তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা নদী কবিতা হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের / NADI poem question answet
তৃতীয় শ্রেণি
কবিতা : নদী
কবি : শক্তি চট্টোপাধ্যায়
কবি পরিচিতি ঃ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্য জগতের এক বিখ্যাত নাম। তাঁর জন্ম
হল- '১৯৩৩ সালে। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'হে প্রেম হে নৈঃশব্দ্য'। এছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি ধর্মে আছি জিরাফেও আছি', 'হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান', 'সোনার মাছি খুন করেছি', 'যেতে পারি কিন্তু কেন যাব'। এছাড়া 'কুয়োতলা', 'অবনী বাড়ি আছো?' এই দুটি তাঁর রচিত বিখ্যাত উপন্যাস। তিনি 'আনন্দ' ও 'সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৯৫ সালে তার মৃত্যু হয়।
নামকরণ । কবিতাটি একটি নদীকে নিয়ে। কবির ইচ্ছে তিনি নদীর সাথে আজীবন থাকতে চান কিন্তু পারছেন না। কবিতাটির মূল বিষয়বস্তু নদীকে কেন্দ্র করেই। তাই কবিতার নদী নামকরণটি সার্থক হয়েছে বলে মনে হয়।
সারমর্ম । কবির ইচ্ছে তিনি সারাজীবন নদীর সঙ্গে যেতে চান। কিন্তু তিনি তা পারছেন না। কারণ নদী সোজা পথে চলে না। বাঁকার থেকে সোজা সহজ পথই ভালো। তাই কবি নদীকে বলেছেন যে, সে যদি সোজা পথে যেত তাহলে কবি তার সঙ্গে যেতেন।
শব্দার্থ : জীবনডোর –সারাজীবন।
মানা – নিষেধ, বারণ।
সহজ-সরল।
পথে- ঘাটে
যেখানে-সেখানে,
দশজনায়—অনেকে।
বাঁকা–বক্র, তির্যক।
ঘাট-জলাশয়ের ঝঠা নামার স্থান।
হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১.১ নদীর কথা বললে প্রথমেই তোমার কোন্ নদীর নাম মনে আসে?
উঃ। নদীর কথা বললে প্রথমেই আমার গঙ্গা নদীর নাম মনে আসে।
১.২ নদী থেকে আমরা কোন্ কোন্ জিনিস পাই?
উঃ। নদী থেকে আমরা জল, কাদা,বালি, মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি , শামুক প্রভৃতি পাই ।
১.৩ নদীতে চলে এমন কয়েকটি যানবাহনের নাম লেখো।
উঃ। নদীতে চলে এমন কয়েকটি যানবাহন হলো— নৌকা, লঞ্চ, জাহাজ,ডিঙ্গি প্রভৃতি।
১.৪ নদীতে পাওয়া যায় এমন কয়েকটি মাছের নাম লেখো।
উঃ। নদীতে পাওয়া যায় এমন কয়েকটি মাছ হলো—রুই, কাতলা, প়া়ঁকাল, বোয়াল প্রভৃতি।
১.৫ নদীর উপর সেতু তৈরি করা হয় কেন?
উঃ। যাতে স্থলপথে যানবাহন নিয়ে বা পায়ে হেঁটে খুব সহজেই নদী পেরোনো সম্ভব হয়।
২. নীতে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি নদীর নাম দেওয়া হল। নদীগুলি কোথায় তা শিক্ষিকা/শিক্ষকের থেকে জেনে নিয়ে লেখো।
অজয় - বীরভূম
ইছামতী-উত্তর চব্বিশ পরগনা।
রায়মঙ্গল -- পরিক্ষণ চব্বিশ পরগনা।
গোসাবা -দক্ষিণ চব্বিশ পরগুনা।
তিস্তা-জলপাইগুড়ি।
সুবর্ণরেখা— পুরুলিয়া।
তোর্সা-জলপাইগুড়ি।
গণেশ্বরী-বাঁকুড়া।
কংসাবতী-বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর।
দামোদর- বর্ধমান।
রূপনারায়ণ - হাওড়া।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৩.১ কবিতায় কবির মনের ইচ্ছাটি কী ?
উঃ। কবির মনের ইচ্ছে যদি নদী বাঁকাপথে না গিয়ে সোজা পথে যেত, তাহলে কবিও সারাজীবন নদীর সঙ্গে যেতেন।
৩.২ সেই ইচ্ছা অনুযায়ী তিনি চলতে পারলেন না কেন?
উঃ । নদী সোজাপথে না গিয়ে বাঁকাপথে যায়। কবি দশজনার নিষেধের কারণে বাঁকাপথে যেতে পারেন না, তাই তাঁর ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে যায়।
৩.৩ নদী কীভাবে তার চলার পথে এগিয়ে চলে?
উঃ। নদী কখনোই সোজাপথে এগোয় না, সে চিরকালই তার নিজের মতো পথ করে নিয়ে এঁকে বেঁকে এগিয়ে চলে।
হাতে কলমের বাইরে অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর ঃ
★ নদী কবিতাটির কবির নাম কী?
উঃ। নদী কবিতাটির কবির নাম শক্তি চট্টোপাধ্যায়।
★ কবিতায় কবি নদীর কীরকম পথের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ?
উঃ। কবিতায় কবি নদীর চলার পথ সোজা হবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
★ নদী সোজা গেলে কবি কী করতেন?
উঃ। নদী সোজা গেলে কবি আজীবন তার সঙ্গে যেতেন।
★ নদী কীভাবে গেছে? উঃ। নদী এঁকে বেঁকে গেছে।
★ কবি নদীর সাথে যেতে পারছেন না কেন ?
উঃ। কবিকে পথে-ঘাটের দশজনে বাঁকাপথে যেতে বারণ করছে।
★ কবির মতে কী ভালো নয়?
উঃ। কবির মতে বাঁকা পথ সোজা ও সহজ পথের থেকে ভালো নয়।
★ তোমার নিজের জানা কয়েকটি নদীর নাম লেখো।
উঃ। আমার জানা কয়েকটি নদীর নাম হল—গঙ্গা, যমুনা, পদ্মা, তিস্তা, ইছামতী, অজয়, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি।
★ কবির মনের কী ইচ্ছা ছিল? তা পূর্ণ হলো না কেন?
উঃ। কবির মনের ইচ্ছা ছিল নদীর মতো সোজা পথে তার সঙ্গে সারা জীবন বয়ে যাওয়া। কবির সে ইচ্ছা পূরণ হলো না কারণ নদী সোজা পথে না চলে এঁকে বেঁকেই চলতে লাগল। কবি বাঁকা পথে যেতে চাইলেও পথে-ঘাটের দশজন তাকে বাঁকতে মানা করলো। তাই কবিও নদীর সাথে চলতে পারলেন না।
★ তোমার দেখা একটি নদী সম্বন্ধে চারটি বাক্য লেখো।
উঃ। আমাদের বাড়ির সামনে গঙ্গা নদী আছে। নদীতে অনেক জল থাকে, প্রতিদিন জোয়ার ও ভাটা দেখতে পাই।।সেখানে নানারকমের মাছ, যেমন : চিংড়ি, ইলিশ প্রভৃতি থাকে। বর্ষায় নদীতে বান দেখা যায়। আমরা বিকেলে গঙ্গার ধারে বেড়াতে যাই।
★ নদী কীভাবে মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তা কয়েকটি বাক্যে লেখো।
উঃ। আমাদের দেশে বহু নদী রয়েছে। আমাদের দেশের রোজকার চাষবাস এই নদীর জলের উপর নির্ভরশীল। নদী আমাদের মায়ের মতো, সে জল মাছ দিয়ে আমাদের পালন করে। তাই প্রাচীনকাল থেকেই দেশের বড়ো বড়ো শহর,গ্রাম নদীর তীরেই গড়ে উঠেছে। আমাদের দেশের বহু তীর্থস্থান নদীকে কেন্দ্র করে বা তার তীরে গড়ে উঠেছে। নদীর তীরে প্রথম সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। নদী আমাদের কাছে মায়ের মতো।