অষ্টম শ্রেণি বাংলা গাছের কথা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর / Gaachher katha classic bangla
অষ্টম শ্রেণীর বাংলা সাহিত্য
পঞ্চম পাঠ
প্রবন্ধ : গাছের কথা
লেখক ঃ জগদীশচন্দ্র বসু
লেখক জগদীশচন্দ্র বসুর পরিচিতি:- : জগদীশচন্দ্র বসু ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে অধুনা বাংলাদেশের অর্ন্তগত বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেনজন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট পদার্থবিদ ও জীববিজ্ঞানী।তাঁর বাল্যশিক্ষা শুরু হয় ফরিদপুর গ্রামে। তিনি ১৮৭০ সালে তিনি কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে ভরতি হন। সেখান থেকে বি.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ইংল্যান্ড যাত্রা করেন। সাহিত্য অনুরাগী জগদীশচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশেষ অন্তরঙ্গ ছিলেন। তিনি ১৩২৩-১০২৫ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ছিলেন। ১৮৯৬ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে নানাবিধ বৈজ্ঞানিক গবেষণা স্বরূপ ডি.এস. সি. উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর রচিত বাংলা রচনাগুলি 'অব্যক্ত' গ্রন্থে সংকলিত হয়ে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। বাংলায় লেখা তাঁর চিঠিপত্রগুলি
পত্রাবলী নামে ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে গিরিডিতে শেষ নিঃশ্বাস করেন।
গাছের কথা গল্পের সারসংক্ষেপ -: গাছের কথা গল্পের লেখক যখন মাঠে কিংবা পাহাড়ে একা বেড়াতে যেতেন তখন তাঁর সবকিছু কেমন যেন খালি খালি লাগত। সেখানে তিনি গাছ, পাখি কীটপতঙ্গদের ভালোবাসতে শিখলেন, এরপর থেকে তিনি তাদের অনেক কথাও বুঝতে
শিখালেন। গাছ কোনো কথা বলে না কিন্তু গাছের সুন্দর জগৎ ও জীবন রয়েছে। তাদের মধ্যে সুখ, দুঃখ, আনন্দ, রোগ সবকিছুর অনুভূতি রয়েছে যা আমরা আগে বুঝতাম না। গাছের কোনো গতি দেখা যায় না, তা বলে এরা নির্জীব নয়। দুঃখ, কষ্টে পড়ে তারা অনেক সময় চুরিও করে। এরা ডালপালা মেলে ছড়িয়ে দেয়। বীজগুলির মধ্যে গাছের শিশু ঘুমিয়ে থাকে। মাটির উত্তাপ, জল পেলে বীজ থেকে শিশুর জন্ম নেয়। বীজের উপর ঢাকনা থাকে সেটা খুবই কঠিন, আকৃতিও নানা ধরনের হয়। বট একটি বিশাল বৃক্ষ অথচ তার বীজ অতি ক্ষুদ্র। এই ক্ষুদ্র বীজের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক বিশাল শক্তি। ঝড়ঝাপটা ও পাখিদের মলের সাথে গাছের বীজয়দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যেক বীজ থেকে যে গাছ জন্মাবে এমন কোনো কথা নেই। অঙ্কুর বের হতে গেলে চাই উত্তাপ, জল ও মাটি। বীজ যেখানে পড়ে সেখানে অনেক দিন পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকে। বেড়ে উঠবার মতো উপযুক্ত স্থান যতদিন না পার ততদিন বীজের বাইরের কঠিন ঢাকনা গাছের শিশুটিকে নানা বিপদ থেকে রক্ষা করে। গাছের বীজ বিভিন্ন সময় পাকে। আম, লিচু বৈশাখে পাকে, ধান, যব পাকে আশ্বিন-কার্তিক মাসে। বীজগুলি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়ে যায় কে বলতে পারে। তারা দীর্ঘদিন আমাদের চোখের বাইরে থাকতে পারে। পৃথিবী তাকে কোলে তুলে মাটির নীচে নিরাপদ আশ্রয় দেয়, ঝড়বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে, বীজটি নিরাপদে ঘুমিয়ে থাকে। বিধাতা এদের নিরাপদে রাখে।
গাছের কথা নামকরণে যথার্থতা বিচার কর:- জগদীশচন্দ্র বসু প্রমাণ করেছিলেন যে গাছেরও প্রাণ আছে। এই প্রবন্ধে লেখক গাছের মধ্যে প্রাণের লক্ষণ, অন্যান্য জীবের সঙ্গে তার সাদৃশ্য, বীজ থেকে গাছ জন্ম নেওয়ার যে পরিবেশ, এই সব নানা বিষয় আলোচনা করেছেন। সমগ্র রচনাটি তে গাছ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আমার মতে গাছের কথা নামকরণটি যথার্থ হয়েছে বলে মনে হয়।
শব্দার্থ : লক্ষণ-বৈশিষ্ট্য।
সদমুন- ভালোগুন।
জীবনমান - জীবন দিয়ে দেওয়া।
প্রভেদ - অমিল, পার্থক্য।
সর্বদা সবসময়।
স্বার্থত্যাগ – নিজের স্বার্থ ছেড়ে দেওয়া।
পার্শ্বে -পাশে।
সচরাচর -প্রায়ই।
জনমানবশূন্য - যেখানে মানুষ নেই এমন স্থান।
শুষ্ক শুকনো।
দেশ-দেশান্তর—
বেগ—গতি।
নিদ্রা —ঘুম।
চক্ষু—চোখ।
আগল – চোখের দৃষ্টির বাইরে।
হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১.১ জগদীশচঞ্জ বসুর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।
উঃ। জগদীশচন্দ্র বসুর লেখা একটি বইয়ের নাম হল অব্যক্ত ।
১.২ জগদীশচন্দ্র বসু কি আবিষ্কার করেছিলেন ?
উত্তর -জগদীশচন্দ্র বসু গাছের প্রাণ আছে এটা আবিষ্কার করেন ।
২। নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর একটি বাক্যে লেখো :
২.১ লেখক কবে থেকে গাছেদের কথা বুঝতে পারেন ?
উঃ। যেদিন থেকে লেখক গাছ, পাখি, কীটপতঙ্গদের ভালোবাসতে শিখেছেন, সেদিন থেকেই তিনি গাছেদের ভাষা বুঝতে শিখেছিলেন।
২.২ ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়।'—কী দেখা যায়?
উত্তর। মানুষের মধ্যে যে সমস্ত সদ্গুণ আছে, গাছেদের মধ্যেও কিছু কিছু সেই সদ্গুণ দেখা যায়।
২.৩ জীবিতের লক্ষণ কী তা লেখক অনুসরণে উল্লেখ করো।
উঃ। জীবিতের মূল লক্ষণ হলো গতি। যে বস্তু জীবিত সেটা ক্রমশই বাড়তে থাকে।
২.৪ বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।'—বৃক্ষশিশু কোথায় নিদ্রা যায়?
উঃ। বীজের উপর এক কঠিন আবরণ বা ঢাকনা থাকে, তার মধ্যে বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।
২.৫ অংকুর বের হবার জন্য কী কী প্রয়োজন?
উঃ। অঙ্কুর বের হবার জন্য জল, মাটি, ও উত্তাপ প্রয়োজন।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৩.১ আগে এসব কিছুই জানিতাম না।'—কোন্ বিষয়টি লেখকের কাছে অজানা ছিল?
উঃ। গাছ কোনো কথা বলে না, গাছের যে জীবন আছে, আমাদের মতো গাছ খাদ্যগ্রহণ করে, দিনে দিনে বাড়ে, এই বিষয়টি লেখকের কাছে অজানা ছিল।
৩.২ ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়।'—কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের মধ্যে কী লক্ষ্য করা যায়?
উঃ। এখানে গাছেদের কথা বলা হয়েছে।
গাছেদের মধ্যে একে অন্যকে সাহায্য করতে দেখা যায়। একে অপরের সাথে বন্ধুত্ব হয়। তাছাড়া মানুষের মধ্যে যে সর্বোচ্চ গুণ স্বার্থত্যাগ তাও গাছের মধ্যে দেখা যায়।
৩.৩ গাছের জীবন মানুষের ছায়ামাত্র ।– লেখকের এমন উক্তি অবতারণার কারণ বিশ্লেষণ করো।
৩.৪ জীবনের ধর্ম কীভাবে রচনাংশটিতে আলোচিত ও ব্যাখ্যাত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর-লেখক জানীশ্চন্দ্র অত্যন্ত সুন্দরভাবে গাছেদের জীবনধারণের দিয়েছেন। তিনি বলেছেন গতি ও বৃদ্ধি হলো জীবনের ধর্ম। এই ধর্ম মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী ছাড়া গাছের মধ্যেও দেখা যায়। জীবিত বস্তুতে গতি দেখা যায়, জীবিত বস্তু বাড়তে থাকে, ডিমে যেমন জীবন ঘুমিয়ে থাকে।সেই ডিম তাপ পেলে ছানা নতুন জীবনে জন্ম দেয়।তেমনি বীজগুলিও সেই রকম গাছের ডিম। তার মধ্যে গাছের শিশু ঘুমিয়ে থাকে। গাছের বীজ ঝড়বৃষ্টি, পাখির মলের মাধ্যমে দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। সকল বীজ থেকেই যে গাছ জন্মাবে তা নয়, কোনো বীজ কঠিন পাথর বা অন্য জিনিসে পড়লে সেখান থেকে তার অঙ্কুর বের হতে পারে না। জন্মলাভের পর জীবের গতি ও বৃদ্ধি লক্ষ করা যায়। কিন্তু প্রাণীদের মতো গাছের গতি হঠাৎ দেখা যায় না। তবুও উদাহরণ হিসেবে লেখক লতার ঘুরে ঘুরে গাছকে জড়ানোর কথা বলেছেন।
এছাড়াও বেঁচে থাকতে গেলে যে সংগ্রাম করতে হয় তা প্রাণী ও উদ্ভিদ উভয়েরই জীবনের ধর্ম। এই প্রসঙ্গে লেখক একটি গাছ ও মরা ডালের প্রসঙ্গ এনে বলেছেন যে এদের মধ্যে প্রভেদ হলো গাছটি বাড়ছে আর মরা ডালটা ক্ষয় হয়ে চলেছে। একটিতে জীবন আছে অন্যটিতে নেই। জীবনের এগিয়ে চলাই হলো ধর্ম।
৩.৫ নানা উপায়ে গাছের বীজ ছড়াইয়া যায়।'—উপায়গুলি পাঠ্যাংশ অনুসরণে আলোচনা করো।
উঃ। পৃথিবী জুড়ে যত গাছপালা, বনজঙ্গল সৃষ্টি হয়েছে, তার সব কটারই বীজ যে সবসময় মানুষই ছড়িয়ে দিয়েছে এমনটা নয়। নানা উপায়ে গাছের বীজ ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে গজ জন্মায়। পাখিরা ফল খেয়ে দূরদেশে বীজ নিয়ে যায়। অনেক বীজ বাতাসে উড়ে অনেক দূরদেশে চলে যায়। উদাহরণ হিসেবে লেখক শিমূল গাছের কথা বলেছেন শিমুল গাছের ফল রৌদ্রে ফেটে তার মধ্যে থাকা বীজ তুলার সঙ্গে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। এইভাবে দিনরাত্রি দেশদেশান্তরে গাছের বীজগুলি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আর সেখান থেকে নতুন নতুন গাছের জন্ম হয়।
৩.৬ লেখক তাঁর ছেলেবেলার কথা পাঠ্যাংশে কীভাবে স্মরণ করেছেন, তা আলোচনা করো।
উঃ। গাছের বীজ বাতাসে কীভাবে দেশ দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ে সেই কথার প্রসঙ্গে লেখক তাঁর নিজের ছেলে বেলার কথা স্মরণ করেছেন।লেখক আগে যখন একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে তিনিযেতেন তখন সব খালি খালি লাগত লেখকের। তারপর পাখি, গাছ, কীটপতঙ্গদের যখন তিনি ভালোবাসতে শিখেছেন তখন থেকে গাছেদের ভালোবাসতেও তাদের মনের কথা তিনি বুঝতে শিখেছেন। গাছেরা খায় । তারা বড়ো হয়। এই কথা ছেলেবেলায় লেখক জানতেন না। শিমুল গাছের বীজ ফেটে চারিদিক ছড়িয়ে যায়, ছেলেবেলায় লেখক এই বীজের পিছনে ছুটে বেড়াতেন। এইভাবে পাঠ্যাংশে লেখক তাঁর ছেলেবেলার কথা স্মরণ করেছেন। এবং সেই কথা পাঠ্যাংশে বর্ণনা করেছেন।
৩.৭ ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বীজ পাকিয়া থাকে।' উদ্ধৃতিটির সাপেক্ষে নীচের ছকটি পূরণ করো।
উঃ ।
বীজ > কোন্ ঋতুতে পাকে
১. আম -গ্রীষ্ম ঋতু পাকে।
২. লিচু- গ্রীষ্ম ঋতু পাকে।
9. ধান- শরৎ বা হেমন্ত ঋতুতে পাকে।
8. যব-শরৎ বা হেমন্ত ঋতুতে পাকে
৫. শিমুল -গ্রীষ্ম ঋতুতে পাকে
৩.৮ ‘পৃথিবী মাতার ন্যায় তাহাকে কোলে লইলেন।'—বিশ্বপ্রকৃতি সম্বন্ধে লেখকের গভীর উপলব্ধি উদ্ধৃতিটিতে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা আলোচনা করো।
উঃ। লেখক জগদীশচন্দ্র ছিলেন একাধারে বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক। তিনি গভীরভাবে এই বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন। বীজ যেখানেই পড়ুক না কেন, বৃক্ষশিশু অনেকদিন পর্যন্ত বীজের মধ্যে নিরাপদে ঘুমিয়ে থাকে। ঝড়বৃষ্টিতে বা প্রবল বাতাসের বেগে কোনো ডেলা বা ইটের নীচে আশ্রয় পেল ধুলো ও মাটি বীজের উপর জমে, বীজ মানুষের চোখের আড়ালে চলে গেলেও বিধাতার দৃষ্টির আড়ালে যেতে পারে না। পৃথিবী তাকে মায়ের মতো কোলে তুলে নেয়। মাটির নীচে বীজটি শীত ও ঝাড় থেকে রক্ষা পায়, নিরাপদে বৃক্ষশিশুটি ঘুমিয়ে থাকে। এই অংশটিতে লেখক বুঝিয়ে দিয়েছেন যে বিশ্বপ্রকৃতির প্রতিটি বিষয়ই একে অপরের সঙ্গে গভীর সম্পর্কে আবদ্ধ।
৩.৯ 'প্রত্যেক বীজ হইতে গাছ জন্মে কিনা, কেহ বলিতে পারে না। বীজ থেকে গাছের জন্মের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্তগুলি আলোচনা করো।
উঃ। বীজ থেকে গাছ জন্মাতে অনুকুল পরিবেশ প্রয়োজন। যদি বীজ কঠিন পাথরের উপর পড়ে তাহলে সেখান থেকে তার অঙ্কুর বের হতে পারে না। কারণ অঙ্কুর বের হতে উত্তাপ জল ও মাটির সংস্পর্শ চাই। অতিরিক্ত ঠান্ডা পরিবেশে বীজ অঙ্কুরিত হতে পারে না। অপর দিকে জল শোষণ করে বীজ ফুলে উঠলে তবেই বীজের অঙ্কুরোদগম হয়। আর মাটিতে প্রবেশ না করলে অঙ্কুরিত বীজ থেকে গাছ জন্মায় না।
৩.১০ ‘তখন সব খালি-খালি লাগিত।'—কখনকার অনুভূতির কথা বলা হলো, কেন তখন সব খালি খালি লাগত? ক্রমশ তা কীভাবে অন্য চেহারা পেল তা পাঠ্যাংশ অনুসরণে বুঝিয়ে দাও।
উঃ। '।লেখক আগে যখন একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে তিনিযেতেন তখন সব খালি খালি লাগত
লেখকের। তারপর পাখি, গাছ, কীটপতঙ্গদের যখন তিনি ভালোবাসতে শিখেছেন তখন থেকে গাছেদের ভালোবাসতেও তাদের মনের কথা তিনি বুঝতে শিখেছেন। গাছেরা খায় । তারা বড়ো হয়।
তিনি জানত পারেন গাছের জীবন আছে। তারা আমাদের মতো খাবার খায়, তাদেরও অভাব, সুখ, দুঃখ আছে। এমনকি তারা কষ্টে পড়ে চুরি ডাকাতিও করে। খাদ্য জোগাড়ের জন্য তাদের সর্বদা ব্যস্ত থাকতে হয়। তারা একে অপরকে সাহায্য করে, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে। মানুষের যে সর্বোচ্চ গুণ স্বার্থত্যাগ, সেটাও গাছের মধ্যে দেখা যায়। মা যেমন নিজের জীবন দিয়ে সন্তানের জীবন রক্ষা করেন তেমনই গাছও তার জীবন দিয়ে সন্তানকে রক্ষা করে।
৪. নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন করো :
৪.১ আগে যখন একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াইতে যাইতাম, তখন সব খালি-খালি লাগিত। (সরল বাক্যে)
উঃ। আগে একা মাঠে পাহাড়ে বেড়াইতে গেলে সব খালি খালি লাগিত।
৪.২ তাদের অনেক কথা বুঝিতে পারি, আগে যাহা পারিতাম না। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে)
উঃ। আগে অপারগ হলেও এখন তাদের অনেক কথা বুঝিতে পারি।
৪.৩ ইহাদের মধ্যেও আমাদের মতো অভাব, দুঃখ-কষ্ট দেখিতে পাই। (জটিল বাক্যে)
উঃ। আমাদের যে অভাব, দুঃখ কষ্ট তা ইহাদের মধ্যেও দেখিতে পাই।
৪.৪ তোমরা শুষ্ক গাছের ডাল সকলেই দেখিয়াছ। (না-সূচক বাক্যে)
উঃ। শুকনো গাছের ডাল দেখে নাই এমন কেহ নাই।
৪.৫ প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়িয়া যায়, কে বলিতে পারে ? (প্রশ্ন পরিহার করো)
উঃ। প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়িয়া যায় তা কেউ বলিতে পারে না।
৫. নীচের শব্দগুলির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো ঃ কীটপতঙ্গ, স্বার্থত্যাগ, বৃক্ষশিশু, বনজঙ্গল, জনমানবশূন্য, দিনরাত্রি, দেশবিদেশ, নিরাপদ।
উঃ। কীটপতঙ্গ—কীট ও পতঙ্গ। (দ্বন্দ্ব সমাস)
বৃক্ষশিশু—বৃক্ষের শিশু। (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)
জনমানবশূন্য— জন ও মানব শূন্য। (দ্বন্দ্ব সমাস)
দেশান্তরে—অন্য দেশে। (নিত্য সমাস)
স্বার্থত্যাগ—স্বার্থকে ত্যাগ। (কর্মতৎপুরুষ সমাস)
বনজঙ্গল—বন ও জঙ্গল। (সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস)
দিনরাত্রি - দিন ও রাত্রি। (বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব সমাস)
নিরাপদ নাই বিপদ। (না-তৎপুরুষ সমাস)
৬. নিম্নরেখাঙ্কিত অংশের কারক-বিভক্তি নির্দেশ করো :
৬.১ ইহাদের মধ্যে একের সহিত অপরের বন্ধুত্ব হয়।
উঃ। কর্মকারকে 'শূন্য' বিভক্তি।
৬.২ আর কিছুকাল পরে ইহার চিহ্নও থাকিবে না।
উঃ। সম্বন্ধ পদে ‘র’-বিভক্তি।
৬.৩ বীজ দেখিয়া গাছ কত বড়ো হইবে বলা যায় না।
উঃ। কর্মকারকে শূন্য' বিভক্তি।
৬.৪ মানুষের সর্ব্বোচ্চ গুণ যে স্বার্থত্যাগ, গাছে তাহাও দেখা যায়।
উঃ। অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
৭. সন্ধিবদ্ধ পদগুলি খুঁজে নিয়ে সন্ধি-বিচ্ছেদ করো :
৭.১ তাহার মধ্যে বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়। উঃ। নিঃ + আপদে = নিরাপদে।
৭.২ অতি প্রকাণ্ড বটগাছ সরিষা অপেক্ষা ছোটো কী হইতে জন্মেছে।
উঃ। অপ্ + ঈক্ষা = অপেক্ষা।
৭.৩ এই প্রকারে দিনরাত্রি দেশ দেশান্তরে বীজ ছড়াইয়া পড়িতেছে।
উঃ। দেশ + অন্তরে = দেশান্তরে।
হাতে কলমে বাইরে আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর
★মা কীভাবে সন্তানকে রক্ষা করেন?
উঃ। মা নিজের জীবন দিয়ে সন্তানের জীবন রক্ষা করেন।
★ কঠিন পাথরের উপর বীজ পড়লে কী হয় ?
উঃ। কঠিন পাথরের উপর বীজ পড়লে সেখানে তার অঙ্কুর বার হতে পারে না।
★ ডিম উত্তাপ পেলে কী হয় ?
উঃ। উত্তাপ পেলে ডিম থেকে পাখির ছানা জন্ম নেয়।
★ আশ্বিন মাসের শেষে কী হয়? তাতে পাতা ও ডালের কী হয়ে থাকে ?
উঃ। আশ্বিন মাসের শেষে বড়ো ঝড় হয়। সেই ঝড়ে পাতা ও ছোটো ছোটো ডাল ছিঁড়ে চারিদিকে পড়তে থাকে।
★ গাছের জীবন কেমন বলে লেখক বলেছেন?
উঃ। লেখক বলেছেন গাছের জীবন মানুষের ছায়ামাত্র।
★ মানুষের সর্বোচ্চ গুণ কী?
উঃ। মানুষের সর্বোচ্চ গুণ হলো স্বার্থত্যাগ।
★ সাহিত্য ছাড়া আর কোন্ কোন্ বিষয়ে লেখকের দক্ষতা ছিল?
উঃ। লেখক জগদীশচন্দ্র একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানী, জীববিজ্ঞানী ও পদার্থবিদ ছিলেন।
★লেখক কার অন্তরঙ্গ ছিলেন?
উঃ। লেখক বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্তরঙ্গ ছিলেন।
★ বীজ দেখে গাছ কতো বড়ো হবে বলা যায় কি? উদাহরণ দাও।
উঃ। না, তা বলা যায় না। কারণ ছোট্ট সরিষার মতো বীজ থেকে প্রকান্ড বড়ো গাছের জন্ম হয়।
★ বৃক্ষশিশু কীভাবে জন্ম নেয়?
উঃ। মাটি, উত্তাপ ও জল পেলে বীজ থেকে বেরিয়ে বৃক্ষশিশু জন্ম নেয়।
★ এই প্রকারে জনমানবশূন্য দ্বীপে গাছ জন্মে থাকে— এটি কীভাবে সম্ভব হয়?
উঃ। পাখিরা ফল খেয়ে দূর দেশে বীজ নিয়ে যায়। এইভাবে জনমানবশূন্য দ্বীপে গাছ জন্মায়।
★ শুষ্ক ডাল এবং জীবিত ডালের মধ্যে কী পার্থক্য রয়েছে?
উঃ। শুষ্ক ডালে গতি নেই, জীবিত ডালে গতি আছে। এটাই হলো এদের মধ্যে পার্থক্য।
★ ডিমে জীবন কী অবস্থায় থাকে? উঃ। ডিমে জীবনের কোনো চিহ্ন দেখা যায় না, ডিমে জীবন ঘুমিয়ে থাকে।
★ কোথায় বীজ নিরাপদে নিদ্রা যায়? উঃ। বীজের উপর কঠিন ঢাকনা থাকে, তার মধ্যে বীজ নিরাপদে নিদ্রা যায়।
★ শিমূল ফল কীভাবে কাটে এবং ফাটলে কী হয়?
উঃ। শিমূল ফল রৌদ্রে ফেটে যায় এবং তার মধ্যে থেকে বীজ বেরিয়ে তুলোর সঙ্গে উড়তে থাকে।
বিপরীত শব্দ । আহার-অনাহার।
সদ। - শিমোন।
শুরু শেষ।