মাসি পিসি || অষ্টম শ্রেণি বাংলা || হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর||| Masi pisi || class 8 bangla || jate- kalame question answer - school book solver

Friday, 5 September 2025

মাসি পিসি || অষ্টম শ্রেণি বাংলা || হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর||| Masi pisi || class 8 bangla || jate- kalame question answer

 


মাসি পিসি
লেখক- জয় গোস্বামী
অষ্টম শ্রেণী  বাংলা

হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর

১.নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।
১.১ জয় গোস্বামীর লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর: জয় গোস্বামীর লেখা দুটি কবিতা বইয়ের নাম, 'প্রত্নজীব এবং 'বঙ্গবিদ্যুৎভর্তি খাতা'।

১.২ জয় গোস্বামীর লেখা একটি উপন্যাসের নাম লেখো।
উত্তর: জয় গোস্বামীর লেখা একটি উপন্যাস হল 'সেইসব শেয়ালেরা'।

২ নীচের প্রশ্নগুলির অতি-সংক্ষেপে উত্তর দাও |
২.১ “অনেকগুলো পেট বাড়িতে....” – “পেট'-এর আভিধানিক অর্থ কী ? এখানে কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর: আভিধানিক অর্থ: জয় গোস্বামী রচিত 'মাসিপিসি' কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটিতে 'পেট' শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল 'উদর'।
> ব্যবহৃত অর্থ: 'মাসিপিসি' কবিতায় 'পেট' শব্দটি 'সংসারের সদস্য।অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

২.২ “সাত ঝামেলা জোটায়”—এখানে 'সাত' শব্দটির ব্যবহারের কারণ কী ?
উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত 'মাসিপিসি' কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটিতে সাত' শব্দটি 'বহু' বা 'নানান' অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। রেলবাজারে হোমগার্ডদের তৈরি করা নানান ঝামেলার কথা বোঝাতেই 'সাত' শব্দটি কবি ব্যবহার করেছেন।
২.৩ ‘মাহিনা' শব্দটি কবিতায় কী অর্থে ব্যবহৃত। শব্দটির অন্য কোন্-অর্থ তোমার জানা আছে ?

উত্তর: ব্যবহৃত অর্থ:- কবি জয় গোস্বামীর 'মাসিপিসি' কবিতায় 'মাহিনা' শব্দটি 'মাস' অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
অন্য র্থ: মাহিনা' শব্দটি ফরাসি ‘মাহিয়ানা' শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ মাসিক বেতন'। গ্রামা উচ্চারণে শব্দটিকে 'মাহিনা' বা 'মাইনে' শব্দে
পরিবর্তিত হতে দেখা যায় ।

২.৪ কোন্ শব্দ থেকে এবং কী করে ‘জষ্টি' শব্দটি এসেছে?
উত্তর: কবি জয় গোস্বামীর 'মাসিপিসি' কবিতায় ‘জষ্টি' শব্দটি ‘জ্যৈষ্ঠ' শব্দ থেকে অভিশ্রুতির নিয়মে এসেছে। ধ্বনি পরিবর্তনের সূত্র অনুযায়ী শব্দটি এসেছে এভাবে—জ্যৈষ্ঠ > জইষ্ট > জষ্টি।
নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর সংক্ষেপে লেখো।

৩.১ শুকতারাটি ছাদের ধারে, চাঁদ থামে তালগাছে”–এই পঙ্ক্তিটির মাধ্যমে দিনের কোন্ সময়ের কথা বলা হয়েছে? তোমার উত্তরের
পক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর: উল্লিখিত সময়: কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘মাসিপিসি' শীর্ষক কবিতা থেকে উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটির মাধ্যমে ভোরের আলো ফোটার সময়ের কথা বলা হয়েছে।
সপক্ষে যুক্তি :
: ভোরের আকাশে শুকতারার আবির্ভাব ঘটে। অন্যদিকে গানের তালগাছে থেমে যাওয়া অর্থাৎ বিদায় নেওয়ার মধ্য দিয়েও ভোরের ছবি ফুটে ওঠে। এই দুই ঘটনার মধ্য দিয়ে কবি তাই নিশ্চিতভাবে ভোরের বলাই বলতে চেয়েছেন।

৩.২  দু এক ফোঁটা শিশির তাকায় ঘাসের থেকে ঘাসে”–এই
পঙক্তিটিতে যে ছবিটি ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: বর্ণিত চিত্র: জয় গোস্বামী রচিত 'মাসিপিসি' কবিতা থেকে উদ্ধৃত আলোচ্য পঙক্তিটিতে শীতের ভোরে শিশির-ভেজা ঘাসের দৃশ্য বর্ণিত হয়েছে।
ঘাসের মাথার এমনভাবে শিশির জমেছে, যেন মনে হচ্ছে তা একে অপরের দিকে কৌতুকভরে তাকাচ্ছে। ভোরের এই শিশির, রোদ উঠলেই হারিয়ে।যাবে। ততক্ষণে মাসিপিসিরা চালের বস্তা নিয়ে অনেক দূরে চলে যাবেন । রাত থাকতে মাসিপিসিরা ঘুম থেকে উঠে ঘরের সব কাজ সেরে বাইরের কাজে বেরোন, মাঠের শিশির যেন সেই ঘটনারই সাক্ষী হয়ে থাকে।

৩.৩ . “মাস মাহিনার হিসেব তো নেই” – মাস মাহিনার হিসেব নেই কেন?
উত্তর। হিসাব না থাকার কারণ: কঠোর কাজের ধারা: কবি জয় গোস্বামী রচিত 'মাসিপিসি' কবিতায় লালগোলা কিংবা বনগাঁ লোকালে বস্তা  ভর্তি চাল তুলতে আসা মেহনতি মহিলাদের সাল মাহিনার হিসাব থাকে না। এই হিসাব না থাকার মধ্য দিয়ে কবি তাঁদের প্রতিদিনের কঠোর
কাজের ধারাকেই বোঝাতে চেয়েছেন। তাদের কোনো ছুটি বা বিশ্রাম নেই।
একঘেয়েমি জীবন: রোজকার একঘেয়েমি আর জীবনের জটিলতার।তাঁদের যেমন কোনো আনন্দ নেই, তেমনই নেই কোনো অনুষ্ঠানের অর্থ আড়ম্বর। নতুন একটি দিনের কোনো বিশেষ তাৎপর্যও নেই।
উপার্জন: শ্রমজীবী, দরিদ্র, লাঞ্ছিত এই নারীরা পরিবারের সব কাজ সেরেৎবারো মাস অর্থাৎ তিনশো পঁয়ষট্টি দিন রাত ফুরিয়ে ভোর হওয়ার আগেই।অর্থ উপার্জনের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। তাঁদের কাছে ‘সাল’ বা।‘মাসের’ বা বিশেষ কোনো দিনের হিসাব থাকে না ।

৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।
৪.১ “শতবর্ষ এগিয়ে আসে—শতবর্ষ যায়”—এই পক্তিটির মধ্য দিয়ে কবি কী বলতে চেয়েছেন আলোচনা করো।
উত্তর: কবির বক্তব্য: কথামুখ: কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘মাসিপিসি’ কবিতা থেকে প্রশ্নোদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি নেওয়া হয়েছে। গতানুগতিক
জীবনচিত্র: শতবর্ষের এগিয়ে আসা বা শতবর্ষ পার হওয়ার বিষয়টি উল্লেখের মধ্য দিয়ে কবি মাসিপিসিদের গতানুগতিক জীবনের চিত্রটি কবিতায় তুলে ধরেছেন। অভূতপূর্ব উন্নতি: সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সমাজের নানান ক্ষেত্রে দুর্বার গতিতে উন্নতি ঘটছে। কৃষির ক্ষেত্রে, শিল্পের ক্ষেত্রে, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, পরিবহণের ক্ষেত্রে, বিজ্ঞান বা চিকিৎসার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটলেও সমাজের সব ক্ষেত্রের মানুষই তার সুফল লাভ করতে পারছে না। সেই উন্নতি আর অগ্রগতি কেবল ধনী ও শিক্ষিত মানুষের জীবনকেই আরও উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছে। দরিদ্র কিংবা পিছিয়ে-পড়া মানুষের জীবনে এই উন্নতি বা অগ্রগতির কোনো ছাপ পড়ে না।জীবনসংগ্রামে টিকে থাকা: শ্রমজীবী, নিপীড়িত মানুষের জীবনের ছবি কোনো বিশেষ ঘটনায় বা কোনো ঘটনার শতবর্ষ পূর্তিতে বদলায় না।
জীবনসংগ্রামে টিকে থাকার জন্য তাদের দিনরাত্রি কঠোর পরিশ্রম করতেই হয়। কোনো কিছুতেই এর কোনো ব্যতিক্রম দেখা যায় না।

৪.২ ‘মাসিপিসি' কবিতায় এই মাসিপিসি কারা? তাঁদের জীবনের কোন্ ছবি এই কবিতায় তুমি খুঁজে পাও ?
উত্তর: মাসিপিসির পরিচয়: আধুনিক কবি জয় গোস্বামীর লেখা ‘মাসিপিসি' কবিতায় মাসিপিসি হলেন দরিদ্র, শ্রমজীবী মহিলারা। তাঁরা
সংসার চালানোর তাগিদে কাকভোরে বনগাঁ বা লালগোলার মতো বিভিন্ন ট্রেনগুলোতে চালের বস্তা তুলে দেন।
বর্ণিত জীবনচিত্র: কথামুখ: আলোচ্য কবিতায় অসহায়, কঠোর জীবনসংগ্রামী মাসিপিসিদের জীবনের ছবি আঁকা হয়েছে।
কর্মমুখর য়জীবন: রাতের অন্ধকার দূর হয়ে ভোরের আলো ফুটে ওঠার আগেই তাঁরা ঘুম থেকে উঠে পড়েন। শুকতারা যখন ছাদের ধারে এসে থমকে দাঁড়ায়, তালগাছের আড়ালে যখন চাঁদ থেমে যায় অর্থাৎ ভোর হওয়ার কিছু আগে তাঁরা ঘুম থেকে উঠে পড়ে। তারপর তাঁরা গতরাতের পরে থাকায়কাপড়চোপড় কাচতে যান। এইভাবে নিজের হাতে পরিবারের কাজ সামলে যান রেলস্টেশনের দিকে। কোলে-কাঁখের পোঁটলাপুঁটলিতে ও বস্তায় থাকে চাল।
সামান্য রোজগার : পরিবারের অনেকগুলি মানুষ তাঁদের রোজগারের ওপরই নির্ভরশীল। সামান্য রোজগারের তাগিদেই তাঁদের এত পরিশ্রম করা। দুঃসহ পরিশ্রমের পাশাপাশি চলে পুলিশি নজরদারি, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, বিপত্তি। রেলস্টেশনগুলিতে কর্তব্যরত হোমগার্ডদের নানান ঝামেলা তাঁদের পোহাতে হয়।
বেঁচে থাকার সামান্য তাগিদ;- বিশেষ সামাজিক উৎসব-অনুষ্ঠান তাঁদের জীবনে কোনো আলাদা আনন্দ নিয়ে আসে না। অপরিবর্তনীয়, আশাহীন, অনুজ্জ্বল এক পৃথিবীতে তাঁরা নিজেদের বেঁচে থাকার সামান্য তাগিদটুকু নিয়েই দিন কাটান।

৪.৩ 'মাসিপিসি' কবিতার এই মাসিপিসিদের মতো আর কাদের কথা তুমি বলতে পার যাঁদের ট্রেনের উপর নির্ভর করে জীবিকা অর্জন করতে হয় ?
উত্তৰ: ট্রেনে বিচিত্র জীবিকার মানুষজন: কবি জয় গোস্বামীর লেখা 'মাসিপিসি' কবিতায় ট্রেনের উপরে নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহকারী, তথা ট্রেনে চাল তুলতে আসা হতদরিদ্র নারীদের দেখা মেলে। এঁরা ছাড়াও ট্রেনে বিচিত্র জীবিকার মানুষজনকে যাত্রী হিসেবে দেখা যায়। আর দেখা যায় হকার বা ফেরিওয়ালাদের। তাঁরা যাত্রীদের কাছে বিক্রির জন্য নানান জিনিস নিয়ে ট্রেনে ওঠেন। তাঁদের কেউ মণিহারি দ্রব্যের বিক্রেতা, কেউ ফল বিক্রেতা, চানাচুর-বাদাম বিক্রেতা, লজেন্স বিক্রেতা, খেলনা বিক্রেতা, কেউ-বা সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিন বিক্রেতা। এঁদের মধ্যে চা বিক্রেতা বা জুতো পালিশওয়ালাদেরও দেখা
যায়। এ ছাড়াও বহু কণ্ঠশিল্পী, জাদুশিল্পী এমনকি বহু দুঃস্থ মানুষ সাহায্যের আশায় ট্রেনে উঠে যাত্রীদের দিকে হাত বাড়ান। প্রতিদিনের সেই বাঁধা ছক থেকে যেন তাঁদের কোনোভাবেই নিস্তার নেই। প্রতি পদক্ষেপে নানান বিপদের ঝুঁকি, নানান লাঞ্ছনা আর অমর্যাদা থাকা সত্ত্বেও এটিই তাদের জীবিকা অর্জনের উপায়।

৪.৪ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ওরা কাজ করে' কবিতাটি তুমি পড়ে নাও।
'মাসিপিসি' কবিতার সঙ্গে 'ওরা কাজ করে' কবিতার কোন্ সাদৃশ্য তোমার চোখে পড়ল তা আলোচনা করো।

উত্তর: সাদৃশ্য: 'ওরা কাজ করে' কবিতাটি রবীন্দ্রনাথের ‘আরোগ্য’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ১০ সংখ্যক কবিতা। এই কবিতাটিতেও শ্রমজীবী
মানুষের নিরলস পরিশ্রমে সভ্যতার ভিত রচনা ও তাকে সচল রাখার কথা কবি প্রকাশ করেছেন। সদ্য রোগমুক্ত কবি 'মাটির পৃথিবী'র দিকে চোখ
মেলে জনতার কর্মমুখর কলরবই শুনতে পেয়েছেন। মানুষের প্রতিদিনের প্রয়োজনে যুগ যুগান্তর ধরে তারা কাজ করে চলেছেন। এঁরাই ধরে রেখেছেন সভ্যতার হাল, দাঁড় টেনে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন সভ্যতাকে মাঠে মাঠে বীজ বোনা থেকে শুরু করে পাকা ধান কাটার কাজে, অল্প বঙ্গ-কলিশের সমুদ্র-নদীর ঘাটে ঘাটে, বড়ো বড়ো শিল্প বাণিজ্যকেন্দ্রে ক্ষুদ্র থেকে ভারী শিল্পের কাজে মানুষের চিরন্তন জীবনসংগ্রামের চিত্র কবি
প্রত্যক্ষ করেছেন।

পাঠ্য 'মাসিপিসি' কবিতাতেও শ্রমজীবী নারীদের জীবনসংগ্রামের ছবি ফুটে।উঠেছে। তাদের সেই অবিরত লড়াইয়ের মূলে যে অদম্য প্রাণশক্তি রয়েছে, তাকে কবি সম্মান জানিয়েছেন। সেদিক থেকে বিচার করলে 'ওরা কাজ করে' কবিতার সঙ্গে 'মাসিপিসি' কবিতার অনেকখানি মিল দেখা যায়। এ ছাড়াও রবীন্দ্রনাথের কবিতার ইতিহাসচেতনা ও সমাজচেতনার কথাও আমাদের পাঠ্য 'মাসিপিসি' কবিতাতেও ফুটে উঠেছে।

৫ নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করে।।
৫.১ ফুল ছুঁয়ে যায় চোখের পাতায়, জল ছুঁয়ে যায় ঠোঁটে। (জটিল বাক্যে)
উত্তর: ফুল যেমন ছুঁয়ে যায় চোখের পাতায় তেমনই জল ছুঁয়ে যায় ঠোঁটে।

৫.२ ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি রাত থাকতে ওঠে।(জটিল বাক্যে)
উত্তর: যখন রাত থাকে তখন ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি ওঠে।
৫.৩ অনেকগুলো পেট বাড়িতে, একমুঠো রোজগার।
(যৌগিক বাক্যে)

উত্তর: অনেকগুলো পেট বাড়িতে কিন্তু একমুঠো রোজগার।

শেষ-