শিকল পোড়ার গান || অষ্টম শ্রেণী বাংলা || হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর || SHIKAL-PARAR GAN || class 8 bangla ||question answer - school book solver

Thursday, 11 September 2025

শিকল পোড়ার গান || অষ্টম শ্রেণী বাংলা || হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর || SHIKAL-PARAR GAN || class 8 bangla ||question answer

 


শিকল-পরার গান 

কাজী নজরুল ইসলাম 

অষ্টম শ্রেণি বাংলা 

হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর

১. প্রশ্নগুলির উত্তর দাও

১.১ কবি কাজী নজরুল ইসলাম কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর: কাজী নজরুল ইসলাম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ।


১.২ তিনি কী কী ধরনের গানের রচয়িতা?

উত্তর: কাজী নজরুল ইসলাম রাগপ্রধান, ভক্তিগীতি, গজল, লোকগীতি, দেশাত্মবোধক, হাস্যকৌতুক প্রভৃতি নানা ধরনের গানের রচয়িতা।


২ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর একটি বাক্যে লেখো

২.১ ‘শিকল-পরা ছল’ বলতে কবি প্রকৃতপক্ষে কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

উত্তর: কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘শিকল-পরা ছল' বলতে প্রকৃতপক্ষে পরাধীন ভারতবর্ষে মুক্তিকামী মানুষের কারাবরণকে বোঝাতে চেয়েছেন, শিকল পরার অভিনয়ের মধ্য দিয়েই তারা মাতৃভূমির শৃঙ্খল-মোচন করতে চায়।


২.২ “ক্ষয় করতে আসা মোদের সবার বাঁধন-ভয়”—“বাঁধন-ভয়' ক্ষয়। করতে কারা কোথায় এসেছেন?

উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামের ‘শিকল-পরার গান' কবিতায় পরাধীন ভারতবাসীরা কারাবরণ করার মাধ্যমেই বন্দি হওয়ার ভয় অর্থাৎ 'বাধন-ভয়' ক্ষয় করতে এসেছেন।


২.৩ ‘মুক্তি-পথের অগ্রদূতের চরণ-বন্দনা' কীভাবে রচিত হয় ?

উত্তর: স্বাধীনতার লড়াইয়ে অংশগ্রহণকারী মানুষের শিকলের শব্দে মুক্তিপথের অগ্রদূতের চরণ-বন্দনা রচিত হয়।


২.৪ "মোদের অস্থি দিয়েই জ্বলবে দেশে আবার বজ্রানল।”- পক্তিটিতে ‘আবার' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে কেন ?

উত্তর: পুরাণ থেকে জানা যায়, দধীচি মুনির অস্থি দিয়ে তৈরি হয়েছিল বজ্র, যা দিয়ে বৃত্রাসুরকে বধ করা সম্ভব হয়েছিল, একইভাবে দেশবাসীর

আত্মবলিদানের মধ্য দিয়েই বহু আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা আসবে বলে মনে করেন কবি, ‘আবার' শব্দটি ব্যবহারের মাধ্যমে কবির সেই বক্তব্যটিই ফুটে উঠেছে।


৩. নীচের পথগুলির আর নিজের ভাষায় লেখো।

৩.১ স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তির বাসনা কীভাবে 'শিকল পরার গান' কবিতায় ধরা পড়েছে, তা আলোচনা করো।

উত্তর: মুক্তির বাসনা: কাজী নজরুল ইসলামের লেখা 'বিষের বাঁশি' (১৯২৪) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত 'শিকল-পরার গান' শীর্ষক কবিতায়।স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তির বাসনা প্রতিধ্বনিত হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ রাজশক্তির বিরোধিতা করে কারাগারে বন্দি কবি এই গান গেয়েই সহবন্দিদের উৎসাহ দিয়েছিলেন। কবি অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে কোনোরকম আপস না করে যাবতীয় অধীনতা থেকে দেশকে মুক্ত করার ব্রত নিয়েছিলেন। দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত নজরুল শাসকশক্তির বিরুদ্ধে ব্যঙ্গ ও পরিহাস করেছেন। ব্রিটিশ শাসকরা ভারতীয়দের শৃঙ্খলিত করার মাধ্যমে তাদের আন্দোলনকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। কবি নজরুল ইসলাম এই প্রচেষ্টাকে বিদ্রুপ করে ঘোষণা করেন যে, এই কারাবরণ প্রকৃতপক্ষে ‘শিকল-পরা ছল'। শৃঙ্খলের মধ্য দিয়ে তাঁরা প্রকৃতপক্ষে ইংরেজের শাসনযন্ত্রকেই অকেজো করে দেবেন। প্রতিবাদের কণ্ঠরোধের জন্য ইংরেজদের এই হীন প্রচেষ্টাকে এভাবেই কবি হাস্যকর ও অর্থহীন প্রমাণ করেছেন। কবি নিশ্চিত, মাভৈঃ মন্ত্রে দীক্ষিত, দেশের মঙ্গলের লক্ষ্যে দৃঢ়সংকল্প বীর বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা আসবে। দধীচি মুনির হাড় দিয়ে দেবরাজ ইন্দ্র বজ্র নির্মাণ করে বৃত্রাসুরকে বধ করেছিলেন। একইভাবে অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই আগামী দিনের ভারতবর্ষ ব্রিটিশ শাসনমুক্ত ও স্বাধীন হয়ে উঠবে—এই তীব্র আশাবাদই এই কবিতায় ধ্বনিত হয়েছে।


৩.২ “বাঁধন-ভয়কে করবো মোরা জয়” – কেন এই বাঁধন? কারা, কীভাবে এই 'বাঁধন-ভয়কে জয় করবে?

উত্তর: বাঁধনের কারণ : বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম রচিত ‘শিকল- পরার গান' কবিতায় ‘বাঁধন' হল পরাধীনতার বন্ধন। সাম্রাজ্যলোভী ব্রিটিশ শক্তির অত্যাচারে সমগ্র ভারতবর্ষ তথা ভারতের সমস্ত মানুষ পরাধীনতার বাঁধনে বন্দি হয়ে পড়েছিল।

জয় করার উপায় : এই বাঁধন-ভয়'-কে জয় করার জন্য এগিয়ে।এসেছে স্বাধীনতাকামী মানুষ। কবির বিশ্বাস তাঁরা শিকলের বাঁধন বরণ করে

নেওয়ার মধ্য দিয়েই শিকল ভাঙার কাজটিকে সহজ করে তুলবেন। সাধারণ মানুষের মন থেকে তাঁরা বন্ধন ভয়কে দূর করতে চান। ভয় দেখিয়ে ইংরেজশক্তি ভারতবাসীকে পরাধীন করে জীবন দেশের স্বার্থে উৎসর্গ করে এরা নিত্য 'মুক্তি-পথের অগ্রদূতের’ রেখেছে। নিজেদের উপাসনা করছে। অত্যাচারিত মানুষের মধ্যে নিভে যাওয়া শক্তিকে জাগ্রত করেই দেশের মানুষ ব্রিটিশদের বাঁধন ভয়কে জয় করতে পারবে।


. দল বিশ্লেষণ করে:- বন্ধনী, ঝঞ্ঝনা ,বজ্রনল সর্বনাশ, অস্থি

উত্তর- 

 বন্ধনী :- বন্  (রুদ্ধ) ধ(মুক্ত) নি (মুক্ত) 

ঝঞ্ঝনা :-  ঝন্ (রুদ্ধ) · ঋ (মুক্ত) না (মুক্ত)

বজ্র নল; - বজ্ (খ) রা (মুক্ত) নল্ (র)

 সর্বনাশ = সর্ (রুদ্ধ) ব (মুক্ত) · না (রুদ্ধ)

 অস্থি = অস্ (রুদ্ধ) · থি (মুক্ত)


৫. ধ্বনি পরিবর্তনের কোন নিয়ম এখানে কাজ করেছে দেখাও: বাঁধন, পরে ।

উত্তর: বাঁধন—বন্ধন > বাঁধন (নাসিক্যীভবন)

 পরে—পরিয়া > পইরা > পরে (অভিশ্রুতি)


৬ . বাক্য রূপান্তর করো।

৬.১ ভয়-দেখানো ভূতের মোরা করব সর্বনাশ।

(জটিল বাক্যে)

উত্তর: যারা ভয়-দেখানো ভূত, তাদের আমরা সর্বনাশ করব।

৬.২ মোরা ফাঁসি পরে আনব হাসি মৃত্যুজয়ের ফল। (যৌগিক বাক্যে)

উত্তর: মোরা ফাঁসি পরব এবং মৃত্যুজয়ের ফলস্বরূপ হাসি আনব।

৬.৩ তোদের বন্ধ কারায় আসা মোদের বন্দী হতে নয়। (চলিত গদ্যে)

উত্তর: আমরা বন্দি হতে তোদের বন্ধ কারায় আসিনি।


৭ পদ চিহ্নিত করো।

৭.১ তোমরা বন্ধ ঘরের বন্ধনীতে করছ বিশ্বগ্রাস।

উত্তর: তোমরা—সর্বনাম, বন্ধ – বিশেষণ, ঘর – বিশেষ্য,

বন্ধনী—বিশেষ্য, করছ— ক্রিয়া, বিশ্বগ্রাস – বিশেষ্য।


৭.২ মোরা ফাঁসি প'রে আনব হাসি মৃত্যুজয়ের ফল।

উত্তর: মোরা—সর্বনাম, ফাঁসি –বিশেষ্য, পরে—ক্রিয়া, আনব—ক্রিয়া, হাসি—বিশেষ্য, মৃত্যুজয়— বিশেষ্য, ফল— বিশেষ্য।

৭.৩ এবার আনব মাভৈঃ-বিজয়-মন্ত্র বলহীনের বল।

উত্তর: এবার—অব্যয়, আনব—ক্রিয়া, মাভৈঃ – বিশেষণ, বিজয়-মন্ত্র— বিশেষ্য, মাভৈঃ-বিজয়মন্ত্র— বিশেষ্য, বলহীন—বিশেষণ, বল – বিশেষ্য।

৮. ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো: শিকল-ঝঞ্ঝনা, চরণবন্দনা, বজ্রানল, মৃত্যুজয়


উত্তর:, শিকল-ঝঞ্ঝনা—শিকলের ঝঞ্ঝানা (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)

→ চরণবন্দনা—চরণের বন্দনা (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)

→ বজ্রানল—–বজ্ররূপ অনল (রূপক কর্মধারয় সমাস)

→ মৃত্যুজয়—মৃত্যুকে জয় (কর্ম তৎপুরুষ সমাস)