পান্তা বুড়ি হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর তৃতীয় শ্রেণি / panta buri class 3 question answer - school book solver

Pages

Wednesday, 12 February 2025

পান্তা বুড়ি হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর তৃতীয় শ্রেণি / panta buri class 3 question answer

 




       তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা

       গল্প : পানতাবুড়ি

লেখক : যোগীন্দ্রনাথ সরকার

লেখক যোগীন্দ্রনাথ সরকার পরিচিতি : ১৮৬৬ সালে যোগীন্দ্রনাথ সরকার জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর রচিত অন্যান্য বই 'ছবি ও গল্প', 'খেলার সাথী, ‘বন্দেমাতরম', ‘বনে জঙ্গলে, রচনার জন্য তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন। হাসিখুশি’ 'বিকাশ' ও ‘দীপ্তি'  নামে দুটি কাব্য তিনি লিখেছেন ।

১৯৩৭ সালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।



পান্তাবুড়ির গল্পটির নামকরণের সার্থকতা : গল্পটিতে এক বুড়ির কথা বলা আছে। সে রোজ পাস্তাভাত খায়। সেই জন্য তার নাম পান্তা বুড়ি । বুড়ির বাড়িতে একদিন চুরি হয় । সেই বুড়ি চোরের কথা রাজার কাছে জানাতে গিয়ে রাস্তায় থেকে বেল, খুঁচ, শিঙিমাছ, ছুরি, কুমির সবই পান্তা বুড়িকে চোর ধরার সাহায্যের কথা বলে। তাদের প্রত্যেককে নিয়ে আসে তার বাড়িতে এবং তাদের সাহায্যে চোর ধরে। গল্পের মূল চরিত্র যেহেতু রোজ পান্তভাত খাওয়া বুড়ি, তাই গল্পটির নামকরণ সার্থক।


সারাংশ : এক বুড়ি ছিল।সকালে সে কেবল পানতা খেত। তাই তার নাম পানতাবুড়ি। সেই বুড়ির পানতা রোজ এক চোর এসে খেয়ে যায়। বুড়ি চোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে রাজার কাছে নালিশ জানাতে যায়। পথে যেতে যেতে বুড়ির সাথে একটি বেল, শিঙিমাছ, ছুঁচ, ছুরি এবং কুমিরের দেখা হয়। তারা সবাই বুড়ি কোথায় যাচ্ছে জানতে চায় আর ফেরার পথে তাদের বুড়ির সাথে নিয়ে যেতে বলে। বুড়ি তাই করে। বাড়িতে তাদেরই ইচ্ছেমতো বেলটিকে উনুনে, শিঙিমাছকে পানতার হাঁড়িতে, খুঁচকে দেয়ালে, ছুরিটিকে উঠোনের ঘাসে এবং কুমিরকে পুকুরে রেখে দেয়। রাতে চোর আসে। প্রথমে পানতার হাঁড়িতে হাত দিয়ে শিঙিমাছের কাঁটার খোঁচা খায়, তারপর উনানের বেল ফেটে তার চোখ অন্ধ হয়ে যায়। তারপর চোর তাড়াতাড়ি বেরোতে গিয়ে দেয়ালের খুঁচ তার হাতে ফুটে যায়, উঠোনের ছুরিতে পা কেটে যায়। পুকুরে গিয়ে সে কুমিরের মুখে পড়ে। এইভাবে চোর ধরা পড়ে। বুড়ি তাকে রাজার কাছে নিয়ে যায় ও রাজা তাকে শাস্তি দেন।



শব্দার্থ

ভিক্ষে- চেয়ে চিন্তে দিন কাটানো। 

পানতা ভাত—জলঢালা বাসি ভাত। 

উপস্থিত—হাজির।

নালিশ – অভিযোগ। 

পথে—রাস্তায়। 

ক্রমে—ক্রমশ। 

বেলা—দিন।

 সূচ—সেলাইয়ের উপকরণ। 


মেজাজ—মনের অবস্থা।

গাঁয়ে--গ্রামে। 

 

 হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

১. এক কথায় উত্তর দাও :


১.১ পানতাবুড়ির নাম অমন হলো কেন?

 উঃ। সে রোজ সকালে পানতা খেত বলে।


১.২ পানতাবুড়ির দিন চলত কেমন করে? 

উঃ। পানতাবুড়ির ভিক্ষা করে  দিন চলত।


১.৩ পানতাবুড়ি কার জ্বালায় অস্থির? 

উঃ। পানতাবুড়ি চোরের জ্বালায়  অস্থির।


১.৪ অস্থির হয়ে পানতা বুড়ি কী করতে চলল? 

উঃ। অস্থির হয়ে পানতা বুড়ি রাজার কাছে নালিশ করতে।


১.৫ রাস্তায় প্রথমে তার সঙ্গে কার দেখা হল?

 উঃ। রাস্তায় প্রথমে তার সঙ্গে বেলের সঙ্গে দেখা হল।


১.৬ কিছুটা দূরে গিয়ে পানতাবুড়ির সঙ্গে কার দেখা হল ?

উঃ। কিছুটা দূরে গিয়ে পানতাবুড়ির সঙ্গে শিঙিমাছের সঙ্গে।


১.৭ সূচ বুড়িকে কী বলেছিল? 

উঃ। সূচ বুড়িকে বলেছিল ফেরার সময় তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে ।


১.৮ কেন বুড়ির মাথা গরম হয়ে উঠল কেন?

উঃ। সকলকে একই উত্তর দিতে দিতে বুড়ির মাথা গরম হয়ে উঠল।


১.৯ বিরক্ত হয়ে বুড়ি কাকে কী বলেছিল?

উঃ। বিরক্ত হয়ে বুড়ি ছুরিকে বলেছিল যেথায় যাই না কেন তোর তাতে কী?


১.১০ রাজবাড়ির কাছে গিয়ে বুড়ি কী দেখল?

 উঃ। পানতাবুড়ি রাজবাড়ির কাছে গিয়ে বুড়ি  দেখল  পথের ধারে একটা কুমির পড়ে আছে।


১.১১ বুড়ি রাজবাড়িতে কখন পৌঁছাল?

উঃ- বুড়ি রাজবাড়িতে  পৌঁছাল বেলা শেষে।


১.১২ বুড়ির আর নালিশ করা হলো না কেন?

 উঃ। বুড়ির আর নালিশ করা হলো না কারণ,রাজা সে দিন  শিকারে গিয়েছিলেন।


১.১০ ফিরবার পথে  কাদের নিয়ে এল?

 উঃ। ফিরবার পথে সে কুমির, ছুরি, সূচ, শিঙিমাছ ও বেল নিয়ে এল।


১.১৪ শিঙ্গিমাছ কী বলল

উঃ। শিঙিমাছ তাকে পানতার হাঁড়িতে রাখতে বলল।


১.১৫ পানতা শব্দের অর্থ লেখো। 

উঃ। জলঢালা বাসি ভাত।


১.১০ বেল কী বলল? 

উঃ বেল তাকে উনুনে রাখতে বলল।


১.১৭ সূচ কে কোথায় রাখা হল?

 উঃ সূচ কে দেয়ালে পুঁতে রাখা হল।


১.১৮ চুরি কোথায় গোঁজা ছিল

উঃ। ছুরি উঠোনের মাঝে গোঁজা ছিল।


১.১৯ কুমির কোথায় ছিল?

 উঃ। কুমির বুড়ির পুকুর-ঘাটে বাঁধা ছিল।


১.২০ কাকে বেঁধে রাজার কাছে হাজির করানো হল? 

উঃ। চোরকে বেঁধে রাজার কাছে হাজির করানো হল।


২. ঠিক শব্দটি বেছে শুন্যস্থান পূরণ করো ।

২.১ একবার গাঁয়ে এক- (চোর/ডাকাত/সন্ন্যাসী) এসে হাজির হল

উত্তর- চোর


২.২ বুড়ি বলল চোর তার (পানতা/পায়েস/পিঠে) খেয়েছে।

উত্তর- পানতা


২.৩ কিছু দূর গিয়ে বুড়ি দেখল, একটা (শিঙিমাছ/বুই মাছ কাতলা মাছ)।

উত্তর- শিঙিমাছ


২.৪ সেদিন রাজা গিয়েছিল --- (শিকারে / বেড়াতে যুদ্ধে)।

উত্তর- শিকারে


২.৫ (কুমির/সূচ/শিঙিমাছ) চিৎকার করে বলল, ও বুড়ি তোর চোর ধরেছি।

উত্তর- কুমির



৩. 'ক' স্তম্ভের সঙ্গে খ''স্তম্ভ মেলাও

উত্তর- 

     ক" স্তম্ভ      খ''স্তম্ভ

    বুড়ি    >    পানতাভাত

শিঙি মাছ    >    পানতার হাঁড়ি

বেল    >    উনান

মেজাজ    >    গরম

কুমির    >    ঘাট

৪. নীচের শব্দগুড়ি থেকে ঠিক শব্দ বেছে নিয়ে বাক্যটি সম্পূর্ণ করো : চোর, ছুরি, সূচ, গরম, নালিশ

৪.১ তারপর লোকজন.....কে বেঁধে রাজার কাছে হাজির করল।

 উঃ। চোর।

 ৪.২......বলল, আমাকে উঠোনের ঘাসে গুঁজে রাখো

 উঃ। ছুরি।

৪.৩ অমনি............. বিঁধে রক্তারক্তি। 

 উঃ। সূচ।

৪.৪ বুড়ির মেজাজ তখনও.......

 উঃ। গরম।


৪.৫ বুড়ি রাজার বাড়িতে....করতে চলল।

 উঃ।  নালিশ।



হাতে-কলমের বাইরে অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর 


প্রশ্ন। চোরের হাতে কে কাঁটার খোঁচা দিয়েছিল? 

উঃ। শিঙিমাছ চোরের হাতে কাঁটার খোঁচা দিয়েছিল।


প্রশ্ন। কে কীভাবে চোরের চোখ অন্ধ করে দিল? 

উঃ। বেল ফেটে গিয়ে চোরের চোখ অন্ধ করে দিল।

প্রশ্ন। গ্রামে হঠাৎ কে এসে বাজির হল? 

উঃ। গ্রামে হঠাৎ এক চোর এসে হাজির হল।


প্রশ্ন। চোর বুড়ির কী চুরি করত? 

উঃ। চোর বুড়ির পানতাভাত চুরি করে খেয়ে নিত।


প্রশ্ন। পানতাবুড়ি কুমিরকে কোথায় যাচ্ছে বলেছিল? 

উঃ। পানতাবুড়ি কুমিরকে যমের বাড়ি যাচ্ছি বলেছিল।


প্রশ্ন। চোর ধরতে পানতাবুড়িকে কজন সাহায্য করেছিল ও তাদের নামগুলি লেখো।

উঃ। চোর ধরতে পানতাবুড়িকে  সাহায্য করেছিল  পাঁচজন। তাদের নামগুলি হলো বেল, শিঙিমাছ, সুচ, ছুরি, কুমির।


প্রশ্ন। বুড়ি কোথায় নালিশ করতে যাচ্ছিল?

 উঃ। বুড়ি রাজার কাছে নালিশ করতে যাচ্ছিল।


প্রশ্ন। কুমির কোথায় ছিল?

 উঃ। কুমির রাজপ্রাসাদের কাছে রাস্তার ধারে ছিল।



প্রশ্ন। রাজা সেদিন কোথায় গিয়েছিলেন? 

উঃ রাজা সেদিন শিকারে গিয়েছিলেন।


 


প্রশ্ন। কুমিরের চিৎকার কেমন ছিল?

উঃ। কুমিরের চিৎকার ছিল ভয়ানক, তার কাছে বাঘের ডাক কোথায় লাগে।


প্রশ্ন। কুমির চোর ধরে কী বলে চিৎকার করেছিল ?

উঃ। কুমির চোর ধরে চিৎকার করে বলেছিল ও বুড়ি, তোর চোর ধরেছি।



প্রশ্ন। চোরটি কীভাবে শাস্তি পেল?

উঃ। বুড়ি ঘুমিয়ে পড়ার পর চোর এসে যেই পানতার হাঁড়িতে হাত দিয়েছে অমনি সে শিঙি মাছের কাঁটার খোঁচা খেল। তখন আগুনের তাপ নিতে যেই উনুনের ধারে গেল অমনি উনুনে রাখা বেলটি ফেটে তার চোখ যেন অন্ধ হয়ে গেল। হাতড়াতে হাতড়াতে চোরটি দরজার কাছে এসে কাদায় পা পিছলে পড়ল এবং দেয়াল ধরে উঠতে গিয়ে হাতে সূঁচ বিধে রক্তারক্তি হয়ে গেল এরপর উঠোন দিয়ে পালাতে গিয়ে ছুরিতে তার পা কেটে খানখান হল এবং ঘাটে নেমে হাত পা ধুতে গিয়ে পড়লো কুমিরের মুখে। এভাবেই চোরের শাস্তির শেষ ছিল না।

প্রশ্ন। গাঁয়ের বুড়িটিকে সবাই পানতাবুড়ি বলতো কেন?

উঃ। গাঁয়ের বুড়িটি ছিল খুবই গরিব। ভিক্ষা করে যে কটি চাল সে পেত তাই দিয়ে ভাত রেঁধে রাতে খেত আর বাকি ভাত পরদিন সকালের জন্য জল দিয়ে রাখত। রোজ সে একই রকমভাবে পানতাভাত খেত বলে তার নাম হয়ে গিয়েছিল পানতাবুড়ি।


প্রশ্ন। ‘বুড়ির আর নালিশ করা হলো না।'—উদ্ধৃতি অংশটুকু কোন্ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে? গল্পের লেখক কে? কেন বুড়ির নালিশ করা হলো না? ফেরার সময় বুড়ি কী করল ?

উঃ। উদ্ধৃতি অংশটুকু ‘পানতাবুড়ি' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। গল্পের লেখক হলেন যোগীন্দ্রনাথ সরকার। বুড়ি যখন রাজবাড়িতে গিয়ে পৌঁছল তখন বেলা প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। সেদিন রাজা গিয়েছিলেন শিকারে তাই বুড়ির আর নালিশ করা হলো না। ফেরার সময় বুড়ি পথে দেখা হওয়া কুমির, সূচ, শিঙিমাছ ও বেলকে বাড়িতে নিয়ে এল।


ব্যাকরণ 

বিপরীত শব্দ লেখোঃ 

বুড়ি—বুড়ো। 

গরীব—ধনী। 

উপস্থিত—অনুপস্থিত। 

জিজ্ঞাসা—উত্তর। 

বিরক্ত—অনুরক্ত।

শাস্তি—রেহাই, মুক্তি। 

শেষ—শুরু। 

বেলা-অবেলা। 

ইচ্ছা-অনিচ্ছা।