মায়াতরু' কবিতার হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর/ Mayataru poem question answer - school book solver

Pages

Saturday, 1 February 2025

মায়াতরু' কবিতার হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর/ Mayataru poem question answer



পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা

মায়াতরুঅশোকবিজয় রাহা

এক যে ছিল গাছ,
সন্ধে হলেই দু হাত তুলে জুড়ত ভূতের নাচ ।
আবার হঠাৎ কখন
বনের মাথায় ঝিলিক মেরে চাঁদ উঠত যখন
ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত সে গর্গর্
বিষ্টি হলেই আসত আবার কম্প দিয়ে জ্বর।
এক পশলার শেষে
আবার যখন চাঁদ উঠত হেসে
কোথায় বা সেই ভালুক গেল, কোথায় বা সেই গাছ,
মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে লক্ষ হীরার মাছ।
ভোরবেলাকার আবছায়াতে কাণ্ড হতো কী যে
ভেবে পাই নে নিজে,
সকাল হলো যেই,
একটিও মাছ নেই,
কেবল দেখি পড়ে আছে ঝিকিমিকির আলোর
রূপালি এক ঝালর।


মায়াতরু কবিতার নামকরণ সার্থকতা :-
আলোচ্য কবিতায় কবি একটি আজব গাছের বর্ণনা করেছেন। কবি তাঁর কল্পনার রং দিয়ে গাছটির বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপের ছবি এঁকেছেন। কবি কল্পনার জাদুবলে তৈরি একটি গাছের রূপ এক্ষেত্রে তুলে ধরেছেন। সেইদিক থেকে কবিতাটির নামকরণ সুনির্বাচিত এবং তাৎপর্যপূর্ণ।

কবি অশোকবিজয় রাহা পরিচিতিঃ- বাংলাদেশের অন্তর্গত শ্রীহট্টে  কবি  অশোকবিজয় রাহা জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯১০ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি ছেলেবেলা থেকেই সাহিত্য অনুরাগী ছিলেন। তিনি বহু প্রবন্ধ এবং কবিতা রচনা করেছেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ হল, ‘ভানুমতীর মাঠ’, ‘রুদ্রবসন্ত’, ‘ডিহংনদীর বাঁকে’, ‘জলডম্বুর পাহাড়’, ‘রক্তসন্ধ্যা’  ইত্যাদি। ১৯৯০ সালে এই খ্যাতনামা কবি পরলোক গমন করেন।

সারাংশ:-  কবি তাঁর কল্পনা দিয়ে একটি আজব গাছের পরিচয় দিয়েছেন। অন্ধকার নামলে  মনে হয় গাছটি যেন দু-হাত তুলে ভূতের মতো নাচ শুরু করেছে। আবার সন্ধ্যার পর যখন  রাতের আকাশে চাঁদের আলো পড়ে তখন গাছটা  ভালুকের মতো হয়। ভালুক যেন ঘাড় ফুলিয়ে রেগে গরগর করছে। পরক্ষণেই যখন গাছের মাথায় বৃষ্টি পড়ত তখন গাছের পাতা এমনভাবে কাঁপত যেন মনে হত গাছের কম্প দিয়ে জ্বর এসেছে। কিছুক্ষণ বৃষ্টি হওয়ার পর চাঁদ আবার আকাশে যখন দেখা দিত তখন সেই ভালুক বা সেই গাছকে আর দেখা যেত না। তখন লক্ষ হিরার মাছ হয়ে ঝাঁক বাঁধে। কবি ভোর বেলা যে সমস্ত কাণ্ড হত তা ভেবে পেতেন না। সকালবেলা উঠে দেখতেন একটাও মাছ নেই। কেবল তিনি লক্ষ করতেন সূর্য ঝিকমিক করে আলো দিচ্ছে। মনে হচ্ছে এই আলো যেন রুপালি এক ঝালর।




হাতেকলমে অনুশীলন  প্রশ্নের উত্তর

১.নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ তোমার চেনা এমন দুটি গাছের নাম লেখো অন্ধকারে যাদের দেখলে মনে হয় যেন মানুষের মতো হাত নেড়ে ডাকছে।
উত্তর : আমার চেনা দুটি গাছের নাম হল আম, জাম, কাঁঠাল গাছ। অন্ধকারে যাদের দেখলে মনে হয় যেন মানুষের মতো হাত নেড়ে ডাকছে।

১.২ দুই বন্ধু আর ভাল্লুককে নিয়ে যে গল্পটি আছে তা তোমরা শুনেছ। যদি না শুনে থাক, তাহলে শিক্ষকের থেকে জেনে নিয়ে গল্পটি নিজের খাতায় লেখো।
উত্তর ঃ  একদিন দুই বন্ধু জঙ্গলে বেড়াতে বেরোল। দুজনে জঙ্গলের মধ্যে অনেকটা দূর চলে গেল।
এই সময় একটা ভালুক বেরোল। আস্তে আস্তে ভালুক ওদের কাছে এগিয়ে আসতে লাগল। তাদের পালিয়ে যাওয়ার কোন পথ ছিল না। প্রাণ বাঁচাবার জন্য ওদের মধ্যে একজন  দৌড়ে একটা গাছের ওপর উঠে পড়ল। সে
অন্য বন্ধুর কথা চিন্তা করল না। আর অন্য বন্ধুটি ও গাছে উঠতে পারত না। দ্বিতীয়জন মাটিতে মরার মতো পড়ে রইল। ভাল্লুকটা কাছে এসে তাকে দেখে ভাবল সত্যি মরে গেছে। ভাল্লুক  মরা মানুষ খায় না । ভালুক ওর নাক-কান শুঁকে চলে গেল। দ্বিতীয় জন বেঁচে গেল। ভালুকটা চলে যাবার পরে প্রথম বন্ধু গাছ থেকে নেমে সে দ্বিতীয় জনকে জিজ্ঞাসা করল—ভাই, ভালুকটা তোর কানে কী বলল ?
দ্বিতীয়জন বলল, ভালুক বলল - যে বন্ধু বিপদের সময় পালিয়ে যায় তাকে বিশ্বাস করো না।

১.৩ নানারকম রঙিন মাছ তুমি কোথায় দেখেছ?
উত্তর ঃ নানারকম রঙিন মাছ আমি চিড়িয়াখানায়  দেখেছি।

১.৪  ভোরের আলো তোমার কেমন লাগে? তখন তোমার কোথায় যেতে ইচ্ছে করে?
উত্তর : ভোরের আলো আমার খুব ভালো লাগে। ভোরের আলো দেখলে আমার মন আনন্দে ভরে যায়।
তখন আমার নদীর ধারে আর না হলে ফাঁকা মাঠে যেতে ইচ্ছা করে।

১.৫ আলোয় এবং অন্ধকারে একই গাছের দুরকম চেহারা তোমার চোখে কীভাবে ধরা পড়ে?
উত্তর : গাছে আলো পড়লে সেই গাছকে দেখতে সুন্দর সবুজ লাগে তার হাতের অন্ধকারে দেখলে সেই গাছকে ভয় লাগে মনে হয় গাছের উপরে যেন কিছু বসে আছে আর না হলে মনে হয় গাছটাই কোন মায়াতরু।

২.ক স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :

ক" স্তম্ভ।               খ" স্তম্ভ
গাছ      >       অশরীরী
বন       >        বৃক্ষ
ভূত।        >     কাঁপুনি
ঝালর     >      অরণ্য
কম্প       >       পর্দা

উত্তর :
ক" স্তম্ভ।               খ" স্তম্ভ
গাছ      >        বৃক্ষ
বন       >        অরণ্য
ভূত।        >     অশরীরী
ঝালর     >      পর্দা
কম্প       >      কাঁপুনি

৩. কবিতা অবলম্বনে শূন্যস্থান পূরণ করো :

৩.১............এক যে ছিল
উত্তর : এক যে ছিল গাছ।

৩.২  বিষ্টি হলেই আসত .........কম্প দিয়ে.........।
উত্তর : বিষ্টি হলেই আসত আবার কম্প দিয়ে জ্বর।

৩.৩ ..........হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে লক্ষ.....মাছ।
.উত্তর : মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে লক্ষ হিরার মাছ।

৩.৩  .......পশলার .........।
উত্তর : এক পশলার শেষে।

৩.৫ বনের মাথায় ঝিলিক মেরে.....উঠত যখন ভালুক হয়ে ঘাড়.......করত সে
উত্তর : বনের মাথায় ঝিলিক মেরে চাঁদ উঠত যখন ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত সে গরগর।

৪. কবিতাটি অবলম্বনে একটি গল্প তৈরি করো ঃ
একটি গাছ ছিল সন্ধে হলেই..... .। আবার কখনও হঠাৎ বনের.... ..। যখন বৃষ্টি শেষ হয়ে যেত......... আর যখন সকাল হতI
উত্তর ঃ একটি গাছ ছিল সন্ধে হলেই ভূতের নৃত্য শুরু করত। আবার কখনও হঠাৎ বনের মাথায় চাঁদের আলো পড়ে গাছগুলি ঝলমল করত। যখন বৃষ্টি শেষ হয়ে যেত গাছের পাতায় বৃষ্টির জলবিন্দুগুলি হিরার টুকরো মনে হত।
ভোরবেলায় কত কী যে ঘটত সবই আবছা আলোয় এলোমেলো হয়ে যেত আর যখন সকাল হতো তখন সূর্যের আলো পড়ে রুপালি ঝালরের মতো গাছটা ঝিকমিক করত

৫ শব্দগুলির অর্থ লিখে তা দিয়ে বাক্যরচনা করো :
ঝাঁক, ঝিলিক, ঘাড়, মুকুট, ঝিকিমিকির।
উত্তর ঃ ঝাঁক—(দল) এক দল মানুষ আর আগুন নেভাতে ছুটে গেল।

ঝিলিক—(হঠাৎ চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়া)— কালবৈশাখী মেঘে ঝিলিক মেরে বিদ্যুৎ চমকায়।

ঘাড়–(কাঁধ)— লোকটি ঘাড়ে করে অনেক বহন করতে পারে।

মুকুট—(মাথায় পরা অলংকারযুক্ত টুপি)— রাজার মুকুট খুব দামি হয়।

ঝিকিমিকির—(ঝিকিমিকি)— অন্ধকার রাতে আকাশের তারা ঝিকির মিকির করে।

৬. কোনটি কী জাতীয় শব্দ শব্দঝুড়ি থেকে বেছে নিয়ে আলাদা করে লেখো :
শব্দঝুড়ি ঃ গাছ, যে, বা, রুপালি, জুড়ত, তুলে, হয়ে, ঝিকিমিকির, লক্ষ, সে, কম্প, জ্বর

উত্তর :
বিশেষ্য-গাছ লক্ষ,জ্বর।

বিশেষণ-রুপালি,ঝিকিমিকির,কম্প।

সর্বনাম-সে।

অব্যয়-যে,বা।

ক্ৰিয়া-জুড়ত,তুলে,হয়ে

৭. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :
সন্ধে, হঠাৎ, শেষে, হেসে, আলো

উত্তর : সন্ধে—সকাল।
হঠাৎ—সর্বদা।
শেষে শুরুতে।
হেসে—কেঁদে।
আলো-ছায়া।

৮. সমার্থক শব্দ লেখো :
গাছ, ভূত, বন, বিষ্টি, মাছ, চাঁদ।

উত্তর : গাছ—বৃক্ষ।
ভূত—অপদেবতা।
বন—অরণ্য।
বিষ্টি—বাদল।
মাছ—মৎস্য।
চাঁদ—শশধর।

৯. প্রতিটি বাক্য ভেঙে আলাদা বাক্যে লেখো :
৯-১ এক যে ছিল গাছ, সন্ধে হলেই দুহাত তুলে জুড়ত ভূতের নাচ।
উত্তর ঃ একটি গাছ ছিল। গাছটি সন্ধে হলেই  দুহাত তুলে ভূতের নাচ জুড়ত।

৯.২ বিষ্টি হলেই আসত আবার কম্প দিয়ে জ্বর।
উত্তর :যখন বিষ্টি হত। তখন কম্প দিয়ে জ্বর আসত।

৯.৩ সকাল হল যেই, একটিও মাছ নেই।
উত্তর : সকাল হল। একটিও মাছ নেই।

৯.৪ মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে লক্ষ হিরার মাছ।
উত্তর : মুকুট হয়ে মাছগুলি ঝাঁক বেঁধেছে। লক্ষ হিরার মতো তারা ঝাঁক বেঁধেছে।

৯.৫ ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত সে গর্গর্।
উত্তর : গাছটি ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে রাখত। ভালুকটি রাগে গর্গর্ করত।

১০. এলোমেলো বর্ণগুলিকে সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো ঃ
র্ গ র গ—গর্গর্
ট কু মু—মুকুট
ব আ য়া ছা—আবছায়া
র কি মি ঝি র কি—ঝিকিমিকির
র বে ভো লা–ভোরবেলা।

১১.১ কবি অশোকবিজয় রাহার দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : কবি অশোকবিজয় রাহার দুটি বইয়ের নাম ‘রুদ্রবসন্ত ও ভানুমতীর মাঠ’ ’।

১১.২ তাঁর কবিতা রচনার প্রধান বিষয়টি কী ছিল?
উত্তর : তাঁর কবিতা রচনার প্রধান বিষয়টি ছিল অরণ্যপ্রকৃতি।

১১.৩ ‘মায়াতরু’ কবিতাটি তাঁর কোন্ কাবগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : “মায়াতরু” কবিতাটি তাঁর ‘ভানুমতীর মাঠ' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

১২. দিনের কোন্ সময়ে কোন্ ঘটনাটি ঘটেছে পাশে পাশে লেখো। খাতায় ছবি আঁকো ঃ
১২.১ দুহাত তুলে জুড়ত ভূতের নাচ
উত্তর : দুহাত তুলে জুড়ত ভূতের নাচ সন্ধ্যাবেলা।
১২.২ ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত যে গর্গর্I
উত্তর : ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত যে গরগর রাত্রিবেলা।
১২.৩ কেবল দেখি পড়ে আছে ঝিকিমিকির আলোর রুপালি এক ঝালর
উত্তর : কেবল দেখি পড়ে আছে ঝিকিমিকির আলোর রূপালি এক ঝালর সকালবেলা।

১৩- নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো ঃ
★১৩.১ মায়াতরু' শব্দটির অর্থ কী? কবিতায় গাছকে ‘মায়াতরু' বলা হয়েছে কেন?
উত্তর : ‘মায়াতরু” শব্দটির অর্থ মায়াবী গাছ।
কবির কল্পনায় মায়াবী গাছটি নিজের ইচ্ছেমতো দিনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ ধারণ করে থাকে। কবির কাছে মনে হতো গাছটি বিভিন্ন সময়ে মায়া রূপ ধারণ করছে। সেই কারণে গাছটিকে ‘মায়াতরু’ বলা হয়েছে।

১৩.২ শব্দের শুরুতে 'মায়া' যোগ করে পাঁচটি নতুন শব্দ তৈরি করো। একটি করে দেওয়া হল: মায়াজাল
উত্তর : মায়ারূপ, মায়াধারি ,মায়াবন, মায়াময়, মায়াকান্না, ।
১৩.৩ ভূতের আর গাছের প্রসঙ্গ রয়েছে এমন কোনো গল্প তুমি পড়েছ? পাঁচটি বাক্যে সেই গল্পটি লেখো।
উত্তরঃ ভূতের আর গাছের প্রসঙ্গ রয়েছে এমন গল্প হল শশিভূষণ দাশগুপ্তের লেখা ‘বিবেকানন্দের ছেলেবেলা'। গল্পটি এরকমঃ
রামরতনবাবুর বাড়ির এককোণে আছে একটি চাঁপা গাছ ছিল। পাড়ার ছেলেরা সকাল সন্ধ্যা এই গাছের ডালে দোল খেতে খেতে হইচই করত, রতন বাবুর খুব অসুবিধা হতে লাগলো। কিভাবে ছেলেদের পেয়ে দূরে সরিয়ে রাখা যায় তার জন্য তিনি একটি মতলব করলেন। একদিন সন্ধ্যাবেলায় ছেলেদেরকে গাছ তলায় বসিয়ে তিনি ভুতের গল্প বললেন। তিনি বললেন এই চাঁপা গাছে একটা বড় ভূত আছে । অনেক জনের ক্ষতি করেছে। তোমাদেরও কোন দিন ক্ষতি করে দেবে। দু একদিন ছেলেরা সেখানে খেলতে গেল না। কিছুদিন পর দেখা গেল  নরেন সেখানে একাই একাই খেলছে। গাছে দোল খাচ্ছে। অন্য ছেলেরা নরেন কে জিজ্ঞাসা করলো কিরে তুই একা এখানেএকা? তো ভয় করে না? নরেন বলেছিল- ভূত বলে কিছু নেই।। ওটা মনের ভুল।

১৩.৪ দিনের বিভিন্ন সময়ে কবি গাছকে কোন্ কোন্ রূপে দেখেছেন?
উত্তর : কবির কল্পনায় কবি একটি গাছকে বিভিন্ন সময়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন। সকালের সোনাঝরা রোদ, রাতের অন্ধকার, পূর্ণিমার আলো আর বর্ষার পর বৃষ্টি—এভাবেই একটি গাছকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে কবি দেখেছেন।

১৪. যে গাছটিকে দেখে তোমার মনেও অনেক কল্পনা ভিড় জমায়, তার একটি ছবি আঁকো, সেই গাছটি সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখো :
উত্তর : গাছ থাকলে বৃষ্টির তোড়কেও অনেকখানি কমিয়ে দেয় তার ডালপালা। ভালো করে দেখি, গাছ যেখানে বেশি সেখানে বৃষ্টিও কেমন বেশি হয়, তেমনি জলও জমা থাকে অনেক। চাষের প্রয়োজনে, সেই জলেরই জোগান দেওয়া হয় -
নদীনালায়। গাছ দারুণ গরমের হাত থেকেও বাঁচিয়ে দেয় মানুষকে। সজীব আর শীতল রাখে পরিবেশ।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
দু-এক কথায় উত্তর দাও :

প্রশ্ন- মায়াতরু গাছ কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর- অশোক বিজয় রাহা।

প্রশ্ন-মায়াতরু' কবিতাটি কোন্ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : ‘মায়াতরু’ কবিতাটি ‘ভানুমতীর মাঠ’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন-কবি নিজে কী ভেবে পান না?
উত্তর : সকাল হলে কবি নিজে লক্ষ করতেন একটিও মাছ নেই আর ভাবেন এটা কেমন করে হয়।

প্রশ্ন-সকাল হলে কবি একটিও মাছ না দেখে অন্য কী দেখতে পেতেন ?
উত্তর ঃ মাছের বদলে কবি দেখতে পেতেন মাছের বদলে কেবল পড়ে আছে ঝিকিমিকির আলোর রুপালি এক ঝালর।
প্রশ্ন- একটা গাছ কী করত?
উত্তর : একটা যে গাছ ছিল সে সন্ধে হলেই দু-হাত তুলে ভূতের নাচ জুড়ত।

প্রশ্ন- বনের মাথায় চাঁদ উঠলে গাছটা কী করত?
উত্তর : বনের মাথায় ঝিলিক মেরে চাঁদ উঠলে ভালুক হয়ে গাছটা ঘাড় ফুলিয়ে গর্গর্ করত।

প্রশ্ন-কম্প দিয়ে কার কখন জ্বর আসত?
উত্তর ঃ বিষ্টি এলেই সেই ভূত সাজা আর ভালুক সাজা গাছটার গায়ে কম্প দিয়ে জ্বর আসত।

প্রশ্ন-এক পশলা বৃষ্টির শেষে আবার চাঁদ হেসে উঠলে কী দেখা যেত?
উত্তর ঃ বৃষ্টির শেষে আকাশে আবার চাঁদের হাসি দেখা গেলে সেই ভালুককেও দেখা যেত না, আর সেই গাছকেও দেখা যেত না, সেখানে মুকুট হয়ে লক্ষ হিরার মাছ ঝাঁক বাঁধত।

প্রশ্ন-সন্ধে হলেই দুহাত তুলে জুড়ত ভূতের নাচ’—কোন্ কবিতার অংশ? এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : এটি ‘মায়াতরু’ কবিতার অংশ। এখানে গাছের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন-কবি ‘মায়াতরু’ বলেছেন কেন?
উত্তর ঃ যারা মায়াবী তারা নিজের ইচ্ছামতো বিভিন্ন রূপ গ্রহণ করতে পারে। কবির কল্পনায় এই তরুটি মায়াবীর মতো বিভিন্ন রূপ গ্রহণ করেছে। তাই তিনি মায়াতরু বলেছেন।

প্রশ্ন-এক পশলা বৃষ্টির পর চাঁদ উঠলে গাছটিকে কীরকম মনে হত?
উত্তর ঃ এক পশলা বৃষ্টির পর চাঁদ উঠলে গাছের জলে ভেজা পাতাগুলির ওপরে চাঁদের আলো পড়ে ঝলমল করত।
মনে হতো, হিরের তৈরি অনেক মাছ গাছের মাথায় মুকুটের মতো ঝলমল করছে।
প্রশ্ন-কীভাবে ‘মায়াতরু’র সৃষ্টি হত?
উত্তর : বৃষ্টি, আলো আর হাওয়ার খেলায় গাছ হয়ে ওঠে ‘মায়াতরু’।

প্রশ্ন-কবি অশোকবিজয় রাহার জন্মমৃত্যুর সাল উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ ১৯১০ সালে কবি অশোকবিজয় রাহা জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৯০ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রশ্ন-কবির উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর : ভানুমতীর মাঠ, রুদ্র বসন্ত, ডিহং নদীর বাঁকে, জলডম্বুর পাহাড়, রক্তসন্ধ্যা ইত্যাদি।

প্রশ্ন- ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত সে গরগর'—উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটির আগের কথাগুলি লেখো।
উত্তর ঃ ‘বনের মাথায় ঝিলিক মেরে চাঁদ উঠত যখন'—এই হল উপরোদ্ধৃত লেখাগুলির আগের কথা।

প্রশ্ন- বিষ্টি হলেই আসত আবার কম্প দিয়ে জ্বর।' বাক্যটিতে লেখা যুক্তব্যঞ্জনগুলি উল্লেখ করো

উত্তর : উদ্ধৃতটির মধ্যে ‘বিষ্টি' শব্দে ‘ষ্টি’, ‘কম্প' শব্দে ‘ম্প, ‘জ্বর' শব্দে ‘জ্ব’ এই তিনটি আছে যুক্তব্যঞ্জন।

প্রশ্ন-  সন্ধে তুলে ভূতের জুড়ত হাত দু হলেই। শব্দগুলি ঠিকঠাক সাজিয়ে লেখো।
উত্তর : সন্ধে হলেই দু-হাত তুলে জুড়ত ভূতের নাচ।

প্রশ্ন-ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করতে সে গরগর' বাক্যে সমাপিকা ও অসমাপিকা খুঁজে দেখাও।
উত্তর : ‘হয়ে’, ‘ফুলিয়ে’ এই দুটি আছে উদ্ধৃত বাক্যে অসমাপিকা ক্রিয়া এবং ‘করত’ হল সমাপিকা ক্রিয়া।

প্রশ্ন-ভূত সম্পর্কে ছোটোদের গল্প লিখেছেন এমন একজন বিখ্যাত লেখকের নাম করো।
উত্তর ঃ  উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ভূতের গল্প লিখেছেন।

প্রশ্ন-রূপালি ঝালর বলতে কী বোঝো?
উত্তর ঃ এখানে সূর্যের আলোর সঙ্গে রুপালি ঝালরের তুলনা করা হয়েছে। সূর্যের আলোয় যখন সব কিছু ঝিকমিক করে তখন তাকে রুপালি ঝালরের মতো দেখায়।

প্রশ্ন-“কোথায় বা সেই ভালুক গেল, কোথায় বা সেই গাছ, মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে লক্ষ হিরার মাছ!'
—ওপরের লাইনগুলি কার সম্পর্কে বলা হয়েছে? কেন বলা হয়েছে? ‘লক্ষ হিরার’ মাছ বলতে কী বোঝ?

উত্তর : ওপরের লাইনগুলি কবি অশোকবিজয় রাহার ‘মায়াতরু’ সম্পর্কে বলা হয়েছে।
মায়াতরু বলার কারণ হল এই গাছ মায়াবীর মতো বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছে।
এক পশলা বৃষ্টির পর যখন চাঁদ উঠল তখন সেই ভালুকরূপী সেই গাছের খোঁজ পাওয়া যেত না, সে তখন হিরার মাছ হয়ে যেত। অর্থাৎ, জলে ভেজা পাতার ওপরে চাঁদের আলো পড়ে ঝিকমিক করত। মনে হত হিরের তৈরি লক্ষ লক্ষ মাছ গাছটির মাথায় খেলা করে বেড়াচ্ছে এবং তার জন্য মনে হচ্ছে গাছটি হিরের মুকুট পরেছে।

প্রশ্ন-ভোরবেলাকার আবছায়াতে কাণ্ড হত কী যে, ভেবে পাইনে নিজে’–ভোরবেলার আবছায়ায় কী কাণ্ড হত তা আলোচনা করো।
উত্তর ঃ মায়াতরুটি সন্ধে হলেই ভূতের নৃত্য শুরু করত। আবার হঠাৎ ঝিলিক মেরে আকাশে মেঘ করলে ভালুক ঘাড় ফুলিয়ে গরগর করত। যখন বৃষ্টি নেমে আসত তখন আবার তার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসত। বৃষ্টি থেমে গেলে আবার আকাশে চাঁদ উঠত। তখন সেই ভালুক বা সেই গাছের খোঁজ পাওয়া যেত না, সে তখন হিরার মাছ হয়ে 
লক্ষ মাছের ঝাঁকে ভিড় করত। ভোরবেলার আবছা অন্ধকারে এই সমস্ত ঘটনা কোথায় যেন লুকিয়ে যেত। সেই লক্ষ মাছের মধ্যে একটিও মাছ থাকত না। কেবল সূর্যের আলো পড়ে ঝিকিমিকির করত রুপালি ঝালরের মতো।

দেখে মনে হতো লক্ষ হীরার মাছ।

প্রশ্ন- মায়াতরু''কবিতাটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর- 'মায়াতরু' কবিতাটি ‘ভানুমতীর মাঠ' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।রু