চতুর্থ শ্রেণি বাংলা দূরের পাল্লা কবিতা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর/ durer palla poem question answer class 4 bangla - school book solver

Pages

Tuesday, 18 March 2025

চতুর্থ শ্রেণি বাংলা দূরের পাল্লা কবিতা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর/ durer palla poem question answer class 4 bangla

 



চতুর্থ শ্রেণি বাংলা 

দূরের পাল্লা কবিতা লেখক সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত।



কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের পরিচিতি :- কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮২ সালে বর্ধমান জেলার চুপিগ্রামে।  পিতার নাম রজনীনাথ দত্ত। তিনি একজন অন্যতম

জনপ্রিয় কবি। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তকে বাংলা সাহিত্যের জগতে ‘ছন্দের জাদুকর' বলা হয়।সবিতা, সন্ধিক্ষণ, বেণু ও বীণা, ফুলের ফসল, কুহু ও কেকা ইত্যাদি  তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। তাঁর অনুবাদ করা কবিতাগুলি হল তীর্থ সলিল, তীর্থরেণু, মণিমঞ্জুষা প্রভৃতি।  তিনি কয়েকটি ব্যঙ্গাত্মক কবিতা রচনা করেছেন ছদ্মনামে।সে ই ছদ্মনামগুলি হল নবকুমার, কবিরত্ন। পাঠ্য কবিতাটি তাঁর ‘বিদায় আরতি' নামক কবিতার বই থেকে নেওয়া।  তিনি পরলোকগমন করেন ১৯২২ সালে।


দূরের পাল্লা কবিতার নামকরণের সার্থকতা:-

“দূরের পাল্লা' কবিতাটি মাঝিদের নিয়ে ছিপখানা তিনটি দাঁড় নিয়ে তিনজন মাল্লা দিনভোর দূরে পাল্লা দেয়। যেতে যেতে তারা প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রাণভরে দেখে। নদীর পাড়ে ঝোপজঙ্গল, কঞ্চির তীরাঘর, জলের শ্যাওলা, পান্নার টাকশাল,  বুনো হাঁস ডিম পেড়ে শ্যাওলায় ঢাকছে অর্থাৎ লুকিয়ে রাখছে। পানকৌড়ি জলে ডুব দিচ্ছে। কলশি নিয়ে বধূরা জল আনছে। কবিতাটিতে মাঝিরা নৌকা নিয়ে দূরে যাত্রা করার কথা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আমার মতে দূরের পাল্লা নামকরণটি যথার্থ হয়েছে বলে মনে হয়। 





দূরের পাল্লা কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা:-

নৌকো নিয়ে তিনজন মাল্লা  নদী পথে পাড়ি দিয়েছে দূরে যাওয়ার জন্য। দিনভোর তারা নৌকায় থাকে। নদীর পাড়ময় জঙ্গল ঞ্জাল দেখে। জলময় শ্যাওলা আর পান্নার টাকশাল দেখে। নদীর চরে আছে কঞ্চি দিয়ে তৈরি ঘর, বন-হাঁস তার ডিমগুলো শ্যাওলা দিয়ে ঢেকে রাখছে। পানকৌড়ি চুপ চুপ করে জলে ডুব দিচ্ছে। গ্রামের বধূরা নদীতে স্নান করতে এসে টুপটুপ করে ডুব দিচ্ছে।

কলশিগুলো ঝকঝক করছে। মাথায় ঘোমটা দিয়ে বউগুলো সব ঝকঝকে কলশি নিয়ে জল আনতে যাচ্ছে। মন তাদের উন্মন।

এদিকে মাঝিরা তিন দাঁড় ছিপখান নিয়ে মন্থর গতিতে এগিয়ে চলেছে কোন্ গান যেন গাইতে গাইতে।


সারমর্ম ঃ তিনজন মাল্লা তিনখানা দাঁড় নিয়ে দিনভোর দূর দেশে পাড়ি দিচ্ছে। তারা অনেক দূর যাচ্ছে তাই বলা হয়েছে দূরের পাল্লা। দূরে নদীর পাড়ে ঝোপ-জঙ্গল দেখা যাচ্ছে। জলের মধ্যে শ্যাওলা দেখা যাচ্ছে। আর দূরে দেখা যাচ্ছে পান্নার টাকশাল।



হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর

১. কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলা কাব্যজগতে কোন্ অভিধায় অভিহিত?

উঃ কবি সত্যেন্দ্ৰনাথ দত্ত বাংলা কাব্যজগতে ‘ছন্দের জাদুকর' অভিধায় অভিহিত।


২. তার লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো।

উঃ তাঁর লেখা দুটি কবিতার বই হল ' ‘বিদায় আরতি’,কুহু ও কেকা’।


৩. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও ঃ


৩.১. কবি সত্যেন্দ্ৰনাথ দত্ত কী নামে পরিচিত?

উঃ সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 'ছন্দের জাদুকর' নামে পরিচিত।

৩.২. কবিতাংশে যে নৌকাটির কথা রয়েছে, তাতে কতজন মাঝি রয়েছেন?

উঃ কবিতাংশে যে নৌকাটির কথা রয়েছে, তাতে তিনজন মাঝি রয়েছেন।


৩.৩ বন-হাঁস কী করছে? 

উঃ বন-হাঁস শ্যাওলায় ডিম লুকাচ্ছে।


৩.৪. নদীজলে কাদের ডুব দিতে দেখা যাচ্ছে?

উঃ নদীজলে পানকৌটি আর বধূদের ডুব দিতে দেখা যাচ্ছে।


৩.৫. মাঝিরা কেমনভাবে নৌকো বেয়ে চলেছে?

উঃ মাঝিরা মন্থরগতিতে নৌকো বেয়ে চলেছে।


৪. 'চৌপর' শব্দের অর্থ সমস্ত দিন বা রাত। কবিতাংশে দিনের নানা ছবি কীভাবে পড়েছে তা লেখো।


উঃ মাঝিরা দূরে যাওয়ার জন্য  দিনভোর মাঝিরা নৌকা টানছে। যেতে যেতে তারা সারাদিন অনেক কিছু দেখল। সেগুলি হল নদীর পাড়ে ঝোপ-ঝাড়, বনজঙ্গল, শৈবাল, পান্নার টাকশাল। কঞ্চির তীর ঘর, বন-হাঁসের ডিম লুকোনো। পানকৌড়ি জলে ডুব দিচ্ছে, বউরাও জলে ডুব দিচ্ছে। ঘোমটা টানা বউরা ঝকঝকে কলশি নিয়ে যাচ্ছে। 


৫. 'পাল্লা' শব্দটিকে পৃথক অর্থে ব্যবহার করে দুটি স্বাধীন বাক্য রচনা করো।

পাল্লা (দাঁড়িপাল্লা)— দোকানদার পাল্লা দিয়ে জিনিস ওজন করে।

পাল্লা(প্রতিযোগিতা)- খেলার মাঠে এবার ফুটবলের পাল্লা হবে।


পাড়ি (যাত্রা)— অনেকের সাগর পাড়ি দেয়

পাড়ি (বিভক্তিযুক্ত ক্রিয়া) –তপন গাছে উঠে আম পাড়ল।


৬. “দীড়' শব্দটি কবিতায় কোন্ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। শব্দটিকে পৃথক অর্থে ব্যবহার করে একটি বাক্য রচনা করো।

উঃ "দাঁড়' শব্দটি কবিতায় বৈঠা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

দাঁড় (ক্রিয়াপদ) আমাকে কতক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখবে?


৭. “দিন-ভোর' শব্দটির অর্থ সমস্ত দিন। সারাদিনের কাজ বোঝাতে তুমি আর কোন্ শব্দ ব্যবহার করতে পারো ?

উঃ সারাদিনের কাজ বোঝাতে আমি দিনরাত বা চৌপর কথাটি ব্যবহার করতে পারি।



৮.. ঝোপঝাড়'-এর মতো সমার্থক/প্রায় সমার্থক শব্দ পাশাপাশি বসিয়ে পাঁচটি নতুন শব্দ তৈরি করো।

উঃ ঝোপঝাড়– (ঝোপ)- বাড়ি আশেপাশে অনেক ঝোঁপ জন্মে গেছে।

ঝোপঝাড় (গুল্ম)— গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ রাস্তার ধারে দেখা যায়।

ঝোপঝাড় (বনজঙ্গল)- বন জঙ্গল ঝোপঝাড়ে ভর্তি হয়

ঝোপঝাড় (আড়াল আবডাল) – আড়াল-আবডালে কিছু লুকিয়ে থাকতে পারে।


৯. ‘গান্না' ও 'চর' শব্দদুটিকে দুটি পৃথক অর্থে ব্যবহার করে দুটি স্বাধীন বাক্য রচনা করো।

উঃ পান্না (মারফত)–রাজকুমারের আংটিতে পান্না বসানো আছে ।

চর (গোপন দূত)— বিদেশি শত্রুর  চর ভারতে ঢুকে ধরা পড়ল ।


১০. ‘টুপটুপ' ‘ঝক্‌ঝক্‌’ ‘বক্‌বক্’ মতো ধ্বন্যাত্মক/অনুকার শব্দদ্বৈতের পাঁচটি উদাহরণ দাও। 

উঃ চক্‌চক, টকাটক, ফটাফট, ঘটঘট, মটমট্, কচ্‌কচ্।



হাতে কলমের বাইরে আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর


■সঠিক উত্তর নির্বাচন করো :


★ পাড়নয় (ঝোপঝাড়/বাঁশঝাড় / ফুল গাছ)।

উত্তর ঃ ঝোপঝাড়।

★ (পান্নার হিরের/মুস্তার)–টাকশাল।

উত্তর : পান্নার।

★ ছিপখান - (তিন দাঁড়/চারদাঁড়/পাঁচদাঁড়)।

উত্তর : তিনদাঁড়।

★ (তিনজন/দুইজন/একজন)—মাল্লা।

উত্তর : তিনজন।

★ত্বক (হাঁড়ির/কলসির) বক্বক্ শোন্ গো।

উত্তর : কলসির।

■ সত্য-মিথ্যা নির্ণয় করো :

★ ছিপধান চার পাঁড়।

উত্তর : মিথ্যা।

★ তিনজন মান্না।

উত্তর : সত্য।

★ জলমায় পরাফুল।

উত্তর : মিথ্যা।

★ দ্যায় ডুব টুপ টুপ ঘোমটার বউটি।

উত্তর : সত্য।

★বন মুরগি ডিন তার শ্যাওলায় ঢাকছে।

উত্তর : মিথ্যা।



■অক্ষর সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো :


রচৌপ, জপঝাঝো, লশৈবা, লকশাটা, রশ্মিক, য়ওশ্যালা।

উত্তর :-

রচৌর  >  চৌপর

জপঝাঝো  >  ঝোপঝাড়

লশৈবা  >  শৈবাল

 লকশাটা  >  টাকশাল

 রশ্মিক  >  

 য়ওশ্যালা   >  শ্যাওলায়





■ শব্দ সাজিয়ে বাক্য তৈরি করো :

★ দাঁড় ছিপখান তিন।

উত্তর : ছিপখান তিন দাঁড় ।

★ ভোর-চৌপর দিন।

উত্তর ঃ চৌপর দিন-ভোর।

★ঘর কঞ্চির তীর।

উত্তর : কঞ্চির তীর-ঘর।

★তার ডিম হাঁস বন।

উত্তর : বন-হাঁস ডিম তার।

★ পানকৌটি দ্যায়।

উত্তর : দ্যায় পানকৌটি।

★ কলশির ঝক্‌ঝক্।

উত্তর : ঝক্‌ঝক্ কলসির।

★মান্নার জন তিন।

উত্তর : তিনজন মাল্লার।

★গাচ্ছে গান কোন্?

উত্তর : কোন্ গান গাচ্ছে।

-

■ এক কথায় উত্তর দাও :

★ছিপখান কেমন গতিতে যাচ্ছে?

উত্তর : ছিপখান মন্থর গতিতে যাচ্ছে।উত্তর : ছিপখান মন্থর গতিতে যাচ্ছে।


★কবি সত্যেন্দ্ৰনাথ দত্ত 'দূরের পাল্লা' কবিতাটি নাম দিয়েছেন কেন? ছিপখানি ক'জন মাল্লা নিয়ে যাচ্ছে?

উত্তর : 'দূরের পাল্লা' নাম দেওয়ার কারণ হল ছিপখানি খুব দূরে যাচ্ছে। সারা দিন সারা রাত ধরে তারা বৈঠা বেয়ে চলেছে। ছিপখানি তিনজন মাল্লা নিয়ে যাচ্ছে।


★কে কে কীভাবে ডুব দিচ্ছে?

উত্তর : চুপ চুপ করে পানকৌটি ডুব দিচ্ছে। আর টুপটুপ করে ঘোমটা পড়া বউটি ডুব দিচ্ছে।


★ছিপখান কেমন গতিতে যাচ্ছে? যেতে যেতে মাল্লারা কী করছে?

উত্তর : ছিপবান নম্বর গতিতে যাচ্ছে।

যেতে যেতে মাঙ্গারা কী যেন একটা গান গাইছে।


★কী জেগে উঠেছে? সেখানে বন-হাঁস কী করছে?

উত্তর ঃ চর জেগে উঠেছে।

সেখানে বন-হাঁস তার ভিন শ্যাওলার ভিতর ঢেকে রাখছে।


★বন-হাঁস শ্যাওলায় কী ঢাকছে?

উত্তর : বন-হাঁস শ্যাওলায় ডিম ঢাকছে।




★চুপচুপ—ওই ডুব দ্যায় পানকৌটি।'—পানকৌটি পাখি দেখতে কেমন? কেন চুপ থাকতে বলা হয়েছে?

উত্তর : পানকৌটি পাখি খাল-বিল-নদী-হ্রদে এবং পুকুরেও দেখা যায়। এদের গলা লম্বা, ঠোটের অগ্রভাগ খুব তীক্ষ্ণ, পায়ের চারটি আঙ্গুল পাতলা চামড়ায় জোড়া। পালকের রং উজ্জ্বল সবুজ বা নীলাভ কালো। পানকৌটি পাখি দুপুরবেলা নিজের মনে জলাশয়/পুকুরে ডুব দিচ্ছে। তাই কবি সবাইকে চুপ থাকতে বলেছেন যাতে সে কোনোভাবে বিরক্ত হয়ে তার খেলা থামিয়ে উড়ে না যায়।

★ মান্নারা কী করছে?

উত্তর : মান্নারা গান গাইছে।


★ ঘোমটা মাথায় কে রয়েছে?

উত্তর : ঘোমটা মাথায় বউটি রয়েছে।


★ছিপটি কোথায় যাচ্ছে?

উত্তর : ছিপটি দূর-পাল্লায় যাচ্ছে।

★ছিপে কটি দাঁড় ছিল?

উত্তর ঃ ছিপে তিনটি দাঁড় ছিল।


সমার্থক শব্দ :  

বকবক – বাচালতা। 

মন—হৃদয়। 

মন্থর – ধীর। মাত্রা

গাছে— গাইছে।

ঝকঝাক —চকচক। 

কলসি—কুঁজো।


■  শূন্যস্থান পূরণ করো :

★ছিপখান......দাঁড়।

উত্তর : তিন।

★ তিনজন্.......

উত্তর : মাল্লা।

★ ........দিন-ভর।

উত্তর : চৌপর।

★ দ্যায় দূর-.....

উত্তর : পাল্লা।

★পাড়ময় .......

উত্তর ঃ ঝোপঝাড় ।

★ জলময়

উত্তর : শৈবাল।

★...…...টাকশাল।

উত্তর : পান্নার।

★........তীর ঘর।

উত্তর : কঞ্চির।