পিঁপড়ে কবিতার অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা / pipre poem question class 6 bangla - school book solver

Thursday, 22 May 2025

পিঁপড়ে কবিতার অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা / pipre poem question class 6 bangla

 



ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা
পিপড়ে (কবিতা)
অমিয় চক্রবর্তী

সারাংশ:  পিঁপড়ে একটি অতি ক্ষুদ্র প্রাণী। কবি এক পিঁপড়ের জীবনযাত্রাকে  পর্যবেক্ষণ করে তার প্রতি সমবেদনা সহকারে এই কবিতাটি রচনা করেছেন। পিঁপড়ে মাটির প্রাণী। মাটিতেই তাদের জীবনযাত্রা চলে। তারা খাদ্য সংগ্রহ করার জন্য মাটির ওপরে উঠে আসে। কাজ শেষ হলে আবার মাটির নীচে আশ্রয়গ্রহণ করে। পিঁপড়ের আয়ু অল্প। কবির ধারণা আমরা পৃথিবীতে ক্ষণস্থায়ী জীবনের আয়ু নিয়ে যারা এসেছি তারা যেন ক্ষুদ্র জীব পিঁপড়ের অস্তিত্ব রক্ষায় উদ্যোগী হই কারণ মরণের পরে তারাই আমাদের স্মৃতিকে পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখে।

হাতেকলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
১.১ অমিয় চক্রবর্তী কোথায় অধ্যাপনা করতেন ?
উত্তর। অমিয় চক্রবর্তী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যু পলজ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন।

১.২ তার দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো ।
উত্তর। তার দুটি কবিতার বইয়ের নাম হল(১) ‘পুষ্পিত ইমেজ’ ও (২)  ‘ঘরে ফেরার দিন’।

২. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
২.১ কবির কী দেখে 'কেমন যেন চেনা লাগে' মনে হয়েছে?
উত্তর। ক্ষুদ্র জীব পিঁপড়ের ব্যস্ত হয়ে চলা দেখে কবির ‘কেমন যেন চেনা লাগে' মনে হয়েছে।

২.২ 'কেমন যেন চেনা লাগে'—কথাটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।
উত্তর। কবির মনে হয়েছে পিঁপড়ের গতিবিধি তার এই ব্যস্ত হয়ে চলা পূর্বপরিচিত। তাই তিনি একথা বলেছেন।

২.৩ কৰি কাউকে দুঃখ দিতে চাননি কেন?
উত্তর। কবির ইচ্ছা ছোটো পিঁপড়ে ধূলোর রেণু মেখে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখুক। তাই তিনি তাকে স্থানচ্যুত করে দুঃখ দিতে চাননি।

২.৪ ‘কোন অতলে ডাকুক' কে কাকে এই ডাক দেয় ?
উত্তর। গাছের নীচে কোমল হাওয়া বইতে থাকে। সে ছোটো পিঁপড়কে এই ডাক দেয়।

২.৫ কবি আজ প্রাণের কোন পরিচয় পেয়েছেন ?
উত্তর। চলমানতাই জীবন আর থেমে থাকাই মৃত্যু। এই কবিতার কবি আমাদের প্রাণের চলমানতাকে বুঝিয়েছেন।

২.৬ 'দু দিনের ঘর' বলতে কী বোঝ?
উত্তর। আমাদের মতো মানুষের জীবন সময়কাল ক্ষণস্থায়ী। তাই কবি আমাদের জীবনের ক্ষণস্থায়িত্বকে বোঝাতে 'সু দিনের ঘর' কথাটি ব্যবহার করেছেন।

৩. প্রার্থনা, নির্দেশ, অনুরোধ বোঝাতে বাংলায় ক্রিয়ার শেষে ‘উক’ যোগ হয়। (যেমন এই কবিতায় থাক্ + উক= থাকুক) কবিতা থেকে এমন আরও পাঁচটি শব্দ খুঁজে বের করো।
উত্তর। ঘুরুক, দেখুক, রাখুক, মাখুক, ডাকুক।

৪. নীচের সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থপার্থক্য দেখিয়ে প্রত্যেকটি ব্যবহার করে পৃথক পৃথক বাক্যরচনা করো।
ভরে-
ভোরে-

ঘরে-
ঘোরে—

ছুঁয়ে
ছুঁয়ে-

আনল—
মধুর—

অনল-
মেদুর -

উত্তরভরে—( পূর্ণ,ভর্তি) বর্ষাকালে নদী নালা জলে ভরে যায়।
ভোরে—(খুব সকালে)- ভোরে পাখির গান শোনা যায়।
ঘরে-(বাড়িতে)- বৃদ্ধ লোকটি ঘরে থাকে।
ঘোরে-(বেড়ায়)— আমার কাকু পূজোর ছুটি পেলেই মন্দিরে মন্দিরে ঘোরে।
ছুঁয়ে—(স্পর্শ করে)— আমি মায়ের পা ছুঁয়ে প্রণাম করলাম।
ছুঁয়ে—(ভেদ করে)— মারামারি সময় লোকটির কান ছুঁয়ে গুলি বেরিয়ে গেল।
আনল—(নিয়ে এল)— কাকু  আমার জন্য দশটা মিষ্টি আনল।
অনল—(অগ্নি)—অনল সবকিছুকে পুড়িয়ে ছারি ছারখার করে দেয়।
মধুর—((মিষ্ট)— মেয়েটি মুখের ভাষা খুব মধুর।
মধুর—(মাখানো)—বাবামায়ের মমতা মেদুর দৃষ্টি সন্তানকে সাহস দেয়।

৫. পাশের শব্দঝুড়ি থেকে ঠিক শব্দ বেছে নীচের ছকটি পূরণ করো :
শব্দবুড়ি-মাটি, পিপীলিকা, যারা, ধুলা।
উত্তর। পিপীলিকা > পিঁপড়ে
মৃত্তিকা > মাটি
ধুলো > ধুলা
যাহারা > যারা
৬. কবিতা থেকে সর্বনামগুলি খুঁজে বের করে আলাদা আলাদা বাক্যে ব্যবহার করো।
উত্তর। সর্বনামগুলি হল—তার, ওকে, ও, কাউকে, ওই যারা।
তার—তার কথা সবাই ভুলে গেছে।
ওকে -ওকে আমি পরীক্ষার সময় কিছু বলে দেবো না।
ওর-ওর মুখের কথা খুব খারাপ।
কাউকে— আমি কাউকে মিথ্যা কথা বলি না
ওই-  ওই মানুষটা আমাকে কাল ভয় দেখিয়েছে
যারা - যারা ভাল পড়া করেছিল তারা পরীক্ষায় পাস করেছে।



৭. নীচের স্তম্ভ টি মেলাও :
উত্তর। বি + স্মরণ =বিস্মরণ।
অ + চেনা = অচেনা।
সু + মধুর - সুমধুর।
প্রতি + দিন = প্রতিদিন।
কু + কথা কুকথা

৮. কবিতা থেকে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়াগুলি খুঁজে নীচের খোপে যথাস্থানে বসাও :

উত্তর।।
সমাপিকা ক্রিয়া- ঘুরুক, দেখুক, থাকুক, রাখুক, মাখুক, ডাকুক, ঘিয়েছে, লাগে, আনল,
আছি।
অসমাপিকা ক্রিয়া:-চলায়, ছুঁয়ে, ভার, করে, দিতে,নিতে চলে।
৯. দুটি বাক্যে ভেঙে লেখো :

উত্তর। মাটির বুকে সবাই এই দুদিনের ঘরে আছি। তার স্মরণে সবাইকে আজ আদর ঘিরেছে।

১০. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১০.১ পিঁপড়ের ভাষাহীন চলাচলের মধ্যে বিনিময়ের ভঙ্গিটি কেমন ?
উত্তর। পিঁপড়ে ভাষাহীনভাবে চলাফেরা করে। সেই চলাফেরার মধ্যে বিনিময়ের ভঙ্গিটি ভালোবাসা এবং ব্যস্ততার।
১০.২ “মাটির বুকে যারাই আছি এই দুদিনের ঘরে”—'এই দু-দিনের ঘরে' বলতে কী বোঝ? কে সবাইকে কীভাবে এই দুদিনের ঘরে আদরে ঘিরে রাখে?
উত্তর। আমাদের সকলে জন্মগ্রহণ করার পর নির্দিষ্ট সময়ের অবসানে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিই অর্থাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হই। “এই দুদিনের ঘর' কথার মাধ্যমে কবি আমাদের জীবনের ক্ষণস্থায়িত্বকে বুঝিয়েছেন।
আমাদের ‘এই দুদিনের ঘরে' পিঁপড়ে সকলকে ভালোবাসার বাঁধনে আদর করে ঘিরে রাখে।

১০.৩. এই কবিতায় কবির কীরূপ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর। এই পৃথিবীতে আমরা বিশ্বপিতার অংশবিশেষ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছি। যে জীব যত ছোটোই হোক না কেন এই পৃথিবীতে সকলের সমান অধিকার আছে। সকলে মিলে পারস্পরিক ভালোবাসার বাঁধনে আনন্দের মাধ্যমে বেঁচে থাকাই কাম্য। তাই কবিতার মূল সুরই হল সকলকে আপন করে নিয়ে সুখে ও শান্তিতে দিন অতিবাহিত করা।
১০.৪ বিভিন্ন রকমের পিঁপড়ে এবং তাদের বাসস্থান, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনপ্রণালী সম্বন্ধে তোমার পর্যবেক্ষণগুলি একটি খাতায় লেখো। প্রয়োজনে ছবিও আঁকতে পারো।
উত্তর। পিঁপড়ে আমাদের পরিচিত প্রাণী। সাধারণত আমরা তিনধরনের পিঁপড়ে দেখতে পাই আমাদের চারপাশে।
১. কালো পিঁপড়ে
বাসস্থান- মাটির নীচে
খাদ্যাভ্যাস-গৃহস্থের বাড়ির খাবারদাবার,
চিনি মিষ্টি।
জীবনযাত্রা-বিষাক্ত নয়, কম কামড়া,
দলবেঁধে থাকে, নিজেদের কাজেই ব্যস্ত থাকে।


২. লাল পিঁপড়ে
বাসস্থান - মাটি
খাদ্যাভ্যাস-মিষ্টি জাতীয় যে-কোনো
দ্রব্য খায়।
জীবনযাত্রা- বিষাক্ত, কামড় দিলে জ্বালা করে। দলবেঁধে খাদ্য সংগ্রহ করে। গন্ধের
মাধ্যমে যোগাযোগ রাখে।
৩. ভেঙো পিঁপড়ে
বাসস্থান- মাটির নীচে গর্ত
খাদ্যাভ্যাস-  মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য এবং
জীবনযাত্রা- মানুষের যে-কোনো খাদ্য
মৃত জীবজন্তু।


১০.৫ একটি লাল পিঁপড়ে ও একটি কালো পিঁপড়ের মধ্যে কাল্পনিক একটি কথোপকথন রচনা করো।
উত্তর। লাল ও কালো পিঁপড়ের কথোপকথন:-
কালো পিঁপড়ে : ওহে লাল ভাই, চললে কোথায় ?
লাল পিঁপড়ে :-যাব, আর কোথা, কাবারের সন্ধানে চলেছি। দেখি কোথায় মেলে?

কালো পিঁপড়ে-তোমার তো খাদ্য জোগাড়ের কোনো চিন্তা নেই ভাই। যত জ্বালা আমাদের।

লাল পিঁপড়ে :-চিন্তা নেই আবার? তবে একটা বড়ো খাবারের সন্ধান আছে। সেখান থেকে খাবার আনতে পারলে অনেকদিন আমার চলে যাবে। চিন্তা করতে হবে না।

কালো পিঁপড়ে :-কোথায় কোথায়? বল না ভাই তাহলে আমিও তোমার সঙ্গে যাব।

লাল পিঁপড়ে-আরে ওটা কোনো গৃহস্থের বাড়ি নয়। ওটা রেশন দোকান। ওখানে সর্বদা কেউ পাহারা দেয় না বা ওষুধও দেওয়া থাকে না। তাই চুরি করার সমস্যা নেই।

কালো পিঁপড়ে :-তাহলে কি করে ঢুকবে ভাই সেখানে?
লাল পিঁপড়ে :-ঢোকার কোনো সমস্যা নেই। ছাদের নীচে একটা ঘুলঘুলি আছে। সেখান দিয়ে ঢুকে দেয়য়া দিয়ে নেমে বস্তার কাছে পৌঁছোলেই হল। আর ভাবনা নেই।

কালো পিঁপড়ে : চলো তবে আমরা সবাই মিলে অভিযান শুরু করি। মালিক জানতে পারার আগে আমরা সবাই চিনি সরিয়ে ফেলব।

শব্দার্থ : অতলে—গভীরে।
স্মরণে—মনে রাখায়
আদরে-স্নেহে।
ব্যস্ত—তৎপর।
স্তব্ধ—নীরব।
ভুবন—পৃথিবী।
রেণু—কণা।