরূপ ঘাসফড়িংটি তার সবুজ মাথা তুলে
কবিকে নানারকম খেলা দেখিয়ে মুগ্ধ করতে চাইছে। এইভাবেই কবির সাথে ঘাসফড়িঙের এক গভীর আত্মীয়তা গড়ে উঠল।
৭.২ কবির কৌতূহল ও ভালোলাগায় ঘাসফড়িং কীভাবে সাড়া দিল বলে তোমার মনে হয় ?
উত্তর: কবি আর ঘাসফড়িঙের প্রথম দেখা হয়েছিল এক বৃষ্টিভেজা দিনে সবুজ ঘাসের ওপরে। ঘাসফড়িংটিরও ভালো লেগেছিল কবিকে। তাই কবির কৌতূহল আর ভালোবাসায় সাড়া দিয়ে ঘাসফড়িংটি তার সবুজ মাথা তুলে কবিকে নানারকম খেলা দেখিয়েছিল। এইভাবে প্রথম দেখাতেই তাঁদের মধ্যে এক গভীর
বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল।
৭.৩ ঘাসফড়িঙের কাছ থেকে চলে আসার সময় কবির মনখারাপ হল কেন বুঝিয়ে দাও ।
উত্তর: খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ঘাসফড়িঙের সঙ্গে কবির এক গভীর বন্ধুত্ব তথা আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ভিজে ঘাসের গালিচায় ঘাসফড়িং তার সবুজ মাথাখানি নেড়ে কবিকে যে শুধু খেলা দেখিয়েই আনন্দ দিয়েছে তা নয়, মাথা দুলিয়ে সে যেন কবিকে বন্ধু হতেও আহ্বান জানিয়েছে। ঘাসফড়িংটি কবির চোখে কেবল একটি পতঙ্গ নয়, সে যেন সমগ্র প্রকৃতির একটি ছোট্ট প্রতীক হয়ে উঠেছে।
আসলে ঘাসফড়িংটির সাথে খেলার ছলে সমগ্র প্রকৃতির সঙ্গেই কবির এক গভীর আত্মীয়তা তৈরি হয়েছিল। তাই ঘাসফড়িঙের কাছ থেকেই
চলে আসার সময় কবির মন ভীষণ খারাপ হয়ে গিয়েছিল।
৭.৪ “বলে এলাম আমি আবার আসব” –পক্তিটির মধ্য দিয়ে কবির কোন্ মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে?
উত্তর: সবেমাত্র বন্ধু হওয়া ঘাসফড়িংর এর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসার সময় কবি কথা দিয়েছিলেন যে, তিনি আবার ফিরে আসবেন।
আসলে কবি সমগ্র প্রকৃতিকেই ওই ঘাসফড়িংটির মধ্যে দেখতে পেয়েছিলেন এবং তার প্রতি টান অনুভব করেছিলেন। ভিজে সবুজ ঘাসে থাকা সবুজ ঘাসফড়িংটির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর মধ্য দিয়ে তিনি যেন সমগ্র প্রকৃতির সঙ্গেই বন্ধুত্ব পাতিয়ে ছিলেন। সেই সম্পর্কের গভীর টানকে অস্বীকার করার ইচ্ছা বা উপায় কোনোটাই কবির ছিল না। যে ঘাসফড়িং সবুজ মাথা তুলে খেলা দেখিয়ে একদিন কবিকে নির্মল আনন্দ দিয়েছিল, সেই ঘাসফড়িং তথা সবুজ প্রকৃতির কাছেই কবি বারবার ফিরে আসতে চান। তাই প্রশ্নে উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটির মধ্য দিয়ে প্রকৃতির প্রতি কবির ভালোবাসা, তার সৌন্দর্যের প্রতি কবির আকর্ষণ প্রকাশ পেয়েছে।
৭.৫ “আমার ঘরের দরজা এখন সবুজে সবুজ।”—কবির এরূপ সবুজের সমারোহ দেখার কারণ কী?
উত্তর: বৃষ্টিমাখা ভিজে ঘাসে পা দেওয়ামাত্রই কবির সঙ্গে সবুজ ঘাসফড়িঙের এক গভীর আত্মীয়তা তৈরি হয়ে গিয়েছিল।
ঘাসফড়িঙের সঙ্গে গড়ে ওঠা এই আত্মীয়তা আসলে প্রকৃতির।সঙ্গেই আত্মীয়তা। এই নতুন বন্ধুত্ব কবির সমস্ত মনকে অভিভূত।করে তুলেছিল। প্রকৃতির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসার কারণেই তিনি চারপাশের সব কিছুর মধ্যে প্রকৃতিকে অনুভব করছিলেন। তাই ঘরের দরজাকেও সবুজ মনে হয়েছিল তাঁর।
৭.৬ “ভিজে ঘাসের ওপর আমাকে যেতেই হবে আবার।”কোন্ ‘ভিজে ঘাসের ওপর' কবিকে ফিরতেই হবে? কেন তিনি অবশ্যই সেখানে যেতে চান ?
উত্তর: ডিজে ঘাসের পরিচয়: এক বৃষ্টিভেজা দিনে সবুজ ভিজে ঘাসের ওপর হেঁটে যাওয়ার সময় কবির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় একটি ঘাসফড়িঙের। কবিকে তাই সেই ‘ভিজে ঘাসের ওপর' ফিরতেই হবে, যেখানে তার বন্ধু ঘাসফড়িংটি তার জন্য অপেক্ষা করছে।
> সেখানে যেতে চাওয়ার কারণ: এক ঝিরঝির বৃষ্টির দিনে কবির সঙ্গে ঘাসফড়িংটির গভীর বন্ধুত্ব বা আত্মীয়তা গড়ে উঠেছিল।
এই কবিতায় ঘাসফড়িং শুধু পতঙ্গ নয়, সে যেন সমগ্র প্রকৃতির প্রতীক হয়ে উঠেছে। ঘাসফড়িংটিকে কবি এতটাই ভালোবেসে।ফেলেছিলেন যে, তার কাছ থেকে চলে আসার পরও কবির চারপাশটা সবুজ বলেই মনে হচ্ছিল। অর্থাৎ কবির মন প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসায় পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। আসবার সময় কবি ঘাসফড়িংটিকে কথা দিয়ে এসেছিলেন—“আবার আসব।” তাই ঘাসফড়িংরূপী প্রকৃতির টানে প্রকৃতিপ্রেমিক কবি আবার ভিজে ঘাসের ওপর ফিরে যেতে চেয়েছেন।
৭.৭ প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার নিবিড় টান কীভাবে কবি অরুণ মিত্রের ‘ঘাসফড়িং’ কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: শুরুর কথা: কবি কোনো-এক বৃষ্টির দিনে তাঁর সঙ্গে এক ঘাসফড়িঙের দেখা হওয়া ও ঘাসফড়িংটির সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের গল্প
বলেছেন। বন্ধুত্বস্থাপন: বৃষ্টিশেষে ভিজে ঘাসে হাঁটতে গিয়ে কবির।সঙ্গে ওই ঘাসফড়িংটির দেখা হয়েছিল। এরপর খুব তাড়াতাড়িই।ঘাসফড়িংটির সঙ্গে তাঁর গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠল। ঘাসফড়িংটি তার সবুজ মাথা তুলে নতুন বন্ধুকে অনেক খেলা দেখাল। কিন্তু তাকে বিদায় জানানোর সময় এলে কবির মন গভীর দুঃখে ভরে গেল। তাই চলে আসার আগে কবি তাকে কথা দিলেন যে, বৃষ্টির দিনে তিনি আবার ঘাসফড়িংটির সঙ্গে দেখা করতে আসবেন। কবিতার শেষে কবি সেই কথা রাখার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কস্থাপন: সবুজ ঘাসফড়িঙের সঙ্গে আত্মীয়তার মধ্য দিয়ে।আসলে কবির সঙ্গে প্রকৃতির এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সবুজ প্রকৃতির ছোঁয়ায় তাঁর মন ভরে উঠেছিল নির্মল আনন্দে। কবিকে সবুজ প্রকৃতির আশ্রয় ছেড়ে কাজের জগতে ফিরতে হলেও প্রকৃতির সঙ্গে তাঁর আত্মীয়তা আসলে চিরকালের। তাই তিনি কথা দেন বর্ষার দিনে প্রকৃতির অপরূপ সবুজ রূপ উপভোগ করতে তিনি ফিরে আসবেন
ঘাসফড়িংটির কাছে।শেষের কথা; এইভাবে ঘাসফড়িঙের মধ্য দিয়ে কবির প্রকৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন: ঘাসফড়িঙের সঙ্গে কার গলায় গলায় ভাব হয়েছিল?
উত্তর-ঘাসফড়িংয়ের সঙ্গে কবির গলায় গলায় ভাব হয়েছিল।
প্রশ্ন: কেমন দিনে কবির সঙ্গে ঘাসফড়িঙের প্রথম দেখা হয় ?
উত্তর- এক ঝিরঝিরে বৃষ্টির দিনে কবির সঙ্গে ঘাসফড়িঙের প্রথম দেখা হয়।
প্রশ্ন: কবির সঙ্গে ঘাসফড়িঙের আত্মীয়তা কখন গড়ে উঠল?
উত্তর-এক বর্ষার দিনে ঝিরঝিরে বৃষ্টির পর কবি যখন ভিজে সবুজ ঘাসে পা রেখেছেন তখনই তাঁর সঙ্গে ঘাসফড়িঙের আত্মীয়তা গড়ে উঠল।প্রশ্ন: ঘাসফড়িং কবিকে কীভাবে খেলা দেখাল?
উত্তর- ঘাসফড়িং তার সবুজ মাথা তুলে কবিকে খেলা দেখাল।
প্রশ্ন: ঘাসফড়িঙের গায়ের রং কী?
উত্তর- ঘাসফড়িঙের গায়ের রং সবুজ।
প্রশ্ন: কবি তাঁর ঘরের দরজায় কোন রং দেখতে পান?
উত্তর- কবি তাঁর ঘরের দরজায় শুধু সবুজ রঙের সমারোহ দেখতে পান।
প্রশ্ন: কবি অরুণ মিত্র যুক্ত ছিলেন এমন একটি পত্রিকার নাম লেখো।
উত্তর- কবি অরুণ মিত্র যুক্ত ছিলেন এমন একটি সাহিত্য পত্রিকা হল 'অরণি'।
প্রশ্ন: “ঝিরঝির বৃষ্টির পর আমি ভিজে ঘাসে পা দিয়েছি”–এর পরের লাইন লেখো।
উত্তর- প্রশ্নে প্রদত্ত পঙ্ক্তিটির পরের লাইনটি হল—“অমনি শুরু হয়ে গেল
আমাদের নতুন আত্মীয়তা।”
প্রশ্ন: ঘাসফড়িং' কবিতার কবি কে?
উত্তর-ঘাসফড়িং' কবিতার কবি হলেন অরুণ মিত্র।
প্রশ্ন - “বলে এলাম আমি আবার আসব।”—এই বক্তব্যে কবির কোন্
মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে?
প্রশ্ন; "ভিয়ে ঘাসের ওপর আমাকে যেতেই হবে আবার " কেন ভিজে
ঘাসের ওপর কবিকে ফিরতেই হবে?
উত্তর- ঘাসফড়িংটির সঙ্গে কবির গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল এবং তিনি
তাকে কথা দিয়েছিলেন, “আবার আমি আসব।” তাই কথা রাখতে ভিজে ঘাসের ওপর দিয়ে কবিকে ঘাসফড়িংটির কাছে ফিরতে হবে।
প্রশ্ন: ঘাসফড়িংঙের কাছ থেকে চলে আসার সময় কবির মন কেমন। ঘাসফড়িঙের কাছ থেকে চলে আসার সময় কবির মন খুব খারাপ ছিল ?
১৩. সবুজ মাথা তুলে কে, কত খেলা দেখাল ?
উত্তর> সবুজ মাথা তুলে একটা ঘাসফড়িং অনেক খেলা দেখল?
উত্তর-'ঘাসফড়িং' কবিতায় কবি অরুণ মিত্র জানিয়েছেন যে, ঝিরঝিরে বৃষ্টির পর ভিজে ঘাসে পা রাখতেই তাঁর সঙ্গে একটি ঘাসফড়িঙের আলাপ হয়। সেই ঘাসফড়িং নিজের সবুজ মাথা তুলে নানান খেলা দেখিয়ে৷ কবিকে আনন্দ দিয়েছিল।
প্রশ্ন: ' "আমি কথা দিয়ে এসেছি”–উদ্ধৃত অংশটি কার, কোন্ কবিতার অংশ? কে কাকে কী কথা দিয়ে এসেছেন ?
→ উদ্ধৃত অংশটি কবি অরুণ মিত্রর 'ঘাসফড়িং' কবিতার অংশ।
উত্তর→ ঝিরঝিরে বৃষ্টির পর সবুজ ঘাসে পা দিয়েই একটি ঘাসফড়িঙের সঙ্গে কবির বন্ধুত্ব হয়। তার কাছ থেকে চলে আসার সময় কবি ওই
ঘাসফড়িংকে কথা দিয়ে এসেছিলেন যে, তিনি পরে অবশ্যই আবার তার কাছে যাবেন।
প্রশ্ন: '“বলে এলাম”বক্তা কে ? বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ কী ?
অথবা, “বলে এলাম আমি আবার আসব”–এই পঙ্ক্তিটির মধ্যে দিয়ে কবির কোন্ মনের ভাবটি ফুটে ওঠে ?
→ প্রশ্নোদ্ধৃত পঙ্ক্তিটির বক্তা কবি অরুণ মিত্র।
উত্তর→ এক ঝিরঝিরে বৃষ্টির দিনে ভিজে সবুজ ঘাসে পা রাখার পর এক ঘাসফড়িঙের সঙ্গে কবির বন্ধুত্ব হয়। ওই ঘাসফড়িং খেলা দেখিয়ে
কবিকে আনন্দ দেয়। তবে কর্মব্যস্ততার কারণে বিদায় নেবার সময় একরাশ মনখারাপ নিয়ে ওই ঘাসফড়িংকে কবি বলে আসেন যে তিনি আবার তার কাছে যাবেন।
প্রশ্ন: 'মাসফড়িঙের সঙ্গে কার, কীভাবে ভাব হয়ে গেল?
উত্তর- এক ঝিরঝির বৃষ্টির দিনে ঘাসফড়িঙের সঙ্গে কবির দেখা হয়েছিল। সেদিন কিরঝিরে বৃষ্টির পর কবি যখন ভিজে সবুজ ঘাসে পা রেখেছিলেন, তখনই ওই ঘাসফড়িংটির সঙ্গে তাঁর ভাব হয়ে গিয়েছিল। প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসাই কবি ও ঘাসফড়িংটির মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিল।
প্রশ্ন: ' “এই আবার ঝিরঝির বৃষ্টি”——আবার' শব্দটি কবি ব্যবহার করেছেন কেন ?
উত্তর→ এক ঝিরঝিরে বৃষ্টির দিনে সবুজ ঘাসে পা রাখার পর একটি ঘাসফড়িঙের সঙ্গে কবির বন্ধুত্ব হয়। ফিরে আসার সময় অত্যন্ত মনখারাপের।সঙ্গে কবি তাকে কথা দেন যে তিনি আবার আসবেন। পরে অন্য একটি ঝিরঝিরে বৃষ্টির দিনে কবির সেই ঘাসফড়িংটির কথা মনে পড়ে যায়। আগের সেই ঝিরঝিরে বৃষ্টির দিনটির কথা মনে করেই কবি ‘আবার' শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
. আমার কী মনখারাপ”–কার, কেন এই মনখারাপ ?
* অরুণ মিত্রের লেখা 'ঘাসফড়িং' কবিতায় এই মনখারাপ কবির।
একদিন ঝিরঝির বৃষ্টির পর সবুজ ঘাসে পা দিতেই এক ঘাসফড়িঙের সঙ্গে কবির গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠল। ঘাসফড়িঙের সঙ্গে কবির এই আত্মীয়তা বা ভালোবাসা আসলে প্রকৃতির প্রতিই ভালোবাসা। কিন্তু কবিকে তো তাঁর কাজের জগতে ফিরতেই হবে। প্রকৃতির সান্নিধ্য
ছেড়ে যেতে হচ্ছে বলেই কবির এত মন খারাপ।
