বিচিত্র সাধ কবিতা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর চতুর্থ শ্রেণী / Bichitra sadh question answer class 4 - school book solver

Pages

Thursday, 27 February 2025

বিচিত্র সাধ কবিতা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর চতুর্থ শ্রেণী / Bichitra sadh question answer class 4

 



চতুর্থ শ্রেণীর বাংলা:-

বিচিত্র সাধ কবিতা

 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


★ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিচিতি:- 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর জন্মস্থান ছিল কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়িতে। তাঁর পিতার নাম  মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর । মাতার নাম সারদাদেবী। তিনি বিশ্বকবি’ নামে খ্যাত। 

তিনি শিক্ষা ; সংগীতে, অঙ্কনেও তিনি ছেলেবেলা থেকে যথেষ্ট পারদর্শী হয়ে উছেছিলেন। তিনি বোলপুর শান্তিনিকেতনে 'ব্রহ্মচর্য আশ্রম' তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। সেই ব্রহ্মচর্য আশ্রমই বর্তমানে ‘বিশ্বভারতী বিশ্যববিদ্যালয়' নামে পরিচিত। রবীন্দ্রনাথের দেশভক্তি ছিল গভীর। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ‘গীতাঞ্জলি' কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য সাহিত্যে ‘নোবেল পুরস্কার' লাভ করেন। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে 'ডক্টরেট' উপাধি দেন এবং ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সরকার তাঁকে ‘স্যার’ উপাধি প্রদান করেন।  ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয়সংগীত রচয়িতারূপে বিশ্বে একমাত্র তাঁরই নাম পাওয়া যায়।।মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি ‘শৈশব গীত’, ‘বনফুল’, ‘রুদ্রচণ্ড’, ‘ভানুসিংহের পদাবলি’, ‘কবি-কাহিনি' প্রভৃতি রচনা করেন। তাঁর রচিত প্রথম মুদ্রিত কবিতাটির নাম।“হিন্দু মেলার উপহার’। ‘জ্ঞানাঙ্কুর’ পত্রিকায় ‘ভুবনমোহিনী প্রতিভা' নামে তাঁর রচিত প্রথম গদ্য প্রবন্ধটি ছাপা হয় ।  তাঁর অন্যান্য রচনা হল ‘নৌকাডুবি’, ‘ডাকঘর’, ‘বিদায় অভিশাপ’, ‘গোরা’ প্রভৃতি। তিনি অসংখ্য সংগীত রচনা করেন ও তাতে সুরারোপ করেন। তাঁর রচিত সংগীতগুলি ‘রবীন্দ্রসংগীত' নামে পরিচিত।  ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগষ্ট তিনি পরলোকে গমন করেন।



★বিচিত্র সাধ কবিতার নামকরণের  সার্থকতা

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ‘বিচিত্র সাধ’ কবিতাটির নামকরণে বাল্যকালের মনের কথা ফুটে উঠেছে। ‘বিচিত্র সাধ’ কথাটির অর্থ যে সাধ বা ইচ্ছার কোনো মানেই হয় না। শিশুর যে সাধ তা কল্পনায় ভরা। শিশুর সাধে বাস্তবতার আভাস খুব কম। শৈশবে কবি স্কুল যাওয়ার সময় ফেরিওলার ‘চুড়ি চা—ই, চুড়ি চাই' হাঁক শুনে তাকে পরম সুখী ভেবেছেন। কবিতার সমগ্ৰ অংশটি একটি বাচ্ছা মনের বিভিন্ন সাধের কথা বলা হয়েছে । তাই "বিচিত্র সাধ" নামটি যথার্থ হয়েছে বলে আমার মনে হয়।







★বিচিত্র সাধ কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা:-

জীবনের একটি বিশেষ বয়সে এসে কবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর শৈশবের কথা মনে করে কবিতাটি রচনা করেছেন। তিনি রোজ বেলা দশটায় পাঠশালা যাওয়ার সময় তাঁদের গলি দিয়ে ফেরিওলাকে ‘চুড়ি চাই, চুড়ি চাই' হাঁক দিতে দেখেছেন।  তাই দেখে কবির ইচ্ছা তিনি সেলেট ফেলে দিয়ে ওইভাবে ফেরি করে বেড়ান।

হাতে কালি মেখে স্কুল থেকে ফেরার সময় বাবুদের ফুলবাগানের মাঝে কোদাল হাতে মালিকে মাটি কোপাতে দেখেছেন। তখন কবির ইচ্ছা হয় ওই ফুলবাগানের মালিই হবেন। সামান্য একটু রাতে কবিকে মা ঘুম পাড়াতে চান। সেই সময় জানলা দিয়ে কবি পাগড়িপরা।পাহারাওয়ালাকে দেখলেন।আঁধার গলিতে গ্যাসের মিটমিটে আলোয় বেশি লোক চলছে না। লণ্ঠন হাতে লোকটা দশটা-এগারোটা পর্যন্ত বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ তাকে কিছু বলে না। তাই দেখে কবির ইচ্ছা তিনিও পাহারাওলা হয়ে গলির ধারে আপন মনে জেগে  পাহারা দিতে।



হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর-

১। সহজপাঠ বইটির লেখকের নাম কী?

 উঃ সহজপাঠ বইটির লেখকের নাম- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।


২। কবি রবীন্দ্রনাথ কত সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান?

 উঃ কবি রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান।


৩। একটি বাক্যে উত্তর দাও :


৩.১ ‘পাঠশালা’ শব্দটির একটি সমার্থক শব্দ লেখো।

উঃ ‘পাঠশালা' শব্দটির একটি সমার্থক শব্দ হল বিদ্যালয়।


৩.২ কবিতার কথক বাড়ির গলি দিয়ে কোথায় যায় ?

উঃ কবিতার কথক বাড়ির গলি দিয়ে পাঠশালায়   যায়।



৩.৩ পাঠশালায় যাওয়ার পথে কথকের মনে কোন্ কল্পনা জেগে ওঠে?

উঃ পাঠশালায় যাওয়ার পথে কথকের ইচ্ছে করে সেলেট ফেলে দিয়ে ফেরিওলার মতো জিনিস ফেরি করে।


৩.৪ সারাদিনের শেষে বাড়ি ফেরার পথে কে কী দেখতে পায়?

উঃ সারাদিনের শেষে বাড়ি ফেরার পথে কথক দেখতে পায় কোদাল নিয়ে বাবুদের ফুলবাগানের মালি মাটি কোপাচ্ছে ।



৩.৫ ‘ফেরিওলা’, ‘মালি’ কিংবা ‘পাহারাওলার’ জীবনের স্বাধীনতা কথককে কীভাবে আকর্ষণ করে ?

উঃ কথকের ইচ্ছে করে সে ‘ফেরিওলা’, ‘মালি’ কিংবা ‘পাহারাওলা’র জীবনে স্বাধীনতা কথকে কে মুক্ত জীবনের বা খোলা মেলা জীবনের দিক আকর্ষণ করে। যে জীবনে কোন বাধা থাকবে না। স্বাধীন ইচ্ছা কাজ করা যাবে।


৩.৬ রাতেরবেলা জানলা দিয়ে বক্তা কাকে দেখে ?


উঃ রাতেরবেলা জানলা দিয়ে বক্তা  পাগড়িমাথায় লণ্ঠন হাতে ফেরিওলাকে দেখে।


৪। তিন-চারটি বাক্যে উত্তর দাও।

৪.১ মালির জীবনের সঙ্গে বক্তার নিজের জীবনের অমিলগুলি কী?

উঃ (১)বক্তার যখন ছুটি হয় বাগানের মালিক তখন ছুটি হয় না। মালি কোদাল নিয়ে বাবুদের ফুলবাগানে মাটি কোপায়।অর্থাৎ তখনও মালির ছুটি হয় না। 

(২) মালির গায়ে-মাথায় কত ধুলো লাগছে, তাকে কেউ বকে না। কিন্তু বক্তার গায়ে-মাথায় ধুলো লাগলে মা তাকে বকবে এবং ধুলোবালি ধুইয়ে দিয়ে পরিষ্কার জামা পরিয়ে দেবে।


৪.২ ফেরিওলার জীবনের কোন্ বিষয়গুলি বক্তাকে আকর্ষণ করে?

উঃ ফেরিওলার ‘চুড়ি চা—ই, চুড়ি চাই' হাঁক খুব আকর্ষণ করে বক্তাকে। পুতুলের ঝুড়ি নিয়ে দশটা বা সাড়ে দশটা যখন খুশি ফেরিওলা যেখানে খুশি যেতে পারে। এই স্বাধীনতা বক্তাকে ভীষণ আকর্ষণ করে।



৪.৩ বক্তার দৃষ্টি অনুযায়ী রাতের দৃশ্য বর্ণনা করো।

উঃ বক্তা অর্থাৎ এই কবিতার কবি রবীন্দ্রনাথ যখন শিশু ছিলেন তখনকার কলকাতার রাত ছিল অনেক বেশি অন্ধকারময়।

তখন অলিতে-গলিতে এত উজ্জ্বল বিদ্যুতের আলো ছিল না। তখনকার দিনে গলি ছিল অন্ধকার, লোক চলাচল ছিল না বললেই চলে। গ্যাসের আলো জ্বলত মিটমিট করে। পাগড়িপরা পাহারাওলা হাতে লণ্ঠন নিয়ে বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকত।



৪.৪ কবিতায় কথকের নানারকম সাধের যে পরিচয় পাও তা উল্লেখ করো।

উঃ কবিতার কথক প্রথমত ফেরিওলা হতে চেয়ে পথে পথে যেখানে খুশি যখন খুশি ঘুরে বেড়াতে চেয়েছেন। দ্বিতীয়ত তিনি বাগানের মালির মতো কোদাল নিয়ে ফুলবাগানের মাটি কোপাতে চান এবং গায়ে মাথায় ধুলোবালি মাখো অবস্থায় সারাক্ষণ থাকতে চান। তৃতীয়ত তিনি পাহারাওলা সেজে লণ্ঠন হাতে সারারাত গলির ধারে আপনমনে জেগে থাকতে চেয়েছেন।



৫। বাক্যরচনা করো : কোদাল, পাগড়ি, গলি, খুশি, ফেরিওলা।

উঃ কোদাল— কোদাল দিয়ে মাটি কোপানো হয়।

পাগড়ি- আদিবাসীরা মাথায় পাগড়ি বেঁধে নাচ করে।

গলি– গ্রামে অনেক গলি রাস্তা থাকে।

খুশি— তখন ইংরেজিতে ভালো নাম্বার তুলে খুব খুশি হয়েছিল।

ফেরিওয়ালা- রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ফেরিওয়ালা দেখা যায়।



৬। এই কবিতায় এক শিশুর অনেক সাধের কথা আছে। তেমনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরই লেখা যে কবিতায় ফুল, প্রদীপের আলো, পুকুরের জল এদের সাধের কথা আছে সেই কবিতাটির বিষয়ে নিজের ভাষায় ছয়টি বাক্য লেখো

শিক্ষকের সাহায্য  নাও।

উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা এইরকমই একটি কবিতার নাম ‘কতদিন ভাবে ফুল উড়ে যাব কবে'। এই কবিতাটির বিষয়ে নীচে ছয়টি বাক্য লেখা হল-

(১) ফুল একদিন ভাবল যেখানে খুশি উড়ে যাব। (২) প্রজাপতি হয়ে ফুল ডানা মেলে দিল। 

(৩) প্রদীপ প্রতিদিন ভাবছিল উড়তে পারলে ভালো হত ।

 (৪) প্রদীপ একদিন জোনাকি হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। 

(৫) পাখির ওড়া দেখে পুকুরের জলেরও উড়তে ইচ্ছা হল।

 (৬) ধোঁয়া-ডানা মেলে একদিন পুকুরের জল সহজে আকাশে চলে গেল।



৭। ‘ওলা/ওয়ালা’ যোগে পাঁচটি শব্দ তৈরি করো ঃ যেমন——ফেরিওলা’, ‘বাঁশিওয়ালা’।

উঃ চাওলা/বাড়িওয়ালা। রিকশাওলা/

রিকশাওয়ালা। চুড়িওলা/চুড়িওয়ালা। বেগুনওলা/বেগুনওয়ালা। বাঁশিওলা/বাঁশিওয়ালা। 


৮। সূত্র অনুযায়ী শব্দছকটি পূরণ করো ঃ

বাংলা সাহিত্য

উত্তর-

পাশাপাশি -

(১) কোদাল (৫) ধুলোবালি (৮) পাহারাওলা (১০) দেরি (১১)  পায়জামা (১৩) লাগি


ওপর নিচে:- (১)  কোপায় (২) লণ্ঠন (৩) আলো (৪) বালি  (৬) বাগান  (৭) বেলা  (৮) পাঠশালা (৯) ফেরিওয়ালা (১২) মাটি


৯। নীচের বাক্যগুলি থেকে কর্তা, কর্ম, ক্রিয়া নির্দিষ্ট স্থানে বসাও ঃ

৯.১ মা তারে তো পরায় না সাফ জামা।

উঃ- কর্তা- মা 

কর্ম-তারে তো সব জামা 

ক্রিয়া - পরায় না



৯.২ চিনের পুতুল ঝুড়িতে তার থাকে।

উঃ-

কর্তা- চিনের পুতুল

কর্ম- ঝুড়িতে তার

ক্রিয়া - থাকে


১.৩ জানালা দিয়ে দেখি চেয়ে পথে।

উঃ-

কর্তা- ( আমি)

কর্ম- জানালা দিয়ে  পথে।

ক্রিয়া - দেখি চেয়ে


৯.৪ ইচ্ছে করে পাহারাওয়ালা হয়ে গলির ধারে আপন মনে জাগি।

উঃ-

কর্তা- ( আমার) 

কর্ম- ধারে আপন মনে

ক্রিয়া - ইচ্ছে করে, জাগি






১০। কবিতার কথক কোন্ সময়ে কী কী ঘটতে দেখে তা লেখো। আর একই সাথে ঠিক এই সময়গুলোতে তুমি কী করো এবং কী ঘটতে দেখো লেখো

উত্তর- নিজে করো।


১১। তুমি তোমার গ্রামে বা শহরে যে নানারকম জীবিকার মানুষদের বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ কাজ করতে দেখো লেখো।

উঃ (১) আমি গ্রামে বাস করি।

এখানে আমি কৃষক কামার কুমোর এসব জীবিকার লোকদের দেখতে পাই। কৃষককে গ্রীষ্মকালে লাঙল কাঁধে নিয়ে এবং একজোড়া বলদ নিয়ে সকালবেলায় মাঠে যেতে দেখি। বেলা এগারোটা অবধি মাঠে লাঙল করে চাষি আবার বাড়ি ফেরে। ক্লান্ত বলদের ল্যাজে হাত দিয়ে মাঝে মাঝে হ্যাট হ্যাট শব্দ করে। বর্ষাকালে কৃষক আর কৃষক-বউ মাঠে মাঠে ভিজে ভিজে ধান রোপণের কাজ করে। শীতকালে তারা ধান কাটে। আঁটি বেঁধে বোঝা বেঁধে মাথায় নিয়ে বাড়ি ফেরে। ধান ঝাড়ে, ধান মরাইতে ভরে।

ঠক। গরম কালে কামার লাঙলের ফাল তৈরি করে, কোদাল বানায়। তার হাতুড়ি পেটানোর শব্দ শোনা যায় ঠকাং ঠক্‌ ঠকাং কুমোর সারাবছর তার চাকা ঘুরিয়ে হাঁড়ি, কলসি, কুজো তৈরি করে। সেগুলো মাথায় ঝুড়িতে নিয়ে গ্রামের পথে হেঁকে বিক্রি করে ‘হাঁড়ি কলসি কুঁজো লাগবে গো!’


(২) আমি শহরে থাকি।

এখানে আমি নানারকম জীবিকার মানুষ দেখতে পাই। অফিসযাত্রী, গাড়ির ড্রাইভার, অটোচালক, সবজিওয়ালা, মাছবিক্রেতা, মুদি, গোয়ালা, সেলুনওয়ালা, রিকশাওয়ালা, ফেরিওলা, খবরকাগজওলা ইত্যাদি হাজার রকমের লোক সারাবছর সকাল থেকে প্রায় সারা দিনই ব্যস্ত থাকে। রাত এগারোটার সময় সকলের কাজের কোলাহল অনেকটা শান্ত হয়ে আসে।




১২। পর পর তিনটি ছবিতে তিনজন কর্মরত মানুষের কথা আছে। তোমার কী হতে সাধ হয় এবং কেন, তা ছবি দেখে নিজের ভাষায় লেখো।

উঃ তোমরা তোমাদের পাঠ্যপুস্তকে ছবিগুলি দেখো।

উত্তর এখানে মিলিয়ে নাও।

প্রথম ছবিতে আছে একজন ফেরিওলার মাথায় করে পুতুলের ঝুড়ি নিয়ে যাওয়ার ঘটনা। আমি কবিতায় বর্ণিত ফেরিওলার ‘চুড়ি চা—ই, চুড়ি চাই' হাঁক ভীষণ পছন্দ করি। তা ছাড়া পুতুল আমিও খুব ভালোবাসি। আমি ওইরকম ফেরিওলা হয়ে কলকাতার গলিতে গলিতে সুর করে হাঁক দিয়ে ঘুরে বেড়াতে চাই। এই কাজ করতে পারলে আমি যেখানে খুশি যেতে পারব। অনেক মানুষের সঙ্গে মিশতে পারব। আমার মতো ছেলেমেয়ের হাতে তাদের মনের মতো পুতুল তুলে দিয়ে হাসি দেখতে পাব। এই কাজ আমার কাছে খুবই সহজ।

দ্বিতীয় ছবিতে আছে একজন মালি কোদাল নিয়ে মাটি কোপাচ্ছে। এই কাজ আমি পারব না। আমি পছন্দও করি না। কারণ ভীষণ পরিশ্রমের কাজ। তা ছাড়া কোদাল চালানো বেশ অভ্যাসের ব্যাপার। ঠিকমতো কোদাল চালাতে না

পারলে নিজের পায়ে এসে পড়তে পারে।

তৃতীয় ছবিতে আছে একজন পাহারাওলার কাজ। এই কাজও আমি পছন্দ করি না। কারণ চোর-ডাকাত-বদমাইশদের আমি ভয় দেখাতে পারব না। তা ছাড়া সারারাত লণ্ঠন হাতে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা আমার নেই। কারণ বারোটায় আগেই ঘুমে আমার চোখ জুড়িয়ে আসবে।



হাতে কলমে বাইরে অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

■সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :


★ কথক বাড়ি ফেরেন—(হাতে কালি মেখে/মুখে কালি মেখে)।

উত্তর ঃ হাতে কালি মেখে।



★ কথক পাঠশালায় যান—(বাড়ির গলি দিয়ে/বড়ো রাস্তা দিয়ে)।

উত্তর : বাড়ির গলি দিয়ে


★ফেরিওয়ালা যায়—(সকাল দশটায়/বেলা বারোটায়/দুপুর দুটোয়)।

উত্তর : সকাল দশটায়।


★মালি কোদাল দিয়ে মাটি কোপায়—(বাবুদের ফুল বাগানে/আমবাগানে/বাঁশবনে।)

 উত্তর ঃ বাবুদের ফুল বাগানে।



★পাহারাওয়ালা পরে— (পাগড়ি/টুপি)।

উত্তর- পাগড়ি



৩। সত্য-মিথ্যা নির্ণয় করো :


★কথক ঘরে ফেরেন সকাল দশটায় ।

উত্তর- মিথ্যা

★ মালির গায়ে-মাথায় ধুলো লাগে

উত্তর- সত্য

★কথক পাঠশালায় যান

উত্তর- সত্য

★বেলা দশটায় কথক ফেরিওয়ালাকে দেখতে পান।

উত্তর- সত্য


★কথক পাহারাওয়ালা হয়ে গলির ধারে জেগে থাকতে চান।

উত্তর- সত্য


প্রশ্ন-এলোমেলো অক্ষরগুলি সাজিয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করো :

 টসেলে, পায়কো, লোবাধুলি, ড়িগপা, লাওহারাপা,তেশাপাঠলা, ওরিলাফে।

উত্তর-


 টসেলে > সেলেট

পায়কো > কোপায়

লোবাধুলি > ধুলোবালি

 ড়িগপা > পাগড়ি

লাওহারাপা > পাহারাওলা

তেশাপাঠলা > পাঠশালাতে

 ওরিলাফে > ফেরিওলা




প্রশ্ন-এলোমেলো শব্দগুলি সাজিয়ে বাক্য তৈরি করো :


★ধুলোবালি দিতে না চায় ধুয়ে

উত্তর ঃ ধুয়ে দিতে চায় না ধুলোবালি।

★জাগি আপন ধারে গলির মনে

উত্তর ঃ গলির ধারে আপন মনে জাগি।

★থাকে চিনের ঝুড়িতে তার পুতুল

উত্তর : চিনের পুতুল ঝুড়িতে তার থাকে।

★ তাড়া হয় দেরি বা পাছে নাইকো।

উত্তর : নাইকো তাড়া হয় বা পাছে দেরি।

★কাজে বকে কেউ এসে তো না তার।

উত্তর : কেউ তো এসে বকে না তার কাজে।


দু-এক কথায় উত্তর দাও :




প্রশ্ন- কত সালে রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়?

উত্তর : ১৮৬১ সালে রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়।



প্রশ্ন-কোথায় রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয় ?

উত্তর : কলকাতায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে।


প্রশ্ন-দীর্ঘজীবনে রবীন্দ্রনাথ কী কী করেছেন?

উত্তর ঃ তিনি অজস্র কবিতা, গান, ছোটোগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ লিখেছেন এবং ছবি এঁকেছেন।


প্রশ্ন-রবীন্দ্রনাথ কী লিখে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন?

 উত্তর : Song Offerings লিখে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।


প্রশ্ন-রবীন্দ্রনাথ সহজ পাঠ এবং অন্যান্য আর কী কী বই লিখেছেন তুমি জানো?

উত্তর : কথা ও কাহিনি, রাজর্ষি, ছেলেবেলা, শিশুভোলানাথ, হাস্যকৌতুক, ডাকঘর, গল্পগুচ্ছ ইত্যাদি।


প্রশ্ন-রবীন্দ্রনাথ কত বছর বেঁচে ছিলেন?

উত্তর : আশি বছর।


প্রশ্ন- ঠাকুরবাড়ি থেকে কোন্ কোন্ পত্রিকা প্রকাশিত হত?

উত্তর : ‘ভারতী’ ও ‘বালক' পত্রিকা।


প্রশ্ন-পাঠ্যাংশের কবিতাটি তাঁর লেখা কোন্ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?

উত্তর : রবীন্দ্রনাথের ‘শিশু’ নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।


প্রশ্ন-ফেরিওলার ঝুড়িতে চুড়ি ছাড়া আর কী আছে?

উত্তর ঃ তার ঝুড়িতে চুড়ি আছে, আর আছে চিনের পুতুল।


প্রশ্ন- ফেরিওলা কী বলে হাঁক দেয়?

উত্তর : ‘চুড়ি চা—ই, চুড়ি চাই' বলে হাঁক দেয়।



প্রশ্ন-কবিতার বক্তা সেলেট ফেলে দিয়ে কী করতে চায়? কারণ কী?

উত্তর ঃ কবিতার বক্তা সেলেট ফেলে দিয়ে ফেরিওলার মতো ঘুরে বেড়াতে চায় ।

শিশুরা সাধারণত পাখির মতো জীবন পছন্দ করে। তারা বাধ্য হয়ে বাঁধাধরা নিয়ম মেনে চলতে শেখে। তাই সে ফেরিওলার যখন খুশি খাওয়া, যেখানে খুশি যাওয়া দেখে সেও ফেরিওলার মতো স্বাধীন হতে চায় ।


প্রশ্ন- কবিতার বক্তা কখন কী কারণে ফুল বাগানের মালি হতে চেয়েছে?

উত্তর ঃ বিকেল তখন সাড়ে চারটে বাজে। স্কুল থেকে হাতে কালি মেখে বাড়ি ফেরার পথে কবিতার বক্তা ফুলবাগানের মালিকে দেখতে পায় ৷ কোদাল হাতে নিয়ে মালি তখন মাটি কোপাচ্ছিল। কবিতার বক্তা ভাবছিল, মালির পায়ে কোদাল পড়তে পারে এই ভয় দেখানোর কেউ নেই। খালি গায়ে-মাথায় অনেক ধুলোবালি মেখেছে। কিন্তু এই নিয়ে তাকে কেউ শাসন করছে না। তার গায়ের ধুলোবালি ধুয়ে দিয়ে তার মা তাকে সাফ জামা পরিয়ে দিচ্ছে না। কবিতার বক্তা একটি শিশু—সে মুক্তজীবন

পছন্দ করে, তার মায়ের শাসন সহ্য হয় না বলে সে ওই ফুলবাগানের মালির মতো স্বাধীন হতে চায়।


প্রশ্ন-কবিতায় বর্ণিত কোন্ লোকটি যখন খুশি খায় ?

উত্তর ঃ ফেরিওলা যখন খুশি বাড়ি গিয়ে খায়।


প্রশ্ন-সেলেট ফেলে দিয়ে কে ফেরিওলার মতো ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছে করে?

উত্তর : কবিতার কথক।


প্রশ্ন-পাহারাওলাটি কী করছিল?

উত্তর ঃ রাত তখন দশটা-এগারোটা বাজে। পাগড়ি পরে পাহারাওলা এগিয়ে চলে। রাস্তায় গ্যাসের আলো মিটমিটিয়ে জ্বলার জন্য সে লণ্ঠনটি হাতে ঝুলিয়ে নিয়ে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে।