সোনা গল্পের হাতে-কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর তৃতীয় শ্রেণী / Sona story question answer class3র
![]() |
তৃতীয় শ্রেণি বাংলা
গল্প : সোনা
চতুর্থ পাঠ
লেখক : গৌরী ধর্মপাল
লেখক পরিচিতি : গৌরী ধর্মপাল সংস্কৃতের একজন বিখ্যাত অধ্যাপক। তাঁর জন্ম ১৯৩১ সালে। বড়োদের জন্য তিনি লিখেছিলেন 'বেদের কবিতা' প্রভৃতি বই। তিনি 'পঞ্চতন্ত্র' এবং 'কাদম্বরী' 'অনুবাদ করেন। তাঁর ছোটোদের জন্য।লেখা বইগুলি হল 'ঘোড়া যায়', 'আশ্চর্য কৌটো', 'চোদ্দো পিদিম', 'চাঁদনি', 'কালো মানিক' ইত্যাদি। এছাড়া ছোটোদের জন্যই তিনি অনুবাদ করেছেন 'মালশ্রীর পঞ্চতন্ত্র' এবং বিদেশি রুপকথার অনুবাদ 'আটটি আপেল'।
রচনা পরিচয় : আলোচ্য গল্পটির কেন্দ্রীয় চরিত্র চাষির মেয়ে সোনা। তার গায়ের রং সোনার মতো। সে অপরূপ সুন্দরী। তার মা ভেবেছিল তাকে সোনার কাঁকন গড়িয়ে দেবে। কিন্তু সোনার অনেক দাম তাই তা পারেনি। কিন্তু প্রকৃতি তাকে নিরাশ করেনি। সূর্যের আলো তার গায়ে পড়ে সোনার আভা সৃষ্টি করে। আবার নদীমা তার সারা শরীরে স্বর্ণকণা লেপে দিয়েছিলেন। গল্পটি সোনাকে কেন্দ্র করেই এগিয়েছে। তাই গল্পের নামকরণ 'সোনা' সার্থক হয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে।
সারাংশ : চাষির মেয়ে সোনা, সে খুব সুন্দরী। ছোটো সোনা বাবা-মার বড়ো আদরের। সে একটু বড়ো হওয়ার বাপ আর মা তাকে সোনার কাঁকন গড়িয়ে দেবে ভেবেছিল। কিন্তু সোনার দামের জন্য করতে পারেনি। এরপর একদিন বাপ-মায়ের সাথে সোনা নদীতে নাইতে গেছিল। নেয়ে উঠে মা-বাপ দেখল মেয়ের সারা গায়ে নদীমা সোনার রেণু পরিয়ে দিয়েছে। এরপর একদিন একটা চোর ওই সোনার লোভে সোনাকে চুরি করে পালালে গ্রামসুদ্ধ লোক চোর ধরত বেরোয়। পথে গাড়ি করে আসা একদল লোক চোর ধরে, সোনাকে উদ্ধার করে। পরে জানা যায় তারা সরকারের লোক খবর পেয়ে নদী থেকে সোনা তুলতে এসেছে। যদিও তারা হতাশ হয়ে ফিরে গেছিল। কারণ নদীতে সোনা ছিল যথসামান্য। সেই থেকে সেই গায়ের নাম হলো সোনারগাঁ। সোনা এখন পাঠশালায় যায়। তার দিদিমণি তাকে নদীমাতৃকা বলে ডাকে।
সোনা মাছের মতো সাবলীলভাবে সাঁতার কাটতে পারে। নদীতে কেউ নোংরা ফেললেই সোনা প্রতিবাদ করে। সে আন্দোল। করে একটা কারখানাও বন্ধ করে দিয়েছে। সোনার জন্য কেউ নদী নোংরা করার সাহস পায় না। সোনা বলে,
নদী হলো মা, মায়ের দুধ খাও আর মায়ের গায়ে কাদা ছোঁড়ো, তোমরা কী? মানুষ না পিশাচ।'
শব্দার্থ ঃ হামাগুড়ি—হাত ও পায়ে ভর দিয়ে চলা। বেড়া-কাঠ বা বাঁশের পাঁচিল।
কাঁকন – মেয়েদের হাতের গয়না।
উঠোন—বাড়ির সামনে ফাঁকা জমি।
ঠিকরোয়—ছিটকে বেরোয়।
গাঁ-গ্রাম।
চোদ্দোবার – বারবার।
চিকচিক—ঝলমল।
আঁচল – শাড়ির প্রান্ত।
সরকার – প্রশাসন।
তাঁবু — থাকার ঘর।
ধরনা—প্রতিবাদ জানোনোর একট।পদ্ধতি। ভিনগাঁ—অন্যগ্রাম।
নর্দমা-নালা।
ঘরের পার্ট—ঘরের কাজকর্ম।
নাইয়ে- স্নান করিয়ে।
নিরীক্ষণ—পরীক্ষা।
তক্কে তক্কে—সুযোগের অপেক্ষায়।
চম্পট—পালিয়ে যাওয়া।
পিশাচ-নিষ্ঠুরবিশেষ।
নদীমাতৃক—নদী যার মায়ের মতো।
আশ্চয্যি—অবাক।
নাইতে—স্নান করতে।
নিরীক্ষণ—ভালো করে দেখা, পরীক্ষা করা।
গর্জন—রেগে গিয়ে আওয়াজ করা।
হিরণ্যবক্ষা— যায় বুকে সোনা থাকে।
হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১. এখানে সোনা কে? তার বাবা-মা কেন বাড়িতে বেড়া দিয়েছিল?
উঃ। সোনা হল চাষির মেয়ে। সোনা হামাগুড়ি দিয়ে যাতে বাইরে বেরিয়ে না যায়, তাই তার বাবা-মা বেড়া দিয়েছিল।
১.২ নদীমা কীভাবে পরিয়ে সোনার গায়ে সোনা পড়িয়ে দিয়েছিলেন?
উঃ । নদীতে স্নান করে উঠে আসার পর সোনার সারা গায়ে সোনার রেণু লাগানো দেখেছিল তার বাব-মা।
১.৩ চোরটি সোনাকে কখন চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল ?
উঃ। সোনার বাবা খেতে গেয়েছিল এবং সোনার মা দুধ জ্বাল দিচ্ছিল, এমন সময় সোনা উঠোনে একা ছিল, তখন চোর তাকে চুরি করে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
১.৪ কেন গ্রামটির নাম হলো 'সোনার গাঁ ?
উঃ। সরকারের লোকেরা গ্রামে সোনা খুঁজতে আসার পর থেকে গ্রামের নাম হল 'সোনার গাঁ।
১.৫ সরকারের লোকেরা কী কাজ করবে বলে সোনাদের গ্রামে এসেছিল ?
উঃ। সরকারের লোকেরা নদী থেকে সোনা তোলার জন্য সোনাদের গ্রামে এসেছিল।
১.৬ কে সোনার নাম রেখেছিল নদীমাতৃকা ? এই নামের অর্থ কী ?
উঃ। পাঠশালার সংস্কৃত দিদিমণি সোনার নাম রেখেছিলেন নদীমাতৃকা। নদীমাতৃকার অর্থ নদী যার মায়ের মতন।
১.৭ কেউ নদীর জল নোংরা করলে সোনা কী করত?
উঃ। কেউ নদীর জল নোংরা করলে সোনা বাঘিনির মতো ছুটে আসতো।
২. নদী আমাদের কী কী উপকার করে?
উঃ। নদী আমাদের নানাভাবে উপকার করে যেমন—নদীর জল আমরা পান করি, নদীর জল চাষের কাজে লাগে, নদীতে মাছ চাষ করা হয়, নদীর জল শিল্পক্ষেত্রে কাজে লাগে, মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে নদীর জল লাগে। এছাড়া পূজা-অর্চনার কাজেও নদীর পবিত্র জল ব্যবহার করা হয়। নদী জলপথ পরিবহনেও সাহায্য করে। বর্তমানে নদীর জল জলবিদ্যুৎ উৎপাদনেও ব্যবহার করা হয়।
৩. এই গল্পটি থেকে এমন তিনটি বাক্য খুঁজে লেখো যেখানে 'সোনা' শব্দটি নানা অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে।
উঃ। ক. চাষির মেয়ে সোনা। [সোনা ব্যক্তির নাম অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।]
খ. গায়ের সোনায় রোদ লেগে ঠিকরোয়। [সোনা রং অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।]
গ. নদীতে সোনা খুঁজতে এসেছে। [সোনা ধাতু অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।]
৪. ভারতবর্ষ ‘নদীমাতৃক দেশ। এখানে অনেক নদী আছে। নদীকে মায়ের মতন কেন বলা হয় ?
উঃ। নদী মাতৃরূপে সভ্যতা গড়ে তোলে। মায়ের কোলে যেমন শিশুরা বেড়ে ওঠে, তেমনি নদীর তীরেই সভ্যতা গড়ে ওঠে। নদী নানাভাবে মানুষকে সাহায্য করে। একটি সমাজের বা সভ্যতার সমৃদ্ধি ঘটাতে নদীর ভূমিকা অপরিসীম। তাই নদীকে মায়ের মতো বলা হয়।
৫. তোমার জানা তিনটি নদীর নাম লেখো।
উঃ। আমার জানা তিনটি নদীর নাম হল – গঙ্গা, যমুনা,ব্রক্ষ্মপুত্র , তিস্তা, জলঙ্গি, দামোদর।
৬. শব্দগুলো সাজিয়ে বাক্য গঠন করো :
৬.১ বড়ো হয়েছে একটু সোনা।
উঃ। সোনা একটু বড়ো হয়েছে।
৬.২ ছাড়লেন নদীমাও হাঁপ।
উঃ। নদীমাও হাঁপ ছাড়লেন।
৬.৩ ক্লাসে পাঠশালের উঁচু পড়ে।
উঃ। পাঠশালের উঁচু ক্লাসে পড়ে।
৬.৪ সোনার গাঁ হলো সেই নাম থেকে গাঁয়ের।
উঃ। সেই থেকে গাঁয়ের নাম হলো সোনার গাঁ।
৬.৫ চিকচিক বালি মেয়ের করে গায়ে।
উঃ। মেয়ের গায়ে বালি চিকচিক করে।
৭. এলোমেলো বর্ণ সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো :
উঃ।কুকুলল > কুলকুল
লসফ > ফসল
কেঢুঢেকে > ঢেকেঢুকে
মদিণির্দি > দিদিমণি
মাড়িগুহা > হামাগুড়ি
তাড়িতপা > পাততাড়ি
তক্ষণেত> ততক্ষণে
কারসর > সরকার
৮. শূন্যস্থান পূরণ করো ঃ
৮.১ চাষির ঘর আলো করে উঠোনে ......দেয়।
উঃ।হামাগুড়ি
৮.২ গায়ের.........রোদ লেগে ঠিকরোর।
উঃ।সোনার
৮.৩ মেয়ের হাতে .....দিতে চাইছিল।
উঃ।কাঁকন
৮.৪ সংস্কৃতের দিদিমণি নাম রেখেছে.....।
উঃ।নদীমাতৃকা
৮.৫. আপনার মেয়ের কথা শুনে ...নিয়ে এসেছি। উঃ। যন্ত্রপাতি।
৯. ‘সোনা শব্দটি নীচের বাক্যগুলিতে কোথায় ব্যক্তি আর কোথায় বস্তু বোঝাচ্ছে লেখো :
৯.১ চাষির মেয়ে সোনা।
উঃ। ৯.১ ব্যক্তি বিশেষ বোঝাচ্ছে
৯.২ মা ভাবে, সেনার হাতে দু-খানি কাঁকন দিলে বড্ড মানাত।
উঃ।ব্যক্তি বিশেষ বোঝাচ্ছে
৯.৩ সোনার যা দাম!
উঃ।বস্তু বিশেষ বোঝাচ্ছে
৯.৪ গায়ের সোনার রোদ লেগে ঠিকরোয়।
উঃ।বস্তু বিশেষ বোঝাচ্ছে
৯.৫ এ যে দেখছি সোনা।
উঃ। বস্তু বিশেষ বোঝাচ্ছে
৯.৬ সোনার হাতে-গলায় সোনা চিকচিক করছে।
উঃ। প্রথম ক্ষেত্রে ব্যক্তি এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে বস্তু বোঝাচ্ছে।
১০. একই অর্থের শব্দ পাঠ থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো :
উঃ। অন্যগ্রাম—ভিনগাঁ,
কনক-সোনা
তটিনী—নদী
কঙ্কন—কাঁকন
নীর—জল
১১. গল্পের ঘটনাক্রম সাজিয়ে লেখো :
১১.১ এক চোর এসে সোনাকে তুলে নিয়ে চম্পট।
১১.২ সরকারের লোক যন্ত্রপাতি বসিয়ে সোনা খুঁজতে লেগে গেল।
১১.৩ সোনার গাঁ-র লোকেরা কেউ নদীকে নোংরা করে না।
১১.৪ নদীমা তোর মেয়ের গায়ে গয়না পরিয়ে দিয়েছেন।
১১.৫ সোনা বাবার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
নির্মল -পরিষ্কার।
উঃ। ১১.৪ নদীমা তোর মেয়ের গায়ে গয়না পরিয়ে দিয়েছেন।
১১.১ এক চোর এসে সোনাকে তলে নিয়ে চম্পট।
১১.৫ সোনা বাবার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
১১.২ সরকারের লোক যন্ত্রপাতি বসিয়ে সোনা খুঁজতে লেগে গেল।
১১.৩ সোনার গাঁ-র লোকেরা কেউ নদীকে নোংরা করে না।
১২. বিপরীতার্থক শব্দ :
গাঁ—শহর
উঁচু-নীচু
এক–দুই
সামনে-পিছনে
মিথ্যে সত্য।
১৩. বর্ণ বিশ্লেষণ করো :
কাঁকন-ক + + আ + ক +ন।
চম্পট—চ + ম + প +ট।'
পরিষ্কার প + র + ই + য + ক + আ + র।
যন্ত্রপাতি—য + ন + ত + র + প + আ + ত +
নদীমাতৃক ন + দ + ঈ + ম + আ + ত + ঈ+ ক + আ।
হিরণ্যবক্ষ হ + ই + র +ণ +য +ব + ক+ষ
১৪. কার্য-কারণ সম্পর্ক নির্ণয় করে পাশাপাশি বাক্য লেখো :
১৪. ১ মেয়েকে আঁচল দিয়ে ঢেকেঢুকে চাষি-বউ বাড়ি নিয়ে এলো।
উঃ। মেয়েকে আঁচল দিয়ে ঢেকেঢুকে চাষি-বউ বাড়ি নিয়ে এলো কারণ, নদী-মা মেয়ের সারা গায়ে সোনা পরিয়ে দিয়েছিল।
১৪.৪ মা পাগলের মতো বাজাতে লাগল –ঢং ঢং ঢং....।
উঃ। মা পাগলের মতো বাজাতে লাগল ঢং ঢং ঢং কারণ, একটা চোর মেয়েকে নিয়ে চম্পট দিয়েছিল।
১৪.৩ আপনার মেয়ের কথা শুনে যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছি।
উঃ। আপনার মেয়ের কথা শুনে যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছি কারণ, নদীতে সোনা আছে, তাই খুঁজতে।
১৪.৪ তুই যেন জলের মাছ।
উঃ। তুই যেন জলের মাছে কারণ সোনা জলে মাছের মতো সাঁতার কাটে।
১৫. বাক্য রচনা করো :
হামাগুড়ি—শিশুরা হামাগুড়ি দিয়ে খেলা করে।। হনহনিয়ে—ছেলেটি ভয় পেয়ে হনহনিয়ে পথটি পার হলো।
ইঞ্জিন—রেলগাড়ির ইঞ্জিনটা অনেক বড়ো।।
অদ্ভূত—যত্রা দলের লোকজন অদ্ভুত ধরনের।
পিশাচ—গভীর রাতে রাত্রে পিশাচ দেখা যায়।
১৬. বাক্য বাড়াও :
১৬.১ একটুখানি জায়গা মায়ে বাপে বেড়া দিয়েছে। (কেন ?)
উঃ। মেয়ে যাতে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে না যায়, তাই একটুখানি জায়গা মায়ে-বাপে বেড়া দিয়েছে।
১৬.২ প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড দু-তিনটে গাড়ি আসছে। (কোথা দিয়ে ?)
উঃ। বড়ো রাস্তা দিয়ে প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড দু-তিনটে গাড়ি আসছে।
১৬.৩ যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছি। (কেন ?)
উঃ। নদী থেকে সোনা খুঁজতে যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছি।
১৬.৪ সোনা ঠিক টের পায় যেখানেই থাকুক। (কী টের পায় ? )
উঃ। নদীকে কেউ নোংরা করলে সোনা ঠিক টের পায় যেখানেই থাকুক।
১৬.৫ ভিনগাঁয়ের লোকেরা এসে বলে। (কী বলে ?)
উঃ। ভিনগাঁয়ের লোকেরা এসে বলে, বাঃ তোমাদের এখানে নদীর জল কী পরিষ্কার।
১৭. নদীতে কোন্ কোন্ প্রাণী বাস করে? সাঁতার কাটতে পারে কোন পাখি?
উঃ। নদীতে মাছ, বিভিন্ন প্রকার জলজ, পোকা, শামুক, চিংড়ি, কাঁকড়া, শুশুক, কুমির, ব্যাং, সাপ বাস করে। হাঁস ও পানকৌড়ি সাঁতার কাটতে পারে।
১৮. 'সোনা' গল্পটি থেকে তোমরা কী শিখলে তা লেখো। গল্পটির আর-একটি নাম দাও।
উঃ। ‘সোনা' গল্পটি থেকে আমরা শিখলাম নদী আমাদের মায়ের মতন। নদীকে নোংরা, দূষিত করতে নেই। নদী সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। গল্পের আর-একটি নাম হল‘নদী ও তার সোনার মেয়ে’, ‘হিরণ্যবক্ষা।
১৯. নীচের সূত্রগুলি কাজে লাগিয়ে শব্দছকটি পূরণ করো : উত্তরসহ শব্দছকটি দেওয়া হল :
উপর-নীচ ঃ ১. এখানে মাথা রেখে ঘুমোতে আরাম। ২. জলের জীব। ৩. এর উপরেই লিখতে হয়। ৪. হাতির আরেক নাম। ৫..মেঘের সঙ্গী। ৭. কোকিলের ডাক। ৮..... জঙ্গল। ১০. বৃষ্টি হলে প্রয়োজন।
উত্তর-(১) নরম বালিশ (২) মাছ (৩) গজ (৫) মন (৭) কুহু (৮) বন (১০) ছাতা
পাশাপাশি ঃ ১. নদী যার মায়ের মতন। ৪. ধান ও ..... আমাদের প্রধান খাদ্য। ৬. “মামাবাড়ি ভারি...... কিল চড় নাই।” ৭. মন্দ লোক।
৮. অনেক। ৯. শ্রুতি.... । ১১. .... না জানলে জলে নামা উচিত নয়।
উত্তর (১১) নদীমাতৃকা (৪) ঘুম(৬) মজা (৭) কুজন (৮) বহু (৯) লিখন (১১)সাঁতার
হাতে কলমের বাইরে অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর ঃ
প্রশ্ন-সোনার মা কী ভাবে?
উঃ । সোনার মা ভাবে সোনার হাতে দু-খানি কাঁকন দিলে বড্ড মানাত।
প্রশ্ন-গল্পে কোন্ দামি ধাতুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
উঃ। গল্পে দামি ধাতু সোনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রশ্ন-সোনার বাবা-মা কী দিয়ে বেড়া ঢেকে দিয়েছিল ?
উঃ সোনার বাবা-মা নরম লতা দিয়ে বেড়া ঢেকে দিয়েছিল।
প্রশ্ন- নদীর জলে সোনা আছে। একথা কেন বলা হয়েছে?
উঃ। নদীর বালি চিকচিক করে। এই বালিতে খুবই অল্প।পরিমাণে সোনা আছে। যা বার করা খুবই ব্যয়সাপেক্ষ। তবে সব নদীর জলের বালিতে সোনা থাকে না।
প্রশ্ন-চোর যখন সোনাকে নিয়ে পালিয়েছিল, তখন সোনার মা কী করছিল?
উঃ। চোর যখন সোনাকে নিয়ে পালিয়েছিল, তখন সোনার মা দুধ জ্বাল দিচ্ছিল।
প্রশ্ন-কারা চোর ধরে সোনাকে উদ্ধার করেছিল ?
উঃ। স্বকারের লোকেরা যারা গ্রামে সোনা খুঁজতে এসেছিল, তারা চোর ধরে সোনাকে উদ্ধার করেছিল।
প্রশ্ন-সরকারের লোকেরা কেন সোনা না তুলে ফিরে গিয়েছিল?
উঃ। নদীতে খুব সামান্য সোনা ছিল, তা তুলে পোষাবে না, তাই সরকারের লোকেরা ফিরে গিয়েছিল।
প্রশ্ন-সোনা নদীতে কতক্ষণ সাঁতার কাটে?
উঃ। সোনা নদীতে এবেলা একঘণ্টা ওবেলা একঘণ্টা সাঁতার কাটে।'
প্রশ্ন-সোনা কেন কীভাবে কারখানা বন্ধ করেছিল ?
উঃ। কারখানার জল নদীকে দূষিত করেছিল, তাই সোনা ধরনা দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল
প্রশ্ন- ধানের বুকে কী টসটস করে? এটা বলতে কী বোঝো?
উঃ। ধানের বুকে দুধ টসটস করে। কাঁচা ধানকে টিপলে তার ভেতর থেকে সাদা দুধের মতো তরল শাঁস বেরোয়। একেই ধানের বুকে দুধ বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্ন- হিরণ্যবক্ষা কাকে এবং কেন বলা হয়েছে? উঃ। হিরণ্য কথার অর্থ সোনা, বক্ষ অর্থাৎ বুক। অর্থাৎ নদীর জলের বালিতে খুবই স্বল্প পরিমাণে সোনা আছে। তাই নদীকে হিরণ্যবক্ষা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন- চাষি কোথায় ও কেন ঘণ্টা বেঁধে দিয়েছিল ? উঃ । কখন কী হয় ভেবে চাষি ঘরের মধ্যে একটা ঘণ্টা বেঁধে দিয়েছিল।
•
:
প্রশ্ন-‘নদী মা-ও হাঁফ ছাড়লেন’– কেন নদীমা হাঁপ ছাড়ছেন? এরপর নদীমা কী করতে লাগলেন ?
উঃ। সরকারের লোকেরা নদী থেকে সেভাবে সোনা না পেয়ে তাঁবু গুটিয়ে চলে যাওয়ার পর নদীমাও যেন হাঁপ ছাড়লেন। নদীর মধ্যে খোঁড়াখুঁড়ির ফলে ময়লা বেরিয়ে নদীর তলাটা পরিষ্কার ও হয়ে গেল। নদীর বুকের ওপর নল বসিয়ে ইঞ্জিন লাগিয়ে প্রচণ্ড শব্দে যে সোনা তোলার কাজ চলছিল তা বন্ধ হওয়ার নদীমা যেন শান্তি পেলেন।
প্রশ্ন-চোর সোনাকে কখন তুলে নিয়ে গিয়েছিল? সবাই কীভাবে চোর ধরতে গেল?
উঃ। একদিন সোনা উঠোনে একা ছিল। বাবা গেছেন খেতে আর মা রান্না ঘরে দুধ জ্বাল দিচ্ছেন। চোরটি অনেকদিন ধরে সুযোগের অপেক্ষায় সোনাকে একা দেখে সে তাকে তুলে নিয়ে চম্পট দিল। মা দুধ খাবার জন্য ডাকতে এসে দেখলো মেয়ে নেই। চাষি ঘরের মধ্যে একটা ঘণ্টা বেঁধে দিয়েছিল কখন কী হবে সেই ভেবে। সেইটি ধরে সোনার মা পাগলের মতো বাজাতে লাগল। সেই শব্দে সারা গাঁয়ের লোক ছুটে এল এবং হাতের কাছে যা পেল তাই নিয়ে তারা চোর ধরতে ছুটলো।
প্রশ্ন-চোর কীভাবে ধরা পড়ল ?
উঃ। চোর সোনাকে ধরে নিয়ে হনহনিয়ে পালাতে লাগল। বড়ো রাস্তার পড়েই চোর দেখল প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড দু-তিনটি গাড়ি আসছে। কাছে এসে সব গাড়িগুলি একসঙ্গে থেমে গেল। দু-তিন জন গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে চোলকে ধর ফেলল। চোর মিথ্যে কথায় আমার মেয়ে কান্নাকাটি করছে বেড়াতে নিয়ে যাচ্ছি বলে পালাতে চাইছিল কিন্তু গাঁয়ের লোকেরা চেঁচিয়ে মিথ্যে কথা বলে চোরকে পাকড়াও করে নিল।
বিপরীত শব্দ: :-
আলো-অন্ধকার।
ঢেকে- খুলে।
ভয়— সাহস।
প্রকাণ্ড — ক্ষুদ্র।
পরিষ্কার – অপরিষ্কার।
নরম-শক্ত।
সমার্থক শব্দঃ
সোনা— হিরণ্য, কনক, স্বর্ণ।
নদী — তটিনী, স্রোতস্বিনী।
মেয়ে— কন্যা, তনয়া, দুহিতা।
চোর- তস্কর, দস্যু, লুটেরা।
জল—নীর, বারি, সলিল। মন-চিত্ত, অন্তর, হৃদয়।