অষ্টম শ্রেণী বাংলা ছন্নছাড়া কবিতা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর / chhannachhara poem question answer class 8 bangla
অষ্টম শ্রেণীর বাংলা
বাংলা সাহিত্য
কবিতা : ছন্নছাড়া
কবি : অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
কবি-পরিচিতি ঃ অচিন্তকুমার সেনগুপ্তের জন্ম হয় ১৯০৩ সালে।তার জন্মস্থান বাংলাদেশের অন্তর্গত নোয়াখালিতে । তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলি হলো 'বেদে', 'বিবাহের চেয়ে বড়ো', প্রাচীর ও প্রান্তর', 'অকালবস্তু',অধিবাস', 'যতনা বিধি', 'সারেঙ' ইত্যাদি।। কবি শ্রীরামকৃষ্ণ প্রভৃতি স্মরণীয় প্রবন্ধগ্রন্থের প্রণেতা। 'পরমপুরুষ শ্রীশ্রী রাম' গ্রন্থটি তাঁর জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সফলতম গ্রন্থ বলে অনেকে মনে করেন। ১৯৭৬ সালে অচিন্তকুমার সেনগুপ্তের জীবনাবসান হয়।
সারমর্ম : গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে তাতে ডালপালা নেই, যেন ভূতের মতো দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে যেন প্রেতচ্ছায়া বুক্ষ, রুষ্ট, রিক্ত, জীর্ণ, লতা নেই পাতা নেই, তার ছালবাকল নেই, কোথাও এতটুকু সবুজের রেখাও নেই। কোথাও নেই এতটুকু আঁচড়ের প্রতিশ্রুতিও।
কবি ওই পথেই এক জরুরি দরকারে যাচ্ছিলেন ট্যাক্সি করে, ড্রাইভার বললে ওদিকে যাবে না। দেখছেন না রাস্তার মাঝে যে সমস্ত ছেলে ছোকরারা রয়েছে তারা ছন্নছাড়া বেকারের দল। তাদের পরনে চোঙা প্যান্ট, চোখা জুতো। ওদের রোখা মেজাজ, ঠোকা কপাল, তাদের সামনে দিয়ে গেলেই বলবে দাদা লিফট দিন, হাওয়া খাওয়ান।ওরা কারা? ওরা আজকের সমাজের এক অসহায় অন্ধকার জীবনের শিকার, এক নেই রাজ্যের বাসিন্দা। ওদের কিছুই নেই, ভিটে নেই, রীতি নেই, নীতি নেই, ওরা আইনকানুন কিছুই মানে না, শ্লীলতা-শালীনতা বোধটুকু পর্যন্ত নেই। ওরা নেই রাজ্যের বাসিন্দা, ওদের জন্য কলেজে সিট নেই। অফিস কারখানায় কাজ নেই, ট্রামেবাসে জায়গা নেই। খেলা হোক বা মেলা ওদের জন্য টিকিট নেই, হাসপাতালে বেড নেই, বাড়িতে ওদের জন্য কোনো আলাদা ঘর নেই, খেলবার মাঠ নেই, ওদের প্রতি কারোর দরদ, প্রেম, ভালোবাসা কিছুই নেই। ওদের বসার জন্য পাড়ার একটি রক ছিল, সেটাও লোপাট হয়ে গেছে। তাই ওরা রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে। ওদের না আছে বর্তমানের গতি না আছে ভবিষ্যতের ঠিকানা। কবি চিন্তাশীল মানুষ, ড্রাইভার এড়িয়ে যেতে চাইলেও তিনি ওই পথ দিয়ে যেতে চান, সেই নেই রাজ্যের বাসিন্দা ছেলেদের তিনি কাছ থেকে দেখতে চান। কাছাকাছি হতেই মুখ বাড়িয়ে কবি বললেন, তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে, লিফট চাই, তিনজন সোল্লাসে ট্যাক্সিতে উঠে পড়ে জানায় তারা সামনেই যাবে। না সিনেমা, জলসা বা কোনো ফিল্মি তারকাকে দেখতে নয়, একজন ভিখারিকে চাপা দিয়েছে একটা গাড়ি। সেই দেহটা ট্যাক্সিতে তারা তুলে নিয়েছে। আর
চিৎকার করছিল প্রাণ আছে, প্রাণ আছে। ওদের একটা দল ট্যাক্সিটাকে অনুসরণ করছে। ভিখারিটা বেওয়ারিশ কেউ নেই, শোবার জন্য ফুটপাথ আছে কিন্তু মাথার উপর ছাদ নেই। কবি ট্যাক্সি থেকে নেমে হাঁটা পথ ধরলেন, কানে বাজতে লাগল প্রাণ আছে, প্রাণ আছে। কবি আবার ফিরে গেলেন গলির মোড়ে দেখতে পেলেন গাছ থেকে বের হয়ে এসেছে হাজার হাজার কচিপাতা। সেই গাছে উড়ে এসেছে রং-বেরংয়ের পাখি ধীরে ধীরে ফিরে এসেছে শ্যামল আত্মীয়তা। কবির কানে বাজে, প্রাণ আছে, প্রাণ আছে। শুধু প্রাণই আশ্চর্য সম্পদ, এক ক্ষয়হীন আলো, এক মৃত্যুহীন মর্যাদা।কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত ‘ছন্নছাড়া' কবিতায় সমাজে উপেক্ষিত কিছু যুবকের মানবিক মুখ একটি ঘটনার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
ছন্নছাড়া কবিতার নামকরণঃ -
বাস্তববাদী কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত এই কবিতায় এক অপ্রাসঙ্গিক রোমান্টিকতার উত্তর দিয়েছেন।
ছন্নছাড়া কবিতায় সমাজে যাদের আমরা অযোগ্য বলে মনে করি, যাদের আমরা সমাজ জীবনে ব্রাতা বলে মনে করি, তারাই এগিয়ে আসে যে-কোনো বিপদে-আপদে ।তাদের ছন্দহীন জীবন ও প্রকৃতিকে যেন একসূত্রে বেঁধে দিয়েছে। তাই কবিতার নামকরণ হিসেবে 'ছন্নছাড়া সার্থক হয়েছে বলে আমি মনে করি।
শব্দার্থ ঃ
বাকল -গাছের ছাল।
ছন্নছাড়া- বাউন্ডুলে।
বেওয়ারিশ—নামগোত্রহীন।
প্রত্যয়—বিশ্বাস।
স্নেহার্দ্র—স্নেহে ভিজে যাওয়া।
প্রেতচ্ছায়া- পিশাচের ছায়া।
প্রত্যয়—বিশ্বাস।
রুক্ষ—শুষ্ক।
ভিটে—বাস্তুভূমি।
চোখা—তীক্ষ্ণ।
ঠোকা—আঘাত লাগা।
রোখা—রাগি।
বৈরাগ্য—আসক্তির অভাব।
পানসে—ছোটো নৌকা।
ধাওয়া—পিছু নেওয়া
জলসা — গান বাজনার অনুষ্ঠান।
ঝংকৃত — গুঞ্জন।
রক—বাড়ির সামনের খোলা চাতাল ।
রিক্ত—নিঃস্ব।
নৈরাজ্য—অরাজকতা।
স্ফুলিঙ্গ—আগুনের ফুলকি।
মাধুর্য- সৌন্দর্য।
বেড—শয্যা।
দরদ – সমবেদনা।
প্রেরণা—উৎসাহদান।
ভিত—বুনিয়াদ।
বিদীর্ণ – ভেদ করে যাওয়া।
কাকলি— পাখিদের গলার স্বর
শর্টকাট—সংক্ষিপ্ত পথ। বেকার—জীবিকাহীন।
ক্ষুধাহরণ—খাবার ইচ্ছা চলে যাওয়া।
সুধাক্ষরণ—অমৃত নিঃসরণ।
অস্তিত্ব —বিদ্যমানতা।
ভব্যতা-ভদ্রতা।।
প্রচ্ছন্ন-আচ্ছন্ন।
হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১.১ অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর। (১) পরমপুরুষ শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ'।(২) ‘অকালবসন্ত’, ‘
১.২ তিনি কোন্ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর। তিনি 'কল্লোল' পত্রিকার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন।
২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর একটি বাক্যে লেখো :
২.১ কবি প্রথমে গাছটিকে কেমন অবস্থায় দেখেছিলেন?
উত্তর। কবি প্রথমে গাছটিকে রুক্ষ, রুষ্ট, রিক্ত, জীর্ণ, লতাপাতাহীন, ছায়াহীন, ছালবাকল হীনএকটি গাছের প্রেতছায়া রূপে দেখেছিলেন।
২.২ ড্রাইভার বললে, ওদিকে যাব না'। – ওদিকে না যেতে চাওয়ার কারণ কী?
উত্তর। ড্রাইভারের ওদিকে না যেতে চাওয়ার কারণ,এদিকে ছন্নছাড়া বেকাররা রাস্তার মোড়ে আড্ডা দেয়, তারা গাড়ি থামিয়ে লিফট চাইবে। তাই ড্রাইভার ওদিকে যেতে চায় নেই।
২.৩ তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে। — সড়কের মাঝখানে, পথে এসে দাঁড়ানোর কারণ কী ?
উত্তর। মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে একটি রক ছিল। সেখানেই ছন্নছাড়া ওই বেকারের দলটি তাদের আসর বসাতো, সেটাই এখন আর নেই। সেটা তাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে । তাই তারা সড়কের মাঝখানে পথে এসে দাঁড়িয়েছে।
২.৪ আমি বললুম, না ওখান দিয়েই যাব। কবির এখান দিয়েই যেতে চাওয়ার কারণ কী?
উত্তর। উত্তর। কবি ঘরছাড়া ছেলেগুলোকে নিজের চোখে দেখে বুঝতে চান। আর ছন্নছাড়া ছেলেগুলি ওখানেই অর্থাৎ কবির দেওয়ার পথে আড্ডা দিচ্ছিল। তাই এই মোড়ের রাস্তা নিয়েই তিনি যেতে চান।
২.৫ 'ওই দেখতে পাচ্ছেন না ভিড়। ওখানে কীসের ভিড়?
উত্তর। ওখানে অর্থাৎ রাস্তার মধ্যে একটা নিরীহ মানুষ গাড়ি চাপা পড়েছিল সেজন্য সেখানে ভিড়।
২.৬ কে সে লোক?'— লোকটির পরিচয় দাও।
উত্তর। লোকটির কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। লোকটি ছিলেন একজন বেওয়ারিশ ভিখারি। তার কেউ আপনজন ছিল না। আর নিজের বলতে কিছুই ছিল না।
২..৭ চেঁচিয়ে উঠল সমস্বরে ... কী বলে তারা সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল ?
উত্তর। প্রাণ আছে, এখনও প্রাণ আছে।বলে তারা সমস্বরে আনন্দে চেঁচিয়ে উঠল।
২.৮ আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি।' কবি তাড়াতাড়ি নেমে পড়লেন কেন?
উত্তর। গাড়ি করে যেতে যেতে যেতে পথে বেওয়ারিশ ভিখিরির লাশ পড়েছিল ছন্নছাড়া ছেলেগুলি কবির গাড়িতে তাকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায়। এই অবস্থায় কবির গায়ে সেই বেওয়ারিশ ভিখিরির রক্তের দাগ লেগে যেতে পারে। এর থেকে নিজের ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে গিয়ে কবি তাড়াতাড়ি ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়লেন।
২.৯ ফিরে আসতেই দেখি... ফেরার পথে কবি কী দেখতে পেলেন?
উত্তর। ফেরার পথে কবি দেখাতে গলির মোড়ে সেই গাছটি আর শুকনো নেই। সেই শুকানো বৈরাগ্য বিদীর্ণ করে বেরিয়ে পড়েছে হাজার হাজার সোনালি কচিপাতা, মর্মরিত হচ্ছে বাতাসে। আর তার ভালে ভালে উড়ে এসেছে নানা রঙের পাখি।
২.১০ অবিশ্বাস্য চোখে দেখলুম।'—কবির চোখে অবিশ্বাসের ঘোর কেন?
উত্তর। কারণ কবি যা শুনে ছিলেন, তা সবটা ঠিক ছিল না। তাই অবিশ্বাস্য চোখে তিনি দেখলেন যে কীভাবে এক মুহুর্তে সমস্ত কৃত্রিমতা, অমানবিকার শিকড়কে তুলে কোলে শান্তির বারিধারা প্রকৃতিকে স্নিগ্ধ ও শীতল করতে পারে।
৩. নির্দেশ অনুসারে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
৩.১ এই পথ দিয়ে জরুরি দরকারে বাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। কবির যাত্রাপথের অভিজ্ঞতার বিবরণ দাও।
উত্তর। কবির যাত্রাপথের মোড়ে পড়ে একটা গাছ। গাছে বললে ভুল হয় কারণ ওটা গাছের আঁকাবাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কাল মাত্র। শুন্যের দিকে এলোমেলো তুলে
দেবু, রক্ত, জীর্ণ চেহারা, যার পাতা নেই পাতা নেই, ছালবাকল নেই। কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি বা একবিন্দু রস নেই। কবি যাত্রা পথে দেখেন রাস্তায় একদল ছেলে জটলা করছে কারণ একটা ভিখারীর লাশ সেখানে পড়ে আছে। ছেলেরা গাড়িটাকে দেখে তারা সেই দেহটিকে তুলে আনল গাড়িতে। তখনও তার প্রাণ আছে একথা ভেবেই তারা উল্লাসে ফেটে পড়ল।
গারে সেই ভিপিডির বহু লোগে যেতে পারে তাই ভদ্রতা রক্ষা করতে কবি নেমে গেলেন গাড়ি থেকে। ফেরার পথে কবির চোগে পড়ল সেই পত্রহীন গাছটিকে। সেই গাছটি এখন সোনালি সবুজ পাতায় ভরে গেছে এবং তার ভালে উড়ে এসে বসেছে নানা রঙের পাখি।
৩.২ গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে। গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া।'—একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে বলেও কেন ....' বলা হয়েছে তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর। একটি গাছ বলতে আমরা জানতে পারি তার সবুজ পাতা ডালপালা ফুল ফল ইত্যাদি থাকবে কিন্তু গলির মোড়ে যে গাছটি দাঁড়িয়ে ছিল সেটি সেটি একটু অন্যরকম ছিল সেই গাছটিরর ছিল না পাতা, এমন কি ছালবাকলও ছিল না, ছিল না এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি, তাই তাকে কবি প্রেতচ্ছায়া বলেছেন।
৩.৩ 'ওই পথ দিয়ে/জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে।—এভাবে কবিতায় উত্তমপুরুষের রীতি কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, অন্তত পাঁচটি পদ্ধত্তি উদ্ধৃত করে দেখাও।
উত্তর। (ক) বললুম, কন্দুর যাবে,
(খ) আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি।
(গ) অবিশ্বাস্য চোখে চেয়ে দেখলুম।
(ঘ) আমি বললুম, না এখান দিয়েই যাব,
(ঙ) ওখান দিয়েই আমার শর্টকাট
৩.৪ কারা ওরা? কবিতা অনুসরণে তাদের পরিচয় দাও।
উত্তর। ওরা হলো ছন্নছাড়া বেকারের দল।ওরা নেই রাজ্যের বাসিন্দা। ওদের চোঙা প্যাণ্ট, "চোখা জুতো, রোখা মেজাজ, ঠোকা কপাল। ওখানে দিয়ে গেলে তারা গাড়িতে লিফট চায়, বলে হাওয়া দাওয়ান। তাদের ভিটে নেই । অনুনয়, বিনয়, ভদ্রতা, শালীনতা নেই। ওদের জন্য কলেজে সিট নেই, অফিসে চাকরি নেই, কারখানার কাজ নেই। কেউ তাদের ভালোবাসে না। রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেয়। তারা রাস্তায় উঠে আসা ছন্নছাড়ার দল হলেও প্রকৃত অর্থে মানবিক।
৩.৫ 'ঘেঁষবেন না ওদের কাছে?—এই সাবধানবাণী কে উচ্চারণ করেছিলেন? 'ওদের' বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? ওদের কাছে না ঘেঁষার পরামর্শ দেওয়া হলো কেন?
উত্তর। ছত্রছাড়া কবিতায় যে ট্যাক্সি ড্রাইভার কবিকে তার গাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি এই সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছিলেন।
ওদের বলতে পথের ধারে থাকা একদল ছন্নছাড়া বেকার যুবকদের কথা বলা হয়েছে।
ড্রাইভারের ধারণা ওই ছন্নছাড়া যুবকদের কোনো বিনয় নেই, ভদ্রতা নেই, শ্রীলতা নেই, শালীনতা নেই। ওরা এর নৈরাজ্যের বাসিন্দা। ওঁদের কোন রীতিনীতি নেই। সব থেকে বড়ো কথা ওদের কাছে গেলেই ওরা হাওয়া যাওয়ার জন্য ট্যাক্সিতে লিফ চাইবে। তাই ট্যাক্সি ড্রাইভার কবিকে ওদের কাছে না ঘেঁষতে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
৩.৬ তাই এখন এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে।'—এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের জীবনের এমন পরিণতির কারণ কবিতায় কীভাবে ধরা পড়েছে তা নির্দেশ করো।
উত্তর। এখানে সেই সমস্ত ছেলেদের কথা বলা হয়েছে। যারা রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকে, গাড়ি দেখলেই লিফট চায় বলে দাদা হাওয়া খাওয়ান, তাদের কথা বলা হয়েছে। তারা একসময় মধ্যবিত্তের পরিবারের বাড়ির একচিলতে রকে বসে আড্ডা মারত। তারাদের লোপাট হয়ে গেল। ফলে সেই বেকার যুবকরাই এখন সড়কের মাঝখানে এসে দাঁড়িয়েছে।
৩.৭ জিজ্ঞেস করলুম/ তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে?
তাঁর এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়ার পর কীরূপ পরিস্থিতি তৈরি হলো? প্রশ্নবাক্যটিতে প্রশ্নকর্তার কোন অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে?
উঃ। প্রশ্নকর্তা যে মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল তাঁর প্রশ্নের মধ্য দিয়ে সেই মানসিকতারই প্রকাশ ঘটেছে। লেখক জিজ্ঞাসা করলেন ট্যাক্সি লাগবে? লিফট চাই লিফট? প্রশ্নকর্তা বা লেখক প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে মহত্ত্বের পরিচয় নিয়েছেন, তিনি ব্যাতিক্রমী, তাই তিনি অবহেলিত এই ভবঘুরেদের মহৎ প্রচেষ্টার পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন।
৩.৮ 'প্রাণ আছে, এখানো প্রাণ আছে।'—এই দুর্মর আশাবাদের তপ্ত শঙ্খধ্বনি' কবিতায় কীভাবে বিঘোষিত হয়েছে, তা আলোচনা করো।
উত্তর। গালির মোড়ে একজন বেওয়ারিশ ভিখিরি গাড়ি চাপা পাড়েছিল। সেখানে।দাঁড়িয়ে থাকা বেকার ছেলেগুলি একটি ট্যাক্সি খুঁজছিল। কবি ট্যাক্সি নিয়ে সেখানে উপস্থিত হতে তিনজন যুবক ভিখিরির দল বেওয়ারিশ ভিখিরির দেহটা পাঁজাকোলা করে ট্যাক্সিতে তুলে নিয়ে এল। ছেলেগুলো সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল প্রাণ আছে প্রাণ আছে বলে। এই পৃথিবীতে প্রাণই সবকিছু। প্রাণ না থাকলে পৃথিবীটা তো ইট-কাঠ-পাথরে ভরা এক বস্তুতে পরিণত হতো। যখন প্রাণ আছে বলে ছেলেগুলি চেঁচিয়ে ওঠে তখনই কবি অনুভব করেন প্রাণ আছে অর্থাৎ অস্তিত্ব আছে। অস্তিত্ব থাকাই বিশ্বাস ও আশার প্রতীক। আর সেই তন্তু শঙ্খদানির মতো চারিদিকে গভীর প্রত্যয় ছড়িয়ে পড়ে।
৩.৯ কবিতায় নিজের ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে চাওয়া মানুষটির ছ্যাছাড়া দের প্রতি যে অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর-। 'ছমছাড়া' কবিতার কথক একজন ভদ্র, সভা এবং রুচিসম্পন্ন বিবেকবান নাগরিক। তিনি বিশেষ কাজে ট্যাক্সি চোপে যাচ্ছিলেন।
যাবার পথে রাজার মোড়ে কয়েকটি ছেলেকে দেখে ড্রাইভার যেতে চাইল না। কবি নিজে উদ্যোগে সেদিকে গিয়েছিলেন এবং তাদের নিজের গাড়িতে লিফট দিয়েছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন এই ছন্নছাড়া মানুষদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে প্রাণ, যা অন্য কারো মধ্যে নেই। কবি একজন ব্যতিক্রমী মানুষ। এই যুবকদের প্রতি তার পূর্ণ সমবেদনা ছিল। তাদের পরোপকার করার মানসিকতায় কবি বিস্মিত হন। তাদের মহৎ প্রচেষ্টার সহযোগী হবার জন্য কবির ক্ষুদ্র চেষ্টা কবিতায় অন্য রূপ পায়। তাই ট্যাক্সিতে লিফট দিয়ে লেখক এই ছন্নছাড়াদের মহৎ উদ্দেশ্যকে অন্তরের সম্মান জানি নিজেকে গর্বিত বোধ করলেন।
৩.১০ কবিতায় 'গাছটি' কীভাবে প্রাণের প্রতীক হয়ে উঠেছে তা আলোচনা করো।
উঃ। ছন্নছাড়া কবিতায় কবি প্রথমে যখন গাছটিকে দেখেছিলেন তখন তাঁর মনে হয়েছিল এটি গাছ, কিন্তু গাছ নয়, এটি গাছের প্রেতচ্ছায়া। ডাল নেই, এমন কি ছালবাকলও নেই। এই গাছটির সঙ্গে কবি জীবনের মিল খুঁজে পেলেন।
ছন্নছাড়া মানুষ বলে যারা পরিচিত, কবি তাদের মধ্যে খুঁজে পেলেন প্রাণের সন্ধান, রাস্তার একটি বেওয়ারিশ ভিখারিকে বাঁচাতে তারা ছুটে গিয়েছিল। অথচ তারাই নিজেরাই নিঃস্ব। এইভাবে প্রাণের খোঁজ পেয়ে কবির দৃষ্টিভঙ্গি গেল পাল্টে।
তিনি এই বেকার যুবকদের মধ্যে মমতা পরোপকার করার মানসিকতা খুঁজে পেলেন তিনি বুঝলেন এটাই প্রাণের লক্ষণ অর্থাৎ জীবন শুকিয়ে যায়নি, এই ভাবনার প্রকাশ ঘটাতে কবি গাছের প্রসঙ্গে আবার ফিরে আসেন তিনি দেখেন যে গাছকে তিনি প্রেতচ্ছায়া ভেবেছিলেন, তার মধ্যেই দেখতে পেলেন প্রাণের রূপ, গাছের পাতাগুলো সোনালি কচি পাতায় ভরে গেছে, চারিদিকে পাখির কাকলি, প্রজাপতি উড়ছে। পথের ধারে পড়ে থাকা পরিচয়হীন ভিখিরির প্রাণের দাবি যেমন মানবিকতার ছোঁয়ায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে।। সেই রকম এই কবিতায় গাছটি যথার্থভাবে প্রাণের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
৩.১১ ‘এক ক্ষয়হীন আশা/এক মৃত্যুহীন মর্যাদা।' – 'প্রাণকে' কবির এমন অভিধায় অভিহিত করার সঙ্গত কারণ নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ করো।
উত্তর। ছন্নছাড়া কবিতায় কবি প্রথমেই গাছের একটি প্রতীক চিত্র ব্যবহার করেছেন। তিনি গাছটিকে প্রথমে গাছ বললেও পরে তাকে গাছের প্রেতচ্ছায়া বলেছেন। কবির মনে হয়েছিল যে গাছ মানুষকে বাঁচাতে সাহায্য করে তাতে আর প্রাণ
নেই। সেই প্রাণহীন গাছটি যেন সম্পূর্ণ মানবসমাজের প্রতীক। ওই গাছটির মতো যুবক সমাজও নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু কবির প্রাণ সম্পর্কে এই ধারণা বদলে গেল যখন তিনি দেখলেন কবির ট্যাক্সিতে সেই ছন্নছাড়া যুবকের দল এক বেওয়ারিশ ভিখিরির রক্তাত্ব দেহ তুলে নিল এবং প্রাণ আছে প্রাণ আছে বলে সোল্লাসে চেঁচিয়ে উঠল। তখন কবি বুঝলেন যে যুব সমাজকে তিনি প্রাণহীন মনে করছিলেন তাদের মধ্যে রয়েছে পরোপকারী মানসিকতা, দয়ামায়া, যেগুলি জীবনের লক্ষণ।
তাই শেষে কবি দেখালেন প্রেতের মতো গাছটির ডালে ডালে সবুজ সোনালি পাতার সমারোহ অর্থাৎ এই পৃথিবী প্রাণময় হয়ে উঠুক এটাই কবির আশা। কিন্তু প্রাণ না থাকলে পৃথিবী জড় বস্তুতে পরিণত হবে। কারণ প্রাণ আশার প্রতীক, প্রাণ
ভরসার প্রতীক, প্রাণ হাচ্ছে মৃত্যুহীন। এক প্রাণ চলে যায় সৃষ্টি করে যায় আর একটি প্রাণ, তাই পৃথিবী কখনো প্রাণশূন্য হয় না। এই কারণে কবি প্রাণকে বলেছেন এক মৃত্যুহীন মর্যাদা।
৪. নীচের প্রতিটি শব্দের দল বিভাজন করে দেখাও : এলোমেলো, ছন্নছাড়া, নৈরাজ্য, বাসিন্দা, শালীনতা, আত্মীয়তা, শঙ্খধ্বনি, পত্রপুঞ্জ।
উত্তর ;-
এলোমেলো > এ-লো - মে-লো > এখানে চারটি মুক্ত দল আছে।
ছমছাড়া > ছন-ন-ছা-ড়া > তিনটি মুক্ত দল ও একটি রুদ্ধদল আছে।
নৈরাজ্যে > নই-রাজ্য-নে > একটি মুক্তদল ও দুটি রুদ্ধদল রয়েছে।
বাসিন্দা > বা- সিষ-দে > দুটি মুক্ত দল ও একটি রুদ্ধ দল রয়েছে
শালীনতা > শা লী-ন-তা > চারটি মুক্ত দল আছে।
আত্মীয়তা > আত-তী-য়-তা > তিনটি মুক্ত দল ও একটি রুদ্ধ দল আছে
শঙ্খধ্বনি > শঙ-খ-ধ্ব - নি > তিনটি মুক্ত দল ও একটি রুদ্ধ দল আছে
পত্রপুঞ্জে > পত্--র-পুন্-ঞ্জে > তিনটি মুক্ত দল ও একটি রুদ্ধ দল আছে
৫. নীচের প্রতিটি শব্দের ব্যুৎপত্তি নির্ণয় করো : বর্তমান, ভদ্রতা, সম্ভাষণ, গতি, ভিখিরি, ভব্যতা, কুষ্ট, জিন, পিছে।
বর্তমান > বৃৎ +শনচ (মান)
ভদ্রতা > ভদ্+ দ্র + তা
সম্ভাষণ > সম্ + ভাষ ¥ অনঢ়
গতি > গম্ + ক্তি
ভিখিরি > ভিগ্ + আরি (ইরি)
ভব্যতা > ভূ + য (তৃ) + তা
রুষ্ট > রুষ্ + য (তৃ)
জিজ্ঞেস > ঞ্জ + সন্+ এ + আ
পিছে > পিছ্ ++ ছ
৬. নীচের শব্দগুলিতে ধ্বনি পরিবর্তনের কোন্ কোন্ নিয়ম কাজ করছে তা দেখাও : জুতো, বাসিন্দে, ক্ষেত্র, কদুর ভিখিরি।
জুতো = জুতা > জুতো (স্বরসংগতি)
চোখ = চক্ষু > চোখ >
ভিখিরি = ভিখার > ভিখিরি (স্বরসংগতি)
বাসিন্দে= বাসিন্দা> বাসিন্দা
কদ্দুর = কতদূর > কতদূর (পরাগত সমীভবন)
৭. কোন শব্দে কী উপসর্গ আছে আলাদা করে দেখা ও:;
উত্তর:-
প্রতিশ্রুতি = ('প্রতি' উপসর্গ)
অনুসরণ = ('অনু' উপসর্গ)
অভ্যর্থনা = ('অভি' উপসর্গ)
বেওয়ারিশ ='বে' বিদেশি উপসর্গ )
প্রচ্ছন্ন =(' প্র' উপসর্গ )
অধিকার =( 'অধি' উপসর্গ
৮. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন কর
অভ্যর্থনা = ("অভি' উপসর্গ)
৮. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো :
অধিকার = ("আধি
৮.১ ওই পথ দিয়ে জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। (জটিল বাক্যে)
উঃ। যেহেতু জরুরি দরকার ছিল সেহেতু ওই পথ দিয়ে ট্যাক্সি করে যাচ্ছিলাম।
৮.২ দেখছেন না ছন্নছাড়া কটা বেকার ছোকরা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে। (যৌগিক বাকে
উঃ। দেখছেন না ছন্নছাড়া কটা বেকার ছোকরা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে এবং আড্ডা দিচ্ছে।
২. কারা ওরা? (প্রশ্ন পরিহার করো) উঃ। ওদের পরিচয় জানতে চাইছি।
৮-৪ যোঁধাকেন না ওদের কাছে। (ইতিবাচক বাক্যে) উঃ। গুদের কাছে দেয়া থেকে বিরত থাকুন
৮.৫ একটা স্ফুলিঙ্গ-হীন ভিজে বারুদের স্তূপ। (না-সূচক বাক্যে)
উঃ। একটা স্ফুলিঙ্গ-হীন ভিজে বারুদের স্তূপ ছাড়া আর কিছুই নয়।
৮.৬ জিজ্ঞেস করলুম, তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে? (পরোক্ষ উক্তি)
উঃ। তাদের ট্যাক্সি লাগবে কিনা তা ভিজ্ঞ কর
৮.৭ আমরা খালি ট্যাক্সি খুঁজছি। (জটিল বাক্যে) উঃ। যেটা খালি ট্যাক্সি আমরা সেটাই খুঁজছি।
৮.৮ দেখতে দেখতে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে উঠছে কূল। (ক্রিয়ার কাল নির্দেশ)
উ। ঘটমান বর্তমান
?
৮.১ওই পথ দিয়ে জরুরি দরকারে বাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। (জটিল বাদে)
৯.২ দেখছেন না
উ। দেখছেন না
6. ক ? (
রকার ছিল সেহেতু ওই পথ দিয়ে ট্যাক্সি করে
)
ছাড়া এটা বেকার ছোকরা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে। (যৌগিক বাকো)
এটা বেকার আকার
ড়িয়ে আছে এবং আছে।
পরিহার করো) উচ্চ। এদের পরিচয় জানতে চাইছি।
১৪ ফেরাবেন না ওদের কাছে। (ইতিবাচক বাক্যে) উঃ। এদের কাছে ঘেঁষা থেকে বিরত থাকুন
ভিজে বারুদের স্তূপ। (না-সূচক বাদে)
ভিজে বারুদের স্তূপ ছাড়া আর কিছুই নয়।
৬. ফেলুন, তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে? (পরোক্ষ উক্তি)
উঃ। তাদের ট্যাক্সি লাগবে কিনা তা জিজ্ঞাস
6. আমরা বালি ট্যাক্সি বুজছি। (জটিল বাক্যে) উঃ। যেটা বালি ট্যাক্সি আমরা সেটাই খুঁজছি।
এ খেতে দেখতে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে উঠছে কুল। (ক্রিয়ার কাল নির্দেশ)
উঃ। ঘটমান বর্তমান কাল।
হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর বাদে আরও কিছু প্রশ্নের উত্তর
★ হুমছড়া যুবকদের পোশাক ও স্বভাব সম্বন্ধে কবিতায় কী বলা হয়েছে?
উই। কবিতায় ছমছাড়া যুবকদের পোশাক ছিল চোঙা প্যান্ট, চোখা জুতো। আর তাদের ছিল একরোখা মেজাজ।
★ কবি ড্রাইভারের বারণ সত্ত্বেও কেন সেখান দিয়ে যেতে চাইলেন ?
উঃ। সেই পথটি ছিল কবির শর্টকাট, তাই কবি বারণ সত্ত্বেও যেখান দিয়ে যেতে চাইলেন।
★ যারা ডকের মোড়ে দাঁড়িয়ে তাদের অবস্থা সম্পর্কে কী কী হতাশাজনক মন্তব্য করা হয়েছে?
উঃ। এরা যেথা থেকে এসেছে, সেই অতীত সংস্কৃতি মনে নেই, কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেই বর্তমানের কোনো গতি নেই, কোথায় চলছে সেই ভবিষ্যতের ঠিকানা নেই।
★ কোথায় যাশ্চর্য সম্পদ আছে এবং কেন বলে কবি বলেছেন?
উঃ। শুধু প্রাণে আশ্চর্য সম্পদ আছে। কবি বলেছেন প্রাণ এক ক্ষয়হীন আশা, এমন এক মর্যাদা যার মৃত্যু নেই।
★ অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উঃ। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থ হলো 'অমাবস্যা এবং হিয়া ও পৃথিবী।
★ এই লেখকের দুটি উপন্যাসের নাম লেখো।
উঃ। 'প্রাচীর ও প্রান্তর এবং সারেও
■ কাকে 'প্রেতচ্ছায়া' বলে কবির মনে হয়েছে।
উঃ। মালির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাছকে কবির প্রেতচ্ছায়া বলে মনে হয়েছে।
★ ওরা গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে কেন?
উঃ। ওদের কেউ নেই, কিছু নেই, পৃথিবীতে কোনো জিনিসে অধিকার নেই, এক মধ্যবিত্তের রক ছিল, সেখানে আড্ডা মারতো, মিতু লোভীদের হাতে পড়ে সেটিও লোপাট হয়ে গেছে, তাই তারা গলির মোড়ে আড্ডা মারছে।
★ প্রাণ থাকলে কী কী থাকবে?
উঃ। প্রাণ থাকলেই স্থান থাকবে। প্রাণ আছে, মান আছে, সমস্ত বিধিনিষেধের বাইরেও অস্তিত্বের অধিকার আছে।
★ টাক্সির মধ্যে কারা তুলে নিল ?
উঃ। রক্তে মাধ্যমাখি অবসায় দলা পাকানো, গাড়ি চাপা পড়া এক ভিখিরিকে সেই ছন্নছাড়া ছেলের দল পাঁজাকোলা করে ট্যাক্সির মধ্যে তুলে নিল।
★ ফিরে আসার পথে লেখকের চোখে কী কী পরিবর্তন ধরা পড়েছিল?
উঃ। ফিরে আসার পথে করে মন ভরে গিয়েছিল, তিনি প্রাণের সন্ধান পেয়েছিলেন। তাই তিনি দেখেছিলেন। ছালবাকলহীন গাছে বের হয়েছে দ্বার হাজার সোনালি পাতা, গুচ্ছে গুচ্ছে ফুটে উঠেছে ফুল, উড়ে এসেছে রং-বেরঙের পাখি, শুরু করেছে কলকণ্ঠের কার্বন, এইসব পরিবর্তন কবির চোখে ধরা পড়েছিল।
★ চাপা পড়া পড়ে ভিখিরিটির অবস্থা কেমন হয়েছিল?
উঃ চাপা পড়ার পরে ভিখিরিটির দেহ রক্ত মাংসে দলা পাকিয়ে গিয়েছিল।
★ দুটি অদ্ভুত শব্দ যা মজার হলেও ঠিক ভদ্র সমাজের ভাষা নয়, তা এই কবিতায় কবি ব্যবহার করেছেন। শব্দ দুটি কী?
উঃ। শব্দ দুটি হল- লে হালুয়া' ও 'চল পানসি বেলঘরিয়া।”
★ কবি ওই গলির নেড় দিয়ে যেতে চেয়েছিলেন কেন?
উঃ। ওই গলির মোড় পথটা শর্টকাট হবে তাই কবি ওই পথে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এর পিছনে কবির অন্য উদ্দেশ্যও ছিল। তিনি ওই এছাড়া ছেলেগুলোকে দেখতে চেয়েছিলেন। তাদের সাথে মিশতে চেয়েছিলেন। ব্যতিক্রমী কবির ওই ছন্নছাড়া ছেলেগুলার প্রতি একটা আন্তরিক সহানুভূতি ছিল।
★ ওই ছন্নছাড়া বেকার যুবকর জীবনে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত কে কবি কীভাবে অনুভব করেছেন?
উঃ। কবি বলেছেন ওই নেই রাজার বেকার যুবকদের প্রতি সমাজের কোনো মমত্ব নেই। স্বার্থপর সমাজ তাদের একমাত্র অস্তিত্ব মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে রক লোপাট করে দেওয়ার তারা সড়কের মাঝে এসে পড়েছে। তাদের জীবনের কোথাও অতীতের স্মৃতি নেই। তাদের বর্তমান অবস্থানের কোনো গতি নেই এবং তারা কোথায় এগিয়ে চলেছে সেই ভবিষ্যতের ঠিকানাও নেই।
৪. বিশেষ্য বিশেষণ নির্ণয় করো।
বাংকার-ঝঙ্কৃত,
বৈরাগী—বৈরাগ্য,
সুগন্ধ—সুগন্ধী,
মর্মর—মর্মরিত,
আয়োজন—আয়োজিত
শ্যামল—শ্যামলীমা
৫. এই কবিতায় সমজাতীয় বা প্রায় সমজাতীয় দুটি শব্দ পাশাপাশি বসে শব্দদ্বৈত তৈরি করেছে। এরকম পাঁচটি শব্দদ্বৈত কবিতাটি থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো।
উঃ। শ্রীলতা-শালীনতা। কর্কশে-কঠিনে,
ছাল-বাকল। ট্রামে-বাসে। মেলায় খেলায়। ।
★ সন্ধি বিচ্ছেদ করো : সমস্বরে, কংক্রিটে, বৈরাগ্য, বিদীর্ণ, স্নেহার্দ্র, আশ্চর্য, দীর্ঘছায়া।
◆সমস্বরে = সম্ + স্বরে।
◆কংক্রিটে = কম্ + ক্রিটে।
◆স্নেহার্দ্র = স্নেহ + আর্দ্র।
◆ আশ্চর্য = আ + চর্য।
◆বৈরাগ্য = বৈ + রাগ্য।
◆বিদীর্ণ = বি + দীর্ণ।
◆দীর্ঘছায়া = দীর্ঘ + ছায়া।
৬. বাক্য ও বাক্যের পরিবর্তন করো :
◆এক ক্ষয়হীন আশা (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উঃ। শুধু কি তাহলে ক্ষয়হীন আশই থেকে গেল?
◆ অবিশ্বাস্য চোখে চেয়ে দেখলুম (জটিল বাক্যে)
উঃ। যা চোখে চেয়ে খেলুম তা সত্যই অবিশ্বাস্য।
◆যেন তেন শ্যামল আত্মীয়তা (সরল বাক্যে)
উঃ। এই হলো শ্যামল আয়িতা।
◆ ফিরে আসতেই দেখি। (যৌগিক বাক্যে) উঃ। ফিরে আসলাম এবং দেলাম।
◆ আছে অস্তিত্বের অধিকার। (জটিল বাক্যে)
উঃ। যদিও আছে শুধু অস্থিত্বের অধিকার।
◆ মর্মরিত হচ্ছে বাতাস। (জটিল বাক্যে)
উঃ। যা মর্মরিত হচ্ছে তা শুধু বাতাস।
◆ প্রাণ আছে এখনো প্রাণ আছে। (জটিল বাক্যে)
উঃ। এখনো যা আছে তা প্রাণ, শুধু প্রাণ ।
বিপরীত শব্দ ঃ
রুক্ষ—সরস।
রুষ্ট—তুষ্ট।
জীর্ণ—পুষ্ট।
ভদ্রতা-অভদ্রতা।
শ্লীলতা—অশ্লীলতা।
শালীনতা—অশালীনতা।
মধ্যবিত্ত—উচ্চবিত্ত।
স্মৃতি—বিস্মৃতি |
ভব্যতা—অভব্যতা।
কর্কশ-মোলায়েম।
অধিকার—অনধিকার।
আশ্চর্য—অনাশ্চর্য।
আশা-নিরাশা।
মর্যাদা—অমর্যাদা।
বৈরাগ্য—অবৈরাগ্য।