তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা সাথী কবিতার অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর / Sathi poem question answer class 3 bangla - school book solver

Pages

Wednesday, 12 March 2025

তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা সাথী কবিতার অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর / Sathi poem question answer class 3 bangla

 



তৃতীয় শ্রেণি বাংলা

কবিতা : সাথি

কবি : অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর


লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিচিতি : অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর বা অবন ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাইপো। ১৮১৭ সালে তাঁর জন্ম হয়। অবনীন্দ্রনাথ ছিলেন খুব বড়ো মাপের একজন আঁকিয়ে। ছোটোদের জন্য তাঁর লেখা বইগুলি বাংলা সাহিত্যের এক অক্ষয় হয়ে আছে।

বাংলাদেশের আচার-অনুষ্ঠান, ব্রতকথা, রূপকথা তাঁর লেখায় নতুন করে প্রাণ পেয়েছে।

“শকুন্তলা”, “রাজকাহিনী”, “নালক”, “বুড়ো আংলা”, “ভূপতরীর দেশ” লেখা ছোটোদের কতকগুলি বই। আর বড়োদের জন্য তিনি লেখেছেন “বাংলার ব্রত”, “বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী”, “ভারত শিল্পের ষড়ঙ্গ” ইত্যাদি ।



সাথি গল্পের নামকরণের সার্থকা ;:-গল্পের মূল চরিত্র একটি তালগাছ। সে দেখে সবার সাথি আছে, শুধু তার নেই। সাথি পাওয়ার কুল-বিকুলি করে। অবশেষে একদিন সে সাথি পেয়ে খুব আনন্দ পায়। কিন্তু সে সাথিও দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

সে একা হয়ে পড়ে। গল্পটির মূল বিষয়বস্তু বন্ধুত্ব। তাই গল্পটির ‘সাথি’ নামকরণ সার্থক।


সাথি গল্পের সারাংংশ ঃ একটি এক একা তালগাছ। ছোটো থেকে সে একাই বড়ো হয়েছে। সে দেখে অন্য গাছপালা, পাখি, আকাশের মেঘ, বাতাস, সব কিছুরই সঙ্গী আছে। কেবলমাত্র সেই একা। আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া পাখিদের সে তার পাতা নেড়ে ডাকে। কিন্তু তারা থামে না। এইভাবেই তার দিন কাটছিল। একদিন হঠাৎ-দুটি বাবুই পাখি তার কাছে যাওয়া আসা করতে লাগল। তাল গাছটি আনন্দ পায়। তারা  গাছের ডালে বাসা বানায়। গাছটি তার নতুন সঙ্গী পেয়ে খুশি হয়, সন্তু হঠাৎই তারা একদিন তাদের বাসা ছেড়ে কোথায় চলে যায়। গাছটি আবার একা হয়ে পড়ে।



শব্দার্থ : তেপান্তর—তিনটি প্রান্তর যেখানে এসে মিলেছে, খুব বড়ো মাঠ। 

ধু ধু—ফাঁকা, শূন্য। 

ঘেঁষাঘেঁষি- পাশাপাশি।

সাথি—সঙ্গী, বন্ধু। 

আঁধি— ধূলিঝড়। 

বিদ্যুল্লতা-লতার মতো দেখতে

বিদ্যুৎ, বিজলি। 

অপরূপ—যার রূপের তুলনা হয় না। 

বলাকা—পাখির (বকের) ঝাঁক। 

পারিজাত—কাল্পনিক (স্বর্গের)

ফুল। দেখো—সঙ্গী, সাথি, বন্ধু। 

বৃথা—ব্যর্থ, বিফল। 

আঁকুপাঁকু—আকুলি-বিকুলি। 

মিছিমিছি—শুধু শুধু, 

কুটোকাটা—খড়কুটো, ডালপালা।



হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

১. একটি বাক্যে উত্তর দাও :

১.১ তালগাছ কোথায় একলা বাড়ল ?

উঃ। তেপান্তরের মাঠে তালগাছ  একলা বাড়ল।


১.২ ঘন নীল ছায়ার মতো কাদের দেখা যায় ?

উঃ। বনের যেসব লতাপাতা গলাগলি করে আছে, তাদের নীল ছায়ার মতো দেখা যায়।


১.৩ মাঠের চেয়ে বড়ো কে? 

উঃ। মাঠের চেয়ে বড়ো আকাশ।


১.৪ হাওয়ার সঙ্গে কে আসে?

উঃ। হাওয়ার সঙ্গে তার সাথি ফুলের গন্ধ আসে।


১.৫ ঝড়ের সঙ্গে কে কে আসে? 

উঃ। ঝড়ের সঙ্গে  আঁধি আর বৃষ্টি আসে।



১.৬ শততের মেঘের সাথি কে?

 উঃ। শরতের মেঘের সাথি বলাকা ।


১.৭ তালগাছ কেন বৃথা আঁকপাঁকু করে?

উঃ। তালগাছ সবার সাথে চলতে চেয়ে বৃথা আঁকুপাঁকু করে।


১.৮ তালগাছের কাছে কারা যাওয়া আসা করতে লাগল ?

উঃ। দুটি বাবুই পাখি তালগাছের কাছে যাওয়া আসা করতে লাগল।


১.৯ বাবুই পাখিরা কোথায় বাসা বাঁধল ?

উঃ। বাবুই পাখিরা তালগাছের প্রাণ যেখানে বাতাস ঝিলমিল করে অর্থাৎ তালগাছের পাতায় বাসা বাঁধল।

১.১০ তালগাছ চুপ করে ভাবে কেন ?

উঃ বাবুই পাখিরা চলে যাওয়াতে তালগাছ আবার একা হয়ে পড়েছিল।


২. উপযুক্ত শব্দ বেছে নিয়ে শূন্যস্থানে বসাও ঃ

২.১ চারিদিকে(ধু ধু/হু হু )  করছে।

উঃ। ধু ধু।

২.২ সেখানে লতাপাতা সব (দলাদলি /গলাগলি) করে আছে।

উঃ। গলাগলি।

২.৩ সেখানে তারা সব ঘেঁষাঘেঁষি (ঝিলমিল/কিলবিল) করছে।

উঃ। ঝিলমিল।

২.৪ তারা দুটিতে মিছিমিছি কত কী (হাঁকাহাঁকি/বকাবকি করে।

উঃ। বকাবকি।


২.৫ মাঠের থেকে (এঁটোকাঁটা/কুটোকাটা) নিয়ে বাসা বাঁধে।

উঃ। কুটোকাঁটা।


৩। নীচের শব্দগুলি দিয়ে বাক্য তৈরি করো :

তেপান্তর— রূপকথার গল্পের তেপান্তরের মাঠে কথা জানা যায়।

বলাকা – বৃষ্টির পর বলাকাকে আকাশে উড়ে যেতে দেখা যায়।

আঁকুপাঁকু— মামার বাড়ি যাওয়ার জন্য মনটা আকুয়া করে।

মিছিমিছি — মিছিমিছি কথা বলে আমার কাছ থেকে পুতুলটা নিয়ে নিল।

ঝিলমিল--- জলে রোদ পড়লে ঝিলমিল করে।


৪ একই অর্থের শব্দপাঠ থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো :

নীড় – বাসা।

ভর্ৎসনা— বকাবকি। 

গগন—আকাশ। 

প্রান্তর— তেপান্তর। 

বিজলি – বিদ্যুৎ ।



৫। বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :

 ঘন-পাতলা।

 দূরে—কাছে। 

আছে—নেই। 

ছোটো-বড়ো।


৬। 'হার' শব্দটিকে দুটি আলাদা অর্থে ব্যবহার করে দুটি বাক্য লেখো :

হার (অলংকার) – সোনার দোকানে গলার হার তৈরি করতে অনেকে আসে।

হার (পরাজয়) – যে কোন খেলায় হার জিত আছে।



৭। টাকা লেখো ও শরতের মেঘ, তালগাছ।

উঃ। শরতের মেঘ ঃ শরৎকালের মেঘে কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে। এই সময়ে  মেঘকে পেঁজা তুলোর মতো দেখায়। এই সময়ের মেঘে নানা রকম আকৃতি দেখা যায়। কবিরা শরতের মেঘ নিয়ে নানা কবিতা রচনা করেছেন।


তালগাছ : তালগাছ এমন একটি গাছ যা সাধারণত সোজা উপর দিকে ওঠে। এর কোনো ডালপালা থাকে না।।কেবল মাথার ওপর বড়ো গোল গোল পাতা থাকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'তালগাছ' কবিতাটিতে তালগাছ সম্পর্কে খুব সুন্দর বর্ণনা পাওয়া যায়। সেখানে কবি বলেছেন তালগাছ যেন এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে।


৮। বর্ণ বিশ্লেষণ করো :

বিশ্বাস -ব্ + ই + শ্ + ব্ + আ + স্।

কুটোকাটা-ক্ + উ + ট্‌ + ও + ক্ + আ + ট্‌ + আ।

বলাকা-ব্ + ন্ + আ + ক্ + আ।

দুটি—দ্ + উ + ট্ + ই


৯। যুক্তাক্ষর রয়েছে এমন পাঁচটি শব্দ পাঠ থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো

উঃ। তেপান্তর, গন্ধ, সুন্দরী, নিশ্বাস, বিদ্যুল্লতা।


১০। বাক্য বাড়াও :

১০.১ তার মাঝে একটি তালগাছ। (কোথায়? কেমন?) 

উঃ। তেপান্তরের মাঠের মাঝে একা একটা তালগাছ

১০.২ ঝড় আসে। (কাকে নিয়ে? 

উঃ। ঝড় আসে তার সাথি আঁধি আর বৃষ্টিকে নিয়ে।

১০.৩ তালগাছ কেবলই ডাকে। (কাদের? কীভাবে ?)

উঃ। তালগাছ উড়ন্ত বলাকাদের কেবলই তার পাতা নেড়ে ডাকে।

১০.৪ একলা গাছ বৃথা আঁকুপাঁকু করে। (কেন ?)

উঃ। তালগাছ বলাকাদের সাথে উড়ে যেতে চায়, কিন্তু পারে না। একলা গাছ বৃথা আঁকুপাঁকু করে।

১০.৫ তারপর একদিন তাদের সুন্দর বাসাটি বেঁধে নেয়। (কারা? কোথায় ? কী দিয়ে ?)

উঃ। তারপর বাবুই পাখি দুটি তালগাছের ডালে কুটোকাটা দিয়ে তাদের সুন্দর বাসাটি বেঁধে নেয়।


১১। শিক্ষিকা/শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তালগাছ কবিতাটি এই পাঠের শেষে মিলিয়ে পড়ো

উঃ। শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে নিজেরা করো।


১২। তোমার সবথেকে প্রিয় বন্ধু সম্বন্ধে চার-পাঁচটি বাক্য লেখো

উঃ। আমার প্রিয় বন্ধু অমল। আমরা এক ক্লাসে পড়ি ও এক পাড়ায় থাকি। রোজ আমরা একসাথে স্কুলে যাই‌বিকেলবেলা একসাথে খেলি। আমরা দুজনে নিজেদের যে কোনো কথা একে অপরকে জানাই ।

১৩। নীচের ছবি দুটির মধ্যে অন্তত ছটি অমিল খুঁজে বের করো 

উঃ। ১। বাবুই পাখির বাসার সংখ্য দুটি/একটি। ২। তালগাছের সংখ্যা একটি/দুটি। 

৩। মেঘের সংখ্য দুটি/একটি

৪। পাখির সংখ্যা দুটি/একটি। 

৫। কচুপাতার সংখ্যা পাঁচটি/চারটি। 

৬। ঘরের সংখ্যা দুটি/একটি।


হাতে কলমের বাইরে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :

■ প্রশ্ন:- তেপান্তরের মাঠে একলা কে বেড়ে উঠল? 

উঃ। তেপান্তরের মাঠে একলা তালগাছ বেড়ে উঠল।


■ প্রশ্ন:-বন কোথায় দেখা যায়? 

উঃ । দূরে মাঠের শেষে বন দেখা যায়।

প্রশ্ন:-বনে কী দেখা যায়? 

উঃ । বনে দেখা যায় লতাপাতা সব গলাগলি করে আছে।


প্রশ্ন:-দূর থেকে লতাপাতাদের সব কেমন দেখায় ?

 উঃ । দূর থেকে লতাপাতাদের সব ঘন নীল ছায়ার মতো দেখায়।


প্রশ্ন:-আকাশে কী দেখা যায়? 

উঃ । আকাশে সব তারা ঘেঁষাঘেঁষি করে ঝিলমিল করছে দেখা যায়।




প্রশ্ন:-ফুলের গন্ধ কার সাথি হয়ে আসে? 

উঃ। ফুলের গন্ধ হাওয়ার সাথি হয়ে আসে।


প্রশ্ন:-মেঘের সঙ্গে কে আসে?

 উঃ। মেঘের সঙ্গে আসে বিদ্যুল্লতা।


 ■প্রশ্ন:-বিদ্যুল্লতাকে দেখতে কেমন?

 উঃ । বিদ্যুল্লতাকে দেখতে অপরূপ সুন্দরী।


প্রশ্ন:-বলাকারা কেমনভাবে যায়? 

উঃ। বলাকারা পারিজাতের হারের মতো সার বেঁধে যায়।


প্রশ্ন:-তালগাছ কীভাবে তাদের ডাকে?

উঃ। তালগাছ তার পাতাগুলো নেড়ে নেড়ে তাদের ডাকে।


 ■প্রশ্ন:-প্রশ্ন:-কারা তালগাছে আসা যাওয়া করতে লাগল ? 

উঃ । দুটি বাবুই পাখি তালগাছে আসা যাওয়া করতে লাগল।


 ■প্রশ্ন:-তারা মিছিমিছি কী করত?

 উঃ। তারা মিছিমিছি বকাবকি করত।


 ■প্রশ্ন:-বাবুইরা কী দিয়ে বাসা বাঁধল ? 

উঃ। বাবুইরা কুটোকাটা দিয়ে বাসা বাঁধল।


 ■প্রশ্ন:-তারা কোথা থেকে কুটোকাটা পেল?

 উঃ। তারা মাঠ থেকে কুটোকাটা পেল।


প্রশ্ন:-তালগাছ বাবুইদের পেয়ে কী ভাবল? 

উঃ। তালগাছ বাবুইদের পেয়ে ভাবল সে সাথি পেয়েছে।



প্রশ্ন:- বনকে ঘন নীল ছায়ার মতো কেন বলা হয়েছে?

উঃ। বনের মধ্যে নানারকম গাছপালা ঘেঁষাঘেঁষি করে একসঙ্গে বেড়ে ওঠে। পাতাগুলোর রং সবুজ। দূর থেকে এদের দেখলে ঘন নীল ছায়ার মতো দেখায় ৷

প্রশ্ন:-হাওয়ার সাথি ফুলের গন্ধ — একথাটি বুঝিয়ে বলো।

উঃ। হাওয়া যখন বয় তার সাথে ফুলের গন্ধ ভেসে আসে। তাই ফুলের গন্ধকে হাওয়ার সাথি বলা হয়েছে।


■“প্রশ্ন:-বিদ্যুল্লতা অপরূপ সুন্দরী' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উঃ। বৃষ্টির সঙ্গে যখন আকাশে বিদ্যুৎ চমকায় তখন তাকে লতার মতো আঁকাবাঁকা দেখায়। তখন তাকে খুব সুন্দর দেখায়। তাই আকাশের বিদ্যুৎকে অপরূপ সুন্দরী বলা হয়েছে।


প্রশ্ন:- “পারিজাতের হারের মতো সার বেঁধে চলে' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উঃ। পারিজাত হল স্বর্গের এক কাল্পনিক ফুল। এর রং সাদা এবং দেখতে খুবই সুন্দর। আবার বলাকা অর্থাৎ বকের রং-ও সানা। শরৎকালে আকাশে বকেরা সার বেঁধে উড়ে যায়। এই বলাকার সার বেঁধে উড়ে যাওয়ার সঙ্গে পারিজাত

ফুলের হারের (মালার) সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।


প্রশ্ন:- খেলাঘর ছেড়ে পাখিরা উড়ে যাবার পর তালগাছ কী করল ?

উঃ। খেলাঘর ছেড়ে পাখিরা উড়ে গেলে সবুজ পাতা গাঁথা শূন্য বাসা নিয়ে তালগাছ দোলা দিতে থাকে আর চুপচাপ করে কী যেন ভাবতে থাকে।


প্রশ্ন:-বিপরীত শব্দ লেখো : ঘন, একলা, প্রাণ, সুন্দর, শূন্য, মিছিমিছি।

ঘন-পাতলা 

একলা-অনেকে। 

প্রাণ - নিষ্প্রাণ। 

সুন্দর-কুৎসিত। 

শূন্য-পূর্ণ। 

মিছিমিছি — সত্যিসত্যি।