ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর || রচনা / Rachana isar chandra
![]() |
রচনা
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
ভূমিকা : বিদ্যাসাগর ছিলেন শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তাঁর ছিল প্রচণ্ড তেজ, অগাধ পাণ্ডিত্য, যাত্মমর্যাদাবোধ, আবার মানুষের প্রতি দয়া ও মমতা। উনিশ শতকে তিনি ভারতবর্ষের একজষ বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর আসল নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়।
জন্ম ও বংশ-পরিচয় : জন্ম মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে, ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ সেপ্টেম্বর। তিনি একটি দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের সদস্য ছিলেন। তাঁর বাবার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। মায়ের নাম ভগবতী দেবী।
শিক্ষা : গ্রামের চতুষ্পাঠীতে পাঁচ বছর বয়সে তাঁর শিক্ষা শুরু হয়। এরপর বাবার সঙ্গে কলকাতায় আসেন। কলকাতায় সংস্কৃত কলেজে
ভর্তি হন। কলকাতায় খুব কষ্ট করে, অভাবের মধ্যে থেকে পড়াশোনা করতে হয়। বাসন মাজা, 'রান্না করা, বাজার করা প্রভৃতি কাজকর্মের মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। কলকাতায় বিদ্বান শিক্ষকদের নির্দেশনায়, তিনি সংস্কৃত সাহিত্য, দর্শন এবং সংস্কৃতির গভীর গভীরতায় প্রবেশ করেছিলেন। অসাধারণ বুদ্ধি ও প্রতিভাবলে তিনি সব পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন। লাভ করেছেন 'বিদ্যাসাগর' উপাধি।
কর্মজীবন ও কৃতিত্ব : বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষা কমিশনের সদস্যপদ সহ শিক্ষা ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি মর্যাদাপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে তিনি প্রধান পণ্ডিতের পদ লাভ করেন। পরে সংস্কৃত কলেজে যোগদান করেন। ঐ কলেজে প্রথমে সহ- সম্পাদক, পরে অধ্যক্ষের পদ লাভ করেন। তিনি স্কুল পরিদর্শকের পদও গ্রহণ করেছিলেন। এরপর তিনি সমাজের ও দেশের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বাল্যবিবাহ বহু করা এবং বিবাবিবাহ প্রবর্তন টি পূর্ণ সমাজ- শিক্ষা বিস্তারের জন্য তিনি সারাজীবন চেষ্টা করে গেছেন।মেয়েদের শিক্ষার জন্য অনেকগুলি মেয়েদের স্কুল স্থাপন করেছিলেন। পাঠা বই-এর অভাব দূর করার জন্য বর্ণপরিচয়, কথামালা, সীতার বনবাস ইত্যাদি বই লিখেছিলেন। তাঁকে 'বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়। পারের দুঃখ তিনি একদম সহ্য করতে পারতেন না। তেমনি অন্যায়, অবিচার, আপমান, অবহেলা সহ্য করতে পারছেন না। মায়ের প্রতি তাঁর অগাধ ভক্তি ছিল। তিনি ছিলেন দানশীল।
উপসংহার : তিনি ১৮৯১ সালের ২৯শে জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন বিদ্যার সাগর, দয়ার সাগর, করণার সাগর। ছিলেন বাঙালীর গৌরব। তার অবদান আমরা কোনদিনও ভুলতে পারবো না।।