পটলবাবু ফিল্মস্টার || সপ্তম শ্রেণী || হাতে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর || PATALBABU PHILIMSTAR || class 7 bangla || hate- kalo me question answer
![]() |
দশম পাঠ
গল্প : পটলবাবু ফিল্মস্টার
লেখক : সত্যজিৎ রায়
লেখক পরিচিতি : বিশ্ববন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় ১৯২১ সালে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক। তাঁর পিতা বিখ্যাত সাহিত্যিক সুকুমার রায়। তিনি একাধারে চিত্রপরিচালক, সংগীত স্রষ্টা প্রচ্ছদশিল্পী এবং সাহিত্য রচয়িতাও। তাঁর উল্লেখযোগ্য 'সোনার কেন্দ্রা', 'বাদশাহী আংটি' ইত্যাদি। দীর্ঘদিন তিনি 'সন্দেশ' পত্রিকাটি সম্পাদনা করেছেন। ১৯৬৭ সালে তাঁর 'প্রফেসর শঙ্কু' রচনাটি 'আকাদেমি পুরস্কার' পায়। ১৯৯২ সালে তিনি 'ভারতরত্ন' সম্মানে ভূষিত হন। বাংলা কিশোর সাহিত্যে তিনি 'ফেলুদা' চরিত্রে। ১৯৯২ সালে তাঁর জীবনাবসান হয়।
ৰচনা পরিচয় ঃ পটলবাবু একজন সাধারণ মানুষ, যিনি জীবনযুদ্ধে জেরবার। তিনি হঠাৎ অভিনয়ের ডাক পান।
জীবনের সায়াহ্নে এসে তিনি নিজের সবটুকু দিয়ে একটি ছোটো চরিত্রে অভিনয় করেন। তাই গল্পটির নাম 'পটলবাবু ফিল্মস্টার' সঠিক। এই গল্পটি সত্যজিৎ রায়ের 'এক ডজন গল্পো' থেকে নেওয়া হয়েছে।
সারসংক্ষেপ : পটলবাবু সাধারণ ব্যক্তি। নিজের বেঁচে থাকার লড়াইতেই তাঁর সারাজীবন কেটে গেছে। একসময় অভিনেতা হবার স্বপ্ন ছিল কালক্রমে সেও নেই। হঠাৎ ৫২ বছর বয়সে তিনি অভিনয়ের ডাক পান। নিজের ভেতরকার অভিনেতা আবার সামনে আসে। সামান্যতম একটা চরিত্রেও নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে তিনি অভিনয় করেন এবং সকলে বাহবা দেয়। এরপর একজন জাত অভিনেতার মতোই টাকা না নিয়ে বুকভরা আত্মতৃপ্তি ময়ে পটলবাবু বাড়ি ফিরে আসেন।
শব্দার্থ :
নগণ্য—তুচ্ছ।
হদিস – সন্ধান, খোঁজখবর।
অভাবনীয় — অপ্রত্যাশিত।
ফরমাস – আদেশ, নির্দেশ।
স্মরণশক্তি—মনে রাখার ক্ষমতা।
বৃকোদর—ভীম। ঠাহর- মনোযোগ দিয়ে দেখা। নিরীহ-নিরুপদ্রব, শান্তশিষ্ট।
ঋষিতুল্য — ঋষির মতো জ্ঞানী ।
বাজিমাত -খেলার জয়যুক্ত সমাপ্তি।
পথচারী—পথিক।
বাসিন্দা—অধিবাসী।
তামাশা – ঠাটা, কৌতুক।
আন্দাজ-অনুমান।
তারিফ – প্রশংসা।
কদর -মর্যাদা।
রোমাণ্য— পুলক।
অপদস্থ — লাঞ্ছিত, অসম্মানিত।
পরিহাস — ঠাট্টা কৌতুক।
নিষ্ঠুর-নির্মম।
নিরুৎসাহ-হতাশ।
ঔদ্ধত্য – উচ্চতা।
জরুরি – দরকারি।
তেপায়া – তিনটি, পায়াওয়ালা।
কৃতিত্ব — অবদান।
করা—নাটুকেপনা।
হদিস – খোঁজ।
হুঙ্কার-গর্জন।
বাসিন্দা - বাস করেন যিনি, অধিবাস।
আত্মতৃপ্তি—নিজের সন্তোষ।
হাতে-কলমে
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১. বন্ধনীতে দেওয়া একাধিক উত্তরের মধ্যে ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে নীচের বাক্যগুলি আবার লেখো :
১.১ পটলবাবু অভিনয়ের সময়ে সংলাপ হিসেবে বলেছিলেন (ওঃ/উঃ আঃ) শব্দটি।
উঃ। পটলবীর অভিনয়ের সময়ে সংলাপ হিসেবে বলেছিলেন আঃ শব্দটি।
১.২ অভিনয়ের সময় পটলবাবুর হাতে ছিল (আনন্দবাজার পত্রিকা/যুগান্তর/ স্টেটসম্যান)।
উঃ। অভিনয়ের সময় পটলবাবুর হাতে ছিল যুগান্তর।
১.৩ অভিনয়ের সময় পটলবাবুর নাকের নীচে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল (ঝুপো/চাড়া দেওয়া/বাটারফ্লাই) গোঁফ।
উঃ। অভিনয়ের সময় পটলবাবুর নাকের নীচে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল বাটারফ্লাই গোঁফ।
১.৪ (বারেন দত্ত/ বরেন মল্লিক / বরেন চৌধুরী) ব পরিচালিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েছিলেন পটলবাবু।
উঃ। বরেন মল্লিক পরিচালিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েছিলেন পটলবাবু।
১.৫করালীবাবুর বাড়িতে (কীর্তন / শ্যামা সংগীত ও কথকতা) হন (শনিবার বিকেলে/ রবিবার সকালে / রবিবার বিকেলে)।
উঃ। করালীবাবুর বাড়িতে শ্যামাসংগীত হয় রবিবার সকালে।
২. নীচের এলোমেলো ঘটনাগুলি গল্পের ঘটনা অনুযায়ী লেখো।
২.১ টাকার তাঁর অভাব ঠিকই -- কিন্তু আজকের এই যে আনন্দ, তার কাছে পাঁচটা টাকা আর কী?
২.২ তা আপনি তো বেশ পাংচুয়াল দেখছি।
২.৩ পটলবাবু সরে বাজারের গলিটা কাধে ঝুলিয়েছেন এমন সময় বাইরে থেকে নিশিকান্ত বাবু তাঁক নিলেন, 'পটল আছ নাকি হে?'
২.৪ দুরদুর বুকে পটলবাবু এগিয়ে চললেন আপিসের গেটের দিকে।
২.৫ সে কী, টাকা না নিয়েই চলে গেল নাকি লোকটা?
২. ঠিক আধঘণ্টা পরেই পটলবাবুর ডাক পড়ল, এখন আর তাঁর মনে কোনো নিরুৎসাহের ভাব নেই।
উঃ। ২.৩ পটলবাবু ঘরে বাজারের থলিটা কাঁধে ঝুলিয়েছেন এমন সময় বাইরে থেকে নিশিকান্তবাবু।'পটল আছ নাকি ?'
২.৪ দুরদুর বুকে পটলবাবু এগিয়ে চললেন আপিসের গেটের দিকে।
২.২ তা আপনি তো বেশ পাণ্ডুয়াল দেখছি।
২.৬ ঠিক আধঘণ্টা পরেই পটলবাবুর ডাক পড়ল, এখন আর তাঁর মনে কোনো নিরুৎসাহের ভাব নেই।
২.১ টাকার তার অভাব ঠিকই কিন্তু আজকের এই যে আনন্দ, তার কাছে পাঁচটা টাকা আর কী!
২.৫ সে কী, টাকা না-নিয়েই চলে গেল নাকি লোকটা?
৩. গল্প থেকে এই যে অংশটি নীচে উদ্ধৃত করা হয়েছে, শুটিং এর সেই ব্যস্ত পরিস্থিতিটি তোমার নিজের ভাষার নতুন করে লেখো :
গলিতে রিহার্সাল দেবার সময় পটলবাবুর একটা আইডিয়া মাথায় এনেছিল, সেটা সাহস করে বলে ফেললেন।
'আমি ভাবছিলাম— ইয়ে, আমার হাতে যদি একটা খবরের কাগজ থাকে, আর আমি যদি সেটা পড়তে পড়তে
ধাক্কাটা খাই...... মানে, অন্যমনস্কতার ভাবটা ফুটিয়ে তুলতে....'
করেন মল্লিক তাঁর কথাটা শেষ না হতেই বলে উঠলেন, 'বেশ তো....ও মশাই আপনার যুগান্তরটা এই ভদ্রলোককে দিন তো.......হ্যাঁ। এইবার এই ঘামের পাশে আপনার জায়গায় গিয়ে রেডি হয়ে যান। চঞ্চল তুমি রেডি?'
গাড়ির পাশ থেকে নায়ক উত্তর দিলেন, ইয়েন স্যার'। 'গুড, সাইলেন্স'।
করেন মল্লিক হাত তুললেন, তারপর হঠাৎ তক্ষুনি হাত নামিয়ে নিয়ে বললেন, 'ওহো-হো, এক মিনিট। কেষ্ট ভদ্রলোককে একটা গোঁফ দিয়ে দাও তো চট করে। ক্যারেক্টারটা পুরোপুরি আসছে না।'
কীরকম গোঁফ স্যার? ঝুপো, না চাড়া দেওয়া, বাটারফ্লাই। রেডি আছে সবই।
বাটারফ্লাই, বাটারফ্লাই, চট করে দাও, দেরি কোরো না।
উঃ। বরেন মল্লিক পটলবাবুকে রেডি হতে বললেন। গলিতে রিহার্সাল দেবার সময়
পটলবাবুর মাথায় একটা নতুন আইডিয়া আসায় তিনি সেটি করেন বাবুকে বললেন।
তিনি বললেন তার হাতে যদি একটা খবরের কাগজ থাকত তাহলে তিনি সেটা পড়তে পড়তে ধাক্কা খেতেন তাহলে অন্যমনস্কতার ভাবটা ফুটিয়ে তোলার সুবিধা হত। তখন
করেন মল্লিক তাতে সম্মতি জানিয়ে সামনের ভদ্রলোককে যুগান্তর কাগজটা দিতে বলতেন। থামের পাশে পটলবাবুকে দাঁড়াতে বললেন এবং নায়ক চঞ্চলকে রেডি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলেন। গাড়ির পাশ থেকে নায়ক উত্তর দিলেন, হ্যাঁ সে রেডি। হঠাৎ করেন মল্লিক হাত নামিয়ে নিয়ে কেষ্ট নামের একজনকে ভদ্রলোককে একটা গোঁফ দিয়ে দিতে বললেন যাতে ক্যারেক্টারটার পুরোপুরি আসে। কেন জিজ্ঞাসা করলে কী ধরনের গোঁফ ঝুপো, চাড়া দেওয়া না বাটার ফ্লাই, রেডি আছে সব। তখন করেন মল্লিক বললেন বাটারফ্লাই বাটারফ্লাই দিয়ে চট করে দাও। দেরি কোরো না।
৪. নীচের শব্দগুলোর অনুরূপ শব্দ পাঠ্য অংশটিতে পাবে। খুঁজে নিয়ে লেখো।
উৎসাহহীন, নিরালা, অত্যাশিত, নিরুপন, লাখিত, সন্ধান, পথিক।
উত্তর - নিরুৎশাহ নির্জন, অভাবনীয়, শান্তশিষ্ট, পদচারী।
৫. নীচের শব্দগুলিতে যে ইংরেজি শব্দগুলি আছে, তার বদলে বাংলা শব্দ বসিয়ে বাক্যগুলি আবার নতুন করে লেখো :
৫.১ বুঝতে পারছেন, ব্যাপারটা কতটা ইম্পর্ট্যান্ট
উঃ। বুঝতে পারছেন, ব্যাপারটা কতটা
৫.২ এই দাদুকে ডায়ালগ লিখে দে।
উঃ । এই, দাদুকে সংলাপ লিখে সে।
৫.৩ একজন অন্যমনস্ক, বদমেজাজি পেডেস্টিয়ান... ।
উঃ । একজন অন্যমনস্ক বদমেজাজি পথচারী.....
৫.৪ তাহলে একটু ওদিকে সরে গিয়ে ওয়েট করুন।
উঃ। তাহলে একটু ওদিকে সরে গিয়ে অপেক্ষা করুন।
৫.৫ আজ তো ট্যাগোরস বার্থ ডে।
উঃ। আজ তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন।
৫.৬ সাইলেন্স। রোদ বেরিয়েছে।
উঃ। চুপ! রোদ বেরিয়েছে।
৫.৭ থিয়েটার এর চেয়ে শতগুণে ভালো।
উঃ। রামও এর চেয়ে শতগুণে ভালো।
৫.৮ আপনি তো বেশ পাংচুয়াল দেখছি।
উঃ। আপনি তো বেশ সময়নিষ্ঠ দেখছি।
৬. নীচের বিশেষণগুলির পরে উপযুক্ত বিশেষ্য বসিয়ে বাক্যরচনা করো : দোহারা, ব্যস্তসমস্ত, ফরমাশ, ঔদ্ধত্য, পরিশ্রম, সাফল্য, উৎকণ্ঠা, আত্মতৃপ্তি।
দোহারা > চেহারা > পটলবাবুর দোহারা চেহারা।
ব্যস্তসমস্ত > লোক > শহরে সব লোকই যেন ব্যস্তসমস্ত।
ফরমাশ > তালিকা → তোমার ফরমাশ তালিকা অনুযায়ী আনা হয়েছে।
ঔদ্ধত্য > ভাব > অফিসের বসের ঔদ্ধত্য ভাব দেখে নিখিলবাবু চাকরি ছেড়ে দিলেন।
পরিশ্রম > সাপেক্ষ > কারখানার কাজ বড়োই পরিশ্রম সাপেক্ষ।
উৎকণ্ঠা > উৎকণ্ঠাগত মুখ > ছেলেটির উৎকণ্ঠাগত মুখ দেখে সকলেই চিন্তিত।
আত্মতৃপ্তি—ছেলেকে জীবনে সফল হতে দেখে দিপকবাবু আত্মতৃপ্তি লাভ করেছেন।
৭. নীচের বিশেষ্যগুলির আগে উপযুক্ত বিশেষণ বসিয়ে বাক্যরচনা করো :
প্রস্তাব, অভিনয়, ফরমাশ, ঔদ্ধত্য, পরিশ্রম, সাফল্য, উৎকণ্ঠা, আত্মতৃপ্তি।
উঃ । প্রস্তাব > উত্তম প্রস্তাব > উত্তম প্রস্তাবে সবাই খুশি হয়।
অভিনয় > দারুন অভিনয় > আমার কাকু চাকরের দারুন অভিনয় করে।
ফরমাশ > সাধারণ ফরমাস > পিতা সন্তানকে সর্বদা সাধারণ পরামর্শ করে।
ঔদ্ধত্য > ভীষণ ঔদ্ধত্য > বড়লোকের ছেলেটির ভীষণঔদ্ধত্য।
পরিশ্রম > কঠোর > পরিশ্রম কঠোর পরিশ্রম করলে ফল অবশ্যই পাওয়া যায়।
সাফল্য> দেখার মত সাফল্য > ছেলেটি পরীক্ষার রেজাল্টে দেখার মতো সাফল্য অর্জন করেছে।
উৎকণ্ঠা > প্রচন্ড উৎকণ্ঠা > সন্তান বাড়ি ফেরান দেখে তার মা প্রচন্ড উৎকণ্ঠায় আছেন।
আত্মতৃপ্তি > চরম আত্মতৃপ্তি > কাজটা করে তপন চরম আকৃতি আত্মতৃপ্তি পেয়েছে।
৮. নিচের বাক্যগুলি থেকে সংখ্যা বাচক শব্দ অনির্দেশক সংখ্যা আছে শব্দ এবং পুরনোবাচক শব্দগুলি খুঁজে বের করে লেখো।
:
৮. ১ নিশিকান্ত ঘোষ মশাই নেপাল ভট্টাচাজ্যি লেনে পটলবাবুর তিনখানা বাড়ি পরেই থাকেন।
উঃ। তিনখানা (সংখ্যাবাচক)
৮.২ বছর বিশেক বয়স, লম্বা দোহারা চেহারা। উঃ। বছর ত্রিশেক। (অনির্দেশক সংখ্যাবাচক)
৮.৩ বাহান্ন বছর বয়সে ফিল্মে অভিনয় করার প্রস্তাব আসতে পারে এটা অনুমান করা কঠিন বৈকি!
উঃ। বাহান্ন বছর(সংখ্যাবাচক)
৮.৪ পটলবাবুর ন বছরের সাধের চাকরিটি কর্পূরের মতো উবে গেল।
উঃ। ন বছরের। (সংখ্যাবাচক)
৮.৫ তারপর এই দশটা বছর কী না করেছেন পটলবাবু।
উঃ। দশটা বছর। (সংখ্যাবাচক)
৮.৬ সেইটির সামনে ঠিক সাড়ে আটটায় পৌঁছে যাবেন।
উত্তর - সাড়ে আটটায় (সংখ্যাবাচক)।
৮.৭ পটলবাবু দোষ আনা বিরক্তি সঙ্গে তিন আনা বিস্ময় ও তিন আনা যন্তনা মিশিয়ে "আঃ" শব্দটি উচ্চারণ করে- চলতে আরম্ভ করলেন।
উত্তর- দশ আনা তিন আনা (সংখ্যাবাচক)।
৯.নীচের বিশেষ্য গুলিকে বিশেষণ বদলে লেখ।
উত্তর-উৎকণ্ঠা- উৎকণ্ঠিত।
প্রয়োগ- প্রয়োগ যোগ্য।
উচ্চারণ -উচ্চারিত ।
বিরক্তি-বিরক্ত।
দম্ভ - দাম্ভিক ।
ঔদ্ধত্য-উদ্ধতা ।
অনুভব - অনুভাবিত।
পরিবেশন --পরিবেশিত।
১০ নীচের শব্দগুলি নিয়ে নতুন বাক্য রচনা করো।
টক করে, যা করে, তিড়িং করে, হস্তদন্ত হরে, ঠাহর করে, ঝিমঝিম করে, ফিসফিস করে, টুক করে।
টক করে - মেয়েটি মায়ের হাত থেকে টক করে খাতাটি তুলে নিল ।
তিড়িং করে- পুকুর ধারে ছেলেটি তিড়িং করে- লাফ দিল।
হস্তদন্ত হয়ে - কাজলের সাইকেলে একটি সাপ জড়িয়ে যাওয়ায় কাজল হন্তদন্ত হয়ে বাড়ি গিয়েছিল
ঠাহর করে – ঠাকুমা অন্ধকারে ঠাহর করে দূরের জিনিস দেখতে পায় না।
ঝিমঝিম করে— বর্ষাকালে একটানা ঝিমঝিম করে বৃষ্টি পড়ে।
ফিসফিস করে— ফিসফিস করে কথা বললে শুনতে পাওয়া যায় না।
টুক করে - মায়ের কাছে ছেলেটি টুক করে কথাটা লাগিয়ে দিল।
১১. নীচের বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে পদান্তরিত করে লেখো : গভীর, বিকৃত, নির্জন, সার্থক, সংযত, নির্বিবান, তীব্র উচিত।
উঃ। গাভীর—গভীরতা।
বিকৃত—বিকার।
নির্জন—নির্জনতা।
সার্থক—সার্থকতা।
সংযত — সংযম।
নির্বিবান - নির্বিবাদ।
তীব্র - তীব্রতা।
উচিত— উচিত।
১২. নিম্নরেখাঙ্কিত অংশের কারক-বিভক্তি নির্ণয় করো :
১২.১ নরেশ ভিড় ঠেলে এসে বলল, আপনি এই ছায়াটায় দাঁড়ান একটু।
উঃ। অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তি
১২.২ এবার পটলবাবু লোকটিকে দেখতে পেলেন।
উঃ। কর্তৃকারকে 'এ' বিভক্তি।
১২.৩ নরেশ একভাঁড় চা নিয়ে পটলবাবুর দিকে এগিয়ে এল।
উঃ। কর্তৃকারকে শূন্য বিভক্তি।
১২.৪ শশাঙ্ক তার হাতের খাতা থেকে একটা সাদা পাতা ছিঁড়ে কলম দিয়ে তাতে কী জানি লিখে কাগজটা পটলবাবুকে দিল।
উঃ। অপাদান কারকে 'এ' বিভক্তি।
১০. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১০১ পটলবাবুর কাছে যে-দিন ফিল্মে অভিনয়ের প্রস্তাব আসে, সেদিন ছুটির দিন ছিল কেন?
উঃ সে-দিন ছিল ট্যাগোরস্ বার্থডে। অর্থাৎ সে দিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন ছিল।
১৩.২ বাজারে গিয়ে কেন গৃহিণীর ফরমাশ গুলিয়ে গেল পটলবাবুর?
উঃ। পটলবাবুর কাছে অভিনয়ের প্রস্তাব আসার ফলে বাজারে গিয়ে গৃহিণীর ফরমাস গুলিয়ে গেল।
১০.৩ থিয়েটারে পটলবাবুর প্রথম পার্ট কী ছিল?
উঃ। মৃত সৈনিকের পার্ট।
১০.৪ উনিশশো চৌত্রিশ সালে পটলবাবু কলকাতায় বসবাস করতে এলেন কেন?
উঃ। হাভসন অ্যান্ড বিদালি কোম্পানিতে আর একটু বেশি মাইনের চাকরি আর একটা নেপাল ভটচাজি লেনে একটা বাড়ি থেকে পটলবাবু কলকাতায় বসবাস করতে এলেন।
১৩.৫ পাড়ায় থিয়েটারের দল গড়া আর হলো না কেন পটলবাবুর?
উত্তর- আপিসে ছাঁটাই হলো। আর তাতেই পটলবাবু ন-বছরের চাকরি চলে যাওয়ায় পটলবাবুর গড়া আর হলো না।
১০.৬ পটল বাবু তার সময়নিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য কোন উদাহরণ দিতে ভালোবাসতেন?
উত্তর- তিনি যে বছর হাসন অ্যান্ড বিস্থালিতে চাকরি করতেন সেই উদাহরণ পটলবাবু দিতে ভালোবাসতেন ।
১৩.৭ "লজ্জার মাথা হেঁট হয়ে গেল'-পটলবাবু এমন লজ্জা পেলেন কেন?
উঃ। পটলবাবুকে অভিনয় করার কথা বলা হয়েছে তাই তিনি লজ্জা পেলেন।
১৩.৮ 'খখন পাকড়াশি আজ তাকে দেখলে সত্যিই খুশি হতেন। তিনি খুশি হতেন কেন?
উঃ! এতদিন অকেজো থেকেও তাঁর শিল্পীমন ভোতা হয়ে যায়নি, এ দেশেই পটলবাবুর নাট্যগুরু গন পাকড়াশি হতেন।
১৪. চার পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও :
১৯.১ আমার টক কবে তোমার কথা মনে পড়ে গেল' কার মনে পড়ে গেল পটলবাবুর কথা? পটলবাবুর কথাই বিশেষ করে তাঁর মনে পড়ল কেন।
উচ্চ। নিশিকান্ত ঘোষ মশাইয়ের মনে পড়ে গেল পটলবাবুর কথা। কারণ পটলবাবু এককালে অভিনয় করতেন। তাঁর রীতিমতো অভিনয়ের শখ ছিল। যাত্রায়, শব্দের থিয়েটারে, পুজো-পার্বণে, পাড়ার ক্লাবের অনুষ্ঠানে তাঁর বাঁধা কাজ ছিল অভিনয় করা।
১৪.২ 'গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল ! সাধে কি তোমার কোনোদিন কিচ্ছু হয় না?' - পটলবাবুর গৃহিণীর এই মন্তব্যের কারণ কি ?
উঃ। অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে পটলবাবু বাহান্ন বছর বয়সে তিড়িং করে একটা লাফ দিয়ে উঠলেন। নাট্যকার শিশির ভাদুড়ির সাথে তুলনা করে তিনি গিন্নিকে বলতে লাগলেন শিশির ভাদুড়ি সত্তর বছর বয়সে চাণক্যের পার্টে এইভাবে লাফখানা দিতেন। আজ তিনি পুনর্যৌবন লাভ করেছেন। তাঁর মান, যশ, প্রতিপত্তি সব হবে। এইসব শুনে পটলবাবুর গৃহিণী এই মন্তব্যটি করেছিলেন।
১৪.৩ কার উপদেশের স্মৃতি পটলবাবুর অভিনেতা সত্তাকে জাগিয়ে তুলল ? কোন্ অমূল্য উপদেশ তিনি দিয়েছিলেন পটলবাবুকে?
উঃ। গগন পাকড়াশির উপদেশের স্মৃতি। পটলবাবুর অভিনেতা সত্তাকে জাগিয়ে তুলুন। তিনি পটলবাবুর নাট্যগুরু ছিলেন।
তিনি বলেছিলেন 'একটা কথা মনে রেখো পটল। যতো ছোটো পাটই তোমাকে দেওয়া হোক, তুমি জেনে রেখো তাতে কোনো অপমান নেই। শিল্পী হিসেবে তোমার কৃতিত্ব হবে সেই ছোটো পার্টটি থেকেও শেষ রসটুকু নিংড়ে বার করে তাকে সার্থক করে তোলা। থিয়েটারের কাজ হলো পাঁচজন মিলেমিশে কাজ। সকলের সাফল্য জড়িয়েই নাটকের সাফল্য”। এই অমূল্য উপদেশই পাকড়াশি মশাই পটলবাবুকে দিয়েছিলেন।
১৪.৪ 'ধন্যি মশাই আপনার টাইমিং। বাপের নাম ভুলিয়ে দিয়েছিলেন প্রায়-ওঃ!' – বক্তা কে? কোন্ ঘটনার ফলে তার এমন মন্তব্য ?
উত্তর- বক্তা হলেন চঞ্চলকুমার।
অভিনয় করার জন্য পটলবাবুকে যখন অ্যাকশন বলা হল, পটলবাবু হঠাৎ চোখে অন্ধকার দেখলেন। নায়ক চঞ্চল কুমারের সঙ্গে তাঁর কপালের ঠোকাঠুকি লেগে গেল। কিন্তু পরমুহূর্তেই এক প্রচন্ড শক্তি প্রয়োগ করে আশ্চর্যভাবে
নিজেকে সামলে নিয়ে বিরক্তি, বিস্ময় ও যন্ত্রণা মিশিয়ে 'আঃ' শব্দটা তিনি উচ্চারণ করলেন। তার অভিনয় ঠিক ঠিক ছিল। এবংতিনি যথার্থ সময়ে 'আঃ' শব্দটি বলায় বক্তা চালকুমার এমন মন্তব্য করেছিলেন।
১৪.৫ এতদিন অকেজো থেকেও তাঁর শিল্পীমন ভোঁতা হয়ে যায়নি' – এই অনুভব কীভাবে জাগল পটলবাবুর মনে?
উঃ। পটলবাবুর অভিনয়ের রীতিমতো শখ ছিল। শখ কেন অভিনয় তার নেশাই ছিল। বরেন মল্লিকের সিনেমায় তিনি যখন ছোট একটু অভিনয় করার সুযোগ পেলেন তখন তাঁর যেন জীবনটাই ধন্য হয়ে গেল। অভিনয়ের জন্য একটা 'য' শব্দ সেটা উচ্চারণ করতে গিয়ে তিনি নানারকম ভাবনাচিন্তা করতে লাগলেন। নানান কথা তাঁর মনে পড়তে লাগল। অনেক উত্তেজনা, রোমার ও বিস্ময় নিয়ে যখন তিনি 'আ' শব্দটা উচ্চারণ করলেন এবং পরিচালক মশাই ঠিক বললেন, তখন পটলবাবুর মন এক গভীর আনন্দ ও আত্ম তৃপ্তিতে ভরে গেল। তিনি অনুভব করলেন তাঁর শিল্পী মন শেষ হয়ে যায়নি, ভোতা হয়ে যায়নি।
১৪.৬ পটলবাবুর ফিল্মে অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রোডাকশন ম্যানেজার নরেশ দত্তের অনেকগুলি ব্যস্ত মুহূর্ত।।টুকরো মুহূর্তগুলি জোড়া নিয়ে নরেশ দত্ত নামে মানুষটির সম্পূর্ণ ছবি নিজের ভাষায় তৈরি করো।
উঃ। নরেশ দত্ত পটলবাবুর প্রতিবেশী নিশিকান্ত ঘোষের ছোটো শালা। তিনি সিনেমার প্রোডাকশন ম্যানেজার, বছর ত্রিশেক বয়স, দোহারা চেহারা। তিনি পটলবাবুকে একজন অন্যমনস্ক বদমেজাজি পথচারীর চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দিলেন। তিনি পটলবাবুকে একটা গলাবশ
কোর্ট আনতে বললেন। পটলবাবু এবং পটলবাবুর ছায়ার ধারে অপেক্ষা করতে বললেন নরেশবাবুর কথা মতো নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে উপস্থিত হলেন। তা দেখে নরেশবাবু খুব খুশি হলেন। নরেশবাবু সারাদিন ব্যস্ত মানুষ তিনি সবাইকে চুপ করে থাকতে বললেন। জায়গা ছেড়ে নড়তে বারণ করলেন। ক্যামেরার দিকে এগিয়ে আসতে বারণ করলেন। নরেশবাবু বাস্ত থাকলেও তার সবদিক লক্ষ থাকে। তিনি।একভাঁড় চা পটলবাবুকে দিলেন। নরেশ বাবু তাঁকে একটা ডায়ালগ লিখে দিলেন।।নরেশবাবু পটলবাবুকে তাঁর পারিশ্রমিক দিতে গিয়ে দেখলেন তিনি নেই। তিনি আশ্চর্য হলেন। এরপর তিনি নিজে কাজে আবার বাস্ত হয়ে পড়লেন।
১৫. নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
১৫.১ 'আঃ'—এই একটিমাত্র শব্দের উচ্চারণ কৌশলে আর অভিনয়দক্ষতায় ‘একটা আস্ত অভিধান' লিখে ফেলা যায়। শব্দটি নিয়ে ভাবতে এমনটাই মনে হয়েছিল অভিনেতা পটলবাবুর। পটলবাবুর ভাবনাধারা কি ঠিক বলে মনে হয়। তোমার? আঃ—শব্দের উচ্চারণে কত ধরনের ভাবপ্রকাশ সম্ভব বলে তোমার মনে হয় ?
উঃ। পটলবাবুর ভাবনাধারা একদম ঠিক। আঃ এই একটি মাত্র শব্দের উচ্চারণে সমস্ত কিছু প্রকাশ হয়ে যায়।।আঃ কথাটাই নানান ভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বললে মানুষের মনের নানান অবস্থা প্রকাশ করা যায়। ভালো অভিনেতা হলে এই একটা কথাতেই সমস্ত কিছু বোঝানো যায়।
চিমটি খেলে মানুষ যেভাবে আঃ বলে, গরমে ঠান্ডা শরবত খেয়ে মোটেই সেভাবে আঃ বলে না। এই দুটো একেবারেই আলাদা। এছাড়া আচমকা কানে সুড়সুড়ি লাগলেও আর একরকমের ‘আঃ' বেরোয়। এ ছাড়া দীর্ঘশ্বাসের আঃ, তাচ্ছিল্যের আঃ, অভিমানের আঃ, ছোটো করে বলা আঃ, লম্বা করে বলা আঃ, চেঁচিয়ে বলা আঃ, মৃদুস্বরে আঃ, চড়া গলায় আঃ, খাদে গলায় আঃ, আবার আঃটাকে খাদে শুরু করে বিসর্গটায় সুর চড়িয়ে আঃ বলা যায়।
১৫.২ ‘সে কী, টাকা না-নিয়েই চলে গেল নাকি লোকটা! আচ্ছা ভোলা মনতো!'— তোমার কী মনে হয় সফলভাবে।কাজ করার পরেও কেন টাকা না-নিয়েই চলে গিয়েছিলেন পটলবাবু? পটলবাবুর চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি যথার্থ বলে
মনে হয় তোমার? নিজের যুক্তি দিয়ে লেখো।
উঃ। পটলবাবু চলে গিয়ে ঠিক কাজ করেছেন। মান, যশ, প্রতিপত্তি, খ্যাতি এর চাইতেও বড়ো হল একজন শিল্পীর কাছে তাঁর শিল্পের সার্থকতা। পটলবাবু একজন ভালো অভিনেতা। অভিনয় তাঁর শুধু শখ নয়, নেশাও বটে। তিনি অভিনয় করতে খুব ভালোবাসেন। কিন্তু তেমন করে কোনোদিন সুযোগ পাননি। থিয়েটারে অভিনয় করেছেন, কিন্তু।সিনেমায় এই প্রথম। সেইজন্য যথার্থভাবে নিজের অভিনয়টুকু তিনি নিংড়ে বার করে দিতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে
তাঁর মনে ছিল চাপা উত্তেজনা ও রোমাঞ্চ। পঁচিশ বছর আগে স্টেজে অভিনয় করার সময় একটা বড়ো দৃশ্যে নামবার আগে মনের মধ্যে যে ভাবটা তিনি অনুভব করতেন সেই ভাব। তারপর যখন সত্যি সত্যিই অভিনয় যথার্থ হল তখন এক গভীর আনন্দ ও আত্মতৃপ্তি পটলবাবুর মনকে ধীরে ধীরে আচ্ছন্ন করে ফেলল। তাঁর মনে হল এতদিন অকেজো থেকেও তাঁর শিল্পীমন ভোঁতা হয়ে যায়নি। এই সামান্য কাজটিকে নিখুঁতভাবে করার জন্য তাঁর যে আগ্রহ আর।পরিশ্রম তার কদর কেউ করতে পারবে না। সার্থক অভিনয় করতে পেরে শিল্পীর যে আনন্দ হয় তার কাছে টাকার
কোনো মূল্য নেই। তাই পটলবাবুর চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত একদম সঠিক।
১৫.৩ কেমন করে শুটিং চলে, তার জীবন্ত কিছু টুকরো টুকরো ছবি উঠে এসেছে এই গল্পের আনাচে কানাচে। সেইসব টুকরো জুড়ে জুড়ে নিজের ভাষায় শুটিং-এর মুহূর্তগুলির একটি সম্পূর্ণ ছবি তৈরি করো।
উঃ। শুটিং স্পটে ক্যামেরাম্যান, মেকআপম্যান, ডিরেক্টার বা পরিচালক ছাড়াও আরও নানা ধরনের লোকজন থাকে। ক্যামেরা, লাইট, সাউন্ড থাকে। অভিনেতা, অভিনেত্রী ও অন্যান্য শিল্পীরা থাকেন। পরিচালকের নির্দেশমতো এইসব অভিনেতা অভিনেত্রীরা কাজ করে থাকেন। বিভিন্ন জায়গায় লোকেরা দৌড়ঝাপ করে কাজ করে। শুটিং চলার সময় ডিরেক্টারের নির্দেশমতো সবাই চুপ করে যায়। তারপর শুরু হয় শুটিং। শুটিং চলাকালীন কথাবলা, চলা সমস্ত নিষিদ্ধ। এইভাবে বিভিন্নস্থানে শুটিং চলে।
১৫.৪ অভিনয়ের নানা ধরনের প্রসঙ্গ এই গল্পে ছড়িয়ে আছে। থিয়েটার আর সিনেমায় অভিনয়ের ধরনে সাদৃশ্য আর বৈসাদৃশ্যের কিছু কথা মনে এসেছিল পটলবাবুর। পটলবাবুর মতামত নিজের ভাষায় লিখে, এ বিষয়ে তোমার কোনো মতামত থাকলে তাও জানাও।
উঃ। সিনেমা এবং থিয়েটার দু-জায়গাতেই লোকে অভিনয় করেন। প্রতিটি স্থানেই নির্দিষ্ট সেট থাকে। সেই সেটেই সবকিছু অভিনীত হয়। নায়ক-নায়িকা থাকেন তাদের ডায়ালগ থাকেন। দু-জায়গাতেই পরিচালক থাকেন।
পরিচালকরা সমস্ত বিষয়টা পরিচালনা করেন। মেকআপম্যানও থাকেন। কিন্তু থিয়েটারে অভিনয়ের স্থান অনেক বেশি। সেখানে গুরু-শিষ্যের সম্পর্কের একটা ব্যাপার থাকে। অভিনয়ের তালিম নিতে হয়। কিন্তু ক্যামেরা থাকে না, থাকে না আউটডোর শুটিং-এর জায়গাও। সেখানে অভিনেতাকে এক একটি কথা থেকে রস নিংড়ে দর্শকদের কাছে পরিবেশন করতে হয়। এছাড়া আমার মতে সিনেমার অভিনয়ের ক্ষেত্রে ক্যামেরার সামনে কোনো অভিনেতার ভুল হলে বা অন্য কোনো দৃশ্যগত ত্রুটি হলে তা তখুনি শুধরে নেওয়া যায়। কিন্তু থিয়েটারে অভিনয়ের ক্ষেত্রে সরাসরি দর্শকের সামনে অভিনেতাকে নিজস্ব ক্ষমতা দেখাতে হয়। তাতে ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ থাকে না।
১৫.৫ বছর পাশের বেঁটেখাটো টাকমাথা নাট্যপ্রিয় পটলবাবুকে তোমার কেমন লাগল নিজের ভাষায় লেখো।
উঃ। পটলবাবু, জীবনে বহুবার বহুক্ষেত্রে আঘাত পেয়েছেন। কিন্তু কখনও থেমে যাননি। কখনও হতাশ হননি।
জীবনে তাঁর স্বপ্ন ছিল অভিনেতা হবার। জীবনযুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে তাঁর সেই স্বপ্ন ভেঙে যায়। অনেক দিন পর বাহান্ন বছর বয়সে যখন অভিনয়ের ডাক পেলেন, তখন সেই স্বপ্ন আবার জেগে উঠল। নিজের সমস্ত ক্ষমতা দিয়ে তিনি ফুটিয়ে তুললেন মনের ভাব। সবার কাছে বাহবা পাওয়াটাই তাঁর পারিশ্রমিক ধরে নিয়ে পটলবাবু বাড়ি ফিরে আসেন। এর থেকেই বোঝা যায় তিনি একজন সত্যিকারের শিল্পী। এই সমস্ত গুণের জন্য পটলবাবুর চরিত্রটি আমার অসাধারণ লেগেছে।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর •
★ নিশিকান্তবাবু কেমন লোক? তিনি কোথায় থাকেন?
উঃ। নিশিকান্তবাবু আমুদে লোক, তিনি নেপাল ভট্টাচার্য লেনে পটলবাবুর তিনখানি বাড়ির পরে থাকেন।
★ বাজার করতে গিয়ে পটলবাবুর কী কী ভুল হল ?
উঃ। বাজার করতে গিয়ে পটলবাবু স্ত্রীর ফরমাশ গুলিয়ে ফেলে কালোজিরের বদলে ধানিলজ্জা কিনে ফেললেন এবং সৈন্ধব নুন কিনতে ভুলেই গেলেন।
★ পটলবাবুর ভালো নাম কী? তিনি কীসের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেরেছিলেন?
উঃ। পটলবাবুর ভালো নাম শ্রী শীতলাকান্ত রায়। তিনি একজন অন্যমনস্ক, বদমেজাজি পেডেস্টিয়ানের অর্থাৎপথচারীর চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন।
★ কোন জায়গায় এবং কোন সময়ে তার শুটিং হয়।
উঃ। সকাল সাড়ে আটটার সময় মিশন রো আর বেন্টিঙ্ক স্টিটের মোড়ের ফ্যারাডে হাউসের সামনে তার শুটিং হয়।
★ পটলবাবু অভিনীত ছবির নায়ক ও পরিচালক কে ছিলেন?
উঃ। পটলবাবু অভিনীত ছবিটির নায়ক ছিলেন চণ্ডালকুমার ও পরিচালক ছিলেন বরেন মল্লিক।
বিপরীত শব্দ : দরকার—অদরকার।
নগন্য মান্যগনা।
বাঙালি-অবাঙালি
। ব্যবস্থা-অব্যবস্থা।
আশা-নিরাশা।
নন-অপমান।
খ্যাতি অখ্যাতি।
গৃহিণী—গৃহকর্তা।
মৃদু — তীব্র।
নিরীহ – হিংস্র।
ভাগ্যবান অভাগা।
অগ্রাহ্য - গ্রাহ্য।
সাফল্য-ব্যর্থতা।
অভ্যাস - অনভ্যাস।
উদ্বেগ—নিরুদ্বেগ।
গভীর-অগভীর।
দশম পাঠ
গল্প : পটলবাবু ফিল্মস্টার
লেখক : সত্যজিৎ রায়
লেখক পরিচিতি : বিশ্ববন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় ১৯২১ সালে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক। তাঁর পিতা বিখ্যাত সাহিত্যিক সুকুমার রায়। তিনি একাধারে চিত্রপরিচালক, সংগীত স্রষ্টা প্রচ্ছদশিল্পী এবং সাহিত্য রচয়িতাও। তাঁর উল্লেখযোগ্য 'সোনার কেন্দ্রা', 'বাদশাহী আংটি' ইত্যাদি। দীর্ঘদিন তিনি 'সন্দেশ' পত্রিকাটি সম্পাদনা করেছেন। ১৯৬৭ সালে তাঁর 'প্রফেসর শঙ্কু' রচনাটি 'আকাদেমি পুরস্কার' পায়। ১৯৯২ সালে তিনি 'ভারতরত্ন' সম্মানে ভূষিত হন। বাংলা কিশোর সাহিত্যে তিনি 'ফেলুদা' চরিত্রে। ১৯৯২ সালে তাঁর জীবনাবসান হয়।
ৰচনা পরিচয় ঃ পটলবাবু একজন সাধারণ মানুষ, যিনি জীবনযুদ্ধে জেরবার। তিনি হঠাৎ অভিনয়ের ডাক পান।
জীবনের সায়াহ্নে এসে তিনি নিজের সবটুকু দিয়ে একটি ছোটো চরিত্রে অভিনয় করেন। তাই গল্পটির নাম 'পটলবাবু ফিল্মস্টার' সঠিক। এই গল্পটি সত্যজিৎ রায়ের 'এক ডজন গল্পো' থেকে নেওয়া হয়েছে।
সারসংক্ষেপ : পটলবাবু সাধারণ ব্যক্তি। নিজের বেঁচে থাকার লড়াইতেই তাঁর সারাজীবন কেটে গেছে। একসময় অভিনেতা হবার স্বপ্ন ছিল কালক্রমে সেও নেই। হঠাৎ ৫২ বছর বয়সে তিনি অভিনয়ের ডাক পান। নিজের ভেতরকার অভিনেতা আবার সামনে আসে। সামান্যতম একটা চরিত্রেও নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে তিনি অভিনয় করেন এবং সকলে বাহবা দেয়। এরপর একজন জাত অভিনেতার মতোই টাকা না নিয়ে বুকভরা আত্মতৃপ্তি ময়ে পটলবাবু বাড়ি ফিরে আসেন।
শব্দার্থ :
নগণ্য—তুচ্ছ।
হদিস – সন্ধান, খোঁজখবর।
অভাবনীয় — অপ্রত্যাশিত।
ফরমাস – আদেশ, নির্দেশ।
স্মরণশক্তি—মনে রাখার ক্ষমতা।
বৃকোদর—ভীম। ঠাহর- মনোযোগ দিয়ে দেখা। নিরীহ-নিরুপদ্রব, শান্তশিষ্ট।
ঋষিতুল্য — ঋষির মতো জ্ঞানী ।
বাজিমাত -খেলার জয়যুক্ত সমাপ্তি।
পথচারী—পথিক।
বাসিন্দা—অধিবাসী।
তামাশা – ঠাটা, কৌতুক।
আন্দাজ-অনুমান।
তারিফ – প্রশংসা।
কদর -মর্যাদা।
রোমাণ্য— পুলক।
অপদস্থ — লাঞ্ছিত, অসম্মানিত।
পরিহাস — ঠাট্টা কৌতুক।
নিষ্ঠুর-নির্মম।
নিরুৎসাহ-হতাশ।
ঔদ্ধত্য – উচ্চতা।
জরুরি – দরকারি।
তেপায়া – তিনটি, পায়াওয়ালা।
কৃতিত্ব — অবদান।
করা—নাটুকেপনা।
হদিস – খোঁজ।
হুঙ্কার-গর্জন।
বাসিন্দা - বাস করেন যিনি, অধিবাস।
আত্মতৃপ্তি—নিজের সন্তোষ।
হাতে-কলমে
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১. বন্ধনীতে দেওয়া একাধিক উত্তরের মধ্যে ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে নীচের বাক্যগুলি আবার লেখো :
১.১ পটলবাবু অভিনয়ের সময়ে সংলাপ হিসেবে বলেছিলেন (ওঃ/উঃ আঃ) শব্দটি।
উঃ। পটলবীর অভিনয়ের সময়ে সংলাপ হিসেবে বলেছিলেন আঃ শব্দটি।
১.২ অভিনয়ের সময় পটলবাবুর হাতে ছিল (আনন্দবাজার পত্রিকা/যুগান্তর/ স্টেটসম্যান)।
উঃ। অভিনয়ের সময় পটলবাবুর হাতে ছিল যুগান্তর।
১.৩ অভিনয়ের সময় পটলবাবুর নাকের নীচে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল (ঝুপো/চাড়া দেওয়া/বাটারফ্লাই) গোঁফ।
উঃ। অভিনয়ের সময় পটলবাবুর নাকের নীচে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল বাটারফ্লাই গোঁফ।
১.৪ (বারেন দত্ত/ বরেন মল্লিক / বরেন চৌধুরী) ব পরিচালিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েছিলেন পটলবাবু।
উঃ। বরেন মল্লিক পরিচালিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েছিলেন পটলবাবু।
১.৫করালীবাবুর বাড়িতে (কীর্তন / শ্যামা সংগীত ও কথকতা) হন (শনিবার বিকেলে/ রবিবার সকালে / রবিবার বিকেলে)।
উঃ। করালীবাবুর বাড়িতে শ্যামাসংগীত হয় রবিবার সকালে।
২. নীচের এলোমেলো ঘটনাগুলি গল্পের ঘটনা
অনুযায়ী লেখো।
২.১ টাকার তাঁর অভাব ঠিকই -- কিন্তু আজকের এই যে আনন্দ, তার কাছে পাঁচটা টাকা আর কী?
২.২ তা আপনি তো বেশ পাংচুয়াল দেখছি।
২.৩ পটলবাবু সরে বাজারের গলিটা কাধে ঝুলিয়েছেন এমন সময় বাইরে থেকে নিশিকান্ত বাবু তাঁক নিলেন, 'পটল আছ নাকি হে?'
২.৪ দুরদুর বুকে পটলবাবু এগিয়ে চললেন আপিসের গেটের দিকে।
২.৫ সে কী, টাকা না নিয়েই চলে গেল নাকি লোকটা?
২. ঠিক আধঘণ্টা পরেই পটলবাবুর ডাক পড়ল, এখন আর তাঁর মনে কোনো নিরুৎসাহের ভাব নেই।
উঃ। ২.৩ পটলবাবু ঘরে বাজারের থলিটা কাঁধে ঝুলিয়েছেন এমন সময় বাইরে থেকে নিশিকান্তবাবু।'পটল আছ নাকি ?'
২.৪ দুরদুর বুকে পটলবাবু এগিয়ে চললেন আপিসের গেটের দিকে।
২.২ তা আপনি তো বেশ পাণ্ডুয়াল দেখছি।
২.৬ ঠিক আধঘণ্টা পরেই পটলবাবুর ডাক পড়ল, এখন আর তাঁর মনে কোনো নিরুৎসাহের ভাব নেই।
২.১ টাকার তার অভাব ঠিকই কিন্তু আজকের এই যে আনন্দ, তার কাছে পাঁচটা টাকা আর কী!
২.৫ সে কী, টাকা না-নিয়েই চলে গেল নাকি লোকটা?
৩. গল্প থেকে এই যে অংশটি নীচে উদ্ধৃত করা হয়েছে, শুটিং এর সেই ব্যস্ত পরিস্থিতিটি তোমার নিজের ভাষার নতুন করে লেখো :
গলিতে রিহার্সাল দেবার সময় পটলবাবুর একটা আইডিয়া মাথায় এনেছিল, সেটা সাহস করে বলে ফেললেন।
'আমি ভাবছিলাম— ইয়ে, আমার হাতে যদি একটা খবরের কাগজ থাকে, আর আমি যদি সেটা পড়তে পড়তে
ধাক্কাটা খাই...... মানে, অন্যমনস্কতার ভাবটা ফুটিয়ে তুলতে....'
করেন মল্লিক তাঁর কথাটা শেষ না হতেই বলে উঠলেন, 'বেশ তো....ও মশাই আপনার যুগান্তরটা এই ভদ্রলোককে দিন তো.......হ্যাঁ। এইবার এই ঘামের পাশে আপনার জায়গায় গিয়ে রেডি হয়ে যান। চঞ্চল তুমি রেডি?'
গাড়ির পাশ থেকে নায়ক উত্তর দিলেন, ইয়েন স্যার'। 'গুড, সাইলেন্স'।
করেন মল্লিক হাত তুললেন, তারপর হঠাৎ তক্ষুনি হাত নামিয়ে নিয়ে বললেন, 'ওহো-হো, এক মিনিট। কেষ্ট ভদ্রলোককে একটা গোঁফ দিয়ে দাও তো চট করে। ক্যারেক্টারটা পুরোপুরি আসছে না।'
কীরকম গোঁফ স্যার? ঝুপো, না চাড়া দেওয়া, বাটারফ্লাই। রেডি আছে সবই।
বাটারফ্লাই, বাটারফ্লাই, চট করে দাও, দেরি কোরো না।
উঃ। বরেন মল্লিক পটলবাবুকে রেডি হতে বললেন। গলিতে রিহার্সাল দেবার সময়
পটলবাবুর মাথায় একটা নতুন আইডিয়া আসায় তিনি সেটি করেন বাবুকে বললেন।
তিনি বললেন তার হাতে যদি একটা খবরের কাগজ থাকত তাহলে তিনি সেটা পড়তে
পাড়তে ধাক্কা খেতেন তাহলে অন্যমনস্কতার ভাবটা ফুটিয়ে তোলার সুবিধা হত। তখন
করেন মল্লিক তাতে সম্মতি জানিয়ে সামনের ভদ্রলোককে যুগান্তর কাগজটা দিতে
বলতেন। থামের পাশে পটলবাবুকে দাঁড়াতে বললেন এবং নায়ক চঞ্চলকে রেডি আছে
কিনা জিজ্ঞাসা করলেন। গাড়ির পাশ থেকে নায়ক উত্তর দিলেন, হ্যাঁ সে রেডি। হঠাৎ
করেন মল্লিক হাত নামিয়ে নিয়ে কেষ্ট নামের একজনকে ভদ্রলোককে একটা গোঁফ দিয়ে দিতে বললেন যাতে ক্যারেক্টারটার পুরোপুরি আসে। কেন জিজ্ঞাসা করলে কী ধরনের গোঁফ ঝুপো, চাড়া দেওয়া না বাটার ফ্লাই, রেডি আছে সব। তখন করেন মল্লিক বললেন বাটারফ্লাই বাটারফ্লাই দিয়ে চট করে দাও। দেরি কোরো না।
৪. নীচের শব্দগুলোর অনুরূপ শব্দ পাঠ্য অংশটিতে পাবে। খুঁজে নিয়ে গেলো
উৎসাহহীন, নিরালা, অত্যাশিত, নিরুপন, লাখিত, সন্ধান, পথিক।
উত্তর - নিরুৎশাহ নির্জন, অভাবনীয়, শান্তশিষ্ট,
পদচারী।
৫. নীচের শব্দগুলিতে যে ইংরেজি শব্দগুলি আছে, তার বদলে বাংলা শব্দ বসিয়ে বাক্যগুলি আবার নতুন করে লেখো :
৫.১ বুঝতে পারছেন, ব্যাপারটা কতটা ইম্পর্ট্যান্ট
উঃ। বুঝতে পারছেন, ব্যাপারটা কতটা
৫.২ এই দাদুকে ডায়ালগ লিখে দে।
উঃ । এই, দাদুকে সংলাপ লিখে সে।
৫.৩ একজন অন্যমনস্ক, বদমেজাজি পেডেস্টিয়ান... ।
উঃ । একজন অন্যমনস্ক বদমেজাজি পথচারী.....
৫.৪ তাহলে একটু ওদিকে সরে গিয়ে ওয়েট করুন।
উঃ। তাহলে একটু ওদিকে সরে গিয়ে অপেক্ষা করুন।
৫.৫ আজ তো ট্যাগোরস বার্থ ডে।
উঃ। আজ তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন।
৫.৬ সাইলেন্স। রোদ বেরিয়েছে।
উঃ। চুপ! রোদ বেরিয়েছে।
৫.৭ থিয়েটার এর চেয়ে শতগুণে ভালো।
উঃ। রামও এর চেয়ে শতগুণে ভালো।
৫.৮ আপনি তো বেশ পাংচুয়াল দেখছি।
পূর্ণ।
উঃ। আপনি তো বেশ সময়নিষ্ঠ দেখছি।
৬. নীচের বিশেষণগুলির পরে উপযুক্ত বিশেষ্য বসিয়ে বাক্যরচনা করো : দোহারা, ব্যস্তসমস্ত, ফরমাশ, ঔদ্ধত্য, পরিশ্রম, সাফল্য, উৎকণ্ঠা, আত্মতৃপ্তি।
দোহারা > চেহারা > পটলবাবুর দোহারা চেহারা।
ব্যস্তসমস্ত > লোক > শহরে সব লোকই যেন ব্যস্তসমস্ত।
ফরমাশ > তালিকা → তোমার ফরমাশ তালিকা অনুযায়ী আনা হয়েছে।
ঔদ্ধত্য > ভাব > অফিসের বসের ঔদ্ধত্য ভাব দেখে নিখিলবাবু চাকরি ছেড়ে দিলেন।
পরিশ্রম > সাপেক্ষ > কারখানার কাজ বড়োই পরিশ্রম সাপেক্ষ।
উৎকণ্ঠা > উৎকণ্ঠাগত মুখ > ছেলেটির উৎকণ্ঠাগত মুখ দেখে সকলেই চিন্তিত।
লাভ—ছেলেকে জীবনে সফল হতে দেখে অজয়বাবু আত্মতৃপ্তি লাভ করেছেন।
৭. নীচের বিশেষ্যগুলির আগে উপযুক্ত বিশেষণ বসিয়ে বাক্যরচনা করো :
প্রস্তাব, অভিনয়, ফরমাশ, ঔদ্ধত্য, পরিশ্রম, সাফল্য, উৎকণ্ঠা, আত্মতৃপ্তি।
উঃ । প্রস্তাব > উত্তম প্রস্তাব > উত্তম প্রস্তাবে সবাই খুশি হয়।
অভিনয় > দারুন অভিনয় > আমার কাকু চাকরের দারুন অভিনয় করে।
ফরমাশ > সাধারণ ফরমাস > পিতা সন্তানকে সর্বদা সাধারণ পরামর্শ করে।
ঔদ্ধত্য > ভীষণ ঔদ্ধত্য > বড়লোকের ছেলেটির ভীষণঔদ্ধত্য।
পরিশ্রম > কঠোর > পরিশ্রম কঠোর পরিশ্রম করলে ফল অবশ্যই পাওয়া যায়।
সাফল্য> দেখার মত সাফল্য > ছেলেটি পরীক্ষার রেজাল্টে দেখার মতো সাফল্য অর্জন করেছে।
উৎকণ্ঠা > প্রচন্ড উৎকণ্ঠা > সন্তান বাড়ি ফেরান দেখে তার মা প্রচন্ড উৎকণ্ঠায় আছেন।
আত্মতৃপ্তি > চরম আত্মতৃপ্তি > কাজটা করে তপন চরম আকৃতি আত্মতৃপ্তি পেয়েছে।
৮. নীচের বাক্যগুলি থেকে সংখ্যাবাচক শব্দ, অনির্দেশক সংখ্যাবাচক শব্দ আর পূরণবাচক শব্দগুলি খুঁজে বার করে
:
৮. ১ নিশিকান্ত ঘোষ মশাই নেপাল ভট্টাচাজ্যি লেনে পটলবাবুর তিনখানা বাড়ি পরেই থাকেন।
উঃ। তিনখানা (সংখ্যাবাচক)
৮.২ বছর বিশেক বয়স, লম্বা দোহারা চেহারা। উঃ। বছর ত্রিশেক। (অনির্দেশক সংখ্যাবাচক)
৮.৩ বাহান্ন বছর বয়সে ফিল্মে অভিনয় করার প্রস্তাব আসতে পারে এটা অনুমান করা কঠিন বৈকি!
উঃ। বাহান্ন বছর(সংখ্যাবাচক)
৮.৪ পটলবাবুর ন বছরের সাধের চাকরিটি কর্পূরের মতো উবে গেল।
উঃ। ন বছরের। (সংখ্যাবাচক)
৮.৫ তারপর এই দশটা বছর কী না করেছেন পটলবাবু।
উঃ। দশটা বছর। (সংখ্যাবাচক)
৮.৬ সেইটির সামনে ঠিক সাড়ে আটটায় পৌঁছে যাবেন।
উত্তর - সাড়ে আটটায় (সংখ্যাবাচক)।
৮.৭ পটলবাবু দোষ আনা বিরক্তি সঙ্গে তিন আনা বিস্ময় ও তিন আনা যন্তনা মিশিয়ে "আঃ" শব্দটি উচ্চারণ করে- চলতে আরম্ভ করলেন।
উত্তর- দশ আনা তিন আনা (সংখ্যাবাচক)।
৯.নীচের বিশেষ্য গুলিকে বিশেষণ বদলে লেখ।
উত্তর-উৎকণ্ঠা- উৎকণ্ঠিত।
প্রয়োগ- প্রয়োগ যোগ্য।
উচ্চারণ -উচ্চারিত ।
বিরক্তি-বিরক্ত।
দম্ভ - দাম্ভিক ।
ঔদ্ধত্য-উদ্ধতা ।
অনুভব - অনুভাবিত।
পরিবেশন --পরিবেশিত।
১০ নীচের শব্দগুলি নিয়ে নতুন বাক্য রচনা করো।
টক করে, যা করে, তিড়িং করে, হস্তদন্ত হরে, ঠাহর করে, ঝিমঝিম করে, ফিসফিস করে, টুক করে।
টক করে - মেয়েটি মায়ের হাত থেকে টক করে খাতাটি তুলে নিল ।
তিড়িং করে- পুকুর ধারে ছেলেটি তিড়িং করে- লাফ দিল।
হস্তদন্ত হয়ে - কাজলের সাইকেলে একটি সাপ জড়িয়ে যাওয়ায় কাজল হন্তদন্ত হয়ে বাড়ি গিয়েছিল
ঠাহর করে – ঠাকুমা অন্ধকারে ঠাহর করে দূরের জিনিস দেখতে পায় না।
ঝিমঝিম করে— বর্ষাকালে একটানা ঝিমঝিম করে বৃষ্টি পড়ে।
ফিসফিস করে— ফিসফিস করে কথা বললে শুনতে পাওয়া যায় না।
টুক করে - মায়ের কাছে ছেলেটি টুক করে কথাটা লাগিয়ে দিল।
১১. নীচের বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে পদান্তরিত করে লেখো : গভীর, বিকৃত, নির্জন, সার্থক, সংযত, নির্বিবান, তীব্র উচিত।
উঃ। গাভীর—গভীরতা।
বিকৃত—বিকার।
নির্জন—নির্জনতা।
সার্থক—সার্থকতা।
সংযত — সংযম।
নির্বিবান - নির্বিবাদ।
তীব্র - তীব্রতা।
উচিত— উচিত।
১২. নিম্নরেখাঙ্কিত অংশের কারক-বিভক্তি নির্ণয় করো :
১২.১ নরেশ ভিড় ঠেলে এসে বলল, আপনি এই ছায়াটায় দাঁড়ান একটু।
উঃ। অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তি
১২.২ এবার পটলবাবু লোকটিকে দেখতে পেলেন।
উঃ। কর্তৃকারকে 'এ' বিভক্তি।
১২.৩ নরেশ একভাঁড় চা নিয়ে পটলবাবুর দিকে এগিয়ে এল।
উঃ। কর্তৃকারকে শূন্য বিভক্তি।
১২.৪ শশাঙ্ক তার হাতের খাতা থেকে একটা সাদা পাতা ছিঁড়ে কলম দিয়ে তাতে কী জানি লিখে কাগজটা পটলবাবুকে দিল।
উঃ। অপাদান কারকে 'এ' বিভক্তি।
১০. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১০১ পটলবাবুর কাছে যে-দিন ফিল্মে অভিনয়ের প্রস্তাব আসে, সেদিন ছুটির দিন ছিল কেন?
উঃ সে-দিন ছিল ট্যাগোরস্ বার্থডে। অর্থাৎ সে দিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন ছিল।
১৩.২ বাজারে গিয়ে কেন গৃহিণীর ফরমাশ গুলিয়ে গেল পটলবাবুর?
উঃ। পটলবাবুর কাছে অভিনয়ের প্রস্তাব আসার ফলে বাজারে গিয়ে গৃহিণীর ফরমাস গুলিয়ে গেল।
১০.৩ থিয়েটারে পটলবাবুর প্রথম পার্ট কী ছিল? উঃ। মৃত সৈনিকের পার্ট।
১০.৪ উনিশশো চৌত্রিশ সালে পটলবাবু কলকাতায় বসবাস করতে এলেন কেন?
উঃ। হাভসন অ্যান্ড বিদালি কোম্পানিতে আর একটু বেশি মাইনের চাকরি আর একটা নেপাল ভটচাজি লেনে একটা বাড়ি থেকে পটলবাবু কলকাতায় বসবাস করতে এলেন।
১৩.৫ পাড়ায় থিয়েটারের দল গড়া আর হলো না কেন পটলবাবুর?
উত্তর- আপিসে ছাঁটাই হলো। আর তাতেই পটলবাবু ন-বছরের চাকরি চলে যাওয়ায় পটলবাবুর গড়া আর হলো না।
১০.৬ বা তার সময়নিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য কোন উদাহরণ দিতে ভালোবাসতেন?
তিনি যে বছর হাসন অ্যান্ড বিস্থালিতে চাকরি করতেন সেই উদাহরণ পটলবাবু দিতে ভালোবাসতেন ।
১৭.৩ "লজ্জার মাথা হেঁট হয়ে গেল'
পটলবাবু এমন লজ্জা পেলেন কেন?
উঃ। পটলবাবুকে অভিনয় করার কথা বলা হয়েছে তাই তিনি লজ্জা পেলেন।
১৩.৮ 'খখন পাকড়াশি আজ তাকে দেখলে সত্যিই খুশি হতেন। তিনি খুশি হতেন কেন?
উঃ! এতদিন অকেজো থেকেও তাঁর শিল্পীমন ভোতা হয়ে যায়নি, এ দেশেই পটলবাবুর নাট্যগুরু গন পাকড়াশি হতেন।
১৪. চার পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও :
১৯.১ আমার টক কবে তোমার কথা মনে পড়ে গেল' কার মনে পড়ে গেল পটলবাবুর কথা? পটলবাবুর কথাই বিশেষ করে তাঁর মনে পড়ল কেন।
উচ্চ। নিশিকান্ত ঘোষ মশাইয়ের মনে পড়ে গেল পটলবাবুর কথা। কারণ পটলবাবু এককালে অভিনয় করতেন। তাঁর রীতিমতো অভিনয়ের শখ ছিল। যাত্রায়, শব্দের থিয়েটারে, পুজো-পার্বণে, পাড়ার ক্লাবের অনুষ্ঠানে তাঁর বাঁধা কাজ ছিল অভিনয় করা।
১৪.২ 'গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল ! সাধে কি তোমার কোনোদিন কিচ্ছু হয় না?' - পটলবাবুর গৃহিণীর এই মন্তব্যের কারণ কি ?
উঃ। অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে পটলবাবু বাহান্ন বছর বয়সে তিড়িং করে একটা লাফ দিয়ে উঠলেন। নাট্যকার শিশির ভাদুড়ির সাথে তুলনা করে তিনি গিন্নিকে বলতে লাগলেন শিশির ভাদুড়ি সত্তর বছর বয়সে চাণক্যের পার্টে এইভাবে লাফখানা দিতেন। আজ তিনি পুনর্যৌবন লাভ করেছেন। তাঁর মান, যশ, প্রতিপত্তি সব হবে। এইসব শুনে পটলবাবুর গৃহিণী এই মন্তব্যটি করেছিলেন।
১৪.৩ কার উপদেশের স্মৃতি পটলবাবুর অভিনেতা সত্তাকে জাগিয়ে তুলল ? কোন্ অমূল্য উপদেশ তিনি দিয়েছিলেন পটলবাবুকে?
উঃ। গগন পাকড়াশির উপদেশের স্মৃতি। পটলবাবুর অভিনেতা সত্তাকে জাগিয়ে তুলুন। তিনি পটলবাবুর নাট্যগুরু ছিলেন।
তিনি বলেছিলেন 'একটা কথা মনে রেখো পটল। যতো ছোটো পাটই তোমাকে দেওয়া হোক, তুমি জেনে রেখো তাতে কোনো অপমান নেই। শিল্পী হিসেবে তোমার কৃতিত্ব হবে সেই ছোটো পার্টটি থেকেও শেষ রসটুকু নিংড়ে বার করে তাকে সার্থক করে তোলা। থিয়েটারের কাজ হলো পাঁচজন মিলেমিশে কাজ। সকলের সাফল্য জড়িয়েই নাটকের সাফল্য”। এই অমূল্য উপদেশই পাকড়াশি মশাই পটলবাবুকে দিয়েছিলেন।
১৪.৪ 'ধন্যি মশাই আপনার টাইমিং। বাপের নাম ভুলিয়ে দিয়েছিলেন প্রায়-ওঃ!' – বক্তা কে? কোন্ ঘটনার ফলে তার এমন মন্তব্য ?
উত্তর- বক্তা হলেন চঞ্চলকুমার।
অভিনয় করার জন্য পটলবাবুকে যখন অ্যাকশন বলা হল, পটলবাবু হঠাৎ চোখে অন্ধকার দেখলেন। নায়ক চঞ্চল কুমারের সঙ্গে তাঁর কপালের ঠোকাঠুকি লেগে গেল। কিন্তু পরমুহূর্তেই এক প্রচন্ড শক্তি প্রয়োগ করে আশ্চর্যভাবে
নিজেকে সামলে নিয়ে বিরক্তি, বিস্ময় ও যন্ত্রণা মিশিয়ে 'আঃ' শব্দটা তিনি উচ্চারণ করলেন। তার অভিনয় ঠিক ঠিক ছিল। এবংতিনি যথার্থ সময়ে 'আঃ' শব্দটি বলায় বক্তা চালকুমার এমন মন্তব্য করেছিলেন।
১৪.৫ এতদিন অকেজো থেকেও তাঁর শিল্পীমন ভোঁতা হয়ে যায়নি' – এই অনুভব কীভাবে জাগল পটলবাবুর মনে?
উঃ। পটলবাবুর অভিনয়ের রীতিমতো শখ ছিল। শখ কেন অভিনয় তার নেশাই ছিল। বরেন মল্লিকের সিনেমায় তিনি যখন ছোট একটু অভিনয় করার সুযোগ পেলেন তখন তাঁর যেন জীবনটাই ধন্য হয়ে গেল। অভিনয়ের জন্য
একটা 'য' শব্দ সেটা উচ্চারণ করতে গিয়ে তিনি নানারকম ভাবনাচিন্তা করতে লাগলেন। নানান কথা তাঁর মনে পড়তে লাগল। অনেক উত্তেজনা, রোমার ও বিস্ময় নিয়ে যখন তিনি 'আ' শব্দটা উচ্চারণ করলেন এবং পরিচালক মশাই ঠিক বললেন, তখন পটলবাবুর মন এক গভীর আনন্দ ও আত্ম তৃপ্তিতে ভরে গেল। তিনি অনুভব করলেন তাঁর শিল্পী মন শেষ হয়ে যায়নি, ভোতা হয়ে যায়নি।
১৪.৬ পটলবাবুর ফিল্মে অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রোডাকশন ম্যানেজার নরেশ দত্তের অনেকগুলি ব্যস্ত মুহূর্ত।।টুকরো মুহূর্তগুলি জোড়া নিয়ে নরেশ দত্ত নামে মানুষটির সম্পূর্ণ ছবি নিজের ভাষায় তৈরি করো।
উঃ। নরেশ দত্ত পটলবাবুর প্রতিবেশী নিশিকান্ত ঘোষের ছোটো শালা। তিনি সিনেমার প্রোডাকশন ম্যানেজার,বছর ত্রিশেক বয়স, দোহারা চেহারা। তিনি পটলবাবুকে একজন অন্যমনস্ক বদমেজাজি পথচারীর চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দিলেন। তিনি পটলবাবুকে একটা গলাবশ
কোর্ট আনতে বললেন। পটলবাবু এবং পটলবাবুর ছায়ার ধারে অপেক্ষা করতে
বললেন নরেশবাবুর কথা মতো নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে উপস্থিত হলেন। তা দেখে নরেশবাবু খুব খুশি হলেন। নরেশবাবু সারাদিন ব্যস্ত মানুষ তিনি সবাইকে চুপ করে থাকতে বললেন। জায়গা ছেড়ে নড়তে বারণ করলেন। ক্যামেরার দিকে এগিয়ে
আসতে বারণ করলেন। নরেশবাবু বাস্ত থাকলেও তার সবদিক লক্ষ থাকে। তিনি।একভাঁড় চা পটলবাবুকে দিলেন। নরেশ বাবু তাঁকে একটা ডায়ালগ লিখে দিলেন।।নরেশবাবু পটলবাবুকে তাঁর পারিশ্রমিক দিতে গিয়ে দেখলেন তিনি নেই। তিনি আশ্চর্য হলেন। এরপর তিনি নিজে
কাজে আবার বাস্ত হয়ে পড়লেন।
১৫. নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
১৫.১ 'আঃ'—এই একটিমাত্র শব্দের উচ্চারণ কৌশলে আর অভিনয়দক্ষতায় ‘একটা আস্ত অভিধান' লিখে ফেলা যায়। শব্দটি নিয়ে ভাবতে এমনটাই মনে হয়েছিল অভিনেতা পটলবাবুর। পটলবাবুর ভাবনাধারা কি ঠিক বলে মনে হয়।
তোমার? আঃ—শব্দের উচ্চারণে কত ধরনের ভাবপ্রকাশ সম্ভব বলে তোমার মনে হয় ?
উঃ। পটলবাবুর ভাবনাধারা একদম ঠিক। আঃ এই একটি মাত্র শব্দের উচ্চারণে সমস্ত কিছু প্রকাশ হয়ে যায়।।আঃ কথাটাই নানান ভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বললে মানুষের মনের নানান অবস্থা প্রকাশ করা যায়। ভালো অভিনেতা
হলে এই একটা কথাতেই সমস্ত কিছু বোঝানো যায়।
চিমটি খেলে মানুষ যেভাবে আঃ বলে, গরমে ঠান্ডা শরবত খেয়ে মোটেই সেভাবে আঃ বলে না। এই দুটো একেবারেই আলাদা। এছাড়া আচমকা কানে সুড়সুড়ি লাগলেও আর একরকমের ‘আঃ' বেরোয়। এ ছাড়া দীর্ঘশ্বাসের আঃ, তাচ্ছিল্যের আঃ, অভিমানের আঃ, ছোটো করে বলা আঃ, লম্বা করে বলা আঃ, চেঁচিয়ে বলা আঃ, মৃদুস্বরে আঃ, চড়া গলায় আঃ, খাদে গলায় আঃ, আবার আঃটাকে খাদে শুরু করে বিসর্গটায় সুর চড়িয়ে আঃ বলা যায়।
১৫.২ ‘সে কী, টাকা না-নিয়েই চলে গেল নাকি লোকটা! আচ্ছা ভোলা মনতো!'— তোমার কী মনে হয় সফলভাবে।কাজ করার পরেও কেন টাকা না-নিয়েই চলে গিয়েছিলেন পটলবাবু? পটলবাবুর চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি যথার্থ বলে
মনে হয় তোমার? নিজের যুক্তি দিয়ে লেখো।
উঃ। পটলবাবু চলে গিয়ে ঠিক কাজ করেছেন। মান, যশ, প্রতিপত্তি, খ্যাতি এর চাইতেও বড়ো হল একজন শিল্পীর কাছে তাঁর শিল্পের সার্থকতা। পটলবাবু একজন ভালো অভিনেতা। অভিনয় তাঁর শুধু শখ নয়, নেশাও বটে। তিনি
অভিনয় করতে খুব ভালোবাসেন। কিন্তু তেমন করে কোনোদিন সুযোগ পাননি। থিয়েটারে অভিনয় করেছেন, কিন্তু।সিনেমায় এই প্রথম। সেইজন্য যথার্থভাবে নিজের অভিনয়টুকু তিনি নিংড়ে বার করে দিতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে
তাঁর মনে ছিল চাপা উত্তেজনা ও রোমাঞ্চ। পঁচিশ বছর আগে স্টেজে অভিনয় করার সময় একটা বড়ো দৃশ্যে নামবার আগে মনের মধ্যে যে ভাবটা তিনি অনুভব করতেন সেই ভাব। তারপর যখন সত্যি সত্যিই অভিনয় যথার্থ হল তখন এক গভীর আনন্দ ও আত্মতৃপ্তি পটলবাবুর মনকে ধীরে ধীরে আচ্ছন্ন করে ফেলল। তাঁর মনে হল এতদিন অকেজো থেকেও তাঁর শিল্পীমন ভোঁতা হয়ে যায়নি। এই সামান্য কাজটিকে নিখুঁতভাবে করার জন্য তাঁর যে আগ্রহ আর।পরিশ্রম তার কদর কেউ করতে পারবে না। সার্থক অভিনয় করতে পেরে শিল্পীর যে আনন্দ হয় তার কাছে টাকার
কোনো মূল্য নেই। তাই পটলবাবুর চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত একদম সঠিক।
১৫.৩ কেমন করে শুটিং চলে, তার জীবন্ত কিছু টুকরো টুকরো ছবি উঠে এসেছে এই গল্পের আনাচে কানাচে। সেইসব
টুকরো জুড়ে জুড়ে নিজের ভাষায় শুটিং-এর মুহূর্তগুলির একটি সম্পূর্ণ ছবি তৈরি করো।
উঃ। শুটিং স্পটে ক্যামেরাম্যান, মেকআপম্যান, ডিরেক্টার বা পরিচালক ছাড়াও আরও নানা ধরনের লোকজন থাকে। ক্যামেরা, লাইট, সাউন্ড থাকে। অভিনেতা, অভিনেত্রী ও অন্যান্য শিল্পীরা থাকেন। পরিচালকের নির্দেশমতো এইসব অভিনেতা অভিনেত্রীরা কাজ করে থাকেন। বিভিন্ন জায়গায় লোকেরা দৌড়ঝাপ করে কাজ করে। শুটিং চলার সময় ডিরেক্টারের নির্দেশমতো সবাই চুপ করে যায়। তারপর শুরু হয় শুটিং। শুটিং চলাকালীন কথাবলা, চলা সমস্ত নিষিদ্ধ। এইভাবে বিভিন্নস্থানে শুটিং চলে।
১৫.৪ অভিনয়ের নানা ধরনের প্রসঙ্গ এই গল্পে ছড়িয়ে আছে। থিয়েটার আর সিনেমায় অভিনয়ের ধরনে সাদৃশ্য আর বৈসাদৃশ্যের কিছু কথা মনে এসেছিল পটলবাবুর। পটলবাবুর মতামত নিজের ভাষায় লিখে, এ বিষয়ে তোমার
কোনো মতামত থাকলে তাও জানাও।
উঃ। সিনেমা এবং থিয়েটার দু-জায়গাতেই লোকে অভিনয় করেন। প্রতিটি স্থানেই নির্দিষ্ট সেট থাকে। সেই সেটেই সবকিছু অভিনীত হয়। নায়ক-নায়িকা থাকেন তাদের ডায়ালগ থাকেন। দু-জায়গাতেই পরিচালক থাকেন।
পরিচালকরা সমস্ত বিষয়টা পরিচালনা করেন। মেকআপম্যানও থাকেন। কিন্তু থিয়েটারে অভিনয়ের স্থান অনেক বেশি। সেখানে গুরু-শিষ্যের সম্পর্কের একটা ব্যাপার থাকে। অভিনয়ের তালিম নিতে হয়। কিন্তু ক্যামেরা থাকে না, থাকে না আউটডোর শুটিং-এর জায়গাও। সেখানে অভিনেতাকে এক একটি কথা থেকে রস নিংড়ে দর্শকদের কাছে পরিবেশন করতে হয়। এছাড়া আমার মতে সিনেমার অভিনয়ের ক্ষেত্রে
ক্যামেরার সামনে কোনো অভিনেতার ভুল হলে বা অন্য কোনো দৃশ্যগত ত্রুটি হলে তা তখুনি শুধরে নেওয়া যায়।
কিন্তু থিয়েটারে অভিনয়ের ক্ষেত্রে সরাসরি দর্শকের সামনে অভিনেতাকে নিজস্ব ক্ষমতা দেখাতে হয়। তাতে ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ থাকে না।
১৫.৫ বছর পাশের বেঁটেখাটো টাকমাথা নাট্যপ্রিয় পটলবাবুকে তোমার কেমন লাগল নিজের ভাষায় লেখো।
উঃ। পটলবাবু, জীবনে বহুবার বহুক্ষেত্রে আঘাত পেয়েছেন। কিন্তু কখনও থেমে যাননি। কখনও হতাশ হননি।
জীবনে তাঁর স্বপ্ন ছিল অভিনেতা হবার। জীবনযুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে তাঁর সেই স্বপ্ন ভেঙে যায়। অনেক দিন পর বাহান্ন বছর বয়সে যখন অভিনয়ের ডাক পেলেন, তখন সেই স্বপ্ন আবার জেগে উঠল। নিজের সমস্ত ক্ষমতা দিয়ে
তিনি ফুটিয়ে তুললেন মনের ভাব। সবার কাছে বাহবা পাওয়াটাই তাঁর পারিশ্রমিক ধরে নিয়ে পটলবাবু বাড়ি ফিরে আসেন। এর থেকেই বোঝা যায় তিনি একজন সত্যিকারের শিল্পী। এই সমস্ত গুণের জন্য পটলবাবুর চরিত্রটি আমার
অসাধারণ লেগেছে।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর •
★ নিশিকান্তবাবু কেমন লোক? তিনি কোথায় থাকেন?
উঃ। নিশিকান্তবাবু আমুদে লোক, তিনি নেপাল ভট্টাচার্য লেনে পটলবাবুর তিনখানি বাড়ির পরে থাকেন।
★ বাজার করতে গিয়ে পটলবাবুর কী কী ভুল হল ?
উঃ। বাজার করতে গিয়ে পটলবাবু স্ত্রীর ফরমাশ গুলিয়ে ফেলে কালোজিরের বদলে ধানিলজ্জা কিনে ফেললেন এবং সৈন্ধব নুন কিনতে ভুলেই গেলেন।
★ পটলবাবুর ভালো নাম কী? তিনি কীসের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেরেছিলেন?
উঃ। পটলবাবুর ভালো নাম শ্রী শীতলাকান্ত রায়। তিনি একজন অন্যমনস্ক, বদমেজাজি পেডেস্টিয়ানের অর্থাৎপথচারীর চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন।
★ কোন জায়গায় এবং কোন সময়ে তার শুটিং হয়।
উঃ। সকাল সাড়ে আটটার সময় মিশন রো আর বেন্টিঙ্ক স্টিটের মোড়ের ফ্যারাডে হাউসের সামনে তার শুটিং হয়।
★ পটলবাবু অভিনীত ছবির নায়ক ও পরিচালক কে ছিলেন?
উঃ। পটলবাবু অভিনীত ছবিটির নায়ক ছিলেন চণ্ডালকুমার ও পরিচালক ছিলেন বরেন মল্লিক।
বিপরীত শব্দ : দরকার—অদরকার।
নগন্য মান্যগনা।
বাঙালি-অবাঙালি
। ব্যবস্থা-অব্যবস্থা।
আশা-নিরাশা।
নন-অপমান।
খ্যাতি অখ্যাতি।
গৃহিণী—গৃহকর্তা।
মৃদু — তীব্র।
নিরীহ – হিংস্র।
ভাগ্যবান অভাগা।
অগ্রাহ্য - গ্রাহ্য।
সাফল্য-ব্যর্থতা।
অভ্যাস - অনভ্যাস।
উদ্বেগ—নিরুদ্বেগ।
গভীর-অগভীর।
