আকাশে দুই বন্ধু পঞ্চম শ্রেণি বাংলা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর / Akasher duy bandhu question answer class 5
![]() |
পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা
আকাশের দুই বন্ধু
শৈলেন ঘোষ
লেখক শৈলেন ঘোষ পরিচিতি :
১৯২৮ সালে বিখ্যাত নাট্যকার শৈলেন ঘোষ জন্মগ্রহণ করেন। অল্প বয়স বয়সেই ছোটোদের পত্রিকা ‘মাস পয়লা'র লেখক প্রথম কবিতা লেখা শুরু করেন। ‘অরুণ বরুণ কিরণমালা' শিশু
নাটকটি সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। লেখকের রচিত উপন্যাস ‘মিতুল নামে পুতুলটি’ জাতীয় পুরস্কার পান। তার রচিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে ‘আমার নাম টায়রা’, ‘গল্পের মিনারে পাখি’, ‘ভূতের নাম আক্কুশ’, ‘টুই টুই’ ইত্যাদি।
★আকাশে দুই বন্ধু গল্পের নামকরণের সার্থকতা:-
পেটকাটা ও চাঁদিয়াল—এরা দুজন আকাশের দুই বন্ধু। মানুষ কাগজ কেটে যত্ন সহকারে এদের তৈরি করেছে।
উৎসবের যে-কোনো একটি দিনে আকাশে ওড়াবার জন্য। পেটকাটা ও চাঁদিয়াল— এরা দুটি রঙিন কাগজের ঘুড়ি। আকাশে— নিজেরাই এরা গল্প করে, নীচের মানুষের আনন্দ উল্লাস দেখে। তারপর লড়াই শুরু হয় নিজেদের মধ্যে। কে যে কখন ভোকাট্টা হয়ে কোথায় পড়বে কেউ জানে না। হয়তো গাছে, ইলেকট্রিক তারে, নয়তো কারও ছাদে, নদীর জলে পড়বে। এদের জন্য কেউ সমবেদনা জানায় না, দুঃখ প্রকাশ করে না।
তাই তারা ঠিক করলো নিজেদের মধ্যে জট পাকিয়ে সুতো ছিড়ে আকাশের মধ্যে উড়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটলো। সমগ্র গল্পের ঘটনাটি দুটি ঘুড়ি কে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে। তাই এখানে আকাশের দুই বন্ধু নামকরণটি যথার্থ হয়েছে বলে এমন মনে হয়।
সারমর্ম : আকাশে পেটকাটা ও চাঁদিয়ালের মধ্যে প্যাচের লড়াই হবে তা কে কোথায় যাবে বা থাকবে তার কোনো ঠিক নেই। আকাশ যদি তাদের ঘর হত তাহলে তারা সেখানেই যেত। তারা দুজনে যে সত্যিকারের অত্যন্ত অসহায় তা
তারা ভালোভাবেই বুঝেছে। মানুষের হাতের সুতোতেই তাদের ভাগ্য। যদি মানুষের সুতোর প্যাচে নিজেরা জট পাকিয়ে ফেলে একসঙ্গে আকাশে উপড়ে পড়তে পারত তাহলে তারা সহজেই মুক্তি পেত। প্যাচের লড়াই চলার সময় পেটকাটা ও চাঁদিয়াল একে অপরকে সাহস জোগাতে লাগল। দুজনেই প্রাণপণে টান মারতে থাকল বাঁচার আশায় এবং একসময় তারা দুই বন্ধু জিতে গিয়ে আকাশে ভেসে গেল।
★শব্দার্থ :
বাঁধন—জোট।
আশ্চর্য—অবাক।
হতভম্ব—হকচকিয়ে গিয়েছে এমন।
নিস্তার–রেহাই।
অসহায়—কিছু করার ক্ষমতা না-থাকা।
উল্লাস—আনন্দ।
হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর
১. নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাও :
১.১ আকাশের দিতে তাকিয়ে তুমি কী কী দেখতে পাও ?
উত্তর ঃ আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি চাঁদ, সূর্য, তারা ইত্যাদি দেখতে পাই।
১.২ আকাশে তুমি কী কী উড়তে দেখেছ?
উত্তর : আকাশে আমি কাক, বক, চিল, শকুন ও অন্যান্য পাখি এবং মাঝে মাঝে উড়োজাহাজ, হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছি।
১.৩ কোন্ কোন্ উৎসবে তুমি ঘুড়ি উড়তে দেখেছ?
উত্তর : নদী মেলায়, পৌষ সংক্রান্তি মেলায়, সরস্বতী পূজায় আমি ঘুড়ি উড়তে দেখেছি।
১.৪ আকাশ কেমন থাকলে ঘুড়ি ওড়াতে সুবিধা হয়? ঘুড়ি ওড়াতে গেলেই বা কী কী লাগে?
উত্তর : আকাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে থাকলে ঘুড়ি ওড়াতে সুবিধা হয়।
ঘুড়ি ওড়াতে গেলে ঘুড়ি, লাটাই, সুতো লাগে। ঘুড়িতে মাঞ্জা দিলে ভালো হয়। সুতো শক্ত হয়।
১.৫ ঘুড়ি সাধারণত কোন্ কোন্ জিনিস দিয়ে তৈরি? সুতোয় মাঞ্জা দিতে কী কী লাগে?
উত্তর ঃ ঘুড়ি সাধারণত রঙিন কাগজ এবং কাঁপকাঠি দিয়ে তৈরি হয়।
সুতোয় মাঞ্জা দিতে সাদা সুতো, রং, কাচগুঁড়ো, সাবুর আঁঠা লাগে।
১.৬ ‘আকাশের দুই বন্ধু’ গল্পে দুটি জিনিস নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলেছে। অপ্রাণীবাচক দুটি জিনিস নিজেদের মধ্যে কথা বলেছে, এমন আর কোন্ গল্প তুমি জানো ?
উত্তর ঃ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর ‘উদ্ভিদের জীবন’, নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের লেখা ‘কাজের লোক’ ইত্যাদি গল্প আমি জানি।
২. নীচের এলোমেলো শব্দগুলো সাজিয়ে লেখো :
উত্তর-
ঠি প কা কা—কাপকাঠি।
নি নি নাচো কা বা–নাকানিচোবানি ।
৩. ‘ক’ আর ‘খ’-স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :
না র্জ আ ব–আবর্জনা।
ক র ঘু পা—ঘুরপাক।
উত্তর :
ক"স্তম্ভ খ"স্তম্ভ
মা-পাখি > ডিমে তা দেয়
ছানাপোনা। > কিচিরমিচির করে
চোখ > পিটপিটিয়ে দেখে
ৰাজনা > বাজে
ফুল > ফোটে
নদী > বয়ে যায়
৪. ঠিক উত্তরটা বেছে নিয়ে প্রতিটি বাক্য আবার লেখো :
৪.১ এমনি করে পৃথিবী রোজ (নতুন/পুরোনো) হচ্ছে।
উত্তর ঃ এমনি করে পৃথিবী রোজ নতুন হচ্ছে।
৪.২ বুকের (ঝাপকাঠি/কাপকাঠি) ছিটকে গেলে, সে তখন একটা কাগজের টুকরো।
উত্তর : বুকের কাপকাঠি ছিটকে গেলে, সে তখন একটা কাগজের টুকরো।
৪.৩ একসঙ্গে লড়াই না করলে কেউ বোধহয় (বিস্তার/নিস্তার) পায় না।
উত্তর ঃ একসঙ্গে লড়াই না করলে কেউ বোধ নিস্তার পায় না।
৫. নীচে অনুচ্ছেদের বাক্যগুলিতে দেখো কোন্ কোন্ শব্দে মনে হচ্ছে কাজ শেষ হয়ে গেছে, আর কোন্ কোন্ শব্দে মনে হচ্ছে কাজ শেষ হয়নি, সেগুলি আলাদা করে লেখো :
উত্তর ঃ ওদের কিনে আনা হয়েছে দোকান থেকে। —কাজ শেষ হয়েছে।
উৎসবের দিনে উড়বে ওই দুটো ঘুড়ি।—কাজ শেষ হয়নি।
তারপরে লাট খেতে খেতে ওরা লড়াই করবে আকাশে।—কাজ শেষ হয়নি। কে যে ভোকাট্টা হয়ে কোথায় পড়বে,
কেউ জানে না।—কাজ শেষ হয়নি। কেউ গড়িয়ে পড়তে পারে গাছে, কিংবা ইলেকট্রিক তারে।—কাজ শেষ হয়নি।
লুটিয়ে পড়তে পারে কারও ছাদে, নয়তো নদীর জলে। —কাজ শেষ হয়নি।
নদীর জলে নাকানিচোবানি খেয়ে তার বুকের কাঁপকাঠি ছিটকে গেলে, সে তখন কেবলই একটা ফাটা কাগজের টুকরো।—কাজ শেষ হয়নি। তখন কেউ চোখ ফিরিয়ে দেখবে না তাকে।—কাজ শেষ হয়নি।
৬. চাঁদিয়াল আর পেটকাটা—গল্পে ঘুড়ি দুটোর নাম পেলে। আরো অনেকরকম নাম হয় ঘুড়িদের, ছোটো দলে ভাগ হয়ে নিজেরা কথা বলে দ্যাখো আর কোনো ঘুড়ির নাম নিজেরাই জানো কিনা। নয়তো, বাড়িতে-স্কুলে বড়োদের
কাছে জেনে নাও, তারপর লেখো।
উত্তর ঃ ঘুড়ির নাম—একতে, দোতে লেজওয়ালা ঘুড়ি, বাঁশমার, পতাকামার, চাপরাস, গলাকাটা ইত্যাদি।
৭. ঘুড়িদের প্যাচের লড়াইয়ে একটা অদ্ভুত ফল হয়েছে গল্পে। মানুষের হিসেবে দু-দলই হেরেছে, ঘুড়িদের উদ্যোগে জিতেছে দুজনেই। তুমি কি ঘুড়ির লড়াই দেখেছ কখনো? এমন অদ্ভুত ফল কিন্তু সচরাচর হয় না। সচরাচর এমন লড়াইয়ে যেটা হয়, সেটা চার-পাঁচ লাইনে লেখো।
উত্তর : ঘুড়িদের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত দুটি ঘুড়িই প্রথম থেকে একে অপরকে কাটতে চায়। একবার এ ওর ঘাড়ের ওপর দিয়ে আর একবার অন্যটি তার ঘাড়ের ওপর দিয়ে যায়। এভাবে হঠাৎই একটা ঘুড়ি ভোকাট্টা হয়ে কেটে
যায়, অন্যটি আকাশে উড়তে থাকে।
৮. চাঁদিয়াল আর পেটকাটা—এই দুই ঘুড়ি আকাশ থেকে নীচের পৃথিবীকে দেখে অনেক গল্প করেছে নিজেরাই।
মনে করো, তুমি উড়ে যেতে পেরেছ আকাশে, সঙ্গে তোমার বন্ধুও আছে। আকাশ থেকে নীচের পৃথিবীকে দেখে কী গল্প করবে তোমরা, সেটা লেখো :
উত্তর ঃ আমি চাঁদিয়াল আর আমার বন্ধু পেটকাটা। দুজনে আকাশে আনন্দে উড়ে বেড়াচ্ছি। নিচে মানুষজনকে দেখছি । গাড়ি ঘোড়া দেখছি। আর উপরের দিকে চান তারা, চাঁদ,সূর্য ,আকাশ দেখে আমরা খুব মজা পাচ্ছি। তবে নিজের মানুষগুলোকে খুব ছোট লাগছিল। পৃথিবীর বুকের গাড়ি ঘোড়া গুলিকে আরও ছোট লাগছিল। নদীগুলোকে মনে হচ্ছিল শুরু সুতোর মতো। একেবারে মনে হচ্ছে উঁচু উঁচু ঢিবি ।
আমি বন্ধুর সঙ্গে সুন্দর পৃথিবীর কথা আলোচনা করছিলাম। নদীর কথা আলোচনা করছিলাম। বলছিলাম আমরা এই সুন্দর পৃথিবীতে একসময় থাকতাম। আবার হতো কোন এক সময় ফিরে যাব।
৯. অর্থ লেখো :
কুঁড়ি, বাহার, গোলাম, মুক্ত।
উত্তর ঃ কুঁড়ি—কলি।
বাহার—রূপ।
গোলাম—চাকর।
মুক্ত—বাঁধনহারা।
১০. সমার্থক শব্দ লেখো :
নদী, আকাশ, গাছ, বন্ধু, সাগর।
উত্তর : নদী—প্রবাহিণী, তরঙ্গিণী।
আকাশ— গগন, নভঃ।
গাছ—বৃক্ষ, বিটপ তরু।
বন্ধু—সখা, প্রিয় সঙ্গী।
সাগর—সমুদ্র, সিন্ধু, জলধি।
১১. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো : চিৎকার, আনন্দ, ঠিক, অসহায়, সাধ্য।
উত্তর ঃ চিৎকার—চুপচাপ, নিস্তব্ধ ।
আনন্দ—নিরানন্দ।
ঠিক—ভুল।
অসহায়—সহায়।
সাধ্য—অসাধ্য।
১২. বাক্যরচনা করো :
বন্ধুত্ব, চোখ, দয়া, ভোকাট্টা, উল্লাস।
উত্তর :
বন্ধুত্ব— পড়াশোনার জন্য ভালো বন্ধুত্ব দরকার।
চোখ— মানুষের দুটি চোখ থাকে।
দয়া— ভগবান সবাইকে দয়া করেন।
ভোকাট্টা- ঘুড়িটা ভোকাট্টা হয়ে গেল।
উল্লাস— পূজা মণ্ডপের সামনে ছেলেরা খুব উল্লাস করছিল।
১৩. কোনটি কোন্ প্রকারের বাক্য লেখো :
১৩.১ মনে মনে বলব, বাঃ!
উত্তর : বিস্ময়বোধক বাক্য
১৩.২ তুই কেমন করে জানলি?
উত্তর : প্রশ্নবোধক বাক্য
১৩.৩ বরফ নাকি খুব ঠান্ডা!
উত্তর : বিস্ময়বোধক বাক্য
১৩.৪ জানে শুধু আকাশ।
উত্তর : বিস্ময়বোধক বাক্য
১৩.৫ খাবার চাইছে মায়ের কাছে।
উত্তর : অস্ত্যর্থক বাক্য
উত্তর : নির্দেশক বাক্য
১৪. কোনটি কোন্ ধরনের শব্দ, ঝুড়ি থেকে বেছে নিয়ে আলাদা করে লেখো ঃ
শব্দঝুরি- দেখা, বড়ো,প্রাণ, নতুন, কে, ওদের, ঠান্ডা, শক্ত, হয়, সবুজ, ভাব ,যে ,মুক্ত, কেউ ,সুতো,, যে, লড়াই, আর ,ওই, ডাক, ওর, আমরা, রক্ষা, টান, রাখি।
উত্তর :
বিশেষ্য:- ভয়, প্রাণ, মুক্ত , সুতো, লড়াই, ডাক রক্ষা, টান, কেউ।
বিশেষণ:- ঠান্ডা, শক্ত, বড়ো, নতুন, সবুজ।
সর্বনাম:- কে, ওদের ,ওই ,ওর, আমরা।
অব্যয়:- আর ,যে।
ক্ৰিয়া:- দেখা, ভাবছে, রাখে।
১৫. ক্রিয়ার নীচে দাও দাও ঃ
১৫.১ কে জানত, একদিন হঠাৎ ওদের দেখা হবে।
উত্তর : কে জানত, এদিন হঠাৎ ওদের দেখা হবে।
১৫.২ আবর্জনা নিয়ে কে আর দয়া দেখায়!
উত্তর : আবর্জনা নিয়ে কে আর দয়া দেখায়!
১৫.৩ এমনি করে রোজ পৃথিবী নতুন হচ্ছে।
উত্তর : এমনি করে রোজ পৃথিবী নতুন হচ্ছে ।
১৫.৪ উল্লাসে ভরে যায় চারিদিক।
উত্তর ঃ উল্লাসে ভরে যায় চারিদিক।
১৫.৫ জানে শুধু আকাশ ।
উত্তর : জানে শুধু আকাশ।
১৬.১ অরুণ বরুণ কিরণমালা' বইটি কার লেখা ?
উত্তর : ‘অরুণ বরুণ কিরণমালা' বইটি শৈলেন ঘোষের লেখা।
১৬.২ তাঁর অন্যান্য দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : তাঁর অন্যান্য দুটি বইয়ের নাম ‘টুইটুই’, ‘আমার নাম টায়রা’।
১৬.৩। তোমার পাঠ্য ‘আকাশের দুই বন্ধু' গল্পটি কোন বই থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : ‘আকাশের দুই বন্ধু’ গল্পটি ‘স্বপ্ন দেখি রূপকথায়' বই থেকে নেওয়া হয়েছে।
১৭. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
গল্পে প্রকৃতির বৈচিত্র্যময়, সুন্দর রূপ কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তর ঃ লেখক আকাশের দুই বন্ধু' গল্পে প্রকৃতির এক বৈচিত্র্যময় সুন্দর রূপকে তুলে ধরেছেন। এই প্রকৃতিতে শুধুমাত্র যে মানুষই বসবাস করে তা নয়, এখানে গাছপালা, পশুপাখি, এরাও বাস করে। একটি বীজ মাটিতে পুঁতলে ধীরে ধীরে সেটি থেকে গাছ বের হয়, তারপর সবুজ পাতা, ফুলের কুঁড়ি এবং সবশেষে ফুল ফোটে, সে কথাই লেখক বলেছেন।
আবার, গাছে যে পাখি থাকে তাতে মা-পাখি তার ডিমে তা দিলে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়, তারপর তারা কিচিরমিচির করে। এরপর একদিন ডানা মেলে আকাশে উড়ে যায়।
১৭.২ পেটকাটা ও চাঁদিয়ালের কীভাবে দেখা হয়েছিল? তাদের বন্ধুত্বই বা কীভাবে গড়ে উঠল?
উত্তর ঃ পেটকাটা ও চাঁদিয়াল দুটি কাগজের ঘুড়ি। এরা আকাশে উড়ছিল। উড়তে উড়তেই এদের দেখা হয়েছিল)
পেটকাটা ও চাঁদিয়াল এরা দুজনেই বুঝেছিল যে, মানুষ এদের নিয়ে শুধুমাত্র খেলা করে। এদের প্রতি মানুষের কোনো অনুভূতি বা সমবেদনা নেই। এরা আকাশে উড়তে উড়তে নানান সুখদুঃখের গল্প করতে থাকে। নীচে নদী, মানুষজন, সবই দেখে। দুজনেই একসঙ্গে মরিয়া হয়ে বাঁচার চেষ্টা করে। শেষে দুজনেই বেঁচে গেল। এভাবেই তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠল।
১৭.৩ বন্ধুত্বকে অটুট রাখতে তারা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ?
উত্তর ঃবন্ধুত্বকে অটুট রাখতে তারা ভেবেছিল যদি সুতো প্যাচের সময় তারা দুজনেই জট পাকিয়ে ছিঁড়ে ফেলতে পারে, তবে হয়তো তারা রক্ষা পেতে পারে। উপড়ে যেতে পারে আকাশে একসঙ্গে। তখন কেউ তাদের ধরতে পারবে
না, তারাও অসহায় বোধ করবে না। পুরোপুরি মানুষের হাত থেকে মুক্তি পাবে তারা।
১৭.৪ তাদের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত কীভাবে সফল হল?
উত্তর পেটকাটা ও চাঁদিয়াল দুই ঘুড়ির মধ্যে প্যাচের যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে দুজনেই প্রাণপণ ভাবে বাঁচার চেষ্টা করতে থাকল।
মানুষের কাছে তারা হার মানতে চায় না। দুজনেই সুতোয় টান মারতে থাকে। এভাবে হঠাৎই সত্যি সত্যি উপড়ে গেল একসঙ্গে দুটি ঘুড়ি। খুশিতে দুজনেই মাথা নাড়তে নাড়তে উড়ে গেল। এভাবেই তাদের পরিকল্পনা সফল হয়েছিল।
১৭.৫ গল্পে আকাশ কীভাবে দুটি বন্ধু-ঘুড়ির বন্ধু হয়ে উঠল?
উত্তর ঃ পেটকাটা ও চাঁদিয়াল প্রাণপণ বাঁচার চেষ্টা করে নিজেরা নিজেদের মধ্যে জট পাকিয়ে সুতো ছেড়ে আকাশ আকাশ সব দৃশ্য দেখে ওদেরকে বন্ধু করে নিল। এভাবে আকাশ ওই দুজনের বন্ধু হয়ে গেল আকাশ। ওদের আনন্দে ভেসে থাকার জায়গা হল আকাশ।
১৮. একটা ছবি আঁকো—আকাশে দুটো ঘুড়ি উড়ছে পাশাপাশি, ঘুড়ি দুটোতে ইচ্ছেমতো রং দাও।
উত্তর : শিক্ষক-শিক্ষিকার সাহায্য নিয়ে খাতায় চেষ্টা করো।
হাতে কলমে বাইরে কিছু প্রশ্নের উত্তর
ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো :
প্রশ্ন:- ‘আকাশের দুই বন্ধু গল্পের ঘুড়ি দুটির নাম কী?
উত্তর : একটা ঘুড়ির নাম চাঁদিয়াল আর একটা ঘুড়ির নাম পেটকাটা।
প্রশ্ন:-'আবার দ্যাখো – লেখক শৈলেন ঘোষ কী দেখতে বলেছেন?
উত্তর : ‘আকাশের দুই বন্ধু' লেখক শৈলেন ঘোষ আমাদের দেখতে বলেছেন, ওই যে গাছে পাখির বাসা, মা-পাখি বাসায় বসে তার ডিমে কেমন তা দিচ্ছে!
প্রশ্ন:- এমনি করে পৃথিবী রোজ- (
–(নতুন/পুরাতন) হচ্ছে।
উত্তর : এমনি করে পৃথিবী রোজ নতুন হচ্ছে।
প্রশ্ন:- “ওদের আকাশে উড়িয়ে যুদ্ধ হবে প্যাচখেলার।”—যাদের আকাশে উড়িয়ে প্যাচখেলার যুদ্ধ হবে তারা হল—
(ক) চাঁদিয়াল আর পেটকাটা (খ) বগ্গা আর চাঁদিয়াল, (গ) মোমবাতি আর চাঁদিয়াল, (ঘ) মুখপোড়া আর চৌরঙ্গী।
উত্তর ঃ “ওদের আকাশে উড়িয়ে যুদ্ধ হবে প্যাচ খেলার।” যাদের আকাশে উড়িয়ে প্যাচ খেলার যুদ্ধ হবে তারা হল চাঁদিয়াল আর পেটকাটা ।
প্রশ্ন:- ওরা বলাবলি করছিল—(দেশটা/আকাশটা/পৃথিবীটা) নাকি খুব সুন্দর।
উত্তর ঃ ওরা বলাবলি করছিল পৃথিবীটা নাকি খুব সুন্দর।
প্রশ্ন:- নীচের মানুষগুলো কেমন করছে—(আনন্দ/নাচ/উল্লাস)।
উত্তর : নীচের মানুষগুলো কেমন করছে উল্লাস।
দু-এক কথায় উত্তর দাও :
প্রশ্ন:-ঘুড়ির যুদ্ধে কারা জিতল ?
উত্তর : ঘুড়ির যুদ্ধে পেটকাটা ও চাঁদিয়াল, দুজনেই জিতল।
প্রশ্ন:- ঘুড়ির কাঁপকাঠি যখন ভেঙে যায় তখন মানুষ তাকে কী মনে করে?
উত্তর : মানুষ তখন ঘুড়িকে একটা ফাটা কাগজের টুকরো মনে করে।
প্রশ্ন:- প্যাচখেলার যুদ্ধ কার কার মধ্যে হবে?
উত্তর উঃ প্যাচখেলার যুদ্ধ পেটকাটা ও চাঁদিয়াল এই দুটি ঘুড়ির মধ্যে হবে।
প্রশ্ন:-গাছের জন্ম হয় কী থেকে?
উত্তর : গাছের জন্ম হয় বীজ থেকে।
যায়।
প্রশ্ন:-কোন্ উৎসবের দিনে সবচেয়ে বেশি ঘুড়ি উড়তে দেখা যায়?
উত্তর ঃ বিশ্বকর্মা পূজার দিনে সবচেয়ে বেশি ঘুড়ি উড়তে দেখা
প্রশ্ন:- পেটকাটা আর চাঁদিয়ালের বন্ধু হল—(নদী/আকাশ/পাহাড়)
উত্তর ঃ পেটকাটা আর চাঁদিয়ালের বন্ধু হল আকাশ।
প্রশ্ন:-পেটকাটা ও চাঁদিয়ালের সবচেয়ে বড়ো বন্ধু কে?
উত্তর ঃ পেটকাটা ও চাঁদিয়ালের সবচেয়ে বড়ো বন্ধু আকা
প্রশ্ন:-ঘুড়িদের ভাগ্য কাদের হাতে?
উত্তর ঃ ঘুড়িদের ভাগ্য মানুষের হাতের সুতোর মধ্যে।
প্রশ্ন:- ঘুড়ি ওড়ানোর সময় মানুষ আনন্দে চিৎকার করে কখন?
উত্তর ঃ আকাশে একটা ঘুড়ি আর একটার ঘাড়ে গোত মেরে যখন সুতোয় জড়িয়ে লাট খাবে, তখন মানুষ আনন্দে চিৎকার করবে।
প্রশ্ন:- 'আমরা তো ওদের হাতের গোলাম'—এখানে 'আমরা' বলতে কাদের বলা হয়েছে? তারা কাদের হাতের।গোলাম এবং কেন ?
উত্তর : এখানে 'আমরা' বলতে পেটকাটা ও চাঁদিয়াল ঘুড়ি দুটিকে বোঝানো হয়েছে।
ঘুড়ি দুটি মানুষের হাতের গোলাম। কেননা ঘুড়ি আকাশে ওড়ে, আর তার সুতো থাকে মানুষের হাতে। মানুষ সেই।সুতো যেভাবে চালায় ঘুড়ি সেইভাবে চলে।
প্রশ্ন:- পেটকাটা ও চাঁদিয়ালের কীভাবে দেখা হয়েছিল ? তাদের বন্ধুত্বই বা কীভাবে গড়ে উঠল ?
উত্তর : আকাশে পেটকাটা ও চাঁদিয়াল নামে দুটি কাগজের ঘুড়ির দেখা হয়েছিল।
ওই দুটি ঘুড়ি কিনে আনা হয়েছে দোকান থেকে। উৎসবের দিনে উড়বে ওই দুটি ঘুড়ি। তারপর লাট খেতে খেতে।ওরা লড়াই করবে আকাশে। ওদের আকাশে উড়িয়ে যুদ্ধ হবে প্যাচখেলার। কে যে ভোকাট্টা হয়ে কোথায় পড়বে, কেউ জানে না। তখন কে যে কোথায় কোন্ বিপদে পড়বে কে জানে। ঘুড়ি তো মানুষের হাতের গোলাম। জট পাকিয়ে ছিঁড়ে গেলে ঘুড়ি রক্ষা পেতে পারে বলে ওদের ধারণা। আমরা তখন দুই বন্ধু মুক্ত।
প্রশ্ন:- 'ওদের হাতের ওই সুতো আমাদের ভাগ্য'—উদ্ধৃতিটির মধ্য দিয়ে বক্তা কী বলতে চেয়েছে?
উত্তর : উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা চাঁদিয়াল ঘুড়ি। বন্ধু পেটকাটা ঘুড়িকে বলছে যে, তারা আকাশে ওড়ে আর তাদের সুতো।থাকে মানুষের হাতে। মানুষের হাতের হাতের সুতোই হল ঘুড়ির ভাগ্য। কারণ এই সুতো চালনার ওপরেই তাদের আকাশে ওড়া অথবা কেটে যাওয়া নির্ভর করে।
প্রশ্ন:- 'ওরা বলাবলি করছিল, পৃথিবীটা নাকি খুব সুন্দর’—এখানে ‘ওরা’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের।চোখে পৃথিবীটা সুন্দর কেন?
উত্তর : এখানে ‘ওরা' বলতে পেটকাটা ও চাঁদিয়াল নাম দুটি ঘুড়ির কথা বলা হয়েছে।
পেটকাটা ও চাঁদিয়াল ঘুড়ি দুটি নীল আকাশের বুকে উড়তে উড়তে নীচে পৃথিবীর সুন্দর রূপ দুচোখ ভরে লক্ষ করেছে।
তারা পৃথিবীতে পাহাড়, ঝরনা, নদী, গাছে গাছে ফুল, ফল দেখে আনন্দ পেয়েছে এবং পৃথিবীকে সুন্দর বলেছে।
প্রশ্ন:-“আকাশের দুই বন্ধু” গল্পটি কোন্ বই থেকে নেওয়া হয়েছে? পেটকাটা ও চাঁদিয়ালের কীভাবে দেখা হয়েছিল ? তাদের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত কীভাবে সফল হল? ‘সাধ্য’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : ‘আকাশের দুই বন্ধু’ গল্পটি ‘স্বপ্ন দেখি রূপকথায়' বই থেকে নেওয়া হয়েছে।
আকাশে পেটকাটা ও চাঁদিয়াল নামে দুটি ঘুড়ি ওড়ার সময় তাদের দেখা হয়। চাঁদিয়াল পেটকাটাকে বলল, “ওদের।হাতের ওই সুতো আমাদের ভাগ্য। ওই সুতো যদি প্যাচের সময় আমরা দুজনেই ছিঁড়ে ফেলতে পারি জট পাকিয়ে তবে হয়তো রক্ষা পেতে পারি আমরা। উপড়ে যেতে পারি একসঙ্গে আকাশে। তখন আর আমাদের ধরার সাধ্য থাকবে না।কারও। আমরা তখন আর অসহায় থাকব না। আমরা তখন দুই বন্ধু মুক্ত। আর আমাদের সহায় আকাশ।
‘সাধ্য' শব্দের অর্থ যা করা সম্ভব, ক্ষমতার আয়ত্ত।
বিপরীত শব্দ ঃ ভয়—নির্ভয়। নীচে—ওপরে। শক্ত—নরম। খুশি—অখুশি। হেরে—জিতে। জানা—অজানা।
→ সমার্থক শব্দ ঃ গলা—কণ্ঠ। আনন্দে—খুশিতে। উল্লাস—আনন্দ, খুশি।