চতুর্থ শ্রেণীর বাংলা বনের খবর হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর/ boner khabar class 4 bangla'
![]() |
চতুর্থ শ্রেণীর বাংলা
বনের খবর ■
প্রমদারঞ্জন রায়
লেখক প্রমদারঞ্জন রায়পরিচিতি :- প্রমদারঞ্জন রায় ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন । তার জন্মস্থান বর্তমান বাংলাদেশের ময়মনসিংহের মসুয়ায়। তাঁর পিতার নাম। কালিনাথ রায়। প্রমদারঞ্জন ছিলেন জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রেকিশোর রায়চৌধুরীর ছোটো ভাই। লীলা মজুমদারের পিতা ছিলেন। তিনি হাওড়ার শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করেছেন।তাঁর কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় তাঁকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভারত, বর্মা, শ্যামদেশের বনজঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে হয়। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি পরলোক গমন করেন।
বনের খবর গল্লের নামকরণের সার্থকতা:-
আলোচ্য ‘বনের খবর' রচনাটিতে লেখক তাঁর চাকরি জীবনের প্রয়োজনে যেভাবে গভীর বনে গিয়েছেন তারই একটি ঘটনার সহজ-সরল বিবরণ আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। প্রায় সাড়ে ছশো-সাতশো বর্গমাইল জায়গা, তার মধ্যে একটা গ্রাম নেই, পথ নেই। সঙ্গে প্রায় যাটজন লোক, খাদ্যবস্তু এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দুটি হাতির পিঠে চাপিয়ে গভীর বনের মধ্যে তাঁদের যেতে হয়েছে।
সেই বন গাছে গাছে এতই ভরে আছে যে সকাল নটা-দশটার আগে সেখানে সূর্য দেখা যায় না। কোথাও কোথাও এতই ঘন বন যে ঠিক মনে হয় যে দিনেরবেলাতেই সন্ধে নেমে এসেছে। নানারকম জন্তু জানোয়ার কিলবিল করছে। বুনো হাতি, বাঘ, গন্ডার সব কিছুরই মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁদের। গল্পের এই ঘটনাগুলি সবই বনের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে । তাই আমার মতে বোনের খবর নামকরণটি যথার্থ হয়েছে বলে মনে হয়। পড়তে পড়তেই বোঝা যায় কাহিনির ‘বনের খবর'নামকরণ সার্থক হয়েছে।
বনের খবর গল্লের বিষয়বস্তু আলোচনা
প্রায় ষাট জন লোক, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, খাবারদাবার দুটো হাতির পিঠে চাপিয়ে লেখক তাঁর চাকরি জীবনের জন্য একটা ভয়ংকর গভীর বনে গিয়েছেন। দশ-বারোজন লুশাই বন (অসম) কেটে পথ তৈরি করলে পিছনের লোকগুলি এগোতে পারবে। বনের ভিতরে জন্তু-জানোয়ার কিলবিল করছে।
সকাল নটা-দশটার আগে সূর্য দেখা যায় না। এক-এক জায়গায় এমনই ঘন বন যে আকাশ দেখা যায় না, মনে হয়, সঙ্গে নেমে এসেছে। শিকারি এক বুড়ো লুশাইকে সঙ্গে নিয়ে লেখক বনের মধ্যে আগে আগে চলেছেন। তাঁদের পিছনে শ্যামলাল, তার হাতে দূরবিন, বন্দুক আর টোটার থলে। অন্য আর-একজনের হাতে খাবার আর জল। তাঁরা চারজন হাতে এক-একখানি দা দিয়ে গাছে দাগ কেটে অন্য সকলের প্রায় আধ মাইল আগে চলেছেন। তাঁদের ওই নিশান দেখে পিছনের অন্যান্যরা এগিয়ে আসছে। চলতে চলতে তাঁরা একটা ভয়ংকর গন্ডারের মুখোমুখি হলেন। লেখক তাঁর বন্দুকে টোটা ভরে গন্ডারের পিছু ধাওয়াvকরতেই সেই জন্তুটা হাওয়ার মতো মিলিয়ে গেল। বুনো হাতির পায়ের চিহ্ন দেখে বনের নালা পার হচ্ছেন তাঁরা। হাতি,।গন্ডার, বাঘ, হরিণ সব জন্তুকেই দেখতে পাচ্ছেন। হঠাৎ পথের ওপর আবার একটা বিশাল দেহ গন্ডার যমদূতের মতো
দাদামশাইয়ের মতো দাঁড়িয়ে ফোঁস ফোঁস করতে লাগল। তাকে দেখেই লেখকদের সঙ্গী লুশাই বন্দুক দিয়ে তাকে মারতে বলল। লেখক বন্দুক হাতে তাক করতে না করতেই সে একটা হুংকার দিয়ে দৌড়ে পাহাড়ে উঠে গেল। তার সামনে যত বাঁশ পড়ল তার সবগুলো প্যাকাটির মতো পটপট করে ভেঙে গেল।
এরপর লেখক তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে মাত্র আধ মাইল এগোতে না এগোতেই আবার একটা দাঁতওয়ালা হাতির ভয়ংকর গর্জন শোনা গেল ৷ তার গর্জনে সারা বন যেন থরথর করে কেঁপে উঠল। লেখক বন্দুক হাতে নিয়ে দাঁড়ালেন। লেখকের সঙ্গী শিকারি বুড়ো লুশাই বলল, ‘বোধহয় গন্ডারটা ওর সামনে পড়েছে।' হাতিটা আরও তিন-চারটে ডাক দিয়ে, ধীরে
ধীরে বাঁশ ভাঙতে ভাঙতে পাহাড়ে উঠল।
এরপর পড়ল পাকোয়া নদী। এক কোমর জল, সত্তর-আশি হাত চওড়া। নদীর ধারে একপাল হাতির পায়ের দাগ।
লেখকের সঙ্গী লুশাই বলল, চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশটা হাতি হবে। সারা েন জলে ভিজে লেখকের কাপড়-চোপড় ভিজে গিয়েছিল। তিনি পাহাড়ে হেলান দিয়ে জুতো-মোজা খুলতে খুলতে লুশাইকে নদীর ওপারে গিয়ে তাঁবুর জায়গা দেখতে বললেন। লুশাই চলে গেলে শ্যামলালও বন্দুক হাতে নিয়ে চলে গেল। লেখক একা। তাঁর খুব খিদে পেয়েছিল। তিনি ‘হুঁ-উ-উ’শব্দে চেঁচিয়ে তাঁর পিছনে পড়ে যাওয়া খাবারওয়ালা খালাসি আর অন্যান্য লোকদের ডাকতে লাগলেন। বার দুই তাঁর হুঁ-উ-উ শব্দ শুনে পাহাড়ের ওপর থেকে একটা হাতি ‘হু-উ-উ’বলে ডেকে উঠল। আর সঙ্গে মাত্র পঞ্চাশ-ষাট হাত দূরে আরও অনেক হাতি গুড়গুড় শব্দ করে তার জবাব দিতে লাগল। লেখক আবার ‘হু-উ-উ’করে চেঁচালেন। আবার
হাতিগুলো নালার কিনারা থেকে গুড়গুড় শব্দ করে নাকে ফোঁসফোঁস আওয়াজ করতে লাগল। তারপর ওপর থেকে মড়মড় করে বাঁশ ভাঙার শব্দ শোনা যেতে লাগল। নদীর ওপার থেকে বুড়ো লুশাই ‘চলে এসো' বলে লেখককে ডেকে চিৎকার করতে লাগল। লেখক তক্ষুনি নদীর ওপারে গিয়ে শ্যামলালের হাত থেকে বন্দুক নিয়ে নদীর ধারে গিয়ে দাঁড়ালেন।
শ্যামলাল আর বুড়ো লুশাই খুব হল্লা জুড়ে দিল। তাই শুনে হাতিগুলো আবার পাহাড়ের ওপরে উঠে গেল।
রাত হলে অন্ধকারে সেই হাতিগুলো লেখকদের ডেরায় থাকা হাতি দুটোর ধারেকাছে ভিড় জমাতে লাগল। তাদের ইচ্ছে লেখকদের সঙ্গে থাকা হাতি দুটোকে তাদের সঙ্গে টেনে নেওয়া। এই হাতি দুটো পর্যন্ত বুনো হাতিদের সাড়া পেয়ে ছটফট
করে আর চিৎকার আরম্ভ করল। তখন লুশাই ও অন্যান্য লোকেরা মশাল ঘুরিয়ে প্রাণপণে বিকট চিৎকারে বুনো হাতিগুলোর দিকে ছুটে গেল, হাতিগুলি পূর্ব ও পশ্চিম দিকের পাহাড়ের বনে উঠে গেল।
হাতে কলমে প্রশ্নের উত্তর।
১। প্রমদারঞ্জন রায় চাকরি সূত্রে কোন্ কোন্ দেশে ঘুরেছেন ?
উঃ চাকরিসূত্রে তিনি ভারত, বর্মা, শ্যামদেশের ঘন জঙ্গলে ঘুরেছেন।
২। লীলা মজুমদার তাঁর কে ছিলেন?
উঃ লীলা মজুমদার ছিলেন প্রমদারঞ্জন রায়ের মেয়ে।
৩। বর্ণবিশ্লেষণ করো :
উঃ ক্রমাগত—ক্ + র্ + অ + ম্ + আ + গ্ + অ + ত্ + অ।
পাঞ্জা–প্ + আ + ঞ + জ্ + আ।
পশ্চিম—প্ + অ + শ্ + চ্ + ই + ম।
কিলিবিলি—ক্ + ই + ল্ + ই + ব্ + ই + ল্ + ই।
প্রাণপণ–প্ + র্ + আ + ণ্ + অ + প্ + অ + ণ।
৪। ‘বনের খবর' গল্পটিতে এমন অনেক শব্দ আছে যা হাইফেন (-) দিয়ে যুক্ত। যেমন ‘সাড়ে ছশো-সাতশো’ ‘দশ-বারোজন' ইত্যাদি। গল্পটিতে এরকম কতগুলো শব্দ আছে খুঁজে বার করে নীচের বাক্সটি ভরতি করো ঃ
উঃ চার-পাঁচ, জুতো-মোজা, বসে-বসে, ‘হুঁ-উ-উ’, পঞ্চাশ-ষাট, নালায়-নালায়, দেখতে-না- দেখতে, জল-কাদা, বিশাল-দেহ, ফোঁস-ফোঁস, ধীরে-ধীরে, আশে-পাশে,আট- দশটা, তিন-চারটে, ভাঙতে-ভাঙতে, সত্তর-আশি, পাঁচ-সাতটা, চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশটা, দাগে-দাগে, জলে-জলে, কাপড়-চোপড়।পাঁচ-সাতটা, এক-একবার, আসতে না আসতেই, করতে-করতে।তিন-চারটে, সাড়ে-চারটেয়, বড়ো-বড়ো,হাত-পা, ন-টা-দশটার, এক-এক, পনেরো-কুড়ি, চলতে-চলতে, এ-গাছ, ভাবতে-ভাবতে, বলতে-না-বলতে,
৫। ধ্বন্যাত্মক শব্দগুলি ব্যবহার করে মৌলিক বাক্যরচনা করো ঃ
উঃ কিলিবিলি— বেগুনের ভেতর অনেকগুলো পোকা কিলবিল করছিল।
হুড়মুড়— ট্রেনে হুড়মুড় করে চাপতে গিয়ে অনেকে আঘাত পেল।
মিটমিট— বিড়ালটা দুধ খেতে এসে মিডমিট চোখে তাকিয়ে ছিল।
পটপট— গাছের ডাল গুলি পটপট করে ছেলেটি ভেঙ্গে ফেলল।
মড়মড়— কালবৈশাখী ঝড়ে মড়মড় শব্দে একটা ডাল ভেঙে পড়ল।
থরথর— প্রচন্ড শীতে অনেকে থরথর করে কাঁপে।
গুড়গুড়— বর্ষাকালে মেঘের গুড় গুড় শব্দ শোনা যায়।
ফোঁসফোঁস— সাপ রেগে গেলে ফোঁসফোঁস করে
৬। একই শব্দ পর পর দু-বার ব্যবহৃত হয়েছে এমন কয়টি শব্দ তোমরা গল্পে খুঁজে পেয়েছো তা লেখো। যেমন—জলে-জলে।
উঃ ভাবতে-ভাবতে, বলতে-না-বলতে, নালায়-নালায়, ফোঁস-ফোঁস, মিটমিট,
ধীরে-ধীরে, পটপট, মড়মড়, থরথর, ভাঙতে ভাঙতে, দাগে-দাগে, জলে-জলে, বসে-বসে, গুড়গুড়, বড়ো বড়ো,এক-এক, আগে আগে, চলতে-চলতে।
৭। নীচের অনুচ্ছেদে কয়টি বাক্য আছে লেখো :
উঃ মোট ৯টি বাক্য আছে। যথাক্রমে—
(১) বেলা নটা-দশটার আগে আর সূর্য দেখা যায় না।
(২) এক-এক জায়গায় এমনি ঘন বন যে আকাশ দেখবার জো নেই।
(৩) ঠিক মনে হয় যেন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে।
(৪) আমি সকলের আগে আগে চলি।
(৫) সঙ্গে একজন বুড়ো লুশাই থাকে।
(৬) সে বড়ো শিকারি।
(৭) তার পিছনে দুজন খালাসি।
(৮) তাদের মধ্যে শ্যামলালের হাতে আবার খাবার আর জল।
(৯) তিনজনের হাতেই এক-একখানি দা।
৮। গল্পটিতে কোন্ কোন্ পশুপাখির উল্লেখ আছে তার একটি তালিকা তৈরি করো। প্রতিটি পশু এবং পাখি সম্পর্কে দুটি করে বাক্য লেখো :
উঃ গল্পটিতে আছে যথাক্রমে—বাঘ, হাতি, গন্ডার, হরিণ, হনুমান (হুল্লুমান), বানর, বুনো মোষ ইত্যাদি পশু আছে।
গল্পটিতে শুধুমাত্র ফেজেন্ট (সুন্দর পাখি)-এর নাম আছে ।
বাঘ-(২) বাঘ পিছন থেকে স্বীকার করে।
হাতি— (১) ভারী চেহারা দেখলেই বোঝা যায় ওটা হাতি।
(২) আগেকার দিনে রাজারা হাতিকে যুদ্ধে ব্যবহার করত।
গন্ডার— (১)গন্ডারের আমরা খুব মোটা হয়।
(২) জঙ্গলে এক শৃঙ্গ গন্ডার দেখতে পাওয়া যায়।
হরিণ— (১) হরিণ খুব দৌড়াতে পারে।
(২) হরিণের শিং গুলি খুব সুন্দর।
ফেজেন্ট— (১) ফেজেন্ট একটি সুন্দর পাখি।
(২) ফেজেন্ট পাখি সব জায়গায় দেখা যায় না
হনুমান—(১) হনুমান গাছে গাছে লাফালাফি করতে পারে।
(হুন্নুমান)
(২) হনুমান গাছের ফল খায়
বুনোমোষ— (১) পাহাড়ি অরণ্যে বুনোমোষ দেখা যায়।
(২) বুনোমোষ খুব হিংস্র হয়।
৯। নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও ঃ
১.১ লুশাই পাহাড়ের বিস্তার কতখানি জায়গা নিয়ে ?
উঃ লুশাই পাহাড়ের বিস্তার সাড়ে ছশো-সাতশো বর্গকিলোমিটার জায়গা নিয়ে।
৯.২ লুশাই পাহাড়কে ভয়ংকর জায়গা কেন বলা হয়েছে?
উঃ লুশাই পাহাড়ে ঘন বন ছাড়া মানুষের বসবাস নেই। সেখানে আছে শুধু জানোয়ার কিলিবিলি করছে। সেখানে সর্বত্র ভয়ের পরিবেশ বিরাজ করছে ।তাই ওই পাহাড়কে ভয়ংকর জায়গা বলা হয়েছে।
৯.৩ হাতির রাস্তা পাওয়া গেলে লোকজনের কেন খুব মজা হল ?
উঃ বন কেটে লোকজনদের রোজ রাস্তা তৈরি করতে অনেক পরিশ্রম করতে হচ্ছিল। যেদিন সেদিন হাতির রাস্তা পাওয়া গেলে, সেদিন থেকে বন কাটতে হচ্ছে না বলে লোকজনদের খুব মজা হল।
৯.৪ গন্ডার দেখে শ্যামলাল কী কী করেছিল?
উঃ গন্ডার দেখে শ্যামলাল তৎক্ষণাৎ পালিয়ে যাচ্ছিল।
৯.৫ দ্বিতীয় দিন বন্দুক এবং বনের পশুপাখি থাকা সত্ত্বেও শিকার করতে পারা যায়নি কেন?
উঃ দ্বিতীয় দিনে বন্দুক থাকা সত্ত্বেও লেখক ভীষণ ঘন বন এবং কুয়াশার জন্য শিকার করতে পারা যায়নি ।
৯.৬ পাকোয়া নদীর বর্ণনা দাও।
উঃ পাকোয়া নদীটা সত্তর-আশি হাত চওড়া হবে, তাতে এক কোমর জল ছিল।
৯.৭ লেখকের হুঁ-উ-উ চিৎকার শুনে হাতিরা কী করেছিল ?
উঃ লেখকের ‘হুঁ-উ-উ’ চিৎকার শোনামাত্র তাঁর মাথার ওপরের পাহাড় থেকে একটা হাতি ‘হুঁ-উ-উ' বলে ডেকে উঠল।আর লেখকের কাছ থেকে পঞ্চাশ-ষাট হাত দূরে আরও অনেক হাতি গুড়গুড় শব্দ করে তার জবাব দিতে লাগল।
৯.৮ রাতে কোথায় তাঁবু খাটানো হল ?
উঃ রাতে পাকোয়া নদীর ওপারে বন কেটে তাঁবু খাটানো হল।
৯.৯ মাহুতরা রাতে কোথায় হাতিদের বেঁধে রাখল ?
উঃ মাহুতরা রাতে হাতিদের তাদের তাঁবুর কাছেবেঁধে রাখল।
১০। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো ঃ
১০.১ কীভাবে রাতে বুনো হাতি তাড়ানো হল ?
উঃ লুশাইরা শুকনো বাঁশের মশাল তৈরি করে, লম্বা লম্বা কাঁচা বাঁশের আগায় বেঁধে দিল। তারপর মশালগুলো ঘুরিয়ে বিকট চিৎকার করতে করতে লুশাইরা এগিয়ে আসা হাতিগুলোর দিকে তেড়ে গেল। এভাবে সারারাত হাতিগুলো একবার
তাঁবুর দিকে এগিয়ে গেল আবার জ্বলন্ত মশাল হাতে বিকট চিৎকারে তাদের তাড়া করতে লাগল। ভোর হলে একদল হাতি পুবদিকের পাহাড়ে, আর একদল হাতি পশ্চিম দিকের পাহাড়ে উঠে গেল।
১০.২ লেখকের শুকনো নালায় নামার অভিজ্ঞতা নিজের ভাষায় লেখো।
উঃ শুকনো নালায় লেখক নামলেন। তাঁর আগে বুড়ো লুশাই। আর তাঁর পিছনে শ্যামলাল। তাঁদের সামনেই ভারী একটা জলকাদা তোলপাড়ের শব্দ হল। তাঁরা ব্যস্ত পায়ে দুই লাফে পিছন দিকের পাড়ে আবার ফিরে এলো। দেখলেন জলকাদায় বিশাল দেহ এক গন্ডার মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। দেখলে মনে হবে যমদূতের দাদামশাই। রেগেমেগে
দাঁড়িয়ে ফোঁস ফোঁস করছে। চোখদুটো লাল। মিটমিট করছে। কান দুটো হেলানো পিছন দিকে। লেখক খুব সাবধানে তাকে গুলি চালানোর কথা ভাবছিলেন। কিন্তু তা করতে হল না। গন্ডারটা মিনিট খানেক দাঁড়িয়ে থেকে অকস্মাৎ একটা হুঙ্কার দিয়ে দৌড়ে পাহাড়ে উঠে গেল।
হাতে-কলমের বাইরে অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
◆ সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
★ (বেলা ৯টা-১০টা/ভোর ৪টে-৫টা/দুপুর ১টা-২টোর)—আগে সেখানে সূর্য দেখা যায় না।
উত্তর : বেলা ৯টা-১০টা।
★ লেখকদের যাত্রাপথে হুড়মুড় করে উঠেছিল যে জন্তু সেটি ছিল—(হাতি/বাঘ/গন্ডার)।
উত্তর : গন্ডার।
★ লেখকদের ‘হু-উ-উ’—ডাক শুনে কোন্ পশু এগিয়ে আসছিল—(বাঘ/ভাল্লুক/হাতি)।
উত্তর : হাতি।
★ লেখকের কাজের জায়গাছিল— (অপূর্ব/ভয়ংকর/স্বাস্থ্যকর)।
উত্তর : ভয়ংকর।
★ (১০-১২ জন/১০০-২০০ জন/১-২ জন) —লুশাই বন কেটে পথ তৈরি করেছিল।
উত্তর : ১০-১২ জন।
★ লেখকের সঙ্গে ছিলেন ষাট জন লোক।
উত্তর : সত্য।
★ সে ঘোর বনে জানোয়ারের নামগন্ধ ছিল না।
উত্তর : মিথ্যা।
★ লেখকের কোন্ নদীর কিনারায় পৌঁছোলেন—(গঙ্গানদী/যমুনা নদী/পাকোয়া নদী) ।
উত্তর : পাকোয়া নদী।
★ -লেখকের কাজ ছিল বিন্ধ্য পর্বতের কাছে।
উত্তর : মিথ্যা।
প্রশ্ন :-এলোমেলো অক্ষুরগুলি সাজিয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করো :
রজারেয়ানো, নহুমাল্লু, জেন্টফে। ইলুশা, লমার্গবই,
উত্তর :-রজারেয়ানো > জানোয়ারের
নহুমাল্লু > হুল্লুমান
জেন্টফে > ফেজেন্ট।
ইলুশা > লুশাই
লমার্গবই > বর্গমাইল
প্রশ্ন :-কে বড়ো শিকারি ছিল ?
উত্তর : লেখকের সঙ্গে সারাক্ষণ থাকা একজন বুড়ো লুশাই।
প্রশ্ন :-শ্যামলালের হাতে কী ছিল ?
উত্তর ঃ লেখকের দূরবিন, বন্দুক আর টোটার থলে।
প্রশ্ন :-একদিন বুনো হাতিদের যে রাস্তা পাওয়া গেল তা কত চওড়া ছিল?
উত্তর : পনেরো-কুড়ি ফুট চওড়া।
প্রশ্ন :- লেখকের সঙ্গে কতজন লোক ছিল ?
উত্তর : প্রায় ষাটজন লোক ছিল
প্রশ্ন :-প্রতিদিন বন কেটে কতদূর রাস্তা তৈরি করা যেত।
উত্তর : প্রতিদিন প্রায় চার-পাঁচ মাইল।
প্রশ্ন :-সন্ধ্যার পর লুশাই-এর ঘোর বনে পা ফেলতে গেলে কী মনে হত?
উত্তর ঃ মনে হত এই বুঝি বাঘই মাড়ালাম।
প্রশ্ন :- সেই বনে সূর্য ক-টার আগে দেখা যেত না ?
উত্তর ঃ নটা-দশটার আগে সূর্য দেখা যেত না।
প্রশ্ন :- প্রথম দিন চলতে চলতে লেখক পথের ওপর লেখক কী পড়ে রয়েছে দেখলেন?
উত্তর ঃ প্রকাণ্ড গাছ পড়ে রয়েছে।
প্রশ্ন :-কখন কী কারণে লেখক গাছে চড়তে পারলেন না ?
উত্তর : হঠাৎ রেগে ওঠা নালার কাদায় লুকিয়ে আয়েস করা বিশালদেহ গন্ডারটার মুখোমুখি হয়ে লেখক গাছে উঠে প্রাণ বাঁচানোর কথা ভাবছিলেন। কিন্তু তিনি ছেলেবেলায় চড়তে পারলেও এখন তা ভুলে গেছিলেন। তা ছাড়া, তাঁর পায়ে বুট ছিল।