রচনা || শিক্ষামূলক ভ্রমণ / RACHANA || SHIKHA MULAK BHHAMRAN
![]() |
রচনা
শিক্ষামূলক ভ্রমণ
ভূমিকা - মানুষ ঘর বন্দী থেকে একঘেয়েমি জীবন কাটাতে ভালোবাসে না। তার মন এক স্থানে খুশি হতে পারে না। একঘেয়েমি জীবনকে দূর করতে মানুষ বিভিন্ন স্থানে ভ্রমন করে। দেশ ভ্রমণ থেকে মানুষ অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষা অর্জন করে। ভ্রমণ জানা ও চেনার বাধাকে দূর করে।
উদ্দেশ্য :- ভ্রমণ শুধু বেড়ানো নয় বা সময় কাটানোও নয়। অনেক শিক্ষা দিকও আছে। যেটাকে আমরা শিক্ষামূলক ভ্রমণ বলতে পারি। ঘরের কোণে মানুষ যদি আবদ্ধ থাকে তাহলে তার জীবন সংকীর্ণ হয়ে ওঠে। তাই নদী , পর্বত ,অরণ্য বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান, বিভিন্ন পিঠস্থান ঘুরে দেখা প্রয়োজন। ঐতিহাসিক স্থানে ভ্রমণ করলে আমাদের বইয়েতে পড়া ইতিহাসকে আমরা যেন নিজের চোখের সামনে প্রত্যক্ষ করি। স্কুলের পাঠ্য বইয়ে কোন ঐতিহাসিক স্থানের বর্ণনা বিভিন্ন লেখক অনেক সময় বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করেন। সেটা যদি নিজের চোখে দেখি তাহলে আমরা সহজে সেটা নিজে দিয়ে বোধগম্য করে তুলতে পারি । নদীর ধারে ভ্রমণ করলে নদী সম্পর্কে নিজের চোখে দেখে অনেক কিছু লেখা যায়। অরণ্যে বেড়াতে গিয়ে অরণ্যের বৈশিষ্ট্যের বিভিন্নতা দেখে খুব সহজেই রচনা লেখা যায়।
গুরুত্ব ;- ভ্রমণ হল শিক্ষার একটি অন্যতম অঙ্গ। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে শিক্ষা খাতে একটা অর্ধ বরাদ্দ করা হয়। শিক্ষামূলক ভ্রমণের প্রয়োজনে বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক মহাশয়রা নিজেরাই উৎসাহ নিয়ে ছাত্রদের শিক্ষামূলক ভ্রমণে নিয়ে যান। এই ভ্রমণ এক আনন্দের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। যেটা ভ্রমণের মাধ্যমে আমাদের খুব সহজভাবে সেটা বোধগম্য হয় নিজেদের মধ্যে ভয় কাটে । এবং সেটা সহজ ভাবে লিখতে পারা যায়। শিক্ষার অন্যতম অঙ্গ ভ্রমণ । শিক্ষামূলক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেটা খুবই প্রয়োজন । ভ্রমণকে বাদ দিয়ে সঠিক শিক্ষা আয়ত্ত করা যায় না। সুন্দরবন সম্পর্কে জানতে হলে শুধু বই পড়ে সঠিক শেখা যায় না। সেখানে গিয়ে সেই পরিবেশে মিশে ঘুরে দেখলে সহজে সেটা বোধগম্য করা যায় এবং সেটা অনেকদিন পর্যন্ত মনে থাকে।
পর্যটক দ্বারা শিক্ষা দেন- ভ্রমণের মাধ্যমে অনেক শিক্ষা পাওয়া যায় অতীতে বিভিন্ন মনীষীগণ বিশ্ব ভ্রমণ করে দেশ বিদেশ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে গেছেন। যেমন স্বামী বিবেকানন্দ ,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। অতীতের ইতিহাস দেখলে জানা যায়। বহু বহু পর্যটক এবং আবিষ্কারক তাদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতার দ্বারা শিক্ষাদান করে গেছেন। অনেক পরিব্রাজক বিভিন্ন স্থানে ঘুরে তারা অনেক স্থানের বিভিন্ন ঘটনাকে ইতিহাসকে উপাদান হিসেবে গড়ে তুলেছেন। যেমন ফা-হিয়েন , হুয়েন- সাং প্রমূখ ।
ভ্রমণের ভালো-মন্দ :- যেকোনো ভ্রমণে ভালো দিক এবং খারাপ দিক আছে। ভ্রমণ একদিকে যেমন মানুষকে আনন্দ দেয়, প্রেরণা যোগায়, একঘেয়েমি জীবনকে দূর করে। তেমনি অন্যদিকে এর পিছনে অনেক অর্থ খরচ হয় । পাহাড় পর্বত, বন জঙ্গল, দুর্যোগস্থানে ভ্রমন করতে গেলে অনেক সময় প্রাণহানিও হয়। আমরা কিছুদিন আগে দেখতে পেয়েছি কাশ্মীরে ভ্রমণ করতে গিয়ে কয়েকজন পর্যটক আততায়ীর হাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন। এছাড়াও কখনো নৌকাডুবি, পাহাড়ে ধ্বস নামা জন্য অনেক মানুষের প্রাণ যায়।
উপসংহার- শিক্ষামূলক ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষ সর্বদা আগ্রহী। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এ ব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া যুগে অনেক ভ্রমণ কাহিনী আমরা ঘরে বসে দেখতে পাই। ভবিষ্যৎ হয়তো এর আরো উন্নতি হবে। আমরা ভ্রমণের আনন্দ আরও বেশি উপভোগ করতে পারব। এবং শিক্ষামূলক ভ্রমণ থেকে অনেক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবো