খোকনের প্রথম ছবি সপ্তম শ্রেণি বাংলা অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর। / KHOKNEr PAOTHAM CHHABI class 7 bangla - school book solver

Tuesday, 20 May 2025

খোকনের প্রথম ছবি সপ্তম শ্রেণি বাংলা অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর। / KHOKNEr PAOTHAM CHHABI class 7 bangla

 


সপ্তম শ্রেণীর
বাংলা সাহিত্য
কবিতা ঃ খাকনের প্রথম ছবি
কবি : বনফুল

লেখক পরিচতি ঃ বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় মণিহারীতে।তার জন্ম হয়  ১৮৯৯ সালে।লেখক বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় বনফুল ছদ্মনামে পরিচিত।  ‘প্রবাসী” ও ‘ভারতী' পত্রিকায় তিনি বনফুল ছদ্মনামে কবিতা লেখেন। তাঁর লেখা প্রথম উপন্যাস 'তৃণখণ্ড” তাঁর ডাক্তারি জীবনের প্রথম দিকের রচনা।তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা ‘স্থাবর’, ‘জঙ্গম', দ্রমুগ্ধ', ‘হাটে বাজারে’, ‘শ্রীমধুসূদন’, ‘বিদ্যাসাগর' প্রভৃতি। ১৯৭৯ সালে তিনি পরলোক গমন করেন।

গল্পের নামকরণের সার্থকতা:-
খোকন নামে একটি ছেলে, যার ছবি আঁকার অত্যন্ত ইচ্ছা। কিন্তু সে আঁকতে পারে না। ক্রমশ তার শিক্ষক, বাবার বন্ধুদের কথায় চেষ্টা চালাতে চালাতে একদিন সে নিজের মতো ছবি এঁকে ফেলে। সমগ্র গল্পটি খোকনকে কেন্দ্র করে লেখা তাই ‘খোকনের প্রথম ছবি' নামটি সার্থক নামকরণ সার্থক হয়েছে বলে মনে করি।গ


খোকনের প্রথম ছবি গল্পের সারাংশ:- খোকনের ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই তাকে আঁকতে উৎসাহিত করেন। সে আঁকে কিন্তু তার আঁকা তার নিজেরই পছন্দ হয় না। একদিন তার বাবার বন্ধু একজন বড়ো চিত্রশিল্পী তাদের বাড়িতে আসেন। তিনি খোকনকে তার মন থেকে ছবি আঁকতে শেখান। তিনি বলেন চোখ বুজে বসে কল্পনা করলে তাতে যা দেখা যাবে তাই এঁকে ফেলতে হবে। খোকন চেষ্টা করে এবং অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই সে দেখতে পায় না। তখন সে ঠিক করে অন্ধকারের ছবিই সে আঁকবে। আঁকার পর সে দেখে ওই কালোর মধ্যে একটা মুখ রয়েছে চোখ আছে।

আর সে চোখে অদ্ভুত হাসি। অবাক হয়ে খোকন নিজের প্রথম দৃষ্টির দিকে চেয়ে থাকে।


হাতে-কলমে
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

১. গল্প থেকে একইরকম অর্থযুক্ত আর-একটি করে শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো ঃ শিল্পী, নগর, ঐরাবত, উজ্জ্বলতা, অনুকরণ।
উঃ।
শিল্পী—চিত্রকর।
নগর—শহর।
ঐরাবত—হাতি।
উজ্জ্বলতা—দীপ্তি।
অনুকরণ—নকল।

২. বিশেষ্য থেকে বিশেষণে রূপান্তরিত করো : প্রকৃতি, গাছ, কল্পনা, ফুল, দীপ্তি।
উঃ।
বিশেষ্য -  বিশেষণে
প্রকৃতি—প্রাকৃতিক।
গাছ—গেছো।
কল্পনা—কাল্পনিক।
ফুল—ফুলেল।
দীপ্তি—দীপ্ত।

৩. নিম্নরেখ অংশটির কারকবিভক্তি নির্ণয় করো :
৩.১ প্রকৃতি থেকে ছবি আঁকো।
উঃ। কর্মকারকে 'শূন্য' বিভক্তি।

৩.২ তোমার ছবি কই?
উঃ। নিমিত্তকারকে 'শূন্য' বিভক্তি।

৩.৩ একদিন তিনি খোকনদের বাড়িতে এলেন। উঃ। ‘অধিকরণ' কারকে শূন্য বিভক্তি।

৩.৪ ড্রইং খাতার একটা পাতা কালো রঙে ভরে গেল।
উঃ। কর্মকারকে‘এ’বিভক্তি।

৪. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর দাও ঃ
৪.১ ‘ড্রইং শিখতে লাগল খোকন'—খোকন কোথায় ড্রইং শিখত? আর প্রথম দিকে কী কী আঁকত?
উঃ। খোকন তার স্কুলে ড্রইং শিখত।
প্রথম দিকে খোকন টুল, টেবিল, চেয়ার, কলশি, কাপ ইত্যাদি আঁকত । এমনকি একদিন একটা গোরুও সে এঁকে ফেলেছিল।

৪.২ ‘একদিন তো মেঘের ছবি আঁকতে গিয়ে বেকুব হয়ে গেল খোকন' – 'বেকুব' শব্দটির অর্থ কী ? মেঘের ছবি আঁকতে গিয়ে খোকন বেকুব হয়ে গিয়েছিল কেন?
উঃ। ‘বেকুব' শব্দটির অর্থ বোকা।
একদিন সে দেখল আকাশে একটা মেঘ হাতির মতো। ঠিক যেন একটি হাতি পেছনের দু-পায়ে ভর করে শুঁড় তুলে আছে। খোকন তাড়াতাড়ি তার ড্রইং খাতায় ছবিটা আঁকতে
লাগল। আঁকা শেষ হবার পর সে মিলিয়ে দেখতে গেল ঠিক হয়েছে কি না, গিয়ে দেখে হাতি নেই, প্রকাণ্ড একটা কুমির শুয়ে আছে। মেঘের হাতি কুমির হয়ে গেছে। এতে খোকন
একেবারে বেকুব হয়ে গেল।

৪.৩ ‘এগুলো সব নকল করা ছবি।'—কে কাকে এই কথা বলেছেন? 'নকল করা ছবি' বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন ?
উঃ। খোকনের বাবার একজন বন্ধু বিখ্যাত চিত্রকর ছিলেন। তিনি এই কথাগুলো খোকনকে বলেছেন।
নকল করা ছবি অর্থাৎ খোকন যা-কিছু এঁকেছে সবকিছু কাউকে দেখে তার অনুকরণ করেছে বা কারোর প্রতিচ্ছবি এঁকেছে। তাই তিনি ছবিগুলিকে নকল করা ছবি বলে বুঝিয়েছেন।


৫. নীচের প্রতিটি বাক্যকে দুটি বাক্যে ভেঙে লেখো :
৫.১ সে যখন খুব ছোটো কাগজের উপর রঙিন পেনসিল দিয়ে হিজিবিজি কাটত।
উঃ। সে খুব ছোটো ছিল। সে তখন কাগজের উপর রঙিন পেনসিল দিয়ে হিজিবিজি কাটত।
৫.২ পুলের ছবিটা দেখেও খুব প্রশংসা করলেন মাস্টারমশাই।
উঃ। পুলের ছবিটা দেখলেন। তারপর খুব প্রশংসা করলেন মাস্টারমশাই।

৫.৩ সূর্যের যে ছবিটা এঁকেছে সেটা তো সূর্যের মতো নয়।
উঃ। সূর্যের ছবিটা এঁকেছে। কিন্তু সেটা তো সূর্যের মতো নয়।

৫.৪ একদিন তো মেঘের ছবি আঁকতে গিয়ে বেকুব হয়ে গেল খোকন।
উঃ। একদিন খোকন মেঘের ছবি আঁকল। কিন্তু আঁকতে গিয়ে সে বেকুব হয়ে গেল।

৫.৫ খোকন একদিন নিজের ঘরে চোখ বুজে বসে রইল।
উঃ। খোকন বসে রইল। সে একদিন নিজের ঘরে চোখ বুজে বসে রইল।

৬. নীচের আলাদা আলাদা বাক্যগুলি জুড়ে একটি বাক্য তৈরি করো :
৬.১ খোকন বড়ো হয়েছে। ক্লাস টেন-এ পড়ে।
উঃ। খোকন ক্লাস টেন-এ পড়া বড়ো ছেলে।

৬.২ খোকনের বাবার একজন বন্ধু বিখ্যাত চিত্রকর। তিনি লখনউ শহরে থাকেন।
উঃ। খোকনের বাবার একজন বন্ধু লখনউ শহরে থাকেন যিনি বিখ্যাত চিত্রকর।

৬.৩ নিজের আঁকা ছবি? তা কী করে আঁকব ?
উঃ। নিজের আঁকা ছবি কী করে আঁকব?

৬.৪ চোখ বুজে বসে কল্পনা করো। কল্পনায় যা দেখবে সেটাই এঁকে ফেলো।
উঃ। চোখ বুজে কল্পনায় যা দেখবে সেটাই এঁকে ফেলো।

৬.৫ তারপর হঠাৎ দেখতে পেল ওই কালোর ভেতরেই একটা মুখ রয়েছে, চোখও আছে।
উঃ। তারপর হঠাৎ দেখতে পেল কালোর ভেতরেই একটা মুখ, তার চোখও আছে।

৭. গল্পে রয়েছে এমন দশটি ইংরেজি শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো।
উ।(১) পেনসিল, (২) ট্রেন (৩) স্কুল, (৪) ড্রইং, (৫) টেবিল, (৬) চেয়ার, (৭) কাপ, (৮) বুক, (৯) টুল , (১০)পুল ।

৮. খোকন জিজ্ঞেস করলে—প্রকৃতি থেকে? প্রশ্ন পরিহার করো।
উঃ। খোকন জানতে চাইল সেটা প্রকৃতি থেকে কি না।
৯. লক্ষ্ণৌ শহরটি কোথায়? সেখানকার একটি বিখ্যাত স্থাপত্যের নাম করো।
উঃ। লক্ষ্ণৌ শহরটি উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত। এটি একটি রাজধানী শহর। সেখানকার একটি বিখ্যাত স্থাপত্য হলো ভুলভুলাইয়া ।

১০. খোকনের ‘ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই' কীভাবে খোকনকে প্রকৃতি দেখতে শিখিয়েছিলেন?
উঃ। খোকনের ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই খোকনকে চারপাশের দৃশ্য থেকে ছবি আঁকতে শিখিয়েছিলেন। বাড়ির সামনের আছে, তার বাড়ির ছাদের পুল ইত্যাদি থেকে অর্থাৎ চারপাশের প্রকৃতি থেকে তিনি ছবি আঁকতে শিখিয়েছিলেন।

১১. প্রকৃতির দৃশ্যের যে বদল অহরহ হয় তা খোকন কীভাবে বুঝল ?
উঃ। একদিন খোকন দেখল আকাশে একটা মেঘ হাতির মতো দেখতে। ঠিক যেন একটি হাতি পেছনের দু-পায়ে ভর করে শুঁড় তুলে আছে। খোকন তাড়াতাড়ি তার ড্রইং খাতায় ছবিটা আঁকতে লাগল। আঁকা শেষ হবার পর মিলিয়ে দেখতে গেল ঠিক হয়েছে কি না, গিয়ে দেখে, হাতি নেই প্রকাণ্ড একটা কুমির শুয়ে আছে। হাতি কুমির হয়ে গেছে। এই দেখে খোকন বুঝল প্রকৃতির দৃশ্যের অহরহ বদল হয়।

১২. খোকন অবাক হয়ে গেল; আর
......অবাক হয়ে চেয়ে রইল খোকন।
—এই দুই ক্ষেত্রে খোকনের 'অবাক' হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করো।

উঃ। খোকন প্রকৃতির যা-কিছু দেখত তাই দিয়ে ছবি আঁকত। কিন্তু তার নিজের আঁকা কোনো ছবি ছিল না। তাই তার বাবার বন্ধু যিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত চিত্রকর, তিনি যখন জিজ্ঞাসা করলেন খোকনের নিজের আঁকা ছবি কোথায়? তখন সে অবাক হয়ে গেল।
খোকনের বাবার বন্ধু তাকে যখন নিজের কল্পনা করা ছবি আঁকতে বললেন সে তখন নিজের ঘরে বসে কল্পনা করে | অন্ধকার ছাড়া কিছু দেখতে পেল না। সে তখন ঐ অন্ধকারেই ছবি আঁকবে ঠিক করল। আঁকতে গিয়ে খোকনের | ড্রইং-খাতার একটা পাতা কালো রঙে ভরে গেল। সেই কালোর ভেতরে সে একটা মুখ ও চোখ দেখতে পেল। তাই দেখে
খোকন অবাক হয়ে চেয়ে রইল।

১৩. ‘চিত্রকর চলে গেলেন'—এই চিত্রকরের পরিচয় দাও। চলে যাওয়ার আগে তিনি খোকনকে কী বলে গেলেন ?
উঃ। এই চিত্রকর খোকনের বাবার বন্ধু। তিনি লক্ষ্ণৌতে থাকেন। তিনি চলে যাওয়ার আগে খোকনকে চোখ বুজে বসে কল্পনা করতে বললেন। নিজের কল্পনা থেকে যা মনে আসবে তাই তিনি আঁকতে বলে গেলেন।

১৪. ‘এই অন্ধকারেরই ছবি আঁকবে'—কখন খোকন এমন সিদ্ধান্ত নিল? অন্ধকারের সেই ছবির দিকে তাকিয়ে.খোকন কী দেখতে পেল ?
উঃ। খোকনের বাবার বন্ধু বিখ্যাত চিত্রকর যখন খোকনের ভুল ভেঙে দিয়ে তাকে বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন যে, খোকন আজ পর্যন্ত যা এঁকেছে সবই কোনো না কোনো বস্তুর নকল বা প্রতিচ্ছবি। তাই তিনি খোকনকে বুদ্ধি দিয়ে গেলেন যে,সে তার কল্পনা থেকে যা আসবে তাই আঁকবে। খোকন তখন অন্ধকারে নিজের ঘরে বসে চোখ বুজে কল্পনা করতে লাগল। তার কল্পনায় অন্ধকার ছাড়া আর কিছু সে দেখতে পেল না, তখন সে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে সে অন্ধকারেরই ছবি আঁকবে।
আঁকার পর অন্ধকারের সেই ছবির দিকে তাকিয়ে খোকন দেখল সেই কালোর ভেতর একটা মুখ ও চোখ, আর অদ্ভুত হাসি সেই চোখে।

১৫. গল্পে ‘খোকনের প্রথম ছবি' হিসেবে তুমি কোন্ ছবিটিকে স্বীকৃতি দেবে এবং কেন তা বুঝিয়ে লেখো
উঃ। খোকনের প্রথম ছবি সেটাই যেটা সে নিজের কল্পনা থেকে এঁকেছে। প্রকৃতির ছবি কারোর ছবি থেকে দেখে আঁকা এসব তো সবাই আঁকতে পারে। কিন্তু মানুষের নিজের মনের ভাবনা থেকে যে ছবি আসে সেটাই আসল। তার মধ্যে কোনো কৃত্রিমতা নেই। সেটাই তার মনের বিকাশ, তার মধ্যে কোনো নকল নেই।

১৬. পাঁচজন সাহিত্যিকের নাম এবং তাদের ছদ্মনাম পাশাপাশি লেখো। সাহিত্যিকেরা কেন ছদ্মনাম ব্যবহার করেন তা শিক্ষক/শিক্ষিকার থেকে জেনে নাও।
উঃ।  বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়—কমলাকান্ত। প্যারীচাঁদ মিত্র—টেকচাঁদ ঠাকুর।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়—অনিলা দেবী। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়—নীললোহিত।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর—ভানুসিংহ।
লেখকদের আসল পরিচয় বিশেষ কারণে লোকবার জন্য বা কিছু সময়ের জন্য গোপন রাখার জন্য তারা ছদ্মনাম ব্যবহার করেন।

১৭. তুমি যদি বড়ো হয়ে সাহিত্যিক হও, কোন্ ছদ্মনাম ব্যবহার করবে এবং কেন তা লেখো।
উঃ। আমি যদি বড়ো হয়ে সাহিত্যিক হই তাহলে আমি “কালো মৌমাছি” ছদ্মনাম নেব।
মৌমাছি ছোট্ট একটি প্রাণী। অথচ তার একান্ত পরিশ্রমে গড়ে ওঠে বিশাল মৌচাক। পাওয়া যায় সুমিষ্ট মধু। আবার সেই মৌমাছিই তার বাসস্থান এবং সমাজকে রক্ষার্থে মরণপণ করে লড়াই করে। হাতির মতো বড়ো প্রাণীরাও ছোট্ট
মৌমাছিকে তার কামড়ের বিষকে ভয় পায় ৷
আমি সেই মধুর মতো সুমিষ্ট লেখা লিখতে চাই। অথচ প্রয়োজনে যেন আমার লেখা আক্রমণাত্মক হতে পারে। এমন লেখা লিখতে পারি যা অন্যায়ের ভিতকে নাড়িয়ে দিতে পারে। আর কালো হল সব রংয়ের মিশ্রণ। তাই “কালো মৌমাছি” নাম আমি নিতে চাই।
১৮. খোকনের ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই আর তার বাবার এক বন্ধু যেভাবে তাকে ছবি আঁকতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।তা লেখো। কোন্ রীতিটিকে তোমার পছন্দ হলো এবং কেন তা যুক্তিসহ লেখো।
উঃ। খোকন যেমন ছবিই আঁকত খোকনের মাস্টারমশাই তাতেই তাকে বাহবা দিতেন। তিনি বলতেন প্রকৃতিকে দেখে
সেই প্রকৃতির সাহায্যে ছবি আঁকতে।
খোকনের বাবার বন্ধুও ছিলেন একজন বিখ্যাত চিত্রকর, তিনি খোকনকে বললেন পরিবেশের থেকে কপি করে ছবি আঁকাও ঠিক নয়, তিনি বলেন নিজের থেকে আঁকতে। নিজের সত্তার মধ্যে যে জিনিস আছে ছবি তারই বহিঃপ্রকাশ।
তাই তিনি মন থেকে যা চোখের সামনে আসবে তাই তিনি আঁকতে পরামর্শ দেন।
খোকনের বাবার বন্ধু যেভাবে আঁকতে বলেছেন তা আমার বেশি পছন্দ হয়েছে। কারণ একজন শিল্পীর মনের ভিতরকার ভাবনাকে পাতায় ফুটিয়ে তোলাই তার শিল্পকলার সার্থকতা। তাই তিনি মনের ভেতর থেকে যে আঁকার উদাহরণ দিয়েছেন তা আমার ভালো লেগেছে।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর •
অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :

★  খোকন চোখ বুজে বসে থেকে কী দেখেছিল?
উঃ। খোকন চোখ বুজে বসে থেকে অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায়নি।

★ খোকনের ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই কী বলেছিলেন?
উঃ। খোকনকে তার ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই প্রকৃতি থেকে ছবি আঁকতে বলেছিলেন।

★  কীসের দিকে খোকন অবাক হয়ে চেয়ে রইল ?
উঃ। নিজের প্রথম সৃষ্টির দিকে খোকন অবাক হয়ে চেয়ে রইল।
★  মাস্টারমশাই কোন্ ছবি দেখে প্রশংসা করেছিলেন?
উঃ। পুলের ছবি দেখে মাস্টারমশাই খুব প্রশংসা করেছিলেন।

★ খোকনের বাবার বন্ধু কে?
উঃ। খোকনের বাবার বন্ধু একজন বিখ্যাত চিত্রকর।
★  নিজের প্রথম সৃষ্টির দিকে অবাক হয়ে চেয়ে রইল খোকন'। খোকনের প্রথম সৃষ্টি সে কীভাবে করে ছিল লেখো
উঃ। খোকন তার বাবার বন্ধু বিখ্যাত চিত্রকরের উপদেশ মতো ছবি আঁকার জন্য একদিন নিজের চোখ বুজে বসে রইল এবং অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই সে দেখতে পেল না। তাই। খোকন ঠিক করল, সে এই অন্ধকারেরই ছবি আঁকবে। সেইমতো রং-তুলি দিয়ে ছবি আঁকার পর সে দেখল ড্রইং খাতার একটা পাতা কালো রঙে ভরে গেল। তারপর সেটার দিকে খোকন
একদৃষ্টিতে চেয়ে রইল। তারপর অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে খোকন দেখতে পেল ওই কালো রঙের ভিতরই একটা মুখ রয়েছে। তার চোখও আছে, একটা অদ্ভুত হাসি রয়েছে সে চোখে। তখন খোকন নিজের এই প্রথম সৃষ্টির দিকে অবাক হয়ে চেয়ে রইল।


★  ‘প্রকৃতির ছবি ঠিক আঁকা যায় না'—কীভাবে খোকন বুঝল যে প্রকৃতির ছবি ঠিক আঁকা যায় না?
উঃ। খোকন মহা উৎসাহে ছবি আঁকা শুরু করার কিছুদিন পরে নিজেই বুঝতে পারল যে ছবি ঠিক হচ্ছে না। সূর্যের যে ছবি সে এঁকেছে তাতে সূর্যের দীপ্তি ঠিকভাবে ফোটেনি। গোলাপফুলের ছবিতে তার সৌন্দর্য্য ফোটাতে সে পারেনি। একদিন সে মেঘের মধ্যে হাতির ছবি আঁকতে গিয়ে বোকা বনে গিয়েছিল। তাই তার মনে হয়েছিল প্রকৃতির ছবি ঠিক আঁকা যায় না।

★ বিখ্যাত চিত্রকর খোকনের ছবি দেখে কী বলেছিলেন?
উঃ। বিখ্যাত চিত্রকর খোকনের ছবি দেখে বলেছিলেন তার নিজের আঁকা ছবি কোথায়, কারণ এ পর্যন্ত যে সব ছবি| সে এঁকেছে তা সবই প্রকৃতি থেকে কপি করা। ক্যামেরা দিয়ে সেগুলির ফটো তুললে সেগুলি আরও নিখুঁত হতো। এরপর
তিনি খোকনকে উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন চোখ বুজে বসে কল্পনা করতে এবং কল্পনায় যা আসবে তা এঁকে ফেলতে।

শব্দার্থ : হিজিবিজি—আঁকিবুকি।
ড্রইং—আঁকা।
পুল-সেতু বা সাঁকো।
ঝোঁক—আগ্রহ, প্রবণতা।
নকল—অনুকরণ।
চিত্রকর—শিল্পী, যিনি ছবি আঁকেন।
দীপ্তি—তেজ, উজ্জ্বলতা।
বেকুব—বোকা।
বিখ্যাত—খ্যাতনামা।
সগর্বে—গর্বভরে।
নিখুঁত—খুঁত নেই এমন।
সৃষ্টি—রচনা, সৃজন।

বিপরীত শব্দ ঃ প্রশংসা — নিন্দা।
কল্পনা—বাস্তব।
প্রকাণ্ড—ক্ষুদ্র।
অন্ধকার—আলো।
বিখ্যাত-অখ্যাত।
প্রথম—শেষ।
নকল—আসল।
নিখুঁত—খুঁত।
সৃষ্টি—ধ্বংস।