বাংলা বৃত্তি পরীক্ষা প্রশ্ন উত্তর ২০২৪ চতুর্থ শ্রেণী / Class r brritti porikha 2024 question answer - school book solver

Pages

Wednesday, 16 April 2025

বাংলা বৃত্তি পরীক্ষা প্রশ্ন উত্তর ২০২৪ চতুর্থ শ্রেণী / Class r brritti porikha 2024 question answer

  





প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন পর্ষদ, পঃ বঃ পরিচালিত
প্রাথমিক শেষ পরীক্ষা (বৃত্তি পরীক্ষা)
পূর্ণমান - ১০০
সময় : ২ ঘণ্টা ৩০ মিঃ


১। যে কোন চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও :

ক) “লুসাই পাহাড়ের যে জায়গায় আমার কাজ ছিল সে বড়ো ভয়ংকর জায়গা ।"
উদ্ধৃত অংশটির লেখক কে? লুসাই পাহাড়ের বিস্তার কতখানি জায়গা নিয়ে? কেন এই পাহাড়কে ভয়ংকর জায়গা বলা হয়েছে কেন?
কোন কোন পশুর তাজা পাঞ্জা দেখা গিয়েছিল। বনের মধ্যে পথ কিভাবে তৈরী করা হয়েছিল? ১+১+১+২+৩=৮

উত্তর- ◆উদ্ধৃত অংশটির লেখক হলেন- প্রমদা রঞ্জন রায়।
●লুসাই পাহাড়ের বিস্তার - সাড়ে -ছশো সাতশো  বর্গমাইল।
এই পাহাড়কে ভয়ংকর জায়গা বলা হয়েছে কারণ- লুসাই পাহাড়ে ঘনবন ছাড়া মানুষের নাম গন্ধ নেই। আছে শুধু জানুয়ারির কিলিবিলি। সন্ধ্যার পর পা ফেলতে গেলে মনে হয় এই বুঝি বাঘই মারালাম। তাছাড়া বেলা নটা দশটার আগে সূর্য দেখা যায় না। এক এক জায়গায় এমনই ঘন জঙ্গল যে ঠিক মনে হয় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে।
◆ হাতি, গন্ডার, বাঘ, হরিণ ইত্যাদি পশুর  তাজা পাত্তা দেখা গিয়েছিল।
◆ ১০-১২ জন লুসায় প্রথমে বন কেটে পথ তৈরি। করে তারপর সেই পথ ধরে অনেকে কষ্ট করে এগিয়ে যেতে হয়।। লেখক সহ চারজনে গাছে দাগ কেটে অন্য সকলে আধ-মাইল বা বেশি কিছু আগে আগে যায়। আর সেই দাগ দেখে লুসাই কুলিরা বন কেটে পথ তৈরি করে হাতি আর বাকি লোকদের নিয়ে আসে। এমনি করে মনের মধ্যে বনের মধ্যে পথ কিভাবে তৈরী করা।


খ)"ঘাস তো আমার মা-ও খায় সে তো, তোমার মতো এতো বড়ো হয়নি।”
উদ্ধৃতিটি কোন রচনার অংশ? লেখক কে? উদ্ধৃতাংশে কে কাকে এই প্রশ্নটি করেছিল?
কী ভেবে এমন প্রশ্ন করেছিল? বক্তা কী উত্তর পেল? তারপর কী সিদ্ধান্ত হল ।
১+১+১+২+১+২=৮

উত্তর-
●  উদ্ধৃতিটি নরহরি দাস রচনার অংশ।
● লেখক  হলেন- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
°● উদ্ধৃতাংশে ছাগলছানা ষাঁড় কে  এই প্রশ্নটি করেছিল?
●  ষাঁড়ের সিং দেখে ছাগলছানা ভেবেছিল এক সেও বোধহয় ছাগল। কিন্তু তার চেহারা ছিল অন্যরকম । সে ছিল ছাগলের চেয়ে অনেক বড়ো। সেও ঘাস খায়, তার মা ও  ঘাস খায় তাহলে তো চেহারাটা এত বড় হল কেন? এই ভেবে এমন প্রশ্ন করেছিল?
● বক্তা উত্তর পেল- অর্থাৎ ষাঁড় বলল আমি তোমার মায়ের চেয়ে ঢের ভালো ঘাস অনেক বেশি করে খাই।
●  তারপর সিদ্ধান্ত হল সিদ্ধান্ত হল বনের ভেতরে যেখানে অনেক বড়ো বড়ো ঘাস আছে ,সেখানে ঘাস খেতে যাওয়া।

গ) 'ফেরাজের কাছে জ্যোতি খবর পেল।” কোন রচনা থেকে নেওয়া হয়েছে?
ফেরাজ কে? তার কাছ থেকে জ্যোতি কী খবর পেল? ফেরাজ খাঁর বাড়ী কোথায় ছিল? কে কীভাবে জ্যোতিকে সাঁতার শিখিয়েছিলেন?          -১+১+২+১+৩=৮

উত্তর-
●ফেরাজ হলেন- চাটুজে বাড়ির পাহারাদার।

°●তার কাছ থেকে জ্যোতি  খবর পেল- যে সে সত্য অত্যাচারেও তার মুলুকের কেউ ইংরেজকে মেনে নেয়নি রাজা বলে। তারা প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে তাদের স্বাধীনতাকে এই স্বাধীনতার জন্য মরতে তারা ডরে না, মারতে তারা পিছুপা নয়।
ফেরাজ খাঁর বাড়ী ছিল - উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে।
● জ্যোতির মা জ্যোতিকে সাঁতার শেখান ।
জ্যোতির মা শাড়ির এক মুড়ো জ্যোতির কোমরে বেঁধে অন্য মুড়োটা বজ্র মুষ্টিতে ধরে শিবরাত্রি সলতে জ্যোতিকে তিনি ছুড়ে ফেলে দেন জোয়ারের জলে। ঢেউগুলো ফনা মেরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর আপ্রাণ লড়তে লড়তে জ্যোতি যখন প্রায় অবসন্ন হব হব সু পটু সাঁতারুর  মতো তার মা তীরে বেগে এগিয়ে গিয়ে ছেলেকে তুলে নিয়ে আনেন। এইভাবে জ্যোতিকে সাঁতার শিখিয়েছিলেন।

ঘ) “মুখ তুলে বুক ফুলিয়ে দৌড়ে শম্ভু সেই পথ ধরল।”
    শম্ভু কে? সে কোথায় কীজন্য গিয়েছিল? কারা শম্ভুকে ভয় দেখিয়েছিল ? কে কেন তাকে তিরস্কার করেছিল ? শেষ পর্যন্ত সে ভয়কে জয় করতে পেরেছিল?                  ১+২+২+২+১=৮

উত্তর-
●শম্ভু হলো- লীলা মজুমদারের লেখা আলো গল্পে একটি অন্যতম চরিত্র।
● সে সে সুসনি পাহাড়ে গিয়েছিল।
কারণ তার দাদুর পা ভেঙে গিয়েছিল। শুশনি পাহাড়ে হাড়ভাঙ্গা পাতার গাছ আর পাহাড়ের গুহাতে লাল মধু উপচে পড়ছে পাথরে গা বেয়ে, সেটা আনতে গিয়েছিল । ওই পাতা বেটে মধুর সঙ্গে খাইয়ে দিলে ব্যথা সেরে যাবে ।সেজন্য আনতে গিয়েছিল।
● হুতুম, লক্ষ্মীপেঁচা, গাছ, বন বিড়াল, মনসা ঝোপ, বাদুর শম্ভুকে ভয় দেখিয়েছিল ।
● শম্ভুর পিসি শম্ভু কে তিরস্কার করেছিল।
কারণ সন্ধ্যার অন্ধকার নামার পর ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। তার দাদু তখনো বাড়ি ফেরেনি। শম্ভুর পিসি শম্ভুকে একটা লন্ঠন হাতে নিয়ে এগিয়ে দেখতে যাওয়ার কথা বলছিল। শম্ভুর অন্ধকার কে খুব ভয় ছিল। তাই সে যেতে রাজি হচ্ছিল না তখন পিসি রেগে গিয়ে তিরস্কার করে।
● "হ্যাঁ' শেষ পর্যন্ত সে ভয়কে জয় করতে পেরেছিল ।

ঙ) “ভাত হয়ে গেলে মাটির কড়াইতে মাছের ঝোল রাঁধে।” – উদ্ধৃত অংশটি কোন গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে? কী চালের ভাত হল ? কোথা থেকে মাছ কেনা হয়েছিল ? কোথায় রান্না করা হয়েছিল। কীসের থালায় তারা ভাত খেয়েছিল ? খাওয়ার পর কী কী জিনিস ধুয়ে তারা কোথায় রেখেছিল?

উত্তর-
●উদ্ধৃত অংশটি "আমার মা-র বাপের বাড়ি" গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
● লাল লাল মোটা চালের ভাত হল।
◆ জেলেডিঙা থেকে মাছ কেনা হয়েছিল ।
● নৌকার পিছন দিকের পাটাতন তুলে নিচে রাখা মাটির গুননে রান্না করা হয়েছিল।
◆ মাটির থালায় তারা ভাত খেয়েছিল ।
◆ খাওয়ার পর থালা বাটি হাঁড়ি কড়াই সব ধুয়ে তারা  পাটাতনের নিচে রেখেছিল।

২। যে কোন চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও :
ক) “ইচ্ছে করে সেলেট ফেলে দিয়ে
অমনি করে বেড়াই নিয়ে ফেরি।”
-  কোন কবিতার অংশ? তার কী কী হতে ইচ্ছে করে?

উত্তর-
◆ ''বিচিত্র সাধ' কোন কবিতার অংশ।
◆ তার তোমার ইচ্ছে করে কখনো ফেরিওয়ালা সে যে চুরি বিক্রি করতে। কখনো বাগানের মালিক হয়ে কোদাল দিয়ে মাটি কোপাতে। আবার কখনো ইচ্ছা করে পাহারাদার হয়ে রাতের বেলায় লণ্ঠন হাতে পাহারা দিতে।

খ) “মিছিমিছি সবাই বলে--------বেজায় মিঠে।”
-কোন কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে? লেখকের নাম কী? মিছিমিছি তারা কী কী খেয়েছিল?

উত্তর--
● 'বনভোজন' কোন কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে?
● লেখকের নাম -গোলাম মোস্তফা।
● মিছিমিছি তারা ধুলো-বালির কোর্মা -পোলাও, এবং কাদার পিঠে খেয়েছিল।

গ) বলব “ওরে ভয় পায় যে.......এ সে ছেলেই নয়।” -কোন কবিতার অংশ? কবি কে?
কাকে ভয় পাওয়ার কথা বলা হয়েছে? কেন সে ভয় পায় না?                ১+১+১+১=৪

উত্তর-
◆ ' আমি সাগর পাড়ি দেবো', কবিতার অংশ।
● কবি হলেন- কাজী নজরুল ইসলাম।
● হাঙর, কুমির, তিমিকে ভয় পাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
● সে ভয় পায় না কারণ তিনি হলেন সত্য সাগরের রাজা এবং বণিক বীর ।

ঘ) “আদর্শ ছেলে” কবিতাটি কার লেখা। কবি আমাদের দেশের ছেলেদের কাছে কী প্রত্যাশা করেন।? প্রত্যেক দেশবাসীর কী প্রতিজ্ঞা করা উচিত?

উত্তর-
● “আদর্শ ছেলে” কবিতাটি কুসুমকুমারী দাশের লেখা।
●  কবি আমাদের দেশের ছেলেদের কাছে যেগুলি
প্রত্যাশা করেন সেগুলি হল আমাদের দেশের ছেলেকে কথায় বড় না হয়ে কাজে বড় হতে হবে। মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। আমাদের দেশের ছেলের মুখে হাসি, বুকে বল, আর টিকে ভরা মন দরকার।
● কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হতে হবে । মুখে হাসি বুকে বল আর তেজে ভরা মন নিয়ে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। বিপদের সবার পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রত্যেক দেশবাসীর এই প্রতিজ্ঞা করা উচিত।

ঙ) “শ্যামবনানী সরসতা
আমায় দিল ভিক্ষা।
-কোন কবিতার অংশ? কবির নাম কী? মাটি, পাষাণ, ঝর্ণা ও ও শ্যাম বনানীর কাছ থেকে আমরা কী কী শিক্ষা পাই?

উত্তর-
● 'সবার আমি ছাত্র' কবিতার অংশ।
● কবির নাম সুনির্মল বসু।
● মাটির কাছে শিক্ষা পাই সহিষ্ণুতা হতে। পাষাণের কাছে শিক্ষা পাই কঠোর হতে। ঝরনার কাছে শিক্ষা পাইসহজ সরল হতে। শ‍্যামবনানি কাছে শিক্ষা পাই সরসতা হতে।

৩। কবি ও কবিতার নামসহ শূন্যস্থান পুরণ করো :
১+১+২=৪
+
.......খান তিন......
তিনজন........
......দিন.....
দ্যায় দূর.....

উত্তর- ছিপ্ খান তিনদাঁড়
তিনজন মাল্লা
চৌপর দিন ভোর
দ্যায় দূর পাল্লা

শিক্ষান তিনদার তিনজন মোল্লা
৪। ক) অর্থ লেখো: (৬টি)
ঠোক্কর, শুক্তি, সহিষ্ণুতা, কড়ি, খোরাক, ছই, মরাল
উত্তর-
ঠোক্কর   >    হোঁচট বা পায়ে আঘাত
শুক্তি    >    ঝিনুক
সহিষ্ণুতা   >   সহ্য করা
কড়ি   >   আগে ব্যবহৃত বিশেষ মুদ্রা
খোরাক   >   ভরণপোষণ
ছই   >   ছাউনি বিশেষ
মরাল।  >   রাজহাঁস

খ) বাক্য রচনা (৩টি) করো
আমন্ত্রণ, ভ্যাবাচাকা, ফেরিওলা, এলোপাতাড়ি, নজরানা
উত্তর-
আমন্ত্রণ। > ভোজ বাড়িতে অনেকে আমন্ত্রণ থাকে।
ভ্যাবাচাকা। > সাইকেল থেকে পড়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিল।
ফেরিওলা। > দুপুর বেলায় ফেরিওলা কাপড় বিক্রি করতে আসে।
এলোপাতাড়ি। > পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালো।
নজরানা   > ভালো কাজে বড়দের কিছু নজরানা দিতে হয়।

গ) নিচের বর্ণগুলি যোগ করে শব্দ তৈরি করোঃ (৩টি)
স্ + অ + ব্ + আ + ই = সবাই
ম্ + আ + ত্ + অ + ব্+ব্ + অ + র্= মাতব্বর
ব্ + য্ + আ + কু + উ + ল্ = ব্যাকুল
আ + জ্‌ + গ্ + উ + ব্ +ই= আজগুবি
হ্ + আ + ত্ + এ + খ + অ + ড্‌ + ই = হাতেখড়ি
  
ঘ) বিপরীত শব্দ লেখো : (৬টি)
৬+১=৬
গৌরব, বন্ধ, যাওয়া, বন্ধু, হিংস্র, উদয়, উত্তর
উত্তর-
গৌরব > অপমান বা লজ্জা
বন্ধ > খোলা
যাওয়া > আচ্ছা
বন্ধু > শত্রু
হিংস্র > শান্ত
উদয় > অস্ত

৫ ক) এলোমেলো বর্ণগুলি সাজিয়ে শব্দ গঠন করে। : (৪টি)

টি ল গুপ টি শ, ন ভো ন ব জ, র শু ক্র বা, গর গুরুম্ভী, না গ ল ছা ছা
উত্তর-
ট ল গুপ টি শ। > পটগুলটিশ
ন ভো ন ব জ   > বনভোজন
র শু ক্র বা  >  শুক্রবার
গর গুরুম্ভী   >  গুরু গম্ভীর
না গ ল ছা ছা। >  ছাগলছানা

খ) লিঙ্গ পরিবর্তন করো : (৪টি)
৪x১=৪

মহাশয়, শ্রীমতী, বর, কুমারী, রাজা
উত্তর-
মহাশয় > মহাশয়া
শ্রীমতী > শ্রীমান (পুরুষ লিঙ্গ)
বর > কনে (স্ত্রীলিঙ্গ)
কুমারী > কুমার (পুরুষ লিঙ্গ)
রাজা > রানী (স্ত্রীলিঙ্গ)

গ) এক কথায় প্রকাশ করো : (৪টি)
=8
সহ্য করার ক্ষমতা > সহিষ্ণু
যে নারীর দুঃখ ঘোচে না > দুঃখিনী
যে বিদেশে থাকে > বিদেশি
এক সারিতে বসে খাওয়া >  সারি ভোজন
যার দয়া নেই > নির্দয়

৬। যে কোন একটি বিষয়ে অনুচ্ছেদ রচনা করো ঃ
ক) তোমার প্রিয় একজন মহাপুরুষ।
খ) তোমার প্রিয় উৎসব।
গ) একটি গৃহপালিত পশু।


উত্তর- ক) তোমার প্রিয় একজন মহাপুরুষ।ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

ভূমিকা : বিদ্যাসাগর ছিলেন শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তাঁর ছিল প্রচন্ড তেজ, অগাধ। পাণ্ডিত্য, আত্মমর্যাদাবোধ। মানুষের প্রতি দয়া মমতা উদারতা ছিল মনে রাখার মত । তাকে বিদ্যাসাগর হিসেবে সকলে জানলে ও তার আসল নাম ছিল
নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়।

জন্ম ও বংশ-পরিচয় : জন্ম মেদিনীপুর জেলার বীর সিংহ গ্রামে, ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের ২৩ সেপ্টেম্বর। তাঁর বাবার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। মায়ের
নাম ভগবতী দেবী।

শিক্ষা : গ্রামের চতুষ্পাঠীতে পাঁচ বছর বয়সে তাঁর শিক্ষা শুরু হয়। এরপর বাবার সঙ্গে কলকাতার
আসেন। কলকাতায় সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হন। কলকাতায় খুব কষ্ট করে, অভাবের মধ্যে থেকে পড়াশোনা করতে হয়। বাসন মাজা, রান্না
বাজার করা প্রভৃতি কাজকর্মের মধ্যেও
পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। অসাধারণ বুদ্ধি ও প্রতিভাবলে তিনি সব পরীক্ষার প্রথম হয়েছেন। লাভ করেছেন "বিদ্যাসাগর' উপাধি।

কর্মজীবন ও কৃতিত্ব : ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে তিনি প্রধান পণ্ডিতের পদ লাভ করেন। পরে সংস্কৃত কলেজে যোগদান করেন। ঐ কলেজে প্রথমে সম্পাদক, পরে অধ্যক্ষের পদ লাভ করেন। তিনি স্কুল পরিদর্শকের পদও গ্রহণ করেছিলেন। এরপর তিনি সমাজের ও দেশের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বাল্যবিবাহ বন্ধ করা এবং বিধবাবিবাহ প্রবর্তন তাঁর দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমাজ-সংস্কারমূলক কাজ। শিক্ষা বিস্তারের জন্য তিনি সারাজীবন চেষ্টা করে গেছেন।
মেয়েদের শিক্ষার জন্য অনেকগুলি মেয়েদের স্কুল স্থাপন করেছিলেন। পাঠ‍্য বই-এর আভাব দূর করার জন্য বর্ণপরিচয়, কথামালা, সীতার বনবাস ইত্যাদি বই লিখেছিলেন। তাঁকে বাংলা গানের জনক বলা হয়। পারের দুঃখ তিনি একদম সহ্য করতে পারতেন না। তেমনি অন্যায়, অবিচার,
অপমান, অবহেলা সহ্য করতে পারতেন না। মাত্রের প্রতি তাঁর অগাব ভক্তি ছিল।
উপসংহার : ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই বিদ্যাসাগরের মৃত্যু হয়। তিনি ছিলেন বিদ্যার সাগর, দয়ার সাগর, করুণার সাগর। ছিলেন বাঙালীর গৌরব।

) তোমার প্রিয় উৎসব

সরস্বতী পূজা

ভূমিকা : আমার প্রিয় উৎসব সরস্বতী পূজা। বিদ্যার দেবী সরস্বতী। ছাত্র-ছাত্রীরা বিভন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং বাড়িতে এই পূজা করে।
দেবীর বর্ণনা ঃ দেবীর রঙ শুভ্র, বসন শুভ্র। দেবীর বাহন শ্বেত হংস, দেবীর
আসন পদ্ম। সেটিও শ্বেত অর্থাৎ সাদা। দেবীর এক হাতে বীণা, অপর হাতে বই। দেবী সারদা, ভারতী, বীণাপাণি, বাগদেবী প্রভৃতি বিভিন্ন নামে পরিচিত।
পূজার বিবরণ : মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে দেবীর পূজা হয়। পূজার।দিন ছাত্র-ছাত্রীরা খুব ভোরে উঠে স্নান করে ফুল তুলে নিয়ে বিদ্যালয়ে হাজির হয়। দেবীর সামনে বই খাতা দোয়াত কলম রাখে। পুরুত মশাই পূজা করেন। পূজা শেষে ছাত্র-ছাত্রীরা অঞ্জলি দেয়। এর জন্য তারা উপোস করে থাকে। সন্ধ্যাবেলা আবার পূজা হয়।
পূজার আনন্দ : এটি একদিনের পূজা হলেও পূজার কয়েকদিন আগে থেকেই  আনন্দের সাড়া পড়ে যায়। পূজা মণ্ডপ তৈরি, মণ্ডপ সাজানো, প্রতিমা আনা এসব চলতে থাকে। পূজার দিন সন্ধ্যায় গান-বাজনা, আবৃত্তি, নাটক অভিনয়ের
ব্যবস্থা থাকে। তাতে ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নেয়। স্কুল, কলেজ, পাঠাগার কিংবা বাড়ির পূজায় শুধু ছাত্র-ছাত্রী নয়, সবাই অংশ নেয়। আনন্দ উপভোগ করে।
উপসংহার : সরস্বতী পূজার খরচ খুব কম। তাই এই পূজার সংখ্যা
বেশি। বিদ্যার সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এমন প্রতিষ্ঠানেও আজকাল এই পূজা হয়।

★অথবা★
মহরম
ভূমিকা : মহরম মুসলমানদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এটি কিন্তু আনন্দের উৎসব নয়, দুঃখ এবং বেদনার। এই অনুষ্ঠানটি একটি শোকের ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে।

ইতিহাস : ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হজরত মহম্মদ। তাঁর মৃত্যুর পর খলিফা পদ দিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। হজরত মহম্মদের দুই দৌহিত্র—হাসান এবং হোসেন। মুসলমানদের একদল হাসানকে খলিফা বলে স্বীকার করেন।
অপর একদল মারিয়া নামে অপর একজনকে খলিফা বলে স্বীকার করেন।
মাবিয়ার পুত্র এজিদ বিষ খাইয়ে হাসানকে হত্যা করে। এরপর কারবালা মরু প্রান্তরে হোসেনের সঙ্গে এজিদের যুদ্ধ বাধে। দশ দিন ধরে এই যুদ্ধ চলে। পিপাসায় এক বিন্দু জলও না পেয়ে হোসেন মারা যান। এই করুণ স্মৃতি স্মরণ  করার জন্য মহরম অনুষ্ঠিত হয়।

গ) একটি গৃহপালিত পশু।
কুকুর
ভূমিকা : কুকুর একটি গৃহপালিত স্তন্যপায়ী প্রাণী। এই প্রভুভক্ত, বিশ্বস্ত প্রাণীটিকে মানুষ খুব যত্নের সঙ্গে পালন করে।
আকৃতি : কুকুরের চারটি পা, দুটি কান, দুটি চোখ এবং একটি লেজ আছে। কুকুরের পায়ের তলায় নরম মাংসপিণ্ড থাকে। এদের পায়ের নখ এবং দাঁতগুলি খুব ধারালো। এদের সমস্ত শরীর লোমে ঢাকা। কুকুরের লেজটি ছোটো এবং বাঁকা।
প্রকৃতি : কুকুর সহজে পোষ মানে। এরা প্রভুভক্ত প্রাণী। প্রভুর জন্য প্রাণ দিতেও পারে। চেনা লোক দেখলে কুকুর আনন্দে লেজ নাড়ে, আবার অচেনা লোক দেখলে ঘেউ ঘেউ করে চীৎকার করে। এদের ঘ্রাণশক্তি এবং শ্রবণশক্তি খুব প্রবল। সামান্য শব্দেই এদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। এরা দশ-বারো বছর বাঁচে।
জাতি : কুকুর নানা জাতের হয়। এদের মধ্যে অ্যালসেশিয়ান, গ্রে-হাউণ্ড,
স্প্যানিয়েল, ল্যাপডগ, টেরিয়র প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। জাতের পার্থক্যের সঙ্গে কুকুরের
স্বভাব, দেহের গঠন ও রং-এ অনেক পার্থক্য দেখা যায়। খরগোসের মতো খুব ছোটো কুকুর যেমন আছে, তেমনি বাছুরের মতো বড়ো কুকুরও দেখা যায়।
খাদ্য : কুকুর মাংসাশী প্রাণী। মাংসই এদের সবচেয়ে প্রিয় খাদ্য। এছাড়া
ভাত, রুটি, মাছ, দুধ ইত্যাদি খায়।
উপকারিতা ঃ কুকুর রাত জেগে প্রভুর বাড়ি পাহারা দেয়। কুকুর শিকারের কাজে সাহায্য করে। বরফের দেশে কুকুর গাড়ি টানে। সার্কাসে খেলা দেখায়। ঘ্রাণ শক্তির সাহায্যে এরা চোর ডাকাত এবং অপরাধী ধরতে পুলিশকে সাহায্য করে।
উপসংহার : কুকুর মানুষের বিশ্বস্ত ও উপকারী বন্ধু। এরা কখন বিশ্বাসঘাতকতা করে না।