সুভা || অষ্টম শ্রেণী বাংলা || হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তরয || SUBHA || class 8 bangla ||hate-kalome question answer
সুভা
লেখক -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অষ্টম শ্রেণি বাংলা
হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।
১.১ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত কোন্ পত্রিকায রবীন্দ্রনাথ নিয়মিত লিখতেন?
উত্তর: জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত 'ভারতী' ও 'বালক' পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়মিত লিখতেন।
১,২ ভারতের কোন্ প্রতিবেশী দেশে তাঁর লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয় ?
উত্তর: ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা
‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি' গানটি জাতীয় সংগীত হিসেবে পাওয়া হয়।
২.নীচের ঘরগুলির উত্তর একটি বাক্যে লেখো ।
২.১ সুভার প্রকৃত নাম কী ?
উত্তর: সুভার প্রকৃত নাম সুভাষিণী।
২.২ সুভার বাবা কে ?
উত্তর: সুভার বাবা চণ্ডীপুর গ্রামের সম্পন্ন কৃষক বাণীকণ্ঠ।
২.৩ সুভা কোন্ গ্রামে বাস করত ?
উত্তর৷ সুভা চণ্ডীপুর গ্রামে বাস করত।
২.৪ গল্পে সুভার কোন্ কোন্ বন্ধুর কথা রয়েছে?
উত্তর৷ গল্পে সুভার বন্ধু গাভি সর্বশী ও পাঙ্গুলির কথা রয়েছে।
২ ৫ কে সুভাকে 'সু' বলে ডাকত ?
উত্তর: গোঁসাইদের ছোটো ছেলে প্রতাপ সুভাকে ‘সু’ বলে ডাকত।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
৩.১ “সে নির্জন দ্বিপ্রহরের মতো শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন” – সুভা সম্পর্কে এরকম উপমা লেখক ব্যবহার করেছেন কেন?
উত্তর: উপমা ব্যবহারের কারণ : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘সুভা' গল্পের মূল চরিত্র মূক বালিকা সুভাষিণী সম্পর্কে প্রশ্নোদ্ধৃত উপমাটি ব্যবহার
করেছেন। জন্ম থেকেই সুভার ভাববিনিময়ের ভাষা ছিল তার বড়ো বড়ো কালো চোখের দৃষ্টি। সেইসঙ্গে তার মুখে ফুটে উঠত নানান অনুভূতি। সুভার চোখের ভাষা ছিল অসীম, উদার এবং অতলস্পর্শ গভীর—অনেকটা স্বচ্ছ আকাশের মতো। সুভার মধ্যে প্রকৃতির মতো নির্জনতা ও গভীরতা লক্ষ করেই বালক-বালিকারা তাকে ভয় করত এবং তার খেলার সাথি হতে চাইত না। তাই সে ছিল সঙ্গীহীন। নির্জন দুপুর যেমন নিঃস্তব্ধ, সুভাও ছিল সেরকমই শব্দহীন। সেই কারণেই লেখক তাকে নির্জন দুপুরের মতো 'শব্দহীন' এবং 'সঙ্গীহীন' বলেছেন। আলোচ্য উপমাটিতে সুভার
প্রকৃতিগত গভীরতা ও নিঃসঙ্গতার দিকটিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
৩.২ চণ্ডীপুর গ্রামের বর্ণনা দাও।
উত্তর। গ্রামের বর্ণনা: 'সুভা' গল্পে সুভার বাবা বাণীকণ্ঠের বাড়ি বাংলাদেশের চণ্ডীপুর গ্রামে। গ্রামটির একপাশ দিয়ে কলকল শব্দে বয়ে
চলেছে একটি ছোটো সরু নদী। নদীর দু-পাশে লোকালয় এবং গাছের ছায়ায় ঘেরা উঁচু তটভূমি। নদীর কলধ্বনি, মানুষের কোলাহল, মাঝির গান, পাখির ডাক, গাছের মর্মরধ্বনি—এই সবই গ্রামটিকে সদাচঞ্চল করে রেখেছে।
৩.৩ সুভার সঙ্গে সর্বশী ও পাঙ্গুলির সম্পর্ক কীরকম ছিল?
উত্তর৷ সুভাব সঙ্গে সর্বশী ও পাঙ্গুলির সম্পর্ক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'সুভা' গল্পের বোবা মেয়ে সুভার সঙ্গে তার সমবয়সি ছেলেমেয়েরা
খেলতে আসত না। তাই তার বাড়ির গোয়ালের দুটি গাভি সর্বশী ও গাঙ্গুলির সঙ্গে সুভার এক নিবিড় বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। মানুষের মুখের
ভাষার চেয়ে তার কথাহীন করুণ সুর গাভি দুটির কাছে বেশি বোধগম্য ছিল। সুভা কখনও তাদের নাম ধরে ডাকতে পারেনি। তবু তার পায়ের শব্দ সর্বশী আর পাঙ্গুলির অত্যন্ত পরিচিত ছিল। সুভার বাক্যহীন দৃষ্টিতে স্নেহ, শাসন বা মিনতির এক গভীর ভাষা ফুটে উঠত। সেই ভাষা মানুষ তেমনভাবে না বুঝলেও তা সহজেই বুঝে নিত অবলা এই গাভি দুটি। দিনের মধ্যে অন্তত তিনবার গোয়ালঘরে গিয়ে সুভা তাদের আদর করে আসত এবং তারাও সুভার ভালোবাসার প্রত্যুত্তর দিত। এ ছাড়া অনিয়মিত যাতায়াত তো ছিলই। ঘরে কারোর কথা খারাপ লাগলে সান্ত্বনা লাভের জন্যও সুভা সময়ে অসময়ে তাদের কাছে গিয়ে উপস্থিত হত।
৩.৪ “এইজন্য প্রতাপ সুভার মর্যাদা বুঝিত”—প্রতাপের কাছে সুভা কীভাবে মর্যাদা পেত, তা গল্প অবলম্বনে লেখো।
উত্তর: মর্যাদা লাভ: চণ্ডীপুর গ্রামের গোঁসাইদের অকর্মণ্য ছোটো ছেলেটির নাম প্রতাপ। ছিপ ফেলে মাছ ধরা ছিল প্রতাপের প্রধান শখ। সময়
কাটানোর জন্য প্রায়ই বিকেলে সে নদীতীরে মাছ ধরত। তখন সুভার সঙ্গে তার দেখা হত। প্রতাপ সব কাজেই সঙ্গী খুঁজত। তার মাছ ধরার সঙ্গী হিসেবে বোবা মেয়ে সুভাই শ্রেষ্ঠ ছিল। এজন্যই প্রতাপের কাছে সুভার মর্যাদা ছিল। আর তার সেই অনুভূতি বোঝানোর জন্য সে আদর করে
সুভাকে ‘সু’বলে ডাকত।
৩.৫ “তাহাদের জাতি ও পরকাল রক্ষা হইল।”—কাদের সম্পর্কে এ কথা লেখক বলেছেন? তাঁর এরূপ মন্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ : প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘সুভা' শীর্ষক ছোটোগল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য অংশে ‘তাহাদের’
বলতে সুভার বাবা বাণীকণ্ঠ ও মায়ের কথা বোঝানো হয়েছে।
» মন্তব্যের কারণ: সুভা ছিল তার বাবা-মায়ের জন্য ভয়ানক দুশ্চিন্তার কারণ। সে বোবা হলেও তার যে অনুভব করার শক্তি রয়েছে—এই কথাটাই অনেকে বুঝত না। সুভাব সামনেই সবাই তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করত। সুভার বাবা বাণীকণ্ঠ অবশ্য তাকে তাঁর অন্য মেয়েদের চেয়ে একটু বেশিই ভালোবাসতেন।
সুভার বয়স বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে বাড়ির লোকের দুশ্চিন্তাও বাড়তে থাকল। মেয়ের বিয়ে দিতে না পারলে গ্রামে তাদের একঘরে করা হবে, এমনও শোনা গেল। সুভার প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার অভিভাবকেরা তাকে জোর করে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিলেন।
লেখক তাহাদের জাতি ও পরকাল রক্ষা হইল' বলতে সুভাব বিয়ে দিয়ে সামাজিক অসম্মানের হাত থেকে তার বাবা-মায়ের মুক্তি পাওয়ার
প্রসঙ্গটিই নির্দেশ করেছেন। এই বাক্যটিতে গ্রামের অন্ধসংস্কারাচ্ছন্ন রীতিনীতির প্রতি লেখকের তীব্র ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও ব্যঙ্গ প্রকাশ পেয়েছে।
৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।
৪.১ “প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়।”—মানুষের ভাষার অভাব কীভাবে প্রকৃতি পূরণ করতে পারে তা আলোচনা করো।
উত্তর: ভাষার অভাব পূরণে প্রকৃতি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'সুভা' গল্পে স্বয়ং লেখক প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন। মূক বালিকা সুভার ভাষার
অভাব যেন মুক বিশ্বপ্রকৃতি তার বিচিত্র শব্দের মাধ্যমে পূরণ করে দেয়। নদীর কলকল শব্দ, মানুষের কোলাহল, মাঝির গান, পাখির ডাক, গাছের পাতার খসে পড়ার শব্দ—এই সমস্ত একসাথে মিশে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো সুভার মনের উপকূলে এসে ভেঙে পড়ে। প্রকৃতির বিচিত্র এই শব্দকে লেখক গল্পে ‘বোবার ভাষা' হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। সুভার দীর্ঘ, আয়ত চোখের ইঙ্গিতের ভাষাকেই রবীন্দ্রনাথ ঝিঁঝিঁর ডাকে আলোড়িত তৃণভূমি থেকে কোনো শব্দই যেখানে পৌঁছোয় না—সেই নক্ষত্রলোক পর্যন্ত লক্ষ করেছেন। মানুষ সুভাকে উপেক্ষা করলেও প্রকৃতি যেন তাকে কাছে ডেকে নিত।
৪.২. সুভার সঙ্গে মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্ব কেমন ছিল তা লেখো।
উত্তর: মনুষ্যেতর প্রাণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'সুভা' গল্পে বোবা মেয়ে সুতার সঙ্গে পরিবারের, গ্রামের মানুষজন বা সমবয়সি
ছেলেমেয়েদের সম্পর্ক বিশেষ গভীর ছিল বলে জানা যায় না। অথচ তাদের গোয়ালঘরের দুটি বোবা পশু অর্থাৎ শাতি সর্বদী ও গাঙ্গুলির সঙ্গে
তার অন্তরশতার ছবি গল্পে ধরা পড়েছে। সুভার মুখে কখনও তারা তাদের নাম শোনেনি, অথচ সুভার পায়ের শব্দেই তারা তার উপস্থিতি টের পেত। তাদের প্রতি সুভার অনুভূতিও তারা স্পষ্ট বুঝত। সারাদিনে নিয়মিতভাবে সুভা তাদের কাছে যাতায়াত করত। তাদের যেমন আদর করে আসত, তেমনই নিজের দুঃখ-কষ্টে সান্ত্বনা খুঁজতেও হাজির হত। গাভি দুটিও তাকে যথাসাধ্য সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করত।
এ ছাড়া ছাগল, বিড়ালছানারাও সুভার প্রতি যথেষ্ট আনুগত্য প্রকাশ করত ।বিশেষত বিড়ালছানাটি দিনেরাতে সুভার কোলে উঠে ঘুমোনোর আয়োজন করত। সুভা তার ঘাড়েপিঠে নরম হাত বুলিয়ে দিলে যে তার ঘুম আসতে
সুবিধা হবে, তা ইঙ্গিতে বলতে চাইত। কিন্তু সর্বশী ও পাঙ্গুলির সঙ্গে সুভার যে আন্তরিকতা গড়ে উঠেছিল, ছাগল বা বিড়ালছানার প্রতি সুভার টান কম ছিল। তাই গল্পে দেখা যায়, নিজের সমগোত্রীয় প্রাণী অর্থাৎ মানুষ অপেক্ষা মনুষ্যেতর প্রাণীদের সঙ্গেই সুভার এক অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে
উঠেছিল।
৪.৩ শুক্লা দ্বাদশীর রাত্রিতে সুভার মনের অবস্থা কেমন ছিল? তার মনের অবস্থা এরকম হওয়ার কারণ কী ?
উত্তর: সুভার মনের অবস্থা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'সুভা' গল্পে শুক্লা দ্বাদশীর রাত্রে সুভা তার শোওয়ার ঘর থেকে বেরিয়ে তার গ্রামের চিরপরিচিত নদীটির পাড়ে নরম ঘাসের বিছানায় লুটিয়ে পড়েছিল। এভাবে লুটিয়ে পড়ে ভাষাহীন সুভা যেন ধরণিকে দু-হাত ধরে বলতে চেয়েছিল, তিনি যেন তাকে গ্রাম ছেড়ে যেতে না দেন। সে যেমন দুই হাত বাড়িয়ে তাকে ধরেছে, মাতা ধরিত্রীও যেন তাকে এভাবেই ধরে থাকেন।
এরকম হওয়ার কারণ : বাবা-মা যে সুভার বিয়ে দিতে চাইছেন তা সুভা বুঝতে পেরেছিল। সে নিজে ভাষাহীন নিশ্চুপ গ্রাম দুপুরের মতো
হলেও অন্যদের মনের ভাব, অনুভূতি সবই বুঝতে পারত। সুভা তাব গ্রামকে, গ্রামের মুক্ত প্রকৃতিকে, পোষা প্রাণীগুলিকে অত্যন্ত ভালোবেসে তাদের অপরূপ মায়ায় জড়িয়ে পড়েছিল। তাই সুভা কোনো মূল্যেই তার শৈশব-কৈশোরের খেলার সঙ্গী এই গ্রামকে ছেড়ে যেতে চায়নি।
৪.৪ গল্পের একেবারে শেষ বাক্যটি গল্পের ক্ষেত্রে কতখানি প্রয়োজন।আলোচনা করো।
উত্তর: 'সুভা' গল্পের শেষ বাক্যটি হল - "এবার তাহার স্বামী চক্ষু এবং কর্ণেন্দ্রিয়ের দ্বারা পরীক্ষা করিয়া এক ভাষাবিশিষ্ট কন্যা বিবাহ করিয়
বাক্যটির প্রয়োজনীয়তা: বাবা-মায়ের সঙ্গে সুভা কলকাতায় আসার পর যার সঙ্গে তার বিয়ের সম্বন্ধ হয়েছিল, সে তার বন্ধুকে নিয়ে একদিন সুভাকে দেখতে আসে। কাঁদতে থাকা সুভাকে পাত্রপক্ষ পছন্দ করেছিল। কিন্তু বিয়ের সপ্তাহখানেকের মধ্যেই সবাই বুঝতে পারে যে, নববধূ কথা বলতে পারে না। কিন্তু এ কথা কেউ বুঝল না যে, এটা তার দোষ নয়। সে কাউকে প্রতারণা করেনি। শ্বশুরবাড়ির কেউ তার চোখের ভাষা বুঝতে পারেনি।
বালিকার কান্না দেখে একপ্রকার খুশি হয়ে যে পার তাকে বিয়ে করেছিল, সে ও সুভার মনের খবর পায়নি। তাই সে দ্বিতীয়বারে যুক্তি বোধের দ্বারা পরিচালিত হয়ে নিজের চোখ কান দিয়ে যাচাই করল এবং কথা বলতে পারে এমন মেয়েই বিয়ে করে আনল। মেয়েসের হেয় করার এই সামাজিক দিকটাই রবীনানাথ গল্পের শেষ বাক্যটিতে ব্যাশের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।
৪.৫ মানুষ ও মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্ব নিয়ো আরও দু-একটি গল্পের নাম লেখো এবং 'সুভা' গল্পটির সঙ্গে তুলনা করো।
উত্তর: গল্পের নাম: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'সুভা' গল্পে যেমন মানুষ এবং মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্বের কথা রয়েছে, তেমনই আরও কয়েকটি গল্প হল তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কালাপাহাড়', প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের 'আদরিণী', শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'মহেশ' 'প্রভৃতি।
কালাপাহাড় গল্পে সম্পন্ন কৃষক বাংলালের তার মহিষদের প্রতি, 'আদরিণী গল্পে বৃদ্ধ জয়রাম মুখোপাধ্যায়ের 'আদরিণী' নামে হাতির প্রতি এবং 'মহেশ গল্পে আমিনা ও তার বাবার বোবা পশু বৃদ্ধ ষাঁড় মহেশের প্রতি অসামান্য ভালোবাসার কথা সাহিত্যে অমর হয়ে রয়েছে।
তুলনা: 'কালাপাহাড়', 'আদরিণী', 'মহেশ'—এই গল্পগুলোতে মনুষ্যেতর প্রাণীগুলিই মুখ্য চরিত্র। মানুষ চরিত্রগুলি যেন পার্শ্বচরিত্র হিসেবে এসেছে।
কিন্তু 'সুভা' গল্পে সুভা-র চরিত্রটিকে ঘিরেই গল্পের বুনট গড়ে উঠে। মনুষ্যেতর প্রাণীর সঙ্গে সুভার ভালোবাসার সম্পর্ক তার চরিত্রটিকেই পাঠকের কাছে সুবোধ্য করে তুলেছে। তবে মানুষ ও অন্যপ্রাণীর সম্পর্কের দিকটি উল্লিখিত গল্পগুলির মতোই 'সুভা' গল্পটিও আবেদনময় হয়ে উঠেেছে।
৫.নিচের বাক্যগুলিকে কর্তা খন্ড এবং ক্রিয়াখন্ড ভাগ করে দেখাও।
৫.১ সে নির্জন দ্বিপ্রহরের মতো শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন।
উত্তর: কর্তা খণ্ড—সে
ক্রিয়া খণ্ড - নিৰ্জন দ্বিপ্রহরের মতো শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন
৫.২ সে যে কাজকর্ম করিয়া সংসারের উন্নতি করিতে যত্ন করিবে, বহু চেষ্টার পর বাপ-মা সে আশা ত্যাগ করিয়াছেন।
উত্তর: কর্তা খখণ্ড–সে
কিয়া-খণ্ড- ত্যাগ করিয়াছেন
নির্ভরশীল বাক্য – যে কাজকর্ম করিয়া সংসারের উন্নতি করিতে যত্ন করিবে।
স্বাধীন বাক্য- বহু চেষ্টার পর বাপ মা সে আশা ত্যাগ করিয়াছেন।
৫.৩ এই বাক্যহীন মনুষ্যের মধ্যে বৃহৎ প্রকৃতির মতো একটা বিজন মহত্ব আছে।
উত্তর। কর্তা খন্ড -এই বাক্যহীন মনুষ্যের মধ্যে
কিয়া পন্ড -বৃহৎ প্রকৃতির মতো একটা বিজন মহত্ব আছে,
৬. নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন করো।
৬.১ সুভা তেঁতুলতলায় বসিয়া থাকিত এবং প্রতাপ অনতি দূরে মাটিতে ছিল ফেলিয়া জলের দিকে চাহিয়া থাকিত। (জটিল বাকা)
উত্তর: সুতা যখন তেঁতুলতলায় বসিয়া থাকিত তখন প্ৰতাপ অনতিদূরে মাটিতে ছিপ ফেলিয়া জলের দিকে চাহিয়া থাকিত।
৬.২ ৰাণীকণ্ঠ নিদ্রা হইতে উঠিয়া শয়নগৃহে তামাক খাইতেছিল। (জটিল বাক্য)
উত্তর৷ বাণীকণ্ঠ যখন নিদ্রা হইতে উঠিল তখন শয়নগৃহে তামাক খাইতে লাগিল ।
৬.৩ বাণীকণ্ঠের ঘর একেবারে নদীর উপরেই। তাহার বাখারির বেড়া, আটচালা, গোয়ালঘর, ঢেঁকিশালা, খড়ের স্তূপ, তেঁতুলতলা, আম,
কাঁঠাল এবং কলার বাগান নৌকোবাহী মাত্রেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। (জটিল বাক্য)
উত্তর৷ বাণীকণ্ঠের ঘর যেহেতু একেবারে নদীর উপরেই, তাই তাহার বাখারি বেড়া, আটচালা, গোয়ালঘর, ঢেঁকিশালা, খড়ের স্তূপ, তেঁতুলতলা,
আম, কাঁঠাল এবং কলার বাগান নৌকোবাহী মাত্রেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
৬.৪ প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়। যেন তাহার হইয়া কথা কয় ।
(সরল বাক্য)
উত্তর: প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দিয়া তাহার হইয়া কথা কয় ।
শেষ-