ঘুমপাড়ানি ছড়া হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর চতুর্থ শ্রেণি বাংলা / ghum paranir chhara class 4 bangla question answer
![]() |
■ চতুর্থ শ্রেণীর বাংলা■
◆ ঘুমপাড়ানি ছড়া ◆
স্বপনবুড়ো
★ কবি স্বপনবুড়োর পরিচিতি:-
কবি স্বপনবুড়োর প্রকৃত নাম অখিলবন্ধু নিয়োগী। তাঁর জন্ম হয় ১৯০২ সালে তাঁর জন্ম হয়। “স্বপন বুড়ো” এই নামে তিনি পরিচিত। । ছোটদের জন্য এবং কিশোরদের জন্য তিনি অনেক ছড়া, কবিতা, গল্প, নাটক এবং গান লিখে গেছেন। ছাত্রাবস্থায় তাঁর লেখা 'বেপরোয়া' নামক উপন্যাসটি ‘শিশুসাথী' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।যুগান্তর পত্রিকায় তিনি 'ছোটোদের পাততাড়ি' সম্পাদনা করতেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা গুলি হল- ধন্যি ছেলে, ভুতুড়ে দেশ, বাবুই বাসা বোর্ডিং, প্রভৃতি। ১৯১৩ সালে তাঁর জীবনাবসান ঘটে ।
★ঘুমপাড়ানি ছড়া নামকরণ সার্থকতা।
ছোট্ট শিশুরা পুতুল খেলতে খেলতে ক্রমশ ঘুমের দেশের দ্বারপ্রান্তে চলে যায়। প্রকৃতি মা তাঁর সন্তানদের কোলে তুলে অত্যন্ত আদাবে যত্ন ঘুমপাড়ানি গান শোনাতে থাকেন। ঝিঝি, সন্ধ্যেফুল, সন্ধ্যাতারা, রাতের আকাশের একমাত্র বন্ধু চান— এরা সবাই তো প্রকৃতির সন্তান। এরাই ছড়া বলে, গান গেয়ে প্রকৃতি সন্তানদের ঘুম পাড়িয়ে দেয়। তাই আমার মতে কবিতার নামকরণ যথাযথ হয়েছে বলে মনে হয়।।
★ বিষয়বস্তু আলোচনা
সন্ধ্যা হয়েছে, কিন্তু ফুল তুলে নেওয়ার কেউ নেই। ঘুমের মাসি-পিসি চোখে ঘুমের কাজল বুলিয়ে দিতে
আসছে। রাত বাড়াছে, আর ঘুম কাছে আসছে। পুতুলখেলা ছেড়ে শিশুরা ঘুমিয়ে পড়ছে। সারা পৃথিবী ঘুমের দেশে পরিণত হয়েছে। পুতুল খেলা ছেড়ে এবার তারা ঘুমের দেশে প্রবেশ করেছে। চারদিকে পোকারা ছড়া শোনাচ্ছে। সেই ছড়া শুনে খোকা-খুকুরা ঘুমিয়ে পড়বে। চাঁদও আকাশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে সরে যাচ্ছে। ক্রমশ তার আলো ম্লান হয়ে যাচ্ছে; বোধহয় তাঁরও ঘুম এসেছে। সন্ধ্যাতারা সবার চোখে স্বপ্ন বুনে দিচ্ছে। কবি বলছেন প্রকৃতি না ছড়া বলতে বলতে সন্তানদের ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছেন। এবার সেও ঘুমিয়ে পড়বেন। ।
হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর
১. অখিল নিয়োগী শিশুদের কাছে কী নামে পরিচিত?
উঃ অখিল নিয়োগী শিশুদের কাছে ‘স্বপনবুড়ো' নামে পরিচিত।
২. তাঁর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।
উঃ তাঁর লেখা অন্যতম বই হল 'ধন্যি ছেলে'।
৩. ঠিক শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :
কা- ল, স- তা, - প ন, - তুল, খে - র।
৪. কবিতাটি পড়ে কত জোড়া অন্ত্যমিল খুঁজে পেয়েছ লেখো :
উঃ নয়ন -দুটি
মুঠি -মুঠি
গুটি- গুটি
মাসি-পিসি
দাঁতে -মিশি
পুতুল- যত
শুনবে -কত
আকাশ- কোণে
স্বপন - বোনে
৫. কবিতায় 'মিশি' শব্দটি একটি দ্রব্যের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই শব্দটিকে ক্রিয়াপদ হিসেবে ব্যবহার করে তুমি কতগুলি অর্থে প্রয়োগ করতে পারো লেখো।
উঃ ‘মিশি' শব্দটিকে ক্রিয়াপদে ব্যবহার করে :
মিশি (মিশ্রণ)— তেলে জলে মিশ্রণ করা অসম্ভব।
মিশি (মিলিত)— আমি এবং আমার বন্ধু প্রতিদিন খেলার মাঠে মিলিত হই।
মিশি (লীন বা বিলীন হয়ে যাওয়া) – আচ্ছা শ্রীরাম ধনু টা বিলীন হয়ে গেল।
৬. আমরা আমাদের প্রতিদিনের কথাবার্তায় এরকম শব্দবন্ধ ব্যবহার করে থাকি। যেমন : দুধের সর, গাছের পাতা, পুকুরের জল। তোমরা এরকম আরও কয়েকটি শব্দবন্ধ যা আমরা প্রতিদিনের কথাবার্তায় ব্যবহার করে থাকি, লেখো।
উঃ বেগুনের চারা, মাছের ঝোল, পুজোর জামা, জুতোর ফিতে, মায়ের কাপড় ,বোনের জামা, দাদুর চশমা, বাবার ব্যাগ হাতির শুঁড় ইত্যাদি।
৭. পরের পংক্তি লেখো :
◆ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি....
উঃ ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি-ওই যে দিয়ে দাঁতে মিশি।
◆ঘুমিয়ে পড়ে খেলাঘরের পুতুল যত
ঘুমিয়ে পড়ে খেলাঘরের পুতুল যত—রাত বাড়ে, আর ঝিঁঝির ছড়া শুনবে কত?
◆ চাঁদ যে বিমায় আকাশ কোণে
উত্তর-চাঁদ যে বিমায় আকাশ কোণে -সন্ধ্যাতারা স্বপন বোনে।
৮. “ছড়া” শব্দটি কবিতায় 'পদ্য' এই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এই অর্থ ছাড়া ‘ছড়া' শব্দটি তুমি আর কী কী অর্থে ব্যবহার করতে পারো, বাক্যে প্রয়োগ করে দেখাও।
উঃ ছড়া শব্দটির ভিন্ন প্রয়োগ :
ছড়া (গুচ্ছ)— আমি বাজার থেকে এক ছড়া কলা কিনে আনলাম।
ছড়া (কবিতা বলা) – তপন ভালো ছড়া বলতে পারে।
ছড়া (গুচ্ছ)— আমার জন্মদিনে আমার কাকা এক ছড়া ফুল উপহার দিল
ছড়া (ছিটিয়ে দেওয়া)– সকালে আমার মা দুয়ারে গোবরের ছড়া দেয়।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নোত্তর :
১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
★ (জেগে/ ঘুমে/ বসে) — যদি ঢুলেই আসে নয়ন দুটি।
উত্তর : ঘুমে।
★ সাঁঝের— (ফুল/ফল/পাতা) –আর কে কুড়োবে মুঠি মুঠি।
উত্তর : ফুল।
★ ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি ওই যে দিয়ে—(দাঁতে/হাতে/ পাতে) মিশি।
উত্তর : দাঁতে।
★ (ঘুমের আঁচল/কাজল/আলতা) – বুলিয়ে আসে গুটি গুটি।
উত্তর-কাজল
★ ঘুমিয়ে পড়ে খেলাঘরের (মানুষ /পুতুল/পাখি যত)।
উত্তর : পুতুল।
★ (দিন/রাত/সকাল বাড়ে) – আর ঝিঁঝির ছড়া শুনবে কত।
উত্তর : রাত।
অক্ষর সাজিয়ে শব্দ গঠন করো :
তুলপু, য়মাঝি, কাআশ, বেশুন, য়েড়িছ, নস্বপ,ইলেচু, ননয়, সাঁরঝে, বেড়োকু, জকাল, ঘখেরলা।
উত্তর ঃ
তুলপু, > পুতুল
য়মাঝি > ঝিমায়
কাআশ > আকাশ
বেশুন, > শুনবে
য়েড়িছ > ছড়িয়ে
নস্বপ > স্বপন
ইলেচু > ঢুলেই
ননয় > নয়ন,
সাঁরঝে। > সাঁঝের
বেড়োকু। > কুড়োবে
জকাল। > কাজল
ঘখেরলা > খেলাঘর
বিপরীত শব্দ ঃ সাঁঝ-সকাল।
গুটি গুটি – তাড়াতাড়ি।
বাড়ে—কমে।
শেষ —শুরু।
ছড়িয়ে — গুছিয়ে।