'ময়দানব' হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর পঞ্চম শ্রেণী / Moydane poem question answer
পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা
ময়দানব ■ সুভাষ মুখোপাধ্যায়
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের পরিচিতিঃ-
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর অঞ্চলে জন্মগ্রহণ। তিনি ১৯১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ কর। করেন। তাঁর পিতার নাম ক্ষিতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম যামিনীবালা দেবী। কলকাতার ভবানীপুর মিত্র ইন্সটিটিউশন থেকে স্কুল জীবন শুরু হয়। এরপর স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক উপাধি লাভ করেন। কবির রচিত উল্লেখযোগ্য কবিতাগুলির মধ্যে পদাতিক, যত দূরেই যাই, চিরকূট, ছেলে গেছে বনে, কাল মধুমাস, একবার বিদায় দে মা ইত্যাদির আমাদের মনে দাগ কাটে।
ময়দানব কবিতার সারাংশ:-
অন্ধকার নির্জন মাঠে হাওয়া দিলে মাঠটি একটি অন্য চেহারা নেয়। রাতের অন্ধকারে নির্জন মাঠে হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা শোঁ শোঁ আওয়াজ ঘুরে বেড়ায়। রাতের অন্ধকারে রাস্তার পোস্টের আলো কেমন আবছা হয়ে আসে।
কবি বলছেন, রাতেরবেলায় যেন একা ময়দানে খবরদার যেয়ো না। অ্যাং, ব্যাং, চ্যাং নামের সব ময়দানব মানুষ পেলেই তারা হা-ডু-ডু বলে ঠ্যাং খুলে নেবে। তার সঙ্গে জোনাকিরা উড়ে এসে গায়ে ছ্যাঁকা দেবে। এভাবে ময়দানব নানাভাবে অত্যাচার করে।
শব্দার্থ : আঁদাড়ে—নোংরা স্থানে।
পাঁদাড়ে—আবর্জনার স্তূপে।
তাঁবু- ছাউনি দেওয়া ক্ষণস্থায়ী ঘর।
ঠেশে—চাপাচাপি করে।
নির্জন—যেখানে কোনো মানুষ নেই।
ছ্যাকা—আগুনের স্পর্শ।
রাত্তিরে—রাত্রে।
মাঠ—প্রান্তর, বিশাল মুক্ত স্থান।
হাওয়া—বাতাস।
রাস্তার—পথের।
শালপাতা—শালগাছের পাতা।
আঁধার—অন্ধকার।
বাতি— প্রদীপ।।
বিপরীত শব্দ ঃ
ফেলে—তুলে।
দেয়—নেয়।
ঢাকে—আলগা করে।
আঁধারে—আলোতে।
দে—নে।
নেবে—দেবে।
ছেড়ে—ধরে।
নির্জন—জনবহুল।
এসে—গিয়ে।
একা—অনেক।
রাস্তার—বেরাস্তার।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
দু-এক কথায় উত্তর দাও :
প্রশ্ন- ময়দানব কবিতাটা কার লেখা ?
উত্তর - সুভাষ মুখোপাধ্যায়।
প্রশ্ন:;- রাস্তার বাতিগুলো কী করে?
উত্তর ঃ রাস্তার বাতিগুলো আঁধারে গা ঢাকে আর ঠেলা দিয়ে আঁদাড়ে পাদাড়ে ফেলে দেয়।
প্রশ্ন:;-ময়দানবেরা কিভাবে ঠেসে ধরবেই?
উত্তর ঃ ময়দানবেরা সব তাঁবু ছেড়ে এসে দে গোল দে গোল বলে ধরবেই ঠেসে।
প্রশ্ন:;- ময়দানব' কবিতাটি কে লিখেছেন?
উত্তর ঃ কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ‘ময়দানব' কবিতাটি লিখেছেন।
প্রশ্ন:;-ময়দানব' নামটি তুমি এই পাঠ্যপুস্তক ছাড়া অন্য কোনো সাহিত্যে জেনেছ কি?
উত্তর ঃ হ্যাঁ, মহাভারতের কাহিনিতে ময়দানব নামে একটি শক্তিশালী রাক্ষসের নাম শুনেছি।
প্রশ্ন:;-কে কখন শালপাতা চাটে?
উত্তর ঃ যখন নির্জন মাঠে কেউ থাকে না তখন হাওয়ার সুর ঘুরে ঘুরে শালপাতা চাটে।
প্রশ্ন:;-ঠ্যাং খুলে নেবে কে?
উত্তর : ময়দানব ছাড়া যেসব অ্যাং, ব্যাং আর চ্যাং আছে তারা হাডুডু বলতে বলতে ঠ্যাং খুলে নেবে।
প্রশ্ন:;-‘ময়দানব' কবিতাটি ছাড়া অন্য কখন কোথায় শুনেছ?
উত্তর : ময়দানে ফুটবল খেলায় যখন দেখি কোনো এক পক্ষের খেলোয়াড় পায়ে বল নিয়ে বিপক্ষের গোলপোস্টের
দিকে দুরন্ত বেগে ছোটে তখন ‘দে গোল’ ‘দে গোল’ বলে আওয়াজ শুনেছি।
রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তর দাও :
প্রশ্ন:;-নির্জন' কথার মানে কী?
উত্তর ঃ ‘নির্জন’ শব্দের মানে জনশূন্য স্থান অর্থাৎ যে জায়গায় কোনো লোকজন নেই।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দাও :
প্রশ্ন:;-রাত্তিরে ময়দানে একা যাওয়া বারণ কেন?
উত্তর ঃ কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ‘ময়দানব' কবিতায় বলেছেন, রাতে একা ময়দানে গেলে জোনাকিরা উড়ে এসে গায়ে ছ্যাঁকা দেবে। তাই রাত্তিরে একা ময়দানে যেতে বারণ আছে।
প্রশ্ন:;-ময়দানব' কবিতাটির মধ্যে তুমি কবিতাটি নামের কোনো সামঞ্জস্য খুঁজে পেয়েছ কি?
উত্তর : সম্পূর্ণ কবিতাটি পড়লে বোঝা যায়, আমরা যে ময়দান দেখতে পাই সেখানে সন্ধ্যার অন্ধকার আর বাতাস এক বিচিত্র রূপ দান করে। হাওয়ায় ময়দানে পড়ে থাকা শালপাতাগুলো উড়ে উড়ে মর্মর শব্দ করে, বাতাসে রাস্তার বাতিগুলো দুলে দুলে আলো-আঁধারি সৃষ্টি করে। রাতের গাঢ় অন্ধকারে অসংখ্য জোনাকি এমনই ঝিকিমিকি আলো ছড়িয়ে উড়তে থাকে যে মনে হয় যেন এই বুঝি ছ্যাঁকা দেবে। তাই ময়দান থেকে ‘ময়দানব’ নামে সুন্দর সামঞ্জস্য পাওয়া যায়।
প্রশ্ন:;-জোনাকি কাকে বলে ?
উত্তর ঃ যে পোকা রাতের অন্ধকারে গাছের ডালে ডালে উড়ে বেড়িয়ে দল বেঁধে নিজেদের শরীরের দেহের পেছন থেকে ঝিকমিক আলো ছড়ায় তাদের বলে জোনাকি।
সে দে গোল’ ‘দে গোল’ বলে আওয়াজ তুমি
বাক্যরচনা ঃ নির্জন—একা নির্জন কোনো স্থানে হাঁটলে অনেকেরই গা ছমছম করে।
শালপাতা—আগেকার দিনে ভোজবাড়িতে আমন্ত্রিতদের শালপাতায় খেতে দেওয়া হত।
তাঁবু-কুয়োর জলে তেল ভাসছে শুনে ভূ-বিজ্ঞানীগণ সেখানে বছরখানেক ধরে তাঁবু ফেলে গবেষণা করছেন।