Sabar ami chharar poem question answer class 4 bangla / সবার আমি ছাত্র কবিতা অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
চতুর্থ শ্রেণীর
বাংলা সাহিত্য
সবার আমি ছাত্র
সুনির্মল বসু
কবি সুনির্মল বসুর পরিচিতি:- কবি সুনির্মল বসুর জন্ম হয়েছিল। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুলাই । তার জন্মস্থান ঢাকা জেলার মালখানগর নামক স্থানে । কবি সুনির্মল বসুর পিতার নাম পশুপতি বসু। তিনি পিতার কর্মসূত্রে বিহারের গিরিডিতে ছোটোবেলা কাটান। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে। কলকাতার সেন্ট পলস্ কলেজে ভরতি হন। তাঁর প্রথম কবিতা 'প্রবাসী' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তিনি ছবি আঁকাতে দক্ষ ছিলেন। ছাড়া, কবিতা, গল্প, কাহিনি, উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনি, রূপকথা, কৌতুক নাট্য প্রভৃতি লিখেছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল - 'ছানাবড়া', 'বেড়ে মজা', 'হইচই', 'কথা শেখা', ছন্দের টুং টাং', 'বীর শিকারী' হাওয়ার দোলা', ইত্যাদি। 'হাওয়ার দোলা' তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ। তাঁর সম্পাদিত বই—'ছোটোদের চয়নিকা' ও ছোটোদের গল্প সংকলন'। 'কিশোর এশিয়া' নামক পত্রিকার তিনি পরিচালক ছিলেন। তিনি ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে 'ভুবনেশ্বরী' পদকে পুরস্কৃত হয়েছিলেন।
সবার আমি ছাত্র কবিতার নামকরণ সার্থকতা;-
কবি সুনির্মল বসুর 'সবার
‘সবার আমি ছাত্র' কবিতায় কবি শিখেছেন আকাশ, বায়ু, পাহাড়, খোলা মাঠ, সূর্য, চাঁদ, সাগর, নদী, মাটি, পাষাণ, ঝরনা, শ্যামবনানী প্রভৃতির কাছে নানা ধরনের শিক্ষা।
কবির দৃষ্টিতে সমগ্র বিশ্বব্রক্ষ্মাণ্ডই একটি সুবৃহৎ পাঠশালা। আমার মতে সবার আমি ছাত্র নামকরণটি যথার্থ হয়েছে বলে মনে হয়।
সবার আমি ছাত্র কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা
উত্তর-কবি বলেছেন, যে পরিবেশে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি তা থেকে শেখার আছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শিক্ষা।. চঁদের কাছে মধুর কথা বলতে,আকাশের কাছ থেকে কবি উদার হতে শিখেছেন। বায়ুর কাছ থেকে কর্মী হতে শিখেছেন। কবি শিখেছেন পাহাড়ের কাছ
থেকে মৌন মহান হতে, খোলা মাঠের কাছে দিলখোলা হতে, সূর্যের কাছে আপন তেজে জ্বলতে কবি শিখেছেন সাগরের কাছে রত্নাকরের মতো হৃদয় গড়তে, নদীর কাছে আপন বেগে চলতে। তিনি আরও শিখেছেন মাটির কাছে সহিষ্ণু হতে, পাষাণের কাছে আপন কাজে সুদৃঢ় হতে, ঝরনার কাছে সংগীত শিখতে, শ্যামানানীর কাছে সরসতা লাভ করতে কবি এই বিশ্বজোড়া পাঠশালার ছাত্র হয়েছেন। তিনি পাঠ্য বইয়ের পাতায় পাতায় দিনরত শুধুমাত্র কৌতূহল নিয়েই শিক্ষা অর্জন করেছেন। কিন্তু পৃথিবীর পাতা বিরাট। সেই শিক্ষা সারা জীবন ধরে শিখতে হবে। সেই শিক্ষার শেষ নেই।
হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর
১. কবি সুনির্মল বসুর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখ।
উঃ 'ছাদের টুংটাং', 'বীর শিকারি সুনির্মল বসুর লেখা দুটি বই।
২। তিনি ১৯৫৬ সালে কী পদক পেয়েছিলেন? উঃ ভুবনেশ্বরী পদক।
৩। নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৩.১ কার উপদেশে কবি দিলখোলা হন?
উঃ খোলা মাঠের উপদেশে।
৩.২ পাষাণ কবিকে কী শিক্ষা দিয়েছিল?
উঃ আপন কাজে কঠোর হওয়ার শিক্ষা দিয়েছিল।
৩.৩ কবি কার কাছ থেকে কী ভিক্ষা পেলেন?
উঃ শ্যানবনানীর কাছ থেকে সরসতার ভিক্ষা পেলেন।
৩.৪ কে কবিকে মধুর কথা বলতে শেখাল?
উঃ কবিকে চান মধুর কথা বলতে শেখাল।
৩.৫ নদীর কাছ থেকে কী শিক্ষা পাওয়া ?
উঃ নদীর কাছ থেকে আপন বেগে চলার শিক্ষা পাওয়া যায়।
৪. সন্ধি করে লেখো :
উঃ বন্ধু + আকর = রত্নাকর।
মেঘ + আলোক = মোবালোক।
কমলা + আসনা = কমলাসনা।
৫. সমার্থক শব্দ লেখো : চাঁদ, সূর্য, পাহাড়, বায়ু, নদী, পৃথিবী, সাগর।
চাঁদ—চন্দ্ৰ, শশাঙ্ক, শশী, শশধর।
সূর্য—দিবাকর, দিননাথ, সুরজ।
পাহাড়-ভূধর, গিরি, অচল,পর্বত।
বায়ু-বাতাস, হাওয়া, নবন, মরুৎ, অনিল।
নদী— তটিনী প্রবাহিণী, শ্রোতস্বিনী, তরঙ্গিণী।
পৃথিবী—ধরিত্রী, ধরণি, ধরা, বসুধা।
সাগর-সমুদ্র, সিন্ধু, পারাবার।
৬. বাক্য রচনা কর:-
উদার- মহান পুরুষরা উদার মনের মানুষ ছিলেন
মহান- মহান ব্যক্তিরা জীবনে বড় হয়ে অনেক বড় কাজ করেন।
মন্ত্রণা- কু-মন্ত্রণা কখনোই ভালো নয়।
শিক্ষা – সন্তান মায়ের কাছ থেকে প্রথম শিক্ষা লাভ করে।
সহিঞ্চুতা সহিঞ্চুতা জীবনে ভিত তৈরি করে।
সন্দেহ- চোর সন্দেহে পুলিশ লোকটিকে ধরল
কৌতূহল— অজানাকে জানার কৌতূহল সবারই মনে থাকে।
ঝরনা- পাহাড়ি ঝরনা দেখা যায়।
৭. নীচের বিশেষণ শব্দগুলির বিশেষ্য রূপ লেখো :
উঃ বিশেষণ -বিশেষ্য
কর্মী—কর্ম।
মৌন—মৌনতা।
মধুর মাধুর্য, মধুরতা।
কঠোর—কঠোরতা।
বিরাট- বিরাটত্ব।
৮. নীচের বিশেষ্য শব্দগুলির বিশেষণ রূপ লেখো ?
উঃ
বিশেষ্য - বিশেষণ
শিক্ষা – শিক্ষিত।
মন্ত্র-মন্ত্রণা।
বায়ু বায়বীয়
মাঠ – মেঠো।
তেজ— তেজি।
৯. কবিতা থেকে সর্বনাম শব্দগুলি খুঁজে নিয়ে লেখো : (অন্তত ৫টি)
উঃ আমায়, আমি, তাহার, তার, আপন, আমার, মোর, আমায়, আমি, তাহার, তার ।
১০. গদ্যরূপ লেখো
১০.১. 'কর্মী হবার মন্ত্র আমি বায়ুর কাছে পাইরে।'
উঃ বায়ুর কাছ থেকে আমি কর্মী হবার মন্ত্র পেয়েছি।
১০.২. 'সূর্য আমায় মন্ত্রণা দেয় আপন তেজে জ্বলতে।'
উঃ সূর্য আমাকে আপন তেজে জ্বলার মন্ত্রনা দেয়।
১০.৩. "ইঙ্গিতে তার শিখায় সাগর, অন্তর হোক রত্নআকর।
উঃ সাগর ইঙ্গিত দিয়ে শেখায় অন্তর রত্নাকর হোক।
১০.৪. 'শ্যামবনানী সরসতা আমায় দিল ভিক্ষা।'
উঃ আমাকে শ্যামবনানী সরসতার ভিক্ষা দিল।
১০.৫. শিখছি সে সব কৌতূহলে সন্দেহ নাই মাত্র।'
উঃ কৌতূহলে সেসব শিখছি মাত্র সন্দেহ নেই।
১১. 'বিশ্বজোড়া পাঠশালা' বলতে কবিতায় কী বোঝানো হয়েছে?
উঃ পাঠ সালে জীবন শিক্ষা পাওয়া যায় তেমনি কবিতায় আকাশ-বাতাশ-পাহাড়-প্রান্তর, সূর্য-চন্দ্র-সাগর-নদী এবং মৃত্তিকা পাষাণ ঝরনা ও শ্যামবনানী কবিকে নানাভাবে নানান শিক্ষা দান করেছে। কবি আকাশের কাছ থেকে উদার হওয়ার শিক্ষা লাভ করেছেন। বায়ু অর্থাৎ বাতাস শিখিয়েছে কর্মী হওয়ার মন্ত্র। পাহাড় শিখিয়েছে মৌন মহান হওয়ার শিক্ষা। খোলা মাঠ অর্থাৎ
উন্মুক্ত প্রান্তরের কাছ থেকে পাওয়া গেছে দিলখোলা অর্থাৎ উদারচিত্ত হওয়ার উপদেশ। সূর্য মন্ত্রণা অর্থাৎ পরামর্শ দিয়েছে কীভাবে আপন তেজে জ্বলে বেঁচে থাকা যায়। চাঁদ শিখিয়েছে মিষ্টি হাসি হেসে মধুর কথা বলতে। সাগর বা সমুদ্র শেখায় অন্তরকে রত্নআকর করে গড়ে তুলতে। নদী শিখিয়েছে আপন বেগে চলতে। মাটির কাছে পাওয়া গেছে সহিষ্ণু হওয়া। শিক্ষা। পাষাণ বা পাথর দিয়েছে আপন কাজে কঠোর হওয়ার দীক্ষা। ঝরনা জাগিয়েছে মানবহৃদয়ে গানের সুর। শ্যামবনানী দিয়েছে সরসতা লাভের ভিক্ষা। এভাবে বিশ্বের প্রতিটি প্রাকৃতিক শক্তির কাছ থেকে কবিতায় শিক্ষা অর্জনের কথা উল্লেখ
করা হয়েছে। তাই কবিতায় 'বিশ্বজোড়া পাঠশালা' শব্দটি বোঝানো হয়েছে।
১২. প্রকৃতির কার কাছ থেকে আমরা কীরূপ শিক্ষা পেতে পারি লেখো :
১. আকাশ-উদার হওয়ার শিক্ষা আমরা পেতে অসীম আকাশের কাছ থেকে।
বাতাস- সর্বদা কর্ম করে যাবার মন্ত্র শিখতে পাওয়া যায়।
পাহাড় -পাহাড়ের কাছ থেকে মৌন হয়ে থেকে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা শেখা যায়।
খোলামাঠ- খোলামাঠের কাছে আমরা উজাড় হৃদয়ে মানুষকে তথা সমগ্র জীবসম্প্রদায়কে ভালোবাসা দেওয়ার শিক্ষা পেতে পারি।
সূর্য- সূর্যের কাছ থেকে আমরা তেজস্বিতা অবলম্বনের শিক্ষা লাভ করতে পারি।
চাঁদ - চাঁদের কাছ থেকে মধুর সুরে কথা বলা আমরা শিখতে পারি তাদের অপূর্ব মাধুর্য দেখে।
১৩. প্রকৃতির আরও কিছু উপাদানের কথা তুমি লেখো আর তাদের থেকে কী শিক্ষা তুমি নিতে পারো তা উল্লেখ করো।
উঃ কবিতায় কবি নিজেই আরও কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে সাগর, নদী, মাটি, পাযাণ, ঝরনা এবং শ্যামবনানীর উল্লেখ
করেছেন। মাটির কাছ থেকে আমি সহিঞ্চুতা অবলম্বনের শিক্ষা লাভ করতে পারি। জীবনে বাঁচতে গেলে আমাদের চলার
পথে প্রতি মুহূর্তে হয়তো বিভিন্ন প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হবে। সুতরাং সহিষ্ণুতা অবলম্বন করতে না শিখলে যে-কোনো মুহূর্তে দ্বন্দ্বের মুখে পড়তে হবে। পাষাণ যেভাবে কঠোর হয়ে আছে, সেভাবে আমি নিজের কাজে কঠোর হওয়ার প্রতিজ্ঞা নিতে পারি। ঝরনা যেভাবে নিরন্তর প্রবাহিণী হয়ে মানবহৃদয়ে সংগীতের মূর্ছনা জাগায় তাতে আমি আমার হৃদয়েও সংগীতের সুর জাগিয়ে তুলতে পারি। শ্যামবনানী অর্থাৎ শ্যামল বনরাজি তার সরসতা দিয়ে মানবদৃষ্টিকে করে সজীব, সতেজ। আমি শ্যামবনানীর কাছ থেকে হৃদয়ে সরসতা অর্জনের শিক্ষা নিতে পারি।
১৪. এমন একজন মানুষের কথা লেখো যার কাছ থেকে অহরহ তুমি অনেক কিছু শেখো।
উঃ জীবনের বেশির ভাগ সময় আমি কাছে পাই আমার মাকে। আমার মায়ের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখি। সূর্য ওঠার আগে ঘুম থেকে ওঠা, প্রাতঃকৃত্য শেষ করে নিজের কাজে মনঃসংযোগ করা আমি মায়ের কাছ থেকে শিখেছি।
হাতে কলমের বাইরে
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
°
৩। সমার্থক শব্দ লেখো :
আকাশ, বনানী, মাঠ, বিশ্ব, পাঠশালা, পাষাণ, গান,
উত্তর ঃ আকাশ—নভঃ,
বনানী —–অরণ্য
মাঠ—প্রান্তর
বিশ্ব—পৃথিবী
পাঠশালা – শিক্ষালয়
পাষাণ — পাথর,
গান—সংগীত ।
৪। সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে আবার বাক্যটি লেখ।
(ক) উদার হতে শিক্ষা দিল— মাটি/নদী/আকাশ।
উত্তর : উদার হতে শিক্ষা দিল আকাশ।
(খ) কর্মী হওয়ার মন্ত্র দিল – আকাশ/বায়ু/বন।
উত্তর : কর্মী হওয়ার মন্ত্র দিল বায়ু।
(গ) মৌন মহান হতে শিক্ষা দেয়—পাহাড়/নদী/আকাশ।
উত্তর : মৌন মহান হতে শিক্ষা দেয় পাহাড়।
(ঘ) আপন তেজে জ্বলতে মন্ত্রণা দেয়—চন্দ্র/সূর্য/ তারা।
উত্তর : আপন তেজে জ্বলতে মন্ত্রণা দেয় সূর্য।
(ঙ) মধুর কথা বলতে শেখায় — চাঁদ/তারা/সূর্য।
উত্তর : মধুর কথা বলতে শেখায় চাঁদ।
দু-এক কথায় উত্তর দাও :
★ সবার আমি ছাত্র কবিতাটি কার লেখা ?
উত্তর- সুনির্মল বসু।
★ পাহাড়ের অপর নাম কী ?
উত্তর : পর্বত।
★ তোমার জানা তিনটি পর্বতের নাম লেখো।
উত্তর : কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বত, নীলগিরি পর্বত আরাবল্লী পর্বত ,হিমালয় পর্বত, সিঙ্গালীলা পর্বত,
★ কবি কার কাছ থেকে উদার হওয়ার শিক্ষা পেয়েছেন?
উত্তর : আকাশের কাছ থেকে।
★ আকাশের রং কী ?
উত্তর : আকাশের রং নীল।
★ মৌন মহান হতে কবিকে কে শিখিয়েছে?
উত্তর : পাহাড়
★ শ্যামবনানী কাকে কী সরসতা দিয়েছে?
উত্তর : কবির মনে সরসতার মাধ্যমে দিয়েছে হাসিখুশি মানসিকতা।
★ পাঠশালা কোথায় আছে ?
উত্তর : এই বিশ্বজুড়ে আছে পাঠশালা।
★ এই পৃথিবীর বিরাট খাতায় কী আছে?
উত্তর : বিরাট খাতার পাতায় আছে জীবনে সহজভাবে বেঁচে থাকার শিক্ষা।
★ কবি কীভাবে কেন সব শিখেছেন?
উত্তর : কবি মনে কোনো সন্দেহ না রেখে সব শিখছেন তাঁর কৌতুহলে।
★ দিলখোলা হয়েছেন কবি কার উপদেশে ?
উত্তর : খোলামাঠের উপদেশে।
★ কবিকে চাঁদ কী শিখিয়েছে?
উত্তর : হাসতে এবং মধুর কথা বলতে।
★ইঙ্গিতে সাগর কী শেখায় ?
উত্তর : অন্তর রত্নআকর করে তুলতে।
★ পাষাণ কীসের দীক্ষা দিয়েছে?
উত্তর : আপন কাজে কঠোর হতে।
★ কার প্রাণে স্বরনা কী জাগায়।
উত্তর : কবি সুনির্মল বসুর ভাগে ঝরনা জাগিয়ে দিল প্রান।
★ 'বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : 'পাঠশালা' শব্দের অর্থ প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষালাভ করি। শিক্ষা শব্দটি আমরা সাধারণত বিদ্যালয়ের গন্ডির মধ্যে অর্জিত জ্ঞানকেই ধরি। সেই জ্ঞান শুধুমাত্র আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের সহায়ক হয়। পরবর্তী জীবনে কেউ ডাক্তার, কেউ শিক্ষক, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ আইনবিদ, কেউ বা সৈনিক, কেউ বা রাজনীতিবিদ ইত্যাদি লক্ষ্যে এগিয়ে চলি। কিন্তু কবি 'সবার আমি ছাত্র' কবিতায়
যা বলেছেন তা ব্যাপক অর্থে বিশাল, সুবিশাল। অর্থাৎ শিশু জন্মাবার পর থেকেই প্রতিমুহূর্তে ঘরে বাইরে বিভিন্ন জায়গা থেকে যা কিছু দেখে, শোনে তাই সে শেখে। শিশুর প্রথম পাঠশালা তার নিজের পরিবার। সে প্রথম শোনে তার মায়ের কাছ থেকে, তার বাবা, কাকা, দাদা, দিদি সকলের কাছ থেকে। তারপর যতই তার বয়স বাড়তে থাকে ততই সে যেখানে গতই দেখে আর শোনে তাই যে শেখে। কবির কথা অনুযায়ী মানুষ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত শিখে চলে। এই শিক্ষা মানুষের শেষ না না কোনোদিন।
★কী ভিক্ষা কার কাছ থেকে চেয়েছেন কবি?
উত্তর : প্রকৃতির পাঠশালার থেকে কবি শ্যামবনানীর কাছে সরসতা ভিক্ষা করেছেন। শ্যাম বলতে সবুজ বনভূমিে বোঝায়। আমাদের চক্ষু শীতল করার জন্য আমরা সবুজ বনভূমির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি। সবুজের দিকে তাকালে কবির
★ উদারতা, কর্মনিষ্ঠা ও সহিতা শিখেছেন কবি কাদের কাছ থেকে? এই শিক্ষা আমাদের কী কাজে লাগে ?
উত্তর : আলোচ্য কবিতায় কবি সুনির্মল বসু উদারতার শিক্ষা নিয়েছেন আকাশের কাছ থেকে। কর্মী হওয়ার মন্ত্র নিয়েছেন তিনি বায়ুর কাছ থেকে। সহিদ্বতা শিখেছেন তিনি মাটির কাছে। আকাশ তার অনন্ত বিস্তৃতি দেখিয়ে আমাদের দৃষ্টিকে প্রসারিত করে, আমাদের মাকে তৃপ্তি দান করে— কবি তাই তার কাছ থেকে সেই উদারতার শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। বায়ু নিরন্তর বয়ে
চলেছে—বায়ু না থাকলে কোনো প্রাণীর পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। বায়ুর এই যে নিয়ত বহমানতা অর্থাৎ প্রত্যেকের জন্য প্রতিনিয়ত উপস্থিত থাকা তা যথার্থ কর্মীর নিদর্শন। তাই বায়ুর মতো সমাজের সুযোগ্য কর্মী হয়ে উঠতে চেয়েছেন কবি। মাটির বুকে নিশ্চিন্তে বিচরণ করে পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী। অথচ মাটির কোনো অসন্তুষ্টি নেই। নিঃশব্দে মাটি সমস্ত সহ্য করে।
★বিপরীত শব্দ ঃ আমায়—তোমায়।
দিল—নিল।
উদার—অনুদার।
কর্মী—অলস।
সমান—অসমান।
স্থান-সংকীর্ণ।
দিলখোলা—স্বার্থপর।
খোলা—ঢাকা।
দেয়—নেয়।
আপন-পর।
হাসতে—কাঁদতে।
মিঠে— তেতো
মধুর—তিন্তু।
বলতে-শুনতে।
★ সমার্থক শব্দ :
মাটি—মৃত্তিকা, পৃথিবী, ক্ষিতি, ভূ, মেদিনী, ভূমণ্ডল।
পাষাণ পাথর, পাহাড়, পর্বত।
বিশ্ব -পৃথিবী, জগৎ, পুলিয়া,ব্রহ্মাণ্ড।
পাঠশালা -স্থল, বিদ্যালয়, বিদ্যাভবন, শিক্ষালয়। রাত্র-রাত্রি, নিশীপ, নিশি, যামিনী, তনা।
দিবা-দিন, বিশ্বাস, অহ, অহ্ন, অপরাহু।
আকাশ—গগন, অন্তরীক্ষ, ব্যোম।
বায়ু-বাতাস, হাওয়া, নবন, মরুৎ, অনিল, বাত, সমীর, সমীরণ।
মাঠ—ময়দান, প্রান্তর, ক্ষেত্র।
সূর্য—দিবাকর, দিননাথ, সুরজ, ফলি, অংশুমান,
জ্যোতির্ময়, অর্ক।
চাঁদ—চন্দ্ৰ, শশাঙ্ক, শশী, শশধর, সুধাকর, নিশাপতি।
সাগর-সমুদ্র, সিন্ধু, পারাবার, জানছি, বারিধি,
অর্ণব, বারীশ, রত্নাকর।
নদী—প্রবাহিণী, শ্রোতস্বিনী, তরঙ্গিণী, কল্লোলিনী। ছাত্র–পড়ুয়া, শিক্ষার্থী, বিদ্যার্থী,
পৃথিবী—ধরিত্রী, ধরণি, ধরা, বিশ্ব, জগৎ, ভূমণ্ডল, মর্ত্য, অবনি।