পর্যটন কবিতা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর তৃতীয় শ্রেণি/ Parjatan poem question answer class 3
![]() |
তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা সাহিত্য
কবিতা : পর্যটন
কবি : নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পরিচিতি ঃ প্রখ্যাত কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর জন্ম ১৯২৪ সালে। তিনি কবিতা লেখালেখির পাশাপাশি সম্পাদনার কাজও করতেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কবিতার বই হল 'অন্ধকার বারান্দা',‘নক্ষত্রজয়ের জন্য’, ‘কলকাতার যীশু’, ‘উলঙ্গ রাজা' প্রভৃতি। তিনি ‘কবিতার ক্লাস’ নামক কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধের বইও লিখেছেন। তাঁর কবিতাগুলো প্রধানত, সমকালীন জীবনের ছোটো ছোটো ঘটনা নিয়ে রচিত।
কবিতার নামকরণের সার্থকতা ঃ অলোচ্য কবিতাটি পর্যটন কে কেন্দ্র করে রচিত। কবিতাটিতে কেষ্টবাবু যান বাদাকশান্। বিষ্টুবাবু যান মোম্বাসায়। মহেশবাবু সান্টা ফে। এসব দেখে কবিরও পর্যটক হওয়ার ইচ্ছা হয়েছে। কবিতাটির সমস্ত বিষয়ে পর্যটনকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে সে কারণেই কবিতার নামকরণ পর্যটন সার্থক হয়েছে।
সারমর্ম ঃ মস্ত পাগড়ি লাগিয়ে, দাড়ি গজিয়ে, গোঁফ ছেঁটে কেষ্টবাবু যাচ্ছেন বাদাকশান। আবার কুলির মাথায় মাল চাপিয়ে সিংহের মতো লম্ফ-ঝম্প দিয়ে মোম্বাসায় যাচ্ছেন বিষ্টুবাবু। মহেশবাবু আবার ভরদুপুরে ধুলোবালি উড়িয়ে সান্টা ফে চলেছেন। এসব দেখে কবিরও ইচ্ছা হল তিনিও পর্যটক হয়ে ভ্রমণে বেরোবেন। কিন্তু তিনি যাবেন কোথায়। তাঁর।সম্বল মাত্র একটা টাকা। অতএব নিরুপায় হয়ে তিনি চললেন শ্যামবাজারে।
শব্দার্থ :
পর্যটক — ভ্রমণে বের হন যারা।
পর্যটন—ভ্রমণ।
পাগড়ি—মাথায় পড়ার এক বিশেষ প্রকারের কাপড়ের টুপি জাতীয় পোশাক।
ভরদুপুর— দুপুরের মাঝামাঝি সময়।
শখ—ইচ্ছা।
গুম্ফ— গোঁফ।
কুলি – এরা মালপত্র বইবার কাজ করে। লম্ফ-লাফ।
পর্যটক — ভ্রমণে বের হন যারা।
টঙ্কা—টাকা।
মস্ত—বিরাট।
সিংহসম-সিংহের মতো।
বিনে–বিনা, ছাড়া।
বাদাকশান-উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তান ও দক্ষিণ-পূর্ব তাজাকিস্তানের অংশ জুড়ে অবস্থিত। তাজিক, উজবেক ও কিরঘিজ জাতির মানুষেরা এখানে বাস করেন।
মোম্বাসা – ভারত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত আফ্রিকা মহাদেশের কেনিয়া দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর শহর হল।মোম্বাসা। এটি একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র।
সান্টা কে—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেস্কিকো প্রদেশের রাজধানী শহর। স্প্যানিশ ভাষায় সান্টা ফে-এর অর্থ 'পবিত্র।বিশ্বাস'। এটিও একটি বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র।
শ্যামবাজার—উত্তর কলকাতার একটি প্রাণচঞ্চল বনেদি পাড়া। আগে এই অঞ্চলটির নাম ছিল সুতানটি।
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
হাতে-কলমে
![]() |
১. এককথায় উত্তর দাও :
১.১ পর্যটন করেন যিনি তাঁকে কী বলা হয়?
উঃ। পর্যটন করেন যিনি তাঁকে পর্যটক বলা হয়।
১.২ 'ভ্রমণ' শব্দের অর্থ লেখো। উঃ। ভ্রমণ শব্দের অর্থ ঘুরতে যাওয়া বা বেড়ানো।
১.৩ বাদাকশান, মোম্বাসা, সান্টা ফে, শ্যামবাজার—এই জায়গাগুলো কোথায় ?
উঃ। বাদাকশান—উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তান ও দক্ষিণ-পূর্ব তাজাকিস্তানের অংশ জুড়ে অবস্থিত। মোম্বাসা -কেমিয়া দেশে অবস্থিত। সান্টা ফে -মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেস্কিকোতে অবস্থিত। শ্যামবাজার–উত্তর কলকাতায় অবস্থিত।
১.৪ কেষ্ট, বিষ্ণু, মহেশ্বর নামগুলো কবিতাটিতে কী অর্থে ব্যবহার হয়েছে?
উঃ। কেষ্ট, বিষ্ণু, মহেশ্বর নামগুলো দামি ব্যক্তি অর্থাৎ গণ্যমান্য ব্যক্তির নাম হিসাবে ব্যবহার হয়েছে।
১.৫ কবিতায় লোকটির মনে বেড়ানোর 'শখ' জাগল কেন?
উঃ কেউ, বিষ্ণু, মহেশ্বর অর্থাৎ দুনিয়ার সবাই পর্যটনে বেরিয়েছেন দেখে লোকটিরও বেড়ানোর শখ জাগল।
১.৬ যাঁরা পর্যটনে বেরিয়েছেন, তাঁদের হাবভাব, সাজপোশাক, চলাফেরা কীভাবে কবিতাটিতে ধরা পড়েছে?
উঃ। যাঁরা পর্যটনে বেরিয়েছেন তাঁদের মধ্যে কেষ্টবাবুর মাথায় মস্ত পাগড়ি, গালভরা দাড়ি, ছাঁটা গোঁফ আর বিটুবার সিংহের মতো দ্রুত পায়ে পর্যটনে যাচ্ছেন। আবার মহেশ দাস ভরদুপুরে প্রায় ছুটতে ছুটতে ধুলো উড়িয়ে পর্যটনে চলেছেন।।
১.৭ সাধারণত মানুষজন কখন বেড়াতে বেরোন ?
উঃ। সাধারণত মানুষজন ছুটিতে বেড়াতে যান। যেমন : পূজোর ছুটি, গরমের ছুটি, বড়দিনের বা শীতের ছুটি ইত্যাদি।
১.৮ মানুষের বেড়ানোর ইচ্ছে হয় কেন ?
উঃ। অজানা, অদেখা জিনিস তথা জায়গা দেখতে মানুষের ইচ্ছা হয়। এছাড়া প্রতিদিনের একঘেয়েমি জীবন থেকে স্বস্তি পেতেও মানুষের বেড়ানোর ইচ্ছা হয়।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রশ্ন:- ‘পর্যটন' কবিতাটি কোন্ কবির লেখা?
উঃ। ‘পর্যটন' কবিতাটি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা।
প্রশ্ন:- ‘কে বাদাকশান যাচ্ছেন?
উঃ। কেষ্টবাবু বাদাকশান্ যাচ্ছেন।
প্রশ্ন:- ‘ পর্যটন কবিতায় বিষ্টুবাবু কোথায় যান?
উঃ। পর্যটন কবিতায় বিষ্টুবাবু মোম্বাসায় যান।
প্রশ্ন:- ‘ কে সান্টা ফে যাচ্ছেন? উঃ। মহেশ দাস সান্টা ফে যাচ্ছেন।
প্রশ্ন:- ‘ কবি অবশেষে কোথায় যাওয়ার কথা ঠিক করলেন?
উঃ। কবি অবশেষে শ্যামবাজার যাওয়ার কথা ঠিক করলেন।
প্রশ্ন:- ‘কবির কাছে পর্যটনের জন্য কত টাকা ছিল?
উঃ। কবির কাছে পর্যটনের জন্য মাত্র এক টাকা ছিল।
প্রশ্ন:- ‘মহেশ দাস কখন বেড়াতে বেরিয়েছেন?
উঃ। মহেশ দাস ভর দুপুরে বেড়াতে বেরিয়েছেন।
প্রশ্ন:- ‘মোম্বাসা কোন্ মহাদেশে আছে?
উঃ। কলকাতা।
প্রশ্ন:- ‘ তোমার জানা পাঁচটি দেশের এবং পাঁচটি বিদেশের পর্যটন কেন্দ্রের নাম লেখো।
উঃ। পাঁচটি দেশের মধ্যে পর্যটন কেন্দ্র হলো-দার্জিলিং, কাশ্মীর, পুরী, গোয়া, সিমলা।
পাঁচটি বিদেশের পর্যটন কেন্দ্র হলো- সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, প্যারিস, লন্ডন।
প্রশ্ন:- ‘কবিতায় কেষ্ট, বিষ্ণু, মহেশ্বর এগুলি কাদের নাম ?
উঃ। কবিতায় কেষ্ট শব্দটি কৃয় অর্থাৎ শ্রীকৃয়ের নাম। বিষ্ণু নামটি এসেছে বিয়ু অর্থাৎ নারায়ণের নাম থেকে আর মহেশ্বর হল শিব বা মহাদেবের আর একটি নাম।
প্রশ্ন:- ‘পর্যটন কবিতায় কে কী পোশাকে কোথায় পর্যটনে যাচ্ছে ?
উঃ। মাধার মস্ত একটি পাগড়ি এঁটে দাড়ি রেখে গোঁফ ছেটে কেষ্টবাবু বাদাকশান বেড়াতে গেলেন। বিষ্টবাবু কুলির মাথায় মাল চাপিয়ে সিংহের মতো লাফ দিয়ে মোসাসায় বেড়াতে চললেন আর ভরদুপুর বেলা ধুলো উড়িয়ে মহেশ দাস সান্টা ফে বেড়াতে চালে গেলেন।
প্রশ্ন:- ‘ এত বেড়াবার জায়গা থাকতে কবিকে শ্যামবাজার যেতে হলো কেন ?
উঃ। দেশে-বিদেশে বেড়ার অজস্র জায়গা রয়েছে কিন্তু সেসব জায়গায় যেতে হলে অনেক অর্থ বা টাকা পয়সার প্রয়োজন। কিন্তু কবির কাছে খরচ করার মতো একটি মাত্র টাকাই রয়েছে। তাই কবি কলকাতার মধ্যে চেনা জায়গা শ্যামবাজারেই চললেন।
প্রশ্ন:- ‘বন্ধনীর সঠিক উত্তরটির
লেখো।
(ক) কেষ্টবাবুর মাথায় (ঝুড়ি/পাগড়ি)।
উঃ। পাগড়ি
খ) কেষ্টবাবু যান (বাদকশান/বাগদাদ)।
উঃ। বাদকশান্
(গ) কবি যাবেন (বাগবাজার / শ্যাামবাজার)।
উঃ। শ্যামবাজার
(ঘ) বিষ্টুবাবু হাঁটেন (সিংহের মতো/বিড়ালের মতো)।
উঃ। সিংহের মতো।
শেষ