কিশোর বিজ্ঞানী হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা / Kishor biggani poem question answee class 6 bsngla
![]() |
ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা
কিশোর বিজ্ঞানী
অন্নদাশংকর রায়
★সারাংশ : এক কিশোর ছিল তার খেলায় মন লাগত না। ছুটি পেলেই সমুদ্রের বেলাভূমিতে ছুটে যেত । সেখানে সারাদিন ধরে খেলা করত অন্ধকার নেমে এলেও সে বাড়ি ফিরতে চাইত না। সেখানে সে নানা রঙের নকশা করা ঝিনুক কুড়ায়, সেগুলি এক একটি রত্ন বিশেষ।
একদিন কিশোর বড়ো হয়। তার জ্ঞানের স্পৃহা ক্রমশ বেড়ে চলে। বড়ো হয়ে জ্ঞানরূপ সমুদ্রের বেলাভূমিতে কিছু কুড়িয়ে বেড়ায়। জ্ঞানের ভাণ্ডার পূরণ করতে থাকে। শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী নিউটনের পরম বাণাই আমাদের চলার পথে পাচ্ছে জ্ঞান সমুদ্র অনন্ত অসীম। সেখানে জ্ঞানের ভাণ্ডার বর্তমান। এ জীবনের স্বল্প সময়ে কতটুকুই বা জ্ঞান অর্জন করতে পারলাম।
হাতেকলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
১.১ অন্নদাশংকর বায় প্রথম জীবনে কোন্ ভাষায় সাহিত্য রচনা করতেন?
উত্তর। অন্নদাশংকর রায় প্রথম জীবনে ওড়িয়া ভাষায় সাহিত্য রচনা করতেন।
১.২ তাঁর লেখা দুটি ছোটোদের ছড়ার বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর। তাঁর লেখা দুটি ছোটোদের ছড়ার বইয়ের নাম হল— (১) ‘উড়কি ধানের মুড়কি’ (২) ‘রাঙা ধানের খই’।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
২.১ কিশোরের মন লাগে না কীসে?
উত্তর। কিশোরের খেলায় মন লাগে না।
২.২ কখন কিশোর মন সমুদ্দুরের বেলায় যেতে চায়?
উত্তর। কিশোর যখন ছুটি পায় তখন মন সমুদ্দুরের বেলায় যেতে চায়।
২.৩ অনুসন্ধিৎসু কিশোরটি সাগরবেলায় কী কুড়িয়ে তোলে?
উত্তর। অনুসন্ধিৎসু কিশোরটি সাগরবেলায় নানা রঙের নকশা আঁকা ঝিনুক কুড়িয়ে তোলে।
২.৪ কোন্ পারাবারকে ‘অনন্তপার' বলা হয়েছে?
উত্তর। জ্ঞান পারাবারকে ‘অনন্তপার’ বলা হয়েছে।
২.৫ দুজন প্রখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানীর নাম লেখো।
উত্তর। (১) সত্যেন্দ্রনাথ বসু এবং (২) আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ।
৩. কবিতা থেকে বিপরীত শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো :
আলো, ছোটো, এখানে, তখন।
উত্তর।
আলো-আঁধার।
ছোটো-বড়ো।
এখানে-সেখানে।
তখন — এখন।
৪. প্রতিটি শব্দকে পৃথক অর্থে আলাদা বাক্যে প্রয়োগ করো :
সুধায়, পুরী, বেলা, হেলা, ভরা।
উত্তর।
সুধায় – (অমৃত) পৌরাণিক গল্পে জানা যায় দেবতারা সুধা পান করেন।
সুধায় – (জিজ্ঞাসা করে) তখন কাকু সুধায় আমার নামটা কি?
পুরী – (স্থান) জগন্নাথের মন্দির পুরীতে দেখা যায়
পুরী – (বাড়ি) পুরী মানুষের আশ্রয়স্থল।
বেলা - (সময়) দিনের শেষে বেলা গড়িয়ে পড়ে।।
বেলা - (তট) দীঘার বেলাতটে অনেকে পিকনিক করে।
হেলা- (কাত হওয়া) ঝড়ে গাছটি খেলা হয়ে গেছে।
হেলা- (সহজে) ভারত হেলায় স্বাধীনতা পায়নি।
ভরা - (পূর্ণ) বর্ষায় নদীগুলি জলে ভরা থাকে।
ডরা – (পুরো) কলসি জল কানায় কানায় ভরা
৫. আবিষ্কারের গল্পগুলির পাশে পাশে আবিষ্কারকের নাম উল্লেখ করো এবং তাঁদের সম্পর্কে আরো জানার চেষ্টা করো : ঘড়ি, এরোপ্লেন, রেডিও, দূরবিন, টেলিভিশন।
উত্তর। ঘড়ি, এরোপ্লেন—রাইট ভাতৃদ্বয়।
রেডিয়ো—মারকনি সাহেব।
দূরবিন-গ্যালিলিয়ো।
টেলিভিশন —জন বেয়ার্ড।
৬. ছুটি পেলে তোমার মন কী করতে চায় চার-পাঁচটি বাক্যে লেখো।
উত্তর। ছুটি পেলে আমার মন বেড়াতে যেতে চায়। প্রতিদিনকার জীবনের একঘেঁয়েমি কাটিয়ে একটু আনন্দ উপভোগ করতে চাই। কোন শহরে বেড়াতে যেতে চাই। সেখানে বিভিন্ন ধরনের দোকান ও বহু মানুষের সমাগম দেখে আমার খুব ভালো লাগে। শহরে মনে হয় মুক্তির স্বাদ পাই।
৭. কবিতা থেকে শব্দ নিয়ে নীচের শব্দ ছকটি পূরণ করো :
উত্তর :
পাশাপাশি - আঁ ধা র , পারাবর ,কিশোর, নিউটাউন।
ওপরনিচে -রত্নভরা, রংয়ের,রতন।
৮. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৮.১ পাঠ্য ছড়াটির প্রথম পক্তি শুরু হয়েছে 'এক যে ছিল কিশোর...– এইভাবে, সাধারণত কোন্ ধরনের রচনা এভাবে শুরু হয়ে থাকে? সেই ধরনের রচনার বিষয়ের সঙ্গে ছড়াটির বিষয়গত সাদৃশ্য/বৈসাদৃশ্য আলোচনা করো।
উত্তর। এক যে ছিল কিশোর – সাধারণত কাল্পনিক কোনো গল্প বা রূপকথার গল্প কাহিনির সূচনা হয় এইভাবে।
এ ছড়াটির মিল হল কিশোরের কোনো সঠিক পরিচয়, সময় উল্লেখ নেই, কাল্পনিক গল্পে ও এইভাবে রাজা, রানি বা নানা জীবজন্তুর জীবন কাহিনি বর্ণনা থাকে। এই কবিতাটিতে কিশোর বিজ্ঞানী সম্পর্কে সাধারণ পরিচয় দেওয়া হয়েছে।
অমিল হচ্ছে এখানে কিশোরের জ্ঞান অর্জনের স্পৃহার কথা নির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে যা কাল্পনিক গল্পতে সামগ্রিকভাবে বোঝানো হয়। আসলে এই পৃথিবীতে সকল শিশুই এক-একজন কিশোর বিজ্ঞানী। জানার আগ্রহ, আবিষ্কারের প্রেরণা
জোগায় যা একদিন তারা নতুন নতুন তথ্য উদ্ভাবনের কাজে নিজেদের মনোনিবেশ করতে পারবে।
৮.২ ‘মন লাগে না খেলায়'-কার খেলায় মন লাগে না ? কিশোরেরা সাধারণত কোন্ ধরনের খেলাধুলা করে থাকে? তার পরিবর্তে ছড়ার কিশোরটির কী করতে পছন্দ করত।
উত্তর। কিশোরটির খেলায় মন লাগে না।
কিশোরেরা সাধারণত দলবদ্ধভাবে দৌড়াদৌড়ি, লাফানো, ঝাঁপানো প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের খেলা মাঠে খেলতে পছন্দ করে। খেলা তাদের কাছে খুব আনন্দের।
কিন্তু কিশোরটি ছুটি পেলে ছুটে সাগরবেলায় চলে যায়। সেখানে সে সারাদিন ঘরে থাকে না
সাগর বেলায় জিনুক কুড়োয়। আসলে পৃথিবীরূপ জ্ঞান সমুদ্রের বেলাভূমিতে কিশোরটি নতুন নতুন জ্ঞান আচরণ করে নিজের জ্ঞানভাণ্ডার পূরণ করতে ব্যস্ত থাকে। সে শুধু চায় নিজের জ্ঞান ভান্ডার পূর্ণ করতে।
৮.৩ 'এক একটি রতন যেন/নাইবা কে চিনুক'-কোন্ জিনিসকে রত্নের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে? কেনই বা এ ধরনের তুলনা? তাকে চেনা বা না চেনার প্রসঙ্গই বা এল কেন ?
উত্তর। নানা রঙের নকশা আঁকা ঝিনুক রত্নের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এই ধরনের তুলনা করা হয়েছে কারা এই কিশোরটি পৃথিবীর সৃষ্টির আপার রহস্য জানতে চায়। এখানে সমুদ্রের ঝিনুককে রূপক অর্থে বোঝা হয়েছে। এ ঝিনুকের মধ্যেই সে জ্ঞানের রতন খুঁজে পায়।
এই পৃথিবীতে কেউ চায় পৃথিবীর রহস্য জানতে ও চিনতে। আবার কেউ কেউ এটা পছন্দ করে না তারা জানতে বুঝতে চায় না ।। সেজন্য চেনা বা না চেনার প্রসঙ্গ এই কারণেই এসেছে।
★ শব্দার্থ : সমুদ্দুর— সমুদ্র। আঁধার অন্ধকার। নকশা—স্কেচ, রেখাচিত্র। মাড়িয়ে — পায়ে দলে। সুধায় — অনুরে
কুড়োয়—সংগ্রহ করে। অনন্তপার—অন্তহীন মহাবিশ্ব। জ্ঞান পারাবার—জ্ঞানের সমুদ্র। সুধায়
হেলায়—সহজেই। পুরী—আলয়, বাড়ি। নুড়ি—ছোটোপাথর।