তৃতীয় শ্রেণি বাংলা আমরা চাষ করি আনন্দে অনুশীলন উত্তর / Amara chas kru anande class 3 baa
তৃতীয় শ্রেণি
বাংলা
গান : আমরা চাষ করি আনন্দে
রচয়িতা ঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
শব্দার্থ ঃ বেলা—সময়।
চষা মাটি—চাষ করার
মাতে—মেতে ওঠে।
তরুণ-যুবক, কম বয়সি।
কবি—যিনি কবিতা লেখেন।
নৃত্য—নাচ।
দোদুল— দোলা।
শিষ—ধান গাছের আগা।
পুলক-আনন্দ, খুশি।
ধরা—পৃথিবী।
পূর্ণিমা— যেদিন সন্ধ্যার আকাশে চাঁদকে গোল থালার মতো দেখায়।
চন্দ্র—চাঁদ।
অঘ্রান—অগ্রহায়ন বাংলা মাসের একটি।
ছন্দ — তাল।
হাতে-কলমে প্রশ্নের উত্তর
একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১.১ চাষ করার জমিকে কী বলা হয়?
উঃ। চাষ করার জমিকে ক্ষেত বলা হয়।
১.২ চাষের কাজে কী কী জিনিস না হলে চলে না?
উঃ। চাষের কাজে জল, আলো, হাওয়া, মাটি, বীজ, চাষি এবং লাঙল (মাটি চযার যন্ত্র) না হলে চলে না।
১.৩ ধান গাছ থেকে কী কী জিনিস আমরা পাই?
উঃ। ধান গাছ থেকে আমরা ধান, চাল এবং খড় পাই।
১.৪ 'সকল ধরা হেসে ওঠে'—এখানে 'ধরা' শব্দটির অর্থ কী ?
উঃ । এখানে 'ধরা' বলতে সারা পৃথিবীকে বোঝানো হয়েছে।
১.৫ 'ধরা' শব্দটিকে অন্য অর্থে ব্যবহার করে একটি বাক্য লেখো।
উঃ। ধরা (পাকড়াও করা) – চোর ধরা পড়েছে।
১.৬ 'পুলক' (দেহের লোম খাড়া হয়ে ওঠা) শব্দটি দিয়ে একটা বাক্য রচনা করো।
উঃ। পুলক- পুজোর আশার গন্ধে মনে পুলক ছোটে।
১.৭ ‘অঘ্রান' মাসটির পুরো নামটি কী?
উঃ। অঘ্রান মাসটির পুরো নাম হলো 'অগ্রহায়ণ'।
২. শূন্যস্থানে ঠিক বর্ণ বসিয়ে শব্দ তৈরি করো ঃ (ক) স... । (খ) গ—। (গ) বৃ – । (ঘ) শি---
ঙ) অ--ন। (চ) রৌ--
উঃ। (ক) সন্ধে। (খ) গন্ধে। (গ) বৃষ্টি। (ঘ) শিষে। (ঙ) অঘ্রান। (চ) রৌদ্র।
৩. তোমার পড়া গানটির একটি লাইন নীচে দেওয়া আছে। তারপরের দুটি লাইন গান থেকে তুমি লেখো :
সবুজ প্রাণের গানের লেখা।
উঃ। রেখায় রেখায় দেয় রে দেখা, মাতেরে কোন তরুণ কবি নৃত্য-দোদুল ছন্দে।
৪. বাঁদিকের সাথে ডানদিকে মেলাও
বাঁদিক ডানদিক
উত্তর-
(ক) বাঁশের বনে > (ঙ) পাতা নড়ে।
(খ) সকল ধরা> (গ) হেসে ওঠে
(গ) বাতাস ওঠে ভরে ভরে> ঘ) চষা মাটির গল্পে।
(ঘ) মাঠে মাঠে বেলা কাটে > (খ) সকাল হতে সন্ধে
(ঙ) ধানের শিষে > (ক) পুলক ছোটে।
৫. শূন্যস্থান পূরণ করো :
৫.১ সুর দিয়ে গাওয়া হয় গান আর লেখা দিয়ে যে কাজ করা হয় তা হল ........।
উঃ- সুর দিয়ে গাওয়া হয় গান আর লেখা দিয়ে যে কাজ করা হয় তা হল লেখা।
৫.২ অঘ্রান মাসের আগের মাসের নাম হলো .....।
উঃ- অঘ্রান মাসের আগের মাসের নাম হলো কার্তিক।
৫.৩ অঘ্রান মাসের পরের মাসের নাম হলো.....। উঃ- অঘ্রান মাসের পরের মাসের নাম হলো পৌষ।
৫.৪ অম্লান মাস ......… ঋতুর মধ্যে পড়ে।
উঃ- অম্লান মাস হেমন্ত ঋতুর মধ্যে পড়ে।
৬. যাঁরা চাষ করেন তাঁদের চাষি বলে।
উঃ। তাহলে, যাঁরা কবিতা লেখেন তাঁদের বলে কবি।
যাঁরা কাঠ দিয়ে খাট, চেয়ার, টেবিল, আলনা, দরজা-জানালা বানান তাদের বলে ছুতোর।
যাঁরা ইটের বাড়ি বানানা তাঁদের বলে রাজমিস্ত্রি। যাঁরা মাটির বাড়ি তাদের বলে ঘরামি ।
যাঁরা মাছ ধরেন তাঁদের বলে জেলে।
৭. নীচের বাক্যগুলির দাগ দেওয়া অংশে কোনো না কোনো কাজ বোঝাচ্ছে। তুমি গানটি থেকে এমন আরোকয়েকটি কথা বের করে নীচে লেখো, যা দিয়ে কাজ করা বোঝায়।
(ক) রৌদ্র ওঠে।
(খ) বৃষ্টি পড়ে।
(গ) পাতা নাড়ে।
(ঘ) চাষ করি আনন্দে।
উঃ। (ক) বাতাস ওঠে।
(খ) দেয় রে দেখা।
(গ) পুলক ছোটে।
(ঘ) হেসে ওঠে।
৮. সারাদিন বৃষ্টি হলে তুমি দিনটা কীভাবে কাটাবে, নীচে চার লাইনে লেখো :
উঃ । আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসব। তারপর পড়াশেষে বারান্দায় বসে বৃষ্টি দেখব আর বৃষ্টির জলে কাগজের নৌকা ভাসাব। দুপুরে স্নান করে খেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ব। ঘুম থেকে উঠে দাদু-দিদার সাথে বসে বৃষ্টি দেখতে দেখতে গল্প শুনব। তারপর সন্ধেবেলা পড়াশোনা করে উঠে খেয়ে নিয়ে রাতে মায়ের কাছে রূপকথার গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ব।
হাতে কলমের বাইরে কিছু অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন- আমরা কীভাবে চাষ করি?
উঃ। আমরা আনন্দের সাথে চাষ করি।
প্রশ্ন- মাঠে মাঠে কী কাটে?
উঃ। মাঠে মাঠে বেলা কাটে।
প্রশ্ন- কোথায় পাতা নড়ে?
উঃ। বাঁশের বনে পাতা নড়ে।
প্রশ্ন- কিসের গন্ধে বাতাস ভরে ওঠে?
উঃ। চষা মাটির গন্ধে বাতাস ভরে ওঠে।
প্রশ্ন- রেখায় রেখায় কী দেখা যায়?
উঃ । রেখায় রেখায় সবুজ প্রাণের গানের লেখা দেখা যায়।
প্রশ্ন- কে মেতে ওঠে?
উঃ। কোনো তরুণ কবি মেতে ওঠে।
প্রশ্ন- তরুণ কবি কীসে মেতে ওঠে।
উঃ। তরুণ কবি নৃত্য-দোদুল ছন্দে মেতে ওঠে।
প্রশ্ন- ধানের শিষে কী ছোটে?
উঃ। ধানের শিষে পুলক ছোটে।
প্রশ্ন- ধরা কখন হেসে ওঠে?
উঃ। ধরা অঘ্রানের সোনা রোদে আর পূর্ণিমার চাঁদে হেসে ওঠে।
প্রশ্ন- 'আমরা চাষ করি আনন্দে'—কবিতাটিতে কোন মাসের উল্লেখ আছে?
উঃ। অঘ্রাণ মাসের। -
★ বিপরীত শব্দ লেখো : আনন্দ-দুঃখ।
ছন্দ- ছন্দহীন
সকাল-সন্ধে।
ওঠে—নামে।
তরুণ-বয়স্ক।
হেসে- কেঁদে।
পূর্ণিমা-অমাবস্যা।
রৌদ্র=ছায়া।
বেলা-অবেলা।
কবি পরিচিতি ঃ রবীন্দ্রনাথের জন্ম কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে। ১২৬৮ সনের (ইং ১৮৬১ খ্রিঃ) ২৫শে বৈশাখ তাঁর জন্ম। ১৩৪৮ সনের (ইং ১৯৪১ খ্রিঃ) ২২শে শ্রাবণ তিনি প্রয়াত হন। বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন পরম ধার্মিক মানুষ। মায়ের নাম সারদাদেবী। অল্পবয়স থেকেই ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত “ভারতী ও বালক পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন। ‘সহজপাঠ’, কথা ও কাহিনী, রাজর্ষি, ছেলেবেলা, শিশু, শিশু ভোলানাথ, হাস্যকৌতুক ডাকঘর, তাঁর বহু রচনাই শিশু কিশোরদের আকৃষ্ট করে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর দীর্ঘজীবনে অজস্র কবিতা, গল্প, নাটক, গান, উপন্যাস, প্রবন্ধ ইত্যাদি লিখেছেন, ছবিও এঁকেছেন, আর সে ধরনের লেখা পৃথিবীতে খুব কম কবিই লিখতে পেরেছেন। গীতাঞ্জলি কাব্য রচনার জন্য ১৯১৩ সালে তিনি 'নোবেল পুরস্কার' লাভ করেন।
রচনা পরিচয় : গানটিতে একজন চাষির চাষ করার আনন্দ এবং তার সাথে সাথে পল্লি প্রকৃতির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে কবির কলমে গ্রাম বাংলার কয়েকটি ঋতুরও উল্লেখ রয়েছে। গানটির মূল বিষয়বস্তু হল চাষ করা এবং তা থেকে প্রাপ্ত আনন্দ। তাই “আমরা চাষ করি আনন্দে” নামটি সার্থক। গানটি ‘সত্যি সোনা' গল্পটি সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হবে।
সারমর্ম -একজন চাষি সে আনন্দের সাথে চাষ করে। তার সকাল সন্ধে তখন মাঠেই কাটে। গ্রীষ্ম পেরিয়ে বর্ষা আসে। চষা মাটির সোঁদা গন্ধ বাতাস ভারী করে তোলে। এরপর ফসল বেড়ে ওঠে তখন সারা মাঠ সবুজ হয়ে যায়।এরপর ধানের শিষ বেরোলে চাষির মনে পুলক (আনন্দ) জাগে। ক্রমশ ফসল পাকতে থাকে। ইতিমধ্যে অঘ্রান মাস এসে যায়। ধানের শিষ সোনালি হয়। অঘ্রাণের সোনা রোদে এবং পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় সারা পৃথিবী যেন হাসতে থাকে।