অ্যাডভেঞ্চার বর্ষায় হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর চতুর্থ শ্রেণী বাংলা / Adventure barshay class 4 bangla - school book solver

Pages

Friday, 18 April 2025

অ্যাডভেঞ্চার বর্ষায় হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর চতুর্থ শ্রেণী বাংলা / Adventure barshay class 4 bangla

 



চতুর্থ শ্রেণীর বাংংলা
★অ্যাডভেঞ্চার : বর্ষায় ★
   ■ মণীন্দ্র গুপ্ত ■


লেখক মণীন্দ্র গুপ্তের পরিচিতি :- মণীন্দ্র গুপ্ত জন্মগ্রহণ ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে।তিনি বাংলা সাহিত্যে একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি। তিনি গদ্য ও পদ্য উভয় ক্ষেত্রেই সমান পারদর্শী। ২০১১ সালে তিনি 'সাহিত্য অকাদেমি' সম্মানে সম্মানিত হন। অনেকদিন পরমা' নামে একটি পত্রিকার তিনি সম্পাদক ছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল ‘অক্ষয় মালবেরি”, “চাদের ওপিঠে ।

অ্যাডভেঞ্চার : বর্ষায়  গল্পের নামকরণ সার্থকতা:;
কথকরা পাঁচভাই-বোন হঠাৎ একদিন ঠিক করলেন ছোটোপিসিমার বাড়ি যাওয়ার পথের আনন্দ কথকের মনকে আজও প্লাবিত করে। দিগন্ত বিস্তৃত আকাশ, বাতাসের হু হু শব্দে বয়ে চলা, রামধনু, চারদিক বিস্তৃত পাটখেত, তারই মাঝে হঠাৎ প্রচণ্ড বৃষ্টির আবির্ভাব এবং একটি ছাতার তলায় পাঁচজনের আশ্রয় নিতে গিয়ে ছাতা উল্টে যাওয়ার ঘটনা । কথকরা এখানে নতুন করে প্রকৃতিকে আবিষ্কার করেছিলেন। তাই আমার মতে "অ্যাডভেঞ্চার : বর্ষায় ';নামকরণটি যথার্থ হয়েছে বলে মনে হয়।

অ্যাডভেঞ্চার : বর্ষায়  গল্পের  বিষয়বস্তু আলোচনা:  -
গল্পে কথকও গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ি এলে তারে সঙ্গে দেখা করতে তার ছোটো ও সেজোপিসিমা এবং চারভাই বোন আসে। ছোটোরা ঠিক করে দল বেঁধে এবাড়ি ওবাড়ি যাবে। সেইমতো ঠিক হয় তারা প্রথমে ছোটোপিসিমার বাড়ি তারপর সেজোপিসিমার বাড়ি যাবে।
ছোটোপিসিমার বাড়ি যাওয়ার পথে কথকরা প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখতে পেল। প্রকৃতির বাতাস, মাঠ, মুক্ত আকাশ তাদের ডাকতে লাগল। তারা পাখির মতো উড়তে লাগল।
গ্রীষ্মের ভয়ানক সূর্যের তাপ তারা অনুভব করতে পারল না, পাটখেতের ঠান্ডা বাতাস তাদের মন জুড়িয়ে দিল। এভাবে সন্ধ্যের সময় তারা পৌঁছে গেল ছোটোপিসিমার বাড়ি বাটাজোড় ।
ছোটোপিসিমার বাড়ি দুইদিন আদরে যত্নে থেকে তিনদিনের দিন তারা চলল সেজোপিসিমার বাড়ি চন্দ্রহার। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর হঠাৎ দুপুর বেলা বৃষ্টির আবির্ভাব ঘটল। একটি ছাতায় পাঁচজন আশ্রয় নিতে গিয়ে বাতাসে সেটাও উল্ট গেল। তারা যেতে যেতে গাছতলায় আশ্রয় নেওয়ার বৃথা চেষ্টা করতে লাগল। অবশেষে বেপরোয়া বৃষ্টিতে তারা বেড়িয়ে পড়ল। মাঠ, পুকুর, পাটখেত সব জলে একাকার হয়ে গেছে। এই সুযোগে পুকুরের মাছগুলো তাদের পছন্দমতো দেশে যাত্রা করেছে। কথকরা তাদের মধ্যে থেকে প্রায় দেড়-দুই কুড়ি কই মাছ ছাতায় ধরে নিল।
প্রায় দুইদিন কাটানোর পর কথকের আর মন টেকে না; এবার বাড়ির জন্য তার মন ব্যাকুল হয়ে উঠল। তাই দৈর্য না রাখতে পেরে সে রওনা দিল বাড়ির উদ্দেশ্যে একা এবং এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। প্রকৃতির কাছে সবাই যে খুব অসহায়, এই সত্য কথক আবিষ্কার করেন। শেষপর্যন্ত বাড়ি পৌঁছে শুকনো কাপড় দিয়ে গা মুছে, শুকনো জামা পড়ে, কাথা গায়ে দিয়ে কথক শরীর গরম করতে থাকে।


হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর

১. মণীন্দ্র গুপ্ত কোন পত্রিকা সম্পাদনা করতেন
উঃ মণীত গুপ্ত 'পরমা' পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।

২। তাঁর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর;- তাঁর লেখা দুটি বই হল-(১) 'চাঁদের ওপিঠে'।(২) অক্ষয় মালবেরি।

৩.অনধিক দুটি বাক্যে নীচের প্রথগুলির উত্তর দাও।

৩.১ এই গল্পের কথক কী সূত্রে বাড়ি এসেছিল।
উত্তর-এই গল্পের কথক গ্রীষ্মের ছুটি কাটাতে বাড়ি এসেছিল।

৩.২ খবর পেয়ে কারা কারা এলো?
উঃ খবর পেয়ে কথকের ছোটোপিসিমা আর মেজোপিসিমার চার ছেলেমেয়ে এলো।

৩.৩' টমবয়'' শব্দের অর্থ কী?
উঃ 'টমবয়' শব্দের অর্থ ডানপিটে।

৩.৪  কার নাকে নোলক ছিল।
উঃ সেজোপিসিমার  মেয়ের নাকে নোলক ছিল।

৩.৫ ভাই-বোনেরা মিলে কী ঠিক করল?
উত্তর- ভাই-বোনেরা মিলে ঠিক করল তারা দলবেঁধে ছোটোপিসিমার বাড়ি হয়ে সেজোপিসিমার বাড়ি বেড়াতে যাবে।

৩.৬  'ফেনসা ভাত' কী?
উঃ ফেন-সমেত ভাত। কে 'ফেনসা ভাত' বলা হয়।

৩.৭ অশ্বিনীকুমার দত্ত কে ছিলেন?
উঃ অশ্বিনীকুমার দত্ত বরিশালের গান্ধি' নামে খ্যাত ছিলেন। তিনি একজন বহুভাষাবিদ সুপণ্ডিত ছিলেন।

৩.৮ কথক এবং তার ভাই-বোনেরা সন্ধ্যার আগেই কোথায় গিয়ে পৌঁছেছিল?
উঃ কথক এবং তার ভাই-বোনেরা সন্ধ্যার আগেই তাদের ছোটোপিসিমার বাড়ি পৌঁছেছিল।

৩.৯.  ভাই-বোনের কাছে ছাতা কটা ছিল ?
উত্তর- ভাই-বোনের কাছে একটি ছাতা ছিল ।

৩.১০ বাড়ি ফিরে কথক কী করেছিল?
উত্তর -বাড়ি ফিরে কথক মাথা গা মুছে শুকনো কাপড় পরে, মোটা কাঁথা চাপা দিয়ে শীতের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

৪ । সন্ধি বিচ্ছেদ করো :
শান্তর - দেশ + অন্তর।
আষাঢ়াস্ত আষাঢ় + অস্ত।
সূর্যাস্ত - সূর্য + অস্ত।
অপরাহ্ন-অপ + অহ্ন।
ব্যাকুল - বি + ফুল।

৫। নীচের শব্দগুলি বিভিন্ন স্বাধীন বাক্যে ব্যবহার করো :
উত্তর-হইহই - বাড়ির সামনে ছেলেরা হইহই করছে।
পুটপাট - বাড়ির মধ্যে থেকে  শব্দ পুটপাট হচ্ছে।
টুবুটুবু - বর্ষার জল পেয়ে নদী কি টুবটুব করছে।
ছিপছিপে- স্কুলের মাস্টারমশাই  একদম চিপশিপে গডন।
ছটফট - কাঁচায় ভরা পাখিটা খিদের জ্বালায় ছটফট করছে ।
কড়কড়- বর্ষাকালে কড়কড় শব্দে বাজ পড়ে।

৬. লিঙ্গান্তর করো
সেজোপিসিমা - সেজোপিসেমশাই।
ন্যাড়া- নেড়ী।
ভাই-বোন।
প্রতিবেশী—প্রতিবেশিনী।

৭।নীচের বাক্যগুলির নিম্নরেখাঙ্কিত অংশে কোন্ বচনের ব্যবহার হয়েছে চিহ্নিত করো :
৭.১ সকালবেলা কেননা ভাত খেয়ে আমরা চার ভাই এক বোন বেরুলাম।
উত্তর:; (বহুবচন)

৭.২ ফোটো ছোটো শ্রোত এসে পড়ছে খালে। উত্তর:; (বহুবচন)
৭.৩ সেজোপিসিমার মেয়ে একটি পাকা টমবয়। উত্তর:; (একবচন)
৭.৪ পুকুরের আধ হাত লম্বা পুরোনো কই মাছেরা সার বেঁধে মাঠ পেরিয়ে চলেছে দেশান্তরে। (বহুবচন)
৭.৫  আমরা কালক্ষেপ না করে দেড়-দুই কুড়ি কই সেই উলটানো ছাতার মধ্যে ভরে ফেললাম। (বহুবচন)

৮। নীচের বাক্যগুলিতে কোন পুরুষের ব্যবহার হয়েছে লেখো
৮.১ আমরা সবাই দু-এক বছরের ছোটো বড়ো। উত্তর:;(উত্তম পুরুষ)

৮.২ সে গাছকোমর বেঁধে আমাদের আগে আগে গাছে উঠে যায়।
উত্তর:; (প্রথম পুরুষ)

৮.৩ পুরু কাথার মধ্যে সেঁধিয়ে গেলাম শরীর গরম করতে।
উত্তর:; (উত্তম পুরুষ)

৮.৪ বড়োমা ছোটোমা আমাকে ওই ঝড়জলের মধ্যে দেখে অবাক।
উত্তর:; (উত্তম পুরুষ)

৮.৫ চোর, ডাকাত, প্রতিবেশী এবং সস্তানেরা কেউ তার সঙ্গে এঁটে উঠতে পারে না।
উত্তর:; (প্রথম পুরুষ)

৯। নীচের রেখাঙ্কিত শব্দগুলির অর্থ এক রেখে অন্য শব্দ বসাও
৯.১ মারামারি বাঁধলে দঙ্গলে লড়ে।
উত্তর- মারামারি বাধলে জোটবেঁধে পড়ে।
৯.২ শেষে বিরক্ত হয়ে বেপরোয়া বৃষ্টির মধ্যেই হাঁটতে লাগলাম।
উত্তর- শেষে বিরক্ত হয়ে লাগামছাড়া বৃষ্টির মধ্যেই হাঁটতে লাগলাম।
৯.৩ পা বিনা আয়াসে অতি দ্রুত মাটি ছুঁয়ে ছুঁয়ে চলে যায়।
উত্তর-পা আপনাআপনি অতি দ্রুত মাটি ছুঁয়ে ছুঁয়ো চলে যায়।
৯.৪ এক পিসতুতো ভাই একটা তুক বলল।
উত্তর-এক পিসতুতো ভাই একটা কৌশল বলল।
৯.৫ বৃষ্টিও একটু ধরে এল।
উত্তর-বৃষ্টিও একটু কমে গেল।

১০। শব্দঝুড়ি থেকে ঠিক শব্দ বেছে শূন্যস্থান পুরণ করো
১০.১ পা বিনা আয়াসে অতি দ্রুত মাটি ছুঁয়ে ছুঁয়ে চলে যায়।
১০.২ আমি ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে হাঁটতে লাগলাম।
১০:৩ মাঠে মাঠে জল দাঁড়িয়ে গেছে।
১০.৪ মাইলদুয়েক যেতে না যেতে বৃষ্টি এলো।
১০.৫ সে গাছকোমর বেঁধে আমাদের আগে আগে গাছে উঠে যায়।

১১। আমি কাশীপুর, চাঁদপুর, ফতেপুর, বদরপুর, শিবপুর, অনুরাধাপুর – পৃথিবীর যত আছে লিখে পোড়ালাম।'
বিভিন্ন শব্দের শেষে '-পুর' শব্দটি যোগ করে বাংলার প্রচুর স্থান নাম তৈরি করা যায়। এখানে উল্লেখ
নেই এমন আরো অন্তত পাঁচটি তোমার চেনা জায়গার নাম লেখো যাদের নামের শেষে 'পুর' আছে।
এছাড়া আরও কিছু শব্দ শেষে বসে বিভিন্ন জায়গার নাম তৈরি হতে পারে। যেমন- ‘নগর', 'গঞ্জ', ‘হাটা’,
‘গাছা/গাছি', ‘তলা’, ‘গুড়ি’, ‘ডোবা/ডুবি’, ‘ডাঙা’প্রভৃতি। এই ধরনের একটি করে নাম দেওয়া থাকল, তুমি আরও কিছু নাম যোগ করে নীচের ছকটি সম্পূর্ণ করো :।

পুর করিমপুর ব্যারাকপুর  কানাইপুর।
নগর- ভোলানগর , বিকাশ নগর ,বিধাননগর, সুভাষনগর, কোন্নগর, শ্যামনগর।
গঞ্জ- বিল্লুগঞ্জ, রানিগঞ্জ, টালিগঞ্জ, বালিগঞ্জ, মেখলিগঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, তুফানগঞ্জ।
হাট / হাটা - পশুরাহাট মঙ্গলার হাট, হাজিরহাট, মাদারিহাট।
- গাছি / গাছিয়া - ফুলগাছিয়া, বরগাছিয়া।
- গ্রাম / গी-নবগ্রাম, নওগাঁ, বনগ্রাম, সুভাষগ্রা
-তলা-শিরিষতলা, ঝাউতলা, কদমতলা, নিমতলা, বাদামতলা।
-গুড়ি—শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, বিন্নাগুড়ি, কামাখ্যাগুড়ি।
-ডাঙা-তিলডাঙা, তালডাঙা, পটলডাঙা।
-ডোবা / ডুবি - গজলডোবা, ব্যাংডুবি।
- দহ/দা-শিলাইদহ, চাকদহ, মালদা।
পাড়া ঘোষপাড়া, কুমোরপাড়া, নপাড়া।
খালি বকখালি, পটুয়াখালি, ঝাড়খালি।
- মরিয়া – বেলঘরিয়া, তেখরিয়া।
পল্লি - পল্লি, উদয়নপল্লি।
-বাজার— ধোকা বাজার, চকবাজার, রানিবাজার, দীনবাজার, রাজাবাজার।

১২। নীচের বাক্যগুলির কর্তা খুঁজে বের করো ।
১২. ১ আমাদের দলটা এবার ছোটোপিসিমার বাড়ি হয়ে সেজোপিসিমার বাড়ি যাবে।

১২.২ পড়বেলায় আমরা অশ্বিনীকুমার দত্তের গ্রাম বাটাজোড় ছাড়ালাম।
১২.৩ সেটার হাওয়ার দমকে উপটে গেল।

১২.৪ আমি হনহন করে পা চালালাম।

১২.৫ (আমি) বেশ হই হই করে পথ চলছিলাম। (কর্তা উহা আছে)

১৩ । নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো ঃ
১৩.১ ছোটোপিসিমার বাড়ি যাওয়ার পথের বর্ণনা করো।
উঃ কথকরা পাঁচ ভাই-বোন মিলে ছোটোপিসিমার বাড়ি যাওয়ার পথে মাটির উঁচু পথের দু-পাশে ছোটো-বড়ো নানা উচ্চতায় পাটখেত দেখেছিলেন, সময়টা গ্রীষ্মকাল হলেও পাটখেতের হাওয়া পরিবেশকে আরামদায়ক করে ভুলেছিল।

১৩.২ বড়োপিসিমার বাড়ি যাওয়ার পথে ঝড়-বৃষ্টি এবং কই মাছ ধরার বিবরণ দাও।
উঃ ছোটোপিসিমার বাড়ি থেকে সেজোপিসিমার বাড়ি যাওয়ার পথে হঠাৎ দুপুরবেলা আকাশ মেঘে ঢেকে গেল এবং বিদ্যুৎ চমকাতে লাগল। তারপর শুরু হল প্রবল বৃষ্টি। কথকদের একটিমাত্র ছাতা ছিল। প্রবল হাওয়ায় তাও উলটে গেল। শেষ
পর্যন্ত তারা বিরক্ত হয়ে বৃষ্টির মধ্যেই হাঁটতে লাগল। প্রচণ্ড বৃষ্টিতে মাঠ-ঘাট জলে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। পুকুর-ডোবা রাস্তা কিছুই আলাদা করা যাচ্ছিল না। এই সুযোগে পুকরের আধহাত লম্বা পুরোনো কই মাছের দল সার বেঁধে পালিয়ে যাচ্ছিল। কথকরা তাদের হাতের ভাঙা ছাতা দিয়ে প্রায় দেড়-দুই কুড়ি কই ধরেছিল।

১৩.৩ বড়োপিসিমার বাড়ি থেকে ফেরার সময় ঝড়-বৃষ্টিতে ফাঁকা মাঠে কথকের যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তা লেখো।
উঃ কথকের বড়োপিসিমার বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি ফেরার সময় পথঘাট ছিল জলে ভেজা চারদিক বৃষ্টিভেজা। পথ জনহীন,
চারদিকে কেবল পাটখেত। ফাঁকামাঠে বৃষ্টির ফোঁটা যেন পেরেক গাঁথা থ্যাবড়া হাতের চড়। কিন্তু কথকের আনন্দের বিষয়—ঝড়ের ধাক্কা তাকে তিনগুণ বেগে সামনের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। বাতাসের গর্জন, বাজ পড়ার কড়কড় শব্দে, শীতে
ভয়ে কথক কাঁপতে লাগল। প্রকৃতির এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখে কথকের মনে হয়েছিল প্রকৃতির কাছে ধরিত্রি মা অসহায়, একাকী।

১৩.৪ পাঠ্যাংশের নামকরণে ‘অ্যাডভেঞ্চার' শব্দটির ব্যবহার কতটা যথাযথ হয়েছে, মতামত দাও।
উঃ কথকরা পাঁচভাই-বোন হঠাৎ একদিন ঠিক করলেন ছোটোপিসিমার বাড়ি যাওয়ার পথের আনন্দ কথকের মনকে আজও প্লাবিত করে। দিগন্ত বিস্তৃত আকাশ, বাতাসের হু হু শব্দে বয়ে চলা, রামধনু, চারদিক বিস্তৃত পাটখেত, তারই মাঝে হঠাৎ প্রচণ্ড বৃষ্টির আবির্ভাব এবং একটি ছাতার তলায় পাঁচজনের আশ্রয় নিতে গিয়ে ছাতা উল্টে যাওয়ার ঘটনা । কথকরা এখানে নতুন করে প্রকৃতিকে আবিষ্কার করেছিলেন।

১৩..৫ কোনো একটি বৃষ্টিমুখর দিনের কথা লেখো।
উঃ বর্ষার রথের দিন সকাল থেকেই বৃষ্টি পড়ছিল। কোন কিছু ভাল লাগছিল না। আকাশ কালো মেঘে ঢাকা ছিল। কখনো গুড়ি গুড়ি কখনো ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছিল। মাঝে মাঝে ছাতা মাথায় দিয়ে আমি রাস্তায় বের হয়েছিলাম। রাস্তা দুদিক জলে ভরে গিয়েছিল। দু একজন পাড়ার লোকেরা ছাতা মাথায় দিয়ে সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল আমি তাদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। বাড়িতে মা গরম গরম ভাত রান্না করছিল। মাছ ভাজা দিয়ে দুপুরে ভাত খেলাম। ভাত খাওয়ার পর ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামলো। সেই বৃষ্টি সারারাত ধরে চলল আমি কখন যে ঠাকুমার কোলে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম মনে নেই। হঠাৎ রাত্রি বজ্রপাতের শব্দে আমার ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল ‌। পরদিন সকালে উঠে দেখি চারিদিক জলে ভরে গেছে। আমাদের বাড়িতেও জল ঢুকেছিল।


১৪ নীচের দুটি ছবির মধ্যে ছয়টি অমিল খুঁজে বের করো ঃ

১৪.১ মেঘ-নীচের ছবিতে একখন্ড মেঘ নেই।

১৪.২ ঘুড়ি—ওপরের ছবির ঘুড়িটি রঙহীন।

১৪.৩ জামা—নীচের ছবির বসে থাকা মেয়েটির জামা নকশাহীন।

১৪.৪ ফুল-নীচের ছবিতে একটি ফুল নেই।

১৪.৫ পাখি-নীচের ছবিতে গাছের ওপরে পাখি নেই।

১৪.৬ বল - নীচের ছবিতে বলটি হালকা রঙের।

১৫। নীচের সূত্রগুলি কাজে লাগিয়ে শব্দছকটি পূরণ করো :

এর উত্তর দেয়া আছে নিচেতেই ছবিগুলো দেখে বুঝে নাও



১৬। মনে করো এই পাঠ্যাংশের অ্যাডভেঞ্চারের তুমি-ই মূল চরিত্র। পাঠ-অনুসরণে নীচের ছবিটির বিভিন্ন স্থানে নির্দিষ্ট খোপে স্বাধীন ও যথাযথ বাক্য লিখে একটি গল্পের চেহারা দাও
উঃ আমরা চার ভাইবোন মিলে বাটাজোর গ্রাম থেকে মামার বাড়ি চন্দ্রহার  যাবো বলে ঠিক করলাম।
(১) সকালবেলা আমাদের বাড়ি বাটাজোড় গ্রাম থেকে রওনা হলাম মামাবাড়ির উদ্দেশ্যে।
(২) একটা নদী পেরিয়ে যখন পৌঁছলাম, তখন সন্ধ্যে হয়ে গেছে, দেখে দিদিমা হ্যারিকেন নিয়ে এগিয়ে এলো।
(৩) সেখানে দুদিন অনেক যত্নে আদরে থেকে তারপর রওনা দিলাম চন্দ্রহারের দিকে। ভালোই যাচ্ছিলাম।
(৩) অনেকটা পথ যাওয়ার পর হঠাৎ আকাশ কালো করে ঝঝম্ করে বৃষ্টি নামল। আমরা গাছের তলায় দাঁড়াবার চেষ্টা করলাম, কিন্তু এতো জোরে বৃষ্টি হচ্ছিল যে আমরা ভিজেই যাচ্ছিলাম। বৃষ্টিতে ভিজে সবাই মিলে খুব আনন্দ করছিলাম
(৪) আমাদের কাছে একটা মাত্র ছাতা ছিল, কিন্তু সবাই মিলে টানাটানি করায় সেটাও ভেঙে গেল। অগত্যা বৃষ্টিতে ভিজে পৌঁছলাম চন্দ্রহারে । তখন বৃষ্টির জলে সব পরিপূর্ণ। মাছের দল যেন আজ ছাড়া পেয়েছে, তাই দল বেঁধে পুকুর ছেড়ে অন্য কোথাও যাবে বলে পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আনন্দ করে সেই মাছগুলো দেখছিলাম ধরার চেষ্টা করছিলাম ।
(৫) এই ভাবে বেশ কয়েকদিন থাকার পর বাড়ির জন্য মন কেমন করতে লাগল। বেড়িয়ে পড়লাম বৃষ্টি মাথায় নিয়ে। এবার আমি একা। তাই একটু ভয় হচ্ছিল। যত এগোচ্ছি, তত মনে হচ্ছে পিছিয়ে যাচ্ছি।
(৬) অবশেষে বাড়ির সামনে সাঁকোটার কাছে এসে মনে হল এবার বাড়ি এসেছি। ঘরে ঢুকে মায়ের হাতে গরম ভাত খেয়ে কাঁথা চাপা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরদিন সকালে সূর্যমামাও দেখা দিল।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :


★ আমাদের প্রত্যেকের শরীর- (লঘু দীর্ঘ / ভারী)।
উত্তর : লঘু।

★ মাটির উঁচু পথের দু-পাশের নানা উচ্চতার (পাটখেত/  ধানখেত গমখেত)।
উত্তর : পাটখেত
★ (এ্কশোটা / দুশোটা। / তিনাশোটা)—পুর কাগজে লিখে পোড়ালে  বৃষ্টি থেমে যায়।
উত্তর : একশোটা।

★ কথক একা এবং ছোটো ভাইকে নিয়ে / বোনকে নিয়ে)—বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন
উত্তর : কথক একা।

এক কথায় উত্তর দাও :

★ কথকের ছোটোপিসিমার বাড়ি কোথায়।
উত্তর : বাটাজোড়।

★  চন্দ্রহার কার বাড়ি ?
উত্তর ঃ সেজোপিসিমার বাড়ি।

★ কথকরা কতটা কইমাছ ধরেছিল।
উত্তর : দেড়-দুই কুড়ি ।

★ কথকের পিঠে কে চড় মারছিল?
উত্তর : বৃষ্টির বড়ো বড়ো ফোঁটা।
★  কথকের বাড়ির সামনের পুলটির নামকী?
উত্তর : চাদসির লোহার পুল।
★ (জোর ছুটিতে/বর্ষার ছুটিতে গ্রীষ্মের ছুটিতে)—বাড়ি এসেছি।
উত্তর : গ্রীষ্মের ছুটিতে।
★  আর সেজো পিসিমা - (চার/পাঁচ/ছয় ছেলেমেয়ে) তাদের দুই দূর গ্রামের বাড়ি থেকে একসাে
উত্তর :
★  মোজাপিডিয়ার মেয়ের (নাকে নোলক/কালে দুল/হাতে বালা)।
উত্তর : নাকে নোলক।

★ শুনো -সুর্যের আলোর/ চাঁদের আলোর রামধনুর মতো) আমাদের ফুর্তি ঠিকরোচ্ছে। 

উত্তর : রামধনুর মতো।

★  কথক লুকিয়ে একা বের হওয়ার পর কীভাবে বাড়ি পৌঁছেছিলেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।
উত্তর : কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি অবিরত চলছে। কথকের মন ছটফট করছে নিজের বাড়ি যাওয়ার জন্য। বৃষ্টি যেই একটু ধরেছে অমনি কথক সবচেয়ে ছোটো ভাইঝিকে বলে লুকিয়ে বেরিয়ে পড়েন। কথক বাইরে বেরিয়ে দেখেন পথঘাট সব জলে ভেজা আর বাতাসে জলকণা। মনে হয় এক্ষুনি আবার বৃষ্টি আসবে। পথ একেবারে জনহীন। রাস্তায়, মাঠে গোরু-বাছুর একটাও নেই। চারদিকে তাকালে দেখা যায় শুধু পাটখেত। মাইল দুয়েক যেতে না যেতেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এলো। এখনও প্রায় দশ ক্রোশ পথ যেতে হবে। কথক না থেমে চলতে লাগলেন। বড়ো বড়ো ফোঁটায় বৃষ্টি পড়ছে। বাতাসের বেগ জলের রেখাকে খুড়ে খুড়ে ধোঁয়া করে দিচ্ছে। কথকের পিঠের ওপরে বৃষ্টি তার পেরেক গাঁথা থ্যাবড়া হাতে চড়ের পর চড় মারছে। ফলে কথককে ঝড়ের ধাক্কা তিনগুণ বেগে ঠেলে নিয়ে যেতে লাগল সামনে। শরীরটাকে ঠিক রেখে চললেন। পা বিনা আয়াসে অতি দ্রুত মাটি ছুঁয়ে এগোতে লাগল। প্রায় দৌড়তে দৌড়তে চাদসির লোহার পুলের কাছে এসে পৌঁছলেন। এবার বৃষ্টি একটু ধরে এলো। ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে কথক বাড়িতে পৌঁছলেন। মেঘলোকে তখন রক্তহীন শেষ সূর্যাস্ত লেখা।

★  কথক লুকিয়ে একা বের হওয়ার পর কীভাবে বাড়ি পৌঁছেছিলেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।
উত্তর : কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি অবিরত চলছে। কথকের মন ছটফট করছে নিজের বাড়ি যাওয়ার জন্য। বৃষ্টি যেই একটু ধরেছে অমনি কথক সবচেয়ে ছোটো ভাইঝিকে বলে লুকিয়ে বেরিয়ে পড়েন। কথক বাইরে বেরিয়ে দেখেন পথঘাট সব জলে ভেজা আর বাতাসে জলকণা। মনে হয় এক্ষুনি আবার বৃষ্টি আসবে। পথ একেবারে জনহীন। রাস্তায়, মাঠে গোরু-বাছুর একটাও নেই। চারদিকে তাকালে দেখা যায় শুধু পাটখেত। মাইল দুয়েক যেতে না যেতেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এলো। এখনও প্রায় দশ ক্রোশ পথ যেতে হবে। কথক না থেমে চলতে লাগলেন। বড়ো বড়ো ফোঁটায় বৃষ্টি পড়ছে। বাতাসের বেগ জলের রেখাকে খুড়ে খুড়ে ধোঁয়া করে দিচ্ছে। কথকের পিঠের ওপরে বৃষ্টি তার পেরেক গাঁথা থ্যাবড়া হাতে চড়ের পর চড় মারছে। ফলে কথককে ঝড়ের ধাক্কা তিনগুণ বেগে ঠেলে নিয়ে যেতে লাগল সামনে। শরীরটাকে ঠিক রেখে চললেন। পা বিনা আয়াসে অতি দ্রুত মাটি ছুঁয়ে এগোতে লাগল। প্রায় দৌড়তে দৌড়তে চাদসির লোহার পুলের কাছে এসে পৌঁছলেন। এবার বৃষ্টি একটু ধরে এলো। ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে কথক বাড়িতে পৌঁছলেন। মেঘলোকে তখন রক্তহীন শেষ সূর্যাস্ত লেখা।

★ বৃষ্টি কমার তুর্কটা কী ছিল ?
উত্তর : স্থানের নামের পিছনে 'পুর' যোগ করে একশোবার লিখে আগুনে পোড়ালে বৃষ্টি থেমে যায়।

★   ছোটোপিসিমাকে কারা ভয় পেত?
উত্তর : চোর, ডাকাত, প্রতিবেশী এমনকি তার সন্তানরাও ভয় পেত।