শীতের সকাল রচনা / Siter sakal Rachana - school book solver

Pages

Monday, 12 May 2025

শীতের সকাল রচনা / Siter sakal Rachana

 



রচনা

 শীতের সকাল 

ভূমিকা-বাংলার পঞ্চম ঋতু শীতকাল। পৌষ মাঘ দুই মাস নিয়ে হয় শীতকাল। যদিও অগ্রহায়ণ মাসে শেষ থেকে শীতের শুরু হয়। শেষ হয় ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি সময়। এই সময় উত্তর দিক থেকে হিমেল বাতাস বয়। বেলা ছোট হয়ে আসে। সূর্যের তেজ কমে যায়। বছরে প্রতিটি দিনেই সকাল দুপুর বিকেল সন্ধ্যা আসে। কিন্তু ঋতুর পার্থক্যের সকলের রূপের পার্থক্য ঘটে। শীতের সকালে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও রূপ আছে। ভোরবেলায় চারিদিক কুয়াশা চাদরে ঢেকে থাকে। গাছের পাতা থেকে টুপটাপ করে শিশিরের ফোঁটা পড়ে।  শীতের সকাল এক মনোরম পরিবেশ।


গ্ৰামের শীতের সকালের বর্ণনা :;কুয়াশা চাদর গায়ে দিয়ে সূর্যোদয়ের উদয় এক সুন্দর দৃশ্য অনুভব করা যায়। রাস্তাঘাট সবই আবছা এবং অপষ্ট দেখা যায়। একটু বেলা হতেই কুয়াশা বিদায় নেয়। সূর্য উঠতে অনেক দেরি করে। যদিও শীতের মাঝামাঝি সূর্যের তেজ কম থাকে। রাস্তাঘাটে মানুষের লোকজন  চলাচল কম দেখা যায়।বেশিরভাগ লোক লেপের তলায় থাকে। এরই মধ্যে দু'একজনকে দেখ যায়— আগুন জ্বেলে তাপ পোয়াচ্ছে। কেউ বা গোরু ও লাঙল নিয়ে চলেছে মাঠের দিকে। মুগ, মশুর বোনার জন্য জমি তৈরি করতে হবে। আবার কেউ চলেছে খেজুরের রস নিয়ে। আবার কেউ চলেছে গাঁদা ফুলের ঝুড়ি নিয়ে। একটু পরেই খেজুরের রসে জ্বাল দেওয়া হবে। দেখতে দেখতে পুব আকাশে থালার মতো লাল সূর্য হাজির হয়। কুয়াশার। চাদর ধীরে ধীরে হালকা হয়ে আসে। ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দুতে সূর্যের আলো পড়ে চিক্ চিক্ করে ওঠে। ছোটো ছেলে-মেয়েরা দল বেঁধে পাঠশালায় যায়। ধীরে ধীরে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়। দূরে নদীর বুকে পালতোলা নৌকা ভেসে চলে শহরের উদ্দেশ্যে। পাঠশালায় ছাত্রছাত্রীরা সুর করে নামতা পড়ছে। সূর্যের আলোর তাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে। সূর্যও আকাশে উপর দিকে উঠতে থাকে। পিকনিকের তোরজোড় শুরু হয়। রাস্তাঘাটে সকলের মুখে একই কথা শোনা যায়"আজ কি ঠান্ডা পড়েছে"। একটু বেলা হতেই রাস্তার ধারে খেজুরের রসের দোকান বসে। গরম গরম খাবার জন্য চায়ের দোকানে ভিড় লেগে যায়। পেপার ওয়ালা কাঁপতে কাঁপতে পেপার দিয়ে যায়। ফুলের দোকানে গাঁদা ফুলের শোভা ছড়িয়ে পড়ে।


শহরে শীতের সকাল :- , কুয়াশায় ধোয়ায় ধুলোয় চারদিক অন্ধকার হয়ে থাকে। গাড়িঘোড়ার শব্দে, ট্রামের ঘণ্টির শব্দে শহরবাসীর ঘুম ভাঙে। খুব ভোরেই দেখা মেলে খবরের কাগজওয়ালার, দুধওয়ালার। দু চারজন প্রাতঃ ভ্রমণকারীর দেখা মেলে। দেখতে দেখতে সূর্য আত্মপ্রকাশ করে। কিন্তু সকালের রোদ শহরের অলিতে-গলিতে প্রবেশের সুযোগ পায় না। উঁচু বাড়িগুলো বাধা হয়ে দাঁড়ায়। শহরের কর্মব্যস্ত মানুষ শীতের সকালের রূপ উপভোগ করার সময় পায় না। তারা গরম জলে স্নান করে সকাল সকাল শীতের পোশাক পরে কাজে বের হয়।


উপসংহার : একের পর এক ঋতুগুলো আসে আর যায়। বিভিন্ন ঋতুর সকাল তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে হাজির হয়। তাতে বৈচিত্র্যের শেষ নেই। কখনো শীতের কাঁপুনি নিয়ে সকাল সকাল কেটে যায় । কখনো মিষ্টি স্নিগ্ধতায় সকাল কাটে। আবার কখনো গরমের ঘামে সকাল কাটে । ঋতু নিজেই ঠিক করে সকালটা প্রকৃতিকে কেমন হবে উপহার দেবে। সর্বশেষে বলা যায় শীতের সকাল আমার খুব ভালো লাগে এবং আমি খুব ভালোভাবে উপভোগ করি।