দেবতাত্মা হিমালয়' || সপ্তম শ্রেণী || হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর || Debtatma Himaloy || class 7 || hate-kalome question answer
দেবতাত্মা হিমালয়
প্রবোধ সান্যাল
সপ্তম শ্রেণী
হাতে-কলমে
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১. বখনীতে দেওয়া একাধিক উত্তরের মধ্যে ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে নীচের বাক্যগুলি আবার লেখো :
১.১ লামারা রাজকীয় সম্বর্ধনা জানিয়েছিলেন রাজপুত্র (তিয্য রক্ষিত/শান্ত রক্ষিত/কুমার রক্ষিত)-কে।
উঃ। লামারা রাজকীয় সমর্থনা জানিয়েছিলেন রাজপুত্র শান্ত রক্ষিতকে।
১.২ তিব্বতীদের প্রধান ব্যবসা (পশম/ রেশম/উতিবন্ধ) এর।
উঃ। তিব্বতীদের প্রধান ব্যাবসা পশম -এর।
১.৩ কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক (বড়ো মন্দির/ বড়ো মসজিদ/বড়ো গির্জা)।
উঃ। কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক বড়ো গির্জা
১.৪ রবীন্দ্রনাথের হাতে লেখক তুলে দিয়েছিলেন (অমৃতবাজার পত্রিকা/ যুগান্তর/ আনন্দবাজার পত্রিকা) র রবীন্দ্রজয়ন্তী সংখ্যা।
উঃ। রবীন্দ্রনাথের হাতে লেখক তুলে দিয়েছিলেন যুগান্তর পত্রিকার রবী জয়ন্তী সংখ্যা।
১.৫ নবরচিত একটি কবিতা রেডিয়োতে আবৃত্তি করতে রবীন্দ্রনাথের সময় লেগেছিল (আধ ঘন্টা/পঁয়তাল্লিশ মিনিট/পনেরো মিনিট)।
উঃ। নবরচিত একটি কবিতা রেডিয়োতে আবৃত্তি করতে রবীন্দ্রনাথের সময় লেগেছিল পনেরো মিনিট।
২. ঘটে যাওয়া ঘটনার ক্রম অনুযায়ী এলোমেলো ঘটনাগুলি সাজিয়ে লেখো।
২.১ কলকাতা থেকে তৎক্ষণাৎ জবাব এল 'ও. কে'।
২.২ কবি তাঁর ঘরের আসনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন।
২.৩ ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় জন্মদিন উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি কবিতা পাঠ করবেন।
২.৪ প্রস্তুতির সময়ে নরম মখমল বসানো চেয়ারে বসে কয়েকবার ভাবলুম হ্যালো ক্যালকাটা....হ্যালো?
২.৫ সেজন্য পাহাড়ে পাহাড়ে টেলিফোনের খুঁটি বসানো এবং তার খাটানো হলো ক-দিন ধরে।
২.৬. বেতার কর্তৃপক্ষ কবির কণ্ঠস্বরটি ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রচার করবেন, তাই এই ব্যবস্থা।
২.৭ কবির জন্মদিনের কবিতা পাঠের জন্য কলকাতা কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত হলো।
উঃ। ২.৩ ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় জন্মদিন উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি কবিতা পাঠ করবেন।
২.২ কবি তাঁর ঘরের আসনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন।
২.৭ কবির জন্মদিনের কবিতা পাঠের জন্য কলকাতা- কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত হল।
২.৫ সেজন্য পাহাড়ে পাহাড়ে টেলিফোনের খুঁটি বসানো এবং তার খাটানো হল ক-দিন ধরে।
২.৬ বেতার কর্তৃপক্ষ কবির কণ্ঠস্বরটি ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রচার করবেন, তাই এই ব্যবস্থা।
২.৪ প্রস্তুতির সময়ে নরম মখমল বসানো চেয়ারে বসে কয়েকবার ভাবলুম হ্যালো ক্যালকাটা......হ্যালো?
২.১ কলকাতা থেকে তৎক্ষণাৎ জবাব এল -“ও. কে'।
৩. নীচের বাক্যগুলিতে দাগ-দেওয়া শব্দগুলো অনুরূপ শব্দ পাঠ্য অংশটিতে পাবে। উপযুক্ত শব্দ খুঁজে নিয়ে বাক্যগুলি আবার লেখো :
৩.১ শরৎচন্দ্র দাসের ভ্রমণের বিবরণ থেকেই প্রথম তিব্বতের কথা জানা যায়।
উঃ। শরৎচন্দ্র দাসের ভ্রমণবৃত্তান্ত থেকেই প্রথম তিব্বতের কথা জানা যায়।
৩.২ এই পথে তিনজন বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি তিব্বতে গিয়েছিলেন।
উঃ। এই পথে তিনজন জগদ্বিখ্যাত বাঙালি তিব্বতে গিয়েছিলেন।
৩.৩ সবার অগোচরে আত্মগোপনের জন্য অন্যরকম পোশাক পরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র একদিন কলকাতা ছেড়ে গিয়েছিলেন।
উঃ। সবার অগোচরে ছদ্মবেশে নেতাজি সুভাষচন্দ্র একদিন কলকাতা ছেড়ে গিয়েছিলেন।
৩.৪ ভুল মানুষ মাত্রেরই হতে পারে, তবে নিজের দোষ স্বীকার করে নেওয়ার সাহসও থাকা উচিত।
উঃ। ভুল মানুষ মাত্রেরই হতে পারে, তবে স্বীকারোক্তির সাহসও থাকা উচিত।
৩.৫ যাদের ওপর পরিচালনার ভার, এ কাজের জন্য আগে তাদের দাবি ত্যাগের প্রমাণপত্র প্রয়োজন।
উঃ। কর্তৃপক্ষ, এ কাজের জন্য আগে তাদের ছাড়পত্র প্রয়োজন।
৩.৬ যাঁরা নিজের নামেই বিখ্যাত, ভারতের সেই বরণীয় মানুষদেরই সম্মাননার আয়োজন হয়েছে এই সভায়।
উঃ। স্বনামখ্যাত, ভারতবরেণ্য, মানুষেরই সম্বর্ধনার আয়োজন হয়েছে এই সভায়।
৪. নীচের বাক্যগুলিতে যে ইংরেজি শব্দগুলি আছে, তার বদলে বাংলা শব্দ বসিয়ে বাক্যগুলি আবার লেখো : (বাংলা শব্দের জন্য পাশের শব্দঝুড়ির সাহায্য নিতে পারো।)
পথনির্দেশক, চিহ্ন, সম্প্রচার, ঘণ্টা, মহাকাব্য, দূরভাষ, খাবার ঘর, গাড়িচালক।
৪.১ ডাক্তার গৃহিণীর ডাইনিং হলে প্রাতরাশ সারা হল।
উঃ। চিকিৎসক গৃহিণীর খাবারঘরে প্রাতরাশ সারা হল।
৪.২ অত বড়ো এপিক পৃথিবীর কোনো কালের কোনো সাহিত্যে নেই।
উঃ। অত বড়ো মহাকাব্য পৃথিবীর কোনো কালের কোনো সাহিত্যে নেই।
৪.৩ কালিম্পঙে টেলিফোন ছিল না।
উঃ। কালিম্পঙে দূরভাষ ছিল না।
৪.৪ বেতার কর্তৃপক্ষ তাঁর কণ্ঠস্বর সঙ্গে সঙ্গে ব্রডকাস্ট করবেন।
উঃ। বেতার-কর্তৃপক্ষ তাঁর কন্ঠস্বর সঙ্গে সঙ্গে সম্প্রচার করবেন।
৪.৫ ভোরে আমার ড্রাইভার এল গাড়ি নিয়ে।
উঃ। ভোরে আমার গাড়িচালক এল গাড়ি নিয়ে।
৪.৬ একটা বৃদ্ধি বেল বাজল।
উ। একটা বুঝি ঘণ্টা
৪.৭ গির্জাটা হলো কালিম্পন্ডের ল্যান্ডমার্ক ।
উঃ। শিল্পাটা হলো কালিম্পঙ্কের পথনির্দেশক।
৫. নীচের বিশেষণগুলির পরে উপযুক্ত বিশেষ্য বসিয়ে বাক্যরচনা করো।
মেঘময়, জীবন, মায়াচ্ছন্ন, সুগ্ধ, দীপ্ত, অগম্য, বিপুল, ঝুপসি।
মেঘময় (আকাশ)- সারাদিন আকাশ মেঘময়।
ভীষণ (গরম)- বছরের শেষ থেকে ভীষণগরম শুরু হয়।
মায়াচ্ছন্ন (পৃথিবী)- পৃথিবীর সকল জীব মায়াচ্ছন্ন
সুক্ষ্ম (যন্ত্র)- সূক্ষ্ম যন্ত্রের অনেক সুর বেজে ওঠে ।
দীপ্ত (কণ্ঠ)- মেয়েটি দীপ্ত কন্ঠে ঘোষণা করল আমরা ভারতবাসী।
অগমা (পথ)- অগমা পথ চলা খুব কষ্টকর ব্যাপার
বিপুল (জলরাশি)- বর্ষাকালে দামোদর বিপুল জলরাশি বহন করে চলে।
ঝুপসি (ঘর)- লাইনে ধরে অনেক ঝুপসিইই ঘর দেখা যায়।
৬. নীচের বিশেষ্যগুলির আগে উপযুক্ত বিশেষণ বসিয়ে বাক্য রচনা করো :
উঃ। কণ্ঠস্বর, স্বপ্নলোক, ব্যক্তিত্ব, আশঙ্কা, ইতিবৃত্ত, কীর্তি, রেখাচিত্র, দিগ্বলয়।
(দীর্ঘ) কণ্ঠস্বর -কবির দীর্ঘ কণ্ঠস্বর পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়ল।
(মায়াচ্ছন্ন) স্বপ্নলোক কালিম্পঙের প্রাকৃতির সৌন্দর্য্য যেন মায়াচ্ছন্ন স্বপ্নলোক।
(বিরাট) ব্যক্তিত্ব- মহাকবি রবীন্দ্রনাথের বিরাট ব্যক্তিত্ব।
( আশঙ্কা)— তীব্র আশঙ্কা — পরীক্ষায় ফেল করার ব্যাপারে তার তীব্র আশঙ্কা আছে।
(আনুপূর্বিক)ইতিবৃত্ত -তাঁর আনুপূর্বিক ইতিবৃত্ত আমার জানা নেই।
(অমর) কীর্তি-বিপ্লবীদের অমর কীর্তি আমাদের সবার মনে করা উচিত।
(একখানা) রেখাচিত্র - প্রথম পৃষ্ঠায় ছিল কবির একখানা রেখাচিত্র।
(শূন্য) দিগ্বলয়–শূন্য দিগ্বলয় কিছুই দেখা যায় না।
৭. নীচের দাগ দেওয়া শব্দগুলি কী জাতীয় ? শব্দগুলির বিশিষ্টতা উল্লেখ করে শব্দগুলি দিয়ে নতুন বাক্যরচনা করো :
৭.১ শীতের হাওয়া ছিল কনকনে।
উঃ। নীচের দাগ দেওয়া শব্দগুলি ধন্যাত্মক শব্দ। কনকনে (বিশেষণ) - কনকনে শীতে ঘুরতে যেতে খুব আনন্দ হয়।
৭.২ ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েই চলেছে।
উঃ। ঝিরঝিরে (বিশেষণ) ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজা খেতে ভালো লাগে।
৭.৩ পায়ের নীচে কালিম্পং থর থর করতে লাগল কি না আর মনে রইল না।
উঃ। ধরধর (বিশেষণ) বাঘের ভয়ে জঙ্গলে সবাই থরথর করে কাঁপতে লাগল।
৮. নীচের বাক্যগুলি থেকে তারতম্যসূচক শব্দগুলি খুঁজে বার করো। কোটি দুয়ের মধ্যে তুলনা, আর কোটি বহুর মধ্যে তুলনা, তা নির্দেশ করে শব্দগুলি দিয়ে নতুন বাক্য রচনা করো :
৮. ১ পৃথিবীর উচ্চতম শিখর তিনি জয় করেছিলেন।
উঃ। উচ্চতম বহুর মধ্যে উচ্চ এভারেস্ট পৃথিবীর উচ্চতম শিখর।
৮.২ এর চেয়ে মহত্তর উদ্যোগ আর দেখিনি।
উত্তর-মহত্তর -দুয়ের মধ্যে পূর্বের চেয়ে এই উদ্যোগ মহত্তর বলেই মহত্তরমনে হয়েছে।
৮.০ বাংলার তাই পদই সর্বশ্রেষ্ঠ।
উঃ। সর্বশ্রেষ্ঠ —বহুর মধ্যে শ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রনাথ সর্বশ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন।
৮.৪ পাশের গলিটি সংকীর্ণতর হয়ে এসেছে।
উঃ। সংকীর্ণতর দুয়ের মধ্যে → ডানদিকের রাস্তাটা সংকীর্ণতর
৮.৫ অল্প আয়োজনে শুরু হল দীর্ঘতম যাত্রা।
উঃ। দীর্ঘতম—বহুর মধ্যে দীর্ঘ → কেদার যাবার এই রাস্তাটিই দীর্ঘতম।
৯. নীচের বাক্যগুলি থেকে সংখ্যাবাচক শব্দ, অনির্দেশক সংখ্যাবাচক শব্দ আর পূরণবাচক শব্দগুলি খুঁজে বার করে লেখো
৯.১ গ্যাংটক থেকে নাথুলা গিরিসংকট হলো মাত্র ছাব্বিশ মাইল।
উঃ ছাব্বিশ মাইল (সংখ্যাবাচক)।
৯.২ তিনি তেরো বছর সেখানে বাস করেছিলেন।
উঃ। তেরো বছর (সংখ্যাবাচক)।
১.৩ দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন আধুনিক ভারতের কুলগুরু রাজা রামমোহন রায়।
উঃ। দ্বিতীয় (পূরণবাচক)।
৯.৪ শরৎচন্দ্র দাস গিয়েছিলেন উনিশ শতকের শেষ ভাগে।
উঃ। উনিশ (সংখ্যাবাচক)।
৯.৫ অষ্টম শতাব্দীতে রাজপুত্র তিব্বতে যান।
উঃ। অষ্টম (পূরণবাচক)।
৯.৬ বিমানে গেলে কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছাতে সাড়ে তিন ঘণ্টা। সেই গতিতে গেলে লামা পৌঁছাতে ঘণ্টা তিনেক লাগে কি?
উঃ। সাড়ে তিন ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা (সংখ্যাবাচক) ।
৯.৭ একটু আধটু দেখে বেড়াতেই ঘণ্টাখানেক সময় লাগল।
উঃ। ঘণ্টাখানেক (সংখ্যাবাচক)।
৯.৮ মনে পড়ে সেই ২৫ বৈশাখের অপরাহু।
উঃ। ২৫ (সংখ্যাবাচক)।
৯.৯ যেখানে বছর চৌদ্দ আগে একটি রাত্রিবাস করে গিয়েছিলাম।
উঃ। চৌদ্দ, একটি (সংখ্যাবাচক, পূরণবাচক)।
৯.১০ কবি মাত্র পনেরো মিনিটকাল তাঁর কবিতা পাঠ করবেন।
উঃ। পনেরো মিনিট কাল (অনির্দেশক সংখ্যাবাচক)।
১০. নীচের বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে বদলে লেখো :
প্রণাম, অনুরোধ, পৃথিবী, উদবোধন, পূজা, উদ্বেগ, পুলক, আশঙ্কা।
উঃ । প্রণাম - প্রণম্য।
পূজা -পূজিত।
পৃথিবী -পার্থিব।
অনুরোধ- অনুরুদ্ধ।
পুলক পুলকিত।
উদ্বেগ — উদ্বিগ্ন ।
১১. নীচের বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে বদলে লেখো।
উঃ। বৈদান্তিক - বেদান্ত।
অভিজাত – আভিজাত্য।
প্রসিদ্ধ – প্রসিদ্ধি।
উদ্বোধন - উদ্বোধিত।
আশঙ্কা- আশঙ্কিত।
প্রচুর প্রাচুর্য।
নবরচিত- নবরচনা।
উচ্ছ্বাস- উচ্ছ্বসিত
প্রচলন - প্রচলিত
প্রধান — প্রাধান্য।
১২. নীচের শব্দগুলির সন্ধি ভেঙে লেখো :
উঃ।
শশাঙ্ক = শশ + অঙ্ক।
রথীন্দ্র =রথী + ইন্দ্র।
হিমালয়= হিম + আলয়।
নৃপেন্দ্ৰ =নৃপ + ইন্দ্ৰ।
সর্বাপেক্ষা= সর্ব + অপেক্ষা।
স্বীকারোক্তি =স্বীকার + উক্তি।
অন্যান্য= অন্য + অন্য।
শয়ান =শৈ + আন।
রক্তিমাভা= - রক্তিম + আভা।
সম্বর্ধনা= সম + অভ্যর্থনা।
যুগান্তর= যুগ + অন্তর।
উন্নতি= উৎ + নতি।
মায়াচ্ছন্ন - মায়া + আ + ছন্ন
দিগ্বলয় — দিক্ + বলয়।
উদবোধন উৎ + বোধন।
উচ্ছ্বসিত উৎ + শ্বসিত।
আছে, বুঝে নিয়ে ভেঙে লেখো :
অপরিচ্ছন্ন == অ + পরি + ছন্ন।
অপরাহু= অপর + অঙ্গ।
সর্বাধিক = সর্ব + অধিক।
বারম্বার= বারং + বার।আছে, বুঝে নিয়ে ভেঙে লেখো :
অপরিচ্ছন্ন == অ + পরি + ছন্ন।
অপরাহু= অপর + অঙ্গ।
সর্বাধিক = সর্ব + অধিক।
বারম্বার= বারং + বার।
১৩. নীচের প্রতিটি শব্দের মধ্যেই দুটি করে শব্দ
উঃ।
জগৎপ্রসিদ্ধ
জগৎ
প্রসিদ্ধ
অর্থব্যয়
অর্থ
বায়
গিরিসংকট
গিরি
সংকট
নবরচিত
নব
রচিত
কুলগুরু
কুল
গুরু
মহাকবি
মহা
কবি
ঠাকুরবাড়ি
ঠাকুর
বাড়ি
ভারতবরেণ্য ভারত
বরেণ্য
ভ্রমণবৃত্তান্ত
ভ্রমণ
বৃত্তান্ত
স্বনামখ্যাত
স্বনাম
খ্যাত
রাজপুত্র
রাজ
পুত্র
স্বপ্নলোক
স্বপ্ন
লোক
ছদ্মবেশ
ছদ্ম
বেশ
জন্মদিন
জন্ম
দিন
কুঠিবাড়ি
কুঠি
বাড়ি
১৪. নিম্নরেখাঙ্কিত পদগুলির কারক-বিভক্তি নির্ণয় করো :
১৪.১ তিব্বতবাসীরা তাঁর মূর্তিকে আজও বোধিসত্ত্ব নামে পূজা করে।
উঃ। সম্বন্ধপদ কর্মকারকে ‘এ’ বিভক্তি।
১৪.২ তিনি ছদ্মবেশে গিয়েছিলেন তিব্বতে।
উঃ। করণকারকে 'এ' বিভক্তি।
১৪.৩ কবি তাঁর ঘরের আসনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন।
উঃ। কর্মকারক ও করণকারকে ‘এ’ বিভক্তি
১৪.৪ কবি সে-দিন আমাকে বাগে পেয়েছিলেন। উঃ। কর্মকারকে 'এ' বিভক্তি।
১৪.৫ শরৎ দাসের ভ্রমণবৃত্তাত্ত থেকেই তিনি সর্বাধিক সাহায্য লাভ করেছিলেন।
উঃ। করণকারকে 'শূন্য' বিভতি
১৫. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১৫.১ প্রাচীন পথ ধরে কোন তিনজন প্রসিদ বাঙালি অতীতে তিব্বতে গিয়েছিলেন?
উঃ। অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, রাজা রামমোহন রায় ও শরৎ দাস।
১৫.২ কোন্ প্রাচীন পথের রেখা ধরে তারা গিয়েছিলেন।
উঃ। গ্যাংটক থেকে নাথুলা গিরিসংকট হল মাত্র শ মাইল। এখান থেকে জেলাপ পা-এ গিরিসংকট তারপরই তিব্বত সীমানা। সেই পথ ধরে তারা গিয়েছিলেন।
১৫.৩ এখনকার পর্যটকরা এই প্রাচীন পথটি পরিহার করেন কেন।
উঃ। প্রাচীন পথে দুর্যোগ বেশি এবং দুঃসাধ্যও বটে, তাই এখনকার পর্যটকরা এই পথ পরিহার করেন।
১৫.৪ কোন্ দুই বিখ্যাত বাঙালি তিব্বতে গিয়ে বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেছিলেন ?
উঃ। অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ও যশোরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত।
১৫.৫ ছদ্মবেশে কে গিয়েছিলেন তিব্বতে।
উঃ। শরৎচন্দ্ৰ দাস।
১৫.৬ স্যার ফ্রান্সিস ইয়ংহাসব্যান্ডকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল তিব্বত বিষয়ক কোন্ বইটি?
উঃ। শরৎচন্দ্র দাসের তিব্বত ভ্রমণবৃত্তান্ত বইটি।
১৫.৭ কালিম্পঙের কোথায় পড়াশুনো করে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ও ইংরেজ অনাথ ছেলেমেয়েরা ?
উঃ। গ্রেহামস হোম-এ পড়াশুনো করে।
১৫.৮ গৌরীপুর প্রাসাদে কারা ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী?
উঃ। অ্যাটর্নি হীরেন দত্ত, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রতিমা দেবী, অনিল চন্দ, মৈত্রেয়ী আর চিত্রিতা গৌরীপুর প্রাসাদে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী ছিলেন।
১৫.৯ লেখকের অনুরোধে কোন্ পত্রিকার জন্য অনেকবার লেখা দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
উঃ। লেখকের অনুরোধে যুগান্তর পত্রিকার জন্য রবীন্দ্রনাথ অনেকবার লেখা দিয়েছিলেন।
১৫.২০ ........ করে?
উঃ। সেই দিন রাতে জ্যোৎস্না ছিল।
১৬. চার-পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও :
১৬.১ কীভাবে গেলে পৌঁছানো যায় কালিম্পঙের গ্রেহামস হোম-এ? এই হোমটির বিশিষ্টতা কী?
উঃ। কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক হল বড়ো গির্জা তারই পাশ দিয়ে চলে গেছে চড়াই-পথ এদিক- ওদিক ঘুরে অনেক উঁচুতে গ্রেহামস্ হোমের দিকে।
এই হোমটিতে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান এবং সাহেব সুবার অভিভাবকহীন ছেলেমেয়েরা পড়াশুনো করে মানুষ হয়। সমগ্র পাহাড় নিয়ে এ এক বিরাট কীর্তি। এই হোমের পরিচালন ব্যবস্থা সমস্তই খাঁটি সাহেব-মেমদের হাতে।
১৬.২ ২৫ বৈশাখের ‘যুগান্তর' পত্রিকার প্রথম পাতায় শিল্পীর আঁকা যে বিশেষ রেখাচিত্রটি প্রকাশ পেয়েছিল, তার বিষয় কী ছিল? রবীন্দ্র-জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে ছবির এই বিষয়টি তোমার যথার্থ মনে হয় কি না লেখো।
উঃ। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রেখাচিত্র।
রবীন্দ্র-জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে এই ছবিটি যথার্থ। একজন দেশবরেণ্য কবির প্রতি এর চেয়ে ভালো শ্রদ্ধার্ঘ্য হতে পারে না। হিমালয়ের চেয়ে তিনি বড়ো। পৃথিবীর উচ্চতম শিখর
তিনি। তাই তাঁকে তাঁর চিত্র এঁকে দেওয়া খুবই আনন্দজনক এবং গর্বের বিষয়।
১৬.৩ 'কাজটি দুরূহ, অনেকদিন সময় লাগবে'—কোন্ কাজটি সম্পন্ন করবার ইচ্ছে লেখককে
জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ? কেন সে কাজ করার ইচ্ছে হয়েছিল তাঁর। কার সাহায্য প্রত্যাশা
করেছিলেন ওই কাজে ?
উঃ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সমগ্র মহাভারতখানা নিজের হাতে একবার লিখতে চেয়েছিলেন। এই কাজটি সম্পন্ন করার ইচ্ছাই তিনি লেখককে জানিয়েছিলেন।
কারণ মহাভারতের মতো এতো বড়ো মহাকাব্য পৃথিবীর কোনো কালের কোনো সাহিত্যেই নেই।
এই কাজে তিনি বৈদান্তিক অ্যাটর্নি হীরেন দত্তের সাহায্য প্রত্যাশা করেছিলেন।
১৬.৪ ‘এ ছাড়া আর ঠাকুরবাড়ি কোথায় হে?' – কোন্ প্রসঙ্গে এই পরিহাস রবীন্দ্রনাথের?
উঃ। লেখক প্রবোধকুমার সান্যাল কালিম্পঙে এসে একটি ছোটো বাড়িতে উঠেছিলেন, যেটির নাম ছিল ঠাকুর-বাড়ি।
লেখকের সঙ্গে ২৫ বৈশাখের অপরাহ্ণে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেখা হল। লেখক কবিকে জানালেন তিনি এখানকার এক ঠাকুরবাড়িতে এসে উঠেছেন। তখন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিহাস করে লেখককে বলেছিলেন এ ছাড়া আর ঠাকুরবাড়ি কোথায়। অর্থাৎ পরিহাসের বিষয়টি হল বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রয়েছেন সেখানে ছাড়া আর কোথায় বা কোন্ বাড়ি আর ঠাকুরবাড়ি হতে পারে।
১৬.৫. কবি যেদিন আমাকে বাগে পেয়েছিলেন।' —'বাগে পেয়েছিলেন' কবির 'বাগে পাওয়ার' কী পরিচয় রয়েছে লেখকের সে-দিনের বিবরণে?
উঃ। এই বিশিষ্ট ক্রিয়াপদটির অর্থ সামনে পাওয়া বা সুযোগ পাওয়া। এই বিশিষ্ট ক্রিয়াপদটির অর্থ কী? তাকে লেখক যখন কবিকে বললেন এখানকার এক ঠাকুরবাড়িতে এসে উঠেছি, তখন কবি বললেন এ ছাড়া আর ঠাকুরবাড়ি কোথায়। এরপর দু-চারটি কথার পরে তাঁর পরিহাস-সরস বাক্যবাণ ছুটতে লাগল। সেই বাণে বারংবার হাসির রোল উঠছে এপাশে-ওপাশে।
১৬.৬ 'কালিম্পঙে টেলিফোন ছিল না, এই উপলক্ষ্যে তার প্রথম উদবোধন'— কোন্ বিশেষ উপলক্ষ্যে, কীভাবে এই উদবোধন সম্পন্ন হল ?
উঃ। ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি নবরচিত কবিতা বেতারযোগে পাঠ করবেন। সেজন্য কলকাতার বেতারকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ কলকাতা-কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত করেছিলেন। তখন কালিম্পঙে টেলিফোন না থাকায় সেটাই হল প্রথম উদবোধন। টেলিফোন ব্যবস্থার জন্য পাহাড়ে পাহাড়ে টেলিফোনের খুঁটি বসানো এবং তার খাটানো হয়েছে গত কয়েকদিন থেকেই। টেলিফোনের কর্তৃপক্ষ এজন্য প্রচুর অর্থব্যয় করেছেন। কবি তাঁর ঘরের আসনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন এবং বেতার কর্তৃপক্ষ তাঁর কণ্ঠস্বরটি ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্রডকাস্ট করবেন, এই ছিল ব্যবস্থা। এই
উপলক্ষে কয়েকজন বেতার বিশেষজ্ঞও এসেছিলেন।
১৬.৭ কিন্তু নৃপেন্দ্রবাবুর ফরমাশ শুনতেই হলো' নৃপেন্দ্রবাবু কে? কী ছিল তাঁর ফরমাশ ? কীভাবে তা শুনেছিলেন লেখক?
উঃ। নৃপেন্দ্রবাবু অর্থাৎ নৃপেন্দ্র মজুমদার ছিলেন একজন বেতার-বিশেষজ্ঞ।
তিনি লেখককে কবি যে চেয়ারে বসবেন এবং কবিতা পাঠ করবেন সেই চেয়ারে বসে কলকাতাকে একবার ডাকতে বললেন। যদি লেখকের গলা না-ফাটে তবে আর ভয় নেই।
লেখক নধর মখমল বসানো চেয়ারে বসে কয়েকবার ডাকলেন হ্যালো, ক্যালকাটা, হ্যালো। কলকাতা থেকে তৎক্ষণাৎ জবাব এল 'ও. কে'।
১৬.৮ জন্মদিনে কবির স্বকণ্ঠে বেতার-সম্প্রচারিত কবিতা শোনাবার মুহূর্তটি কীভাবে ধরা দিয়েছিল তাঁর শ্রোতাদের চেতনায় ?
উঃ। কবি উঠে গিয়ে বসলেন যন্ত্রের সামনে। একটি আলোর নিশানা পেয়ে কবির দীর্ঘ দীপ্ত কণ্ঠের মূর্ছনা উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠল। একটা মায়াচ্ছন্ন স্বপ্নলোকের মধ্যে সবাই যেন হারিয়ে গেল। সবাই ভুলে গেল পরস্পরের অস্তিত্ব।
শ্রোতাদের পায়ের নীচে কালিম্পং থরথর করতে লাগল কি-না সে কথা তখন আর কারো মনে রইল না। কবির কষ্ঠ ফিরে ফিরে আসবে যন্ত্রে সেই ভেবে তাদের রোমাঞ পুলক অনুভূত হতে লাগল।
১৭. নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
১৭.১ এ লেখায় একটা হারিয়ে যাওয়া সময়ের ছবি আছে, ভারতবর্ষ তথা বাংলার শ্রেষ্ঠ |কয়েকজন সন্তানের কথা আছে, যাঁদের সঙ্গে একসময় তিব্বতের নিবিড় যোগ রচিত হয়েছিল। লেখাটি অনুসরণ করে বাংলার ওই শ্রেষ্ঠ মানুষগুলি সম্পর্কে তোমার যে ধারণা হয়েছে, নিজের ভাষায় লেখো।
উঃ। ভারতবর্ষ তথা বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে তিনজন জগৎপ্রসিদ্ধ বাঙালি গিয়েছিলেন তিব্বতে। তার মধ্যে বাংলার চিরদিনের গর্ব ঢাকা বিক্রমপুরের সন্তান অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান। লেখক প্রবোধ কুমার সান্যালের এই রচনাটির মধ্য দিয়ে বাংলার তথা ভারতবর্ষের এইসব শ্রেষ্ঠ
সন্তানদের সঙ্গে তিব্বতের যোগ যে কত নিবিড় ছিল তা ধরা পড়েছে। জ্ঞান ঋষি দীপঙ্করয়তিব্বতে গিয়ে বৌদ্ধধর্মের নির্মল স্বরূপকে প্রচার করেছিলেন। গৌতম বুদ্ধের পরেই তিব্বতবাসীরা তাঁর মূর্তিকে আজও বোধিসত্ত্ব নামে পূজা করে। এরপরে গেছেন রাজা রামমোহন রায়। তৃতীয় যে ব্যক্তি উনিশ শতকের শেষভাগে তিব্বতে গিয়েছিলেন তাঁর নাম শরৎচন্দ্র দাস। তাঁর কাছে আধুনিক ভারতবর্ষ ঋণী। তাঁর ভ্রমণবৃত্তান্ত তিব্বতের বিষয় জানতে পারি। অতীশ দীপ করের আগে আর একজন বাঙালি অষ্টম শতাব্দীতে তিব্বত গিয়েছিলেন এবং আচার্য বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেছিলেন। তিনি হলেন যশোহরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত। বাংলা তথা ভারতবর্ষের
গর্ব এইসব শ্ৰেষ্ঠ কয়েকজন বাঙালি তিনাতে গিয়ে ভারতবর্ষের নাম শ্রেষ্ঠ আসনে বসিয়ে এসেছেন।
১৭.২ এই লেখার একটি প্রধান চরিত্র রবীন্দ্রনাথ আর তাঁর ব্যক্তিত্বময় উপস্থিতি। কালিম্পং শহরে অতিবাহিত তাঁর একটি বিশেষ জন্মদিন উদযাপনের সম্পূর্ণ ছবিটি যেভাবে এখানে ফুটে উঠেছে তার পরিচয় দাও।
উঃ। ২৫ বৈশাখের কোনো এক অপরাহ্ণে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কালিম্পঙে ছিলেন। কবির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সব ব্যক্তি ও গুণীজন এবং লেখক স্বয়ং। সেইদিনকার সেই ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে
তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে একটি নবরচিত কবিতা বেতারযোগে পাঠ করবেন, সেইজন্য কলকাতার বেতারকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ কলকাতা কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত করেছিলেন। কালিম্পঙে তখন টেলিফোন ছিল না।
টেলিফোন কর্তৃপক্ষ এজন্য প্রচুর অর্থব্যয় করেছেন। কবি তার ঘরের সামনে আসনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন এবং বেতার কর্তৃপক্ষ তাঁর কণ্ঠস্বরটি ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্রডকাস্ট করবেন, এই ছিল ব্যবস্থা। স্বনামখ্যাত
নৃপেন্দ্র মজুমদার বেতার বিশেষজ্ঞও উপস্থিত ছিলেন। মহাকবি মাঝে মাঝে ভীষণ শব্দে গলা ঝাড়া দেন। কিন্তু কাব্য পাঠকালে সেই আওয়াজটির দাপটে সূক্ষ্ম যন্ত্রটা বিদীর্ণ হয়ে যাবে কি না তার জন্য নৃপেনবাবু নিজে লেখককে পরীক্ষা করতে বললেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা কিংবা আটটায় কবি উঠে গিয়ে বসলেন যন্ত্রের সামনে। কবি মাত্র মিনিট পনেরো কবিতা পাঠ করলেন। কবির দীর্ঘ দীপ্ত কণ্ঠের মূর্ছনা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। সেদিন জ্যোৎস্না ছিল বাইরে।
মায়াচ্ছন্ন স্বপ্নলোকের মধ্যে সবাই হারিয়ে গেল এবং ভুলে গেল নিজেদের অস্তিত্ব।
১৭.৩ ইতিহাস-ভূগোলের ইতিবৃত্তে জড়ানো কালিম্পং নামে একটা শহরকে নতুন করে চিনতে তোমার কেমন লাগল, একটা অনুচ্ছেদে তা লেখো।
উঃ। লেখক প্রবোধকুমার সান্যাল কালিম্পং শহরটির খুব সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। কালিম্পঙের উপর দিয়ে চলছে রেনক্ রোড তিব্বতের দিকে। এই পথ দুর্যোগপূর্ণ এবং দুঃসাধ্য। রেনক্ রোড গিয়েছে ‘জেলাপ-লা' গিরিসংকটে,তারপরেই তিব্বত সীমানা। এই পথ দিয়ে তিনজন জগৎপ্রসিদ্ধ বাঙালি গিয়েছিলেন তিব্বতে। কাশ্মীরের পূর্ব প্রান্তে ভারত-তিব্বত বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র হল গারকট, ওখানে তাকলাকোট হল তিব্বতিদের ঘাঁটি। নেপালেও আছে
নামচে বাজার দিয়ে তিব্বত যাওয়ার পথ। অন্যপথ থাকলেও বাংলার এই পথই সর্বশ্রেষ্ঠ। তিব্বতিদের প্রধান ব্যবসা হল পশম। কালিম্পঙের যে পথ চলে গেছে উত্তরে সেখানে পশমের ঘাঁটি। বড়ো গির্জাটা হল কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক। তার পাশ দিয়ে চড়াই পথ চলে গেছে অনেক উঁচুতে গ্রেহামস হোমএ। এখানে অভিভাবকহীন ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে। এখানকার সবই সুন্দর, প্রকৃতি যেন এখানে আপন খেয়ালে নিজে হাতে সবকিছু রচনা করেছে।ইতিহাস ও ভূগোলের ইতিবৃত্তে জড়ানো শহরটি আমার খুব ভালো লেগেছে।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর •
★. ভারতের মধ্যে কোথা থেকে তিব্বত নিকটবর্তী ?
উঃ। ভারতের মধ্যে কালিম্পং থেকে তিব্বত নিকটবর্তী।
★ গ্যাংটক থেকে নাথুলা গিরিসংকট কত দূরে?
উঃ। গ্যাংটক থেকে নাথুলা গিরিসংকট ছাব্বিশ মাইল দূরে
★ ভারত তিব্বত বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র কোনটি?
উঃ। কাশ্মীরের পূর্ব প্রান্তে ভারত তিব্বত বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র গারটক।
★ মহাকবি রবীন্দ্রনাথ লেখক সম্পর্কে কী জানতেন?
উঃ। রবীন্দ্রনাথ জানতেন লেখক যুগান্তর' পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক।
★ কবি কখন উঠে গিয়ে যন্ত্রের সামনে বসলেন ?
উঃ। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা কিংবা আটটার সময়ে কবি উঠে গিয়ে বসলেন যন্ত্রের সামনে।
★ লেখক রবীন্দ্রনাথের হাতে কী তুলে দিয়েছিলেন ?
উঃ। লেখক রবীন্দ্রনাথের হাতে অমল হোমের কলম ও রজনীগন্ধার গুচ্ছ তুলে দিয়ে প্রণাম করেছিলেন।
★ লেখক কাকে আধুনিক ভারতের কুলগুরু বলেছেন?
উঃ। লেখক রাজা রামমোহন রায়কে আধুনিক ভারতের কুলগুরু বলেছেন।
★ তালাকোট কাদের ঘাঁটি?
উঃ। তাকলাকোট তিব্বতিদের ঘাঁটি।
★ কত বছর আগে লেখক কার সঙ্গে প্রথম কালিম্পঙে বাস করে গিয়েছিলেন?
উঃ। লেখক চোদ্দো বছর আগে শশাঙ্ক চৌধুরীর সঙ্গে কালিম্পঙে বাস করে গিয়েছিলেন।
★ কালিম্পঙে কবির কন্ঠস্বর ব্রডকাস্ট করার জন্য কে উপস্থিত ছিলেন ?
উঃ। কালিম্পঙে কবির কণ্ঠস্বর ব্রডকাস্ট করার জন্য উপস্থিত ছিলেন স্বনামখ্যাত নেতার বিশেষজ্ঞ নৃপের মজুমদার।
★ কোন পথে উত্তর ভারত থেকে তিব্বত সীমানা নিকটবর্তী ?
উঃ। সমগ্র উত্তরভারতের মধ্যে কালিম্পং থেকে তিনাত সব থেকে নিকটবর্তী। কালিম্পন্ডের উপর দিয়ে চলছে রেনক্ রোড। এই রেনক্ রোড গিয়ে মিশেছে জেলাপ-লা গিরিসংকটে। এরপরেই শুরু হয়েছে তিব্বত সীমানা।
★ আজকের যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায় ছিল... - - আজকের যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায় কী ছিল? সেটি কে কীভাবে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন ?
উঃ। আজকের যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায় ছিল শিল্পীর হাতে আঁকা কবি রবীন্দ্রনাথের একখানি রেখাচিত্র। এই ছবিটিতে ছিল গ্রাম-নগর, দেশ-মহাদেশ এবং দিগন্তরেখা ছাড়িয়ে কবির মাথা উঠেছে ধবলাধার গৌরীশৃঙ্গের মতো। তিনি
হিমালায়ের চেয়েও বড়ো, তিনিই পৃথিবীর উচ্চতম শিখর। শিল্পীর আঁকা এই ছবিখানি মধ্যে থেকে এই ভাবটিই লেখক প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন।
★ 'সেই আমাদের রোমাঞ পুলক'–কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে?
উঃ। ২৫শে বৈশাখের সন্ধ্যায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে একটি কবিতা বেতারযোগে পাঠ করবেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা-আটটার সময় কবি উঠে গিয়ে বসলেন যন্ত্রের সামনে। লেখক সহ সবাই বাইরে এসে দাঁড়ালেন। বাইরে তাঁদের পাশেই রাখা রয়েছে একটি রেডিও। কলকাতা ঘুরে কবির কণ্ঠ ফিরে আসবে এই যন্ত্রে। সেই ঘটনায় সকলের রোমাঞ্চ ও পুলক অনুভূত হয়েছিল।
★ টীকা লেখো :
উঃ। অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান—তিনি ছিলেন বাংলার সন্তান ও বরেণ্য ধর্ম প্রচারক, আজ থেকে নয়শো বছরেরও বেশি সময় আগে এই জ্ঞানঋষি তিব্বত গিয়ে বৌদ্ধধর্মের নির্মল স্বরূপের প্রচার করেন। তিনি তেরো বছর তিব্বতে বাস করেন।
এবং লাসার নিকট তাঁর মৃত্যু হয়। গৌতমবুদ্ধের পরেই তিব্বতবাসীরা বোধিস্বত্ব নামে তাঁর মূর্তিকে পূজা করে।
রথীন্দ্রনাথ—রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র। প্রতিমা দেবী—কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ ও রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী।
শরৎচন্দ্র দাস — উনিশ শতকের শেষভাগে ইনি ছদ্মবেশে তিব্বতে যান। আধুনিক ভারতবর্ষ তার কাছে ঋণী। তাঁরই অনাবৃত্তান্ত শুনে আমরা একালে প্রথম তিব্বত সম্পর্কে জানতে পারি।
শান্ত রক্ষিত—ইনি যশোরের রাজপুত্র। অষ্টম শতাব্দীতে তিনি তিব্বতে গিয়েছিলেন। সেখানে লামারা তাঁকে রাজকীয় সম্বর্ধনা দেন। ইনি অতীশ দীপঙ্করের আগে তিব্বতে যান ও আচার্য বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেন।