'নাটোরের কথা' অষ্টম শ্রেণী বাংলা, হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর /NATORER KATHA class 8 bangla - school book solver

Pages

Friday, 28 March 2025

'নাটোরের কথা' অষ্টম শ্রেণী বাংলা, হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর /NATORER KATHA class 8 bangla

 


অষ্টম শ্রেণীর বাংলা

গল্প : নাটোরের কথা

লেখক ঃ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর


লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিচিতি :- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম হয় ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে ৭ আগস্ট। তিনি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্র। তিনি  ক্যালকাটা স্কুল অফ আর্ট-এ যোগ দেন।পর তিনি  ইউরোপীয় কায়দায় ছবি আঁকা শেখেন।

তাঁর আঁকা ছবি গুলি সাধনা' ও 'চিত্রাঙ্গদা' পত্রিকায়  বের হয়। তার লেখা গ্রন্থ গুলির মধ্যে অন্যতম গ্রন্থ গুলি হলো-ক্ষীরের পুতুল’, ‘নালক', 'রাজকাহিনী', ভূতপরীর দেশ, শকুন্তলা, খাজাঞির খাতা, আলোর ফুলকি, বুড়ো আংলা ইত্যাদি। তিনি ১৯৪২ সালে তিনি, বিশ্বভারতীর আচার্য-পদ গ্রহণ করেন। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে ৫ ডিসেম্বর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


সারাংশ : অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর তরুণ বন্ধুরা স্বদেশি আমলে প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স উপলক্ষে একবার নাটোর যান। নাটোর বাংলাদেশের একটি জায়গা। সেখানে রিসেপশান কমিটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন মহারাজার জগদিন্দ্রনাথ। ট্রেনে করে সারাঘাট পৌঁছে সেখান থেকে স্টিমারে যেতে হয়। অবনীন্দ্রনাথ ও তাঁর তরুণ বন্ধুরা ছাড়াও কংগ্রেসের অনেক নামকরা নেতা ছিলেন এবং ছিলেন স্বয়ং তরুণ রবীন্দ্রনাথ। লেখক সহ অন্য সকলের জন্য নাটোরের মহারাজা অত্যন্ত ভালো বন্দোবস্ত করেছিলেন। অবনীন্দ্রনাথ ও তাঁর বন্ধুরা প্রত্যেকেই ভোজনরসিক। আবার প্রভিনসিয়াল কংগ্রেসের যে সভায় তাঁরা সবাই যোগ দিতে গেছিলেন সেখানে তাদের সঙ্গী বহু নামজাদা কংগ্রেসি নেতাদের অনেকেই ছিলেন ভোজনরসিক। স্টিমারে যাবার পথে সেইসব

নামজাদা নেতারাই বহু খাবার আগেভাগে বেশি বেশি খেয়ে নেওয়ায় লেখকও তাঁর বন্ধুদের ভাগ্যে কিছুই জুটছিল না। নাটোরে পৌঁছে এলাহি আয়োজন দেখে তাঁরা অবাক হয়ে গেলেন। না চাইতেই সব জিনিস এসে যায়। লেখকরা বুঝলেন রাজ সমাদর কাকে বলে। এদিকে কংগ্রেসের

মিটিংয়ে তরুণাদল স্থির করেন যে তাঁরা সমস্ত বক্তৃতা বাংলায় দেবেন কিন্তু বয়স্ক নেতারা তাঁদের একথা মানতে রাজি হন না এবং ইংরেজিতেই বক্তৃতা দেওয়া শুরু করলে তরুণদল তাঁদের 'বাংলায় 'বাংলায় বলে থামিয়ে দেন। শেষে নামজাদা নেতারা বাংলাতেই বক্তৃতা দিতে বাধ্য হন। তখন লেখকদের উল্লাস দেখে কে! এভাবেই কনফারেন্সে বাংলা ভাষার প্রচলন হল। অর্থাৎ স্বদেশি যুগে এটাও একটা বিশেষ স্বরণীয় বিষয় যে তাঁরা সবকিছু এমনকি বক্তৃতাতেও স্বাদেশি ভাষার প্রচার করলেন এবং জিতে গেলেন।


উৎস- নাটোরের গল্পটি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা “ঘরোয়া” গ্রন্থ থেকে গৃহীত।


নাটোরের গল্পটি নামকরণের সার্থকতা :- নামকরণঃ লেখক নামকরণ করেন লেখাটির  এই গল্পের ঘটনাগুলো পুরোটাই ঘটেছে নাটোরে। কংগ্রেসের মধ্যে দুই দল একদল বয়স অন্যদল কমবয়সীদের নিয়েই এই ঘটনা, সমস্ত ঘটনাটি নাটোরে প্রভিনসিয়াল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া থেকে শুরু করে মিটিং অবধি ঘটেছে। নাটোরের রাজা জগদিন্দ্রনাথ স্বদেশি আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন। ফলে স্বদেশি করা মানুষজন তাঁর কাছে যথেষ্ট আতিথেয়তা লাভ করেছিলেন। অবনীন্দ্রনাথ ও তরুণের দল নাটোরের রাজাকে কেবল 'নাটোর' নামে সম্বোধন করতেন। এই আখ্যাংশটিতে একদিকে সম্মেলনে বাংলা ভাষায় গুরুত্ব এবং মর্যাদা রক্ষা কথা রয়েছে অন্যদিকে তেমনি যেমন নাটোরের মহারাজার আতিথেয়তার কথা বলা হয়েছে‌ ডিউটি গল্পটির সমগ্র ঘটনাটা বাংলাদেশের একটি জায়গা ন্যাটোর কে কেন্দ্র করে তাই সেদিক থেকে 'নাটোরের কথা' নামকরণটি সার্থক হয়েছে।



গল্পের ব্যাকরণ প্রশ্নের উত্তর


শব্দার্থ : স্বদেশি—নিজের দেশ সম্বন্ধীয়।

 ঘনিষ্ঠতা — অন্তরঙ্গতা। 

ঝোঁক-প্রবণতা। 

রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স-গোল টেবিল বৈঠক। জরির তাজ—জরি বসানো একপ্রকার টুপি। প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স – প্রাদেশিক সম্মেলন।

স্পিচ—বক্তৃতা। 

ব্যাগ্রতা—ব্যস্ততা। 

ফরমাশ – আবদার। 

চলতি — চালু।

 হোমরাচোমরা—সম্ভ্রান্ত।

চোগাচাপকান—লম্বা ঢিলে জামা। 

জাইগ্যানটিক দৈত্যাকৃতি। 

স্পেশাল – বিশেষ। 

হাঙ্গাম—ঝামেলা। 

নির্ভাবনা— ভাবনাহীন। 

ক্যাম্প- অস্থায়ী থাকার ব্যবস্থা।

 স্কেচ- পেন্সিলে আঁকা ছবি।

 ফরমাশ —–হুকুমমতো। 

মসলিন – মিহি কাপড়।

হালুইকর—মিষ্টি তৈরির কারিগর।

 তদারক করা— দেখাশুনা করা। 

পুডিং—ডিম ও দুধ দিয়ে তৈরি এক ধরণের মিষ্টি

খাবার। 

পাবলিকলি — জনসমক্ষে। 

বয়—যে খাবার পরিবেশন করে। 

ইন্দ্রপুরী – ইন্দ্রের প্রাসাদ, স্বর্গপুরী। মহাফূর্তি-ভীষণ আনন্দ। 

রাজসমাদর রাজার আদর। 

উল্লাস-উৎসাহ পূর্ণ চিৎকার। 

ছোকরা—অল্পবয়সী ছেলে।




★ হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

১.১ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।

উঃ। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা দুটি বই হলো 'রাজকাহিনী এবং 'নালক''।



১.২ তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে কোন্ সম্পর্কে সম্পর্কিত?

উঃ।  রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতা গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ।


২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :


২.১ আজ সকালে মনে পড়ল একটি গল্প – লেখকের অনুসরণে সেই 'গল্প'টি নিজের ভাষায় বিবৃত করো

উঃ। লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশের একটি গান নাটোরে স্বদেশিযুগে কীভাবে বিভিন্ন মিটিং-এ বাংলাভাষার প্রচলন করলেন সেই গল্পটিই উল্লেখ করেছেন।

নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথের নিমন্ত্রণে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তাঁর কাকা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং আরও কয়েকজন তরুণ বন্ধুদের সঙ্গে  প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সে যোগ দিতে নাটোরে যান। ওখানে যোগ দিতে তাঁদের সঙ্গে কংগ্রেসের বড়ো বড়ো নেতারাও গিয়েছিলেন। নাটোরের মহারাজ তাঁদের থাকা খাওয়ার যথেষ্ট বন্দোবস্ত করেন। সেখানে তাঁদের প্রত্যেকের জন্য বিশেষ বিশেষ বন্দোবস্ত ছিল। নাটোরের রাজা প্রত্যেকের সুখসুবিধার দিকে এতোটাই নজর রাখতেন যে কেউ অদ্ভুত আবদার করলেও তা পূরণ করতেন। যেমন লেখক একবার গরম সন্দেশের বায়না করলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি খাওয়ার ঘরের সামনে হালুইকর বসিয়ে গরম সন্দেশ তৈরি করে তা খাওয়ানোর বন্দোবস্ত করলেন। যেদিন প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সের সভা বসল,সেদিন সবাই গোল হয়ে টেবিল ঘিরে বসলেন আগে থেকেই ঠিক ছিল বাংলাভাষায় সভা করা হবে। রবীন্দ্রনাথ এই প্রস্তাব করলে ছোকরার দল তাঁকে সমর্থন করল। কংগ্রেসের নেতারা তাঁদের কথা মানলেন না। শেষপর্যন্ত দুটো দল হয়ে গেল। একদ বাংলায় বলবে অন্যদল ইংরেজিতে বলবে। এরপর রবীন্দ্রনাথের 'সোনার বাংলা' গানটি গাওয়া হলো। কিন্তু যখন প্রেসিডেন্ট

ইংরেজিতে স্পিচ দিতে আরম্ভ করলেন কমবয়সীদের দল ‘বাংলা’ 'বাংলা' বলে চেঁচাতে লাগল। শেষপর্যন্ত কেতাদুরস্ত ইংরেজি

জানা লালমোহন ঘোষ বাংলায় বক্তৃতা দিলেন। কনফারেন্সে বাংলা ভাষার প্রচলন হলো।


২.২ লেখকের বর্ণনা অনুযায়ী, তখনকার নাটোরের মহারাজার নাম কী ছিল ?

উঃ। লেখকের বর্ণনা অনুযায়ী, তখনকার নাটোরের মহারাজার নাম ছিল জগদিন্দ্রনাথ রায়। 


২.৩ তিনি কোন্ 'রিসেপশন কমিটি'র প্রেসিডেন্ট ছিলেন?

উঃ। তিনি প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সের রিসেপশন কমিটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

২.৪ নাটোর নেমন্তন্ন করলেন........ সেই নেমন্তন্নের তালিকায় কাদের নাম ছিল বলে লেখক স্মরণ করতে পেরেছেন?

উঃ।  নেমন্তন্নের তালিকায় ছিলেন লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কাকা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং ঠাকুরবাড়ির অন্যান্য ছেলের দল। তাছাড়া ন্যাশনাল কংগ্রেসের চাঁই অবনীন্দ্রনাথের ন-পিসেমশাই জানকীনাথ ঘোষাল, ডব্ল সি ব্যানার্জি, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, অবনীন্দ্রনাথের মেজোজ্যাঠামশাই, লালমোহন ঘোষ প্রমুখরা তালিকায় নিমন্ত্রিত অতিথির তালিকায় ছিলেন।



২.৫ রওনা হলুম সবাই মিলে হৈ হৈ করতে করতে।–কোথায় রওনা হলেন? নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথের আমন্ত্রণে কীভাবেই বা রওনা হলেন ?

উঃ। নাটোরের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর তরুণ সঙ্গীর দল  নাটোরের মহারাজা তাদের জন্য বিশেষ ট্রেনের এবং পরে স্টিমারের বন্দোবস্ত করেছিলেন। চোগাচাপকান এবং ধুতি পাঞ্জাবি বাক্সে গুছিয়ে নিয়ে খুশিমনে মহারাজার ব্যবস্থা করা বিশেষ ট্রেনে চেপে তাঁরা রওনা হলেন।



২.৬ সরাঘাট থেকে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা কোন্ নদীতে স্টিমার চড়েছিলেন?

উঃ। সরাঘাট থেকে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা পদ্মানদীতে স্টিমারে চড়েছিলেন।


২.৭ স্টিমারে খাওয়া-দাওয়ার প্রসঙ্গ আলোচনায়, লেখকের সরস মনের পরিচয় কীভাবে ...উঠেছে তা বুঝিয়ে দাও।

উঃ। লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্টিমারে খাওয়া- দাওয়ার বিষয়ে সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। নাটোরের রাজার তত্ত্বাবধানে তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার এলাহি বন্দোবস্ত ছিল। তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী খাবার টেবিলের একদিকে বড়ো ও বিখ্যাতরা, লেখক যাঁদের চাঁই বলেছেন আর অন্যদিকে ছোটোরা । তিনি ও তাঁর অপর সঙ্গী দীপুদা দুজনেই খাদ্যরসিক ছিলেন। ফলে তাঁরা। লোভনীয় খাবারের আশায় উদ্‌গ্রীব হয়ে আছেন। কিন্তু একজন হোমরাচোমরা নেতা এমন ছিলেন যে তাঁর কাছে ‘বয়রা খাবার নিয়ে গেলেই তিনি বেশি বেশি খাবার পাতে তুলে নিচ্ছেন। এভাবে কাটলেট আনায় একসঙ্গে অনেকগুলো তুলে নিলেন। ফলে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা কম পেলেন। এরপর পুডিং আসাতে তাঁরা বেশ খানিকটা খাবার আশা করলেন কিন্তু সেই হোমরাচোমরা নেতা অর্ধেকের বেশি নিজের পাতে তুলে নিলেন। লেখক মজা করে এই খাওয়াটিকে বলেছেন ‘জাইগ্যানটিক'

খাওয়া। শেষপর্যন্ত লেখক ও তাঁর বন্ধুদের জন্য আলাদা জায়গায় ও সেই হোমরাচোমরা ব্যক্তির জন্য আলাদা জায়গায় খাবার এল। এইভাবে লেখক অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে খাবার সম্বন্ধে বর্ণনাটি যে সরসতার সঙ্গে করেছেন তা পাঠকের মন ছুঁয়ে যায়।


২.৮ ‘যেন ইন্দ্রপুরী।—কীসের সঙ্গে ইন্দ্রপুরী'র তুলনা করা হয়েছে? কেনই বা লেখক এমন তুলনা করেছেন?

উঃ। নাটোরের রাজপ্রাসাদটিকে ইন্দ্রপুরীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

লেখক নাটোর প্রাসাদে যখন পৌঁছোলেন তখন দেখলেন সেখানে রাজপ্রাসাদের বিশালতা তার বৈঠকখানা, ঝাড়লণ্ঠন,দামি ফুলদানি

তাকিয়া, সুন্দর ও কার্পেট ইত্যাদি  জিনিসে বাড়ি ও বৈঠকখানাটি সাজানো। সে সবের তুলনা

কেবল ইন্দ্রপুরী অর্থাৎ দেবতাদের রাজা ইন্দ্রের প্রাসাদের সঙ্গেই তুলনীয়। তাই লেখক নাটোরের রাজবাড়িটিকে ইন্দ্রপুরীর সঙ্গে তুলনা করেছেন।


২.৯ ‘একেই বলে রাজ সমাদর। —উদ্ধৃতিটির আলোকে নাটোরের মহারাজার অতিথি- বাৎসল্যের পরিচয় দাও ৷

উঃ। লেখক আলোচ্য উক্তির মাধ্যমে নাটোরের মহারাজার অসাধারণ আতিথেয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। নাটোরের মহারাজা তাদের জন্য আলাদা ট্রেনের বন্দোবস্ত করে দেন এবং তাঁদের দেখাশোনা ও জিনিসপত্র বহন করার জন্য লোকের ব্যবস্থাও করেন। তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার এক অভাবনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এরপর স্টিমারে করে পদ্মা পার হবার সময় স্টিমারেও নানা সুখাদা পরিবেশনের ব্যবস্থা ছিল। এরপর তারা যখন নাটোরের প্রাসাদে এলেন তখন সেখানে তাঁদের থাকা ও খাওয়া-দাওয়ার এলাহি ব্যবস্থা ছিল। স্বয়ং মহারানি অতিথিদের জন্য পিঠে পায়েস করে দিয়েছিলেন। হালুইকর

দিয়ে তাদের পছন্দমতো খাবার, মিষ্টি ও নানা সুখাদ্যের সমারোহ ছিল। চাকর এসে ভোরবেলাতে বিছানার মধ্যেই হাতে গড়গড়ার নল গুঁজে দিত। সব মিলিয়ে আতিথেয়তা ছিল তুলনাহীন। তাই লেখক একে রাজসমাদর বলেছেন।


২.১০ 'নাটোরের খুব আগ্রহ – কোন্ প্রসঙ্গে তাঁর আগ্রহের কথা এখানে বলা হয়েছে?

উঃ। অবনীন্দ্রনাথ ছিলেন শিল্পী। তিনি নাটোরে গিয়ে সেখানকার রাজবাড়ি, গ্রামের পুরোনো বাড়িঘর, মন্দির ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন এবং তার বিভিন্ন স্কেচ করছিলেন।  নাটোরের মহারাজ এই ছবি আঁকার বিষয়ে খুবই আগ্রহী ছিলেন। তাঁর স্কেচগুলি পছন্দ হয় এবং তিনি লেখককে আরও স্কেচ করে দেবার জন্য অন্দরমহলে রানি ভবানির অন্দরমহলে নিয়ে যান। এই প্রসঙ্গেই লেখক মহারাজার স্কেচ বিষয়ে আগ্রহের কথা বলেছেন।



২.১১ আগে থেকেই ঠিক ছিল'—আগে থেকে কী ঠিক থাকার কথা বলা হয়েছে? সেই উপলক্ষ্যে কোন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কথা পাঠ্যাংশে রয়েছে, তা আলোচনা করো।

উঃ। লেখকও তাঁর সহযোগীরা আগে থেকেই ঠিক করেছিলেন যে প্রভিনশিয়াল কনফারেন্স

বাংলা ভাষায় হবে এবং। তাঁরা বাংলাভাষায় বক্তৃতা করবেন। কিন্তু লেখকের কাকা রবীন্দ্রনাথ

এই প্রস্তাব তুলতেই প্রস্তাবটি প্রথমে খারিজ হয় ও পরে স্থির হয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যান্য

কনফারেন্সের মতোই ইংরেজিতে বক্তৃতা হবে। এই নিয়ে দু-পক্ষ বাদানুবাদ করতে থাকেন।

অনেক তর্কবিতর্কের পর শেষে দুদলে তারা ভাগ হয়ে যায়। বড়োরা চাইলেন কনফারেন্স ইংরাজিতে হোক আর ছোটোদের ইচ্ছা ছিল বাংলা ভাষায় হোক। রবীন্দ্রনাথের সোনার বাংলা গানটি দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বড়োরা ইংরাজিতে বক্তৃতা শুরু করতেই ছোটোরা ‘বাংলা’“বাংলা” বলে চিৎকার করতে থাকে। নেতাদের মধ্যে লালমোহন ঘোষ ছিলেন সুবক্তা। তিনি ইংরেজি ও বাংলা দুটি ভাষাতেই আশ্চর্য দক্ষ ছিলেন। সেই লালমোহন ঘোষ শেষ অবধি মঞ্চে উঠে বাংলায় সুন্দর বক্তৃতা দিলেন। তখন লেখকদের উল্লাস ও জয়জয়কার ছিল দেখার মতো। এই প্রথম বাংলা ভাষার জন্য লড়াই করে তাঁরা জয় লাভ করেছিলেন। শেষে সকলেই এই প্রস্তাব মেনে নেয় এবং কনফারেন্সে 'বাংলা' ভাষার প্রচলন হয়।



২.১২ নাটোরে প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন্ গানটি পরিবেশন করেছিলেন?

উঃ। নাটোরের প্রভিনশিয়াল কনফারেন্সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'আমার সোনার বাংলা' গানটি পরিবেশন করেছিলেন।


২.১৩ 'আমাদের তো জয়জয়কার। '—কী কারণে লেখক ও তাঁর সঙ্গীদের ‘জয়জয়কার' হলো?

উঃ। লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সে স্থির করেন বাংলায় বক্তৃতা করবেন। কিন্তু বড়োরা স্থির করেন যে, ইংরেজিতেই বক্তৃতা করবেন উভয় দলের মধ্যে দারুণ তর্কবিতর্ক হলো। দু-দলে তাঁরা ভাগ হয়ে গেলেন। যখন প্রেসিডেন্ট বক্তৃতা করতে উঠলেন তখন ছোকরারা ‘বাংলা’ 'বাংলা' বলে চিৎকার করে থামিয়ে দিলেন। শেষ পর্যন্ত ইংরেজিতে অসাধারণ বক্তৃতা দিতে পারতেন যিনি সেই লালমোহন ঘোষ বাংলায় বক্তৃতা দিলেন। তরুণদের জয়জয়কার হলো এবং কনফারেন্সে বাংলা ভাষা প্রচলিত হলো।


২.১৪ সেই প্রথম আমরা পাবলিকলি বাংলা ভাষার জন্য লড়লুম।' – লেখকের অনুসরণে সেই 'লড়াই'-এর বিশদ বিবরণ দাও

উঃ। লেখক ও তাঁর তরুণ সঙ্গীরা রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে নাটোরে গিয়েছিলেন প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সে যোগ দিতে।

সেখানে রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে তরুণের দল বাংলাভাষায় বক্তৃতার প্রস্তাব করেন। কিন্তু প্রবীণের দল যথারীতি ইংরেজিতে বক্তৃতার কথা বললেন। এরফলে দুই পক্ষে তুমুল তর্কাতর্কি হয়। একটা সময় বাংলার পক্ষে ও বিপক্ষে দুই দলে তাঁরা ভাগ হয়ে যান। শেষাবধি তরুণ দলের জয় হলো এবং বাংলা ভাষাতেই বক্তৃতা হলো। রবীন্দ্রনাথের 'সোনার বাংলা' গানটি। গাওয়া হলো। অবশেষে সবাই হার মেনে বাংলা ভাষায় সম্মেলন হওয়ার প্রস্তাবটি মেনে নিলেন এবং সভার কাজও বাংলাতেই সম্পন্ন হলো। এইভাবে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা বাংলা ভাষার জন্য প্রথম পাবলিকলি লড়াই করেছিলেন।



৩. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো ঃ

৩.১ আজ সকালে মনে পড়ল একটি গল্প—সেই প্রথম স্বদেশি যুগের সময়কার, কী করে আমরা বাংলা ভাষার প্রচলন করলুম। (জটিল বাক্যে)

উঃ। আজ যখন সকাল হলো তখন মনে পড়ল একটি গল্প—যা স্বদেশিযুগের সময়কার, কী করে আমরা বাংলাভাষার প্রচলন শুরু করলুম।


৩.২ ভূমিকম্পের বছর সেটা। প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স হবে নাটোরে। (বাক্যদুটিকে জুড়ে লেখো)

উঃ। ভূমিকম্পের বছরে প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স হবে নাটোরে।


৩.৩ নাটোর নেমন্তন্ন করলেন আমাদের বাড়ির সবাইকে। (যৌগিক বাক্যে )

উঃ। নাটোর নেমন্তন্ন করলেন এবং আমরা সবাই নিমন্ত্রিত হলুম।


৩.৪ আরো অনেকে ছিলেন—সবার নাম কি মনে আসছে এখন। (না-সূচক বাক্যে )

উঃ। আরো অনেকে থাকলেও সবার নাম এখন মনে আসছে না।


৩.৫ নাটোর বললেন যে, কিছু ভাবার দরকার নেই সব ঠিক আছে। (পরোক্ষ উক্তিতে)

উঃ। নাটোর জানালেন, সব ঠিক থাকার কথা, ভাবনা নিষ্প্রয়োজন।


৩.৬ অমন ‘জাইগ্যানটিক' খাওয়া আমরা কেউ কখনো দেখিনি। (নিম্নরেখ শব্দটির পরিবর্তে বাংলা শব্দ ব্যবহার করে বাক্যটি আবার লেখো

উঃ। অমন রাক্ষুসে খাওয়া আমরা কেউ কখনো দেখিনি।


৩.৭ ছোকরার দলের কথায় আমলই দেন না। (হ্যাঁ-সূচকবাক্যে) উঃ। ছোকরার দলের কথায় কি আমল দেওয়া যায় ? ।


৩.৮ ন-পিসেমশাই জানকীনাথ ঘোষাল রিপোর্ট লিখছেন আর কলম ঝাড়ছেন। (বাক্যটিকে দুটি বাক্যে ভেঙে লেখো

উঃ। ন-পিসেমশাই জানকীনাথ ঘোষাল রিপোর্ট লিখছেন। রিপোর্ট লেখার সময় তিনি কলম ঝাড়ছেন ।


৩.৯ গরম গরম সন্দেশ আজ চায়ের সঙ্গে খাবার কথা আছে যে অবনদা। (নিম্নরেখ শব্দের প্রকার নির্দেশ করো এবং অর্থ এক রেখে অন্য শব্দ ব্যবহার করে বাক্যটি আবার লেখো)

উঃ। নিম্নরেখ শব্দটি বিশেষণ এবং শব্দদ্বৈত। টাটকা টাটকা। সন্দেশ আজ চায়ের সঙ্গে খাবার কথা আছে যে অবনদা ৷


৩.১০ হাতের কাছে খাবার এলেই তলিয়ে দিতেম। (জটিল বাক্যে)

উঃ।" হাতের কাছে যে খাবার আসত তখনই তলিয়ে দিতেম।


৪. নীচের বাক্যগুলি থেকে সন্ধিবদ্ধ শব্দগুলি খুঁজে নিয়ে সন্ধি বিচ্ছেদ করো :


৪.১ স্টিমারে নির্ভাবনায় উঠে গেলুম। 

উঃ। নির্ভাবনায় = নিঃ + ভাবনায়।


৪.২ তিনি অর্ধেকের বেশি নিজের প্লেটে তুলে নিলেন।

উঃ। অর্ধেকের = অর্থ + একের।


. নীচের শব্দগুলির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার করো ঃ হাঙ্গাম, আপসোস, চান, তক্কাতক্কি, জিজ্ঞেক্স।

উঃ। হাঙ্গাম = হাঙ্গামা > হাঙ্গাম; (ধ্বনিলোপ)

চান = স্নান = চান; (বর্ণবিকার)

জিজ্ঞে = জিজ্ঞাসা > জিজ্ঞেস; (স্বরসঙ্গতি)

আপসোস = আফশোস > আপসোস; (ব্যঞ্জনধ্বনি পরিবর্তন)

তক্কাতক্কি = তর্কাতর্কি > তক্কাতক্কি; (পরাগত সীমাভবন)


৬. নীচের শব্দগুলির প্রকৃতি-প্রত্যয় নির্দেশ করো ঃ স্বদেশি, জিজ্ঞাসা, ঢাকাই।

উঃ। স্বদেশি = স্বদেশ + ই (ই-প্রত্যয় যোগ)

ঢাকাই = ঢাকা + আই (আই-প্রত্যয় যোগ)

জিজ্ঞাসা = ঞ + সন্ (অ+আ) (আ-প্রত্যয় যোগ)


৭. ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো ঃ চোগাচাপকান, বিছানাবাক্স, ইন্দ্রপুরী, রাজসমাদর, গল্প-গুজব, অন্দরমহল।

উঃ চোগাচাপকান যা চোগা তাই চাপকান; (কর্মধারয় সমাস)

ইন্দ্রপুরী ইন্দ্রের পুরী; (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)

গল্প-গুজব—গল্প ও গুজব: (সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস)


৮. কোনটি কী ধরনের সর্বনাম তা লেখো :

আমরা, সেটা, তাঁকে, সবাই, তিনি, আমি, এটা

বিছানা বাক্স - বিছানা ও বাক্স; (দ্বন্দ্ব সমাস)

রাজসমাদর রাজার সমাদর; (উপমীত কর্মধারয় সমাস)

অন্দরমহল— অন্দরের ন্যায় মহল, (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)

উঃ। আমরা—ব্যক্তিবাচক। সেটা—নির্দেশক। তাঁকে ব্যক্তিবাচক। সবাই—সমষ্টিবাচক। তিনি—ব্যক্তিবাচক।

আমি—ব্যক্তিবাচক। এটা —নির্দেশক।



 অতিরিক্ত প্রশ্ন  উত্তর


প্রশ্ন :- নীচের সর্বনামগুলির শ্রেণিবিভাগ করো :,

তুই, এগুলি, কোন্‌টা, কী, কোনোকিছু, ওটা, অন্য, সবকিছু, আপন, যিনি।

উঃ। সবকিছু—সাকল্যবাচক

কোন্‌টা—প্রশ্নবাচক


কী—প্রশ্নবাচক

কোনোকিছু—–অনির্দেশক

অন্য—অন্যদিবাচক

ওটা—নির্দেশক

যিনি সংযোগবাচক

আপন—আত্মবাচক

তুই — ব্যক্তিবাচক

এগুলি নির্দেশক


প্রশ্ন :- ডবলিউ. সি. বোনার্জি ও সুরেন্দ্র বাঁড়ুজ্জে কে ছিলেন?

উঃ। ডবলিউ. সি. বোনার্জি হলেন উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুরেন্দ্র বাঁড়ুজ্জে হলেন রাষ্ট্রগুরু

সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। এঁরা দুজন জাতীয় কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতা ছিলেন।


 প্রশ্ন :-লেখকেরা কীভাবে নাটোরে গিয়েছিলেন? 

উঃ। লেখকেরা প্রথমে বিশেষ ট্রেনে এবং পরে স্টিমারে করে পারাপার হয়ে নাটোরে গিয়েছিলেন।



প্রশ্ন :-সোনার বাংলা” গানটির রচয়িতা কে? 

উঃ । 'সোনার বাংলা' গানটির রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।


প্রশ্ন :-. নাটোরের রানিমা কোন খাবার তৈরি করে পাঠিয়ে ছিলেন?

উঃ। নাটোরের রানিমা নিজের হাতে পিঠে পায়েস তৈরি করে পাঠিয়ে ছিলেন।


প্রশ্ন :- পার্লামেন্টারি বক্তা কে ছিলেন

উঃ। লালমোহন ঘোষ ছিলেন পার্লামেন্টারি বক্তা।


প্রশ্ন :- নাটোর কোথায়? 

উঃ । নাটোর বর্তমান বাংলাদেশের একটি স্থান।


প্রশ্ন :-অবনীন্দ্রনাথের কাকার নাম কী? 

উঃ। অবনীন্দ্রনাথের কাকার নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।


প্রশ্ন :- অবনীন্দ্রনাথের ন-পিসেমশাই কে ছিলেন?

উঃ। জানকীনাথ ঘোষাল ছিলেন অবনীন্দ্রনাথের ন-পিসেমশাই।


প্রশ্ন :- লেখকদের সঙ্গে কোন্ রাজনৈতিক দলের লোক ছিলেন?

উঃ। লেখকদের সঙ্গে ন্যাশনাল কংগ্রেসের লোকজন ছিলেন।


.প্রশ্ন :- নাটোরের ছোটো তরফের রাজার সাজ কেমন ছিল?

উঃ। নাটোরের ছোটো তরফের রাজার মাথায় ছিল জরির তাজ, পরনে ছিল ঢাকাই মসলিনের চাপকান।


প্রশ্ন :- নাটোরের রানির নাম কী? 

উঃ । নাটোরের রানির নাম রানি ভবানী।


 প্রশ্ন :-নাটোর' লেখক কে কী ফরমাশ করতে লাগলেন?

উঃ। নাটোর লেখক অবনীন্দ্রনাথকে প্রায়ই এটা ওটা স্কেচ করে দেবার জন্য ফরমাশ করতে লাগলেন।


 প্রশ্ন :-ন-পিসেমশাই ছোটো তরফের রাজার কী অবস্থা করেছিলেন?

উঃ। ন-পিসেমশাই রিপোর্ট লিখতে বসে তাঁর কলম ঝাড়ার জন্য কালি ছিটিয়ে ছোটো তরফের রাজার সাজ কালো বুটিদার কারে দিয়েছিলেন।

প্রশ্ন :- গল্পটি ইতিহাসের কোন্ বিশেষ সময়ের? 

উঃ। গল্পটি স্বদেশি যুগের সময়কার।


প্রশ্ন :- ‘নাটোর’ কোন ব্যাপারে বিশেষ উৎসাহী ছিলেন?

 উঃ। নাটোর গানবাজনার ব্যাপারে বিশেষ উৎসাহী ছিলেন।




প্রশ্ন :-'দলের যে যা খেয়াল করছে নাটোর তৎক্ষণাৎ তা পূরণ করছেন' লেখকের কোন্ খেয়াল নাটোর কীভাবে পূরণ করেছিলেন লেখো।

উঃ। নাটোরে এসে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা মহাফুর্তিতে কাটাচ্ছিলেন। ফূর্তির চোটে লেখকের মাথায় এক অদ্ভুত খেয়াল এসেছিল। তিনি নাটোরের রাজাকে বলেছিলেন কী সব সন্দেশ খাওয়াচ্ছেন যা টেবিলে আনতে আনতে ঠান্ডা হয়ে যায়।

তাই গরম সন্দেশ গরম চায়ের সঙ্গে খাওয়ান দেখি। এই শুনে সবাই হেসে উঠলেও নাটোর অর্থাৎ রাজা জগদিন্দ্রনাথ তৎক্ষণাৎ হুকুম দেন যে হালুইকররা খাবার ঘরের দরজার সামনে বসে থাকবে আর ঠিক খাবার সময়ে গরম গরম সন্দেশ তৈরি করে দেবে।



প্রশ্ন :- রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে কে কীভাবে বসেছিলেন?

উঃ। কনফারেন্সে একটি টেবিলকে ঘিরে গোল হয়ে সবাই বসলেন, লেখকের মেজো জ্যাঠামশাই প্রিসাইড করেছিলেন, ন-পিসেমশাই জানকীনাথ ঘোয়াল রিপোর্ট লিখছিলেন আর কলম ঝাড়ছিলেন। তাঁর পাশে বসেছিলেন নাটোরের ছোটো তরফের রাজা।


প্রশ্ন :- রবিকা প্রস্তাব করলেন'—রবিকাকা কী প্রস্তাব করলেন? তার সঙ্গে কারা |

একমত ছিলে? আর কারা কেনই বা তার বিরোধিতা করলেন?

উঃ। লেখারে রবিকাকা অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রস্তাব করলেন প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স

বাংলা ভাষায় হবে। লেখক । তাঁর সমবয়সী সঙ্গীরা সবাই রবিকাকার দলে ছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন নিশ্চয়ই প্রট্রিনসিয়াল কনফারেন্সে বাংলা ভাষার স্থান হওয়া দরকার। এজন্য তারা শেষ পর্যন্ত লড়তে চায় একথা তাঁরা রবিকাকাকে অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথকে বলেছিলেন।

লেখকের ভাষাই চাইরা অর্থাৎ হোমরাচোমরা নেতারা এর বিরোধিতা করলেন। ছেলে-ছোকরার দলের কথায় তাঁরা আমলই দিতে চাইলেন না। তাঁদের বক্তব্য ছিল যেমন

কংগ্রেসে হয় তেমনই এখানে সবকিছু ইংরাজিতে হবে।




 প্রশ্ন :-“তিনি শেষটান উঠে বাংলায় করলেন বক্তৃতা—এখানে কার কথা বলা হয়েছে?

উঃ। লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন লালমোহন ঘোষ ছিলেন পার্লামেন্টারি বক্তা। তিনি বড়ো ভালো লোক ছিলেন কিন্তু তিনি ঘোরতর ইংরেজি কেতাদুরস্ত, তাঁর মতো ইংরেজিতে বক্তৃতা কেউ করতে পারতেন না। শেষ অবধি প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সে তিনি উঠে বাংলায় বক্তৃতা করলেন। যেমন তিনি ইংরেজিতে বলতেন সেইরকমই সুন্দর বক্তব্য তিনি বাংলাতেও বললেন।


প্রশ্ন :-প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সে বাংলা ভাষা প্রচলনের চেষ্টা করা হয়েছিল কেন?

উঃ। সেই সময় দেশে চলছিল ইংরেজ রাজত্ব। দেশের জনগণ তখন ইংরেজ শক্তিকে তাড়িয়ে দেশকে স্বাধীন করার ব্রত নিয়েছিল। বিদেশি দ্রব্য বর্জন করে স্বদেশি দ্রব্য, স্বদেশি ভাষার গান প্রচলনের চেষ্টা চলেছিল। তাই রবীন্দ্রনাথ সহ লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা বিদেশি ভাষা বর্জন করে দেশীয় কনফারেন্সে বাংলা ভাষা প্রচলনের চেষ্টা করেছিলেন।


বিপরীত শব্দ : স্বদেশি–বিদেশি। 

প্রকাণ্ড- ক্ষুদ্র। 

উৎসাহী – নিরুৎসাহী। 

আগ্রহ – অনাগ্রহ। 

সুন্দর-অসুন্দর।

চলিত— সাধু। 

নির্ভাবনা—দুর্ভাবনা। 

নিখুঁত-খুঁত।