চতুর্থ শ্রেণি আলো গল্পের হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর/ ALO story question answer class 4
![]() |
চতুর্থ শ্রেণীর বাংলা
আলো
লীলা মজুমদার
লেখিকা লীলা মজুমদার পরিচিতি:-সাহিত্যিক লীলা মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮। পিতার নাম প্রমদারঞ্জন রায়। মাতা্র নাম সুরমাদেবী। তার জন্ম হয় গড়পার রোডের বাড়িতে। ২০০৭ সালে ৫ এপ্রিল তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আলো গল্পের নামকরণ সার্থকতা:-
আলোচ্য গল্পে শম্ভু একজন বারো বছর বয়সের ছেলে। রাত হলেই সে বনজঙ্গলকে বড্ড ভয় পায়। তাই শম্ভু রাতে একলা বাইরে বেরোয় না। কিন্তু সে অন্ধকার রাতে একটা লুণ্ঠন হাতে বেরিয়ে তার দাদুর পা ভালো করার জন্য বন থেকে ঔষধ নিয়ে এসেছিল। সে একটা বিরাট সমস্যার সমাধান সে করে ফেলেছিল । আলোই সব সমস্যার সমাধান এনে ছিল। তাই আমার মতে আলো গল্পের নামকরণে যথেষ্ট সার্থক হয়েছে।
আলো" গল্পটির বিষয়বস্তু আলোচনা:-
"আলো" গল্পটিতে একটি বনের ধারে শত্রু, তার পিসি ও দাদু থাকে। সূর্য ডুবলেই বারো বছরের শম্ভু জঙ্গলের দিকে তাকালেই ভয় পায়। অন্ধকার যেন তাকে কুড়ে কুড়ে খায়। বনের মধ্যে অন্ধকারে কীসের সব ছায়া দেখে।, নানারকমের আওয়াজ পোনে। পাতার ফাঁক দিয়ে বাতাসের শো শো শব্দ শোনে। গাছের ডালে কীসের যেন ডানা ঝাপটায় মাপুড়মুপুড় করে। শম্ভু দুকানে আঙুল দিয়ে মাথার ওপর চাদর টেনে চুপ করে শুয়ে থাকে। কারোর আদরের কথায় তার মন ভরে না। একদিন খুব ঝড় উঠেছে। সেদিন দাদু তখনও বাড়ি ফরেনি। সাধারণত শম্ভুর দাদু অত সন্ধ্যাবেলা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে থাকে না। তাই পিসি শত্রুকে বললেন দাদুর একটু খোঁজ নেবার জন্য। শম্ভু অন্ধকারে ঝড় জলে রাত্রে যেতে রাজি হল না ৷ হঠাৎ দরজার ধাক্কা শুনে পিসি দরজা খুলে দেখে তাঁর বাবাকে কারা যেন অচৈতন্য অবস্থায় নিয়ে এসেছে। যারা নিয়ে এসেছেন তারা হলেন নিতাই আর গুরুমশাই। তাঁরা বললেন গাছ থেকে পড়ে গেছে। মনে হয় পা ভেঙেছে। অজ্ঞান হয়ে গেছে। তবে ভয়ের কোনো কারণ নেই। “আপনাদের বাড়ির পিছনে যে সুসনি পাহাড় আছে সেখানে হাড়ভাঙা গাছ আর পাথরের গুহায় লাল মধু আছে৷ ওই পাতা বেটে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে লাগিয়ে দিলেই ব্যথা সেরে যাবে। পিসি বারবার বলা সত্ত্বেও সে ওষুধ আনতে রাজি হল না। সে বলল, অন্ধকারে যাবে না। ভোরবেলা গিয়ে এনে দেবে। কিন্তু ততক্ষণে হয়তো তার দাদুও আর বেঁচে থাকবে না। তখন উনুনের ধারে বসে থাকা বিড়ালের গান মনে পড়ে যায় ৷ বেড়াল যেন বলছে কোথায় যাও, কোথাও যেও না। এই ঘরেতে অনেক আরাম, সুখে থাকো। নিরাপদে বিছানা পেতে গরম ঘরেতে শুয়ে থাকো। শুধু শুধু ঝড়ে পড়ে জলে ভিজে নিজে মরতে যেও না। এসব ভেবে শম্ভু আর উঠল না। কিন্তু শম্ভুর পিসি শম্ভুকে এমন কিছু কথা বলল যে, কাউকে কিছু না বলে, কোনো দিকে না তাকিয়ে লণ্ঠন নিয়ে পাহাড়ের পথে যেতে শুরু করল। খুব ভয় পেল প্রথমে। কতকিছু দেখল, প্যাচাদের, হুতুমদের গান শুনলো, গাছেদের গান শুনলো, বনবিড়ালদের গান শুনলো কিন্তু সবই লণ্ঠনের আলোয় অতিক্রম করে দাদুর জন্য শম্ভু হাড়ভাঙা পাতা, আর শিশিভরতি মধু নিয়ে এলো। বনবিড়ালদের গান শুনে সে ভয় পেয়েছিল ঠিকই, তবে মনসা ঝোপে ঠোকর খেয়ে, টিটকিরি শুনে, বাদুরদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সে একটুও ভয় পায়নি।
হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর
১। লীলা মজুমদারের সম্পাদিত পত্রিকাটির নাম কী ?
উঃ লীলা মজুমদারের সম্পাদিত পত্রিকাটির নাম হল ‘সন্দেশ’।
২। তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উঃ তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম (১).' হলদে পাখির পালক' (২). ‘‘চিনে লণ্ঠন।’
৩। নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাওঃ
৩.১ নিতাই কে?
উঃ নিতাই পাঠশালার একজন ছাত্র। অন্যদিকে শম্ভুর সহপাঠী।
৩.২ সারারাত বনের মধ্যে কেমন শব্দ হয় ?
উঃ সারারাত বনের মধ্যে খসখস, ফসফস, মটমট, ফোঁসফোঁস শব্দ হয়।
৩.৩ শম্ভুর দাদু বন থেকে কী কী খুঁজে আনে ?
উঃ শম্ভুর দাদু বন থেকে গাছগাছলা, ওষুধ, আঠা এবংমধু খুঁজে আনে।
৩.৪ কারা শম্ভুকে ভয় দেখিয়েছিল ?
উঃ হুতুম, লক্ষ্মীপ্যাঁচা, গাছ, বনবিড়াল, মনসাঝোপ, বাদুর এরা শম্ভুকে ভয় দেখিয়েছিল।
৩.৫ শম্ভু দাদুর জন্য কী আনতে গিয়েছিল?
উঃ শম্ভু দাদুর জন্য হাড়ভাঙা গাছের পাতা আর লাল মধু আনতে গিয়েছিল।
৩.৬ দাদুর পায়ের ব্যথা কোন্ ওষুধে সারবে ?
উঃ হাড়ভাঙা পাতা বেটে লাল মধুর সঙ্গে মিশিয়ে লাগালে দাদুর পায়ের ব্যথা সারবে।
৩.৭ শম্ভু শেষপর্যন্ত মন থেকে কী দূর করতে পেরেছিল ?
উঃ শম্ভু শেষপর্যন্ত মন থেকে ভয় দূর করতে পেরেছিল।
৩.৮ এই নাটকে মোট কয়টি চরিত্রের দেখা মেলে?
উঃ এই নাটকে মোট পাঁচটি চরিত্রের দেখা মেলে।
৪। ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :
৪.১ শম্ভুর.....(বারো/তেরো/চোদ্দো) বছর বয়স। উঃ শম্ভুর বারো বছর বয়স।
৪.২.......(পাহাড়ের/বনের/মাঠের) ধারে শম্ভুর দাদুর ঘর।
উঃ বনের ধারে শম্ভুর দাদুর ঘর।
৪.৩ দিনেরবেলার পাঠশালার সবচেয়ে দুরন্ত ছেলে.....(নিতাই/গুরু/ শম্ভু)।
উঃ দিনেরবেলার পাঠশালার সবচেয়ে সুরত ছেলে শম্ভু।
৪.৪ হাড়ভাঙা পাতার গাছ ....(সুসনি/শুশুনিয়৷) পাহাড়ের মাথায় ।
উঃ হাড়ভাঙা পাতার গাছ সুসনি পাহাড়ের মাথায় ।
৪.৫ শম্ভু কে বাইরে যেতে বারণ করেছিল।
(কাক/গোল্ড/ বেড়াল)।
উঃ শম্ভু কে বাইরে যেতে বারণ করেছিল বেড়াল।
৫। ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মেলাও ৷
.উত্তর-
'ক' স্তম্ভ খ’ স্তম্ভ
পাঠশালা > গুরুমশায়
বন > গাছপালা
হাঁড়ি > ভাত
অন্ধকার > ভয়
মনসাঝোপ > কাঁটা
৬. পাশের শব্দঝুড়ি থেকে ঠিক শব্দ নিয়ে বাক্যটি সম্পূর্ণ করো :
:শব্দঝুড়ি:;-
ধারালো, অসাড়,
মধুর, শোঁশোঁ,
মনসাঝোপ
উঃ ৬.১ পাতার ফাঁক দিয়ে বাতাস বসায় শোঁশোঁ।
৬.২ বুড়ো দাদু অসাড় অচেতন হয়ে পড়ে থাকে।
৬.৩ হাতের তলায় মধুর শিশি খুঁজে পায়।
৬.৪ দূরে দূরে খানকতক মনসাঝোপ।
৬.৫ করাল কঠিন ধারালো ভারি।
৭। একই অর্থের শব্দ পাঠ থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো :
বায়ু- বাতাস
শিক্ষক -গুরুমশাই
বিদ্যালয় - পাঠশালা।
অজানা—অদৃশ্য।
শিলা—পাথর।
আঁখি—চক্ষু।
৮. বিপরীতার্থক শব্দ লিখে তা দিয়ে বাক্যরচনা করো :
-
গরম ( ঠান্ডা) শীতকালে রাতে খুব ঠান্ডা পড়ে।
দুঃখ (সুখ) – সুখ দুঃখ নিয়ে মানুষের জীবন গড়া।
দুরন্ত (শান্ত) ভোরের বাতাস শান্ত থাকে।
ভয় (সাহস) – উড়োজাহাজে চাপতে হলে সাহস দরকার।
বন্ধ (খোলা) ঘরের দরজা খোলা রাখলে কুকুর বিড়াল ঢুকে যেতে পারে।
-
৯। নীচের বর্ণগুলি কোনটি কী তা পাশে ‘/ ’ চিহ্ন দিয়ে বোঝাও :
অল্পপ্রাণ বর্ণ - ক,দ,ব,ট,ন।
মহাপ্রাণ বর্ণ- ছ,থ,ঘ।
অঘোষ:- ক,ছ,থ,ট।
সঘোষ:- দ,ব,ঘ,ন।
[এগুলো তে ✓ চিহ্ন দিয়ে নাও]
১০। পাঠ থেকে ধ্বন্যাত্মক শব্দগুলি খুঁজে নিয়ে তার একটি তালিকা তৈরি করো ঃ
যেমন— খসখস ।
উঃ ফসফস। মটমট। ফোঁসফোঁস। শোঁশোঁ। সড়াৎ সড়াৎ। ঝাপুড়ঝুপুড়।
১১। বাক্য বাড়াও :
১১.১ আমি নেব। (কী নেব?)
উঃ আমি হাড়ভাঙা পাতা আর শিশি ভরে লাল মধু নেব।
১১.২ দাদু অচেতন হয়েছেন। (কীভাবে?)
উঃ দাদু গাছ থেকে পড়ে গিয়ে অচেতন হয়েছেন।
১১.৩ চাল নিজে গিয়ে কিনে এনেছিল। (কোথা থেকে?)
উঃ চাল নিজে গিয়ে হাট থেকে কিনে এনেছিল।
১১.৪ নাকে গন্ধ আসছে। (কেমন গন্ধ?
উঃ নাকে সোঁদা গন্ধ আসছে।
১১.৫ বনবেড়ালের দল মনসাঝোপের আড়াল দিয়ে ফিরে যায়। (কোথায় ?)
উঃ বনবেড়ালের দল মনসাঝোপের আড়াল দিয়ে নিজেদের আস্তানায় ফিরে যায়।
১২. নীচের বাক্যগুলির মধ্যে থেকে কর্তা, কর্ম ও ক্রিয়াপদগুলি খুঁজে বের করো :
১২.১ আমি ওষুধ বলে দিচ্ছি।
উঃ আমি কর্তা।
ওষুধ—কর্ম।
বলে দিচ্ছি—ক্রিয়া।
১২.২ বাঁকারা লুকিয়ে আছে।
উঃ বাঁকারা কর্তা।
লুকিয়ে—কর্তা।
আছে—ক্রিয়া।
১২.৩ সূয্যি ডুবে গেছে কতক্ষণ!
উঃ সূয্যি -কর্তা।
ডুবে—কর্ম।
গেছে—ক্রিয়া।
১২.৪ ঝোপরা তাকে টিটকিরি দেয়।
উঃ ঝোপরা কর্তা।
টিটকিরি—কর্ম।
দেয়—ক্রিয়া।
১২.৫ দাদুকে আমি ভালো করে তুলব।
উঃ আমি - কর্তা।
ভালো—কর্ম।
তুলব—ক্রিয়া।
১৩. নীচের দুটি ছবির মধ্যে ছয়টি অমিল খুঁজে বের করো :
উঃ (১) বামহাত, (২) ডানহাত, (৩) মৌচাক থেকে মধু ঝরছে, (৪) টুপি, (৫) পাখি, (৬) ডান হাঁটু।
কিছু অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন:- ‘যা বাবা লণ্ঠনটা নিয়ে একটু এগিয়ে গিয়ে দ্যাখ’–একথা কে বলেছিল? কাকে বলেছিল? কেন বলেছিল?
উঃ একথা পিসিমা বলেছিল। শম্ভুকে বলেছিল। কারণ, এত ঝড়-দুর্যোগ রাতে দাদু এখনো বাড়ি ফেরেনি। পিসি তাই তাকে দাদুর খোঁজে যেতে বলেছিলেন।
প্রশ্ন:- শম্ভু কী আনতে গিয়েছিল? কোথায় আনতে গিয়েছিল?
উঃ শম্ভু হাড়ভাঙা পাতা আর লাল মধু আনতে গিয়েছিল।
শম্ভু সুসনি পাহাড়ে ওইসব জিনিস আনতে গিয়েছিল।
প্রশ্ন:-আলো গল্পে কখন শম্ভু ভয়ে কাদা হয়ে যেত?
উঃ রাতেরবেলা শম্ভু ভয়ে কাদা হয়ে যেত।
প্রশ্ন:- আলো গল্পে কে বাড়ি ফেরেনি ?
উঃ শম্ভুর দাদু বাড়ি ফেরেনি।
প্রশ্ন:- আলো গল্পে শম্ভুর বয়স কত ?
উঃ শম্ভুর বয়স বারো বছর।
প্রশ্ন:- আলো গল্পে কারা দরজা ধাক্কা দিচ্ছিল?
উঃ নিতাই আর গুরুমশায় দরজা ধাক্কা দিচ্ছিল।
প্রশ্ন:- আলো গল্পে শম্ভুর দাদু কোথায় পড়েছিলেন?
উঃ দাদু গাছতলায় পড়েছিলেন।
প্রশ্ন:-আলো গল্পে শম্ভু কোথায় পড়তে যেত?
উঃ শম্ভু পাঠশালায় পড়তে যেত।
প্রশ্ন:-আলো গল্পে কার কথায়, শম্ভুর ভয় ভাঙে না?
উঃ দাদুর কথায় শম্ভুর ভয় ভাঙে না।
প্রশ্ন:-আলো গল্পে কে খাওয়ায় পরায় ?
উঃ বন খাওয়ায় পরায়।
প্রশ্ন:- আলো গল্পে ঘরের চাল কে উড়িয়ে নিয়ে যাবে?
উঃ ঝড় ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে যাবে।
প্রশ্ন:-শম্ভু পিসির পিছনে কী করছিল?
উঃ শম্ভু পিসির পিছনে লুকোচ্ছিল।
প্রশ্ন:- ওষুধ লাগাতে দেরি করলে কী হবে?
উঃ ওষুধ লাগাতে দেরি করলে পা ফুলে ঢোল হয়ে যাবে।
প্রশ্ন:- সুসনি পাহাড়ে কী কী পাওয়া যায় ?
উঃ হাড়ভাঙা পাতা, লাল মধু পাওয়া যায়।
প্রশ্ন:- হাট থেকে কে চাল কিনে আনত?
উঃ শম্ভুর দাদু হাট থেকে ঢাল কিনে আনত।
প্রশ্ন:- শম্ভু ভয়ে কাঠ হয়ে যেত কেন?
উঃ শম্ভু সারাদিন দুরন্তপনা করত। কিন্তু রাত হলে সে ভয় পেয়ে বনের দিকে তাকাতে পারত না। নানারকম আওয়াজ শুনতো। বড়ো বড়ো চোখ দপ করে জ্বলে উঠত।
প্রশ্ন:- ‘এই বেলা পথ ধর'—একথা কে বলেছিল? কাকে বলেছিল? কেন বলেছিল ?
উঃ পাঠশালার গুরুমশাই একথা বলেছিল। শম্ভুকে এই কথা বলেছিল।
কারণ, বাইরে তখন খুব ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিল। এখন একটু থেমেছে, তাই তিনি বললেন যে এখনই পথ ধরতে হবে।
প্রশ্ন:- শম্ভুর পিসি শম্ভুকে কী বুঝিয়েছিল?
উঃ শম্ভুর পিসি শম্ভুকে বুঝিয়েছিল যে, এতটুকু বয়সে তার বাবা-মা তাকে দাদু ও পিসির কাছে রেখে বিদেশে চলে গিয়েছে। দাদু কষ্ট করে তাকে মানুষ করেছে। নিজে গিয়ে হাট থেকে চাল কিনে আনে। কত কষ্টের টাকা। আর কিনা তার বিপদের দিনে তারা তাকে বাঁচাতে পারবে না।
প্রশ্ন- মধু আর হাড়ভাঙা পাতা আনতে যাওয়ার সময় শম্ভুর কার কার সঙ্গে দেখা হয়েছিল? তারা কি কোনো ক্ষতি করেছিল ?
উঃ মধু আনতে গিয়ে শম্ভুর প্রথমেই দেখা হয়েছিল প্যাচাদের সঙ্গে, হুতুমদের সঙ্গে। তারপর একে একে দেখা হল গাছেদের সঙ্গে, মনসাঝোপের কাঁটার সঙ্গে, বনবিড়ালের সঙ্গে আর বাদুরের সঙ্গে।
না, তারা কোনোরকম ক্ষতি শম্ভুর করেনি। সবটাই ছিল শম্ভুর মনের ভয়। তবে মনসাঝোপের কাঁটার খোঁচা শম্ভু খেয়েছিল। আর যেসব প্রাণীদের শম্ভু দেখেছিল তারা সকলেই ছিল নিশাচর প্রাণী। আলো তারা সহ্য করতে পারে না। তাই লণ্ঠনের আলোয় তারা পালিয়ে গিয়েছিল।
প্রশ্ন:;- গাছগুলিকে দেখে শম্ভুর কেমন মনে হয়েছিল ?
উঃ শম্ভু দেখল গাছগুলি কেমন কাছাকাছি, ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে আছে। দিনেরবেলা তারা এমন করে থাকে না।
তালগোল পাকিয়ে ডালের ওপরে কী যেন একটা। যেন শম্ভুর দিকে এগিয়ে আসছে। লণ্ঠন তুলে ধরতেই গাছপালাগুলো পাতলা হয়ে গেল। গাছের পিছন দিয়ে যারা চলে গেল তারা মনে হল বাঘ। এটাই ছিল শম্ভুর ধারণা।