হিংসুটি গল্পের প্রশ্নের উত্তর/ hinsuti story question answer
![]() |
তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা
গল্প : হিংসুটি
লেখক : সুকুমার রায়
লেখক সুকুমার রায়ে পরিচিতি- সুকুমার রায় ছিলেন বাংলা শিশুসাহিত্যের এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক। ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর জন্ম হয়।
তিনি ছিলেন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপোকিশোর রায়চৌধুরী। সুকুমার রায়ের লেখা গুলির মধ্যে হল আবোল তাবোল', 'হযবরল' আর 'পাগলা দাশু'। চিত্রশিল্প, ফটোগ্রাফি, সরস ও কাহিনি এবং ছড়া রচনায় সুকুমার রায় ছিলেন অতুলনীয়। তাঁর রচিত 'অবাক জলপান', ঝালাপালা', 'লক্ষ্মণের শক্তিশেল' ইত্যাদি। স্বল্পদিনের তিনি যা সৃষ্টি করে গেছেন তা থেকে বাঙালি তাকে চিরকাল মনে রাখবে ।১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হিংসুটি গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার কর : রচনাটি একটি হিংসুটি মেয়েকে নিয়ে। মেয়েটির মধ্যে সব সময় হিংসা ভাব বিরাজ করতো। তার হিংসার ফলে সে সবসময় সবাইকে কষ্ট দেয়। তার এই হিংসার ফলে সে একদিন তার নিজেরও ক্ষতি করে ফেলে। গল্পের মূল চরিত্র যেহেতু হিংসুটে মেয়েটি, তাই গল্পটির নামকরণের
সার্থক হয়েছে।
হিংসুটি গল্পের সারাংশ: একটি মেয়ে সে ভারি হিংসুটি। সবসময় সে সবাইকে খুব হিংসা করে। কিন্তু তার দিদি খুব ভালো, মেয়ে। মেয়েটি তার দিদিকেও হিংসা করে। সে লেখাপড়া পারে না। তার দিদি খুব ভালো পারে। তার এতই হিংসা ছিল যে দিদির শ্রাইজ পাওয়া বইকে সে কালি ঢেলে নষ্ট করে দেয়। মামার আনা মিষ্টি, তার দিদির পাতে বড় সাইজের পড়েছে বলে কাছে। দিদির জন্মদিনে নতুন জামা এলে বাড়ি মাথায় করে তোলে। একদিন সে দেখে তার মায়ের
আলমারিতে খুব সুন্দর একটা পুতুল। সে ভাবে তার মামা হয়তো দিদিকে দিয়েছে, অমনি সে হিংসায় জ্বলে ওঠে। পুতুলটাকে নিয়ে গিয়ে লাঠি দিয়ে মেরে তার হাত পা ভেঙে, জামাকাপড় ছিঁড়ে আবার বাক্সে ভরে রেখে দেয়।বিকেলে সে তার মামার কাছ থেকে জানতে পারে যে সেই নষ্ট করে দেওয়া পুতুলটি আসলে তারই জন্য আনা হয়েছিল। তখন সে মনে কষ্ট পায়। এবং খুব কাঁদতে থাকে। প্রথম সে নিজের ভুলের শিক্ষা পায়।
শব্দার্থ : বেজায়—খুব।
হিংসুটে – যে হিংসে করে।
মুশকিল – অসুবিধা।
ঝগড়াটে- যে ঝগড়া করে।
লক্ষ্মী—সুবোধ।
বোধোদয় — ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত শিশুদের প্রথম পাঠ্য বই।
প্রাইজ — পুরস্কার।
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে- ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদা।
বকুনি— ধমক।
রসমুক্তি—একধরনের মিষ্টি।
ডাঙা - পাঠি।
পাঠিকা – যে মেয়ে পাঠ করছে।
মিঠাই—মিষ্টি।
চটে—রেগে।
★ হাতে-কলমে অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১.১ হিংসুটির নাম বলা মুশকিল কেন?
উঃ। হিংসুটির নাম বললে সেই নামের শান্ত, ভালো পাঠিকা থাকলে ,তারা রেগে যেতে পারে তাই নাম বলা মুশকিল ।
১.২ হিংসুটির দিদি কেমন মেয়ে?
উঃ। হিংসুটির দিদি খুব লক্ষ্মী এবং শান্ত মেয়ে।
১.৩ হিংসুটির বয়স কত?
উঃ । হিংসুটির বয়স ৭ বছর।
১.৪ হিংসুটির দিদির বয়স কত?
উঃ। হিংসুটির দিদির বয়স ৮ বছর।
১.৫ হিংসুটির দিদি কী কী পড়ে ফেলেছে?
উঃ। হিংসুটির দিদি ‘বোধোদয়', 'ছেলেদের রামায়ণ' ও ‘ইংরেজি ফার্স্টবুক' পড়ে ফেলেছে।
১.৬ স্কুলে কে কেমন ফল করত?
উঃ। হিংসুটি স্কুলে ভালো ফল করতে না পেরে বকুনি খেত আর শান্তি পেত। আর তার দিদি ভালো ফল করে প্রাইজ পেত।
১.৭ দিদি ছবির বই প্রাইজ পেলে হিংসুটি কী করল।
উঃ। দিদি ছবির বই প্রাইজ পেলে হিংসুটি সেটা কালি ঢেলে, মলট ছিঁড়ে, কাদায় ফেলে নষ্ট করে ফেলল।
১.৮ হিংসুটি দিদির খাবারের দিকে তাকিয়ে কাঁদল কেন?
উঃ । দিদির খাবারেরর পাতে রসমুন্ডিটা তার থেকে বড়ো ছিল বলে হিংসুটি দিদির খাবারের দিকে তাকিয়ে কাঁদল।
১.১ দিদির জন্মদিনে হিংসুটি কী করে?
উঃ। দিদির জন্মদিনে হিংসুটি চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় করে তোলে।
১.১ একদিন হঠাৎ হিংসুটি মায়ের আলমারি খুলে কী দেখল?
উত্তর-হিংসুটি তার মায়ের মায়ের আলমারিতে একটা টুকটুকে রাঙা সুন্দর পুতুল দেখল।
১.১১ হিংসুটির ভয়ানক রাগ হলো কেন?
উঃ। হিংসুটি তার হাতে হাতে পুতুল দেখে হিংসুটি ভেবেছিল দিদি বুঝি পুতুলটা তার মামার কাছ থেকে আদায় করেছে।
১.১২ কেন হিংসুটির চোখ ফেটে জল এল?
উঃ। এত সুন্দর পুতুলটা তার দিদির, সেটা তার নয়।এই কথা ভেবে তার চোখ ফেটে জল এল।
১.১৩ কে, কাকে ডান্ডা দিয়ে ধাঁই ধাঁই করে মারতে লাগল?
উঃ। হিংসুটি, পুতুলটাকে ডান্ডা দিয়ে ধাঁই ধাঁই করে মারতে লাগল।
১. ১৪ মারার পর সে কী করল?
উঃ।পুতুলটাকে মারার পর সে পুতুলটাকে বাক্সের মধ্যে ঠেসে তুলে রাখল।
১.১৫ মামা কখন হিংসুটিকে ডাকতে লাগলেন?
উঃ। হিংসুটির মামা বিকেলে এসে হিংসুটিকে ডাকতে লাগলেন।
১.১৬ মামা হিংসুটিকে ডেকে কী বললেন ?
উঃ । মামা হিংসুটিকে ডেকে বললেন, তিনি তার জন্য একটা পুতুল এনেছেন।
১.১৭ হিংসুটির বুকের মধ্যে ধড়াস করে উঠল কেন ?
উঃ। কারণ, তার ধারণা হলো দিদির পুতুল মনে করে, সে পুতুল টা নষ্ট করেছে ,সেই নষ্ট করা পুতুলটি তাহলে তারই ছিল।এই পুনঃটুইটটি কথা ভেবে হিংসুটির বুকের মধ্যে ধড়াস করে উঠল।
১.১৮ সে কাঁদো কাঁদো গলায় কী বলল?
উঃ। সে বলল, সেই পুতুলটার লাল জামা আর জুতো পরানো ছিল কিনা।
১.১৯ হিংসুটির কথা শুনে মা কী বললেন?
উঃ। হিংসুটির কথা শুনে তার মা জানতে চাইলেন যে, সে পুতুলটা দেখেছে কিনা।
১.২০ হিংসুটি ভ্যাঁ করে কেঁদে একদৌড়ে পালিয়ে গেল কেন?
উঃ। কারণ, সে তার নিজের পুতুলটা নিজেই নষ্ট করেছে। এই কথা ভেবে মনে কষ্ট পেয়ে হিংসুটি ভ্যাঁ করে কেঁদে একদৌড়ে পালিয়ে গেল ।
২ ক" স্তম্ভের সঙ্গে খ°স্তম্ভ মিল কর:-
উত্তর-
ক" স্তম্ভ খ"স্তম্ভ
মিটমিটে > চোখ
ফুটফুটে > মুখ
কচি কচি > হাত-পা
টুকটুকে > জামাকাপড়
কাঁদো কাঁদো > মুখ
৩. উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :-
৩.১ হিংসুটি তার দিদির খাবারের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভ্যাঁ করে ............ (কেঁদে ফেলল/ হেঁসে ফেলল/ খেয়ে ফেলল)।
উঃ। কেঁদে ফেলল।
৩.২ সে একটা ডান্ডা দিয়ে ধাঁই ধাঁই করে পুতুলটাকে ...........-(আদর করল/মারতে লাগল/স্নান করাল)।
উঃ। মারতে লাগল।
৩.৩ সে..........(আনন্দে /দুঃখে রাগে) গরগর করতে করতে চলে গেল।
উঃ। রাগে।
৩.৪ শুনে.......(হিংসার/ভয়ে/করুণায়) হিংসুটির বুকের মধ্যে ধড়াস করতে লাগল।
উঃ। ভয়ে।
৩.৫ সে কাঁদো কাঁদো.....(গলার/মুখে/চোখে) বলল।
উঃ। গলায়।
৩.৬ সে খানিকক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে
(শুনে/তাকিয়ে ছুঁয়ে) একদৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে গেল।
উঃ। তাকিয়ে।
৪. কোনটি বেমানান খুঁজে বের করে গোল দাগ দাও :
৪.১ দুষ্টু, শান্ত, হিংসুটি, ঝগড়াটি।
উঃ । শান্ত।
৪.২ বোধোদয়, ছেলেদের, রামায়ণ, রসমুক্তি, ইংরেজি ফার্স্টবুক।
উঃ। রসমুক্তি।
৪.৩ নাচতে নাচতে, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে, গাল ফুলিয়ে, ঠোঁট বাঁকিয়ে।
উঃ । নাচতে নাচতে।
৪.৪ মা, নানা, দিদি, হিংসুটি।
উঃ। হিংসুটি।
৪.৫ বাক্স, আলমারি, মলাট, পুতুল।
উঃ মলাট।
৫.হিংসুটির দিদিকে 'লক্ষ্মী মেয়ে' বলা হয়েছে কেন?
উঃ। হিংসুটির দিদি ছিল খুব শান্ত ও লক্ষ্মী। সে পড়াশোনা করত । কাউকে হিংসা করত না। তাই হিংসুটির দিদিকে লক্ষী মেয়ে বলা হয়েছে।
৬. মামার দেওয়া পুতুলটা কেমন ছিল। সেটা কোথায় রাখা ছিল ?
উঃ। মামার দেওয়া পুতুলটা ছিল- মিটমিটে চোখ, কচিকচি হাত-পা, ফুটফুটে মুখ আর টুকটুকে লাল জামাকাপড় ও জুতো পরানো ছিল।
সেটা মায়ের আলমারিতে বাক্সের মধ্যে রাখা ছিল।
৭. তুমি কী হিংসুটির মতো হতে চাও? কেন চাও বা চাও না, তা লেখো।
উঃ। না, আমি হিংসুটির মতো হতে চাই না। কারণ, আমি হিংসুটির মতো হলে সবাই ঘৃণা করবে।কেউ আমাকে ভালোবাসবে না। যাতে কেউ আমাকে খারাপ না বলে তার জন্য আমি হিংসুটির মতো হতে চাই না।
৮. হিংসে করা ভালো নয়' —এই বিষয়ে পাঁচটি বাক্য লেখো।
উঃ।হিংসে করলে সবাই খারাপ বলবে। তাই হিংসে করা ভালো নয়।
হিংসে করলে কেউ ভালোবাসবে না। তাই হিংসে করা ভালো নয়।
হিংসে করে সবাই তাদের হিংসুটে বলবে। তাই হিংসে করা ভালো নয়।
হিংসা করলে পড়াশোনা ভালো হবে না। তাই হিংসে করা ভালো নয়।
৯. নীচের সূত্রগুলি কাজে লাগিয়ে খেলাটি খেলো : সূত্র :
১. পুতুলের গায়ে ছিল...
উত্তর-টুকটুকে জামা,
২. ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখা একটি বই।
উত্তর-বোধোদয়
৩. বাক্সের মধ্যে শুয়েছিল.....
উত্তর-রাঙাপুতুল
৪. ‘শুনে ভয়ে হিংসুটির বুকের মধ্যে.....করতে লাগল।
উত্তর-ধড়াসধড়াসধড়াসধড়াস
৫. হিংসুটির বয়স ছিল.......
উত্তর-সাত বছর
৬.......…মামা এসে তাকে ডাকতে লাগলেন।'
উত্তর-বিকেলেবেলা
৭.............লাগল নাকি?'
উত্তর-জিভে কামড়,
৮. 'ছেলেদের..........
উত্তর-রামায়ণ
৯.........ছিঁড়ে, কাদায় ফেলে নষ্ট করে দিল।'
উত্তর-মলাট
১০...........তার কবে শেষ হয়ে গেছে।'
উত্তর-ইংরেজি ফার্স্টবুক
১০, হিংসুটি আর হিংসে করে না। সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকে সে। তাকে সাহায্য করো দেখি, যাতে এবার সে পুতুলটাকে খুঁজে পায়।
হাতে কলমের বাইরে আরো প্রশ্নের উত্তর-
প্রশ্ন -হিংসুটি গল্পটি কার লেখা ?
উত্তর -সুকুমার রায়
প্রশ্ন -সুকুমার রায়ের আরও দুটি গল্পের নাম বলো।
উত্তর -আবোল তাবোল এবং পাগলা দাশু
প্রশ্ন- হিংসুটি রেগে গেলে কি রকম কাঁদত?
উত্তর- ফুপিয়ে ফুপিয়ে
প্রশ্ন- মিঠাই কথার অর্থ কি?
উত্তর- মিষ্টি
প্রশ্ন -হিংসুটি কার প্রতি হিংসা করতো?
উত্তর- তার দিদির প্রতি
প্রশ্ন- পুতুলের গায়ে কি ছিল?
উত্তর - টুকটুকে জামা
প্রশ্ন- হিংসুটি খাবারের দিকে তাকিয়ে কেমন কেঁদে ফেলেছিল?
উত্তর- ভ্যাঁ করে
প্রশ্ন -বাক্স টির মধ্যে কে শুয়েছিল?
উত্তর -রাঙ্গা পুতুল
প্রশ্ন -একটি মহাকাব্যের নাম লেখ।
উত্তর- রামায়ণ।