বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর কবি গান হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর পঞ্চম শ্রেণি / bristi pore tapur tupur poem question answer - school book solver

Pages

Thursday, 6 February 2025

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর কবি গান হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর পঞ্চম শ্রেণি / bristi pore tapur tupur poem question answer

 


পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
■ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

দিনের আলো নিবে এল,
সুয্যি ডোবে ডোবে।
আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে
চাঁদের লোভে লোভে।
মেঘের উপর মেঘ করেছে,
রঙের উপর রং।
মন্দিরেতে কাঁসর ঘণ্টা
বাজল ঠং ঠং।
ও পারেতে বিষ্টি এল,
ঝাপসা গাছপালা ।
এ পারেতে মেঘের মাথায়
একশো মানিক জ্বালা !
বাদলা হাওয়ায় মনে পড়ে
ছেলেবেলার গান—
“বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
নদেয় এল বান!”
আকাশ জুড়ে মেঘের খেলা
কোথায় বা সীমানা ।
দেশে দেশে খেলে বেড়ায়,
. কেউ করে না মানা ।
কত নতুন ফুলের বনে
বিষ্টি দিয়ে যায়।
পলে পলে নতুন খেলা
কোথায় ভেবে পায় ৷
মেঘের খেলা দেখে কত
খেলা পড়ে মনে—
কত দিনের লুকোচুরি
কত ঘরের কোণে।
তারি সঙ্গে মনে পড়ে
ছেলেবেলার গান-
“বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
নদেয় এল বান ! ”
মনে পড়ে, ঘরটি আলো
মায়ের হাসিমুখ,
মনে পড়ে, মেঘের ডাকে
গুরু গুরু বুক।
বিছানাটির একটি পাশে
ঘুমিয়ে আছে খোকা,
মায়ের ’পরে দৌরাত্মি সে
না যায় লেখাজোকা ।
ঘরেতে দুরন্ত ছেলে
করে দাপাদাপি।
বাইরেতে মেঘ ডেকে ওঠে,
সৃষ্টি ওঠে কাঁপি ৷
মনে পড়ে মায়ের মুখে
শুনেছিলেম গান—
“বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
নদেয় এল বান।”
মনে পড়ে সুয়োরানি
দুয়োরানির কথা,
মনে পড়ে অভিমানী
কঙ্কাবতীর ব্যথা।
মনে পড়ে ঘরের কোণে
মিটি মিটি আলো,
চারি দিকে দেয়ালেতে
ছায়া কালো কালো।
বাইরে কেবল জলের শব্দ
ঝুপ্ ঝুপ্ ঝুপ্–
দস্যি ছেলে গল্প শোনে
একেবারে চুপ।
তারি সঙ্গে মনে পড়ে
মেঘলা দিনের গান-
“বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
নদেয় এল বান!”
কবে বিষ্টি পড়েছিল,
বান এল সে কোথা ৷
শিবঠাকুরের বিয়ে হল
কবেকার সে কথা ৷
সেদিনও কি এমনিতরো
মেঘের ঘটাখানা।
থেকে থেকে বিজুলি কি
দিতেছিল হানা ।
তিন কন্যে বিয়ে ক’রে
কী হল তার শেষে।
না জানি কোন নদীর ধারে,
না জানি কোন দেশে,
কোন ছেলেরে ঘুম পাড়াতে
কে গাহিল গান—
“বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর,
নদেয় এল বান!”

উৎস- “বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি কবির “শিশু” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হযেছে।

নামকরণের সার্থকতা :
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শৈশবকালের বৃষ্টিমুখর দিনগুলিতে ঘরে বসে কী করতেন, তারই স্মৃতিচারণা করেছেন। ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতার মধ্য দিয়ে তাঁর বাদলদিনে সারা আকাশ জুড়ে কালো মেঘের ঘনঘটা, মাঝে মাঝে
গুরুগুরু মেঘের ডাক, দূরের ঝাপসা গাছপালা, ঝুপঝুপ জলের শব্দ, সান্ধ্য প্রাকৃতিক দৃশ্য কবি সুন্দরভাবে আলোচ্য।কবিতাটির মধ্য দিয়ে বর্ণনা করেছেন। এদিক থেকে কবিতাটির নামকরণ যথার্থ বলা যেতে পারে।

সারাংশ :--বাদল দিনে সারা আকাশ জুড়ে কালো মেঘ জমাট বেঁধে প্রকৃতিতে তার অন্ধকার
রূপ ছড়িয়ে দেয়। অনেকসময় সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বেই সারা আকাশ কালো মেঘে অন্ধকার হয়ে আসে। আকাশের দিকে তাকিয়ে কালো মেঘেদের ভেসে যেতে দেখে কবির ছেলেবেলার দিনগুলির কথা মনে পড়ে। আকাশে কালো
মেঘেদের খেলা দেখতে দেখতে ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলা, মায়ের হাসিমুখ, মেঘের গুরুগুরু শব্দ কবির মনে পড়ে।
তাঁর আরও মনে পড়ে বাদল দিনে মায়ের কাছে চুপ করে বসে নানান গল্প শোনার কথা।
মেঘের ডাকে ঘরে দুরন্ত ছেলের দাপাদাপির কথা মনে পড়ে। সেই সঙ্গে কবির মনে পড়ে বাদলদিনে ঘরের কোণে মিটিমিটি আলোয় দস্যি ছেলে চুপচাপ মায়ের কাছে গল্প শোনে। এমন বৃষ্টিভরা দিনে কবির বারে বারে মনে পড়ে মায়ের গলায় ঘুমপাড়ানি গানের কথা—'বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান।’


★হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর
১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ কোন্ কোন্ বাংলা মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয় ?
উত্তর : আষাঢ় এবং শ্রাবণ মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয়।

১.২ মেঘলা দিনে আকাশ ও তোমার চারপাশের প্রকৃতি কেমন রূপ ধারণ করে?
উত্তর ঃ মেঘলা দিনে আকাশ মেঘে ঢাকা থাকে। সর্বদা মেঘের আনাগোনা চলে। মাঝে মাঝে হালকা হালকা বৃষ্টি কখনো ঝড় বৃষ্টি নামে। মাটি ভিজে যায় জলে। চারদিকে ভিজে গুমোট আবহাওয়া দেখা যায়। নবী নালা জলে ভরে যায় মাঝে মাঝে বজ্রপাত হয়। বিদ্যুৎ চমকায়

১.৩ বৃষ্টির সঙ্গে জড়িয়ে আছে—তোমার জীবনে মনে রাখার মতো এমন কোনো ঘটনার কথা লেখো
উত্তর ঃ বৃষ্টির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমার জীবনে এরকম একটা ঘটনা দিন হলো রথযাত্রার দিন আষাঢ় মাসের রথযাত্রা দিনে সকাল থেকেই জোর বৃষ্টি নেমেছে। বিকালের দিকটা একটু আবহাওয়া উন্নতি হতেই ছেলেরা রথ নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ল খুব মজা করে রথ দেখছি এমন সময় পশ্চিম আকাশে কালো মেঘে আকাশ ভরিয়ে দিল ছেলেরা রথ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিল কেউ মন্দিরের তলায় কেউ অন্যের বাড়িতে তারপর রাত হয়ে গেল অনেক। ছেলেদেরকে সঙ্গে নিয়ে আমি তাদের মাথায় ছাতা ধরে সকলের বাড়ি আস্তে আস্তে পৌঁছে দিলাম। তারা সবাই আমাকে সুনাম করলো। মনে রাখার মতো একটি ঘটনা।

১.৪ পুকুরে, টিনের চালে, গাছের পাতায়—বৃষ্টি পড়ার শব্দগুলো কেমন হয় লেখো।
উত্তর : পুকুরে—টুপটুপ,
টিনের চালে—টপটপ,
গাছের পাতায়—টিপটিপ।

২. ক' স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মেলাও :

ক'স্তম্ভ         ক'স্তম্ভ
ঝাপসা।     >    বন্যা
ছেলেবেলা।  >    অস্পষ্ট
বিছানা।       > শৈশব
দুরন্ত।   >   শয্যা
বান    >     দামাল

উত্তর :
ক'স্তম্ভ         ক'স্তম্ভ।    
ঝাপসা        >   অস্পষ্ট
ছেলেবেলা    >   শৈশব
বিছানা          >     শয্যা
দুরন্ত             >    দামাল
বান                >     বন্যা

৩. বেমানান শব্দের তলায় দাগ দাও :
৩.১ সূর্য, মেঘ, বৃষ্টি, আকাশ, বাড়ি।
উত্তর : সূর্য, মেঘ, বৃষ্টি, আকাশ, বাড়ি
৩.২ডোবে ডোবে, লোভে লোভে, পলে পলে, দেশে দেশে, টাপুর টুপুর।
উত্তর ঃ  টাপুর টুপুর।

৩.৩ গাছপালা, মেঘ, হাওয়া, বাদল, মানিক।
উত্তর : মানিক

৩.৪ মা, খোকা, দৌরাত্ম্য, হাসিমুখ, শিবঠাকুর।
উত্তর ঃ শিবঠাকুর।

৩.৫ মেঘের খেলা, লুকোচরি, টাপুর টুপুর, নদী, সুয়োরানি।
উত্তর : সুয়োরানি।

৪. বিপরীতার্থক শব্দ কবিতা থেকে বেছে নিয়ে লেখো : রাত, বার্ধক্য, খরা, পুরোনো, শান্ত।
উত্তর ঃ রাত—দিন।
বার্ধক্য—ছেলেবেলা।
খরা—বান।
পুরোনো—নতুন।
শান্ত—দুরন্ত।

৫. বিশেষ্য ও বিশেষণ খুঁজে নিয়ে লেখো :
একশো মানিক, দুরন্ত ছেলে, বাদলা হাওয়া, গুরুগুরু বুক, ঝাপসা গাছপালা

উত্তর :

বিশেষ্য :--মানিক, হাওয়া, গাছপালা, ছেলে বুক।

বিশেষণ- একশো, বাদলা, ঝাপসা, দুরন্ত, গুরুগুরু।

৬.ক্রিয়ার তলায় দাগ দাও :
৬.১ কাঁসর ঘণ্টা বাজল ঠঙ্ ঠঙ্।
উত্তর : কাঁসর ঘণ্টা বাজল ঠঙ্ ঠঙ্।

৬.২ কত খেলা পড়ে মনে।
উত্তর : কত খেলা পড়ে মনে।

৬.৩ শুনেছিলেম গান।
উত্তর : শুনেছিলেম গান।

৬.৪ বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর।
উত্তর : বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর।

৬.৫ বাইরেতে মেঘ ডেকে ওঠে।
উত্তর ঃ বাইরেতে মেঘ ডেকে ওঠে।

৭.সৃষ্টি'—এমন ‘ফ্ট' রয়েছে—এরকম পাঁচটি শব্দ লেখো :

উত্তর : বৃষ্টি, দৃষ্টি কুষ্টি ,মিষ্টি, ।



৮. নীচের শব্দগুলোয় দুটো করে শব্দ লুকিয়ে আছে, আলাদা করে লেখো ঃ
গাছপালা, ছেলেবেলা, হাসিমুখ, লেখাজোকা।
উত্তর : গাছপালা -> গাছ-পালা
ছেলেবেলা > ছেলে -বেলা
হাসিমুখ > হাসি -মুখ
লেখাজোকা -> লেখা- জোকা

৯. সাজিয়ে লেখো ঃ লেছেবেলা, রিকোচুলু
উত্তর
লেছেবেলা-- ছেলেবেলা
রিকোচুলু → লুকোচুরি


১০ শূন্যস্থান পূরণ করো :
১০.১  আকাশ ঘিরে .......জুটেছে।
উত্তর ঃ আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে।

১০.২ বাদলা..........মনে পড়ে।
উত্তর : বাদলা হাওয়ায় মনে পড়ে।

১০.৩ মনে পড়ে........আলো।
উত্তর ঃ মনে পড়ে ঘরটি আলো

১০.৪ ঘরেতে...........ছেলে।
উত্তর : ঘরেতে দুরন্ত ছেলে।

১০.৫ বাইরে কেবল .......শব্দ।
উত্তর ঃ বাইরে কেবল জলের শব্দ


১১.১ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর : ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান।

১১. কোন বইয়ের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর : ‘Songs Offering'-বই এর জন্য।

১১.৩ বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি তাঁর কোন্ বই থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : ‘বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি তাঁর “শিশু” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

১২ মাঠে বা নদীতে বৃষ্টি পড়ছে এমন একটি ছবি আঁকো ও রং করো :
উত্তর : ছবি নিজেরা এঁকে শিক্ষকমশাইকে দেখাও।
১৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

১৩.১বৃষ্টির দিনে কবির মনে কোন গান ভেসে আসে ?
উত্তর ঃ বৃষ্টির দিনে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে ছেলেবেলার মায়ের গাওয়া ‘বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান” গানটি ভেসে আসে।

১৩:২ বৃষ্টিতে নদীর এপার এবং ওপারের যে বর্ণনা কবি দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর : আলোচ্য কবিতায় বাদল দিনে কবি নদীর এপার এবং ওপারের সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। নদীর এপারে মেঘলা আকাশ কিন্তু বৃষ্টি এখনও শুরু হয়নি। আর নদীর ওপারে বৃষ্টি পড়ছে তাতে দূরের গাছপালা ঝাপসা দেখা যাচ্ছে।




১৩.৩ ‘সেদিনও কি এমনি তরো/মেঘের ঘটাখানা'— কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে? সেদিনের প্রকৃতির বর্ণনা দাও।
উত্তর :সেদিনের বলতে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলেবেলার দিনগুলির কথা বলা হয়েছে।
কবি বলছেন, বাদলদিনে  আকাশে কালো মেঘের খেলা। শস্যশ্যামলা পৃথিবীর চারদিক সবুজের সমারোহ।  কালো মেঘেদের লুকোচুরির খেলা । দুরন্ত ছেলে মেঘের শব্দ শুনে ভয় পেয়ে ঘরের কোণে চুপ করে বসে মায়ের কাছে রূপকথার নানান গল্প শোনে।

১৩.৪ মেঘের খেলা কবির মনে কোন্ কোন্ স্মৃতি বয়ে আনে?
উত্তর ঃ বাদলদিনে সারা আকাশ জুড়ে ঘন মেঘের খেলা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে ছেলেবেলার অনেক স্মৃতি বয়ে নিয়ে আসে। সীমাহীন আকাশে মেঘের ওপর মেঘ জমে অবিরাম কালো মেঘের খেলা কবিকে ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। মনে পড়ে মায়ের কাছে শোনা ‘বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান' গানটি।

সে  মায়ের কাছে বসে সুয়োরানি, দুয়োরানি, কঙ্কাবতীর ব্যথা ইত্যাদি রূপকথার গল্প শোনে। এসব স্মৃতি কবির মনকে উদাস করে। কবির বারে বারে এমন বৃষ্টিঝরা বাদল দিনে মায়ের সেই ঘুমপাড়ানি গানের কথা মনে পড়ে।

হাতে কলমের বাইরে প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন-  কেবলমাত্র ঘণ্টার শব্দ আমরা কখন শুনতে পাই?
উত্তর : স্কুলের ছুটির সময় এবং মন্দিরে মনে পড়ে।

প্রশ্ন-  ছেলেবেলার গানের কথা কখন শিশুকবির মনে পড়ে?
উত্তর ঃ বাদল দিনে।

প্রশ্ন- বান কোথায় আসে ?
উত্তর : নদীতে।
প্রশ্ন -বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

প্রশ্ন-  দুরন্ত ছেলে কখন দাপাদাপি করে না?
উত্তর ঃ বাদল দিনে।

প্রশ্ন- রূপকথার গল্পে কার অভিমানের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : কঙ্কাবতীর।

প্রশ্ন- বাদলা দিনে দস্যি ছেলে চুপ করে কী করে ?
উত্তর : গল্প শোনে।
প্রশ্ন-  দিনের আলো কখন নিভে যায় ?
উত্তর : সূর্যদেব অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দিনের আলো নিভে যায়।

প্রশ্ন- সন্ধ্যাবেলা আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে কেন ?
উত্তর : সন্ধ্যাবেলা চাঁদের আলোকে ঢেকে দেওয়ার জন্য আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে।

প্রশ্ন- মন্দিরে কখন কাঁসর-ঘণ্টা বেজে ওঠে?

উত্তর ঃ মন্দিরে পূজার সময় বা আরতির সময় কাঁসর-ঘণ্টা বেজে ওঠে।

প্রশ্ন- ঝাপসা গাছপালা কখন দেখা যাচ্ছে?
উত্তর ঃ নদীর অপর পারে বৃষ্টিধারায় গাছপালা ঝাপসা দেখাচ্ছে।

প্রশ্ন- নতুন ফুলের বনে কী দিয়ে যায় ?
উত্তর : মেঘ নতুন ফুলের বনে বৃষ্টি দিয়ে যায়।

প্রশ্ন- বাদল দিনে ঘরের দেয়ালে ছায়ার রূপ কেমন? 

উত্তর ঃ বাদল দিনে ঘরের দেয়ালের ছায়ার রূপ কালো কালো।

প্রশ্ন- মায়ের মুখের কোন্ গান শিশু-কবির মনে পড়ে?
উত্তর : শিশু-কবির মনে পড়ে মায়ের মুখের গান, “বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান।”

প্রশ্ন-  লুকোচুরি খেলার কথা কবির কখন মনে পড়ে?
উত্তর : মেঘের ওপর মেঘের খেলা দেখে কবির ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলার কথা মনে পড়ে।

প্রশ্ন- আকাশে মেঘেদের খেলা দেখে কবির কী মনে হয়?
উত্তর : বাদল দিনে কালো কালো মেঘের ভেলাগুলিকে সীমাহীন আকাশে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখে কবির মনে হয় মেঘেদের এ এক অদ্ভুত খেলা। মেঘেদের এই খেলা দেখে কবির ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলার কথা খুব মনে পড়ে। কালো কালো মেঘগুলিও যেন মনের আনন্দে খুব ঘুরেফিরে কারও সঙ্গে লুকোচুরি খেলায় মত্ত হয়ে উঠেছে।

প্রশ্ন- দস্যি ছেলে গল্প শোনে একেবারে চুপ'—দস্যি ছেলে কার কাছে গল্প শুনে একবারে চুপ?
উত্তর : ছোট্টবেলায় প্রায় প্রতিটি শিশু দুষ্টুমি করা ছাড়া থাকতে পারে না। অর্থাৎ, শিশু মাত্রই কমবেশি ছটপটে হয়। চোখের
সামনে সে যা দেখে তাতেই তার অধিকার আছে মনে করে। তাই হাতের কাছে সে যা পায় তাই ধরে নাড়াচাড়া করে দেখতে চায়। কারও বারণ শোনে না। কিন্তু বর্ষার দিনে যখন অন্ধকার রাত্রে ঘরের কোণে মিটিমিটি আলো জ্বলে তখন যে কালো কালো ছায়া সৃষ্টি হয় তখন দস্যি ছেলে মায়ের মুখে বিপজ্জনক গল্প শুনে ভয়ে একেবারে নীরব হয়ে যায়।

প্রশ্ন-  কাকে কেউ কী কারণে মানা করে না?
উত্তর : আকাশ জুড়ে যেসব মেঘ সীমানার বাইরে খেলা করে, দেশে দেশে উড়ে বেড়ায় তাদেরকে কেউ মানা করে না।

প্রশ্ন- সুয়োরানি, দুয়োরানি ছাড়া আর কার কথা শিশু-কবির মনে পড়ে?
উত্তর : শিশু-কবির মনে পড়ে সুয়োরানি দুয়োরানির কথা, আর মনে পড়ে অভিমানী কঙ্কাবতীর কথা।


প্রশ্ন-  টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়লে কী কী মনে পড়ে?
উত্তর : সীমাহীন আকাশে মেঘের ওপর মেঘ জমে অবিরাম কালো মেঘের খেলা আমাদের ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলার
স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। কখনো জোরে কখনো ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ে। মেঘের ডাকে যেন পৃথিবী কেঁপে ওঠে। বিশাল আকাশ জুড়ে মেঘের দল যেন লুকোচুরি করে বেড়ায়। আর মনে পড়ে, বাদল দিনে মায়ের কাছে চুপ করে বসে গল্প শোনা।

প্রশ্ন- সেদিনও কি এমনিতরো/মেঘের ঘটাখানা”—কোন্ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে? ‘সেদিন’ বলতে কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : এটি ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
সেদিন বলতে “শিবঠাকুরের বিয়ের দিনের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন-  আকাশ জুড়ে মেঘের খেলা কোথায় বা সীমানা'—আলোচ্য পঙ্ক্তিটি কোন্ কবিতার অংশ এবং কবির নাম লেখো।
“আকাশ জুড়ে মেঘের খেলা' বলতে কবি কী বলতে চেয়েছেন?
উত্তর : আলোচ্য পক্তিটি ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতার অংশ। কবির নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বর্ষাকালে কালো মেঘে আকাশ ঢেকে থাকে। সীমাহীন আকাশে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো মেঘের দল হাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উড়ে বেড়ায়। আকাশের কোনো কোনো অংশে মেঘের ওপর মেঘ জড়ো হলে আঁধার নেমে আসে।
সূর্যদেব মেঘের আড়ালে চলে যায়। চারদিকে সন্ধ্যার পূর্বেই অন্ধকার নেমে আসে। হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কালো মেঘের উড়ে যাওয়াকেই কবি মেঘের খেলা বলেছেন।

প্রশ্ন-  দস্যি ছেলে গল্প শোনে একেবারে চুপ’–দস্যি ছেলে বলতে কী বোঝো? দস্যি ছেলে কখন চুপ করে গল্প শোনে এবং কেন ?
উত্তর : দস্যি ছেলে বলতে আমরা সাধারণত চঞ্চল, অশান্ত, দুরন্ত ছেলেদেরই বুঝে থাকি। এরা এক মুহূর্ত স্থির নয়। মুহূর্তের মধ্যে কোথায় কী যে করে দেবে তার কোনো ঠিক নেই। অভিভাবকদের সারাদিন এরূপ প্রকৃতির ছেলেদের প্রতি মুহূর্ত নজরে রাখতে হয়। দস্যি বা দুরন্ত ছেলেরা রাতের অন্ধকারে ঝমঝম বৃষ্টির সঙ্গে মেঘের গুরুগুরু ডাকে খুব ভয় পায়। ভয় পেয়ে ছেলেরা
ঘরের কোণে বসে বসে মায়ের কাছে সুয়োরানি-দুয়োরানি, কঙ্কাবতী রাজকন্যার ব্যথা, শিবঠাকুরের বিয়ে, তিন কন্যা
দান ইত্যাদি রূপকথার সুন্দর সুন্দর গল্প শোনে আর চুপ করে থাকে।

প্রশ্ন- কী কারণে সৃষ্টি কেঁপে ওঠে?
উত্তর : ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘বাইরেতে মেঘ ডেকে ওঠে, সৃষ্টি ওঠে কাঁপি। বর্ষার দিনে মেঘের গর্জন আমরা সকলেই শুনতে পাই। গ্রীষ্মকালে সূর্যের প্রচণ্ড উত্তাপে খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, সবকিছুই শুকিয়ে যায়। যে জল শুকিয়ে যায় তা বাষ্পীভূত হয়ে আবার মিশে যায় বাতাসে। ধীরে ধীরে তারা বাতাসে উড়ে বেড়ানো ধূলিকণাকে আশ্রয় করে খণ্ড খণ্ড মেঘের আকার নিয়ে ঘুরতে ফিরতে পরস্পরের সঙ্গে প্রবলভাবে ধাক্কা খায়। আর
সেই মুহূর্তে যে শব্দ হয় তা এক একসময় আমাদের শোনার মতো ক্ষমতা থাকে না। তখন আমরা কানে আঙুল দিয়ে থাকি। আমাদের সেই গর্জন শুনে মনে হয় সমগ্র পৃথিবী অর্থাৎ, সৃষ্টি যেন কেঁপে উঠছে।