বাগধারা || সপ্তম শ্রেণি || বাংলা ভাষা চর্চা হাতে কলমে প্রশ্নের উত্তর / BbAGDHARA || class 7
![]() |
বাংলা ভাষাচর্চা
সপ্তম শ্রেণি বাংলা
বাগধারা
নবম অধ্যায়
হাতে কলমে : অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
নীচের প্রতিটি বাগধারাকে বাক্যে প্রয়োগ করো :
উঃ। ১. হরিহর আত্মা- রাজীব ও অয়ন দুই বন্ধু যেন হরিহর আত্মা।
২. শিরে সংক্রান্তি-আজ বাদে কাল মেয়ের বিয়ে কিন্তু অর্থের জোগাড় না হওয়ায় রামবাবুর শিরে সংক্রান্তি।
৩. হাতের পাঁচ-সব কথা আগে বলে দিতে নেই। হাতের পাঁচ হাতে রেখে দেওয়া ভালো।
৪. মুনীনাঞ্চ মতিভ্রম - রমেনবাবুকে সবাই জানে ভালোমানুষ বলে কিন্তু তিনি এই বয়সে যা করলেন একেবারে মুনীনাঞ্চ মতিভ্রম।
৫. বাস্তূঘুঘু - ভালোমানুষ সেজে অশোকবাবুর পরিবারে মিশে লোকটি তার সব সম্পত্তি ঠকিয়ে নিল। যাকে বলে একেবারে বাস্তুঘুঘু
৬. বালির বাঁধ-রাম ও শ্যামের সম্পর্কটা দিনদিন বালির বাঁধে পরিণত হচ্ছে।
৭. ভূতের বেগার - অফিসের বাৎসরিক আয়ব্যয়ের হিসাব করতে কর্মীদের ভূতের বেগার খাটতে হচ্ছে।
৮. বিনা মেঘে বজ্রপাত — মাধ্যমিক পরীক্ষার দুদিন আগে ছেলেটির বাবা মারা গেল। এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত।
৯. ভস্মে ঘি ঢালা- ছেলেটির পড়ায় মন নেই তাকে জোর করে পড়ানো হচ্ছে। এ যেন ভস্মে ঘি ঢালা।
১০. ভাগের মা-বৃদ্ধার বয়স হচ্ছে আজ এই ছেলের বাড়ি কাল ও ছেলের বাড়ি দিন কাটান। উপায় নেই ভাগের মা তো।
১১. বকধার্মিক - সুধীবাবু নিজে অন্যায় করেন কিন্তু অন্যকে ধর্মের ভাব দেখান। উনি সাক্ষাৎ বকধার্মিক।
১২. বিদুরের ক্ষুদ্র- সামান্য সম্বল নিয়ে মানুষটি খুশি মনে দিন কাটান। তাঁর সম্বল যেন বিদুরের ক্ষুদ্র।
১৩. দিল্লিকা লাড্ডু - কাজটা করতে মন চায় আবার করলেও কোনো বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে না। একেবাে দিল্লিকা লাড্ডু
১৪. নয় ছয়- কাজল টাকার মূল্য একেবারেই বোঝো না তাই টাকা পেলেই সে নয় ছয় করে।
১৫. তীর্থের কাক - পলাশকে তো দরকার ছাড়া পাওয়া যায় না। তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করতে হয়।
১৬. পগার পার – পথচারীকে ধাক্কা মেরেই গাড়ির চালকটি লোকে চিত্কার করার আগেই পগার পার হয়ে গেল।
১৭. ঠোঁটকাটা - রতন বেশ ঠোঁটকাটা, কোনো কিছুই তার মুখে আটকায় না।
১৮. টাকার কুমির -দিপবাবুর এতো টাকা সত্ত্বেও টাকার পেছনে ছোটা তাঁকে টাকার কুমিরে পরিণত করেছে
১৯. গোকুলের গাঁড় — নেপাল কোনো কাজের না পড়ে পড়ে দিনরাত ঘুমোচ্ছে যেন গোকুলের ঘাঁড়।
১০. ছাইচাপা আগুন - মেয়েটির এতটাই প্রতিভা তা দেখলে বোঝা যায় না, যেন ছাইচাপা আগুন।
প্রঃ। বাগধারা কাকে বলে?
উঃ। কোনো ভাষায় সাধারণভাবে বিশিষ্ট অর্থে বা ব্যঙ্গার্থে বা একাধিক পদ নিয়ে গঠিত যেসব বাক্যাংশ ব্যবহৃত তাদের বাগ্ধারা, বাগবিধি বা বিশিষ্টার্থক বাক্যাংশ বলে।
প্রঃ | Idiom কাকে বলা হয়?
উঃ। বাগধারাকে অনেকে একধরনের বাগভঙ্গি বলেছেন। এই বিশিষ্ট বাগভঙ্গিকে ইংরেজিতে Idiom বলা হয়।
★ এঁটোকাঁটা —খাবার পর যেসব উচ্ছিষ্ট পড়ে থাকে।
★ একাই একশো—একাই সমস্ত প্রতিকূল অবস্থা সামলাতে পারে এমন।
★ ওজন বুঝে চলা—মর্যাদা ও গুরুত্ব বুঝে চলা।
★ কড়ায় গণ্ডায়—সূক্ষ্ম হিসাব মতো, হিসাবে কিছুই বাদ না দিয়ে।
★ করাতের দাঁত—উভয় সংকট।
★ কুপমণ্ডুক—কুনো বা সংকীর্ণচেতা লোক।
★ খাতা খোলা — হিসাব পত্র আরম্ভ করা, লেনদেন শুরু করা।
★ গড্ডালিকা প্রবাহ — ভালোমন্দ বিচার না করে সকলে যা করে তাই অনুসরণ করে এমন লোকের দল।
★ গলগ্রহ—দায় বা বোঝা
★ টিপ্পনি কাটা - ছোটো ছোটো বাঁকা/ঝাঁঝালো উক্তি/মন্তব্য করা।
★ ঠিকে কাজ—নির্দিষ্ট মজুরিতে কাজ।
★ ড্যাং ড্যাং করে -কাউকে কোনো তোয়াক্কা না করে/বিজয়গর্বে।
★ টোক গেলা-কথা বলার সময় ইতস্তত করা।
★ তড়বড় করা— তাড়াহুড়ো করা/ অত্যধিক ব্যস্ততার ভাব দেখানো।
★ খাতামুতো দেওয়া-জোড়াতাড়ি দেওয়া/দায়সারাভাবে করা।
★ ঘর আলো করা—ঘরের বা পরিবারের শোভা বা গৌরব বৃদ্ধি করা।
★ ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া – উপরওলাকে উপেক্ষা করে বা অতিক্রম করে কার্যসিদ্ধির চেষ্টা করা।
★ ঘোল খাওয়া-নাকাল বা জব্দ হওয়া।
★ চড়ুইপাখির প্রাণ—ক্ষীণজীবী, অত্যন্ত দুর্বল লোক।
★ চোখে চোখে রাখা- দৃষ্টির আড়ালে যেতে না দেওয়া, সতর্ক দৃষ্টি রাখা।
★ ছড়ি ঘোরানো—অশোভন বা বিরক্তিকরভাবে সর্দারি/মাতব্বরি করা।
★ জড়ভরত— জড়বুদ্ধি বা জড়তাগ্রস্ত লোক।
★ ঝড় তোলা – প্রবল ব্যস্ততা বা গতিসম্পন্ন উদ্যোগ শুরু করা।
★ দরকচা-কাচাও নয় আবার পাকাও নয় এমন ।
★ ধড়ে প্রাণ আসা — বিপদ থেকে পরিত্রাণের সম্ভাবনা দেখে উদ্ধার পাওয়ায় স্বস্তিলাভ।
★ নয়ছয় করা-পণ্ড করা/অপবায় করা।
★ পটের বিবি-সেজেগুজে বসে থাকে এমন বিপানী নিয়ে।
★ ফাটা কপাল- মন্দভাগ্য।
★ বাঘা-বাঘা-বিরাট/বড়ো বড়ো।
★ ভাড়ে মা ভবানী- ভাণ্ডার শূন্য / একেবারে দরিদ্র ।।
★ মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা- দুর্বল/বিপন্ন লোকের উপর পীড়ন।
★ যত নষ্টের গোড়া— সবরকম অন্যায় বা ক্ষতির আসল কারণ।
★ রাঘব বোয়াল- অত্যাচারী প্রভাবশালী মানুষ।
★ লক্ষ্মীর বরযাত্রী - সুসময়ের বন্ধু/সঙ্গী।
★ শাক দিয়ে মাছ ঢাকা—কুকর্ম গোপন করার বৃথা চেষ্টা।
★ ষাঁড়ের গোবর - অকর্মণ্য / অপদার্থ লোক।
★ সর্বঘটে কাঠালি কলা-সব ব্যাপারেই যে অবাঞ্ছিত/বিরক্তিপ্রভা
★ অকালের বাদলা-অসময়ে বা অপ্রত্যাশিত বা বিপদ।
★ আক্কেল গুড়ুম—স্তম্ভিত ভাব, হতবুদ্ধি অবস্থা।
★ ইঁদুরের কলে পড়া-লোভ করতে গিয়ে ফাঁদে পড়া বা আটকে পড়া।
★ উচ্ছন্নে যাওয়া—অধঃপাতে যাওয়া, চরিত্রের অবনতি হওয়া।
★ এঁচড়ে (ইচড়ে) পাকা – ডেপো, জ্যাঠা, অকালপক্ক, অল্প বয়সেই পেকে গেছে এমন (এঁচড়ে পাকা ছেলে)।