তুমি যে ছেলে খেপাবার সদ্দার। এমন কথা বলার কারন কি? ডাকঘর নাটক। দ্বাদশ শ্রেণী
![]() |
প্রশ্ন:- “তুমি যে ছেলে খেপাবার সদ্দার।”—এমন কথা বলার কারণ কী?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথের 'ডাকঘর' নাটকে মাধবদত্ত ঠাকুরদা সম্পর্কে এমন কথা বলেছেন। রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন নাটকে এই ঠাকুরদা চরিত্রটি নানাভাবে এসেছে। ‘ডাকঘর’ নাটকে অমল রোগে-অসুখে জীর্ণ একটি শিশু। শারীরিক ও মানসিক ব্যাধিতে জর্জরিত হয়ে যখন সে ম ত্যুর দোরগোড়ায়, তখন সেই বিবর্ণ জীবনে একরাশ মুক্তির হাওয়ার মতো আবির্ভাব ঘটেছে ঠাকুরদার। যাঁর আগমনকে একপ্রস্থ বালাই হিসেবেই মনে করেছেন বিষয়ী মাধবদত্ত, তাই
তাঁকে এমন কথা বলতে শুনি। শিশুমনে যাতে খুব সহজেই আকর্ষিত হয়ে যান এমন রূপে হাজির হন ঠাকুরদা। ‘ডাকঘর’ নাটকে তিনি অমলের কাছে আসেন ফকির রূপে। কিন্তু অমলকে তিনি ঘরের বাইরে নিয়ে যাননি বরং ঘরের মধ্যেই রাখার চেষ্টা করেছেন। মাধবদত্ত যখন প্রশ্নোদ্ভূত উক্তিটি করেছেন তখন ঠাকুরদা আশ্বস্ত করার জন্য বলেছেন, ঘরে ধরে রাখবার মতো খেলাও তিনি কিছু জানেন।
অর্থাৎ যিনি ঘরের বাইরে বার করতে জানেন, তিনিই পারেন ঘরের মধ্যে ধরে রাখতে। বদ্ধ জীবনে একরাশ মুক্ত বাতাস সবাই বয়ে আনতে পারে না যেটা পেরেছিলেন ঠাকুরদা। আর তাইতো তিনিই প্রথম রাজার কথা বলেছেন, নানান দেশ দেখার অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন। অমলের কল্পনা প্রবণতা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য হালকা দেশ বা ক্রৌঞদ্বীপের কথা শুনিয়ে রোগাক্রান্ত শিশুর মনে কল্পনার জাল ছড়িয়ে রোগচিন্তার মুক্তি ঘটাতে চেয়েছেন। কিন্তু বিষয়ী, হিসেবি মাধবদত্তের মতো মানুষের কাছে তা ‘ছেলে খেপাবার ধান্দা বলে মনে হয়েছে।
