' মধু আনতে বাঘের মুখে' পঞ্চম শ্রেণী বাংলা হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর / madhu ante bagher mukhe class 5 bangla - school book solver

Pages

Friday, 2 May 2025

' মধু আনতে বাঘের মুখে' পঞ্চম শ্রেণী বাংলা হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর / madhu ante bagher mukhe class 5 bangla

 




পঞ্চম শ্রেণীর বাংংলা
■ মধু আনতে বাঘের মুখে ■
      শিবশঙ্কর মিত্র


■লেখক শিবশঙ্কর মিত্র পরিচিতি :-
★ শিবশঙ্কর মিত্রের জন্ম হয়১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে। তাঁর জন্মস্থান বাংলাদেশের খুলনা জেলার বেলফুলি গ্রামে। তিনি যা যা গ্রন্থ রচনা করেছেন তার সবটুকুই সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে। জীবনের বহুসময় তিনি সুন্দরবনে কাটিয়েছেন। তাঁর লেখার বিশেষ প্রিয় বিষয়ই ছিল ‘সুন্দরবন’। ভারত সরকার ১৯৬২ সালে তাঁকে তাঁর ‘সুন্দরবন’ বইটি লেখার জন্য শ্রেষ্ঠ শিশুসাহিত্যের পুরস্কার দেয়। সুন্দরবন নিয়ে লেখা তাঁর অন্যান্য বইগুলি হল—‘বিচিত্র এই সুন্দরবন',', 'বনবিবি’, ‘সুন্দরবনের আর্জান সর্দার' ইত্যাদি। ১৯৯২ সালে  তাঁর মৃত্যু হয়।


★ মধু আনতে বাঘের মুখে গল্পের বিষয়বস্তু আলোচনা :
সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে মৌচাক ভেঙে মধু সংগ্রহের জন্য তিনজন তিনজন যাত্রা শুরু করেছিল।তাদের মধ্যে ছিলেন  ধনাই, আর্জান ও কফিল ।অনেকে বলে মধু কাটতে মন্ত্র জানতে হয়। ধনাই মন্ত্র জানে। কিন্তু লোকে তার এই মন্ত্রের কথা বিশ্বাস করে না। বনের মধ্যে মধু যে কোথায় পাওয়া যাবে সেটা জানা যায়  মৌমাছি যেদিকে উড়ে যায় । সেদিকে লক্ষ রেখেই এগিয়ে গেলে মৌচাকের খোঁজ পাওয়া যায়।। সময়টা শীতের শেষ, তাই গাছে সুন্দর ফুলের বাহার। ডিঙি করে বহুদূর যাওয়ার পর মধুর সন্ধান পাওয়া গেলে একটার পর একটা মধুর চাক তারা কাটতে শুরু করেছিল। ধনার বাঁহাতে কাস্তে এবং চট, মাথায় মধুর কলশ, ডান হাতে মোটা লাঠি। গরান গাছে মধুর চাক দেখেই ধনাই অন্য দুজনকে ডাকতে লাগল কিন্তু পরে বুঝল তাতে মধু নেই। এভাবে বনের ভিতর নানান জায়গায় মধুর খোঁজ করতে লাগল তারা। ধনাই একটা সরু খাদের সামনে এসে উপস্থিত হল। কলশিটা মাথায় নিয়ে কী করে পার হবে একথা চিন্তা করতে করতে অনেক কষ্টে পার হওয়ার পর আর্জান ও কফিলকে ডাকতে যাবে এমন সময় সারা বন কেঁপে উঠল বাঘের গর্জনে। আর্জান ও কফিল ঝোপের আড়াল থেকে খুবই হতভম্ব হয়ে পড়ল, দুজনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। এদিকে বাঘটা ধনাইয়ের দিকে লক্ষ করে লাফ দিতেই পড়ল তবলা গাছের ওপর। বাঘের ল্যাজের ঝাপটে ধনাইয়ের মাথায় থাকা মধুর কলশিটা বাঘের মাথার ওপর পড়ে তার সারা মুখে-চোখে ছিটকে গেল। বাঘও।পড়ল ‘শিষের’ গর্তে। কলশি ভেঙে মুখে মধু ছিটকে পড়াতে বাঘ চোখমুখ কুঁচকে ফ‍্যোৎ ফ্যোৎ করতে করতে মুখ কুচকাতে লাগল।।

★ মধু আনতে বাঘের মুখে গল্পের নামকরণ সার্থকতা :-
তিনজন ব্যক্তি মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বনের মধ্যে কীভাবে বাঘের মুখে পড়েছিল সে সম্পর্কে লেখক তাঁর গল্পে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।  গল্পটির একদিকে মধু সংগ্রহের কাহিনী অন্যদিকে সুন্দরবনের বিচিত্র পরিবেশের বর্ণনাপাওয়া যায়।তাই আমার মতে  গল্পটির নামকরণ মধু আনতে বাঘের মুখে যথার্থ হয়েছে বলে মনে হয়।

উৎস-
পাঠ্যাংশটি শিবশঙ্কর মিত্রের 'সুন্দরবন সমগ্র' বই থেকে নেওয়া হয়েছে।


হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর
জেনে নিয়ে করো :

১ সুন্দরবনের যে অংশ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে, তা কোন্ দুটি জেলায়, মানচিত্র থেকে খুঁজে বের করো
উত্তর : সুন্দরবনের যে অংশ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে, তা হল উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার দক্ষিণ প্রান্ত ।

১.২ সুন্দরবন অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যে যে নদী বয়ে গেছে তাদের নামগুলি লেখো।
উত্তর : সুন্দরবন অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যেসব নদী বয়ে গেছে সেগুলি হল –ইছামতী, কালিন্দী, বড়তলা, পিয়ালী, ঠাকুরান, মাতলা, গোসাবা, হাড়িয়াভাঙা, সপ্তমুখী, রায়মঙ্গল প্রভৃতি।


১.৩ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ অঞ্চলটি কোন্ সমুদ্র-উপকূলে অবস্থিত তা মানচিত্র থেকে খুঁজে বের করো।
উত্তর : পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ অঞ্চলটি বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত।

১.৪ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের বৈশিষ্ট্য শিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নিয়ে লেখো।
উত্তর : ভারতের উপকূল ও বদ্বীপ অঞ্চল সমূহে যেখানে সূক্ষ্ম পলিমাটির সঞ্চয় ও লবণাক্ত জলের প্রভাব রয়েছে এবং প্রতিদিন দুবার জোয়ার ও ভাটা হয় সেখানেই ম্যানগ্রোভ অরণ্য দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য ঃ (১) গাছগুলি চিরসবুজ। (২)  ঠেসমূল দেখা যায়। (৩) এখানকার গাছগুলিতে  শ্বাসমূল দেখা যায়।


.গল্প থেকে তথ্য নিয়ে বাক্যগুলি পূর্ণ করো :
.........মধু কাটতে গিয়েছিল....…  .......।আর .......। মধু কাটতে...… ...... চাই। তিনজনের কাজ হলো ........ ....… ....... ......... ...... ....... ...
.......  বাঘ.....কে আক্রমণ করেছিল, কিন্তু সে নিজেই.....শিষের’ ভেতর।........কলশ.....মাথার ওপর।.......সারা মুখে........ছিটকে পড়ল।
উত্তর : বনের মধু কাটতে গিয়েছিল ধনাই, আর্জান আর কফিল। মধু কাটতে তিনজন লোক চাই। তিনজনের কাজ হল একজন চাক কাটে আর-একজন মৌমাছি তাড়ায়, তৃতীয়জন চাকের নীচে দাঁড়ায়। বাঘ ধনাইকে আক্রমণ করেছিল, কিন্তু সে নিজেই পড়ল গর্তের 'শিষের' ভেতর। মধুর কলশ ভাঙল মাথার ওপর। বাঘের সারা মুখে নাকে চোখে ছিটকে পড়ল।

(৩) এদের মধ্যে যে যে কাজটা করত :
ধনাই ঃ..
আর্জান :...
কফিল :...
উত্তর : ধনাই : চাক মৌমাছির কাটাত।
আর্জান : মৌমাছি তাড়াত।
কফিল : ধামা হাতে চাকের নীচে দাঁড়াত।

৪.  অর্থ লেখো : ধামা, গোঁয়ার্তুমি, চট, হাজির, ঝিরঝিরে।
উত্তর : ধামা-বেতের ঝুড়ি।শস্য রাখা বা মাপা হয়।
গোঁয়ার্তুমি – একই মনভাবে কাজে অচল থাকা। গোঁয়ারের ভাব বা কাজ।
চট - পাটের আঁশ থেকে তৈরি মোটা কাপড়। হাজির—উপস্থিত।
ঝিরঝিরে-  খুব হালকা ভাবে।

৫  বাক্যরচনা করো : নাস্তা, মৌচাক, রং, স্ফূর্তি, কলশ।

উত্তর : নাস্তা - অনেকে সকালে নাস্তা খায়।
মৌচাক- বটগাছে অনেক মৌচাক দেখা যায়।
রং- রামধনুর সাতটি রং আছে।
স্ফূর্তি- জালে মাছ পড়লে জেলের খুব স্ফূর্তি হয় ।
কলশ- কুমোররা মাটি দিয়ে কলশ বানায।

৬ কোটি কোন্ ধরনের শব্দ তা শব্দঝুড়ি থেকে বেছে নিয়ে লেখো ঃ

[শব্দঝুরি -এক, কাটে, আর , ভুল, পথ ,বিশ্বাস, গভীর, সকাল, ডাঙা,সরু, তারায় ,তার ,চিৎকার, মারল, সে, ওদের, ছোট ,কিন্তু ,ও ,বেজায় ,শক্তি, নিয়েছে]।]

উত্তর :
বিশেষ্য:- পথ, ভুল, বিশ্বাস ,শক্তি,, সকাল, চিৎকার, ডাঙা।

বিশেষণ :;- গোঁয়ার ,গভীর, এক ,বোঝায় ,ছোটো, শুরু, বেজায়।

সর্বনাম :; - ওদের ,আর, সে।

অব্যয়:- কিন্তু, ও , আর।

ক্রিয়া: - কাটে,,তারায় , মারল, নিয়েছে।


. নিম্নলিখিত শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দ লেখো : কাঁচা, ভরতি, তীক্ষ্ণ, দীর্ঘ, বোঝাই।
উত্তর : কাঁচা-পাকা।
ভরতি— ফাঁকা।
তীক্ষ্ণ—ভোঁতা।
দীর্ঘ—হ্রস্ব।
বোঝাই—খালি।

৮.  সমার্থক শব্দ লেখো : মৌমাছি, বাঘ, ফুল, বন, মাটি।
উত্তর : মৌমাছি—ভ্রমর।
বাঘ—ব্যাঘ্র, শার্দূল।
ফুল—পুষ্প।
বন—অরণ্য, অটবী।
মাটি—মৃত্তিকা ।

.  নীচের ঝুড়িতে বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর নাম দেওয়া রয়েছে। আমাদের সুন্দরবনে এদের মধ্যে কার কার দেখা মেলেঃ
[শব্দকুড়ি ঃ কুমির, গন্ডার, সিংহ, জিরাফ, ভাল্লুক, হরিণ, জেব্রা, ক্যাঙারু, জলহস্তী, লালপান্ডা, হাতি, কচ্ছপ, বুনোমহিষ,
শিয়াল, কাকড়া, বাঁদর, সাপ, শজারু, শূকর, হায়না, ওরাংওটাং, গোরিলা, রয়াল বেঙ্গল টাইগার।]
উত্তর : আমাদের সুন্দরবনে দেখা যায়—কুমির, হরিণ, কচ্ছপ, কাঁকড়া, সাপ।

১০.১ পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল কোথায় রয়েছে?”
উত্তর :পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল  রয়েছে- সুন্দরবনে।

১০.২ সুন্দরবনের খ্যাতি ও সমাদরের দুটি কারণ লেখো।

উত্তর : (১) বিশাল ও বিচিত্র গাছগুলি (২) সেখানকার নদনদী।

১০.৩ কোন কোন গাছে সাধারণত মৌচাক দেখা যায় ?
সুন্দরবনের সুমিষ্ট মধু বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।

উত্তর : সুন্দরবনে গেওয়া, কেওড়া, গরান ইত্যাদি গাছে মৌচাক দেখা যায়।

. ' স্তম্ভের সঙ্গে 'প স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :
উত্তর :
"ক" স্তম্ভ   >    "খ"তম্ভ
মধু    > মৌচাক
জলখাবার > নাস্তা
কাস্তে > কাটারি
ডিঙ্গি   >  ছোট নৌকা
শিষে   >   ছোট সরু খাদ
সাঁকো   >  সেতু

১২ গল্পের ঘটনাগুলি ক্রমানুসারে সাজিয়ে লেখো :
১২.১ মনের আনন্দে একটার পর একটা মধুর চাক কেটে চলেছে।
১২.২ আজান এক ধাৰা কাদা তুলে গোল করে পাকিয়ে নিয়ে ছুঁড়ে মারল চাক লক্ষ করে।
২২.৩  পেটপুরে নাস্তা খেয়ে বনে মধু কাটার জন্য তৈরি হল।
১২.৪ কয়েকটা মৌমাছি ওদের দিকে তাড়া করল।
১২.৫ ডিডি করে অনেক দূর বনের ভিতর গিয়ে তিনজনে ডাঙায় উঠেছে।

উত্তর : ১২.৩ পেটপুরে নাস্তা খেয়ে বনে মধু কাটার জন্য তৈরি হল।
১২.৫ ভিঙি করে অনেকদুর বনের ভিতর গিয়ে তিনজনে ডাঙায় উঠেছে।
১২.২ আজান এক থাবা কাদা তুলে গোল করে পাকিয়ে নিয়ে ছুঁড়ে মারল চাক লক্ষ করে।
১২.১ মনের আনন্দে একটার পর একটা মধুর চাক কেটে চলেছে।
১২.৪ কয়েকটা মৌমাছি ওদের দিকে তাড়া করল।

১৩.১ শিবশঙ্কর মিত্রের লেখালিখির প্রিয় বিষয় কোনটি?
উত্তর : শিবশঙ্কর মিত্রের লেখালিখির প্রিয় বিষয় ‘সুন্দরবন’।

১৩.২ কোন বইয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ শিশুসাহিত্যের পুরস্কার পান?
উত্তর : ‘সুন্দরবন' বইয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ শিশুসাহিত্যের পুরস্কার পান।
১৩.৩ সুন্দরবনকে নিয়ে লেখা তাঁর দুটি বইয়ের নাম লেখো
উত্তর : সুন্দরবনকে নিয়ে লেখা তাঁর দুটি বইয়ের নাম ‘বনবিবি', ‘বিচিত্র এই সুন্দরবন'।

১৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১৪.১ বসন্তকালে সুন্দরবনের দৃশ্যটি কেমন তা নিজের ভাষায় পাঁচটি বাক্যে লেখো
উত্তর : শীতের শেষে বসন্তে ঝিরঝিরে বসন্তের হাওয়া বইছে চারিদিকে।  সুন্দরবনে নানা গাছে ফুল ধরেছে। গরান গাছের ফুল খুব ছোটো। তার রং হলুদ। সকাল থেকেই ফুলের গন্ধে, হলুদ রঙে ও মৌমাছির গুঞ্জনে সারা বন মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে।

১৪.২ যদি তুমি কখনও সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাও, তবে কাকে কাকে সঙ্গে নেবে? জিনিসপত্রই বা কী কী নিয়ে যাবে?

উত্তর : সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গেলে আমি আরও দুজন বন্ধুকে সঙ্গে নেব।  মধু সংগ্রহ করতে গেলে, তিনজন অবশ্যই প্রয়োজন। এ ছাড়া জিনিসপত্রের মধ্যে চট, বড়ো ধামা, কলশ,কাস্তে, লম্বা বাঁশ,মশাল   ইত্যাদি নেবো।সঙ্গে খাবার জল নেবো।

১৪.৩ বাংলার বাঘ' নামে কে পরিচিত?
উত্তর : আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে 'বাংলার বাঘ' বলা হয়।

১৪.৪ বাঘাযতীন' নামে কে পরিচিত?
উত্তর : যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় 'বাঘাযতীন' নামে পরিচিত।

১৪.৫ সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ'—এই বিষয়ে পাঁচটি বাক্য লেখো।
উত্তর ঃ অনেকে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যায়। সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এই কাজটি  করতে তিনজন লাগে। একজন চট মুড়ি দিয়ে গাছে উঠে কাস্তে দিয়ে চাক কাটে। আর একজন লম্বা কাঁচা বাঁশের মাথায় মশাল ছেলে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়ায়। আর তৃতীয়জন একটা বড়ো ধামা হাতে নিয়ে চাকের নীচে দাঁড়ায়। এবং তার মধ্যে মধু সংগ্রহ করে।

১৪.৬ ধনাই কীসের মন্ত্র জানে?
উত্তর : ধনাই মৌচাক কাটার মন্ত্র জানে। বা মৌমাছিকে ভুল পথে চালিত করার মন্ত্র জানে।

১৪.৭  গরান গাছের ফুল দেখতে কেমন?
উত্তর ঃ গরান গাছের ফুল  হলুদ রং-এর ।এগুলি ছোটো ছোটো হয়।

১৪.৮ ডিঙি করে মধু সংগ্রহ করতে কে কে গিয়েছিল?
উত্তর : ডিঙি করে মধু সংগ্রহ করতে গিয়েছিল ধনাই, আর্জান এবং কফিল ।

১৪.৯ টাকা লেখো— 'ট্যাঙ্ক', শিষে'।
উত্তর ঃ ট্যাক—দুটো ছোটো নদী একসঙ্গে মিশে একটা ত্রিভুজ আকারের ভূখন্ড তৈরি করে। এই ধরনের ত্রিভুজ আকারের ভূমিরুপ কে ট্যাক বলা হয়।
শিষে—সুন্দরবনের জঙ্গলে একপ্রকার ছোটো সরু তিন-চার হাত বা তার বেশিও চওড়া খাদ দেখা যায় ।।একে শিষ বলে।

১৪.১০ মধুর চাক খুঁজে পাওয়ার পন্থাটি কী?
উত্তর ঃ পন্থাটি হল, মৌমাচি ফুল থেকে মধু নিয়ে কোনদিকে ছুটে চলেছে সেদিকে লক্ষ করে তার পিছনে পিছনে যাওয়া। তাহলে সহজে মধুর চাক খুঁজে পাওয়া যায়।

১৪-১১ কৃফিল ও আজানকে পেছনে ফিরে ডাকার সময় ধনাই কী দেখেছিল ?
উত্তর ঃ কফিল ও আজানকে পিছনে ফিরে ডাকার সময় ধনাই দেখেছিল বিকট হুংকারে একটা বাঘ তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে।

২৪-১২ বাঘটা শিষের ভিতর পড়ে গেল কীভাবে ?
উত্তর : ধনাইকে লক্ষ করে বাঘটা ঝাঁপ দিলেও ধনাইয়ের ওপর না পড়ে সে তবলা গাছের ওপর পড়েছিল। এরপর ধনাইকে ডিঙিয়ে বাঘের মাথা গাছে খুব জোরে ঠোক্কর খেতেই বাঘটা উলটে ধপাস করে শিষের ভিতর গিয়ে পড়ল।

১৪.১৩ ঘনাই কীভাবে বাঘের হাত থেকে বেঁচে গেল ?
উত্তর ঃ বাঘটা শিষের গর্তের ভিতর পড়তেই ধনাইয়ের মাথায় যে মধুর কলশিটা ছিল সেটা বাঘের মাথার ওপর ভেঙে পড়ল।
বাঘের সারা মুখে, চোখে মধু ছিটকে পড়ল। বাঘ ক্যোঁৎ ্যোৎ করতে লাগল। এভাবে ধনাই বাঘের হাত থেকে বেঁচে গেল।



হাতে কলমের বাইরে কিছু অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
এক কথায় উত্তর দাও
:

★ পশ্চিমবঙ্গের কোন্ অঞ্চলকে লেখক তাঁর গল্পের বিষয়বস্তু হিসেবে বিশেষ প্রাধান্য দেন ?
উত্তর : পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলকে লেখক তাঁর গল্পের বিষয়বস্তু হিসেবে বিশেষ প্রাধান্য দেন।

★ বনে যাওয়ার কথায় আর্জান কী করল?
উত্তর ; আর্জান এক পা রাজি হয়ে পেট পুরে নাস্তা করে নিল আর মধু কাটার জন্য তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিল।

★ মধু কাটতে কী কারণে কে কে গিয়েছিল?
উত্তর : মধু কাটতে তিনজন লোক চাই বলে ধনাই, আর্জান ও কফিল একসঙ্গে বেরিয়ে পড়ল।

★ মৌচাক কাটা লোক কীভাবে চাক  কাটে?
উত্তর : গাছ থেকে যে মৌচাক কাটা লোক চট মুড়ি দিয়ে গাছে উঠে কাস্তে দিয়ে চাক কাটে।

★ কে কীভাবে মৌমাছি তাড়ায় ?
উত্তর ঃ একজন লোক লম্বা কাঁচা বাঁশের মাথায় আগুন জ্বেলে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়ায়।

★  মৌচাক কাটার ব্যাপারে তৃতীয় ব্যক্তি কীভাবে সাহায্য করে?
উত্তর ঃ তৃতীয় জন একটা বড়ো ধামা হাতে নিয়ে গাছে থাকা চাকের নীচে দাঁড়ায়—যাতে চাক কাটা শুরু হলে সেগুলি মাটিতে না পড়ে ধামার মধ্যে পড়ে।

★ মৌমাছিকে ভুল পথে চালিত করতে না পারলে কী ঘটে?
উত্তর ঃ কৌশলে বা মন্ত্র দিয়ে ভুল পথে মৌমাছিকে চালিত করতে না পারলে একবার শত্রুর খোঁজ নিয়ে লম্বা লম্বা মৌমাছি ছেকে ধরে তাকে কামড়ে শেষ করে দেয়।

  অর্জন চাক লক্ষ করে কী ছুঁড়ে মেরেছিল ?
উত্তর : আর্জান চাক লক্ষ করে এক থাবা কাদা গোল করে পাকিয়ে নিয়ে ছুঁড়ে মেরেছিল।

★ বন কীভাবে মেতে ওঠে?
উত্তরঃ ফুলের গন্ধে, হলুদ রঙে আর মৌমাছির গুঞ্জনে বন মেতে উঠেছে।

  তাদের হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিল কেন?
উত্তর ঃ সুন্দরবনে যে জায়গাটায় তারা হাঁটছিল সেই বনে সব জায়গায় শূলো অর্থাৎ বাঁশের খুঁটির মতো বস্তু ছিল। সেই শূলো ভিঙিয়ে তার ফাঁকে ফাঁকে পা ফেলতে গিয়ে হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিল।

★ আরে! আর একটা চাক পেয়েছি।' বলে কখন কে চিৎকার করে উঠল ?
উত্তর : একটা ট্যাকের মাথায় দাঁড়িয়ে ওপাশে হেঁদো বনের ঝোপ। সামনে একটা গরান গাছে মধুর চাক দেখে ধনাই ওদের চিৎকার করে বলেছিল, 'আরে! আর একটা চাক পেয়েছি।”

★  ধনাইয়ের দেখানো মৌচাকটা লক্ষ করে আর্জান কী করল?
উত্তর ঃ ধনাই-মামুর কথায় বিশ্বাস না করে আর্জান মধু এখনও থাকতে পারে ভেবে চাক লক্ষ করে এক থাবা কাদা তুলে গোল করে পাকিয়ে ওপরে দিকে ছুঁড়ে মারল।

★  ধনাই সামনে একলা খানিকটা এগিয়ে গিয়ে কী দেখল?
উত্তর ঃ পিছন ফিরে না দেখে ধনাই সামনে একা খানিকটা এগিয়ে গিয়ে দেখল তার একটা ‘শিষে’–সরু খাদ অর্থাৎ গর্ত।
★ শিষে' দেখে ধনাই কোন সমস্যায় পড়ল ?
উত্তর : কল্পশ মাথায় দিয়ে ধনাই কেমন করে এই ‘শিষে’ অর্থাৎ খাদ পার হতে লাফ দেবে—এই হল তার সমস্যা।

★ কিভাবে শিষে পার হওয়ার জন্য ধনাই কোন্ উপায় বের করল?
উত্তর : শিষে পার হওয়ার জন্য ধনাই তার হাতের শক্ত মোটা লাঠিখানা সাঁকোর মতো করে এপার-ওপার ফেলে দিল।

★ ধনাই ‘শিষে’ পার হবে বলে তার হাতের মোটা লাঠিটা তার ওপর ফেলে কী করল ?
উত্তর : এরপর ধনাই সামনের বাঁশের মতো সরু তবলা গাছটা ধরে শিষে পার হওয়ার জন্য তৈরি হল।

★  দিয়ে পার হওয়ার মুহূর্তে ধনাই একবার পিছনে তাকানোর চেষ্টা করল কেন ?
উত্তর : ধনাই তার পিছনে আর্জান ও কফিলের সাড়া পাচ্ছে না কেন ভেবেই পিছনে একবার তাকানোর চেষ্টা করল।

★  কফিলের সাড়া না পেয়ে ধনাই তাদের ডাকতে গিয়ে কী ঘটল ?
উত্তর : আর্জান ও কফিলকে ডেকে পিছন ফিরে তাকানোর সুযোগ পেল না ধনাই, কারণ সেই মুহূর্তে তার ওপর একটা বাঘ ঝাঁকিয়ে পড়ল।

★  মাটির তাল চাকের কোণে লেগে কোথায় পড়েছিল?
উত্তর : মাটির তাল চাকের কোণে লেগে হেঁদো বনের ঝোপে পড়েছিল।

★জঙ্গলে: মৌচাক খুঁজবার পন্থা কি?
মৌচাক খুঁজবার পন্থা হল, মৌমাছি ফুল থেকে মধু নিয়ে কোন্ দিকে উড়ে চলেছে তা লক্ষ করা এবং তার পিছু পিছু সেদিকে যাওয়া।

★ যে তিনজন মৌচাক ভাঙতে গিয়েছিল তারা এদিক-ওদিক ছিটকে পড়ল কেন ?
উত্তর : ফুল থেকে মৌমাছি মধু নিয়ে কোন্ দিকে উড়ে যাচ্ছে তা লক্ষ করে তার পিছু পিছু যাওয়ার জন্য তারা তিনজনে তিন দিকে প্রায়ই এদিক-ওদিক ছিটকে পড়তে বাধ্য হল।

★  সামান্য দূরে ঝোপের আড়ালে থেকে আর্জান ও কফিল ধনাইয়ের ঘাড়ে বাঘ পড়েছে দেখে কী করল?
উত্তর : ধনাইয়ের ওপর বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়েছে দেখে ঝোপের আড়ালে আর্জান ও কফিল এমনই হতভম্ব হয়ে পড়ল যে তারা কথা বলতে পারল না, নড়তেও পারল না, আর পালাতেও পারল না।

★ ধনাইয়ের মাথার মধুর কলশটা উলটে কোথায় গিয়ে পড়ল।
উত্তর : লাফ দিতে গিয়ে বাঘটা যখন 'শিষের' গর্তের ভিতর পড়েছিল তখনই তার প্যাজের আগাতে ধনাইয়ের মাপার মধুর কলশিটা বাঘের মাথার ওপর ভেঙে পড়ল।

★  বাঘের মাথায় ময়ূর কাশশ ভেঙে পড়ার পর কী হল?
উত্তুর -বাঘের মাথার মধুর কলশ ভেঙে পড়লে তার সারা মুখে নাকে চোখে মধু ছিটকে পড়ল।

★  মৌমাছি তাড়ানোর মন্ত্র কে জানত?
উত্তর - ধনাই মৌমাছি তাড়ানোর মন্ত্র জানত‌

★ সুন্দরবনের মধু সংগ্রহের সেরা সময় কোনটি?
উত্তর : এপ্রিল আর মে মাস মধু সংগ্রহের সেরা সময়।

★ মধু কাটার জন্য কে সবার আগে যাচ্ছে, সে কী কী সঙ্গে নিয়েছে?
উত্তর : মধু কাটার জন্য সবার আগে ধনাই যাচ্ছে। তার বাঁ হাতে কাস্তে আর চট্ট। মাথায় মধুর কলশ। ডানহাতে একটা মোটা লাঠি।
★  তবলা গাছের ওপর কে পড়েছিল ?
উত্তর : বিকট হুংকার দিয়ে বাঘটা ধনাইকে লক্ষ করে ঝাঁপ দিলেও সে পড়েছিল তবলা গাছের ওপর যে গাছটা ধরে ধনাই গিয়ে পার হতে চেয়েছিল।

★  কে কোথায় দুর্দান্ত ঠোক্কর খেল?
“উত্তর ঃ বাঘ ঝাপিয়ে পড়তে গিয়ে ধনাইকে ডিঙিয়ে তার মাথাটা সেই তলা গাছটাতে ঠোক্কর খেল দুর্দান্ত বেগে।

★  তবলা গাছে ঠোক্কর খেয়ে বাঘের কী অবস্থা হল ?
উত্তর ঃ তবলা গাছে ঠোক্কর লেগে মাথায় আঘাত খেয়ে বাঘটা উলটে গিয়ে ধপাস করে পড়ল 'শিষের' মধ্যে।

★  বাঘের আক্রমণে ধনাইয়ের কী অবস্থা হল?
উত্তর : তবলা গাছটা বাঘের থাবা থেকে ধনাইকে বাঁচাল বটে, কিন্তু তাকে বাঘের ল্যাজের বাড়ি খেতে হল সপাং করে।

★ ধনাইয়ের মাথা থেকে মধুর কলশটা পড়ে গেল কেন?
উত্তর : বাঘটা তবলা গাছে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা খাওয়ার ফলে ধনাই বেঁচে গেল কিন্তু বাঘের লেজের আঘাত পেয়েই তার মাথা থেকে মধুর কলশটা পড়ে গেল।

★  ধনাই ডান হাতে মোটা লাঠি নিয়েছিল কেন?
উত্তর : ধনাই ডান হাতে মোটা লাঠি নিয়েছিল কারণ সারা বনে শূলো। শূলো পেরিয়ে তার ফাঁকে ফাঁকে পা ফেলাতে গিয়ে হোঁচট যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। ফলে তার মাথায় রাখা মধুভরতি কলশি পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই হোঁচট সামলাবার জন্য ধনাই একখানা লাঠি হাতে নিয়েছিল।

★  মাধু কাটতে তিনজন লোক চাই'—তিনজন কে কে? তাদের কী কী কাজ ছিল?
উত্তর : তিনজনেই অর্থাৎ, ধনাই, আর্জান ও কফিল সুন্দরবনের জালে মধু সংগ্রহ করতে ওস্তাদ।  চট মুড়ি দিয়ে একজন গাছে উঠে কাজে দিয়ে চা কাটে। আর এ
কাঁচা বাঁশের মাথায় মশাল জ্বেলে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়ায়। আর তৃতীয় জান একটা বড়ো ধামা হাতে নিয়ে দাঁৎড়ার, যাতে চাক কাটা শুরু হলে সেগুলি মাটিতে না পড়ে ধামার মধ্যেই পড়ে।

★ বাঘের হুংকার শুনে আর্জান ও কফিলের কী অবস্থা হয়েছিল?
উত্তর : বাঘের হুংকারে গোটা বন কেঁপে উঠেছিল থরথর করে। আর্জান ও কফিল ঝোপের আড়ালে গিয়েছিল। তাদের কথা বলার শক্তি ছিল না। নড়াচড়ারও শক্তি ছিল না। তারা পালাতে পারছিল না কোনোদিকে, আবার এগোতেও পারছিল না। ভয়ে তারা পাথরের মতো হয়ে গিয়েছিল।

★ ধনাই কীভাবে বাঘের হাত থেকে বেঁচে গেল ?
উত্তর : ধনাইকে লক্ষ করে ঝাঁপ দিলেও বাঘ গিয়ে পড়ল তবলা গাছের ওপর। ধনাইকে ডিঙিয়ে বাঘের মতো এই গাছটাতে দুর্দান্ত বেগে ঠোক্কর খেল। কিন্তু তাকে বাঘের লেজের বাড়ি খেতে হল সপাং করে, আর বাঘ গিয়ে পড়ল গর্তের ভিতর। কলস ভেঙে বাঘের মুখের ওপর মধু পড়তেই বাঘ চোখমুখ কুঁচকে বেজায় ক্ষোত্ হোং করতে

শব্দার্থঃ বন—অরণ্য।
নাস্তা – জলখাবার।
মশাল — ছোটো বা দণ্ডের মাথায় তেল মাখানো ন্যাকড়া, চট প্রভৃতি জড়ানো বড়ো বাতি বিশেষ। ধামা-শস্য রাখার জন্য বা মাপার জন্য বেতের ঝুড়ি।
গোঁয়ার—একগুঁয়ে, জেদি।
কলশ – কলশি, জল রাখার পাত্র।
গভীর—ঘন, অতি নীচু।
হাজির—উপস্থিত।
ঠিকানা—সন্ধান, খোঁজ।
গুঞ্জন — গুনগুন রব।
বসন্ত—একটি ঋতুর
নাম। স্ফুর্তি আনন্দ, হর্ষ।

+ বিপরীত শব্দ :
ছোটো বড়ো।
সকাল-সন্ধ্যা।
কাঁচা পাকা।
বড়ো ছোটো।
নীচে ওপরে।
শুরু—শেষ।
জানা অজানা।
ভুল- ঠিক।
শুভ্র মিত্র।
বিশ্বাস অবিশ্বাস।
গভীর-অগভীর।
হাজির — গরহাজির।
শীত-গ্রীষ্ম।
স্ফুর্তি—বিষাদ।
যাওয়ার  আসার।
উঠে নেমে ।
লম্বা বেঁটে।