পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে পঞ্চম শ্রেণি বাংলা হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের / pahariyav bashar sure class 5 bangla question answer
![]() |
পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা
■ পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে ■
লেখক পরিচিতি ঃ অজ্ঞাত
★ বিষয়বস্তু আলোচনা
হিমালয়ের পাদদেশে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে অবস্থিত । তিস্তা এবং তোর্সা নদী এই অঞ্চলের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। ওই নদীগুলির পাশাপাশি গারো, লেপচা, টোটো,মেচ, রাভা আদিম নানা জাতির বাস । এরা নাচ ও গানের মধ্যে এরা এদের নানান উৎসব-পার্বণ অনুষ্ঠানকে সুন্দরভাবে তুলে ধরে। সেইরকম একটি গানের মুলভাব হল—নতুন বছরের, নতুন জলে মাছ ধরতে যাবে তারা, জলের প্লাবনে নদীর দু-কুল প্লাবিত, কুরুয়া পাখি কেঁদে ফিরছে, বকেরা উড়ছে, মাছরাঙা মাছের সন্ধানে ঘুরছে চারদিক। বৃষ্টি কেমন করে আসে সে বিষয়ে লেপচারা একটি সুন্দর গল্প প্রচার করে।
একবার খরার সময় বৃষ্টি না হওয়ার জন্য মানুষ, পশু আর গাছপালার মৃত্যু ঘটল। সব জন্তুরা এক হয়ে ভাবতে লাগল কীভাবে বৃষ্টি হবে। এর মধ্যে ব্যাং ভাবল সে ভগবানের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করবে, তাদের প্রতি তিনি কেন অবহেলা করছেন।
এরপর ব্যাং একদিন সকালেই যাত্রা শুরু করল। পথে মৌমাছি, মোরগ, বাঘ এদের সঙ্গে দেখা হল ব্যাঙের।
তারাও সকলে ব্যাঙের সঙ্গে ভগবানের কাছে যেতে সম্মত হল। অবশেষে দীর্ঘ যাত্রার পর ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছ তারা দেখল সেখানে দেবতারা সবাই আনন্দে ব্যস্ত। সেখানে ভোজের উৎসব চলছিল।তখন রাগে উত্তেজিত হয়ে ভগবানের রক্ষীদের মুখে মৌমাছি হুল ফোটাল, বাঘ ভয় দেখাল, মোরগও ঝাপটা মারতে থাকল। ভগবান তাঁর মন্ত্রীদের তিরস্কার করতে লাগলেন। এভাবে ব্যাং জয়ী হয়ে আনন্দে পুকুরে ফিরে গেল। এবং ডাকতে শুরু করল। তখন থেকেই ব্যাং ডাকলে নাকি বৃষ্টি হয় এই প্রবাদ টি চালু আছে।
নামকরণ সার্থকতা :
বৃষ্টি কেমন কারে আসে সে বিষয়ে লেপচাদের একটি গল্প আছে। এই গল্পটির মধ্যে একদিকে যেমন পাহাড়ের সৌন্দর্যকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অন্যদিকে বৃষ্টি আসার কারণ গল্পটিকে সুনিপুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে আলোচ্য পাঠ্যাংশে। এসব কারণে গল্পটির নামকরণ " পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে' যথাযথ হয়েছে বলে আমার মনে হয় ।
হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর
১. নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ পশ্চিমবঙ্গের যে-কোনো একটি পাহাড়ের নাম লেখো।
উত্তর : পশ্চিমবঙ্গের যে-কোনো একটি পাহাড়ের নাম মামা ভাগ্নে।এটি বীরভূম জেলায়।
১.২ পাহাড়ের কথা বললেই কোন ছবি তোমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে ?
উত্তর ঃ পাহাড়ের কথা বললেই উচু উঁচু স্থানের গাছ পালার ছবি আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
১.৩ বর্ষায় মাছ ধরা নিয়ে তোমার অভিজ্ঞতার কথা কিংবা মাছ ধরা নিয়ে তোমার পড়া একটি গল্প বা ছড়া লেখো।
উত্তর : বর্ষাকালে আমার বাড়ির পিছনে বড়ো পুকুরটাতে অনেক জল হয়ে গিয়েছিল। কুকুরের যেদিকে নিচু জায়গা ছিল সেই দিকে অনেক মাছ বারের উপর লাফালাফি করছিল। বাবা কাকুরা পুকুরে পাড় কেটে জল বার করার চেষ্টা করছিল। যাতে পুকুরে মাছ না বেরিয়ে যায় তার জন্য সেখানে একটা জালপাতা হয়েছিল । আমি সেখানে বসে বসে মাছের খেলা দেখছিলাম মাঝে মাঝে জালটা তুলে ধরছিলাম আমার খুব ভালো লাগছিল ।
১.৪ বর্ষায় প্রকৃতির রূপ কেমন হয়? তোমার পাঠ্য বইতে বর্ষা নিয়ে আর কোন্ কোন্ লেখা রয়েছে?
উত্তর : বর্ষায় প্রকৃতি এক নতুনরূপে সেজে ওঠে। গ্রীষ্মের দাবদাহের পর বর্ষার নতুন জল পেয়ে গাছপালা, প্রকৃতি যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়। এইসময় আকাশ বেশির ভাগ সময় কালো মেঘে ঢাকা থাকে। নদী, পুকুর, রাস্তাঘাট জলে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। গ্রামের রাস্তাঘাট কাদায় ভরে যায় ফলে যাতায়াত করতে অসুবিধা হয়।
আমাদের পাঠ্য বইতে বর্ষা নিয়ে –‘ 'বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' লেখা রয়েছে।
২. বাক্য মেলাও :
ক
চল মাছ ধরি গিয়ে
মাছরাঙা বারবার
কুৰুয়া পাখি
বকেরা
ছাপিয়ে গিয়েছে।
উড়ছে সার বেঁধে
নতুন বছরের নতুন জলে
ছোঁ মেরেও পায়নি মাছ
নদীর কূল
উড়ে উড়ে কাঁদছে
উত্তর :
ক
চল মাছ ধরি গিয়ে নতুন বছরের নতুন জলে
মাছরাঙা বারবার
কুরুয়া পাখি
ছোঁ মেরেও পায়নি মাছ
উড়ে উড়ে কাঁদছে
উড়ছে সার বেঁধে
নদীর কুল
বকেরা
ছাপিয়ে গিয়েছে
৩. প্রদত্ত সূত্র অনুসারে গানটি থেকে গল্প তৈরি করো :
নতুন বছরের নতুন জলে আনন্দ করে
.। বর্ষার এই সুন্দর প্রকৃতিতে
• তারা কেউ। একদিকে মাছ না পাওয়া গেলে
মাঠ ঘাট, কত পাখি, যেমন
উত্তর : নতুন বছরের নতুন জলে আনন্দ করে সকলে মাছ ধরতে যেতে চাইছে। বর্ষার এই সুন্দর প্রকৃতিতে নদীর। জলে ছাপিয়ে গেছে। মাঠ ঘাট, কত পাখি, যেমন কুরুয়া, বক, মাছরাঙা তারা কেউ খাবার পাচ্ছে না। একদিকে নয় না পাওয়া গেলে তারা অন্যদিকে খাবারে সন্ধানে যাচ্ছে।
৪. কোনো উৎসব বা অনুষ্ঠানে তুমি খুব হৈচৈ আনন্দ করেছ আর মজা পেয়েছ। কী কী করলে সেই দিন ?
উত্তর- নিজে করো।
৫. মূল লেখাটা অন্য ভাষায়, কিন্তু নিজের ভাষায় তুমি পড়েছ আর দারুণ লেগেছে, এমন দুটি লেখার নাম করো :
উত্তর : এডোয়ার্ড লিয়ারের লিমেরিক, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের শকুন্তলা।
৬. একটি বৃষ্টির দিনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি লেখো :
উত্তর :
প্রিয় কাজল
তারিখ ঃ ১ জুন, ২০১৯
আশাকরি ভালো আছিস। অনেকদিন তোর কোনো চিঠি পাইনি। গতকাল আমাদের এখানে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে।
বেশ কয়েকদিন বাদে বৃষ্টি হওয়ার জন্য খুব ভালো লাগছিল। আমি গতকাল স্কুলে যাইনি। সারাদিন বাড়িতেই ছিলাম। বাড়িতে বসে বৃষ্টি দেখতে বেশ লাগছিল। বাড়ির সামনে বেশ কিছুটা জল জমেছিল, আমি তাতে কয়েকখানা কাগজের নৌকা তৈরি করে ছেড়েছিলাম। মা খিচুড়ি আর মাছ ভাজা করেছিলেন। তোর কথা খুব মনে পড়ছিল। যা হোক গতকাল বেশ আনন্দেই দিনটা কেটেছে।
সময় পেলে আমাদের বাড়ি আসিস। ভালো থাকিস। তুই আমার ভালোবাসা নিস, বড়োদের আমার প্রণাম জানাস।
কাজল ঘোষ
গ্রাম : বুমাপুর, পোঃ নীঈরকা
জেলা : হুগলি
ইতি- তপন
৭. এমন একটি ছবি আঁকো, যার মধ্যে কবিতার এই জিনিসগুলো থাকবে :
নদীর কূল, জল থৈথৈ মাঠ, বকের সারি, মাছরাঙা, ছেলেমেয়ের দল।
উত্তর :
৮. কথায় বলে 'মাছে ভাতে বাঙালি'। সেই বাঙালির পরিচয় গানটিতে কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তর : কথায় বলে ভাতে বাঙালি'। সেই বাঙালির পরিচয় আমরা গানটির মধ্যেও পেয়ে থাকি। বর্ষার সময় ওঠে। প্রতিটি বাঙালিই রায় মাথ করতে বা বাজার থেকে মাছ কিনতে ভালোবাসে। তাই যারা তারা ব্যস্ত হয়ে হয়ে পড়ে। নিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাল নবীর মুকুল দলে পরিপূর্ণ হয়ে বর্ষার নতুন জলে মাছ ধরতে
৮.১ বৃষ্টি কীভাবে প্রকৃতিকে কিভাবে সাজিয়ে তোলে?
উত্তর : বৃষ্টি প্রকৃতিকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলে। গ্রীষ্মের পর আসে বর্ষা। এই বর্ষার আলো যেন
ফিরে পায়। সমস্ত বুলো বৃষ্টি জলে দুরে প্রকৃতি এক রূপ ধারণ করে।
৮.২.খরা বলকে কি বোঝায়?
উত্তর : খরা বলকে বোঝায় অনাবৃষ্টি। এই অনাবৃষ্টির ফলে মাঠ-ঘাট সব শুকিয়ে যায়। চাষের জমি জলের অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে যায়। মানুষ, পশু, গাছপালা এদের প্রত্যেকেরই বেঁচে থাকা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে পড়ে।
৮.৩ অনাবৃষ্টির ফলে গল্পে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালার অবস্থা কেমন হয়েছিল?
উত্তর : অনাবৃষ্টিত ফলে গায়ে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা সবই প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
৮.৪ জগবানের প্রাসাদে পৌঁছে ব্যাং কী দেখল?
উত্তর : খ্যাং দেখবা সেখানে সকলে নানান ভোজ ও আনন্দ উৎসবে ব্যস্ত। সেখানে মন্ত্রীরাও বেশ মহানন্দে রয়েছে।
৮.৫ প্রাসাদের দৃশ্য দেখে ব্যাং রাগে উত্তেজিত হয়ে পড়ল কেন ?
উত্তর : প্রাসাদের সবাই খুব আনন্দে রয়েছে এই দৃশ্য দেখে ব্যাং খুব উত্তেজিত হয়ে পড়ল। কারণ তারা পৃথিবীতে খরার প্রকোপে অত্যান্ত করে দিন কাটাচ্ছে। ভগবান তাদের জন্য কোনো চিন্তাভাবনা করছেন না। তারা নানান ভোজ ও আনন্দ করছেন।
৮.৬ হাতে কীভাবে নাকাল হলো?
উত্তর : স্বাক্ষীদের ওপর রেগে গিয়ে মৌমাছিরা হুল ফোটাতে লাগল, বাঘ তাদের খেয়ে নেবে বলে ভয় দেখাল, মোরগ তারা ডানা নিয়ে ঝাপটা দিতে লাগল।
৮. শিক্ষক/ শিক্ষিকার সাহায্যে 'বৃষ্টি' নিয়ে প্রচলিত দুটি ছড়া ও দুটি গল্প সংগ্রহ করো।
রাত দিন
কি সাজে সেজেছ রানি।
আননে বিজলী হাসি,
আঁচলে কেতকী-ছটা,
শিল্পী নাচে, তোকে গায়,
বাসুরা আনন্দ ভরে
ভুলোচ্ছে রবির ছবি-
আকাশ গলিয়া পড়ে
উপাধিতে সাদা, পদ্মা,
সবাসে করেছে ে
দেখেছি অনেকতক
সকাল থেকেই বৃষ্টির পালা শুধু,
আকাশ হারানো জীবা
আজকেই, যেন শাসনে পণ
শোষ করে দেবে বৈশা
রিমঝিম করে অঝোরে ভাল যারা,
পৃথিবীতে যেন দিন নেই, রাত নেই,
স্বস্থিত কালো মেঘ-মায়ালোকে লীন।
পড়ার সাথি (৫ম) (বাংলা-১১
রাতদিন টুপ টুপ
এ কি সাজ অপরূপ!
গলায় কদম-হার,
এ আবার কি বাহার!
মেঘে গুরু গরজন,
কত করে আয়োজন!
ডুবেছে চাঁদিমা তারা,
তরল রজত ধারা।
পরাণে ধরে না সুখ,
তোমারি স্নেহের মুখ,
রাতদিন টুপ টুপ,
দেখিনি তো এত রূপ।
গল্প > অসুস্থ মায়ের পথ্যের জন্য রাধারানি বনফুলের মালা গেঁথে সেটি মাহেশের রথের মেলায় বিক্রি করতে গিয়েছিল। কিন্তু মেলায় অসম্ভব বৃষ্টি হওয়ার জন্য রাধারানির মালা কেউ কেনেনি। অন্ধকারে রাত্রে কাদার মধ্যে পারি
ফেরার পথে রাধারানির সঙ্গে এক ব্যক্তির পরিচয় হয়। ব্যক্তিটি একদিকে যেমন ছিলেন দয়ালু অন্যদিকে তেমনই উপকারী। তিনি রাধারানির সমস্ত দুঃখের কথা শুনেছিলেন এবং রাধারানিকে শুধুমাত্র যে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিলেন তা নয়, নিজে প্রয়োজন না থাকলেও কেবলমাত্র রাধারানির উপকার করার জন্য তার কাছ থেকে বনফুলের মালাটিও কিনেছিলেন।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
এক কথায় উত্তর দাও :
★ পাহাড়িয়া বর্ষার সুর' অবলম্বনে দুটি পাহাড়ি নদী এবং দুটি আদি জনগোষ্ঠীর নাম লেখো।
উত্তর : দুটি পাহাড়ি নদী হল তিস্তা ও তোর্সা এবং দুটি আদি জনগোষ্ঠী হল মেচ ও রাভা।
★ তিস্তা, তোর্সা, রঙ্গিত ইত্যাদি নদীগুলির পাশে বাস করা মানুষগুলির নাম লেখো।
উত্তর : এই নদীগুলির পাশে পাহাড়ি জঙ্গলের আঁকেবাঁকে বাস করে মেচ, গারো, রাভা, লেপচা আর টোটো নামের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ।
★ মেজ, রাভা, গারো, লেপচা, আর টোটোদের সঙ্গে কাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক?
উত্তর : ওপরের জনগোষ্ঠীর মানুষগুলি গোষ্ঠীগতভাবে বাস করলেও, গ্রামের আশপাশের সমাজের লোকেদের সঙ্গে ও রয়েছে এঁদের আত্মীয়তার সম্পর্ক।
★ পাহাড়ের কথা বললেই কোন্ ছবি তোমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে?
উত্তর : পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে হিমালয়ের অন্তর্গত দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার ছবি আমার সামনে ভেসে ওঠে।
★ ব্যাং ও মৌমাছির চলার পথে মোরগের সঙ্গে দেখা হলে সে কী বলল ?
উত্তর : ব্যাঙের কাছে মোরগ স্বর্গে যাওয়ার কথা শুনে রাগত স্বরে বলল, 'খরার ফলে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দানা ছাড়া বাঁচব কী করে? চলো, আমিও যাব।'
★ স্বর্গে যাওয়ার পথে ব্যাং, মৌমাছি আর মোরগের সঙ্গে কার কোথায় দেখা হল?
উত্তর : ভগবানের কাছে যাওয়ার পথে গভীর জঙ্গলের মধ্যে একটি ক্ষুধার্ত বাঘের সঙ্গে তাদের দেখা হল।
★ বাঘ যখন ভগবানের কাছে যাওয়ার কারণ ব্যাং, মৌমাছি আর মোরগের কাছে জানতে পারল তখন সে কী করল।
উত্তর : ভগবানের কাছে কেন যে ব্যাং, মৌমাছি আর মোরগ যাচ্ছে তা জানতে পেরে বাঘ তাদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেল, কারণ জীবজন্তুরা না খেয়ে মারা গেল সে একা বেঁচে থাকতে পারবে না।
★“অবশেষে দীর্ঘ যাত্রা শেষে তারা ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছাল”–কারা ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছাল ? পৌঁছে তারা কী দেখল?
উত্তর : ব্যাং, মৌমাছি, মুরগি আর বাঘ দীর্ঘ যাত্রা শেষে ভগবানের প্রাসাদে গিয়ে পৌঁছাল। সেখানে গিয়ে তারা নানান ভোজ ও আনন্দ-উৎসবে দেবতাদেরকে তাদের স্ত্রী আর মন্ত্রীদের মহানন্দ দেখতে পেল।
★ হিমালয়ের পাদদেশে' কথাটির মানে কী?
উত্তর : 'পাদদেশে' কথার মানে পায়ের নীচে বা পায়ের কাছে। এখানে হিমালয়ের পাদদেশে বলতে হিমালয় পাহাড়ের
নীচের অঞ্চলকে বোঝানো হয়েছে।
★ তরাই' শব্দটির প্রকৃত অর্থ কী?
উত্তর : তরাই শব্দের প্রকৃত অর্থ স্যাঁতসেঁতে। গল্পটিতে তরাই হল সারাবছর যে মাটিতে স্যাঁতসেঁতে ভাব বা সবুজ গাছের গোড়ায় উপযোগী জল জমা থাকে।
★ রোভা গোষ্ঠীর জীবনের আনন্দময় পর্ব কোনটি?
উত্তর : দল বেঁধে মাছ ধরতে যাওয়া রাভা জনগোষ্ঠীর জীবনে এক আনন্দময় পর্ব।
★ লেপচাদের কথার ভাঁড়ারে কী আছে?
উত্তর ঃ কেমন করে বৃষ্টি আসে এই নিয়ে লেপচাদের কথার ভাঁড়ারে একটি প্রচলিত গল্প আছে।
★ খরা' বলতে কী বোঝ?
উত্তর : সারাবছর বৃষ্টি না হলে পুকুর-ডোবা-নদী-নালা শুকিয়ে যায়, কোনো ফসল জন্মায় না, দেশ জুড়ে মানুষ ও পশুদের মধ্যে হাহাকার পড়ে যায়।
★ পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে' কাহিনিতে কাদের একটি করে নিজস্ব ভাষা আছে?
উত্তর : হিমালয়ের পাদদেশে নীচের সমভূমি পর্যন্ত নদীগুলির ধারে ধারে জঙ্গলের আঁকে বাঁকে মেচ, রাভা, গারো, লেপচা ও টোটো ইত্যাদি যেসব আদি জনগোষ্ঠী বসবাস করে তাদের প্রত্যেকের একটি করে নিজস্ব ভাষা আছে।
★ গানের সুরে আর নাচের ছন্দে কী ঘটে?
উত্তর : পাহাড়ি নদী তিস্তা, তোর্সা, রঙ্গিত ইত্যাদির ধারে ধারে বসবাসকারী মেচ, রাভা, লেপচা ইত্যাদি আদি জনগোষ্ঠীর
গানের সুরে, নাচের ছন্দে তাদের উৎসব-পার্বণ হয়ে ওঠে উজ্জ্বল।
★ পৃথিবীতে একবার খরা হয়ে কী ঘটল?
উত্তর ঃ একবার পৃথিবীতে এমন খরা হল যে মানুষ পশু গাছপালা সব ধ্বংস হয়ে গেল।
★ কোথায় যাওয়া অত্যন্ত ক্লান্তিকর?
উত্তর : ভগবান থাকে অনেক দূরে। আর তার প্রাসাদে যাওয়ার রাস্তা অত্যন্ত ক্লান্তিকর।
★ ব্যাং আর মৌমাছিতে কখন দেখা হল ?
উত্তর : ব্যাং ভগবানের কাছে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে মৌমাছির সাক্ষাৎ হল।
★ ব্যাং ও মৌমাছির প্রথম সাক্ষাতে তাদের মধ্যে কোন্ দুটি বাক্য বিনিময় হল ?
উত্তর : আলোচ্য গল্পটিতে প্রথম সাক্ষাৎ হওয়াতে ব্যাং-কে মৌমাছি জিজ্ঞাসা করল, 'কোথায় যাবে?' ব্যাং সঙ্গে সঙ্গে তার উত্তরে জানাল, 'ভগবানের কাছে। বড়ো খরা হে'।
★ ব্যাঙের কাছে মৌমাছি তার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে আবার ব্যাং-কে কী বলল ?
উত্তর : মৌমাছি বলল, 'বেশ চলো, আমিও সঙ্গে চলি। খরায় আমারও নাকাল। জল নেই, ফুলের আকাল, মধু পাব কোথায় !”
★ একসময়ে পৃথিবীতে খরার জন্য কারা কী পরিকল্পনা করল?
উত্তর : পৃথিবীর সব জন্তু এক হয়ে ভাবতে লাগল কীভাবে বৃষ্টি এলে খরার হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচানো যায়।
★ একদিন সকালবেলা সে যাত্রা শুরু করল'—এখানে কার যাত্রার কথা বলা হয়েছে এবং সে কোথায় যাচ্ছে?
উত্তর : এখানে ব্যাঙের যাত্রার কথা বলা হয়েছে। সে ভগবানের কাছে যাচ্ছে বৃষ্টি হওয়ার জন্য।
★ ব্যাং কী করবে ঠিক করল?
উত্তর ঃ ব্যাং ঠিক করল, ভগবানের কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করবে কেন সে তার সৃষ্টিকে এত অবহেলা করছে?
★ চারটি প্রাণীর স্বর্গে আগমনের প্রকৃত কারণ বুঝতে পেরে ভগবান কী করল?
উত্তর : চোরটি প্রাণী এসে কী কারণে এমন রাগ দেখাচ্ছে তা বুঝতে পেরে ভগবান তাড়াতাড়ি তার মন্ত্রীদের ডাকল এবং তাদের গাফিলতির জন্য তিরস্কার করল।
★ ভগবান তার মন্ত্রীদের তিরস্কার করল দেখে ব্যাং কী করল?
উত্তর : তার মন্ত্রীদের তিরস্কার করল দেখে ব্যাং গর্বিত ও উল্লসিত হয়ে সরবে অর্থাৎ গ্যাঙর গ্যাং করতে করতে তার সুখের আজানা পুকুরে ফিরে গেল।
★ পৃথিবীতে বৃষ্টি কখন নামে?
উত্তর : পৃথিবীতে যখন ব্যাং ডাকে তখন আকাশ থেকে বৃষ্টি নামে।
★ তরাই অঞ্চল কোথায় অবস্থিত? এর পাশ দিয়ে কী কী নদী বয়ে যায় ?
উত্তর-তরাই অঞ্চলের পাশ দিয়ে তিস্তা, তোর্সা, রঙ্গিত ইত্যাদি নদী বয়ে যায়।
উত্তর : হিমালয়ের পাদদেশে তরাই অঞ্চল অবস্থিত।
★ ভগবান মন্ত্রীদের কী করেছিল?
উত্তর : ভাবান ব্যান্ডের মুখে সব শুনে মন্ত্রীদের ডেকে পাঠিয়েছিল। এরপর তাদের গাফিলাতির জন্য তিরস্কার করেছিল।
★ কার প্রাসাদে যাওয়ার রাস্তা কেন ক্লান্তিকর ?
উত্তর : ভগবান থাকে অনেক দূরে, আর তার প্রাসাদে যাওয়ার রাস্তা অত্যন্ত ক্লান্তিকর।
★★ভগবানের প্রাসাদে দেবতাদের স্ত্রী ও মন্ত্রীদের মহানন্দের উৎসব দেখে কে কী করল ?
উত্তর ঃ পৃথিবীতে খরা হওয়ার কারণ যে স্বর্গে দেবতাদের শুধু উৎসবে মেতে থাকা এটা জানতে পেরে ব্যাং, মৌমাছি, মুরগি আর বাঘ খুব রেগে গিয়ে ভগবানের কাছে চলল।
★ ভগবান তার রক্ষীদের ডাকলে মৌমাছি কী করল ?
উত্তর ঃ ভগবান তার রক্ষীদের ডাকলে মৌমাছি তার হুল ফোটাতে লাগল রক্ষীদের মুখে।
★ রক্ষীদেরকে বাঘ খেয়ে নেবে বলে ভয় দেখাতে মুরগি কী করল ?
উত্তর : মৌমাছি ও বাঘের আক্রমণ দেখে গোলমালের মধ্যে মোরগও তার ডানা ঝাপটা মেরে রক্ষীদেরকে ভয় দেখাল।
★ কোন্ কোন্ বাংলা মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয়?
উত্তর : সাধারণত বাংলা আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হয়।
★ ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছে ব্যাং কী দেখল?
উত্তর : দীর্ঘ যাত্রা শেষে ব্যাং ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছল। দেখল, সেখানে সবাই ব্যস্ত নানান ভোজ ও আনন্দ-উৎসবে।
তাদের স্ত্রী ও মন্ত্রীদের মহানন্দ।
★ একবার খরার সময় বৃষ্টি না হওয়ার দরুন কী হয়েছিল?
উত্তর : একবার করার সময় বৃষ্টি না হওয়ার দরুন মানুষ, পশু, গাছপালা ধ্বংস হয়ে গেল। সব পশুরা ভাবতে লাগল কীভাবে পৃথিবীকে রক্ষা করা যায়। ব্যাং স্বেচ্ছায় ঠিক করল এর জন্য ভগবানের দ্বারস্থ হবে সে। তার কথা শুনে অন্যান্যে পশু, পতঙ্গ ব্যাঙের সঙ্গী হিসেবে ভগবানের কাছে যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করল। অবশেষে ভগবানের প্রাসাদে গিয়ে তারা বুঝেছিল রাজ্যে এত অভাব ও কষ্টের কারণ। সবশেষে ভগবান তাঁর মন্ত্রীদের শাস্তির ব্যবস্থা করলেন এবং ব্যাং তাদের জয়ের বার্তা নিয়ে পুকুরে নামতেই বৃষ্টি শুরু হল।
★ মৌমাছি কেন ব্যাঙের সঙ্গে তগবানের কাছে যেতে চেয়েছিল?
উত্তর : পৃথিবীতে খরা হওয়ার ফলে মৌমাছিরা খুব নাকাল হয়ে পড়েছিল। জল না থাকার জন্য ফুল ফুটছিল না। ফুল ছাড়া মৌমাছি মধু সংগ্রহ করবেই বা কোথা থেকে! তাই মৌমাছি মধু পান করার সুযোগ পাচ্ছিল না, মধু সংগ্রহ করতেও
পারছিল না। এজন্য মৌমাছি ভগবানের কাছে যেতে চেয়েছিল।
★ হিমালায়ের পাদদেশে বসবাসকারী আমাদের রাজ্যের আদি জনগোষ্ঠীর মানুষদের আনন্দময় পর্বের পরিচয় দাও
উত্তর : পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে পাহাড়ি নদী তিস্তা, তোর্সা, রঙ্গিত ইত্যাদি নদী সবুজ বনের গা দিয়ে বয়ে চলেছে। এই নদীগুলির আশপাশে, জঙ্গলের আঁকে বাঁকে মেচ, রাভা, গারো, লেপচা আর টোটো ইত্যাদি এ রাজ্যের আদি জনগোষ্ঠী
প্রায় আয়ার মতো সম্পর্ক বজায় রেখে অস্তরঙ্গ জীবনযাপন করে। এদের প্রত্যেকের একটি করে নিজস্ব ভাষা আছে, পারে। তারা মাছ ধরতে যাবার সময় মিলিত সুরে তাদের ভাষায় যে গান করে তার অর্থ হল, চল মাছ ধরি গিয়ে, নতুন গন্ধ আছে, গান আছে। এই আদি জনগোষ্ঠীর মধ্যে রাভা উপজাতির জীবনে দল বেঁধে মাছ ধরতে যাওয়া এক আনন্দময় বছরের নতুন জলে নদীর কূল ছাপিয়ে মাঠঘাট ভেসে গেছে। কয়া পাখি, বক, মাছরাঙা প্রভৃতি পাখিগুলি মাছ পাচ্ছে না। তাই, এদিকে মাছ নেই তো ওদিকে যাই চল।
★ রাভা গোষ্ঠীর গাওয়া গানের নিম্নলিখিত অংশটির অর্থ বলো।
কুয়া যা ক্রীড়াইতা/মাসা লাগা পুইমীন/না সানি লামাইতারে/ইবাই মাঞা হাওয়াই মানা/ফৈ লীগী লীয়েয়া।
উত্তর : কুড়ুয়া পাখি উড়ে উড়ে কাঁদছে, বকেরা উড়ছে সার বেঁধে, মাছরাঙা বারবার ছোঁ মেরেও পায়নি মাছ – সে কি খাবে এদিকে মাছ নেই তো ওদিকে চল।