গ্রাম্য হাট রচনা বা গ্রামের হাট রচনা / Gramya Hat Rachana
![]() |
রচনা
গ্ৰাম্য হাট
ভুমিকা":- যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত হাট কবিতায় লিখেছেন -"
দূরে দূরে গ্রাম দশ-বারো খানি
মাঝে একখানি হাট।
সন্ধ্যায় সেথা জ্বলে না প্রদীপ
প্রভাতে পড়ে ঝাঁট।
হাট সাধারণত ১০-১২খানি গাঁয়ের মাঝে আবার কখনো পাঁচ ছটা গাঁয়ের মাঝে বসে। বিভিন্ন আনাজ সহ বিভিন্ন জিনিসের কেনাবেচা হয়। গ্রামের মানুষরা সেখানে গিয়ে তাদের প্রয়োজনমতো জিনিস কেনে। আবার কেউ কেউ বিক্রি করে। বহু মানুষের আগমন ঘটে। দর জানাজানি, মাল চেনা চিনি করে অনেকে মাল ক্রয় করে। কত মানুষ হাটে আসে তার হিসাব রাখা সম্ভব হয় না। হাট বিভিন্ন জিনিসের হতে পারে। তবে গ্রামের হাট বা গ্রাম্য হাট আনাজপত্র ,ঝুড়ি ঝাঝুরি তালপাতার পাখা ইত্যাদি প্রত্যেক দিনের ব্যবহারিক জিনিস নেই হাট বসে।
প্রতিষ্ঠার ইতিকথা :- কোন একটি বিশেষ কারণে গ্রামে মানুষরা উদ্যোগী হয়ে হাট বসায়। আবার কখনো নির্দিষ্ট দেব-দেবী একে কেন্দ্র করে হাট বসে। আবার কখনো চৌরাস্তার পাশে পড়ে থাকা জায়গায় কোন মানুষের স্মৃতিচারণের জন্য হাট বসে।
হাটের বর্ণনা- গ্রাম্য হাট সাধারণত সপ্তাহে দুদিন বসে। সপ্তাহের দুটি বার কে নির্দিষ্ট করে স্থির করা হয় । যেমন মঙ্গল ও শনিবার অথবা রবিবার বুধবার। মাঝে দুটো তিনটে দিন গ্যাপ থাকে। আগের দিন থেকে দূর দুরান্তে মানুষরা বিক্রির মাল নিয়ে হাজির হয়। ভোর হতে তারা দোচলা ঘর গুলি তৈরি করে ফেলে। সেখানে মাল সাজিয়ে বসে। আলু ,পটল, বেগুন, উচ্ছে , লঙ্কা আরো অনেক সবজি সাজিয়ে রাখে । সকাল হতেই গ্রামের মানুষরা সেই হাটে হাজির হয় ব্যাগ পত্র নিয়ে। কেউ সাইকেলে, কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ আবার মোটরসাইকেলে, কেউ টোটো গাড়ি করে হাটে এসে হাজির হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আস্তে আস্তে ভীড় জমে ওঠে। মানুষের কোলাহলে চারিদিক ভরে যায়। সকলে মনের আনন্দে আনাজ থলি ভর্তি করে নিয়ে বাড়ি ফিরে যায় । তারপর বেলাগড়িয়ে পড়তে আস্তে আস্তে হাটের ভিড় কমতে থাকে । মাল বিক্রেতারা নিজেদের মধ্যে লাভ লোকসানের হিসাব শুরু করে। বেলা বারোটার পর থেকে অনেক কম পয়সায় মাল অবহেলায় বিক্রি হয়। দুপুরের পর বৃত্তে তারা সবাই নিজে নিজে বাড়ি ফিরে চলে যায় ।খাট ফাঁকা পড়ে থাকে।
উপকারিতা :- গ্রামের হাট গ্রামের আশেপাশে মানুষরা উপকৃত হয় । যেমন মানুষকে দূরে তাদের সকলের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে যেতে হয় না। সব কিছুই তারা হাতের কাছে পায় । মানুষ টাটকা সবজি খেতে পায়। মানুষ অনেক কম পয়সায় সবজি খেতে পায়। বহু মানুষের সঙ্গে পরিচিতি গড়ে ওঠে। হাটে জিনিসপত্র বেচাকেনা করে অনেক মানুষের সংসার চলে। গ্রামের আশেপাশে চাষীরাও কারা সবজি চাষে উৎসাহিত হয়।
অপকারিতা:- ভালো পাশাপাশি গ্রাম্য হাটের অনেক খারাপ দিকও আছে। হাটে যেগুলি বিক্রি হয় না বা পচা সবজিগুলি ওই স্থানে পড়ে থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাছাড়া অনেক আবর্জনা হাটের মধ্যে পড়ে থাকে। প্রচুর লোকসমাগম হাওয়ায় পাশের রাস্তা দিয়ে মানুষের যাতায়াতের অসুবিধা হয়। সেখানে যারা বসবাস করে তাদের অসুবিধা হয়। আবর্জনা থেকে নানা রোগের সৃষ্টি হয়। আবার হাতে প্রচুর লোক সমাগম হয় বলে যানবাহন চলাচলের খুব অসুবিধা হয়। তাতে মানুষ অনেক বিপদে পড়ে। আবার কখনো হার্টকে কেন্দ্র করে অনেক বিবাদ তৈরি হয়।
উপসংহার;- উপসংহার হাট গ্রামের মানুষের একটি ঐতিহ্য দাঁড়িয়েছে । আজকের হাট বহু মানুষের মিলনস্থল গড়ে উঠেছে । মানুষ প্রত্যেক দিন হিসাব করে কবে হাট বলবে নতুন সবজি কবে পাবে।