চতুর্থ শ্রেণি বাংলা ছেলেবেলার দিনগুলি অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর / chhelebler dinguli class bangla
চতুর্থ শ্রেণীর বাংলা
ছেলেবেলার দিনগুলি
পুণ্যলতা চক্রবর্তী
পুণ্যলতা চক্রবর্তীর পরিচিতি-
ছোটোদের জনপ্রিয় সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর কন্যা ছিলেন পুণ্যলতা চক্রবর্তী। তিনি ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার প্রতিষ্ঠিত ‘সন্দেশ' পত্রিকাকে কেন্দ্র করে যে একদল সাহিত্যিক সেই যুগে জনপ্রিয় হয়ে
উঠেছিলেন পুণ্যলতা চক্রবর্তী। তিনি শিশু ও কিশোরদের জন্য খুব সহজ-সরল ভাষায় লিখতেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হলো- ছেলেবেলার দিনগুলি’, ‘ছোট্ট ছোট্ট গল্প’, ‘রাজবাড়ি’ইত্যাদি। তিনি ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে পরলোক গমন করেন।
ছেলেবেলার দিনগুলি গল্পের নামকরণর সার্থকতা :-
পুণ্যলতা চক্রবর্তী লেখা ‘ছেলেবেলায় দিনগুলি' নামক গল্পটিতে লেখিকার ছেলেবেলার নানাবিধ টুকরো ঘটনার বিবরণে কাহিনি আছে। লেখিকার জ্যেঠামশাই ও পিসিমার বাড়ির কাছাকাছি ছিল তাঁদের বাড়িটা। তাই ছেলেবেলায় তাঁর খেলায় সাথির অভাব ছিল না। বাড়ির ছাতের এক কোণে খোলা জলের ট্যাংক থেকে গঙ্গামাটি তুলে জমা করা ছিল। সেই নরম কাদার গোলাগুলি বানিয়ে নিজেদের
মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ হত। এই যুদ্ধের নাম ছিল পটগুলটিশ ওয়ার। সমগ্র গল্পটিতে তার ছেলেবেলা কাহিনীর উল্লেখ আছে। তাই আমার মনে হয় ছেলেবেলার দিনগুলি নামকরণে যথার্থ সার্থকতা আছে।
ছেলেবেলার দিনগুলি বিষয়বস্তু আলোচনা:-
ছেলেবেলায় লেখিকা তাঁর জ্যেঠতুতো, খুড়তুতো, পিসতুতো ভাইবোনদের খেলার সাথি হিসেবে পেয়েছিলেন। ছাতে ঘোলাজলের ট্যাংক থেকে তোলা গঙ্গামাটির কাদার গোলাগুলি বানিয়ে যুদ্ধ হত। সেই যুদ্ধের নাম ছিল পটগুলটিশ ওয়ার। এইরকম খেলা খেলতে গিয়ে সিঁড়ির ছাতের দিকে (সিলিং-এ) লেগে একেবারে ঘুঁটের মতো চ্যাপটা হয়ে সেঁটে রইল। এভাবে খেলতে গিয়ে একবার রাশভারি জ্যেঠামশায়ের পায়ের সামনে থ্যাপ করে কাদার গোলা গিয়ে পড়ল। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে তিনি হো-হো করে হেসে উঠলেন।
ছোটোবেলায় লেখিকা তাঁর দাদার সঙ্গে খেলেছেন চোর-পুলিশ খেলা। ছাতের ওপর খেলেছেন ক্রিকেট হকি। হুড়োহুড়ি খেলায় লেখিকা ছিলেন ওস্তাদ। পুতুলের বিয়ে দিয়েছেন। ছোটো ছোটো পাতায় করে ছোটো ছোটো লুচি ভেজে মিষ্টি দিয়ে পুতুলের বিয়েতে খাদ্য পরিবেশন করেছেন। মোমবাতির সারি জ্বালিয়ে বিয়ের উৎসব করেছেন। এভাবে অবশ্য একবার মোমবাতি থেকে কাঠের ছাত জ্বলতে শুরু করেছিল। ভাগ্যক্রমে তা অবশ্য তাড়াতাড়ি নেভানো সম্ভব হয়েছিল। তাঁদের মজার খেলা ছিল 'রাগ বানানো'। তবে এই রাগ বানানোতে একসময় এমনই কিছু ঘটনা ঘটে যেত যে, তাতে শেষে হেসে সকলেই কুটিপাটি হতেন। একবার শুরু হল কবিতায় গল্প বলা। একজন প্রথম লাইন বলবে, অন্যজন বলবে দ্বিতীয় লাইন।
লেখিকার দাদা ছোটোবেলা থেকেই গল্প লেখা শুরু করেছিল। তাঁর দেখাদেখি লেখিকাও দু-একটা কবিতা লিখলেন। একবার লেখিকার বাবার সঙ্গে এক ভদ্রলোক দেখা করতে এসেছিলেন। সেই সময় লেখিকা তাঁর খাতাটা টেবিলে ফেলে এসেছিলেন। সেই ভদ্রলোক অনেকক্ষণ বাবার সঙ্গে গল্পগুজব করে বাবাকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। তারপর লেখিকা দেখলেন তাঁর অর্ধেক লেখা গল্পটা শেষ পর্যন্ত লিখে দিয়েছেন বাবার বন্ধু ভদ্রলোক। তিনি ছিলেন নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত। তাঁর লেখা অনেক সুন্দর গল্প পত্রিকায় পড়েছেন লেখিকা। তাঁর খাতায় লেখা নরেন্দ্রনাথ গুপ্তের লেখাটা নিশ্চয়ই খুব ভালো হয়েছিল। কিন্তু লেখিকা তা তখন না বুঝে তা মিছিমিছি রাগ করে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। লেখিকার বাবা বিদেশে থাকার সময় মজার মজার ছবি আর পদ্যে যেসব চিঠি লিখতেন সেগুলি যদি সংগ্রহ করা থাকত তাহলে একটা মজার বই হতে পারত।
শব্দার্থ ঃ জ্যেঠামশাই—বাবার বড়ো ভাই। পিসিমা–বাবার দিদি বা বোন।
সাথি—সঙ্গী। খুড়তুতো—খুড়োর
ছেলেমেয়েদের যে সম্পর্ক, খুড়ো হল বাবার ছোটো ভাই।
দল—সাঙ্গপাঙ্গ।
জুটে গেল—জড়ো হল, মিলিত হল।
ছাত—ঘরের মাথায় পেটা ছাউনি।
জমা—সঞ্চয়। হঠাৎ—অকস্মাৎ।
চাকরবাকররা—বাড়ির কাজের লোকেরা।
চুপিচুপি—কোনো সাড়া না দিয়ে।
মরা উনুন—যে উনুনে আগুন জোরে জ্বলেও অবশেষে যেটুকু জ্বলন্ত পড়ে আছে।
গুঁজে—ভিতরে ঢুকিয়ে ৷
উনুন ঝাড়বার—উনুন পরিষ্কার করার।
দু-পক্ষ—দুই দল।
আহত—আঘাতপ্রাপ্ত।
আরম্ভ— শুরু।
বারণ—নিষেধ, মানা। সিঁড়ি—ধাপ।
চ্যাপটা—পাতলা।
সেঁটে রইল—শক্ত হয়ে আটকে রইল।
ভারি মজা—খুব মজা।
ঘুঁটে দেওয়ার পাল্লা—কাঁচা গোবর দেয়ালে থ্যাবড়া করে আটকে শুকনো করতে দেওয়ার প্রতিযোগিতা।
ভীষণ—খুব।
ভয়—শঙ্কা।
লুকিয়ে পড়ল—নিজেকে আড়াল করল।
চেহারা—দেহের আকৃতি।
আওয়াজ—শব্দ।
গম্ভীর—গমগমে,
গভীর ধ্বনিযুক্ত।
মস্ত—বিরাট।
খেলোয়াড়—যিনি খেলতে পারেন।
জোর—শক্তি।
মৃদু—সামান্য, একটু।
আনমনে—অন্য মনে, অসতর্কভাবে।
আস্তে আস্তে—ধীরে ধীরে।
গুরুগম্ভীর—খুব গমগমে।
গলায়—শব্দে।
হাঁক--জোরে ডাক।
চাকর-বাড়ির কাজের লোক। উসকিয়ে—বাড়িয়ে।
একতাল-তালের মতো।
জিনিস—বস্তু।
ধমক—বকুনি।
কোত্থেকে—কোথা থেকে।
হাঁফ—আটকে রাখা শ্বাস।
ছিরি—শ্রী, সৌন্দর্য, রূপ,
হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
১. পুণ্যলতা চক্রবর্তীর কয়েকজন ভাই-বোনের নাম লেখো।
উঃ পুণ্যলতা চক্রবর্তীর ভাই- হলেন সুকুমার রায়, সুবিনয় রায়চৌধুরী। আর বোন হলেন-সুখলতা রাও।
২. তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উঃ তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম ছোট্ট ছোট্ট গল্প, রাজবাড়ি।
৩. "ক" স্তম্ভ সঙ্গে "খ" স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো।
উত্তর-
ক" স্তম্ভ "খ" স্তম্ভ
উনুন > আগুন
পটগুলটিশ > খেলা
সিঁড়ি > বাড়ি
খুঁটে > গোবর
লেখাপড়া > বই
৪. নীচের এলোমেলো শব্দগুলি সাজিয়ে লেখো :
খাড়ালেপ, টিলগুশটপ, ঘলপুর, রামনা, গরগুরুত্তী।
উঃ -খা ড়া লে প > লেখাপড়া
টি ল গু শ ট প > পটগুলটিশ
তু ঘ ল পু র > পুতুলঘর
ক রা ম না > নামকরা
গ র গু রু ত্তী > গুরুগম্ভীর।
৫. বন্ধনীর মধ্য থেকে ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো :
৫.১. মা সুন্দর করে (এক/দুই/তিন/চার) তলা পুতুলঘর সাজিয়ে দিয়েছিলেন।
উঃ মা সুন্দর করে দুই তলা পুতুলঘর সাজিয়ে দিয়েছিলেন।
৫.২. তোমাকে দেখছি এবার (সোনার/তামার/লোহার / টিনের) বালা গড়িয়ে দিতে হবে।
উঃ তোমাকে দেখছি এবার লোহার বালা গড়িয়ে দিতে হবে।
৫.৩. হাতকড়ি পরায় (চোর/উকিল/শিক্ষক/পুলিশ)
উঃ হাতকড়ি পরায় পুলিশ।
৫.৪. হ য ব র ল হল একটি (খেলনা/ট্রেন/গাছ/বই)
উঃ হ য ব র ল হল একটি বই।
৫.৫. (যোধপুরে/বিজাপুরে/ভাগলপুরে/মধুপুরে) সেই রেলগাড়ির কবিতা লিখেছিলেন।
উঃ যোধপুরে সেই রেলগাড়ির কবিতা লিখেছিলেন।
৬. কোনটি বেমানান চিহ্নিত করো ঃ
৬.১. ঘুঁটে/উনুন/কামান/রান্নাঘর।
উঃ কামান।
৬.২. সিঁড়ি/চিলেকোঠা/বারান্দা/বাজার।
উঃ বাজার।
৬.৩. আলমারি/হাতকড়ি/চোর/পুলিশ।
উঃ আলমারি।
৬.৪. জ্যাঠা/বাবা/দাদা/কাকা।
উঃ দাদা ।
৭. ঘটনাক্রম অনুযায়ী সাজাও ঃ
৭.১. খাওয়া সেরে এসে দেখি, পুতুলঘরে সে এক অগ্নিকাণ্ড।
৭.২. দেখতে দেখতে ছাদটা কাদার ঘুঁটেতে ভরতি হয়ে গেল।
৭.৩. মনের দুঃখে খাতাটা ছিঁড়েই ফেললাম ।
৭.৪. আর একটা মজার খেলা ছিল কবিতায় গল্প বলা।
৭.৫. অল্পের জন্য পুতুলগুলো বেঁচে গেল।
উঃ ৭.২. দেখতে দেখতে ছাদটা কাদার ঘুঁটেতে ভরতি হয়ে গেল।
৭.১. খাওয়া সেরে এসে দেখি, পুতুলঘরে সে এক অগ্নিকাণ্ড।
৭.৫. অল্পের জন্য পুতুলগুলো বেঁচে গেল।
৭.৪. আর একটা মজার খেলা ছিল কবিতায় গল্প বলা।
৭.৩. মনের দুঃখে খাতাটা ছিঁড়েই ফেললাম।
৮. শব্দঝুড়ি থেকে ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো ঃ
শব্দঝুড়ি : থ্যাপ, অস্থি, ভয়, চুঞ্জু, হরিদ্রা।
৮.১. জ্যেঠামশাইকে ও বাড়ির ছেলেরা ভীষণ.....করত।
উঃ ভয়।
৮.২. হঠাৎ.....করে কী একটা তাঁর পায়ের কাছে পড়ল।
উঃ থ্যাপ।
৮.৩. একদা এক বাঘের গলায় ফুটে ছিল .....।
উঃ অস্থি।
b.8....…. মানে ওস্তাদ, এক্সপার্ট।
উঃ চুঞ্জু।
৮.৫. সেঁক দেয় তেল মাখে, লাগায় .....।
উঃ হরিদ্রা।
৯. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
৯.১. পাঠে উল্লিখিত নতুন বাড়িটি কোথায় ছিল?
উঃ লেখিকার জ্যেঠামশাই ও পিসিমার বাড়ির কাছেই ছিল নতুন বাড়িটি।
৯.২. সেই নতুন বাড়িতে কীসের অভাব ছিল না ?
উঃ -সেই নতুন বাড়িতে লেখিকার খেলার সাথির অভাব ছিল না।
৯.৩. লেখিকা ও তার সঙ্গীরা কোথা থেকে গঙ্গামাটি জোগাড় করেছিলেন?
উঃ -লেখিকা ও তার সঙ্গীরা ছাতের এক কোণে জমা করে রাখা জলের ট্যাংকের গঙ্গামাটি থেকে।
৯.৪. গঙ্গামাটি দিয়ে কী করা শুরু হল?
উঃ গঙ্গামাটি দিয়ে গোলাগুলি বানিয়ে লেখিকা ও তাঁর সাথিদের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ শুরু হল।
৯.৫. রান্নাঘরে উনুনের মধ্যে কী গুঁজে রাখা হত ?
উঃ- রান্নাঘরের উনুনের মধ্যে কাঁচা মাটির গোলাগুলিগুলো গুঁজে পুড়িয়ে নেওয়া হত।
৯.৬. লেখিকার জ্যেঠামশাইয়ের গলার আওয়াজ কেমন ছিল?
উঃ লেখিকার জ্যেঠামশাইয়ের গলার গম্ভীর আওয়াজ ছিল।
৯.৭. লেখিকার জ্যেঠামশাই সম্পর্কে কী শোনা যেত?
উঃ - লেখিকার জ্যেঠামশাই সম্পর্কে শোনা যেত তিনি মস্ত বড়ো খেলোয়াড়, গায়ে খুব জোর, আর রাগও খুব।
৯.৮. বাড়ির চাকর সিঁড়ির আলোটা উসকিয়ে দেওয়ার পর কী দেখা গিয়েছিল ?
উঃ- বাড়ির চাকর সিঁড়ির আলোটা উসকিয়ে দেওয়ার পরএকতাল থলথলে কালোমতো নরম গঙ্গামাটির গুলি দেখা গিয়েছিল।
৯.৯. ছোটোদের পুতুলের বিয়েতে কেমন খাওয়া-দাওয়া হত?
উঃ ছোটোদের পুতুলের বিয়েতেছোটোদের পুতুলের বিয়েতে ছোটো ছোটো পাতায় করে ছোটো ছোটো লুচি-মিষ্টি ইত্যাদি খাওয়াদাওয়া হত।
৯.১০. দোতলা পুতুলঘর কে সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছিলেন?
উঃ দোতলা পুতুলঘর লেখিকার মা সাজিয়ে দিয়েছিলেন।
৯.১১. কোন্ খেলার সময় লেখিকা ও তাঁর ভাই-বোনদের মন হালকা খুশিতে ভরে উঠত?
উঃ ‘রাগ বানানো’ খেলার সময় লেখিকা ও তাঁর ভাই-বোনদের মন হালকা খুশিতে ভরে উঠত।
৯.১২. কীভাবে লেখিকার বালা ভেঙে গিয়েছিল ?
উঃ লেখিকার হাতে একটা বালা অন্য বালার মধ্যে ঢুকিয়ে তাঁর দাদা পুলিশ সেজে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময় লেখিকা এক ঝটকায় ছাড়াতে গিয়েই বালাটা ভেঙে গিয়েছিল।
৯.১৩. পুতুলঘরে কীভাবে আগুন লেগেছিল?
উঃ পুতুলের বিয়েতে সাজানো ছোট্ট রঙিন মোমবাতি শেষ অবধি জ্বলে শেষ হওয়াতে ছাতের কাঠে পুতুলঘরে আগুন লেগেছিল।
৯.১৪. সুন্দরকাকা লেখিকার দাদার পিঠ চাপড়ে কী বলেছিলেন?
উঃ সুন্দরকাকা লেখিকার দাদার পিঠ চাপড়ে বললেন, ‘চুপ্পু মানে ওস্তাদ, এক্সপার্ট।’
৯.১৫. লেখিকার দাদার প্রথম কবিতার নাম কী?
উঃ লেখিকার দাদার প্রথম কবিতার নাম 'নদী'।
৯.১৬. তাঁর দ্বিতীয় কবিতাটি দাদা কত বৎসর বয়সে লিখেছিল?
উঃ তাঁর দ্বিতীয় কবিতাটি দাদা আট-নয় বৎসর বয়সে লিখেছিল।
৯.১৭. লেখিকার বাবা বিদেশ থেকে কী পাঠাতেন ?
উঃ লেখিকার বাবা বিদেশ থেকে মজার মজার ছবি আর পদ্যে লেখিকাদের চিঠি লিখতেন।
১০. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১০.১. কীভাবে পটগুলটিশ খেলা চলত?
উঃ লেখিকাদের বাড়ির ছাতের এক কোণে ঘোলা জলের ট্যাংক থেকে গঙ্গামাটি তুলে জমা করা ছিল, তাই দিয়ে লেখিকা।ও তাঁর খেলার সাথিরা গোলাগুলি বানিয়ে পটগুলটিশ খেলা করতেন।
১০.২. লেখিকার জ্যেঠামশাই কেমন মানুষ ছিলেন?
উঃ লেখিকার জ্যেঠামশাই ছিলেন গুরুগম্ভীর প্রকৃতির।তিনি বই পড়তে ভালোবাসতেন। তিনি মস্ত বড়ো খেলোয়াড় ছিলেন, গায়ে ছিল খুব জোর, আর খুব রাগ ছিল।
১০.৩. ‘রাগ বানানো' খেলাটা কীভাবে খেলতে হত?
উঃ হয়তো কারও উপর রাগ হয়েছে, তার শোধ দেওয়ার জন্য তার নামে যা তা অদ্ভুত গল্প বানিয়ে বলা হত। অবশ্য সেই গল্পে হিংস্রভাব বা সেই ব্যক্তির সম্পর্কে কোনো অনিষ্ট চিন্তা ছিল না। সবই ছিল বোকা বানানো হাস্যকর গল্প। সেগুলি শুনে সবাই হেসে লুটোপুটি খেতেন।
১০.৪. কোন্ কোন্ খেলার কথা পাঠ্যাংশে খুঁজে পেলে?
উঃ পাঠ্যাংশে পাওয়া গেছে এমন খেলাগুলির নাম হল—নরম মাটির গোলাগুলি বানিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করে পটগুলটিশ খেলা, চোর-পুলিশ খেলা, দস্যিপনা খেলা, ক্রিকেট খেলা, হকি খেলা, হুড়োহুড়ি খেলা, পুতুলখেল ইত্যাদি।
১০.৫. কীভাবে পটগুলটিশের গুলি তৈরি হত?
উঃ লেখিকাদের বাড়ির ছাতের এক কোণে ঘোলা জলের ট্যাংক থেকে তুলে জমা করে রাখা গঙ্গামাটি গুলি তৈরি হত। পরে আবার গুলিগুলোকে বেশ লাল করে উনুনে পুড়িয়ে নেওয়া হত ।
১০.৬. ‘তোমাকে দেখছি এবার লোহার বালা গড়িয়ে দিতে হবে'।—একথা কে বলেছেন? কোন্ প্রসঙ্গে তাঁর এই। উক্তি? বক্তাকে তোমার কেমন মনে হয়েছে?
উঃ এই। উক্তিটি বলেছেন লেখিকার মা।
লেখিকা চোর, তাঁর দাদা পুলিশ। লেখিকার হাতে সাপমুখো বালা ছিল। তার একটা মুখ টেনে ফাঁক করে অন্য বোলাস ও লেভিতর গলিয়ে হাতকড়ি বানিয়ে দাদা তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময় লেখিকার এক ঝটকা টানে বালা ভেঙে তিন টাটার হয়ে গেল । তা দেখে তাঁর মা হেসে এই কথা বলেছিলেন।
লেখিকা সরল প্রকৃতির ছিলেন। তবে তার মধ্যে দস্যিপনাও তাঁর ছিল।
১০.৭. মেয়েদের খেলাধুলোর কেমন ছবি পাঠ্যাংশে খুঁজে পেলে?
উঃ মেয়েদের খেলাধুলোর মধ্যে পাঠ্যাংশে বিশেষ করে পুতুলখেলা খুঁজে পাওয়া গেল। দিদিদের সঙ্গে লেখিকা চমৎকার পুতুলখেলা খেলতেন। তাঁর মা সুন্দর করে দোতলা পুতুলঘর সাজিয়ে দিয়েছিলেন।
১০.৮. ‘হ য ব র ল'-র স্রষ্টা কে? তাঁকে লেখিকা কীভাবে স্মরণ করেছেন?
উঃ হ য ব র ল-র স্রষ্টা হলেন লেখিকার দাদা সুকুমার রায়।
তাঁদের মধ্যে ‘রাগ বানানো’ খেলা খেলতে গিয়ে দাদার যুক্তিতে যা-তা অদ্ভুত হাস্যকর গল্প বানানো প্রসঙ্গে দাদাকে লেখিকা স্মরণ করেছেন।
'
১১. জ্যেঠতুতো, পিসতুতো, মাসতুতো— এইসব সম্পর্ক ছাড়াও আরও অনেক সম্পর্ক আমাদের পরিবারগুলিতে থাকে। তুমি যে-কয়টি সম্পর্কের নাম জানো সেগুলো লেখো।
উঃ পিসতুতো, মামাতো, খুড়তুতো ইত্যাদি সম্পর্ক।
১২. প্রতিশব্দ লেখো :
সাথি, বিশ্রাম, মজা, সিঁড়ি, রান্নাঘর, নিশান।
উঃ সাথি—সঙ্গী, দোত, বন্ধু, সহযাত্রী।
বিশ্রাম—বিরত, বিরাম, জিরন।
মজা—কৌতুক, ব্যঙ্গ, রসিকতা।
সিঁড়ি—সোপান, পাইঠা, ধাপ, স্তর।
রান্নাঘর - রন্ধনশালা, পাকগৃহ।
নিশান—চিহ্ন, দাগ, পতাকা।
১৩. বর্ণবিশ্লেষণ করো : অভাব, উনুন, আহত, টুকরো, মোমবাতি, চিঠি।
অভাব—অ + ভ্ + আ + ব।
উনুন—উ + ন্ + উ + ন।
আহত—আ + হ্ + অ + ত্ + অ।
টুকরো–ট্ + উ + ক্ + অ + র্ + ও।
মোমবাতি—ম্ + ও + ম্ + অ + ব্ + আ + ত্ + ই। চিঠি — চ্ + ই + ঠ + ই।
১৪. সন্ধি বিচ্ছেদ করো : স্বস্তি, নগেন্দ্র, আরেক।
উঃ স্বস্তি—সু + অস্তি।
নগেন্দ্ৰ—নগ + ইন্দ্ৰ।
আরেক—আর + এক।
১৫. নীচের গদ্যটিতে যতিচিহ্ন ব্যবহার করো : ধমক দিয়ে বললেন এটা আবার কী কোত্থেকে এল চাকর কাঁচুমাচু হয়ে বলল আজ্ঞে ছেলেরা কী যেন খেলা করছিল।
উঃ ধমক দিয়ে বললেন, 'এটা আবার কী, কোত্থেকে এল?' চাকর কাঁচুমাচু হয়ে বলল, “আজ্ঞে, ছেলেরা কী যেন খেলা করছিল—'
১৬. পাশের প্রতিটি বিষয় নিয়ে পাঁচটি করে স্বাধীন বাক্য লেখো :
গয়না, পরিবার, ঘুঁটে।
উঃ গয়না—(১) দিদির গায়ের গয়না পরিয়ে বাপমরা মেয়েটির বিয়ে দিতে হল।
(২) দিন দিন গহনার দাম বাড়ছে
(৩) গয়না পরে মেলায় মেলায় গেলে গহনা চুরি হতে পারে।
(৪) গয়না কিনতে গেলে ভালো জুহুরির কাছে যেতে হয়।
(৫) সোনার গয়না কেনা এখন দুঃসাধ্য।
পরিবার—(১) আত্মীয় স্বজন নিয়ে তৈরি হয় পরিবার।
(২) কয়েকটি পরিবার নিয়ে একটি পাড়া গড়ে ওঠে।
(৩) এমন কোনো পরিবার নেই যার ঘরের কেউ মারা যায়নি।
(৪)কয়েকজন সদস্য নিয়ে একটি পরিবার গঠিত হয়।
(৫) পরিবারের অনেককে লক্ষ্মীর ভান্ডার দেওয়া হয়।
ঘুঁটে—(১) গোবর থেকে ঘুটে তৈরি হয়
(২) ঘুঁটে জ্বালানি এই হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
(৩) মেয়েটি খুঁটে বিক্রি করে সংসার চালায়।
(৪) ঘুটে পোড়লে ধোঁয়া তৈরি হয়
(৫) কবিতায় আছে, ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে।
১৭. বছরের কোন্ সময় কোন্ খেলা খেলতে তুমি ভালোবাসো সেই অনুযায়ী ছকটি পূরণ করো ঃ
ঋতু ;;- খেলা
গ্রীষ্মের সময়- ফুটবল
বর্ষার সময় ---ফুটবল, হাডুডু
শীতের সময়-ব্যাডমিন্টন, ক্রিকেট
বসন্তের সময় ব্যাডমিন্টন, ক্রিকেট
হাতে কলমের বাইরে কিছু প্রশ্নোত্তর
১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
★ গোলা-টা সিঁড়ির ছাতের তলার দিকে লেগে—
(ক) একেবারে ঘুঁটের মতো চ্যাপটা হয়ে সেঁটে রইল। (খ) একেবারে বলের মতো গোল হয়ে গেল। (গ) একেবারে ছিটকে পড়ে গেল।
উত্তর : একেবারে ঘুঁটের মতো চ্যাপটা হয়ে সেঁটে রইল।
★ লেখিকার' নতুন বাড়ি ছিল—
(ক) মামাবাড়ির কাছে (খ) দাদুর বাড়ির কাছে (গ) জ্যাঠামশাই ও পিসিমার বাড়ির কাছে।
উত্তর : (গ) জ্যাঠামশাই ও পিসিমার বাড়ির কাছে।
★ রান্নাঘরের মরা উনুনের মধ্যে—
(ক) কয়লা দিয়ে আসতাম (খ) গুলি গুঁজে দিয়ে আসতাম (গ) কাগজ গুঁজে দিয়ে আসতাম।
উত্তর : (খ) গুলি গুঁজে দিয়ে আসতাম।
★ লেখিকার দাদার লেখা দ্বিতীয় কবিতা—
(ক) টিক টিক টং (খ) নদী (গ) হিজি-বিজ-বিজ।
উত্তর : (ক) টিক টিক টং।
★ ছাতের ছিরি দেখে জ্যাঠামশাই—
(ক) ভীষণ রেগে গেলেন (খ) হো-হো করে হেসে উঠলেন (গ) ভীষণ বিরক্ত হলেন।
উত্তর : হো-হো করে হেসে উঠলেন ।
সত্য অথবা মিথ্যা নির্ণয় করো :
★ হঠাৎ থ্যাপ করে কী একটা তাঁর পায়ের কাছে পড়ল।
উত্তর : সত্য।
★ পুতুলের ঘর ছিল চারতলা।
উত্তর : মিথ্যা।
★ গঙ্গা থেকে গঙ্গামাটি তুলে জমা করা ছিল।
উত্তর : মিথ্যা।
★ গুলিগুলোকে বেশ হলুদ করে পুড়িয়ে নিলাম।
উত্তর : মিথ্যা।
★ দেখতে দেখতে ছাতটা কাদার ঘুঁটেতে ভরতি হয়ে গেল।
উত্তর : সত্য।
এলোমেলো অক্ষরগুলিকে সাজিয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করো ঃ
উত্তর ঃ
য়পকাত্রি > পত্রিকায়
সংকচিকি > চিকিৎসক
বাসীপ্র > প্রবাসী
শটিগুটপল > পটগুলটিশ
রনুনেউ > উনুনের
★ লেখিকা কার সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলা খেলতেন ?
উত্তর : লেখিকা তাঁর দাদার সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলা খেলতেন।
★ কে মস্তবড়ো খেলোয়াড় ছিলেন?
উত্তর : লেখিকার জ্যেঠামশাই।
★বালাভাঙা টুকরোগুলো মায়ের কাছে নিয়ে গেলে লেখিকার মা কী বলেছিলেন?
উত্তর ঃ মা হেসে বলেছিলেন, 'তোমাকে দেখছি এবার লোহার বালা গড়িয়ে দিতে হবে।'
★ লেখিকা সবাই কোথায় কী দেওয়ার পান্না শুরু করলেন ?
উত্তর : সিঁড়ির ছাদের তলার দিকে ঘুঁটে দেওয়ার পান্না শুরু করলেন।
★ জ্যেঠামশাইকে কারা ভীষণ ভয় করত?
উত্তর ঃ ও বাড়ির ছেলেরা ভীষণ ভয় করত।
★লেখিকাদের ছাতে কোন্ খেলার হাতেখড়ি হয়েছিল?
উত্তর : ক্রিকেট, হকি প্রভৃতি খেলাতে।
★কোন্ খেলায় লেখিকা খুব মজবুত ছিলেন?
উত্তর ঃ দাদাদের সঙ্গে যতসব হুড়োহুড়ি খেলায়।
★ কী নিয়ে একটা মজার বই হতে পারত ?
উত্তর : লেখিকার বাবা যখন বিদেশে কোথাও যেতেন, মজার মজার ছবি আর পদ্যে লেখিকাদের কাছে চিঠি লিখতেন।
সেসব যদি সংগ্রহ করা থাকত তাহলে তাই দিয়ে মজার একটা বই হতে পারত।
★ কীভাবে লেখিকার খেলার সাথির অভাব মিটে গেল ?
উত্তর : লেখিকাদের নতুন বাড়িটা জ্যেঠামশাই ও পিসিমার বাড়ির কাছেই ছিল। তাই তাঁর জ্যেঠতুতো, খুড়তুতো, পিসতুতো ভাইবোনদের দল জুটে গিয়ে লেখিকার খেলার সাথির অভাব পূরণ হয়ে গেল।