'উড়ুক্কু ভূত' হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর তৃতীয় শ্রেণী/ orukku bhut class 3 bangla - school book solver

Pages

Friday, 14 February 2025

'উড়ুক্কু ভূত' হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর তৃতীয় শ্রেণী/ orukku bhut class 3 bangla

 



তৃতীয় শ্রেণি বাংলা

       গল্প : উড়ুক্কু ভূত

  লেখক : শৈলেন ঘোষ




সারাংশঃ- একদিন দুপুর বেলায় ঝড়ের সময় এক ভূত এসে বাগানে ঢুকে হাওয়ায় ছুটোছুটি করছিল। প্রথমে ভূতটিকে দেখে একটি কাকের ছানা, তারপর দেখে পেয়ারা গাছে থাকা একটি কাঠবেড়ালি। কাঠবেড়ালিটি ভূতের ভয়ে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়েছিল।

এরপর ঝড়ের গতি বাড়তেই ভূতটা পেয়ারা গাছ থেকে আমড়া গাছে যায়। সেখানে তাকে দেখে হুতুম মুখো পেঁচা । তারপর পেঁচাটা ভয়ে গলায় ঢোক গিলতে গিয়ে দম আটকে মারা পড়ে। এরপর ভূতকে দেখে ইঁদুর, ব্যাং, ফড়িং, চড়াই, শালিক সবাই ছুটোছুটি লাগিয়ে দেয়। এরপর ভূতটা একটা বেগুন গাছের কাঁটার উপর উড়ে গিয়ে পড়ল। সেখানে একটি গুটিপোকা বেগুন গাছের কচিপাতা খাচ্ছিল। সে ভূতটাকে দেখে গ্রাহ্য না করে খেয়েই চলল। এরপর বৃষ্টি নামলে ভূতের চেহারাটা জলের তোড়ে ভিজে সব রং ধুয়ে চলে গেল। শেষে দেখা গেল যে সেটা একটা খবরের কাগজ। কে যেন তাতে ভূতের ছবি এঁকেছিল



শব্দার্থঃ 

ছান্না – বাচ্চা। 

কোত্থেকে— কোথা থেকে। 

জলজ্যান্ত - পুরোপুরি সজীব। 

অজ্ঞান-অচেতন। 

গ্রাহ্যি-গ্রাহ্য, সমীহ।

 লটকে – থুবড়ে পড়া। 

সৃষ্টিছাড়া—অদ্ভুত, অস্বাভাবিক।

হুমড়ি—উপুড় হয়ে পড়া।

দাঁত ছরকুট্টে—দাঁত বের করে।  

স্বর্গে গেলেন— মারা গেলেন।

 মামদোবাজি—অন্যয় আচরণ। 

উত্তর- উড়তে পারে এমন।

ধড়—দেহ। 

ফিনফিনে পাতলা। 



■ হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

১. এক কথার উত্তর দাও :


১.১ ভূতকে প্রথমে কে দেখতে পেয়েছিলেন? 

উঃ। ভূতকে প্রথমে দেখতে পেয়েছিল একটি কাকের ছানা।


১.২ কাকের ছানাটা কোন গাছের ডালে বসেছিল? 

উঃ। কাকের ছানাটা নিম গাছের ডালে বলেছিল।


১.৩ আনড়া গাছে কে বসেছিল? 

উঃ । আমড়াগাছে বসেছিল একটা হুতুমমুখো পেঁচা।


১.৪ কে কুট-কুর্ট করে বেগুন গাছের কচি পাতা খাচ্ছিল?

উঃ। একটি গুটিপোকা কুট কুট করে বেগুন গাছের কচি পাতা খাচ্ছিল।



২. তিন-চারটি বাক্যে উত্তর দাও :

২.১ ভূতের চেহারা কেমন ছিল?

উঃ। ভূতের চেহারাটা ছিল--ড্যাবরা-ড্যাবরা চোখ, থ্যাবড়া-থ্যাবড়া নাক আর ফিনফিনে ফুরফুর। হাত নেই, পা নেই, ধড়কাটা নড়া-চটকানো ভূত।


২.২ ভূতকে দেখে হুহুমমুখো পেঁচার আবস্থা কেমন হয়েছিল ?

উঃ। দিনের আলোয় হুতুমমুখো পেঁচা ভূতকে  দেখে  তার সোনার চাঁদের পিলে শুকিয়ে পাঁপড়ভাজা হয়ে গিয়েছিল। তারপর ভয়ে গলায় ঢোক গিলতে গিলতে টুক করে দম আটকে সে স্বর্গে চলে গিয়েছিল অর্থাৎ মারা গিয়ে ছিল।


২.৩ গুটিপোকা ভূতকে দেখে কী করেছিল আর মনে মনেই বা কী বলেছিল?

উঃ। গুটিপোকা ভূতকে দেখে এদিক থেকে ওদিকে ঘুরে বসেছিল। আর মনে মনে বলেছিল 'ছাই, ভুত না আর কিছু।'


২.৪ বৃষ্টি নামার পর ভূতের অবস্থা কেমন হয়েছিল।

উঃ। বৃষ্টিতে ভিজে ভূতের চোখ দিয়ে, নাক দিয়ে, মুখ দিয়ে জলে গোলা রং বেরিয়ে এসেছিল এবং শেষে মনে হল এটা একটা খবরের কাগজ। কেনে তাতে ভুত এঁকেছে।


৩. কে. কোন যাছে বসেছিল লেখো

৩.১। গুটিপোকা.....(লকা গাছ/বেগুন গাছ/জাম গাছ)।

 উঃ। বেগুন গাছ।


৩.২। কাঠবেড়ালি ...... (পেয়ারা গাছ/লিচু গাছ/কলা গাছ)। 

উঃ। পেয়ারা গাছ।


৩.৩ হুতুমমুখো গো......(আমড়া গাছ/আম গাছ/কাঁঠাল গাছ)। 

উঃ । আমড়া গাছ ।

৩.৪ কাজের ছানা.......(শিম গাছ/ নিম গাছ/ বেল গাছ)।

 উঃ। নিম গাছ।


৪. কে. কোন্ কথাটা বলেছে মিলিয়ে লেখো : (উত্তর মিলিয়ে এক সঙ্গে করে দেওয়া হল।)

★ ও মাগো জলজ্যান্ত ভূত গো'>  কথাটা বলেছে > পেঁচা

★ "কে র‍্যা? > কথাটা বলেছে > কাগছানা


★ "ছাই, ভূত না আর কিছু>কথাটা বলেছে > গুটিপোকা


★"ও মাগো জলজ্যান্ত ভূত গো' > কথাটা বলেছে > কাঠবেড়ালি


৫. শূন্যস্থান পূরণ করো : (পাশের ঝুড়িতে যে শব্দগুলো আছে তার সাহায্য নাও)।

বেগুন, খবরের, ঝড়ের পর্দা

৫.১ জুনামুখো পেঁচাটা বাঁ চোখের..…..ফেলে ডান চোখ খুলে রেখেছিল। 

উঃ। চোখের পর্দা

৫.২ কাঠবেড়ালি পেয়ারা গাছের ডাল জাড়িয়ে.......হাওয়ায় দোল খাচ্ছিল

উঃ। ঝড়ের

 ৫.৩ ভূতটা আসলে কাকুর.......কাগজের ছোড়া পাতায় আঁকা ছিল।

উঃ। খবরের

৫.৪ ভূতটা......গাছের কাঁটায় আটকে গেল।

উঃ। বেগুন

৬. কাকুর খবরের কাগজের ছেঁড়া পাতায় আঁকা ভূতের ছবিটাই ঝড়ের ঝাপটায় উড়ে গিয়ে সবাইকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। তেমনি ভাবে আর কী কী দেখে কীভাবে মানুষ অকারণে ভয় পেতে পারে, এ নিয়ে একটা ছোট্ট গল্প লেখো।


উঃ। নিজে লেখো। একদিন তপনার সিধু তাল পুকুরে তাল কুড়াতে গেছিল। তখন রাত অনেক ছিল।  এমন সময় তপন দেখল পুকুরের উত্তর দিকে কোনে যে তালগাছটা ছিল সেই তাল গাছের গোড়ায় সাদা কাপড় পড়ে একটা মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। তপন ভয় পেয়ে সিধুকে বলল ।সিধু ভয়ে ভয়ে দেখালো। তারা তাল না কুড়িয়ে চুপি চুপি রাতে ফিরে এলো। পরদিন সকালে দুলেপাড়ার মন্টুর মা গিয়ে বলল 'কিরে কটা তাল পেলি"? তখন ওরা দু জনে বুঝতে পারল আসলে সেটা ভুত ছিল না।ওটা ছিল মনটুর মা।






হাতে কলমের বাইরে প্রশ্ন ও উত্তর :


প্রশ্ন- উড়ুক্কু ভূত গল্পটি কার লেখা?

 উত্তর- শৈলেন ঘোষ।


 প্রশ্ন- সাহিত্যিক শৈলেন ঘোষের কোন নাটকটি অ্যাকাদেমি পেয়েছে?

 উঃ । 'অরুণ বরুণ কিরণমালা'।


প্রশ্ন- ঝড়টা কখন কীভাবে উঠেছিল

উঃ। সাই-সাই পাই পাই করে ঝড়টি দুপুরবেলা উঠেছিল।


প্রশ্ন- বাগানে কে কীভাবে ঢুকে পড়েছিল? 

উঃ। একটা ভূত ঝড়ের ঝাপটায় বাগানে ঢুকে পড়েছিল।


প্রশ্ন- ভুতটা কীসের সাহায্যে ছুটছিল ? 

উঃ । ভূতটা হাওয়ার সাহায্যে ছুটছিল।


প্রশ্ন-ব্যাঙকে দেখে কে ছুটেছিল ? 

উঃ । ফড়িং ব্যাঙকে দেখে ছুটেছিল।


প্রশ্ন-ছুটতে ছুটতে ভূতটা কোথায় গিয়ে পড়েছিল ?

 উঃ। ভূতটা বেগুন গাছের কাঁটায় গিয়ে পড়েছিল।


প্রশ্ন-কে অজ্ঞান হয়ে মাটির উপর লটকে পড়েছিল? 

উঃ। কাঠবেড়ালি অজ্ঞান হয়ে মাটির উপর পটকে পড়েছিল


 প্রশ্ন-ভূতকে দেখে কে ছুটেছিল ?

 উঃ । ভূতকে দেখে ইঁদুর ছুটেছিল।


প্রশ্ন- কে ভূতটাকে দেখেও গ্রাহ্য করেনি ? 

উঃ। গুটিপোকা ভূতটাকে দেখেও গ্রাহ্য করেনি।


প্রশ্ন- আসলে ভূতটা কী ছিল? 

উঃ। সেটি খবরের কাগজের উপর আঁকা একটা ভূতের ছবি ছিল।


প্রশ্ন-এটা যে ভূত নয় কখন কীভাবে বোঝা গেল ?

উঃ। ঝড়ের পর বৃষ্টি নামতে বৃষ্টির জলে খবরের কাগজের উপর আঁকা ছবির সব রংগুলো ধুয়ে গেছিল। তখন বোঝা গেল এটা ভূত নয় কে খবরের কাগজের ওপর ছবিটি এঁকেছে।


প্রশ্ন-ঝড় ছোটার সাথে সাথে কারা ছুটছিল?

উঃ। ঝড় ছোটার সঙ্গে সঙ্গে ভূতটি ছুটেছিল। তাকে দেখে ইঁদুর, এবং ইঁদুরকে দেখে ব্যাঙ ছুটেছিল। ব্যাঙকে দেখে ফড়িং এবং ফড়িংটিকে দেখে চড়াই ও শালিক ছুটেছিল।


প্রশ্ন-কে কীভাবে প্রথম ভূতটাকে দেখেছিল? সে এখন কী করেছিল?

উঃ। প্রথম ভূতটাকে দেখতে পেয়েছিল একটা কাকের ছানা। ঝড়ের সময় নিমগাছের বাসায় সে ঘাপটি মেরে বসেছিল। সেই সময় ভূতটা কোথা থেকে একেবারে ওর ঘাড়ে এসে পড়েছিল।

কাক ছানাটি ভূতকে দেখে ভয়ে কাঁ অ্যাঁ অ্যাঁ করে কেঁদে উঠেছিল।




 


প্রশ্ন- বিপরীত শব্দ লেখো : আগে,সামনে, অজ্ঞান, বাড়ল, বুজেছে।

উঃ। আগে - পরে

সামনে-পিছনে। 

বুজেছে—খুলেছে।

অজ্ঞান – সজ্ঞান। 

বাড়ল—কমল। 



 

প্রশ্ন- সমার্থক শব্দ লেখো। গাছ,ভূত, কাক, ঝড়, পেঁচা।

উঃ। গাছ - তরু

ভূত-প্রেত। 

অশরীরী — কায়াহীন। 

কাক—বায়স। 

ঝড়-ঝঞ্ঝা।

পেঁচা-পেচক।




প্রশ্ন-এলোমেলো বর্ণগুলিকে সাজিয়ে সঠিক শব্দ তৈরি করো :

জ্যালজান্ত > জলজ্যান্ত

সুড়িড়সু > সুড়সুড়ি

ভাড়জাপাঁপ  > পাঁপড়ভাঙ্গা

পাচিকতা> কচিপাতা

উঃ। জলজ্যান্ত, সুড়সুড়ি, পাঁপড়ভাঙ্গা, কচিপাতা।


 প্রশ্ন-সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।

(ক) (পেয়ারা গাছে/আতাগাছে) একটা কাঠবেড়ালি দোল খাচ্ছিল। 

উঃ। পেয়ারাগাছে

(খ) অমনি সোনার চাঁদের পিলে শুকিয়ে

(বেগুনভাজা/পাঁপড়ভাজা) হয়ে গেছে।

উঃ। পাঁপড়ভাজা

 (গ) খবরের কাগজ মার্কা আচ্ছা (গোলগাল / গোলমেলে) ভূত তো এটা!

উঃ। গোলমেলে

(ঘ) ভূতটাকে দেখে (ভয়/গ্রাহ্যি) নেই।

 উঃ। গ্রাহ্যি

(৩) (সাঁইসাঁই/ঝমঝম) করে বৃষ্টি এল।


উঃ। ঝমঝমে।



লেখক পরিচিতি : শৈলেন ঘোষ ১৯২৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। কৈশোরে ছোটোদের পত্রিকা 'মাস পয়লা'য় তিনি প্রথম কবিতা লেখেন। তাঁর লেখা 'অরুণ বরুণ কিরণমালা' শিশু নাটকটি সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার লাভ করে। তাঁর রচিত উপন্যাস 'মিতুল নামে পুতুলটি জাতীয়

পুরস্কারে সম্মানিত। তাঁর অন্যান্য রতনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপন্যাস 'আমার নাম টায়,গল্পের মিনারে পাখি', 'ভূতের নাম আঙ্কুশ', 'টুই টুই' ইত্যাদি। এছাড়াও ছোটোদের জন্য

অজস্র গল্প, ছড়া, নাটক রচনা করেছেন। উল্লেখযোগ্য গল্প সংকলন 'হাসি ঝলমল মজা, স্বপ্ন দেখি ৰূপকথায়', 'ভালোবাসি পশুপাখি', 'গল্পের রং রকম রকম' ইত্যাদি।