পঞ্চম শ্রেণি বাংলা গল্প বুড়ো সুনির্মল বসুর হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর - school book solver

Pages

Wednesday, 1 January 2025

পঞ্চম শ্রেণি বাংলা গল্প বুড়ো সুনির্মল বসুর হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর




            পঞ্চম শ্রেণির
            বাংলা
          গল্পবুড়ো
        সুনির্মল বসু


গল্পবুড়ো


রূপকথা চাই,
রুপকথা-
সুনির্মল বসু
বইছে হাওয়া উত্তুরে;
গল্পবুড়ো থুথুড়ে
চলছে হেঁটে পথ ধ’রে
শীতের ভোরে সত্বরে;
চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা
‘রূপকথা চাই, রূপকথা—'
ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে-
বলছে ডেকে হাঁক ছেড়ে—
‘ঘুম ছেড়ে আজ ওঠ তোরা,
আয় রে ছুটে ছোট্টরা—
কী আছে মোর তল্পিটায়
দেখবি যদি জলদি আয় ।

কাঁধের উপর এই ঝোলা -
গল্প-ভরা মন ভোলা,
দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ,
রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ,
মনপবনের দাঁড়খানা-
আজগুবি সব কারখানা-
ভর্তি আমার তল্পিটায়,
দেখবি যদি, জলদি আয় ।
কড়ির পাহাড় সার-বাঁধা-
মানিক-হীরা চোখ ধাঁধা—
সোনার কাঠি ঝলমলে,
ময়নামতী টলটলে—
তেপান্তরের মাঠখানা-
হট্টমেলার হাটখানা-
আটকাল এই তল্পিটায়,
দেখবি যদি জলদি আয় ।
কেশবর্তী নন্দিনী
এই থলেতে বন্দিনি ।
শীতের প্রখর প্রত্যূষে—
আসবে না যে শত্রু সে-
ভাঙব তাদের মূর্খতা—
বলব নাকো রূপকথা।

হাতে কলমে প্রশ্নের উত্তর

১. ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো :
১.১‘উত্তুরে হাওয়া' বলতে বোঝায় হাওয়া যখন উত্তর দিক থেকে বয়ে আসে। এমন ভাবে (গ্রীষ্ম /শরৎ/শীত/বর্ষা/) কালে হাওয়া বয়।
উত্তর-শীত

১.২ থুথুড়ে শব্দটির অর্থ করে হায় হাওয়া যখন (চনমনে/জড়সড়ো/জ্ঞানী/ নড়বড়ে।
উত্তর-নড়বড়ে।

১.৩ রূপকথার গল্পে যেটি থাকে না (দত্যি-দানো/পক্ষীরাজ/রাজপুত্তুর/উড়োজাহাজ)।
উত্তর : উড়োজাহাজ

১.৪ রূপকথার গল্প সংগ্রহ করেছেন এমন একজন লেখকের নাম বেছে নিয়ে লেখো। (আশাপূর্ণা দেবী/দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার/সত্যজিৎ রায়/শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)।
উত্তর :  দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার ।

দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার / সত্যজিৎ রায় / শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)।
সুনির্মল বসু (১৯০২ – ১৯৭৫) : জন্ম বিহারের গিরিডিতে। সাঁওতাল পরগনার মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ তাঁর মনে কবিতা রচনার অনুপ্রেরণা জাগায়। প্রধানত ছোটোদের জন্য সরস সাহিত্য রচনা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ছড়া, কবিতা, গল্প, কাহিনি, উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনি, রূপকথা, কৌতুক-নাটক প্রভৃতি । ভালো ছবি আঁকতে পারতেন। তাঁর।লেখা উল্লেখযোগ্য বই-‘হাওয়ার দোলা’, ‘ছানাবড়া’, ‘বেড়ে মজা’, ‘হইচই’, ‘কথা শেখা’, ‘ছন্দের টুং টাং’, ‘বীর
শিকারী ইত্যাদি। সম্পাদিত বই—‘ছোটদের চয়নিকা’ ও ‘ছোটদের গল্পসংকলন'। ১৯৫৬ সালে ‘ভুবনেশ্বরী পদক’ পান। রচিত আত্মজীবনী ‘জীবনখাতার কয়েক পাতা' (১৯৫৫)। তিনি বাংলা সাহিত্যের এক স্মরণীয় শিশুসাহিত্যিক।
‘গল্প বুড়ো’ কবিতাটি ‘সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা' থেকে নেওয়া হয়েছে

২.১ লেখালেখি ছাড়াও সুনির্মল বসু আর কোন্ কাজ ভালো পারতেন?
উত্তর : সুনির্মল বসু লেখালেখি ছাড়াও  ভালো ছবি আঁকতে পারতেন।

২.২ তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম (১) ''হইচই’, (২) ‘কথা শেখা।

৩.এলোমেলো বর্ণগুলিকে সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো :
থাৰু ক প = রূপকথা
জ ক্ষী রা প = পক্ষীরাজ
র ত্তু জ রা পু = রাজপুত্তুর
ব প ম ন ন = মনপবন
জ গু বি আ = আজগুবি

৪. অন্তমিল আছে এমন পাঁচজোড়া শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো :

উত্তর : উত্তুরে - থুথুড়ে
দাঁড়খানা-কারখানা
বাঁধা-ধাঁধা
ব্যথা-কথা
ঝোলা-ভোলা।
যক্ষিরাজ-পক্ষীরাজ

৫. বাক্য বাড়াও :
৫.১ শীতকালে হাওয়া বইছে। (কেমন হাওয়া?) উত্তর :  উত্তরে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে। 
৫.২ গল্পবুড়ো ডাকছে। (কেমন বুড়ো?)
উত্তর : থুথুড়ে বুড়ো

৫.৩ গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা। (মুখ ব্যথা কেন ?)
উত্তর ঃ চিৎকার করে ডাকার জন্য গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা।

৫.৪ গল্পবুডোর ঝোলা আছে। (কোথায় ঝোলা ?)
উত্তর : কাঁধের ওপর ঝোলা আছে।

৫.৪ দেখবি যদি আয়। (কীভাবে আসবে ?)
উত্তর : জলদি আসবে।

৬.'ক' স্তম্ভ          'খ' স্তম্ভ   

   তল্পি              ঝোলা
ৰূপকথা           বাতাস
  ভোরে                 দ্রুত
  পবন                 ঝোলা
  সত্ত্বর                  বিহানে

উত্তর-
  তল্পি                ঝোলা
ৰূপকথা           কাল্পনিক গল্প
  ভোরে               বিহানে 
  পবন                 বাতাস
  সত্ত্বর                  দ্রুত
৭. ডাকছে রে' আর 'ডাক ছেড়ে' শব্দজোড়ার মধ্যে কী পার্থক্য তা দুটি বাক্য রচনা করে দেখাও :
যেমন- সবজি বিক্রেতা ডাক ছেড়ে সকলকে ডাকছে রে।
উত্তর : (১) পিতা ডাক ছেড়ে ছেলেকে ডাকছে রে। (২) ডাকছে রে কুকুর ডাক ছেড়ে।

৮ শব্দমুড়ির থেকে নিয়ে বিশেষ্য ও বিশেষণ আলাদা করে লেখো :
উ :
শব্দমুড়ি         বিশেষ্য               বিশেষণ
উত্তুরে                 তল্পি                     উত্তুরে
থুথুড়ে                ঝোলা                   থুথুড়ে
তল্পি                    রাজপুত্তুর             জলদি
ঝোলা                  কারখানা            আজগুবি
জলদি                  শীত                     সত্বর
আজগুবি                                  
সত্বর                                  
শীত                                  
রাজপুত্তুর                                  
কারখানা                                  




৯. পক্ষীরাজ এর মতো (ক + ষ = ক্ষ) রয়েছে এমন পাঁচটি শব্দ তৈরি করো :
উত্তর : পরীক্ষা ,শিক্ষা, দীক্ষা, পক্ষী, মোক্ষ।

১০ ক্লিয়ার নীচে দাগ দাও :

১০.১ বইছে হাওয়া উত্তুরে।
উত্তর : বইছে হাওয়া উত্তরে।
১০.২ ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে।
উত্তর : ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে।
১০.৩ আয় রে ছুটে ছোট্টৱা।
উত্তর : আয় রে ছুটে ছোট্টরা।
১০.৪ দেখবি যদি জলদি আয়।
উত্তর : দেখবি যদি জলদি আয়
১০. ৫ চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা।
উত্তর : চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা

১১. তোমার দৃষ্টিতে গল্পবুড়ো সাজ-পোশাকটি কেমন হবে, তা একটি ছবিতে আঁকো।
উত্তর- নিজে চেষ্টা করো

১২ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১২.১ গল্পবুড়ো কখন গল্প শোনাতে আসে?
উত্তর : শীতের ভোরে গল্পবুড়ো গল্প শোনাতে আসে।

১২.২ গল্পবুড়োর ঝোলায় কী কী ধরনের গল্প রয়েছে?
উত্তর : গল্পবুড়োর ঝোলায় দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ, ঝলমলে সোনার কাঠি, ময়নামতী নদী, তেপান্তরের মাঠ, কেশবতী নন্দিনী ইত্যাদি রূপকথার গল্প গল্পবুড়োর ঝোলায় আছে।

১২.৩গল্পবুড়ো শীতকালের ভোরে ছোটোদের কীভাবে ঘুম থেকে ওঠাতে চায় ?
উত্তর : শীতকালের ভোরে গল্পবুড়ো পথ দিয়ে যেতে যেতে ছোটদেরকে ডাকে। সে তাদের বিভিন্ন রূপকথা গল্প শোনাতে চায়। রূপকথার গল্প  শোনার লোভ দেখিয়ে ছোটোদের ঘুম থেকে ওঠাতে চায়।

১২.৪ রুপকথার কোন কোন বিষয় কবিতাটিতে রয়েছে?
উত্তর- দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ, ঝলমলে সোনার কাঠি, ময়নামতী নদী, তেপান্তরের মাঠ, কেশবতী নন্দিনী ইত্যাদি রুপকথার বিষয় কবিতাটিতে রয়েছে।

১২.৫ গল্পবুড়ো কাদের তার গল্প শোনাবে না?
উত্তর : গল্পবুড়োর যারা শত্রু, যারা মূর্খ, অলস তাদের গল্প শোনাবে না।

১৩. তোমার পড়া অথবা শোনা একটি রূপকথার গল্প নিজের ভাষায় লেখো :
উত্তর : আমার পড়া অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা সুয়োরানি ও দুয়োরানি একটি রূপকথার গল্প :
সুয়োরানির বুঝি মরণকাল এল। তার প্রাণ হাঁপিয়ে উঠছে, তার কিছুই ভালো লাগছে না। বন্দি বড়ি নিয়ে এল। মধু দিয়ে মেড়ে বলল 'খাও। সে ঠেলে ফেলে দিলে। রাজার কানে খবর গেল। রাজা তাড়াতাড়ি সভা ছেড়ে এল। পাশে বসে জিজ্ঞাসা করল, 'তোমার কী হয়েছে, কী চাই? সে গুমরে উঠে বলল, 'তোমরা সবাই যাও; একবার আমার স্যাঙানিকে ডেকে দাও।” স্যাঙানি এল। রানির হাত ধরে বললে, 'প্রকাশ করে বলো।' সুয়োরানি বললে, “আমার সাতমহলা বাড়ির একধারে তিনটে মহল ছিল দুয়োরানির। তারপরে হল দুটো, তার পরে হল একটা। তারপরে রাজবাড়ি থেকে সে বের হয়ে গেল। তারপরে দুয়োরানির কথা আমার মনেই রইল না। তারপরে একদিন দোলযাত্রা। নাটমন্দিরে যাচ্ছি ময়ূরপঙ্খী
চড়ে। আগে লোক, পিছে লসকর। ডাইনে বাজে বাঁশি, বাঁয়ে বাজে মৃদঙ্গ। এমন সময় পথের পাশে, নদীর ধারে ঘাটের উপরটিতে দেখি একখানি কুঁড়েঘর, চাপাগাছের ছায়ায়। বেড়া বেয়ে অপরাজিতার ফুল ফুটেছে, দুয়োরের সামনে চালের গুঁড়ো দিয়ে শঙ্খচক্রের আলপনা। আমার ছত্রধারিণীকে শুধোলেম,
“আহা, ঘরখানি কার?” সে বললে, দুয়োরানির। তারপরে ঘরে ফিরে এসে সন্ধ্যার সময় বসে আছি, ঘরে প্রদীপ জ্বালিনি, মুখে কথা নেই। রাজা এসে বললে, 'তোমার কী হয়েছে, কী চাই?' আমি বললেম, ‘এ ঘরে আমি থাকব না'। রাজা
বললে, “আমি তোমায় কোঠাবাড়ি বানিয়ে দেব গজদন্তের দেওয়াল দিয়ে। শঙ্খের গুঁড়োয় মেঝেটি হবে দুধের ফেনার মতো
সাদা, মুক্তোর ঝিনুক দিয়ে তার কিনারে এঁকে দেব পদ্মের মালা।' আমি বললেম, 'আমার বড়ো সাধ গিয়েছে, কুঁড়েঘর বানিয়ে থাকি তোমার বাহির-বাগানের একটি ধারে।” রাজা বললে, 'আচ্ছা বেশ, তার আর ভাবনা কী।' কুঁড়েঘর বানিয়ে দিলে। সে ঘর যেন তুলে আনা বনফুল। যেমনি তৈরি হল অমনি যেন মুষড়ে গেল। বাস করতে গেলেম, কেবল লজ্জা পেলেম। তারপরে একদিন স্নানযাত্রা। নদীতে নাইতে গেছি। সঙ্গে একশো সাতজন সঙ্গিনী। জলের ধারে পালকি নামিয়ে দিলে, স্নান হল। পথে ফিরে আসছি, পালকির দরজা, একটু ফাঁক করে দেখি, ও কোন্ ঘরের বউ গো। যেন নির্মাল্যের ফুল। হাতে সাদা শাঁখা, পরনে লাল পেড়ে শাড়ি। স্নানের পর ঘড়ায় করে জল তুলে আনছে; সকালের আলো তার
ভিজে চুলে আর ভিজে ঘড়ার ওপর ঝিকিয়ে উঠছে। ছত্রধারিণীকে শুধোলেম ‘মেয়েটি কে? কোন্ দেবমন্দিরে তপস্যা করে?' ছত্রধারিণী হেসে বললে, 'চিনতে পারলে না? ওই তো দুয়োরানি।' তারপর ঘরে ফিরে একলা বসে আছি, মুখে কথা নেই। রাজা এসে বললে, 'তোমার কী হয়েছে? কী চাই”? আমি বললেম, ‘আমার বড়ো সাধ, রোজ নদীতে নেমে মাটির ঘড়ায় জল তুলে আনব বকুলতলার রাস্তা দিয়ে।” রাজা বললে, 'আচ্ছা বেশ, তার আর ভাবনা কী।' রাস্তায় রাস্তায় পাহারা বসল, লোকজন গেল সরে। সাদা শাঁখা পরলেম, আর লালপেড়ে শাড়ি। নদীতে স্নান সেরে ঘড়ায় করে জল তুলে আনলেম। দুয়োরের কাছে এসে মনের দুঃখে ঘড়া আছড়ে ভাঙলেম। যা ভেবেছিলাম তা হল না, শুধু লজ্জা পেলেম।
তারপরে সেদিন রাসযাত্রা। মধুবনে জ্যোৎস্না রাতে তাঁবু পড়ল। সমস্ত রাত নাচ হল, গান হল। পরদিন সকালে হাতির ওপর হাওদা চড়ল। পর্দার আড়ালে বসে ঘরে ফিরছি, এমন সময় দেখি, বনের পথ দিয়ে কে চলেছে, তার নবীন বয়স। চূড়োয় তার বনফুলের মালা, হাতে তার ডালি; তাতে শালুক ফুল, তাতে বনের ফল, তাতে খেতের শাক। ছত্রধারিণীকে শুধোলেম, ‘কোন্ ভাগ্যবতীর ছেলে পথ আলো করেছে?' ছত্রধারিণী বললে, ‘জান না? ওই তো দুয়োরানির ছেলে। ওর মার জন্য নিয়ে চলেছে শালুক ফুল, বনের ফল, খেতের শাক।' তারপরে ঘরে ফিরে একলা বসে আছি, মুখে কোনো কথা নেই। রাজা এসে বললে, 'তোমার কী হয়েছে, কী চাই?' আমি বললেম, 'আমার বড়ো সাধ, রোজ খাব শালুক
ফুল, বনের ফল, খেতের শাক; আমার ছেলে নিজের হাতে তুলে আনবে।' রাজা বললে, 'আচ্ছা বেশ, তার আর ভাবনা কী।' সোনার পালঙ্কে বসে আছি, ছেলে ডালি নিয়ে এল। তার সর্বাঙ্গে ঘাম, তার মুখে রাগ। ডালি পড়ে রইল, লজ্জা পেলেম। তারপরে আমার কী হল কী জানি। একলা বসে থাকি, মুখে কথা নেই। রাজা রোজ এসে আমাকে শুধোয়,
‘তোমার কী হয়েছে, কী চাই?” ‘সুয়োরানি হয়েও কী চাই, সে কথা লজ্জায় কাউকে বলতে পারিনে। তাই তোমাকে ডেকেছি স্যাঙাৎনি। আমার শেষ কথাটি বলি তোমার কানে, ওই দুয়োরানির দুঃখ আমি চাই।' স্যাঙাৎনি গালে হাত দিয়ে  বললে, ‘কেন বলো তো?” সুয়োরানি বললে, ‘ওর ওই বাঁশের বাঁশিতে সুর বাজল, কিন্তু আমার সোনার বাঁশি/কেবল।বয়েই বেড়ালেম, আগলে বেড়ালেম, বাজাতে পারলেম না।'

আর ও প্রশ্নোত্তর
ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো :

★‘গল্পবুড়ো” কবিতাটি লিখেছেন- সুনির্মল বন্দ্যোপাধ্যায় / সুনির্মল বসু/সুনির্মল রায়।
উত্তর : ‘গল্পবুড়ো’ কবিতাটি লিখেছেন সুনির্মল বসু।

★যে শিশু রূপকথার গল্প শুনতে চাইবে না, তাকে গল্পবুড়ো মূর্খ (পণ্ডিত/মূর্খ/জ্ঞানী/সবজান্তা) বলেছেন।
উত্তর : যে শিশু রূপকথার গল্প শুনতে চাইবে না, তাকে গল্পবুড়ো মূর্খ বলেছেন।

দু-এক কথায় উত্তর দাও :

★ গল্পবুড়ো' কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর : ‘গল্পবুড়ো’ কবিতাটি কবি সুনির্মল বসুর লেখা।
★ গল্পবুড়োর কাঁধে কী রয়েছে?
উত্তর : গল্পবুড়োর কাঁধে রয়েছে রূপকথার গল্পের ঝোলা।

★ রূপকথা শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর ঃ বিভিন্ন ধরনের আজগুবি গল্পকে রূপকথা বলা হয়।

★কড়ি বলতে কী বোঝো?

উত্তর : আগেকার দিনে টাকাপয়সার মতো বিনিময়ের জন্য কড়ি ব্যবহৃত হত।

★ময়নামতীর জল কীরকম?
উত্তর : ময়নামতীর জল টলমল করছে

★নিন্দিনী কোথায় রয়েছে?
উত্তর ঃ কেশবতী  নন্দিনী বন্দি হয়ে আছে গল্পবুড়োর ঝোলাতে।

★গল্পবুড়োর ঝোলাতে কারা বাঁধা আছে?
উত্তর : দত্যি, দানব, পক্ষীরাজ, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর বাঁধা রয়েছে।

★ গল্পবুড়োর চেহারাটা কেমন?
উত্তর : গল্পবুড়োর চেহারাটা থুথুড়ে অর্থাৎ একেবারে নড়বড়ে।

★কোথা দিয়ে চলেছে গল্পবুড়ো ?
উত্তর : পথ ধরে হেঁটে চলেছে গল্পবুড়ো।

★চেঁচিয়ে বুড়োর কী অবস্থা হয়েছে?
উত্তর : চেঁচিয়ে বুড়োর মুখ ব্যথা হয়েছে।

★গল্পবুড়ো কেমন করে ডাকছে?
উত্তর : গল্পবুড়ো হাঁক ছেড়ে ডাকছে।

★হাঁক ছেড়ে গল্পবুড়ো কী বলছে?
উত্তর : হাঁক ছেড়ে গল্পবুড়ো সবাইকে ঘুম থেকে উঠে পড়াশোনায় মন দিতে বলছে।

★ গল্পবুড়ো কাদেরকে ছুটে আসছে বলছে? উত্তর ঃ ছোটোদেরকে ছুটে আসতে বলছে।

★ছোটোদেরকে গল্পবুড়ো ছুটে আসতে কেন বলেছে?
উত্তর ঃ গল্পবুড়োর তল্পিতে যা আছে তা দেখাবে বলে ছোটোদেরকে সে ছুটে আসতে বলছে।

★ঝোলাটা বুড়োর কোথায় আছে?
উত্তর ঃ ঝোলাটা বুড়োর কাঁধে আছে।

★গল্পবুড়োর কাঁধের ঝোলায় কী আছে?
উত্তর ঃ গল্পবুড়োর কাঁধের ঝোলায় মন ভোলানো অনেক গল্প আছে।

★সার বাঁধা কী আছে?
উত্তর : কড়ির পাহাড় সার বাঁধা আছে।

★চোখ ধাঁধা হয়ে যাবে কীসে?
উত্তর : মানিক-হীরায় চোখ ধাঁধা হয়ে যাবে।

★গল্পবুড়োর ঝোলাতে কী ঝলমলে আছে? উত্তর : গল্পবুড়োর ঝোলাতে সোনার কাঠি ঝলমলে আছে।
★ গল্পবুড়োর তল্পিটায় কী আটকে আছে?

উত্তর ঃ গল্পবুড়োর তল্পিটায় হট্টমেলার হাটখানা আটকে আছে।

★গল্পবুড়োর থলিতে কে বন্দিনি আছে?
উত্তর : গল্পবুড়োর থলিতে কেশবতী নন্দিনী বন্দিনি আছে।

★ শীতের প্রখর প্রত্যূষ' কাকে বলে?
উত্তর : প্রত্যূষ মানে সকাল, আর শীতকালের সকালের আরামদায়ক রোদ্দুরকে বলা হয় প্রখর প্রত্যূষ ।

★ গল্পবুড়োর কাছে কারা শত্রু?
উত্তর : শীতের প্রখর প্রত্যূষে যে ঘুম থেকে উঠে তার কাছে আসবে না গল্পবুড়ো তাকেই শত্রু বলেছে।

★ থরথর' শব্দের ‘র’ বর্ণটি দুবার রয়েছে। এরকম ‘ল' বর্ণটি দুবার আছে এমন দুটি শব্দ লেখো।
উত্তর : ঝলমল, টলমল।

★গল্পবুড়ো কখন আসে?
উত্তর : শীতের ভোরবেলায় গল্পবুড়ো আসে।

★ কার মুখ ব্যথা হয়ে গিয়েছিল?
উত্তর : গল্পবুড়োর।

★ 'বইছে হাওয়া উত্তুরে'—উত্তুরে হাওয়া বইলে কী অনুভূতি হয় ?
উত্তর : উত্তুরে হাওয়া বইলে খুব ঠান্ডা অনুভূত হয়।

★ কী চেঁচিয়ে গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা হয়েছে?
উত্তর : ‘রূপকথা চাই, রূপকথা চাই'—বলে চেঁচিয়ে গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা হয়েছে।

★‘দেখবি যদি জলদি আয়’—গল্পবুড়ো কী দেখতে বলছে?
উত্তর : গল্পবুড়োর তল্পিটায় যা আছে অর্থাৎ, রূপকথা ইত্যাদি তা দেখতে বলছে।

★‘কাঁধের উপর এই ঝোলা’–ঝোলাতে কী কী আছে?
উত্তর : কাঁধের ওপর ঝোলাতে আছে আজগুবি মন ভোলানো গল্প, দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ আর মনপবনের দাঁড়খানা।

★গল্পবুড়োর পিঠে বাঁধা তল্পিতে কী কী রয়েছে?
উত্তর : গল্পবুড়োর পিঠে অনেক চোখ বাঁধানো মণিমাণিক্য, হিরে, কড়ি সব রয়েছে। সোনার কাঠির ছোঁয়ায় তারা ময়নামতী নদীতে যেতে পারে।

★ “বলব নাকো রূপকথা'—গল্পবুড়ো কেন রূপকথা বলবে না ?
উত্তর ঃ শীতের সকালে কোনো শিশু যদি গল্পবুড়োর কাছে না আসে তাহলে সে তার শত্রু। তাই গল্পবুড়ো তাদের মূর্খামি ভেঙে দেবে আর সে কোনো রূপকথাই শোনাবে না।

★ ‘গল্পবুড়ো' নামকরণ সার্থক হয়েছে বলে মনে হয় কি এবং কেন ?
উত্তর : ‘গল্পবুড়ো’ কবিতাটি সুন্দর ছন্দ মিলিয়ে যেন গল্প বলার কৌশলে লেখা হয়েছে। ফলে কবিতাটির নাম সার্থক হয়েছে বলে আমি মনে করি।

সংক্ষেপে উত্তর দাও :
★ গল্পবুড়ো কাদের গল্প শোনাবে না?
উত্তর ঃ যারা অলস, মূর্খ, যারা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠবে না তাদের গল্প শোনাবে না এবং যারা শত্রুতা করবে তাদের গল্প শোনাবে না।

★ তেপান্তর বলতে কী বোঝো?
উত্তর ঃ দূরের নদী পেরিয়ে অনেক বড়ো সবুজ মাঠকে তেপান্তর বলে।

★ কয়েকটা চোখ ধাঁধানো জিনিসের নাম লেখো।
উত্তর ঃ কড়ির পাহাড়ে সব চোখ ধাঁধানো জিনিস যেমন, মানিক—হিরা পাওয়া যায়। ঝলমলে সোনার কাঠি পাওয়া যায়

★ রূপকথা কাকে বলে ?
উত্তর ঃ যে গল্পে রাজপুত্র, রাজকন্যা, পক্ষীরাজ ঘোড়া, সোনার কাঠি, রুপোর কাঠি, রাক্ষসী, রাক্ষস ইত্যাদি লেখা থাকে তাকে বলে রূপকথা।

★ কার, কী কারণে চেঁচিয়ে মুখ ব্যথা করছে?
একা থেকে তাড়াতাড়ি হেঁটে চলেে

★ ডাক ছেড়ে গল্পবুড়ো কী বলছে?
উত্তর ঃ হাঁক ছেড়ে ডেকে গল্পবুড়ো ছোটোদের ঘুম থেকে উঠতে বলছে এবং ছুটে এসে তাড়াতাড়ি তার।ঝোলাতে কী আছে দেখতে বলছে।

★গল্পবুড়োর ঝোলায় কী কী ধরনের গল্প রয়েছে?
উত্তর ঃ গল্পবুড়োর কাঁধে যে ঝোলা আছে তাতে আছে মন ভোলানো প্রচুর গল্প। দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্ত্বর আর পক্ষীরাজ ঘোড়া ইত্যাদি সম্পর্কে মজার মজার রূপকথার গল্পে ভরা।

★  হট্টমেলার হাটখানাসহ গল্পবুড়োর তল্পিতে আর কী কী আটকে আছে?
উত্তর ঃ সার বাঁধা কড়ির পাহাড়, চোখ ধাঁধানো মানিক-হিরা, ঝলমলে সোনার কাঠি, টলটলে ময়নামতী আর তেপান্তরের মাঠখানা গল্পবুড়োর তল্পিতে আটকে আছে।

★মনপবনের দাঁড়খানা বলতে তুমি কী বোঝো?
উত্তর : ‘পবন' কথার মানে বাতাস। ‘দাঁড়’ শব্দের অর্থ  কাঠের লাঠির সাহায্যে মাঝি নৌকা চালায়। এখানে মনপবনের দাঁড় বলতে কল্পনার রাজ্যে ঘুরে বেড়ানোর সাহায্যকারী বস্তু বোঝানো হয়েছে।

★গল্পবুড়োর ঝোলাতে কে কেন বন্দিনি আছে?
উত্তর : গল্পবুড়োর ঝোলাতে বন্দিনি আছে কেশবতী নন্দিনি। হয়তো তাকে কোনো দত্যি, দানব কিংবা কোনো যক্ষিরাজ তাদের কোনো দাবি পূরণ হয়নি বলেই বন্দিনি করে রেখেছে।

★ গল্পবুড়োর ঝোলায় রূপকথার কোন্ কোন্ বিষয় ভরা আছে?
উত্তর : ‘গল্পবুড়ো’ কবিতায় রূপকথার দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ যেমন আছে, তেমনি আছে ঝলমলে সোনার কাঠি, ময়নামতী নদী, তেপান্তরের মাঠ, বন্দিনী কেশবতী নন্দিনী আছে।

দীর্ঘধর্মী প্রশ্নের উত্তর দাও :
★ “কী আছে মোর তল্পিটায়'—এই কথাটি কে, কখন কাদেরকে বলেছে?
উত্তর ঃ এই কথাটি গল্পবুড়ো বলেছে।
শীতকালের ভোর। উত্তুরে হাওয়া বইছে। সেই শীতে থুথুড়ে গল্পবুড়ো তাড়াতাড়ি পথ ধরে হেঁটে চলেছে। ‘রূপকথা চাই, রূপকথা—' বলে সে এমন চ্যাচাচ্ছে যে তার মুখ ব্যথা হয়ে গেছে। হাঁক ছেড়ে সে ছোটোদের ডেকে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে বলছে। ছোটোরা ছুটে এলে তাড়াতাড়ি সে তার তল্পি অর্থাৎ কাঁধের ঝোলায় কী আছে
তা সে তাদেরকে দেখাবে।

★ ‘ভর্তি আমার তল্পিটায়’,—কার তল্পিতে কী ভর্তি আছে?
উত্তর : এখানে গল্পবুড়ো শীতের ভোরবেলায় ছোটোদের ডেকে বলছে, তার কাঁধের ঝোলায় মন ভোলানো অনেক গল্প আছে। ছোটোরা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে বিছানা ছেড়ে উঠে তার কাছে ছুটে এলে সে তাদেরকে শোনাবে দত্যি
দানব আর যক্ষিরাজের গল্প। আর আছে রাজপুত্তুর ও পক্ষীরাজ ঘোড়ার গল্প। মনপবনের দাঁড়খানা বেয়ে এগিয়ে গেলে তারা চোখের সামনে আজগুবি সব গল্পের কারখানা দেখতে পাবে গল্পবুড়োর ঝোলাতে আছে।

★  ‘আটকাল এই তল্পিটায়' বলতে কবি আমাদেরকে কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর ঃ গল্পবুড়ো কাঁধে গল্পের ঝোলা নিয়ে শীতের খুব ভোরবেলায় পথে বেরিয়েছে। ছোটোদের সে হাঁক ছেড়ে ডেকে
বলছে তার গল্পের ঝোলায় আছে সার-বাঁধা কড়ির পাহাড়, চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়া মানিক হিরা। আর আছে রূপকথার গল্পের আসল বস্তু ঝলমলে সোনার কাঠি। ওই সোনার কাঠি দিয়েই বন্দিনি টলটলে ময়নামতী নদীকে উদ্ধার করা যায়। এ ছাড়া গল্পবুড়োর তল্পিতে অর্থাৎ, গল্পের ঝোলায় আটকে আছে তেপান্তরের মাঠখানা এবং হট্টমেলার হাটখানা। ছোটোরা শীতের ভোরে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে বিছানা ছেড়ে উঠে গল্পবুড়োর কাছে ছুটে এলে গল্পবুড়ো তার ঝুলি
উজাড় করে ওই রূপকথার গল্পগুলি ঢেলে দিতে পারে।